প্রথম আলো এবং এবিএম মুসা : পাগলে কি না বলে...?

যূথচারী এর ছবি
লিখেছেন যূথচারী (তারিখ: মঙ্গল, ১৮/১১/২০০৮ - ৯:০৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মিথ্যা দিয়ে সত্যকে ঢাকতে গিয়ে এবিএম মুসা তাল হারিয়ে ফেলেছেন। ব্লগকে ব্যক্তিগত লেখনী বলে মনে করি বলে ভেবেছিলাম অনেক গালিগালাজ করবো। কিন্তু পরে ভেবে দেখলাম, পাগলকে গালিগালাজ করলে আরো বেশি পাগলামি করবে, জনান্তিকে প্রকাশ, তিনি নাকি এই ব্লগের লেখার কথা শুনেছেন। বোধ করি, তাতেই জ্ঞান হারিয়ে এই উল্টাপাল্টা পাগল-সদৃশ লেখালেখি। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আজ আর গালিগালাজ করবো না। আদর করে বুঝিয়ে বলবো।

১. "আমি অন্তত শুনিনি বা জানিনি, পত্রিকায় পড়িনি"-এর অর্থ কী? আপনি যে দেশের অধিকাংশ খবর রাখেন না, বিশেষ করে গণমানুষের কথা বা গণআন্দোলনের কথা আপনার অজানা থাকবে, এটা তো খুবই স্বাভাবিক। এসব কথা অহেতুক পত্রিকার হাটে হাড়ি ভাঙ্গার কি দরকার? পুতুপুতু সোনাজাদুমণি, এইসব অজ্ঞতা, মূর্খতার কথা জনসমক্ষে বলতে নেই।

২. ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদের আপনি দেখেননি, এটা তো আমরা জানি। বিশেষ করে আপনার মতো "ধর্ষকের পক্ষাবলম্বনকারী" কিছু ব্যক্তি আন্দোলনটিতে শুধু নারীই দেখেছেন, এটা তো সবাই-ই জানে। এক হাট পুরুষের মাঝে একটা নারী থাকলেও কোনো কোনো লোকের চোখ তাকেই খুঁজে পায়, কিছু লোক অন্যরকম।

কেন জানিনা, মিছিলের প্রথম সারিটি আমার পছন্দ। কিন্তু আমি সাক্ষী, প্রথিৎযশা আলোকচিত্রসাংবাদিক ফিরোজ চৌধুরী আমার মাথার ওপরে আমার পেছনের মেয়েদের অসংখ্য ছবি নিয়েছেন, প্রথম সারির ছেলেদের অংশগ্রহণ বাদ দিয়ে। তার পরেও অসংখ্য ছবি আছে। আমার ফেসবুকের এলবাম-এর ছবিগুলো চোখ বুলালেই দেখবেন, শত শত ছেলের ছবি মিছিলে, নারী শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি। আরো শত শত ছবি আমার কাছে আছে। স্মৃতিভ্রান্ত অথবা স্বেচ্ছাভ্রান্ত একজন ব্যক্তিকে আমি শুধু আদর করে বলতে চাই, ওলে লোলে, এইসব ভ্রান্তি অথবা আলুসংক্রান্ত বিষয়াদি কাগজসমক্ষে বোলো না, জাদু, লোকে কি বলবে?

৩. সিন্ডিকেটের সাত সদস্যের কমিটির অধিকাংশ সদস্য যে অকর্মণ্য ছিলো এটা আমরা জানতাম। কেবল এএন রাশেদা-র ঘাড়ে সব দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে আপনারা আসলে বিষয়টিকে প্রহসনে পরিণত করতে চেয়েছিলেন। সিন্ডিকেটে আপনার তথাকথিত "অনানুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত" ব্যাপারটা আসলে কি, সে বিষয়ে ১৯৯৮ সালে দৈনিক সংবাদে এ এন রাশেদা পরিচ্ছন্ন করেছেন। আপনি লিখেছেন, আপনি ছাড়া আর কেউ নাকি তখন জাবির আন্দোলন নিয়ে কলম ধরেনি, অন্তত ১০ টি পত্রিকা আমার কাছে আছে, যেখানে ওই আন্দোলন নিয়ে লেখা ছাপা হয়েছে। নিজের লেখা ছাড়া অন্য লেখা আপনি পড়েন না বলেই জানেন না, এ এন রাশেদা-র ওই লেখায় তিনি আপনাদের মুখোশ উন্মোচন করেছেন। আত্মমগ্নতা এবং দায়িত্বজ্ঞানহীনতার এই পরিচয়ের জন্য আজকে আপনাকে আর গালিগালাজ করতে চাচ্ছি না, শুধু আদর করে বলতে চাই, ওলে সোনা, কুয়োতে না একটা ব্যাঙ আছে, সে ভাবতো কি জানো....?

