অনীক আন্দালিব এর ব্লগ

পতনের খবর বিষয়ক বিভ্রম

অনীক আন্দালিব এর ছবি
লিখেছেন অনীক আন্দালিব [অতিথি] (তারিখ: মঙ্গল, ০৬/১০/২০০৯ - ৫:৫৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ট্রেনের চাকার সাথে সে পড়ছে।
এটাই সংবাদ ছিল। শিরোনাম ও সংবাদটি একটি লাইনেই বিবৃত। পরের কথাগুলো অজরুরি ও অনুপস্থিত। শুধু খবরটি জানা গেলো- সে পড়ছে।
ক্রমশ ঘূর্ণায়মান চাকার ভেতরের আঁকিবুকি মুছে গেছে গতিতে- আর সে পড়ছে, পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে পড়ে যাচ্ছে মাটিতে।
শব্দহীন।
যে ব্যথাগুলো আজীবন পতনের সাথে জড়িত, তারা জানেও না কবে প্রথম এই অযাচিত পতন, গহীনে বসবাস শুরু করেছে। কেবল প্রতিক্রিয়ার মত...


সেপ্টেম্বরের আঠারোঃ পাথরের ঘ্রাণ!

অনীক আন্দালিব এর ছবি
লিখেছেন অনীক আন্দালিব [অতিথি] (তারিখ: শুক্র, ১৮/০৯/২০০৯ - ১২:৫২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কেন চলে গেলে দূরে, ভাসায়ে মোরে সুরে
কেন ফিরে এলে আবার, বাড়াতে দুখের ভার।

কোন কোন গান কেমন অন্তরের ভেতরে শিকড় গেড়ে ফেলে, ভাবলে অবাক হতে হয়!

*
ছোটবেলায় বাসার সামনে একটা পাকা রাস্তা ছিলো। সেই রাস্তার পাশে পিচ আর আলকাতরা মেশানো দুয়েকটা পাথর দেখা যেতো। ঠিকমতো জোড়া লাগেনি তারা। বিকেলের দিকে আমি সাইকেল চালাতে শিখে সেই রাস্তাগুলো দিয়ে অনবরত ঘুরে বেড়াতাম। নিরাপদ, শান্ত কলোনি। কব...


ভূমিকম্পের পেছনের গল্প

অনীক আন্দালিব এর ছবি
লিখেছেন অনীক আন্দালিব [অতিথি] (তারিখ: বুধ, ১৬/০৯/২০০৯ - ৫:১৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আজকাল পৃথিবী দুলছে।
প্রবল, স্থিতধী যে পৃথিবীকে খুব বন্‌বন্‌ করে ঘোরার পরেও
স্থির লাগে আমাদের, সেই অচল শরীর দুলে উঠছে।
আমরা ছোটবেলায় নানা ছেলেভুলানো বিজ্ঞান পড়ে জেনেছি
এই শরীরে কত বিলিওন বছরের তাপ-জরা-শোক
নিক্তিতে মেপে পৃথিবী চুপচাপ নির্বিকার, আছে বেশ!
এমনকি ঘুরছে প্রবল, মুহূর্তে পেরিয়ে যাচ্ছে অসামান্য দূরত্ব।
আমাদের মাঝেও হয়তো একারণেই দূরত্ব বাড়ে, নাকি!

হয়তো, হবে-ই বা কো...


প্রতিদিন জীবন মৃত্যুরে বলে ধ্যাৎ!

অনীক আন্দালিব এর ছবি
লিখেছেন অনীক আন্দালিব [অতিথি] (তারিখ: সোম, ২৪/০৮/২০০৯ - ১১:৫৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


সামরিকতা

যেভাবে সামরিক বৃষ্টি নামে, সদলবলে সক্রোধে, সুশৃঙ্খল আর্টিলারির মতো, পদভারে মিশে কঠিন রাস্তার ওপরে ছিটকে ছিটকে ওঠে পানির তীর। ঝুম-ঝুম করে ঘুম ঝরে ঝরণার ঝোঁকে, ঝুলে থাকা পর্দার ঘন-আড়াল উঠে যেতে থাকে, আর নেমে যেতে থাকে আকাশ-আলোক-ভূমি, জানালার ফাঁক দিয়ে আমি থম্ মেরে তাকিয়েই থাকি, মেঘের ওপর লুকানো অদৃশ্য ধনুক থেকে অন্ধবেগে আসা তীরগুলো আছড়ে পড়ছে কাচে। "প্রতিরোধ টিঁকবে" জেনে ...


সীড ব্যারেটঃ শাইন অন!

অনীক আন্দালিব এর ছবি
লিখেছেন অনীক আন্দালিব [অতিথি] (তারিখ: শুক্র, ০৭/০৮/২০০৯ - ৩:২২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

গরম পড়ে গেছে কিছুদিন হলো। তখন শরতের শেষ প্রায়, বাতাসের হুটোপুটি চলে। আমাদের রুমের দরজা জানালা খুলে দিলে প্রচুর বেদুইন বাতাস ট্রেসপাসিং করে। আমরা অবশ্য নিজেদের সম্পত্তি বিষয়ে উদাসীন। পৃথিবীতে আরো প্রচুর গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে খেয়াল রাখার। বাতাসে ভিজতে ভিজতেই আমার কম্পিউটারে 'গীটারিক' একটা গান ছাড়ে। প্রথম কয়েক মুহূর্ত কিছুই শোনা যায় না। তার পরে খুব মৃদু একটা কর্ড। আমি কান খাড়া...


