দোষটা কার?

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি
লিখেছেন অছ্যুৎ বলাই (তারিখ: মঙ্গল, ১০/১১/২০০৯ - ৫:৫৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

একটা কথা প্রায়ই ভাবি, মানুষের বর্তমান অবস্থার জন্য সে নিজে কতোটা দায়ী, আর কতোটা সে পরিস্থিতির শিকার। আমি নিজে ভাগ্যে বিশ্বাসী, তবে ভাগ্য জিনিসটার সাথেও মনে হয় অনেকগুলো চলককে জুড়ে দেয়া যায়। এই চলকের সংখ্যা হয়তো অনেক; কিন্তু অসীম নয়, কারণ, অসীম বলে কিছু নেই, অসীম মূলত আমাদের অপারগতা; যেই সীমানাটাকে আমরা সংজ্ঞায়িত করতে অপারগ হই, তাকেই অসীমের মোড়কে সাজিয়ে মস্তিষ্কে জট লাগানোর হাত থেকে বাঁচি। বেঁচে থাকাই আমাদের সকল কর্মের মূল চালিকাশক্তি, তাই আমাদেরকে ওই অভিনয়টুকু নিজেদের কাছেই করতে হয়। এই অভিনয় করা বা করতে বাধ্য হওয়ার কারণে হয়তো কার্য-কারণ সম্পর্কের ঠিক তলানিতে পৌঁছা সম্ভব হয় না, অন্তত বর্তমান প্রযুক্তিতে সেটা সম্ভবপর নয়, এজন্যই ভাগ্য জিনিসটা এখনো রাজত্ব করে, বেনিফিট অফ ডাউট পাওয়া ব্যাটসম্যানও সেঞ্চুরি হাঁকায়, ফকিরের ঝাঁড়ফুঁক এখনো মহৌষধ হিসেবে বিবেচিত হয়।

ভাগ্যের টানাপোঁড়েনের সমান্তরালে একজন মানুষের সো-কলড সাফল্যের সাথে তার প্রাপ্ত সুবিধাদীর ভূমিকা কতোটা আর তার নিজের কাজের প্রভাবইবা কতোটা, সে সম্পর্কে ঢালাও মন্তব্য করার আগে বা সামষ্টিক অর্থে একটা সিদ্ধান্তে আসার আগে প্রত্যেক ব্যক্তিকে আলাদা আলাদাভাবে নীরিক্ষা করা দরকার। আজকের মানব সভ্যতাকে যদি মানুষের সূচনালগ্ন থেকে অপেক্ষাকৃত ভালো হিসেবে সার্টিফিকেট দেয়া যায়, তাহলে বলা যায় প্রত্যেক মানুষই মূলত তার প্রাপ্যের চেয়ে বেশি সুবিধা নিয়ে জন্মায়। এই সুবিধার ভাগাভাগিতে গিয়েই পড়ে যতো গন্ডগোল। কারণ, বিভিন্ন পরিমাপকে কেউ সুবিধার ভাগটা বেশি পায়, আবার কেউ কম পায়। কেউ সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মায়, কেউ রুপোর চামচ, কেউবা চামচহীন। যদিও চামচ জিনিসটার উপযোগিতা; কিংবা সোনা বা রূপার তুল্যমান তার ব্যবহারের ওপর নির্ভরশীল এবং একই কারণে এই পরিমাপকের আপেক্ষিক গুরুত্বও সময় বা পরিস্থিতির সাথে পরিবর্তিত হয়। কেউ তার প্রাপ্য সুবিধাটিকে কাজে লাগায়, কেউ অকাজে লাগায়, কেউ নিজেকে সুবিধাবঞ্চিত ভেবে গড়াগড়ি খায়। সামষ্টিক অর্থে আবার সভ্যতা ঠিকই এগিয়ে চলে। মনে হতে পারে ধবংসই সভ্যতার উন্নয়নের একটা প্রধান শর্ত; কিন্তু মানুষ মূলত সৃষ্টিকামী। ধবংস থেকে মানুষের সৃষ্টির ক্ষমতা অবশ্যই বেশি, সৃষ্টি না থাকলে ধবংস করবে কি? আমার মতে, এই সৃষ্টির ক্ষমতাই মানুষের সমস্ত ন্যায়-অন্যায়ের নির্ধারক হওয়া উচিত। এ থেকে ব্যক্তি মানুষের ওপরও একটা সরলীকৃত; কিন্তু কাজের সংজ্ঞা আরোপ করা যায়। যে মানুষটা সৃষ্টিকে এগিয়ে নিয়ে যায়, সে মানুষের জন্য দরকারী; আর যে সৃষ্টিকে বাধা দেয়, সে দরকারীর ঠিক উলটোটা।

