বাংলাদেশ ক্রিকেটের অভাগা পেস বোলারেরা এবং স্পিনারদের শ্রেষ্ঠত্বের ভ্রান্ত চশমা

ধ্রুব আলম এর ছবি
লিখেছেন ধ্রুব আলম [অতিথি] (তারিখ: বিষ্যুদ, ২০/১১/২০১৪ - ১১:২৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

একযুগের বেশি হয়ে গেল, বাংলাদেশ টেস্ট খেলে, জয় আসে কালেভাদ্রে। তাও জিম্বাবুয়ে বা খর্বশক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে। তবে দেশের ক্রিকেট যে এগিয়ে যাচ্ছে, তাতে সন্দেহ নেই। একটি টেস্ট জয়, একটি বড় অর্জন, সেটি যার সাথেই হোক, আর যেভাবে, যে অবস্থাতেই আসুক। পাঁচ দিন টানা শুধু শারীরিক সামর্থ্য নয়, সাথে মনোসংযোগ ও মনোবলের পরীক্ষাও দিতে হয়।

টেস্টে জয়ের মূল শর্ত হচ্ছে প্রতিপক্ষকে দু'বার অলআউট করতে হবে, যেটি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ করতে পারে না। আমরা অনেক সময়ই শুনে থাকি, আমাদের মূল শক্তি নাকি ব্যাটিং আর স্পিনাররা। কিন্তু শুধু ব্যাটিং দিয়ে আর যাই হোক, টেস্ট জেতা সম্ভব না, তার ওপরে আমাদের ব্যাটিং মোটেই আহামরি কিছু না। বরং বোলাররাই অনেকক্ষেত্রে আমাদের জয় এনে দিয়েছে, জয়ের সুবাস দিয়েছে, ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় জয় আসেনি। বোলাররাও যে ম্যাচ হারায়নি, তা না, তাদেরও দোষ রয়েছে, কিন্তু ব্যাটিং আমাদের যেভাবে লজ্জা দিয়েছে মাঝে মাঝে, বোলিং-এ মনে হয় তেমন দিন অত আসেনি।

আরেক ধারণা হচ্ছে আমাদের শক্তিশালী দিক হলো আমাদের স্পিন। প্রথমেই বলে রাখা ভালো, আমাদের এখনো পর্যন্ত কোন স্বীকৃত লেগ স্পিনার আসেনি। লেগ স্পিনাররা এমনিতেই এখন দুর্লভ, তবে তারা ব্রেক-থ্রু দেয়, এবং উইকেট-টেকার বলে, যেকোন দলের সম্পদ। আমাদের ঘরভর্তি বা-হাতি অফস্পিনার, বছর বছর নয়া মুখ আসছে। বেশ ভালো কথা এটি, তবে ব্যাপারটি এখন একঘেয়ে উঠছে, একটা টেস্ট দল (ভারত/ অস্ট্রেলিয়া) ৪ জন স্পিনার/ পেসার নিয়ে মাঠে নামতেই পারে, তাই বলে সবাই যদি একইরকম হয় তবে সেটি সে দল বা ক্যাপ্টেনের জন্যে সুখকর নয়।

এদিকে, আমাদের পেসাররা হচ্ছে সৎ ছেলের মত, বা মিনা কার্টুনের মিনার মত। মিনাকে মেয়ে বলে যেমন খাওয়া কম দেয়া হত, স্কুলে যেতে দেয়া হতো না, তেমনি সৎ ছেলে বলে যেন পেসাররা না পায় পিচ, সঠিক কোচিং/ নার্চার (এই প্রথম মনে হয় একজন পেসার, হিথ স্ট্রিক আমাদের বোলিং কোচ), এবং সবশেষে, দলে সুযোগ, সুযোগ পেলে বল, মাঝে মাঝে নতুন বলও পায় না। ওদিকে আমাদের স্পিনাররা মনের সুখে জিম্বাবুয়ে, ওয়েস্ট-ইন্ডিজের সাথে ঝুড়ি ভরে উইকেট পায়, দেশের নিজের মনমত পিচে ইচ্ছামত দাদাগিরি ফলায়। কিন্তু আসলে তারা এত সুখে থেকে কতটা ভাল করে? দেশে-বিদেশে জিম্বাবুয়ে, নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট-ইন্ডিজের স্পিন নাদানদের সাথে কাড়ি কাড়ি উইকেট তুলে নেবার মাঝে কৃতিত্ব কোথায়? পেসারদের সুযোগ করে দিলে তারা কি উন্নতি করতো না? আমরা কি শুধু দেশের মাটিতে বাঘ হতে চলেছি ভারতের মত?

