ফেরা

ভণ্ড_মানব এর ছবি
লিখেছেন ভণ্ড_মানব [অতিথি] (তারিখ: মঙ্গল, ২৭/০৪/২০১০ - ৫:৫৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সারাদিন আমার কোন কাজ নেই। আমার একটা ছোট্ট রুম আছে, সাথে বাথরুম-বারান্দা আছে। মোবাইলে ইন্টারনেট আছে। খুব বেশি প্রয়োজন না হলে আমি রুম থেকে বের হইনা। আমার রুম থেকে বের হলেই আব্বার সামনে পরতে হয়, কিন্তু আমি তার সামনে পরতে চাইনা। তাকেও বিব্রত করতে চাইনা, নিজেরও লজ্জা পেতে আর ভালো লাগে না।

নিজের রুমে অনেক্ষণই ভাল লাগে। তাও সন্ধ্যার পর কারেন্ট থাকলে আইপিএল এর খেলা দেখতে বসি। আব্বা আড়চোখে আমার দিকে তাকায়। আমি আর এখন এসব পাত্তা দেই না। আব্বা বলেন, পাঁচ মাস তো হয়ে গেল, কি চিন্তা-ভাবনা করছো? আমি উত্তর দিই না, দাঁতের গোড়ায় জন্মানো পাথরগুলা জিহবা দিয়ে ঘষতে থাকি। মনে অবশ্য ঘুরপাক খেতে থাকে, প্রায় অর্ধবছর হয়ে গেল আমি কিছু করিনা।

সময়টা শুরুতে এতটা খারাপ ছিলনা, ছিল আমার শরীরে তেল। শুরুর দিকে দুএকটা চাকরী ফিরিয়ে দিয়ে বরং ভেতরে ভেতরে বেশ গর্ববোধ করেছিলাম। আস্তে আস্তে টান শুরু হলো। ফিরিয়ে দেয়া চাকরীগুলার একটা যদি এখন আমাকে কেউ ফিরিয়ে দিত, অনবরত প্রার্থণা করতাম। হঠাৎ করেই মনে হলো, আমি কিছু একটার পিছে ছুটছি, কিন্তু ছুঁতেই পারছিনা। নিজেকে চরম ব্যর্থ মনে হয়।

খারাপ সময়ের অভিজ্ঞতা এটাই প্রথম আমার। এর আগে জীবনে কখনো ঠ্যাক খাই নাই। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে এসে ফাকিবাজি শুরু হলো আর তারই ফসল আজকের দুর্বিশহ জীবন। মানুষজন এড়িয়ে চলতে চলতে ক্লান্ত লাগে। সারাদিন চোরের মত পালিয়ে বেড়াই। বুক ধকপক করে কখন যে কার সামনে পরি। নিজে নিজেরে গাল দেই, কেন যে খাপে খাপ মিলতাসে না। মাঝেমাঝে উপরওয়ালার উপর রাগ হয়। কি এমন পাপ করেছি যে এভাবে আমার উপর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন।

বন্ধুরা সবসময় পাশে আছে। চাকরিজীবিরা খোঁজখবর নেয়। বেকার বন্ধুরা আরো বেশি নেয়। আড্ডায় চাকরিজীবি কাউকে পেলেই আর চা সিগারেটের চিন্তা করতে হয়না। শুরুতে ব্যাপারটা উপভোগ করতাম, কামাইকরা দোস্ত পাইলেই খুশিমনে কইতাম, আজকে আমার দ্বায়িত্ব তোর। এখন অনেকে অনেক ব্যস্ত। অফিস টাইমে ফোন দিলে অনেকেই বলে, একটু বিজি দোস্ত, পরে ফোন দিই। আমি আর ফোনের অপেক্ষা করিনা। এক ধরণের চাপা কষ্ট নিয়ে মনে মনে ভাবি আমি কবে বিজি হবো।

