বেহুদা পোস্ট: কাজের তালিকায় "ট্রান্সফর্মারস"

অমিত আহমেদ এর ছবি
লিখেছেন অমিত আহমেদ (তারিখ: বুধ, ০১/০৮/২০০৭ - ১১:২৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

autoকাজের তালিকা

অনেক কাজ দু'হপ্তা থেকে জমে আছে। একটি তালিকা বানানো যাক:

১) গবেষণা: তিন-চার দিনের মধ্যের আমার মডেলটি বানিয়ে ফেলতে হবে। কিসের মডেল, কেমন মডেল তা বলতে গেলে অনেক কিছুই বলতে হয়। শুধু বলি, আমার গবেষণার অনেক কিছু নির্ভর করছে এই মডেলের সার্থকতার উপর। শেষ করতে না পারলে সেপ্টেম্বরের কনফারেন্সও ধরতে পারবো না।

২) পড়া: এক সাথে একাধিক বই শুরু করা আমার পুরাণো অভ্যাস। ঘুরে ফিরে একে একে পড়ি বইগুলো। কোনো বই "আনপুটডাউনেবল" হলে অবশ্য আলাদা কথা, তখন একটানেই শেষ হয়ে যায়। এখন পড়ছি মোট চারটি বই। কোনটিই এখনও মাঝ পর্যন্ত আসেনি, অথচ সবগুলোই তুখোড়, দুর্দান্ত জমজমাট!

৩) লেখালেখি: দু'টো গল্প আধা লিখে বসে আছি। একটি "বেহুদা পোস্ট" শুরু করেছি, শেষ করতে ইচ্ছা করছে না। "গন্দম" এর পরের পর্ব প্রায় শেষ, কিন্তু ভাল্লাগছে না। একটু পরিবর্তন করতে হবে, সেটি আদপে কখন হবে কে জানে! "নটরডেমিয়ান" সিরিজটিও ধরা দরকার। আরেকটি প্রজেক্টের কাজ পুরোটাই মাথায় আছে (ইয়েস হাসান ভাই), একদিন সময় করে লিখে ফেলতে হবে। সেই সময়ই আসছে না!

এমন স্টেজ সবারই আসে, কিন্তু আমার এমন সময়ে এসেছে যে দিশেহারা বোধ করছি। কি যে করবো!

ট্রান্সফর্মারস

অরূপ ভাইয়ের পোস্ট পড়ে আমারও একটু লিখতে ইচ্ছে করলো। "ট্রান্সফর্মারস" দেখে আমার প্রথম যে কথা মনে হয়েছে তা হলো - ইউএস গভর্নমেন্ট কত টাকা বিনিয়োগ করেছে সিনেমা বানাতে? সারা সিনেমা জুড়ে ইউএস মেরিনকে খুব জোশিলা ভাবে উপস্থাপন করা হলো। বাচ্চা-কাচ্চা যাদের বোধ-বুদ্ধি এখনো হয়নি তাদের আর্মিতে নাম লেখানোর জন্য খুব কার্যকর পন্থা। আমেরিকান সরকার কিন্তু সব সময়ই এমন করে থাকে। বিশেষ সময়ে নাম করা প্রোডাকশন হাউসগুলোকে চিঠি পাঠিয়ে জানায় - "এই প্লটে সিনেমা বানালে বিশেষ সরকারি সুবিধা দেয়া হবে", কিংবা "মিলিটারি নিয়ে সিনেমা বানালে বিনামূল্যে মেরিনের ইকুপমেন্ট ও অস্ত্র ব্যবহার করতে দেয়া হবে"। এগুলো জানা কথা। তাই সিনেমা দেখেই গুগলে সার্চ মেরেছিলাম। যদিও কোনো তথ্য পেলাম না, আমি মোটামুটি নিশ্চিত সরকারি হাত আছে সিনেমাটার পেছনে [আপডেট: সন্দেহ সত্য প্রমানিত হয়েছে। উইকিপিডিয়া লিংক: http://en.wikipedia.org/wiki/Transformers_(film)]