এখন যদি আমরা ন্যায়-অন্যায় ও তার বিচারের দিকে মনোযোগ দেই, তাহলে প্রথমেই ব্যক্তিমানুষকে ব্যক্তি-স্বাধীনতার দোহাই দিয়ে সৃষ্টি বা ধবংস তার ইচ্ছের ব্যাপার বলে চালিয়ে দেয়ার একটা প্রবণতা আমাদের মধ্যে কাজ করতে পারে। সমস্যা হলো, এই প্রবণতা ততোদূর পর্যন্ত ঠিক, যতোদূর পর্যন্ত একজন মানুষ সম্পূর্ণ একা। আদতে মানুষ একা নয়, মানুষ সমাজবদ্ধ জীব। একারণেই ন্যায়-অন্যায় নির্ধারণে সৃষ্টি-ধবংসের হিসেব চলে আসে। হিসেবটা অনেক সময়ই নিষ্ঠুর; কিন্তু মানুষের জীবনটাই কি একটা নিষ্ঠুরতার সাগরে হাবুডুবু খেতে খেতে ভেসে উঠে বেঁচে ওঠা নয়? সুতরাং এই আপাত নিষ্ঠুরতাও মানুষের সামাজিক জীবনের একটা নর্ম, এই নিষ্ঠুরতাও মানুষের একটা প্রয়োজন।

কঠিন সময়েই মানুষের আচরণের খোলসহীন দিকটা বেরিয়ে আসে। যুদ্ধ এমনই একটি সময়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে মানুষের আচরণ বোঝার চেষ্টা করি। তখন সুবিধাবাদিতার বিচারে পাকিদের পক্ষাবলম্বনটাই সবচেয়ে সহজ ছিলো। কিছু লোক সেই সহজ রাস্তাটা বেছে নেয়। তবে অধিকাংশ লোকই সেই সহজ রাস্তায় যায় না। কারণ, রাস্তাটি মূলত মানুষের ধবংসের সাথে জড়িত। সামষ্টিক অর্থে মানুষের ন্যায়-অন্যায়বোধের বিষয়টি এ থেকে অনেকটাই পরিষ্কার হয়ে যায়। কোন কাজটি ন্যায়ের, আর কোন কাজটি দোষের ব্যক্তি মানুষ যদি সেইটা বুঝতে নাও পারে, এমনকি চোখের সামনে হাজার হাজার মানুষের ধবংস দেখেও যদি তার মধ্যে সেটাকে অন্যায় হিসেবে প্রতীতি না আসে, তাহলেও তাকে বেনিফিট অফ ডাউট দেয়া যায় না। কারণ, সেই বেনিফিট অফ ডাউট মূলত মানুষের ধবংসের পক্ষে যায়, সৃষ্টিকে কাঁচকলা দেখায়। এখানে ব্যক্তির জন্য অনুভূতি যা-ই হোক, নিষ্ঠুরতাটা মানুষের প্রয়োজনেই করতে হয়।

ইদানিং উপরিউক্ত অন্যায়কারীদের পাশাপাশি ধর্মের নামে সন্ত্রাসীদেরও বেনিফিট অফ ডাউট দেয়ার একটা প্রচারণা চলে, তাদেরকেও একটা সুযোগ দেয়ার, তাদের কথাও শোনার বায়নার সম্মুখীন হতে হয়। তাদের প্রতি 'অবহেলা'র দায় চাপিয়ে দেয়া হয় মানুষের ওপর এবং যেহেতু তাদের ওপর এই ধরে নেয়া অবহেলা করা হয়েছে, সেহেতু তাদেরও অন্যায় করার অধিকার জন্মায় - এইজাতীয় ধ্যান-ধারণার শাখা-প্রশাখা বিস্তৃত হয়। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে ইসলামকে ব্যবহার করে যে জঙ্গীরা মানুষের ওপর আক্রমণ করে, তাদের এই আক্রমণের সাথে ইসলামের সম্পর্ক কতোটুকু? একজন মুসলমান হিসেবে আমি মনে করি, ধর্মীয় নির্দেশের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই। যদি থাকে, তাহলে এই গুটিকয়েক জঙ্গী ছাড়া বাকিদের মুসলমানিত্ব শেষ হয়ে যায়। এই মুসলমানিত্ব শেষ হওয়াটা আসলে ধর্মীয় কারণেই গুরুত্ববহ। কারণ, বিশ্বাসের আল্লাহ যদি এমন একটা নির্দেশ দিয়ে ইসলামকে মানুষের জীবন-বিধান হিসেবে পাঠান, যাতে মানুষের সৃষ্টির পরিবর্তে ধবংসকেই উৎসাহিত করা হয়, তাহলে সেই বিশ্বাসের মৃত্যু ঘটে। অবধারিতভাবে মৃত্যু ঘটে আল্লাহ, ঈশ্বর, ভগবানদের। মৃত ঈশ্বরের নামে তখন আবার জিহাদ করা যায় না। ধর্ম যেহেতু মানুষের জন্য, সেজন্য ধর্মকেও হতে হয় মূলত মানুষকেন্দ্রিক। মানুষের ধবংসের সাথে জড়িত কোনো আদর্শকে কি তাই বেনিফিট অফ ডাউট দেয়ার কোনো সুযোগ থাকে?

