এই পথের শেষ কি আছে?

ধ্রুব হাসান এর ছবি
লিখেছেন ধ্রুব হাসান (তারিখ: বুধ, ২৫/০৬/২০০৮ - ৮:৪২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

(গত তিন দিন ধরে হঠাত করেই আমার চোখ থেকে ঘুম নিরুদ্দেশ যাত্রা করেছে, ভাবলাম এইসব আবজাব লিখে সময়টা কাটায়। ব্যাপারগুলো এতোই ব্যক্তিগত যে ঠিক বুঝতে পারছিনা সকলের সাথে শেয়ার করাটা ঠিক হচ্ছে কিনা?)

শৈশব (কৃতজ্ঞতাঃ তৈয়বা বেগম লিপি)

ছোট ভাই ফোন দিয়ে বললো, ‘ভাইয়া, দীর্ঘ দিনের অপেক্ষা মনে হয় আমাদের শেষ হতে চল্‌লো, ফাইনালি ব্যাংকের জোনাল অফিস রাজি হয়েছে আমাদের কেস্‌টার সমাপ্তি টান্‌তে! জানো এবার এক পয়সাও ঘুষ চাইনি ওরা! আমি বলার সাথে সাথে তোমার কিন্তু আসতে হবে...বুঝছো তো কেন?’ আমি চুপচাপ আমার আদরের ভাইটার গলার স্বরটা শুনি। বলি, হু, চলে আসবো সময় মতো কিন্তু একমাসের বেশী থাকা আমার পক্ষে সম্ভব না। ও বলে, ‘আচ্ছা আগে আসো তো! রাদিয়ালকেওতো (আমার ছোট ভাইয়ের মেয়ে) তুমি দেখনি ’। আমি কথার মাঝখানে ওকে থামিয়ে দিয়ে বলি, তোকে আমি পরে ফোন দিবোনে, এখন ছাড়ি...।
ফোনটা পেয়ে ঠিক বুঝতে পারিনা আমার কি ঠিক খুশি হওয়া উচিত না মন খারাপ করা উচিত! এই অপশনের কোনটাকেই পছন্ধ করা আমার পক্ষে আর সম্ভব না। আমার শুধু মনে পড়ে এই বাড়ীটা আমার শেষ স্মৃতি চিহ্ন! জন্মের দু’মাস পর থেকেই এই বাড়ীতে বেড়ে উঠেছি; এই দোতলা বাড়ীটিকে ঘিরে কতো স্মৃতি! কতো রাত আমাদের বড় ছাঁদটাতে একলা শুয়ে শুয়ে সারা রাত তারা গুনেছি, নিজের নামের সাথে মিল থাকা তারাটির সাথে কখনো কোন মিল খুজেঁ পাইনি! মনে পড়ে কি পরিমান ভদ্র টাইপ বিচ্ছু ছিলাম আমি, আমাদের বাড়ীর বাউন্ডারীর ভেতরে থাকা অনেক পুরোনো কাঠাঁল গাছটির উপরে টারজান ষ্টাইলে মাচা বানিয়ে দুপুরে ঘুমাতাম (সঙ্গে থাকতো আমার সাদা দুটি নাদুস নুদুস কুকুর, ওদের কাজ ছিলো কেউ আসলেই চিল্লানো)। এই ঘুম নিয়ে একটা মজার ঘটনা মনে পড়ে গেল। আব্বা আমার এই মাচার উপর ঘুমানোটা ভীষন অপছন্দ করতেন; অপছন্দ করতেন আমার কুকুরগুলোকেও। সাধারনত তিনি সন্ধার আগে বাড়ী ফিরতেন না। একদিন দুপুরে ফিরেই আমাকে তলব। দাড়োয়ান কাকু বললেন খেলতে গেছি আমি। কিন্তু আমার বাপ আমাকে চিনতো হারে হারে, কাকুকে বললেন গাছের উপর খুজেঁ দেখতে। কাকু নাকি কাঠাল গাছের নীচে দাড়িঁয়ে অনেক ডাকাডাকি করেছে কিন্তু কিছুই আমি শুনিনি। হঠাত হুড়মুর করে কি যেনো আমাকে ভিঝিয়ে ফেললো, আমি লাফ দিয়ে উঠে দেখি আমার কুকুরগুলো আকাশের দিকে তাকিয়ে চিতকার করছে। আমিও তাকালাম, দেখি আমার বাপ আর কাকু মিলে বালতি ভরে ছাঁদ থেকে আমার উপর পানি ছিটাচ্ছে! আমার শিরদাড়াতে ঠান্ডা একটা অনুভূতি হলো, আমি দ্রুত টারজানের লতা ধরে গাছের নীচে নেমে এলাম। রাতে খাওয়া টেবিলে বসে হেচকি তুলে কান্না সামলানোর চেষ্টা করছি...আম্মা যতই আমাকে খাইয়ে দিতে চেষ্টা করছিলো ততই আমার হেচকি বাড়ে। আব্বা আমার দিকে আড় চোখে তাকিয়ে বলে আইস্ক্রিম খাবি, তোর জন্য ইগলুর ম্যাঙ্গো ফ্ল্যাবারটা এনেছি। আমি হ্যাঁ সূচক সম্মতি দেয়...আব্বা আমার মাথাটা তার বুকে টেনে নিয়ে বলে, দ্যটস্‌ মাই বয়...ওরকম আর ঘুমাতে যাস্‌না গাছের উপর, তুই কি বানর নাকি! আমি কান্না থামিয়ে আইস্ক্রিমটা টেনে নেই, আমরা বাপ-বেটা মিলে খেতে শুরু করি। আমার এখনো মনে পড়ে খাওয়ার ফাকেঁ আড়চোখে আমি একবার দেখে নিয়ে ছিলাম টেবিলের চারদিক ঘিরে অন্যান্য ভাই-বোনগুলোর চিকচিক করা চোখের দিকে! কিন্তু কেয়ার করিনি, বিজয়ের হাসি হেসেছিলাম সেদিন! কেন কি জানিনা ছোট বেলায় আমার সমস্ত ভাইবোন (খালাতো-মামাতো-ফুফাতো সবাই) আমাকে ভীষন অপছন্দ করতো; হয়তো আমার প্রতি আব্বার অতিরিক্ত আস্‌কারাদান এর একটা কারন হবে!