স্নানক্লান্তি

অনীক আন্দালিব এর ছবি
লিখেছেন অনীক আন্দালিব [অতিথি] (তারিখ: বুধ, ২৪/০৬/২০০৯ - ১১:২৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

small
পানির ফোয়ারা মুখ থেকে অনর্গল সাপের মতো ফোটায় ফোটায় পানি ছুটে আসছে। প্রথমে তারা উচ্ছ্বাসে ঝাপটা দিল আমার কপালে, ঈষৎ নিচু করে রাখা মুখে দ্রুত গড়িয়ে নামল তারা, সদলবলে, সোল্লাসে। চোখের পাতা কেঁপে উঠলো কিছুটা, পানিবিন্দুর ভারে আবেশে বুঁজে এলো। পানির রথের সেদিকে খেয়াল নেই, দুর্দান্ত দাপটে সে গাল, চিবুক, ঠোঁট, থুতনি পেরিয়ে গেল অনায়াসেই। ত...


১০১০

অনীক আন্দালিব এর ছবি
লিখেছেন অনীক আন্দালিব [অতিথি] (তারিখ: মঙ্গল, ১৬/০৬/২০০৯ - ৪:১৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

নভেম্বরের এক শুকনো বিকেল। বিকেলের রোদ জমাট বেঁধে আছে তখনও, রাস্তায়। আমি গাড়িতে তল্পিতল্পা নিয়ে রওনা দিয়েছি। উদ্দেশ্য ১০১০।

১.
দরজা ঠেলে ঢুকতেই দুটো বিছানা, ডানদিকে লম্বালম্বি, বামদিকে আড়াআড়ি, দরজার পেছনে। চারকোনা ঘর। ঐপ্রান্তে আরও দুখানা বিছানা। ঘরের মাঝখানে দুটো বড়োবড়ো আলমারি দিয়ে মোটামুটি একটা বিভাজন তৈরি করা। আমি যখন ঢুকলাম, তখন কাউকে চোখে পড়লো না, অথচ ঘরে তালা দেয়া নেই। ...


সুকন্যা সম্পর্কিত কর্মপন্থা

অনীক আন্দালিব এর ছবি
লিখেছেন অনীক আন্দালিব [অতিথি] (তারিখ: শুক্র, ১২/০৬/২০০৯ - ১২:৪৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

উপমান আর উপমিত সমাসের মাঝখানে পড়ে, কিঞ্চিৎ টানাহ্যাঁচড়ায় আমার সুকন্যাকে ভালো লেগে গেল। সুকন্যার চেহারাই সব, সেটাই দৃশ্যমান, ভালোলাগা তৈরির জন্যে সেটুকুই যথেষ্ট, এই উপসিদ্ধান্তে আসতে আমার সময় লাগে না; সুতরাং উপমান সমাসের নিকুচি করেই আমি সুকন্যার জন্যে আকুল-ব্যাকুল হয়ে উঠলাম, কুলকুল ঘামতে লাগলাম বিলকুল। এভাবেই সুকন্যার সাথে আমার প্রেমের শুরু হবে। আমরা দুর্দান্ত প্রেম শেষে হা...


জুনের চারঃ পিরিচের ওপর উনচল্লিশটা পানিবিন্দু

অনীক আন্দালিব এর ছবি
লিখেছেন অনীক আন্দালিব [অতিথি] (তারিখ: বুধ, ১০/০৬/২০০৯ - ৯:১৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

small
ঠিক জন্মের মুহূর্তে, আমাদের স্মৃতিতে সম্ভবত কোন তথ্য জমা পড়েনি। পড়লেও, সেই তথ্য, ছবি বা শব্দ উদ্ধারের ক্ষমতা আপাত-সাধারণ মানুষের নাই বললেই চলে। আমার কেন জানি মনে হয় স্মৃতিধর মানুষের জীবনের এটা একটা করুণ পরিহাস, সে নিজের সৃষ্টির মুহূর্তের কোন স্মৃতির সাক্ষী হতে পারে না। সেইসময়টিকে মনে করে কী অপার্থিব অনুভব হতে পারে, সেটা আমাদের কারোই জা...


এই পথ আমাদেরওঃ এই শহরের আমি ও কয়েকজন

অনীক আন্দালিব এর ছবি
লিখেছেন অনীক আন্দালিব [অতিথি] (তারিখ: রবি, ১২/০৪/২০০৯ - ২:১৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ইটের পাশেই ঘাস, মাটি, ধুলো। সিরামিকের ইটের গাঁথুনি, বিন্যস্ত ঘাট। এই হ্রদের পাশে নগর। বা এই নগরের পেটের মধ্যে সেঁধিয়ে গেছে প্রাগোতীত হ্রদ। নীল ছিল এর পানি বোধহয় এক কালে। এখন শ্যাওলাটে ময়লা; পলিথিন, এবং প্লাস্টিকের বোতল। সজ্জা স্বভাবতই নাগরিকের উচ্ছিষ্ট দিয়ে। এবং এই নগরযাপিত সকল ময়লা ধারণ করছে হ্রদ, নিজের বুকে। খানিকটা নীরবেই এর বুকের ওপরে শহুরে সেতুমালার সেলাই, আমরা এফোঁড়-ওফোঁ...