ইদানিং চাকরিওলারা ঘনঘন পার্টি দিচ্ছে। পরেছি বিপদে। বুক ফেটে যায় পার্টিতে যাওয়ার কথা উঠলেই। ভাল লাগে না এত পার্টি। তাও কাছের দোস্তরা ফোন করে ডাকে, রওনা দিছি কিনা খোঁজ নেয়। কিছুক্ষণ মন খারাপ করে আমিও চলে যাই। পার্টি মানেই একসাথে অনেকগুলো পরিচিত মুখ। সেগুলো দেখতেই ছুটে যাই। চাকরিওয়ালা আর বেকার উভয়দলেরই চাকরিবাকরির খবর নেই, আমার খবর দেই। বন্ধুদের জড়িয়ে ধরার সময় চোখ ঘোলা হয়, খুব খেয়াল করে নিজেকে সামলে নেই, যত যাই হোক লজ্জায় পরা যাবে না। হঠাৎ আমার নিজেরও পার্টি দিতে ইচ্ছা করে।

সবচেয়ে মন খারাপের একটা ঘটনা বলি। আমাদের একটা বেকারালয় ছিল। মহাখালিতে। শুরুতে একপাল বেকার সেই বাসায় থাকতো। ধীরে ধীরে বেকারের সংখ্যাও কমতে থাকে, চাকরিজীবিরা মহাখালি ছাড়তে থাকে। শেষ পর্যন্ত দুইবেকার পরে থাকে মহাখালি, আর আমি বহিরাগত বেকার। আমরা তিনজন ম্যালাদিন বেকার ছিলাম একসাথে। ওদের বাসা ছিল আমার শেষ আশ্রয়। নিজের বাসায় একটু বেশি মন খারাপ লাগলেই বেকারালয়ে চলে যেতাম, রাতভর গল্পগুজব আর মাস্তিতে ভালোই কাটতো দিন। আমাদের মধ্যে খুব ভাল শেয়ারিং ছিল, মানে তিন বেকার অন্তঃপ্রাণ। হঠাৎ দিনদুয়েকের ব্যবধানে শুনিযে দুটোই বেকারত্বকে লাথথায়ে দূর করেছে। আর আমি হয়ে গেলাম থ্রি ইডিয়টের তিন নম্বর ইডিয়ট। বন্ধুদের সাফল্যে আমি কিঞ্চিত চুপসে গেলাম, হা হুতাসে পরলাম, হায় হায় আমার কি হবে, সবারই গতি হয়ে যাচ্ছে, আমার কবে হবে। বন্ধুরা সান্তনা দিতে ভুল করেনা। ভেতরটা আমার কষ্টে নীল। ওরা এখন অনেক ডাকে মহাখালিতে, আমি যাইনা, আমার মনে হয় এই দৃশ্যটা আমার ভালো লাগবেনা যে, রাতভর আড্ডা দিলাম তিনজন মিলে, সকাল এগারটায় ঘুম ভেঙ্গে দেখবো আমি বাসায় একা, ফোন করে একটাকে জিজ্ঞেস করবো তালা কোথায় রেখেছিস?

কথায় বলে না যে বিপদ যখন আসে চারিদিক দিয়ে আসে। এত কিছুর মধ্যে নতুন করে হানা দেয় টাইফয়েড। বুঝিনা, সারাদিন বাসায় খাই, দাই, ঘুমাই, দিনে দুইটা সিগারেট খাই, টাইফয়েড আর মানুষ খুঁজে পায়না। জ্বরে কাতরাই, মা-বাবা সেবা করে, বঞ্চিত করেনা, আমার অন্তর কাঁদে। আমার জন্য অনেক টাকাপয়সা খরচ হয়ে যায়। আমার মধ্যে কি যেন কাজ করে, বারেবারে খালি মনে হয় আমি মা-বাবার এক কুলাঙ্গার সন্তান!