ঐ বাড়ীর একেবারে সামনের দিকে তিনটি ঘর প্রায় বিচ্ছিন্ন মূল বাড়ী থেকে। বাম পাশের ছোট্ট কোনার ঘরটিতে পঞ্চম শ্রেণীতে উঠার পর থেকে আমি থাকতাম, পাশের দু’টি ঘর বেশ বড় হলরুম। প্রথম প্রথম সারা রাত আমি বালিশ আকড়ে নির্ঘুম রাত কাটাতাম পাশের ঘর থেকে কোন শব্দ শুনতে পাবো বলে; ভয় পেলেও চিতকার করতাম না পাছে আবার আমার ঐ স্বাদের ছোট্ট ঘরটি হারাতে হয়। ডীম লাইটের নীলাভ আলোয় কতো কতো মাসুদ রানা, বনহুর আর তিন গোয়েন্দা পড়েছি তার হিসেবও মনে নেই আর। শুধু মনে আছে যেদিন ডাক্তার চোখে মাইনাস পাওয়ারে চশমা ধরিয়ে দিলো সপ্তম শেনীতে উঠার পর, তখন থেকে রাতে বই পড়া আমার জন্য হারাম হয়ে গেল; আব্বা কথাবার্তা ছাড়া রাত দুপুরে এসে আমার রুমে হানা দিতেন। ঐ রুমের প্রত্যেকটা দেয়াল আমার চোখে ভাসে এখনো, দু’টি দেয়াল ছিলো ব্ল্যাক এন্ড রেড, আর বাকী দু’টির একটিতে থাকতো গাদা গাদা চে’র ছবি; আরেকটিতে আমার যত প্রিয় ব্যান্ড দলের ছবি (তবে সবচেয়ে সুন্দর আর বড় পোষ্টার ছিলো পিংক ফ্লোয়েড আর মেটালিকার)। সেই রুমটি যদিও অনেক আগেই ছেড়ে এসেছি আমি। শুনেছি গত চার বছর আগে আমার রুমের পাশে থাকা ডালিম গাছটা আর আব্বার রুমের পাশে থাকা গন্ধরাজ ফুলের বাগানটা মরে গেছে; যদিও এখনো নাকি বাড়ীর তিনদিকের নারকেল গাছের বেষ্টনীটি অবশিষ্ট আছে।

কি হয়েছে আমার, আজ এতো এতো স্মৃতি বানের মতো তেড়ে আসছে কেন আমার দিকে? প্রায় পাঁচ বছর আগে যখন দেশ ছাড়ি বা তারও চার বছর আগে যখন পার্মানেন্টলী চট্টগ্রামকে বিদায় জানিয়ে চলে এসেছিলাম ঢাকায় তখনো তো আমাকে এভাবে স্মৃতি তাড়া করেনি! এমন কি আমার প্রিয় বাবাটা যখন ধুপ করে চলে গেলেন একরাশ দীর্ঘশ্বাস আর কষ্ট বুকে নিয়ে তখনো এমন করে সব কিছু মনে পড়েনি। আজ এতোকাল পর আমাদের বাড়ীটির কথা ভেবে সবকিছু যেন বুকের উপর আছড়ে পড়তে চাইছে; কান্না ছাড়া! অথচ আমিতো জানিই যে এই বাড়ী ছাড়তেই হবে একদিন।