প্রশ্নগুলোর উত্তর বের করার জন্যে আমি সাহায্য নিয়েছি পরিসংখ্যানের। পরিসংখ্যান রাবিশ হতে পারে, ভুল ধারণা দিতে পারে, কিন্তু মিথ্যা তো নয়। এক আনাড়ি কর্তৃক তুলনামূলক বিশ্লেষণ করতে এর বাইরে আর গ্রহণযোগ্য কি উপায় ব্যবহার করা যেতে পারে?

মজার ব্যাপার হচ্ছে ঘাটাঘাটি করে দেখলাম, স্পিনার ও পেসাররা দেশের মাটিতে স্পিনে পারদর্শী দলগুলোর সাথে এবং বিদেশের মাটিতে স্পিনে দুর্বল দলগুলোর সাথে প্রায় একইরকম পারফর্মেন্স করে।

আমি দলসমূহের শ্রেনীবিভাগ করেছি এভাবেঃ
১। স্পিন পারদর্শী এবং নিজে দেশে কিছুটা হলেও স্পিন-সহায়ক পিচ তৈরি করা দলগুলোঃ ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা
২। পেস পারদর্শী এবং নিজে দেশে কিছুটা হলেও পেস-সহায়ক পিচ তৈরি করা দলগুলোঃ অস্ট্রেলিয়া, সাউথ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড
৩। স্পিন-পেস নির্বিশেষে নির্বিষ দলঃ ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়ে

আর বাংলাদেশের পিচ সর্বদা স্পিন সহায়ক বলে ধরে নিচ্ছি (এখনো ঘাস-ওয়ালা, বল লাফিয়ে মাথা ফাটানো পিচ দেখিনি তো, তাই)।

এরপরে আমি তুলনায় যাচ্ছি এভাবে, দেশের মাটিতে ও বিদেশে, এবং ১ নং দলগুলোর সাথে অর্থাৎ স্পিন সহায়ক পিচে, স্পিন পারদর্শী দলের সঙ্গে বোলারদের কি অবস্থা। এখানে স্পিনাররা পিচের সুবিধা পাবে, তবে প্রতিপক্ষও পাবে কঠিন। অন্যদিকে, পেসাররা পিচে কিছু পাবে না, কিন্তু দুর্বল প্রতিপক্ষ পাবে।

এর সাথে দেখবো, পেস পারদর্শী দেশগুলো (২ নং দলগুলো) তাদের নিজদেশে পেস-সহায়ক পিচে, বাংলাদেশের স্পিনারদের সাথে কেমন করেছে, পেসারদের সাথেই বা কেমন করেছে। এক্ষেত্রেও দুই ধরনের বোলাররাই, সুবিধা পাবেন, আবার অসুবিধাতেও পড়বেন। যারা দেশে পেসের পিচ বানায়, তারা সাধারণত স্পিন খারাপ খেলে, সুতরাং স্পিনাররা তাদের দুর্বলতা কাজে লাগান, কিন্তু পিচের সুবিধা পান না। আর পেসাররা পিচের সুবিধা পান, তবে ব্যাটসম্যানের সাথে লড়াইও হয় সেয়ানে-সেয়ানে।