অন্তরে যে কি কাজ করে এই বাজে সময়গুলোতে তা অনেক কাছের মানুষকেই বোঝানোর চেষ্টা করেছি, কেন জানি পুরোপুরি সফল হইনা। কষ্টগুলো ভেতরেই থেকে যায়, মন চায় সেগুলো ছুঁড়ে ফেলি, কিন্তু পারিনা। কষ্টগুলোকে যেন শিকল পরিয়ে একটা বদ্ধ ঘরে অল্পকিছু অক্সিজেন দিয়ে ফেলে রাখা হয়েছে, সে বেরও হতে পারেনা, ভেতরে থেকেও শান্তি পায়না। আমার মা কষ্টগুলো উপলব্ধি করেন। মা বলেন, তোর ভাল কিছু হবে। মায়ের কথাগুলো যে সান্তনা নয় বরং তার বিশ্বাস, তা আমি ঠিকই বুঝতে পারি। সবচেয়ে ঝামেলা করে আত্মীয়-স্বজন আর প্রতিবেশীরা। আমি তো এদের সামনেই পরি না, মা আমার কৌশলে এদের প্রতিহত করেন। মা আমাকে আব্বার বাঁকানজর থেকে আগলে রাখার চেষ্টা করেন। আব্বাকে বলেন যেন আমারে আব্বা কিছু না কয়। ঘুম থেকে উঠি এগারটায়, আম্মা তাও আদর করে আমার জন্য নাস্তা বানায় দেয়। আমাকে বুঝায় একটু সকাল সকাল উঠতে, তাহলে আব্বায় নাকি একটু খুশি হয়। আমি পারিনা, কেন জানি হয়ে উঠে না। আলস্যে নাকি বিরক্তিতে নাকি ক্লান্তিতে আমি জানিনা।

শেষ দিকে আমার অভ্যাসের ব্যাপক পরিবর্তন হয়। সকাল সাড়ে সাতটা আটটার মধ্যে ঘুম ভেঙ্গে যায়। আমার ঘরে থাকতে মন চায়না। অফিস করতে মন চায়। মনে মনে কল্পনা করি, এখন হাত মুখ ধুয়ে, গোসল করে নাস্তা করবো, তারপর কাপড়চোপড় পরে অফিসের দিকে রওনা করবো, বাসা থেকে বের হয়ে মোড়ের দোকান থেকে একটা সিগারেট ধরিয়ে রিক্সায় উঠবো। সারাদিন অফিস করবো, লাঞ্চ করবো, সন্ধ্যায় ক্লান্ত শরীর নিয়ে বাসায় ফিরবো। মা আমার জন্য পিয়াজু ভেজে রাখবে, আমি দুয়েকটা খেয়েই ভাত খাবার বায়না করবো। পরের দিনের অফিসের কাজের কথা চিন্তা করতে করতে এগারটা বাজার আগেই ঘুমিয়ে পরবো। কল্পনায় জীবনটা কতো সুন্দর মনে হয়!

পাঁচ-ছ’মাস বেকার থাকা তেমন কোন ব্যাপার বা কষ্টের বোঝা আমার মনে হতোনা যদিনা এই প্রতিটি মাসের অপেক্ষায় একটি মেয়ের কষ্ট সমানুপাতিকহারে না বাড়তো। হ্যাঁ, মেয়েটির বাবা-মা ভীষণ নির্দয়। মেয়েটির একটাই চাওয়া, আমি যেন দ্রুত একটা চাকরি বাগিয়ে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যাই। আমিতো সেই চেষ্টাই করি, পারিনা। সে আমাকে উৎসাহ দেয়, সাহস দেয়, আমি তাকে দেই সান্তনা, বলি ধৈর্য ধরতে। ধৈর্যের বাধঁ আর মানে না। মাঝেমাঝে আমরা দুজনেই একে অন্যকে দোষারোপ করি, অপরকে দোষী করে নিজে দ্বায়মুক্ত হতে চাই। আবার ফিরে আসি, ভালবাসায়, স্বপ্ন দেখি, একদিন হবে মুক্তি, এইতো কষ্টের পরেই আসবে সুখ, আর মাত্র কটা দিনই তো!

