দেশবিদেশের উপকথা-মালয়েশিয়া(২)

তুলিরেখা এর ছবি
লিখেছেন তুলিরেখা (তারিখ: সোম, ২৮/০৬/২০১০ - ৭:৫৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এখানে ১ম পর্ব

সারাদিনমান নানা কাজে ব্যস্ত রাজপুত্র, সকালে শাস্ত্রশিক্ষার পরে মল্লযুদ্ধের আখড়ায় দুপুর পর্যন্ত। তারপরে মধ্যাহ্নভোজের বিরতি। তারপরে বিকালে আবার তীরন্দাজি।

সামনেই তার যৌবরাজ্যে অভিষেক, সেই আয়োজন চলছে পুরাদমে। রাজা নিজে তদারকি করছেন সেসবের। তীরন্দাজির খেলা থেকে ফিরে রাজপুত্র দেখলো তার জন্য পোশাকের মাপ নিতে এসেছে পোশাকনির্মাতারা, একধারে আবার মণিমুক্তা নিয়ে বসে আছে মণিকারেরা, অলঙ্কার তৈরীর আগে রত্ন পছন্দ করে দিতে হবে। রাণীমা নিজে তলব করে এনেছেন তাদের।

এতসব করে টরে বড়ই ক্লান্ত হয়ে সন্ধ্যাস্নান করে রাতের আহার করেই শয্যায় এসে ঘুমে এলিয়ে পড়লো সে। মনে মনে সে বুঝি বলছিলো --- আহা এসো, আমার মায়াময়ী এসো, "দোলাও দোলাও দোলাও আমার হৃদয়, তোমার আপন হাতের দোলে।"

শেষরাতে আবার সেই স্বপ্ন, সেই ভয়ঙ্কর রক্তাক্ত স্বপ্নের মধ্যেও রাজপুত্র দেখতে চেষ্টা করে মেয়েটার মুখ, সে মুখে কি উল্লাস না বিষাদ? কেমন ও চোখ, চোখের তারা? সে চোখে কি জল না হাসি? কে তুমি রাজকন্যা বনের ভিতর ময়ূরী হয়ে আছো তোমার বোনেদের সঙ্গে? এ জীবন্ত হৃৎপিন্ড উৎপাটিত করে না দিলে হবে না তোমাদের শাপমুক্তি? এ তুচ্ছ জীবনের বিনিময়ে যদি তোমরা সাতজনে বাঁচো, তাহলে---- কিন্তু কোথায় তোমরা, কেমন করে খোঁজ পাবো তোমাদের?

কিছু দেখা যায় না, সবকিছু নীল কুয়াশায় ঢাকা, ছায়া এসে ঢেকে দেয় রাজপুত্রের দৃষ্টি। স্বপ্ন ভেঙে যায়, বিছানা ছেড়ে উঠে রাজপুত্র বাগানে নেমে পড়ে। আকাশে অপার্থিব হাসি নিয়ে ভেসে আছে কৃষ্ণা প্রতিপদের চাঁদ।

পরদিন সকালে রাজপুত্র বললো সে অভিষেকের আগে সঙ্গীসাথী নিয়ে মৃগয়ায় যেতে চায়। অভিষেক হয়ে গেলে রাজ্যশাসনের নানা কাজে ব্যস্ত হয়ে গেলে তখন আর এভাবে তো বন্ধুবান্ধব নিয়ে আনন্দ করার সুযোগ পাওয়া যাবে না।

রাজা অনুমতি দিলেন, বন্ধুবান্ধবেরা উত্তেজিত, চারিদিকে মৃগয়ার সাজোসাজো আয়োজন শুরু হয়ে গেল। আজ রাতেই জঙ্গলমহল কেল্লায় যাওয়া হবে, সেখানে রাত্রিবাস। পরদিন সকালে সেখান থেকে মৃগয়া শুরু হবে।

শিকারের অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নিজের নিজের প্রিয় ঘোড়ায় উঠে রাজপুত্তুর আর তার সঙ্গীসাথীরা রওনা দিলো, অন্যান্য মালপত্র নিয়ে লোকলশকর ততক্ষণে রওনা হয়ে গেছে কেল্লার দিকে।

সেই রাতে সঙ্গীসাথীরা সবাই মিলে একসাথে রাত কাটাচ্ছে কেল্লায়। কথা কি আর শেষ হয়? খানাপিনা কথাবার্তা হচ্ছে আর রাজপুত্তুর উসখুশ করছে আর ভাবছে আর বুঝি ঘুমানোই হলো না। না ঘুমালে মায়াময়ী তোমায় কোথায় পাবো? "ওরা কেবল কথার পাকে নিত্য আমায় বেঁধে রাখে / বাঁশির ডাকে সকল বাঁধন খোলাও খোলাও খোলাও ---"

(আগামী পর্বে সমাপ্য)


মন্তব্য

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

লোকে এত ঘন ঘন চা খায় কেন? চা খাওয়া ছাড়া তাদের কাজ নেই নাকি? এভাবে একশ'টা গল্প কবে শেষ হবে তাই ভেবে পাইনা।

মালয়েশিয়ার "রাজা সুতন"-এর গল্পটাও বলে ফেলুন।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অনিন্দিতা চৌধুরী এর ছবি

এটা তো আরও তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেল।
নাহ্ পাব্লিকের চা খাওয়ার উপর জরিমানা আদায় করা ছাড়া উপায় নাই।

মর্ম এর ছবি

অন্যায়!! ঘোর অন্যায়!!!
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

তুহিন এর ছবি

এভাবে চলে না, চলতে পারে না। ভাইসব, বজ্রকন্ঠে আওয়াজ তুলুন.............

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।