৪. ছাত্রমৈত্রীর কেউ ক্যাম্পাসে তখন ছিল না। ওই আন্দোলনে তাদের কোনো ভূমিকাও ছিল না। আমি তখন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট-এর পাঠাগার সম্পাদক ছিলাম, ঢাকায় গণতান্ত্রিক ছাত্র ঐক্যের (সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য থেকে ছাত্রদল ছাত্রলীগ সহ তিনটি ছাত্র সংগঠন বিদায় নেবার পর যে জোটটি দাঁড়ায়) মিছিলে পুলিশের লাঠিচার্জে মারাত্মক আহত হবার প্রেক্ষিতে আপনি আমার পক্ষে কলম ধরেছিলেন (যদিও অবস্থানটি ছিল আওয়ামী), আমার সেটি মনে আছে। একজন সংগ্রাহক হিসেবে পত্রিকার কপিটিও আমার কাছে আছে। ঢাকায় ছাত্রমৈত্রীর সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ হতো, মিটিং হতো। কিন্তু জাহাঙ্গীরনগরে আমরা গণতান্ত্রিক ছাত্র ঐক্যের মিছিল করতাম কেবল ছাত্র ইউনিয়নের সঙ্গে। ছাত্রমৈত্রীর কোনো শিক্ষার্থীর সন্ধান আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে আমরা পাইনি। কলেজে ছাত্রমৈত্রী করা একজন প্রাক্তন কর্মী শশাঙ্ক বরণ রায়, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জাবি শাখার দপ্তর সম্পাদক ছিল। এমনকি আপনার তথ্যদাতা শাকিলা নাজ সোমাকেও আমি চিনতে পারছি না। বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনে তার ন্যূনতম কার্যকরী ভূমিকা থাকলেও তাকে আমার চেনার কথা। (হয়তো অন্য কোনো নাম থাকতে পারে)। তিনি আপনাকে ভুল তথ্য দিয়েছেন। ছাত্রমৈত্রী সাংগঠনিকভাবে তো নয়ই, এমনকি ওই সংগঠনের কোনো অসক্রিয় কর্মীও জাবিতে সেই সময় ছিল বলে আমার জানা নেই। তবে কেন্দ্রীয়ভাবে ছাত্রমৈত্রী আমাদের সমর্থন জানিয়েছিল।

৫. বেশিরভাগ নয়, কয়েকজন বুদ্ধিজীবী সেদিন জাহাঙ্গীরনগরে এসে ছাত্রীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছিলেন। তাদের এই আগমনের অন্তরালে আমার একটুখানি ভূমিকা ছিল। আমি জানতে চাই, এই ভূমিকাই কি অন্যান্য বুদ্ধিজীবীদের ওইদিন না আসার পেছনের কারণ?