মাদ্রাসায় পড়া একটা ছেলে মানুষের কাছে শান্তির বাণী প্রচার করছে আর অন্য একটা ছেলে মানুষকে মারতে তরবারী প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। এখানে দ্বিতীয় জনকে বেনিফিট অফ ডাউট দেয়ার কোনো স্কোপ কি আছে? প্রাইভেট ইউনিতে পড়া একটা ছেলে অসুস্থ বন্ধুর চিকিৎসার জন্য রাত-দিন একাকার করে পরিশ্রম করছে, টাকা সংগ্রহ করছে, অন্য একজন হিযবুত তাহরীর বা আল-বাইয়্যিন্যাত বোমাপ্রযুক্তিতে হাত মশকো করছে। এখানে অবহেলাটা কোথায়? এখানে বৈষম্যটা কোথায়? আর বৈষম্য থাকলেও কি নির্বিচারে মানব সভ্যতা ধবংস করতে হবে? সেই ধবংসকারীদের 'যুক্তি' শুনতে আমি বাধ্য? তাদেরকে 'সুপথে' আনা আমার দায়িত্ব? মোটেই না। মানুষ তার নিজস্ব কৃতকর্মের জন্য নিজেই দায়ী এবং কৃতকর্মটা যদি মানুষের ধবংসের জন্য হয়, তাহলে সেটা দোষের, সেটা অন্যায়ের।


মন্তব্য

সবজান্তা এর ছবি

হিযবুত তাহরীরের অংশটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কাছের থেকে কয়েকজন হিযবুত কর্মীকে দেখার কারণে, "মনোযোগ কিংবা সুবিধার অভাবেই হিযবুত" এই তত্বে ঠিক বিশ্বাসী হতে পারি না।এর চেয়ে বরং সুবিধাবাদিতার তত্ব অনেক ভালো খাপ খায়।

যাই হোক, ভালো একটা বিষয় নিয়ে লিখেছেন। শুরুর দিকে দার্শনিক অংশ নিয়ে একটা ভালো আলোচনা হতে পারে। আপাতত ব্যস্ত থাকায় সেদিকে আর গেলাম না। আর জঙ্গীবাদের অংশে "অনেকে" কী বলে, সেটা দেখার অপেক্ষায় থাকলাম।


অলমিতি বিস্তারেণ

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

উত্তারধুনিক বেনিফিট অফ ডাউট ফর্মূলার মূলনীতি হলো সবক্ষেত্রে ডাউট সৃষ্টি করে বেনিফিট নেয়া। এটা স্রেফ সুবিধাবাদিতার একটা উপায়। ঘটনার ব্যবহারিক প্রয়োগকে টাচ না করে একটা আপাত ঘোলাটে অবস্থা সৃষ্টি করে মাছ শিকারই এদের উদ্দেশ্য।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- আজকে সচল পড়তে গিয়ে বারবার হোঁচট খাচ্ছি। সবাই কেমন সব কঠিন লেখা লিখে রাখছে। নাকি আমার মস্তিষ্কই বেশি সরল হয়ে গেছে, বুঝতে পারতেছি না! মন খারাপ
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

মস্তিষ্ক ঠিকই আছে। এই লেখার প্রথম তিন প্যারা পড়ে আমারো মাথা ঘুরায়।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