১৯৯৫ সাল পর্যন্ত ঠিক বুঝতেই পারিনি জীবনটা কিভাবে এগোয়। ১০০% বাউন্ডুলে বলতে যা বুঝায় আদতেই তা ছিলাম। যেদিন যখন মন চাইতো চলে যেতাম উত্তরবঙ্গের নওগার শাপাহাড় এলাকার সাওতাল পাড়ায়, অথবা দিনের পর দিন কাটাতাম খাগছরির পাহাড়ে পাহাড়ে, নতুবা পড়ে থাকতাম সেন্টমার্টিনে বা বান্দরবান গিয়ে। আমার বাপ-মায়ের তেমন কোন অবজেকশন ছিলো না আমার এসবে। আব্বা শুধু বলতেন, বাবা তোর কাছ থেকে কিছু আমরা চাইনা শুধু লেখাপড়া ছাড়া। শুধু মনোযোগ দিয়ে পড়ালেখাটা করিস। আমাদের পুরোনো মরছে ধরা জলপাই রঙের জাগুয়ারটা দেখিয়ে বলতেন, এসবের প্রতি কখনো লোভ করিস্‌না। লেখাপড়াটা ঠিক মতো কর এসব এমনিতেই হবে। যেদিন আব্বা তার নিজের ঘাড়ের উপর চেপে বসা প্রায় ৩৫ কোটি টাকার লোনের বোঝা আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে দেশ ছেড়ে একরকম নিঃস্ব হাতে পালালেন আমেরিকার টেক্সাসের পথে ঐদিন ভেবেছিলাম জিজ্ঞেস করবো, বাবা আমাকে তো কখনো কি করে বাণিজ্য করতে হয় তা শেখাওনি শুধু আহাম্মকি জ্ঞানদান ছাড়া! না আমি কিছুই জিজ্ঞেস করতে পারিনি আমার ৬ ফুট লম্বা সুঠাম দেহী বাবাটাকে কাদঁতে দেখে! প্রথমবার যখন উনি আমাদের কাউকে না বলে পালাতে চেয়েছিলেন মাঝরাতে, মনে পড়ে সেই রাতের কথা। আমার দীর্ঘ দেহী বাবাটাকে প্রথমবারের মতো দেখেছিলাম আমার ছোট্ট আদরের বোনটির কোলে মাথা রেখে অঝোরে কাদঁতে! আমার ৬-৭ বয়ছের বোনটি কিছুই বুঝতে না পেরে নিজেও একটু পর কাদঁতে থাকে! আমার সেই ছোট্ট পিচ্ছি বোনটা এখন একটা ফুটফুটে পাঁজি বাচ্ছার মা। গত প্রায় চারমাস ধরে যখনি আমি আমার বোনকে ফোন করি কথা বলতে, সে ফোনের রিসিভারটা কেড়ে নিয়ে তার আজগুবি ভাষায় অনরগল কথা বলে যেতে থাকে। কনভার্শেসনটা অনেকটা এরকম...
জারফিঃ মা মাহ্‌...
মামাঃ জ্বি আম্মু, কেমন আছেন আপনি?
জারফিঃ মা মাহ্‌......ডোরাহ্‌...উকি কি বকি...মিকি...মা মাহ্‌...
মামাঃ মা আপনি কি করেন? কিচ্ছু বুঝি না তো!
জারফিঃ মা মাহ্‌...
মামাঃ ইয়েস মামা, হাউ আর য়ু?
জারফিঃ মা মাহ্‌...মিকি...কি...ফাইন...কিছু বিচু মুগররর্‌...ওকে...
এভাবে চলতেই থাকে তার কথাবার্তা, আমি একসময় হাসতে হাসতে লাইনটা কেটে দেই। ও ক’দিন পর দু’বছরে পড়বে, এখনো ওকে আমার ছুয়ে দেখা হয়নি! জারফিটা পুরা ওর মায়ের মতো ফাজিল হয়েছে, যা কিছু হাতের কাছে পায় ভেঙ্গে ফেলে। আমার বোনও আশ্চর্য ধৈর্য নিয়ে ওকে আরো জিনিষপত্র কিনে দেয় ভাঙ্গার জন্য। এই মা মেয়ে দু’টোর জন্যও বেচেঁ থাকতে ভালো লাগে মাঝে মাঝে। আশায় থাকি একটু সুদিন এলে ওদের দেখতে যাব।