৬. "আমাদের এই অনৈতিক ও বেআইনি কাজটি করতে হয়েছিল"- আমি তো সেটাই আপনাকে মনে করিয়ে দিতে চাই। আরো অনেক বেআইনী কাজ আপনরা করেছিলেন বলেই সেই রক্তঝরা আন্দোলনের এই পরিণতি। বাংলাদেশের মেয়েরা বিশ্ববিদ্যালয়সহ কোনো পুরুষশাসিত ব্যবস্থাকেই বিশ্বাস করতে পারে না। এএন রাশেদা-র লেখাটি পারলে সংগ্রহ করে পড়ে নেবেন। আরো কতো বেআইনী এবং অনৈতিক কাজ আপনারা করেছেন, তা বুঝতে পারবেন। এই জন্যেই আন্দোলন চলাকালে অনেক শিক্ষকের সামনে ২৩ আগস্ট রেহনুমা আহমেদকে যখন লাণ্ছিত করা হয় এবং তার ক্যামেরা ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করে পুকুরে ফেলে দিয়ে আনন্দ-উল্লাস করা হয়, তার বিচার আপনারা করেছেন, মূল আসামী মানিক খালাস, মাত্র ২ জনের একজনের ১ বছর আরেক জনের ২ বছরের বহিষ্কারাদেশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিপীড়িত হলে যেখানে ন্যায় বিচার করতে পারেন না আপনারা, তখন আপনাদের বিচার-বুদ্ধি আর সাহসের দৌড় আমাদের যথেষ্ট জানা হয়ে যায়। পত্রিকার পাতায় তার পক্ষে এমন সাফাই না গাইলেও চলে। [আরেকটু মনে করিয়ে দিতে চাই, ২৩ আগস্ট রাতে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রবীণ অধ্যাপক আজিজুল হক ভূঁঞা-কে যখন আপনাদের সব সিন্ডিকেট সদস্যের সামনেই লাঞ্ছিত করা হলো, ওই ঘটনায় তো আপনারা কাউকে এমনকি শাস্তিও দেননি]

৭. আপনার সাত নম্বর পয়েন্ট নিয়ে আমার বলার কিছুই নেই। আপনি নিজেই স্বীকার করেছেন, ছাত্রলীগের ধর্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে তারা যদি আপনাদের জুতাপেটা বা গরুপেটা করে এই ভয়ে আপনারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিরাপত্তা চেয়েছেন। আপনার ওই বক্তব্য থেকেই ছাত্রলীগের হিংস্রতা ও ধর্ষক-মনোবৃত্তির পরিচয় পাওয়া যায়। ২৪ সেপ্টেম্বর আপনার সামনেই আপনার সহকর্মী এ এন রাশেদা-র সাথে মানিকের সহযোগীরা যে আচরণ করেছে, যে অশ্লীল ভাষায় তাকে গালিগালাজ করেছে, তাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়েছে, এবং আপনি সেদিন যে মৌনব্রত নিয়েছিলেন, তখনই যে আপনি ওই বিষয়ে ভীত হয়ে পড়েন, এটা আমরা বুঝতে পারছি। এই সত্যকথনে কোনো দোষ-ই আপনাকে আমরা দিতে চাই না। তবে আপনার মেরুতে একটা দন্ড সংযোজনের জরুরি প্রয়োজন বলে আমরা এই বিষয়ে একটা বিহিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট (যদি কেউ থাকে)-দের প্রতি আহ্বান জানাই।

তোমার মতি ফিরে আসুক, এই আদর দিয়ে শেষ করছি।


মন্তব্য

রণদীপম বসু এর ছবি

আপনি তো দারুণ আদর দিতে জানেন ভাই !

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

জিজ্ঞাসু এর ছবি

ভাল লেখা। আক্রমণের ভাষা আরও একটু প্রমিত বাঙলায় হলে ভাল হত।
একজনকে দিয়ে অন্তত বোঝা গেল অন্যায়ের বিরুদ্ধে না দাঁড়িয়ে আমাদের দেশের তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা দলীয়, অন্ধ পক্ষপাতিত্ব করে বলেই আজকে রাজনীতির এ দশা।