সুজন চৌধুরী এর ছবি
অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

হাসি

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

মণিকা রশিদ এর ছবি

বলাই দা, লেখাটা খুব ভালো লেগেছে। সেই কারণেই দু-একটা কথা বলার ইচ্ছে হচ্ছে।

আমার সবসময়েই মনে হয়েছে মানুষকে অনেক যত্ন ও মমতা দিয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে। আর এই মানুষ হিসেবে জন্ম নেয়া এবং প্রকৃতির অসাধারণ লাবণ্য অনুভব করার ক্ষমতাই মানুষের জন্যে সোনার বা হিরের চামচ। নইলে সেইভাবে ভেবে দেখলে সাধারণ অর্থে অধিক সুবিধাপ্রাপ্ত মানুষ বা কম সুবিধাপ্রাপ্ত মানুষ একটি আপেক্ষিক বিষয় বলে মনে হয়। কিছুটা নদীর ওপার থেকে অজানা এপারকে দেখার মতন করে। সব মানুষের মধ্যে একটা অভাববোধ সারাজীবন থাকে, আমি বলতে চাইছি যে নিজের অবস্থান নিয়ে পরিপূর্ণভাবে সুখী মানুষ হতে পারাও একটা অসাধারণ ব্যপার। যেটা সচরাচর চোখে পড়ে না।
সৃষ্টির সমাপ্তি যে ধ্বংসে সেটা আমরা কম বেশী অনুমান করতে পারি। কিন্তু বেঁচে থাকার সার্থকতা কিন্তু সীমিত ক্ষমতার মধ্যে ভালো কিছু করা। আর এই ভালো বা মন্দেরও সংজ্ঞা, আমি নিশ্চিত, এক এক জনের কাছে এক এক রকম হবে। তবে,বলাই দা, একটা বিষয়ে আমি আপনার সাথে একমত নই-আমি মনে করি প্রতিটি মানুষই মানব সভ্যতার জন্যে দরকারী ,তা সে সৃষ্টিকে এগিয়ে নিয়া যাবার ক্ষমতা রাখুক বা না রাখুক।
শুভেচ্ছা জানবেন।
_______________________________
শান্তিও যদি সিংহের মত গর্জায়, তাকে ডরাই।
--নরেশ গুহ

----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

আপু,

আপনার গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আসলে এরকম একটা ধারণা আমার মধ্যেও ছিলো, "পৃথিবীর প্রত্যেকটা জিনিসই গুরুত্বপূর্ণ, তবে কিছুই অপরিহার্য নয়।" পৃথিবীটা আইডিয়াল হলে চোখ বন্ধ করে এই নীতি প্রয়োগ করা যেতো। সমস্যা হলো, বাস্তবতা একটু ভিন্ন। আমাদের অভিজ্ঞতা দ্বারা আমাদের সিদ্ধান্ত প্রভাবিত হয়। আর তাই আমরা সাপ দেখলেই লাঠি নিয়ে দৌঁড়াই, মশা-মাছি দেখলেই অ্যারোসল ছিটাই। এজন্য 'অপরাধী' শব্দটার অস্তিত্ব আছে, আদালত, জেল-জরিমানারও সিস্টেম আছে। যে মানুষটা সভ্যতা ধবংসের জন্য কাজ করে, মানুষের অভিজ্ঞতা বলে, মানব সভ্যতার জন্য সে একটি ঝামেলার বাইরে কিছুই নয়। এখানে ডাউটতাত্ত্বিকরা বলবেন, তাকে যথোপযুক্ত সময় দিলে সে হয়তো ধবংসের পরিবর্তে সৃষ্টিতে কন্ট্রিবিউট করতে পারতো; কিন্তু এই যথোপযুক্ত সময় বা সুযোগ জিনিসটা আসলে আমাদের অভিজ্ঞতা দ্বারা নির্ধারিত হয়। তা যদি অভিজ্ঞতার সীমা অতিক্রম করে, তখন বাস্তবতার বিচারে আর ডাউটের কোনো স্কোপ থাকে না।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

চলুক

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

হুম!
..................................................................

আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

চিন্তিত
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

তুলিরেখা এর ছবি

খুবই চিন্তার বিষয়।
-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

মামুন হক এর ছবি

খুবই দরকারী লেখা। প্রচুর চিন্তা জাগিয়ে দিলেন মাথায়। ভাবছি। তবে পোস্টের মূলসুরের সাথে একাত্মতা জানিয়ে যাচ্ছি।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