কিন্তু এই সুদিন আসবে কবে? ইন্টার পাশের পর ভেবেছিলাম এবার দুনিয়াটা ঘুরতে বের হবো। সেই হিসেব কষে নিজের জমানো টাকাতে চলে গেলাম পুনেতে, একটা বছর সাংবাদিকতাও পড়লাম। কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ফিরে আসতে হলো দেশে, আব্বা বললো তাকে একটু ব্যবসায় সাহায্য করতে। আমি হা হয়ে আব্বার মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলাম সেদিন; এই বাপই কিছু বছর আগে বলেছিলো আমার এসব নিয়ে না ভাবলেও চলবে! আব্বা আমার মুখের ছবিটা নিমিষে পড়ে ফেলে বললেন, সব দিন তো একরকম যায়না! আমার বিশ্বস্ত লোক দরকার ব্যবসায়, কিছু দিন সময় দে, তারপর আবার যা ইচ্ছে করিস। কিন্তু আমার জীবনে আর সুদিন ফিরলো না। যখন ফ্যাক্টরীটার হাল আমার কাধেঁ এসে পড়লো তখন তেমন কিছুই আর করার নেই। ব্যাংকের ৯৯% করাপ্টেড প্রশাসন, কোম্পানীর মেনেজম্যান্টের ভেতর ঘাপটি মেরে বসে থাকা রক্তের সম্পর্কের রক্তচোষার দল, তারউপর বসে থাকা ট্রেড ইউনিয়নের কিছু আবাল টাইপের শ্রমিক নেতা সবাই মিলে কোম্পানীর হলুদ বাতি জ্বালিয়ে রেখেছে। আমি যাওয়ার কিছু দিন পর জ্বলে উঠলো লাল বাতি। পরপর বন্ধ হয়ে গেল দু’টি কোম্পানিই। আমার বাবার শিল্পপতি হওয়ার স্বপ্নের কবর রচিত হলো। সার্সন রোডের দাদার কাছ থেকে পাওয়া পাহাড়ের অবশিষ্ট একটি অংশ বাবু মিয়ার কাছে বিক্রী করে দিতে হলো, নাসিরাবাদের পাকিস্তান আমলের পুরোনো বাড়ীটিও বিক্রী করে দেয়া হলো। তাও লোনের অর্ধেকও মিঠানো গেলো না! শুরু হলো আব্বার গভীর রাতে বাড়ী ফেরা। কতোদিন ভোররাতে আব্বার রুমের সামনে ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থেকে ফিরে এসেছি, কিছু বলতে পারিনি। একদিন সাহস করে রুমের দড়জা নক করে ঢুকলাম, দেখি উনি নামাযে। সালাম ফিরিয়ে বললেন কাছে আসতে, ইশারায় জায়নামাজের উপর বসতে বললেন। আমি বললাম আমার ওজু নাই। উনি আমার হাত ধরে টেনে বসালেন, আমার কপালটা টেনে নিয়ে চুমু খেয়ে নিজে নিজেই বললেন, আমার মাসুম বাচ্ছাটাকে আমি কত কষ্টই না দিচ্ছি। আমার গলাটা বাকরুদ্ধ হয়ে উঠলো, তারপরও বলে বসলাম, আপনার যা কিছু ছিলো প্রায় সবিতো বিক্রী করে দিলেন। এই বাড়ীটা আর শহরের বুকের ঐ জায়গাটাতে প্লীজ হাত দিয়েন না। আমি কিছু পলিটিশিয়ান মেনেজ করেছি তারা ব্যাংক মেনেজ করবে, শুধু আর পঞ্চাচ লাখ খরচ করলে চলবে। আব্বার মুখটা শক্ত হয়ে গেল, বললো, বাবা আমি কোন কর্য নিয়ে মরতে চাইনা। ধরে নে তোদের আমি কিছুই দেইনি। তোরা শুন্য থেকে শুরু কর আবার। আমি কিছু না বলে উঠে এসেছিলাম ঐ দিন। তারপর সময় গড়ালো অনেক, আব্বা এক সময় আমেরিকা চলে যেতে বাধ্য হলেন। আমার এদিকে জঘন্য অবস্থা, প্রায় ২৪ ঘন্টায় আমার ফোন বাজে। অবস্থা এমন দাড়ালো যে একসময় ফোনের রিং টোনের শব্দ শুনলেই আমার মাথা ব্যাথা শুরু হয়ে যেত, তার উপর যোগ হলো রাস্তার গাড়ীর হর্নের শব্দ। আমি কানে কটনবার ঠেসে চলাফেরা করা শুরু করলাম; এমন কি লোকজনের সময় কথা বলার সময়ও! শুধু আমার প্রয়োজনে কান থেকে কটনবার নামাতাম। দেখতে দেখতে পাচঁটা বছর চলে গেল। পেইন্টিং-এ অনার্সও পাশ করে ফেললাম। এখনো আশ্চর্য লাগে, ব্যবসা, পলিটিক্স আর ছবি আকাঁ এই তিনটা কি করে করেছিলাম টানা সাতটি বছর ধরে! লোনের বোঝাটা কমিয়ে একসময় নামিয়ে আনলাম এক কোটি আশিতে (এত টাকা আমি কোন দিন একসাথে দেখিওনি)! হঠাত একদিন আমার সেল ফোনে একটা গলা শুনতে পেয়ে আমার আত্মাটা কেপেঁ উঠলো, আমি ট্রেন ভর্তি লোকের সামনে চিতকার করে আব্বাকে বললাম আপনার আর ওখানে থাকার দরকার নেই চলে আসুন।