___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে

যূথচারী এর ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্বিবদ্যালয়ে যৌননিপীড়ন বিরোধী আন্দোলন প্রসঙ্গে প্রথম আলোতে এবিএম মুসার একটি উপসম্পাদকীয় প্রকাশিত হয় গত বৃহস্পতিবার। তারপর শনিবার এই মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে একটা প্রতিবাদ পাঠানো হয় প্রথম আলোতে। সঙ্গতকারণেই প্রতিবাদপত্রটি কোমল ভাষায় লিখিত ও প্রকাশিত হয়। প্রথম আলোর সূর্যের তেজ কম। তাই ওখানে কমনীয় শব্দে লিখতে হয়। প্রথম আলো আবার তেজী শব্দ পছন্দ করে না। এই কমনীয়তাই এবিএম মুসাকে উস্কে দিয়েছে। তিনি যে এজেন্সীর হয়ে লিখছিলেন বলে জনান্তিকে ধারণা, তারা দেখলো- আরররে, এতো মিথ্যাচার করলাম, এই ব্যাটারা এতো সাধু ভাষায় (প্রমিত বাঙলায়) লিখলো? এটাই মোক্ষম সময়, ইতিহাস বিকৃতির।
বিশেষত, জাহাঙ্গীরনগরের ধর্ষকেরা হুমকি দিয়েছে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে নাকি তারা আবার ক্যাম্পাসে যাবে এবং সিন্ডিকেটে বিশেষ আইন পাস করে আবার পড়ালেখা (নাকি ধর্ষণ?) শুরু করবে। সাবেক সিন্ডিকেট সদস্য (যিনি একদা ধর্ষক মানিক ও তার সহযোগীদের বাঁচাতে যারপরনাই সক্রিয় ছিলেন)-কে দিয়ে সুবিধাবাদের মুখপত্র প্রথম আলোতে এই লেখার মাধ্যমে তারা সেটির-ই প্রাক-প্রস্তুতি নিয়ে নিলেন বলে নিন্দুকেরা মন্তব্য করছে। আমি অবশ্য ওইসব গালিগালাজের মধ্যে এখন নাই। আমি এই মুহূর্তে আদর করে সাফসাফ বুঝিয়ে বলার পক্ষে।


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...

আরিফ জেবতিক এর ছবি

ঠিকাছে । আদর করে বুঝানোই ভালো ।

সুমন চৌধুরী এর ছবি
প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

চলুক

সবজান্তা এর ছবি

আশা করছি আপনার উপযুক্ত আদর সোহাগের ফলে তিনি অচিরেই মানুষ হবেন...

লেখায় জাঝা


অলমিতি বিস্তারেণ

অভিজিৎ এর ছবি

এমনিতে প্রথম আলোর সম্পাদকীয় টিয় পড়ি না। আজকে গিয়া মুসার প্রতিবাদের কইফিয়ৎটা পড়লাম। ব্যাটায় তো তু তু করতেছে। আগের প্রতিবাদের ধাক্কা সামলাতে ভদ্রলোককে বড়ই বেগ পেতে হচ্ছে মনে হয়।



পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)


পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)

মুস্তাফিজ এর ছবি

কয়লা ধুইলে ময়লা যায়না

...........................
Every Picture Tells a Story

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

সিরাম আদর!

অম্লান অভি এর ছবি

উপ সম্পাদকীয় পড়লাম। আপনার লেখা ভালো হয়েছে আর সেই সাথে ভদ্রলোকদের জুতা দিয়ে মারতে নেই। সব সময় এভাবে বুঝিয়েই বলবেন।

মরণ রে তুহু মম শ্যাম সমান.....

তানবীরা এর ছবি

কি আর কহিব? কতোই আর সহিব? শুধু দেখিব আর দেখিব .........

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

রান্না ভাল হয়েছে। তবে তরকারীতে ঝাল একটু বেশী।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

আলমগীর এর ছবি

আদর করে বলছেন,
কাজ হবে দেখবেন।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ভালো হইছে...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

হাসান মোরশেদ এর ছবি

জায়গা মতো ।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

রানা মেহের এর ছবি

কিছু কিছু মুসা কখনোই মানুষ হয়না
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