দুই ক্ষেত্রেই দেখার চেষ্টা করবো, উইকেট সংখ্যা, বোলিং গড় ও স্ট্রাইক রেট। বাকিসবও বিবেচনায় আসবে, তবে এই তিনই মুখ্য। এই ফাকে বলে নেই, বোলিং গড় হচ্ছে উইকেট প্রতি কত রান দিচ্ছে বোলার, আর স্ট্রাইক রেট হচ্ছে কত বলে একটি করে উইকেট পাচ্ছে সে।

১নং দলগুলোর সাথে হোম-এওয়ে ম্যাচগুলোতে বোলারদের পারফর্মেন্সঃ

ছবি বড় দেখতে ক্লিক করুন এখানে

প্রথম সিনারিওতে (১নং দলগুলোর সাথে হোম-এওয়ে ম্যাচগুলোতে) দেখা যাচ্ছে, সর্বাধিক উইকেট শিকারী মোহাম্মদ রফিক। তিনি স্পিন পিচে দেশে বিদেশে ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলংকার সাথে সবচেয়ে বেশি ৪১ উইকেট নিয়েছেন। কিন্তু সেরা গড়, স্ট্রাইক রেট কোনটিই তার নয়। গড়ে পেসার খালেদ মাহমুদ সুজন তার থেকে এগিয়ে, স্ট্রাইক রেটেও! সুজন মাত্র ৩ টেস্টে ৯৯ ওভার বল করেছেন, তাই তুলনা শাহাদাতের সাথে দিলে দেখা যায় সেও উভয় ক্ষেত্রেই ভাল। এদিক থেকে আসলে সাকিবই সেরা স্পিনার ও বোলার। কিন্তু সে বাদে বাকিদের অবস্থা তথৈবচ, উলটো পেসাররা কোন অংশেই কম যাননা, বরং প্রথম পাঁচে ৩ জন, আর ১০-এ ৪ জনই পেসার! এছাড়াও আরো নিচে গেলে দেখা যায়, নাজমুল, রবিউল ও শফিউলের অবস্থা স্পিনারদের মতই, তাদের অকার্যকর বললে, স্পিনারদের কেন বলা হবে না? বলা উচিত, আমরা আসলে স্পিনেও মোটেই শক্তিশালী নই, বরং একইরকম দুর্বল। মজার ব্যাপার হচ্ছে, প্রথম দশে সবচেয়ে বাজে বোলার সোহাগ গাজী!

২নং দলগুলোর সাথে এওয়ে ম্যাচগুলোতে বোলারদের পারফর্মেন্সঃ

ছবি বড় দেখতে ক্লিক করুন এখানে

এবার আসি দ্বিতীয় সিনারিওতে (২ নং দলগুলোর সাথে শুধু এওয়ে ম্যাচ), এক্ষেত্রে বাংলাদেশের বোলিং-এর চিত্র ভয়াবহ। স্পিনার-পেসার সবার অবস্থাই বড় করুণ। সেরা বোলার নিঃসন্দেহে সাকিব-আল-হাসান, তার ধারেকাছে কেউ নেই, এক মাশরাফি ছাড়া। এবারেও প্রথম দশে ৬ পেসার (আফতাব পার্ট-টাইমার), স্পিনারদের মধ্যে আবার সানোয়ার পার্ট-টাইমার (মাহমুদুল্লাহকে অলরাউন্ডারই ধরলাম!)। শাহাদাত, মানজারুল ফুল-টাইম বোলার (পেস বা স্পিন, যাই বলুন) হিসেবে মোটেও ভাল না, তবে সবচেয়ে জঘন্য তাপস বৈশ্য। এদের পরিবর্তে তালহা জুবায়ের ও মোহাম্মদ শরীফকে আরো সুযোগ দেয়ার প্রয়োজন ছিলো। পার্ট-টাইমারদের নিয়ে কিছু বলার নেই। লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে, সুজনকে অনেক গালি দেয়া হয়, সে জঘন্য বোলার, কিন্তু বিদেশের মাটিতে রফিকের পারফর্মেন্স দেখুন। একইভাবে, শফিউল খারাপ, তাই বলে রাজ্জাককে ভুলে যাবেন না!