তখন ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে ভি আই পি এলাকাতেও ভিসিটরদের ঢুকতে দিতোনা। পুলিশ/ বিডিআরের বেষ্টনীর ভেতর দিয়ে যাত্রীদের বেরুতে হতো। আমি একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি এক্সিটের দিকে। হঠাত দেখতে পেলাম একজন ফর্সা লম্বা শীর্ণকায় মানুষ ন্যুজ হয়ে এদিক ওদিক দেখছে। ক্ষনিকের বিভ্রান্তি ঝেড়ে ফেলে বাবা বলে চিতকার করে বিডিআরের মুষ্টিবদ্ধ হাতের উপর লাফ দিয়ে দৌড় দিলাম আব্বার দিকে। আব্বা আমার মাথাটিকে ছোট বেলার মতো তার হাড্ডিসার বুকে টেনে নিয়ে কপালে চুমু খেলেন আর ঢুকরে কেদেঁ উঠলেন। একটু পর আব্বা চট্টগ্রাম যাওয়ার কি ব্যবস্থা করেছি জানতে চাইলে আমি বললাম ডোমেষ্টিকে টিকিট কাটা আছে জিএমজির। প্লেনে উঠে দু’জনে চুপচাপ বসে আছি, আমার পাশে বসে আছে আরেক মাল কানিজ সুবর্না আর রবি চৌধুরী। আব্বা শুরু করলেন, কোন দরকার ছিলোনা প্লেনের টিকিট কাটার। আমি বাসেই যেতে পারতাম। আমি যথাসম্ভব নীচু স্বরে তাকে আশ্বস্ত করলাম এইটা একেবারেই আমার নিজস্ব হকের ইনকামের টাকা থেকে কেনা। রবি আমার দিকে আড়চোখে তাকিয়ে মুচকি হাসে। আমি মনে মনে তাকে গালি দেয়, বুড়ো শুয়োরের বাচ্ছা তোকে ক্লাবে দেখবোনে পরে।

বাংলাদেশে ফেরার দু’দিন যেতে না যেতে ঐ ভগ্ন শরীর নিয়ে আমার বাপ দৌড়ঝাপ শুরু করে দিলেন ব্যাংকের দুয়ারে দুয়ারে। ওদের বুঝাতে লাগলেন, তার সময় আর বেশী নাই তাই তিনি চান খুব দ্রুত সমস্ত পাওনা মিটিয়ে দিয়ে সব সমস্যা সমাধান করে ফেলতে। ব্যাংকের জি এম মুচকি হেসে বলে আপনার ছেলে সালাম সাহেব আপনার চাইতেও ফিট, আপনি বাসায় গিয়ে বিশ্রাম করেন, এসব নিয়ে ভাববেন না একদম। আমি বাপকে বুঝালাম, দেখুন আমি এদের অত্যন্ত মোটা অংকের জিনিষ দিয়েছি সো ওরা কাজ করবে। কিন্তু সালাম সাহেব মানতে নারাজ কেন এতো টাকা দিয়ে একটা ন্যাজ্য কাজের এরকম সমাধান করতে হবে। আমি তাকে বোঝালাম, দেখেন এইটাই নিয়ম। আমাদের প্রতিষ্ঠানটি একটা রুগ্ন প্রতিষ্ঠান, এ থেকে যা রক্ত চোষার চুষে ফেলেছে। এখন জীর্ন এ কেস নিয়ে তাদের ভাবতে হলেও টাকা দিতে হবে। আপনি একটু ধৈর্য ধরেন। কিন্তু তিনি ততোদিনে পুরোপুরি ধৈর্যহারা হয়ে গেছেন। বললেন দেখ, তোর আরও দু’টি বোন অবিবাহিত তাদের সুপাত্রে ভালো ঘরে দিতে হবে। এই বাড়ীই এখন একমাত্র সম্বল, এটি বিক্রী করে ব্যাংক লোন আর বিয়ের কাজ দুই সাড়া যাবে। আমি আব্বাকে বোঝালাম, ব্যাংক এতো তাড়াতাড়ি মনে হয়না সমাধান করবে! আরো বছর দু’য়েক লাগিয়ে দিবে। আব্বা অস্থির হয়ে উঠে বলেন, কিন্তু আমার তো সময় নেই ততোদিন।