যে দু'টো ব্যপারে অরূপ ভাই আপত্তি তুলেছে, সেসব ব্যাপারে আমিও কনফুসিয়াসের মতোই মজা পেয়েছি। নিজেদের সঙ্গে নিজ ভাষায় চালানোই শোভন। আমি বাঙালি দলে এক-দু'জন ভিনদেশি থাকলেও তাদের সম্মান জানাতে ইংরেজিতে কথা চালাবো। কারণ বিপরীত অবস্থানে আমি নিজেও তাদের কাছ থেকে এই ভদ্রতাটুকু আশা করি।

কল সেন্টার বিষয়ে বলবো - সব বিষয়ে বর্ণবাদ খোঁজা কোনো কাজের কথা নয়। টেলিমার্কেটিং নিয়ে আমরা উত্তর আমেরিকাবাসীরা কি-যে পেরেশানিতে থাকি! অর্বাচিনেরা হপ্তায় হপ্তায় ফোন করে বিরক্ত করে। ইদানিং এমন অবস্থা হয়েছে যে আমি ফোন ওঠাতেই ভয় পাই - সব কল অ্যান্সারিং মেশিন হয়ে তবে আমার কাছে আছে। এদেরকে আরও পঁচানো দরকার। সেলিম ভাইয়ের কিছু মজার কাহিনী আছে এদেরকে নিয়ে। পারলে একটা পোস্ট দিয়ে দেন সেলিম ভাই।

পরিশেষে বলি সিনেমাটি কিন্তু ভালোই লেগেছে। কোন কাহিনী নেই বলে দেখার সময় কোনো চিন্তা আসে না। নিছক বিনোদন যাকে বলে আর-কি! সিনেমাটির অনেক জায়গাতেই হো: হো: করে হাসতে হয়েছে, সেটি বড় কম পাওয়া নয়। অভিনয়, ডিরেকশন, অ্যানিমেশন ভালোই লেগেছে। এডিটিং আরও ভাল হতে পারতো।

এক থেকে পাঁচ রেটিংয়-এ "ট্রান্সফর্মারস"-কে আমি দেবো পাঁচে সাড়ে তিন।

© অমিত আহমেদ

ব্যবহৃত ছবি: উইকিপিডিয়া


মন্তব্য

অমিত এর ছবি

২ নম্বর পয়েন্ট পুরা মিলে গেল। তোমরা মিয়ারা ট্রান্সফর্মার নিয়া কি শুরু করলা !! ভাবলাম ডিভিডি বাইর হইলে দেখব, কিন্তু এখন তো মনে হয় একবার যাইতে হয়। দেখি বোর্ন আলটিমেটাম এর লগে ১ টিকিটে ২ ছবি মারা যায় নাকি।
______ ____________________
suspended animation...

অমিত আহমেদ এর ছবি

ট্রান্সফর্মার থিয়েটারে না দেখলে মজা পাইবেন না। বিগস্ক্রিনে ডলবি ডিজিটাল, তবেই না মজা! বোর্নের ৩ নম্বরের জন্য ওয়েট করতেছি, আগের দুইটা সেই রকম হইছিল।


আমার বেলা যে যায় সাঁঝ-বেলাতে
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে

অরূপ এর ছবি

দুই নাম্বার ডিভিডি বের হলে কিনে ফেলার ধান্দায় আছি, কেএল এর এই একটা মজা চোখ টিপি

লেখা ঠিকাছে চলুক, পয়সা উসুল করা ছবি..
-------------------------------------
রামছাগলের সামনে, খচ্চরের পেছনে আর নিবোর্ধের ধারেকাছে না থাকাই শ্রেয়!

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

ডিভিডির ব্যাপার স্যাপারে কি কেএল ঢাকার থেকেও জোশিলা নাকি? চিন্তিত

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

অরূপ এর ছবি

হু
-------------------------------------
রামছাগলের সামনে, খচ্চরের পেছনে আর নিবোর্ধের ধারেকাছে না থাকাই শ্রেয়!

আরিফ জেবতিক এর ছবি

ঢাকায় ডিভিডিতে ট্রান্সফরমার চইলা আসছে ।

-----------------------------------
কিস্তিমাতের যুদ্ধ শেষে,সাদাকালো ঘুটিগুলো এক বাক্সেই ফেরত যাবে...