করণীয়ঃ
১। স্পিনে পারদর্শী দলের সাথে আমাদের বা তাদের স্পিন-সহায়ক পিচেও বাংলাদেশি স্পিনাররা কার্যকর নয়, সাকিবকে ব্যতিক্রম ধরতে হবে। কিন্তু এই দলগুলোর পেসে দুর্বলতা আছে, আমাদের পেস এটাক যত খারাপই হোক, এদের সাথে আনফেভারেবল কন্ডিশনেও তারা ভালই করেছে। আমাদের স্পিনারদের ওদের সাথে উইকেট নেয়া শেখাতে হবে আর পেসারদের আরো সুযোগ দিতে হবে, প্রয়োজনে ঘূর্ণিঝড় পিচ না বানিয়ে একটু সবুজ উইকেটে খেলতে হবে।

২। নাজমুল, রবিউল, শফিউলদের খেলতে দিতে হবে, পরিসংখ্যান থেকে প্রমাণিত, এরা স্পিনারদের থেকে বাজে বল করে না। ভাল হয় যদি রঞ্জি ট্রফি বা শ্রীলঙ্কার (পাকিদের নিয়ে কিছু না বলি) ঘরোয়া লিগে প্রতি বছর আমাদের একটা দল পাঠানো যায়।

৩। বিদেশের মাটিতে, যেখানে পেস-সহায়ক, গতিময় বাউন্সি পিচ, সেখানে স্পিন দিয়ে কাজ হবে না, এক্ষেত্রেও সাকিব ব্যতিক্রম। আগের মতই যদি বিদেশের ঘরোয়া লিগে আমাদের দল পাঠানো যায় বা কাউন্টি ক্রিকেটে খেলতে সুযোগ করে দেয়া যায়, তাহলে কাজে দিবে।

৪। যে পেসার দেশের মরা পিচে ভালো (শাহাদাত), তাকে দেশে; যে বাইরের বাউন্সি গতিময় পিচে ভালো (রুবেল), তাকে বাইরের ট্যুরে; এভাবেই সিলেক্ট করা প্রয়োজন। সবাই তো আর সাকিব না! তবে যে উপমহাদেশের ফ্ল্যাট পিচে উইকেট পেতে পারে, সে বাইরে আরো ভালো করবে বলে মনে হয়, যদিও সেসব দেশের খেলোয়াড়েরা পেস খেলে অভ্যস্ত। সেক্ষেত্রে মনে করি, নার্চার ও কোচিং-এর একটা বড় ভূমিকা আছে।

এ লেখা একেবারেই মন থেকে লেখা, অনেকে অনেক সময় বলেছিলেন, পেসারদের আমরা বেশ অবহেলা করি, কিন্তু এই বিমাতাসুলভ আচরণ কি তাদের প্রাপ্য? তাদের মনে হয়েছিল, আমাদের পেস বোলারদের প্রতি ঔদাসীন্য কাম্য নয়, আমিও এতে সহমত পোষণ করি। পরিসংখ্যানের সাহায্যে মনে হয় প্রমাণ করতে পেরেছি, আমাদের বা আমার ধারণা অমূলক নয়। স্পিনারদের আমরা সুযোগ দেই বলেই তারা ভাল করে, যখন তারা সেটা পায়না, তখন তাদের ও পেসারদের মাঝে পার্থক্য আতশকাচ দিয়ে খুজে বের করা লাগে।

আমি ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ নই, প্রকৌশলী। তাই পরিসংখ্যান নিয়ে কচকচাই, লেবু চিপে তিতা করি। তবে বাংলাদেশের খেলা দেখি ছোটবেলা থেকেই, হারুক-জিতুক, পাশে থাকি। এর সঙ্গে আশাও রাখি যে, এই প্রজন্মই হয়তো একটা ভাল টেস্ট দল দেখে যাবে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আমাদের সামর্থ্যে কোন ঘাটতি নেই, আছে পরিকল্পনায়। লেখাটি এমন কারো চোখে হয়তো পড়বে না, যিনি ব্যবস্থা নেবেন, তবে চাই এ নিয়ে আলোচনা অন্তত চলুক।