বছর ঘুরে যায়, আমার দু’বোনের মহা ধুমধামে বিয়েও হয়ে যায়। আব্বা বিয়ের মজলিশে সবার সামনে আমার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে হু হু করে কেদেঁ উঠেন। আমার অস্বস্তি লাগে এতো বিশাল মানুষটাকে বুকে নিতে। আমার সবকিছু ছেড়ে দৌড়েঁ পালাতে ইচ্ছে করে। আমার ছোট বোনের যেদিন বিয়ে ঐদিনই মনে মনে ঠিক করলাম আমি দেশ ছেড়ে পালাবো; আমার আর ভাল লাগছিলোনা। কারন আমি বুঝে গেছিলাম এসব সরকারী ব্যাংক মানুষকে পঙ্গু করে রাস্তায় ভিক্ষে করতে বসিয়ে দিলেও কোন সমাধানে যেতে চায়না। আব্বাকে বোঝালাম, দেখুন আমি বাইরে থেকে আরো বেশী সাহায্য করতে পারবো। তাছাড়া আমি ফিল্ম নিয়ে একটু পড়াশোনাও করতে চাই। মনে হয় শেষের কথাটা তার মনে ধরেছিলো। তিনি বললেন, তোকে তো আমি অনেক কষ্ট দিলাম! তুই যা, আর পিছন ফিরে তাকাস্‌ না, আমি বাকী সমাধানটা করে ফেলবো।

দেশ ছেড়ে চলেও আসলাম। যত সহজ ভেবেছিলাম বিলেতের জীবন ততোটা নয়ই বরং এখানে অবস্থা আরো খারাপ। কিন্তু আমার জিদ চেপে গেল, ফিল্ম মেকিং-এর উপর মাষ্টারস্‌-এর দু’টো সেমিষ্টার চোখ বন্ধ শেষ করে ফেল্‌লাম। তৃতীয় সেমিষ্টারে উঠে আর টাকা দিতে পারিনা। কোর্স ডেফার করে মনোযোগ দিলাম পাউন্ড কামানোতে, কিন্তু আমার আরো বহু কিছু শেখার ছিলো। ২০০৪ এর থার্টি ফাষ্ট নাইট, প্রায় সকাল পর্যন্ত সুরা পান করলাম আকন্ঠ। পরের দিনও চোখে কোন ঘুম নেই, ২০০৫ জানুয়ারীর প্রথম দিন শুরু হলো তীব্র মাথাব্যাথা নিয়ে। সকাল-দুপুর-বিকেল পেড়িয়ে সন্ধে হলো তাও ঘুমুতে পারিনা। রাত মনে হয় ৮টা বাজে, হঠাত আমার সেলে একটা এসএমেস আসে। আমি কি মনে করে লাফ দিয়ে উঠে এসএমেস’টা খুলি। শুধু একটা লাইন লেখা তাতে, ‘আমাদের বাবা আর নেই’। আমার হাত চলে যায় ডায়াল বাটনে, আমার ভাই কথা বলতেই পারছিলোনা। তাও যা বুঝলাম তা হলো, আব্বা ঢাকায় সারাদিন ব্যাংক পাড়ায় ঘুরে ঘুরে এসে সন্ধায় বোনের বাসায় গিয়ে উঠে। তারপরই হার্ট আটাক। আমি লাইন কেটে ঢাকায় আমার সেঝো বোনকে ফোন করি, নিপু আপু বলতে থাকে ধ্রুব তুই থাকলে এমন হতোনা। আব্বার শেষ মুহুর্তেও শুধু তোর কথা বলছিলো। আমি ওকে থামিয়ে জিজ্ঞেস করি, আব্বা এখন কই? ও বললো ল্যাব এইডে। লাইন কেটে আমার প্রাণের বন্ধু পিপ্‌লুকে ফোন করি। পিপলু আমার গলার টোন শুনেই বুঝে ফেলে কি হয়েছে, ও শুধু জিজ্ঞেস করে কই আছেন উনি? একটু পর আব্বার পাশে গিয়ে ও আমাকে ফোন দেয়, ‘বেশীক্ষন আগে মারা যায়নি, ডাক্তাররা বলছেন ঘন্টা খানেক আগে আনলে...’। আমি জিজ্ঞেস করলাম, সমস্যাটা কোথায় হয়েছিলো? পিপলু বলে, এ্যাম্বুলেন্স আসতে নাকি অনেক দেরী করে ফেলেছিলো। আমি কি বলবো বুঝে উঠতে পারছিলাম না। কোন গালিও মনে পড়ছিলোনা তখন। ওকে শুধু বললাম উনাকে ফ্রিজারে রাখার ব্যবস্থা কর, আমি সকাল হলেই রওনা দিচ্ছি। কিন্তু পরে আব্বার করে যাওয়া একটা উপদেশের কথা মনে পড়াতে আবার ফোন দিয়ে বললাম দাফন করে ফেলতে। হয়তো ভালোই হয়েছে, আমার মৃত বাবার কষ্টদগ্ধ মলিন মুখখানি দেখতে হয়নি!