নতুন বছর আমাদের জন্য মুক্তির বার্তা নিয়ে আসে। ফোনে আমরা দুজনই একদম নিশ্চুপ, শুধু অঝরে নোনা জল গড়িয়ে পরে আমাদের চার চোখ দিয়ে।

[অনেকদিন পর লিখলাম। দুঃখের কাহিনী একদমই লিখতে চাইনি, তারপরও তিথী মেয়েটার কথা মনে করে লিখলাম। মেয়েটা বলে এখন বেকার। আমি বলি, একটা বিয়েশাদি করে ফেললেই তো বেকারত্ব কেটে যায়। তিথী, একটু ধৈর্য ধরো, নিজের উপর বিশ্বাস রেখো, খারাপের পর ভাল সময় আসবেই।]


মন্তব্য

তিথীডোর এর ছবি

এ্যাঁ! চিন্তিত
এটা আবার কোন 'তিথী'??
চেনা চেনা লাগে... চোখ টিপি

--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

লেখাটা কি অতীত না বর্তমান সেটা বুঝতে পারলাম না বলে বিস্তারিত মন্তব্যে গেলাম না ...

লেখা হিসেবে অসাধারণ হইসে শুধু এইটুকু বলে গেলাম ...
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

লেখা ভাল লেগেছে। যদিও দুঃখ ভাল লাগে না।

ভালবাসার জন্য শুভকামনা। হাসি

টাইপোর জন্যেই বোধহয় অনেকগুলো "ড়" এর জায়গায় "র" লিখেছেন। হাসি
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

ভ্রম এর ছবি

আপনাদের জন্য শুভকামনা।
লেখা খুব ভালো লাগলো হাসি

মূলত পাঠক এর ছবি

খুব ভালো লাগলো। বাস্তব অভিজ্ঞতার তীব্রতার সামনে কাল্পনিক লেখা দাঁড়াতে পারে না। আশা করি সমস্যার দিন দ্রুত কেটে যাবে।

তাসনীম এর ছবি

দারুণ লেখা।

হঠাৎ পুরান কিছু স্মৃতি ফিরে এল লেখা পড়ে, পাশ করে অনেক দিন বেকার ছিলাম, টাইফয়েড পর্যন্ত হয়েছিল এর মধ্যে।

সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে সুনিশ্চিত।

+++++++++++++++++++++++++++++++++

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

তিথীডোর এর ছবি

উদ্ধৃতি
"নুতন বছর আমাদের জন্য মুক্তির বার্তা বয়ে আনে"

লেখক কিন্তু এখন আর বেকার নন!

--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

আমি ঠিকই গেস কর্সিলাম তাহলে দেঁতো হাসি
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

তাসনীম এর ছবি

লেখককে অভিনন্দন। তাহলে এটা ইংরেজি নববর্ষ, বাংলা নয়।

++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

তিথীডোর এর ছবি

লেখায় চলুক

'বালক- বালিকার' দেঁতো হাসি জন্যে অজস্র শুভকামনা....

ধন্যবাদ জানিয়ে ছোট করবো না; তবে "ক্যাচালকন্যা" উপাধি দেওয়ার অপরাধ মাফ করে দিলাম! হাসি
ভালো থাকবেন|

--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

আমারো মনে হয় সামনে কঠিন দিন...

লেখা ভাল্লাগসে, বেশ ভাল্লাগসে...

_________________________________________

সেরিওজা

মৃত্তিকা এর ছবি

লেখাটা ভালো লাগলো।

ইডিয়ট নং ১ এর ছবি

হারামজাদা আইস তুই আর একদিন মহাখালি...চাকরি পাইছি বইল্লা তুই পালাবি! খাড়া তোরে পাইয়া লই... :@
যাই হোক মন দিয়ে আপিস করিস খাইছে

রেশনুভা এর ছবি
নিবিড় এর ছবি

বালক বালিকার জন্য শুভ কামনা রইল। লেখা অনেক ভাল লাগছে চলুক
আর চাকরীর ফাকে ফাকে সময় পেলে একটু লেখালেখি কইরেন স্যার হাসি