মন্তব্য

সাফি এর ছবি

ঘরোয়া লীগের খেলায় পেস সহায়ক পিচ কিছু আর স্পিন সহায়ক কিছু বানিয়ে অভ্যস্ত করা উচিত। আমার জানামতে বিকেএসপি এর অন্তত একটা পিচ সবুজ এবং বাউন্সি। ঘরোয়া লীগে মনে আছে শরীফ নিয়মিত ৫ উইকেট পেত ম্যাচে। কিন্তু জাতীয় দলে নেওয়ার পরে তার সেই খেলা দেখা যায়নাই। বাংলাদেশ বিদেশে অস্ট্রেলিয়া/সাউথ আফ্রিকা/নিউজিল্যান্ডে মোটামুটি সাম্প্রতিক সময়ে ম্যাচ খেলেই না। সুতরাং সেইটার সাথে তুলনা করা কতটুকু যৌক্তি বুঝলাম না। আর স্যাম্পেল সাইজ হিসেবে ৩-৪ মোটামুটি কিছুই না। এক ম্যাচে ৫/৬ উইকেট পেলেই স্কিউ হয়ে যাবে।

আমাদের দেশের পিচ খুব একটা স্পিন সহায়ক বানানো হয় এইটাও ঠিক না। আমাদের পিচ বানানো হয় স্লো পিচ, যেন ব্যাটসম্যানরা বল খেলার সময় পায় বেশী। একদম স্পিন সহায়ক পিচ বানালে অনেক সময়ে হিতে বিপরীত হয় বলেই মনে হয় এরকম করে।

ধ্রুব আলম এর ছবি

তুলনা করতে গিয়ে বুঝলাম, বাংলাদেশকে খেলতেই দেয়া হয়না, ডেটা পাবো কিভাবে। এভাবে আসলেই তুলনা হয় না, তবুও চেষ্টা করলাম। মন খারাপ

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখার মুল সুরের সাথে একমত; পরিসংখ্যান আর অন্যান্য বিষয়ে বিতর্ক হতে পারে। দিনেরে শেষে আমারাতো বাংলাদেশের দর্শক ছাড়া আর কিছু না। কিন্তু ক্রিকেট নিয়ে আলোচনার মজাই আলাদা; সেটা কারও চোখে পড়ুক আর না পডুক।

পেস বোলিংকে অবহেলা করার ফলাফল শাঁখের করাতের মত, এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বহুমুখী । প্রথমত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে খেলার আগে বিপক্ষ দল পরিকল্পনা করে শুধু স্পিনারদের ওভারগুলো দেখে খেললেই চলবে। তাই ভাল পেস বোলার না থাকার কারণে আমাদের উইকেট নেয়ার অপশন কমে যাচ্ছে। খেলে দেখতে বসে মনে হয় পেস বোলাররা যদি শুরুতে ২/১ উইকেট নিতে পারে সেটা বোনাস, পরে সাকিব-রাজ্জাকরা আছেই। অথচ যদি আমাদের নির্ভরযোগ্য পেস আক্রমন থাকতো তাহলে শুরু থেকেই আক্রমণে যেতে পারতাম। পরে স্পিনারদের কাজটা আর সহজ হতো ।

অন্যদিকে স্লো আর লো বাউন্সের উইকেটে ভাল মানের কোন পেস বোলিং না খেলেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেরর জন্য “তৈরি” হয় আমাদের ব্যাটসম্যানরা। তাই যে কোন দিন ভিটরি বা বিনির মত অখ্যাত বোলাররা আমাদের ইনিংস ধ্বসিয়ে দিতে পারে। জাতীয় দলের পুলভুক্ত যে ৬ জন পেস বোলার থাকে প্রায়ই দেখা যায় প্রিমিয়ার লীগে তাদের ২/১ জন কোন দল পায়না! দুই বছর আগে প্রিমিয়ার লীগের চ্যাম্পিয়ন দলে (সম্ভবত প্রাইম বাংক) কোন পেস বোলার ছিলোনা; পুরো ৫০ ওভারই স্পিন!