দেশে গিয়ে খুজেঁ বের করলাম যে লোকটিকে খুজঁতে গিয়ে আব্বা নাই হয়ে গেল তাকে। প্রথম দু’দিন সৎ লক্ষি ছেলের মতো তার অর্থ মন্ত্রানালয়ের সচিবালয়ে গিয়ে দাড়োয়ানের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করে এলাম। পরের দিন গেলাম নিজের ষ্টাইলে। সচিব সাহেব আমার কথা শুনলেন; দুঃখ প্রকাশ করলেন আব্বার পরিণতির কথা জেনে। আমি সরাসরি বললাম, চাচা দেখুন অমুক চাচা বলাতে তো আপনি আমার সাথে কথা বলছেন, আমি দু’দিন পর চলে গেলে আবারো আপনারা সব কিছু ভুলে যাবেন। এখন এসব কথা রেখে বলুন আপনাকে কত দিলে আপনি বোর্ডে ব্যাপারটি তুলে একটা সমাধানে যাবেন। উনি অনেক্ষন আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, বাবা আমি মানুষ খারাপ হতে পারি কিন্তু এতোটা খারাপ না, তোমার কাজ হয়ে যাবে। না ঐ লোকটি আমার কাজ করেছিলো (যদিও এখন উনি পলাতক দুদকের ভয়ে)। বাকী থাকে শুধু আদেশটা প্রয়োগের কাজ। চলে এলাম আবার বিলেত, ভাবলাম আমার ভাই বাকীটা করতে পারবে। কিন্তু হায়রে আমার সোনার দেশ, দু’দুটি সরকার গিয়ে তত্তাবধায়ক আসলো, তাদেরও সময় প্রায় শেষ। এখনো ঐ আধূরা কাজটি সম্পন্ন হলোনা। আবারো শুনলাম এবার নাকি হচ্ছে!

সেই যে ১৯৯৫ সাল থেকে লম্বা একটা দৌড় শুরু করলাম তার শেষ কোথায় আমার জানা নেই! এখন ঠিকে থাকার জন্য, মানে এদেশে চাকরী থেকে ন্যায্য পাওনাটা পেতে অ্যাপ্লাই করলাম আইজিএস স্কীমে। হয়তো হয়েও যাবে, তারপর আবার একবছরের মাথায় হাই স্কীলে অ্যাপ্লাই করতে হবে; হয়তো তাও হয়ে যাবে। হয়তো আমার এই কষ্টের দিন তিন-চার বছরের মধ্যে বদলেও যাবে। কিন্তু এই ১৪ বছরে যা কিছু হারিয়েছি তা কি আর ফিরে পাবো? আমার প্রেমিকারা একে একে সবাই আমাকে ছেড়ে চলে গেছে; যদিও এখনো ওরা মাঝে মাঝে খোজঁখবর নেয় রণাঙ্গনে ঠিকঠাক মতো আছি কিনা জানতে। ভালোই লাগে আমার; তবে সে ভালোলাগাটা আর পরিণতি পায়না কখনো। এমনকি আমি এসবের কোন পরিণতিও চাইনা আর; যদিও বাবা হওয়ার স্বপ্ন গেলনা আজও! হয়তো হবোও কোন একদিন; কিন্তু যে জিদটা নিয়ে বেচেঁ উঠি প্রতি ভোরে তার তাপ এখনো পাই। আর তিনটা বছর পর বাকী জীবনটা একেবারে আমার মতো করে বাচঁতে চাই আমি; আমার ব্যক্তিগত লড়াইটা শেষ করে ফেলতে চাই দ্রুত।


মন্তব্য

কীর্তিনাশা এর ছবি

আপনার লম্বা পোস্টটা পড়লাম। আসলে প্রতিটা মানুষকেই তার নিজ নিজ ক্ষেত্রে লড়াই করে টিকে থাকতে হয়। তবে আপনার লড়াইটা অনেক কঠিন। আপনার লড়াইএ আপনি জয়ি হন এই কামনা করছি।
-----------------------------------
সোনার স্বপ্নের সাধ পৃথিবীতে কবে আর ঝরে !