সবুজ বাঘ এর ছবি

এট্টা তথ্যে মুনয় এট্টু ভুল আছে। তাহা হইল যশোরের ভগো বাবু ছাত্রমৈত্রী করতো যশোরে। তে আমরা যহন একনগে গুয়ারবাইন এন্ড পলিটিক সাবজেট্টে ভর্তিক হইলাম, ইয়ার ঘন্ঠাহানি পরই আমরা বন্দু হইয়া গেলামগা। মাসহানি যাউয়ার পর ঘনিষ্ঠতম বন্দু হইয়া গেলামগা। তে বন্দু ভগো বাবু মাঝেসাঝেই খুপ আক্ষেপ নিত, ইনভারছিটিতে এট্টা দল খুলা হারলাম না বইলা। বন্দুর এই আক্ষেপ আমার ভালো নাগতো না। তে হ্যারে কইলাম, দুঃকু করিস না, তুই দল খুল আমি তর নগে(যেভাবে আমি শত্রু ফ্রন্ট, ফ্যাদারেশম আর এউনিয়মের নগেও আছিলাম) আছি। তে হে আমার আশ্বাস পাইয়া ক্ষ্যানে সামোসী অয়, আবার ক্ষ্যানে ভয় খায়।
এই পরিস্থিতির এক পর্য়ায়ে আমরা একদিন দুরু দুরু বুকে ক্যাফেতারিয়ার উয়ালে কয়টা পুস্টার মারলাম রাইতের বেলা। সকালে যাইয়া দেহি ক্যারা যানি ছিঁড়া হালাইছে। এই বাবু ডরাইয়া গেলগা, দৈনিকি ডর বাড়ে। যারে দেহে তারে দেইহাই ডরায়, মুনে হেই বুধয় হ্যারে মারব। এই কইরা যহন আমাগো ফাস্টো ইয়ারের ফাইলাল পরীক্কা আইয়া পড়ল, হেইদিন ভুর বেলা বাবুরে হলের অন্য পুলারা ধইরা আনলো সেন্ট্রাল নাইব্রেরির পুহুর থিকা, নুমূর্ষু দশায়। পরে তাহারে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়া যাউয়া হইল, ডাক্তাররা ঘুষণা দিল, রুগীর তার কিঞ্চিত ক্ষতিগ্রস্ত।
আমরা তহন কী করি, বাবু পরীক্কা দিয়া হারব কি হারবো না, এই নিয়াই বিরাট টেমশম। ইয়ার দিন সাতি কাইট্যা যাউয়ার পর বাবুরে ধইরা নিয়া গেলাম ছলিমুদ্দি ষঁাঢ়ের বাইত্তে, কইলাম, এই এই ঘটমা।
ষাঢ়ে কয়, আরে এইন্না কিচ্ছু না। কুনোদিন ভয় খাইবা না। খালি হাসবা, খেলবা আর হুররা দিয়া বেড়াইবা।
এই ববোস্তাপত্র নিয়া আহার রাইতেই বাবুর পুরা তার ছিরা গেলগা। মুসলমান কুনো ছেলেকে আর সে বিশ্বাস করতে পারলো না, আশ্রয় নিল মানিকগঞ্জের হিন্দু দীফকের কাছে। দীফক সেই রাইতে তারে ক্যাম্ফাস থিক্যা তার বাইত্তে নিয়া গেল আমাগো অনুরুধেই। হ্যার পরের দিন বাবুর বাপে আইল এবং তারপরের দিন বাবু বাপ সহ যশোরে বছরখানির নিগ্যা চইলা যাউয়ায় শত্রুমৈত্রীর বিশ্ববিদ্যালয় শাকা গজাইতে পারলো না। খুপ কষ্ট পাইছিলাম হেইদিন।
ইয়ার চাইর বছর পর অবশ্যি অরিন্দ্য আরিফ নামে এক বুইড়া ছুকরা ভর্তি হইয়া শত্রুমৈত্রী আংশিকভাবে শুরু করা হারছিল, তহন আর ধর্ষণ বিরোধী মুভমেন্টের তৃতীয় পর্যায় শেষ।

হিমু এর ছবি

মারলো রে, বাঘু এসে মেরে দিলো হাসি

বাঘাদা তুই কেমুনাছিস? থাকিস্কই? খাস্কি?


হাঁটুপানির জলদস্যু

নির্বাক এর ছবি

যুথচারী, অভুতপুর্ব আপনার এই লেখনী। ধন্যবাদ বললেও অনেক কম বলা হয়।

_________________________________________
তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ
আমি আজ চোর বটে!

দিনমজুর এর ছবি

আদর ভালো হয়েছে-------

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।