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

অতিথি লেখক এর ছবি

মনটাই খারাপ করে দিলেন। আমিও তো আপনারই পথের পথিক কিনা। যদিও পড়াশোনা এখনও শেষ হয় নাই। তবে কোন বড় ভাইদের কাছ থেকেই আশার কিছু শুনি না। যাই হোক আপনার জন্য রইল শুভ কামনা। খারাপ দিন খুব বেশী স্থায়ী হয় না। আশা করি খুব শিঘ্রই আপনি চাকরী পাবেন।
তার্কিক

অতিথি লেখক এর ছবি

মনটাই খারাপ করে দিলেন। আমিও তো আপনারই পথের পথিক কিনা। যদিও পড়াশোনা এখনও শেষ হয় নাই। তবে কোন বড় ভাইদের কাছ থেকেই আশার কিছু শুনি না। যাই হোক আপনার জন্য রইল শুভ কামনা। খারাপ দিন খুব বেশী স্থায়ী হয় না। আশা করি খুব শিঘ্রই আপনি চাকরী পাবেন।
তার্কিক

মিলু এর ছবি

তুমি এত সিরিয়াস চিন্তা করতে পারো...!! আমার কেন জানি বিশ্বাস হচ্ছে না। এই আরমানকে আরো আগে দেখলে অনেক ভালো হতো।

অতিথি লেখক এর ছবি

সকালে লেখা পড়ে গেসি , মন্তব্য করি নাই। এখন ফিরে এসে দেখি আপনি চাকরিও পেয়ে গেছেন। আর সমবেদনা জানাবো কি, আপনি এখন অন্য দলে।

অনেক শুভ কামনা রইলো। হাসি
আমাদের মত গরীবের জন্য দোয়া রাইখেন মন খারাপ আমিও সহজে রুম থেকে বের হই না।

মেয়ে

ইডিউট নং ২ এর ছবি

ওয়ে বাল্লে বাল্লে, ভন্ডারমান ইজ ব্যাক দেঁতো হাসি

হঠাৎ আমার নিজেরও পার্টি দিতে ইচ্ছা করে
- কবে নাগাদ?

ওরা এখন অনেক ডাকে মহাখালিতে, আমি যাইনা, আমার মনে হয় এই দৃশ্যটা আমার ভালো লাগবেনা যে, রাতভর আড্ডা দিলাম তিনজন মিলে, সকাল এগারটায় ঘুম ভেঙ্গে দেখবো আমি বাসায় একা, ফোন করে একটাকে জিজ্ঞেস করবো তালা কোথায় রেখেছিস?
- সবাইতো আর দুঃসময়ের সুযোগ নেয় না, বেকার জীবন ছিল তোর জন্য শিক্ষাসফর, এইবার একটু পিছ ছাড়। আর, ওয়েল্কাম টু মহাখালি ;p

সারাদিন অফিস করবো, লাঞ্চ করবো, সন্ধ্যায় ক্লান্ত শরীর নিয়ে বাসায় ফিরবো। মা আমার জন্য পিয়াজু ভেজে রাখবে, আমি দুয়েকটা খেয়েই ভাত খাবার বায়না করবো। পরের দিনের অফিসের কাজের কথা চিন্তা করতে করতে এগারটা বাজার আগেই ঘুমিয়ে পরবো। কল্পনায় জীবনটা কতো সুন্দর মনে হয়!
- আগামী মাস থেকে বুঝবি কয় প্যাকেটে কয় বিড়ি দেঁতো হাসি

আর মাত্র কটা দিনই তো!
- হ্যা, ভরা পেটে ঢেঁকুর তোলার অপেক্ষায় আছি দেঁতো হাসি

অফটপিকঃ প্রচুর বানান ভুল, বানান-পুলিশগুলা যখন ধরে নাই, তখন আমিও কিছু বললাম না চোখ টিপি

@তিথীঃ বেকার জীবন শান্তিময় হাসি

তিথীডোর এর ছবি

সাজিদ ওরফে 'স্পার্টাকাস'

উদ্ধৃতি
"বেকার জীবন শান্তিময়"