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

ধ্রুব হাসান এর ছবি

ধন্যবাদ

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

অনেক সময় নিয়ে, দুই বার পড়লাম পুরোটা। খুবই ব্যাক্তিগত লেখা। মন ছুঁয়ে গেল। পড়তে পড়তে নিজের ছেলেবেলার কথা ভাবছিলাম। এক ফাঁকে বাবাকে ফোনও করে ফেললাম। অনুভূতিগুলো থিতু হোক, জীবন গতিময় হোক; উলটোটার বদলে। শুভ কামনা রইলো।

ধ্রুব হাসান এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ শুভকামনার জন্য। ফ্যামিলিটা অনেক বড় ব্যাপার যদ্দিন পারেন আকঁড়ে থাকুন।

অতিথি লেখক এর ছবি

মনটা খারাপ করিয়ে দিলেন..........
তবে এরকম লেখা নিজের ভেতর এক ধরনের হার না মানা মনোভাবের জন্ম দেয়, সেজন্য আপনাকে অভিবাদন।

রাফি

ধ্রুব হাসান এর ছবি

দুঃখিত মন খারাপ করানোর জন্য...তবে ঐটা উদ্দেশ্য ছিলোনা। ভালো থাকুন।

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

................................................................................
objects in the rear view mirror may appear closer than they are ...

ধ্রুব হাসান এর ছবি

................................................

মুশফিকা মুমু এর ছবি

আপনার এত লম্বা পোস্ট দেখেই পড়বনা ঠিক করলাম কিন্তু কয়েক লাইন পড়ে আর থামতে পারলাম না, খুব কষ্ট লাগল মন খারাপ
আশাকরি খুব শিঘ্রিই আপনি নিজের মত করে থাকতে পারবেন মন খারাপ
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

ধ্রুব হাসান এর ছবি

আহা আপনার মতো কোমলতার ছিটেফোটাও যদিও থাকতো আমার মাঝে!

রেনেট এর ছবি

আমার ঘুম ও আপনার ঘুমের মত নির্বাসনে গেছে। আপনার লেখা পড়ছি রাত সাড়ে তিনটায়।
সান্তনা দিতে আমার ভালো লাগে না। পারি ও না।
ভালো থাকুন।
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

ধ্রুব হাসান এর ছবি

নির্ঘুম পাখিরা বনে করে কলরব গভীর রাত্রিরে...হা হা হা

সান্তনা দিতে আমার ভালো লাগে না। পারি ও না।
......দেয়ার দরকারও নেই। আপনিও ভালো থাকুন। Cheers Man!

জিফরান খালেদ এর ছবি

এসবের বেশিরভাগি তো আমি জানি।

বুকটা ফাঁকা ফাঁকা তারপরো শালার

ধ্রুব হাসান এর ছবি

বরফ কুচিঁ দিয়ে coke খাও। ফ্রিজে coke আছে...ঠান্ডা হবে মন প্রাণ!

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

পৃথিবী যোদ্ধাদেরই পছন্দ করে। আপনিও যোদ্ধা বলেই আশাবাদী। শুভকামনা।
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

ধ্রুব হাসান এর ছবি

পৃথিবী পছন্দ করুক বা না করুক ঠিকে থাকার জন্যই যোদ্ধা হতে হয়! তবে যুদ্ধ কারো স্বপ্ন হতে পারেনা, যুদ্ধ সবসময় আমার কাছে আরোপিত মনে হয়। কিন্তু এর থেকে বের হওয়ার উপায় নাইরে ভাই ......আমরা সকলেই আমাদের নিজ নিজ লড়াইটা লড়ে যাচ্ছি নিয়ত। Cheers!

ধ্রুব হাসান এর ছবি

সবাইকে ধন্যবাদ এসব ব্যক্তিক প্যাচাঁল কষ্ট করে গেলার জন্য।

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

ধ্রুব, আপনার লেখাটা খুব ভালো। ব্যক্তিগত ও পারিবারিক আনন্দ-বেদনার পাশাপাশি যে সমাজচিত্রটি পেলাম তা নিষ্ঠুর। ভয়ংকর। অমার্জনীয়। .....কতোটা এগোলাম আমরা?
আপনার বাবার আত্মার শান্িত কামনা করছি আর আপনার জন্যে অনেক অনেক শুভেচ্ছা।

নির্মলেন্দু গুণের একটা কবিতার বইয়ের নাম ছিলো-দুঃখ করো না, বাঁচো

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

ধ্রুব হাসান এর ছবি

এই গুন সাহেব আমার মতো অনেকেরই স্কুল জীবনের হিরো ছিলো; এমন কি কবিদের হিরোও বলতে পারেন!

অনেক ধন্যবাদ রিটন ভাই লেখাটা পড়ার জন্য। মাঝে মাঝে একটু হাপিয়েঁ উঠি এই যা; আমি কিন্তু আবার লড়াকু হিসেবে খারাপ না। হা হা হা...ভালো থাকবেন।

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

লেখাটা পড়ে ঝিম মেরে বসে রইলাম কিছুটা সময়।
আপনি লড়াকু। আপনাকে দিয়ে হবে। হাল ছাড়বেন না।
‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍
পুনশ্চ.
লম্বা পোস্ট দেখে, হায়, অর্বাচীন আমি, শুরুতে এড়িয়ে গিয়েছিলাম!

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
মৌমাছির জীবন কি মধুর?

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।