বিকেএসপির একটা গ্রীনটপ উইকেট দিয়ে কিছুই হবে না। আবার দেশের সব জায়গায় ন্যাচারাল হার্ড অ্যান্ড বাউন্সি উইকেট তৈরি আর রক্ষণাবেক্ষণও কঠিন কাজ। বিসিবির উচিত আন্তত জেলা শহরের বড় মাঠআলা স্কুলগুলোতে সিনথেটিক উইকেট তৈরী করে দেয়া যা সহজে নষ্ট হয়না। বিসিবির টাকা পয়সা ভালই আছে; বিভিন্ন ধান্ধায় কাজ করে টাকা পয়সা বানানো পরিচালকরা আছে। এই কাজটি যদি তারা করেন তাহলে ৫/৬ বছরের মধ্যে ভাল পেস বোলিং করতে পারা আর তার বিরুদ্ধে ভাল ব্যাট করতে পারা কিছু ক্রিকেটার আমরা পাওয়ার আশা করতে পারি।

-পিয়াল

ধ্রুব আলম এর ছবি

ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্যে।

মন্তব্যের সাথে পুরোপুরি একমত
হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার সব কথার সঙ্গে একমত। তবে ভেটরি পেস বোলার নন, তিনি বাঁহাতি অফস্পিনার। আর ক্যারিয়ার রেকর্ড দেখে তো তাঁকে ঠিক অখ্যাত বোলার বলেও মনে হচ্ছে না।

http://www.espncricinfo.com/newzealand/content/player/38710.html

Emran

অতিথি লেখক এর ছবি

আমার কাছে মনে হয়-
১।এখানেই ডটকমের এডটা জঘণ‌্য-কুরুচিপুর্ণ রেগে টং
২।শামিম চাডরী(এ নামে ডাকলে ও মাইন্ড করেনা চোখ টিপি ) কে সরানো উচিত।আবেগ বেশী
৩।মন্ত্রী-এমপি-নেতা-আমলাদের খয়রাতী টিকিট দেয়া বন্ধ করা উচিত-এগুলো ব্ল্যাকেই যায়
নাহলে দর্শক এর গালি সহ্য করতে হবে।
ট্রোল

ধ্রুব আলম এর ছবি

মন্তব্যটি অত্যন্ত খাপছাড়া মনে হচ্ছে ইয়ে, মানে...

অতিথি লেখক এর ছবি

রাগের মাথায় মন্তব্য করেছিলাম। জিটিভি প্রোডাকশন অত‌্যন্ত বাজে হয়েছে।আসলে ক্রিকেট নিয়া তো খুব বেশি লেখা চোখে পড়েনা তাই লেখককে সমর্থন জানাতে চাইছিলাম
ট্রোল

ধ্রুব আলম এর ছবি
অতিথি লেখক এর ছবি

সবগুলো পড়লাম ১০০% সত্যি কথা লিখেছেন। পাকি-ভারতীয় পাতানো ম্যাচ খেলার জনক।ওরা বিশ্বকাপ জিতে চাঁদ থেকে পৃথীবি পর্যন্ত স্তুপ দিলেও আমি বাংলা সাপোর্টার। মাঝে মাঝে টিভি বন্ধ করে ক্ষোভ কমানোর চেষ্টা করি-আমার বাসা থেকে হাটা দিলে স্টেডিয়াম । ২০০৬ এর পর থেকে আর যাইনি।

এখন ছাগুরা ফেসবুকের অনেক পেজ বানিয়েছে ক্রিকেটের নামে ;মাঝেমাঝে বাশের কেল্লার পোস্ট শেয়ার দেয়। সচল ই এখন খাঁটি বাংলা সাপোর্টার দের শেষ আশ্রয়।
ট্রোল

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।