হ, কইছে আমনেরে! রেগে টং

--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

স্পার্টাকাস এর ছবি

যারা দুই-তিন মাস হল চাকরিতে জয়েন করছে, তারা সবাই এই কথা বলবে- বিলিভ মি হাসি

---------------------------------
জননীর নাভিমূল ছিঁড়ে উলঙ্গ শিশুর মত
বেরিয়ে এসেছ পথে, স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবি হও।

জননীর নাভিমূল ছিঁড়ে উলঙ্গ শিশুর মত
বেরিয়ে এসেছ পথে, স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবি হও।

অনিকেত এর ছবি

চমৎকার একটা লেখা।
অবশ্য আমার যে কোন 'মন-খারাপী' লেখা খুব ভাল লাগে।
কেন জানি দুঃখী মানুষগুলোকে খুব কাছের জন মনে হয়।

সারাটা লেখায় যে দুঃখের বোধ ছড়িয়ে আছে, সেটার সাথে আমার পরিচয় অনেক দিনের। আমি নিশ্চিত, অনেক পাঠকেরও একই অনুভূতি হবে।

সমস্ত ঝড়-ঝাপটার শেষে, আমি আশাবাদী হতে পছন্দ করি।ঝড় শেষে আমার নুয়ে পড়া ঘরটা আবার দাঁড় করাই। মনে মনে বলিঃ

"আগুনের দিন শেষ হবে একদিন
ঝরণার সাথে গান হবে একদিন------"

এমন চমৎকার একটা লেখার জন্যে ভূবনডাঙ্গার খোলা আকাশটা উপহার দিলাম----

মঙ্গল হোক!!

মন্টু দা এর ছবি

ভালো লাগলো লেখাটা পরে | তোর জন্য শুভ কামনা রইল | তবে লেখা আরো আগে আশা করছিলাম |

বেকার জীবনযুদ্ধে তোরই এক সহযাত্রী |

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখা পড়ে প্রথমে খুব খারাপ লাগলেও মন্তব্য পড়ে আর আপনার নতুন জীবনের কথা ভেবে মনটা আবার ভালো হয়ে গেছে। আশা করি দুজন আপনাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন। এখনও পড়ালেখা শেষ হইনি তবে বুঝতে পারছি আমারও কাছাকাছি দশা হতে পারে। আবারও শুভ কামনা রইল।
পলাশ রঞ্জন সান্যাল

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

তা পার্টি কবে? চোখ টিপি
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

রাহিন হায়দার এর ছবি

খুবই চেনা অনুভূতি...
লেখা ভালো হইসে। চলুক
________________________________
তবু ধুলোর সাথে মিশে যাওয়া মানা

ভণ্ড_মানব এর ছবি

সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।
আমার জীবনে বেশ কয়েকটা গেরো তৈরি হয়েছে, যারা এখনো কনফিউশনে আছেন, তাদের বলছি প্রথম গেরোটা হঠাৎ করেই খুলে গেছে, এখন পরের গেরো খুলার চেষ্টায় আছি, সকলের দোয়াপ্রার্থী। হাসি
আর সাজিদ দোস্ত, তোর কমেন্টটা স্পেশাল, এর জবাব সামনাসামনি দেব।
__________________________________
যাক না জীবন...যাচ্ছে যখন...নির্ভাবনার(!) নাটাই হাতে...

__________________________________
যাক না জীবন...যাচ্ছে যখন...নির্ভাবনার(!) নাটাই হাতে...

প্রবাসিনী এর ছবি

তোমার লেখার হাত কিন্তু বেশ ভাল। আরো লিখবে নিয়মিত।

আর গেরো খুলে যাব...এত চিন্তা আর মন খারাপ করে লাভ নেই।
________________________________________________

হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে

________________________________________________

হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে

জেবতিক রাজিব হক এর ছবি

খুব চেনা অনুভুতি নিয়ে বিষাদ একটা লেখা...
তবে মন্তব্যগুলো পড়ে মনটা ভালো হয়ে গেছে হাসি