কনফুসিয়াস এর ছবি

ডিভিডিতে ট্রান্সফর্মার দেখাটা কাজের কথা না। চোখ টিপি
ওই নায়িকারে ঠিকঠাক 'ধরা'র জন্যে বিগ স্ক্রীণই দরকার। হাসি

-যা দেখি তা-ই বলি...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

অমিত আহমেদ এর ছবি

বাংলাদেশের মানুষের ওই ডিভিডিই শেষ ভরসা।
তবে কথাখান বলেছেন একদম ঠিক ঠিক চোখ টিপি


আমার বেলা যে যায় সাঁঝ-বেলাতে
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে

আরিফ জেবতিক এর ছবি

গরীব দেশের গরীব পাবলিকের আর উপায় কি?
ঘোল পাইলেই দুধ মনে কইরা চিনি গুইলা ঢক ঢক...

-----------------------------------
কিস্তিমাতের যুদ্ধ শেষে,সাদাকালো ঘুটিগুলো এক বাক্সেই ফেরত যাবে...

অমিত আহমেদ এর ছবি

বাংলাদেশে বিদেশী সিনেমার ডেস্ট্রিবিউটর নাই। কারন চলবে না, লস খাবে। তাই পুরান সিনেমা কম দামে আনছে কিছু ডেস্ট্রিবিউটর। বাংলাদেশে বিদেশী সিনেমার বাজার ঢাকা-চট্টগ্রাম কেন্দ্রিক বলে সেসব সিনেমা চলছে এই দুই শহরেই। ভারতেও একই সমস্যা ছিল। সে সমস্যার সমাধান ওরা কিভাবে করেছে শুনবেন? প্রতিটা সিনেমা হিন্দি, মালয়ম, তামিল এসব ভাষায় ডাব করে।

হাস্যকর হলো, ভারতে বাংলাভাষীদের বড় বাজার থাকলেও কোন সিনেমা বাংলায় ডাব করা হয় না। কারনটা শুনবেন? পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মানা আছে। এতে নাকি বাংলা সিনেমার বাজার পড়ে যাবে।

বাঙালি মাত্রই কেন যে এত বেশী বুঝে!


আমার বেলা যে যায় সাঁঝ-বেলাতে
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

ট্রান্সফর্মার দেখে আফসোস একটাই। আদৌ একটা ট্রান্সফর্মেশন ঠিক মত দেখতে দিলো না! মেরিনরা শুধু না, জিএম ভয়ংকর ইনভেস্ট করেছে এটায়। দেখতে দেখতে ভাবছিলাম, মিনিকনদের নিয়ে বানালে সেটার পিছনে টয়োটা টাকা ঢালবে কিনা।

বোর্নের জন্য তো সামারের শুরু থেকে অপেক্ষায় আছি। এই সামারে আমার মোস্ট অ্যান্টিসিপেটেড মুভি।

"আই রিমেম্বার। আই রিমেম্বার এভরিথিং!"

অমিত আহমেদ এর ছবি

GM খোলাখুলি ভাবেই ইনভেস্ট করেছে।
একটু আগে উইকিপিডিয়াতে পেয়ে গেলাম যা খুঁজছিলাম:

"He (the director) had the support of the United States military, who supplied aircraft and vehicles for the alternate modes of the Decepticons, including F-117s, C-130 and C-17 cargo planes, and two CV-22 tiltrotor aircraft, out of three in the U.S. Air Force inventory at that time. Such cooperation led Transformers to be the first film shot at The Pentagon since the September 11, 2001 attacks.

A pre-shoot took place on 19 April 2006, and principal photography began on April 22 at Holloman Air Force Base. The Holloman shoot also included White Sands Missile Range. On June 9, filming was onsite at the Hoover Dam, making the film crew the first to shoot there since 9/11. The crew then based themselves at Hughes Aircraft in Playa Vista, including six weekends of filming the climactic battle in Los Angeles."

বোঝেন!


আমার বেলা যে যায় সাঁঝ-বেলাতে
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে

কেমিকেল আলী এর ছবি

মনে কইরা লই তারপরে পুষ্ট দিমু নে

অমিত আহমেদ এর ছবি

কেমিকেল আলী: করেন মনে করেন। মনে করে নাফিজ ভাইয়ের কাহিনীটা বলেন।


আমার বেলা যে যায় সাঁঝ-বেলাতে
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।