চিন্তিত
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

দুর্দান্ত এর ছবি

ছাগু হওয়ার দায় ছাগুর। চলক অনেক হতে পারে, তবে প্রতিটি চলকের সাথে নিজের পথ বেছে নেবার সূযোগটাও তো থাকে। উপায়ন্তর না থাকলে ঘরে বসে থাকুক। ঘরে বসে থেকে তো কেউ জংগী হয় না, তাকে পথ বেছে সেই অনুপাতে কাজ করতে হয়। মানুষ ভেবেচিন্তেই ছাগু হয়, আর ছাগু ভেবেচিন্তেই জংগী হয়। তাই আমার বেনেফিট অব ডাউট তারা পায় না।

ফাহিম এর ছবি

ঠান্ডা মাথায় মানুষ খুন করে যে, তাকে কোন যুক্তিতে বেনিফিট অফ ডাউট দিতে হবে, এটাই মাথায় ঢুকছে না।

=======================
ছায়ার সাথে কুস্তি করে গাত্রে হলো ব্যাথা!

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

সে হয়তো একসময় 'ভালো' হবে, অবশ্য সেই সময়টা কখন তা কেউ বলে না। কতগুলো মানুষকে বোমা মারার পরে তার উপলব্ধি হবে, সে হিসাবটা জানা গেলো কাজ হতো।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

আহির ভৈরব এর ছবি

লেখা ভালো লাগলো। শুধু মনে হয়, এই কথাগুলি আর কতদিন ধরে বলে যেতে হবে আমাদেরকে!
-----------------------------------------------------
আর কিছু না চাই
যেন আকাশখানা পাই
আর পালিয়ে যাবার মাঠ।

-----------------------------------------------------
আর কিছু না চাই
যেন আকাশখানা পাই
আর পালিয়ে যাবার মাঠ।

ওডিন এর ছবি

হিযবুত তাহরীরের অনেকজনকেই খুব কাছে থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে- তারা 'অবহেলিত' বা 'বৈষম্যের শিকার' এইরকম অনেক 'যুক্তি'ও শুনতে হয়েছে। তবে

দুর্দান্ত লিখেছেন:
মানুষ ভেবেচিন্তেই ছাগু হয়, আর ছাগু ভেবেচিন্তেই জংগী হয়। তাই আমার বেনেফিট অব ডাউট তারা পায় না।
চলুক

---------------------------------------------
ফুল ফোটে? তাই বল! আমি ভাবি পটকা। চিন্তিত

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

আমি একবার আমার এক বুয়েট পাস আল-বাইয়্যিনাত সহপাঠী নিয়ে লিখেছিলাম। সে কোন দিক দিয়ে আমার চেয়ে কম সুবিধাপ্রাপ্ত হলো বা বৈষম্যের শিকার হলো, তা আমিও বুঝতে পারি নাই। আর কম সুবিধা পেলেই নির্দোষ অন্য আরেকজনকে অ্যাটাক করার অধিকার কিভাবে জন্মায়, এইটাও আমার মাথায় ঢোকে না।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

হাসান মোরশেদ এর ছবি

পূর্ন সহমত।
যে কোন আদর্শ কিংবা ইজম- হোক সে সমাজতন্ত্র, হোক সে ধর্মতন্ত্র বাস্তবায়নের জন্য জোরজবরদস্তি, সন্ত্রাস, হত্যা,আতংক সৃষ্টি স্রেফ অপরাধ।
অপরাধের উৎসমুখ বের করে সেটা বন্ধ করা জরুরী, একই সাথে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা ও।

কিসের বেনিফিট অফ ডাউট? কি নিয়ে ডাউট?
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

এইটাই প্রশ্ন। ডাউট কি নিয়া? যে বোমা মেরে মানুষ হত্যা করতে যায়, তারে কিসের ডাউট দিতে হবে? আমরা তো পাগলা কুত্তাও মেরে ফেলি, সেখানে মানুষ নামের জন্তুটির মাথায় কি মস্তিষ্কের পরিমাণ আরো কম, যে সে বুঝবে না? আর না বুঝলেই মানুষকে হত্যা করতে হবে? আবার যাকে হত্যা করবে, সে ডাউটের মহৎ বাণী নিয়ে দুধের ফিডার হাতে এগিয়ে যাবে?

ডাউট ফর্মূলার লোকরা বেসিক্যালি ঝানু মাল। ডাউটের ঘোলাজলে বেনিফিট শিকার করাই একমাত্র উদ্দেশ্য।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

সাইফ তাহসিন এর ছবি

স্বল্প বুদ্ধিতে যা বুঝলাম, তাতেই মাঠা ঘুরাইতেছে, অসাধারন লেখা। বিশাল এক পোস্টার বানায় এইটা যদি সংসদ ভবনের গায়ে লটকায় দেওয়া যাইত!

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।