মামুন হক এর ছবি

লেখাটা মন ছুঁয়ে গেল। অনেক অনেক শুভকামনা রইলো আপনাদের জন্য।

নাশতারান এর ছবি

ঠিক আমার কথাগুলোই বলে গেলেন। আমার এখনো ফিরে দেখার সময় আসেনি, এই যা।

ভালো থাকবেন। শুভকামনা রইলো।

পারলে এখানে একটু ঢুঁ দিয়ে আসুন।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

অতিথি লেখক এর ছবি

তুই যখন আমার অফিস এর চাকরিটা করলিনা বা ২ ৩ দিনের টাইম চাওয়ার কথা স্যার কে বলেছিনি তখন তোর উপর প্রচন্ড রাগ উঠেছিল...... ভেবেছিলাম আর কখন তোকে কথাও refer করবনা...... কিন্তু পরক্ষনেই মনে হয়েছিল না এ আমার বন্ধু যাকে সাথে নিয়ে আমি আমার জীবনের সব চেয়ে অসাধারন ৪টি বছর পার করেছি...... তোকে আমার পক্ষে যতটা সম্ভব ততোটায় সাহায্য করতে হবে......
অবশেষে তোর প্রতিক্ষার পালা শেষ হওয়ায় তোকে জানাই অভিনন্দন......
মন দিয়ে অফিস করিস...... আর উত্তারা আসা ছাড়িস না......

সিডাক্টিভ ভয়েস

রকিব [অতিথি] এর ছবি

বেশ ভাল লাগলো।নিয়মিত লিখার চেষ্টা করিস।

রানা মেহের এর ছবি

এই লেখাটা অনে ভালো লেগেছে
চাকুরি প্রপ্তিতে অভিনন্দন
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

বোহেমিয়ান এর ছবি

লেখাটা মিস করলাম কীভাবে!
চমৎকার লেখা চলুক .

সব গেরো খুলে যাক।

ইয়ে আপনি যেহেতু চাকরীজীবি তাহলে একটা পার্টি... চোখ টিপি

_________________________________________

_________________________________________
ওরে! কত কথা বলে রে!

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

অভিনন্দন ভাইয়া... ভালো থাকবেন... লেখাটার মেয়েলী রূপ হয়তো পড়তে পাবেন শীঘ্রই! হাসি

-----------------------------------------------------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে আমার প্রাণের কাছে চলে আসি, বলি আমি এই হৃদয়েরে; সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

গতিহীন [অতিথি] এর ছবি

আপনি এত ভাল লিখেন তারপরেও জীবনের কোন এক সময় খানিক সময় বেকার ছিলেন, অন্য কোন কোন কিছু নাই হোক অন্তত না খেয়ে মরবেন না কিন্তু আমার কী অবস্থা হবে সামনের দিনে...
হজ্বে ও লাগুম না মক্কাতেও লাগুম না...

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

লেখাটা খুব ভালো লাগসিলো। নিজের অনেক কথা মনে পড়ে গেসিলো। আমিও প্রায় মাস ছয়েক বসে থাকার পর চাকরি পাইসিলাম। আমার ইচ্ছা ছিলো নিজের চেষ্টায়, নিজের যোগ্যতায় চাকরি পাবো। কারও সাহায্য নিবো না। শেষ পর্যন্ত সেটা করতে পারসি। কিন্তু ওই ছয় মাসের শেষের কয়েক মাস যে কী মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যাইতে হইসে, তা বলার মতো না। আমার বাপের ধারণা ছিলো আমি কোনওদিন চাকরি পাবো না। আম্মা সামলায়া রাখতো। বেলা করে ঘুমানো, দিনভর কম্পিউটার চালানো, রাত জাগা... (দীর্ঘশ্বাস)... অনেক কথা মনে পড়ে গেলো। নিজের সাথে অনেক মিল পেলাম লেখাটার।

তারানা_শব্দ এর ছবি

চাকরী পেয়ে গেলে কষ্ট আর কষ্ট থাকে না.. মন খারাপ

লেখাটা খুব সুন্দর...

"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।