দরজাটা খুলে যাওয়ার পর ওপাশে আমার গোমড়ামুখো পড়শী ফদলুর রহমানকে দেখে আমার কেন যেন ভালো লাগে না।
এয়ারপোর্ট থেকে পাওলো কোহেলোর একটি বই কিনতে কিনতে কি মনে করে মত পালটে এই বইটি কিনলাম। লেখক সিআইএ'র সর্বোচ্চ পদক পেয়েছেন তার অবদানের জন্য। বইটি পড়তে খারাপ লাগে না, রীতিমত রগরগে গোয়েন্দা কাহিনী। কিন্তু গুডর
পেয়েই বুঝেছি-
প্রাপ্তি আড়াল করে চরাচর রক্তে ভেসে যায়
ক্ষমার আড়ালে যেই লজ্জ্বার পরিণত ভয়
তার কোনো আচ্ছাদন নেই!
রাত্রির নৈঃশব্দে যে রকম
গর্ভিনী গাভীর নত চলন-
তাদের ঈষৎ চিনি
ঈষৎ জ্বলনে আমি ঘুমাতে পারিনা!
আমার তন্দ্রায় আমি শিমূল গাছের গুঢ কাঁটা
ছাড়াতে পারিনা।
গুল্মে র-লতার আর বাকলের রহস্য বুঝিনা!
পেয়েছি বলেই আমি বুঝে গেছি
সোনামোড়া কাঁথার কথিত রহস্য
জেনেছি আমার নয়
জেনে গেছি-
১
ধর্মগড়ের প্রকৃতিতে তখনও ভোরের রেশ কাটে নি। কুয়াশার লেপ মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকা শীতের মলিন দিনটিকে সদ্যজাত ভোর ভেবে পাখিরা তখনো কাকলিমুখর। মাঝে মাঝে ঘুঘুর প্রলম্বিত উদাসী ঢাক। সকালেই ঘুম ভেঙে গিয়েছিল তবু চোখে লেগে ছিল আবেশী আলস্য। গতরাতে পড়ে শেষ করা ‘উয়ারী-বটেশ্বর শেকড়ের সন্ধানে’ সিথানের পাশে পড়ে আছে। এক বিলুপ্ত নগরী আবিষ্কার ও উৎখননের রোমহর্ষ আমাকে অধিকার করে রেখেছিল গতরাতে।
চুপি চুপি ঘড়ির কাঁটা কখন যে অনেকদূর পথ পরিভ্রমণ করেছে বুঝতে পারিনি। সকাল নয়টা বেজে ছয় মিনিট। ফোনটা তখনি এলো। জানালা দিয়ে ভেসে আসা ঘুঘুর স্বর ছাপিয়ে সেলফোনের ভেতর থেকে ভেসে আসা কোকিলের মতো স্বর আমাকে সচকিত করে তোলে। “আমি ডঃ শাহনাজ বলছি, ডিসি সাহেব আপনার ফোন নম্বর দিয়েছিলেন...”