ছোট গল্প : “তথ্য প্রযুক্তি”-ভালবাসার পাঠশালা ।

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বুধ, ১৬/০৯/২০০৯ - ১২:৫৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

“গল্প” একটা বিদেশী কোম্পানির রিজিওনাল অফিসে একটা ডিপার্টমেন্টের বিভাগীয় সমন্বয়কারী হিসাবে কাজ করি। “গল্প” নিখাত ব্যাচেলর। “গল্প” জীবনের সিংহভাগ সময় রাজধানী ঢাকায় থেকেছে। স্কুল জীবনকাল বিক্রমপুরে কাটিয়ে উচ্চ শিক্ষার আশায় এবং ভবিষ্যতে সুন্দর জীবনের বাসনায় ঢাকা চলে আসে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ ও এমবিএ সম্পূর্ণ করে একটা বিদেশী কোম্পানিতে অফিসার হিসাবে যোগ দেয়। যোগ দেয়ার পর থেকে গত চার বছর ধরে বাবা-মা, ভাই বোন ছেড়ে ঢাকার বাইরে দিন কাটাচ্ছে। সেই সুবাধে গল্পের অনেক মানুষের সাথে মেশার এবং চলার সৌভাগ্য হয়েছে। পক্ষান্তরে অনেক একাকী বোরিং জীবনও কাটিয়েছে। নয়টা - ছয়টা অফিসের পর সময়টা পার করা গল্পের জন্য ছিল সত্যি কষ্টের। একাকীত্বের পাহাড় সম কষ্টের নিচে পরে অনেক বার হতাশাগ্রস্ত হয়ে চাকুরি ছেড়ে বাবা-মার কাছে ফিরে যেতে চেয়েছে গল্প। কিন্ত পেটের দায়ে, দারিদ্র্যের চোখ রাঙ্গানো খেয়ে আবার ফিরে এসেছে চাকুরি জীবনে, হেঁটেছে বিরান পথে একা, বরণ করেছে নির্ভেজাল একাকীত্ব। ঢাকার বাইরে প্রথম ৩ বছর ২ মাস গল্প কাটিয়েছে বিভাগীয় শহর বরিশাল। গল্পের আজ মনে পরে প্রথম প্রথম বরিশালকে বন্ধুদের কাছে দুষ্টুমি করে বলত “ব্রাসেলস”। সাপ্তাহিক ছুটিতে লঞ্চে ঢাকা আসা-যাওয়া ছিল ধারুন রোমাঞ্চকর। ভরা পূর্ণিমা রাতে রূপালী জোছনা খেলা করত নদীর বুকে, মনে হত জলের উপর বিধাতা যেন স্বর্ণের প্রলেপ মেখে রেখেছে। বিশালাকৃতির লঞ্চ সেই প্রলেপ নরম হাতে আস্তে আস্তে সরিয়ে পথ চলত। নদীর বুকে জেলেদের মাছ ধরার নৌকায় হারিকেনের আলো দূর থেকে মনে হত দিকহীন নাবিকের জন্য পথ নির্দেশক আলোকবর্তিকা।

গল্প প্রথম থেকেই বরিশালে কলিগদের সাথে একটা ফ্ল্যাট নিয়ে থাকত । এতে একাকীত্বের যন্ত্রণা কিছুটা ভুলে থাকতে সাহায্য করেছে। কলিগরা গল্পকে বুঝতে দেয়নি বাবা-মা ছেড়ে একা থাকছে। বিশেষ করে জাফর নামে গল্পের যে কলিগটি এক সাথে ছিল সে ছিল অসাধারণ এক ছেলে। তাকে “গল্প” কোন দিন ভুলতে পারবে না। জাফর সব সময় হাসির গল্প বলে, প্যারোডি গান গেয়ে রুমের সবাইকে মাতিয়ে রাখত সারাক্ষণ। কিন্ত সেটা থেমে গেলেই যার যার রুমে আবার একাকীত্ব। তখন সঙ্গী হত টেলিভিশন অথবা ল্যাপটপ।

চাকুরির প্রয়োজনে এবং অফিসের নির্দেশে গল্পকে খুলনা চলে আসতে হয়। গল্প খুলনা এসেছে প্রায় ৫ মাস হয়। খুলনা আসার পর থেকে গল্প নিখাত একাকীত্ব অনুভব করছে প্রতিটি মুহূর্ত। এখানে গল্প একা একটা ছোট ফ্ল্যাট নিয়ে আছে। এখন পর্যন্ত সব গুছিয়ে উঠতে পারেনি। বরিশালে তিন বছরে পরিবেশটাকে আপন করে নিয়েছিল গল্প। কারণ কোম্পানির বরিশাল রিজিওন শুরু হওয়া থেকে গল্প ওখানে কাজ করেছে। তাই পরিবেশটা ছিল নিজের মত সাজানো। শেষের দিকে একাকীত্বটা অনেক কমে এসেছিল। খুলনায় আসার পর গল্প আবার একাকীত্বের জালে জরিয়ে যায়। এখানে এমনি নূতন জায়গা তার উপর একা এক ফ্ল্যাটে। লোকাল কলিগ বেশি থাকায় সবাইকে তেমন একটা কাছেও পায় না। তাই গল্পের অফিসের পর সময় কাটে ল্যাপটপে ব্লগিং করে আর মোবাইল আইএম এ চ্যাটিং করে।
গল্পের সিংহভাগ অলস সময় কাটত আইএম এ চ্যাটিং করে। চ্যাটিং সব সময় ভাল লাগত না। তখন বই পড়ে সময় কাটাত। আর তাও যদি ভাল না লাগত তখন চলত ব্লগিং, ফেইসবুক আর ইয়াহু চ্যাট। তবে যেহেতু অফিসে সারাদিন কম্পিউটার নিয়েই থাকতে হত তাই বাসায় এসে ল্যাপটপ নিয়ে বসতে গল্পের খুব একটা ইচ্ছে করত না।

যেহেতু মুঠোফোনে আইএম চ্যাটিং অপশনটা বিরাজমান সেহেতু মন চাইলে যখন ইচ্ছা তখন চ্যাটের রাজ্যে ডুব দেয়া যায়। তবে মুঠোফোনে পর্যাপ্ত ব্যালেন্স এবং চার্জ থাকতে হয়। আর একটা কথা আইএম হচ্ছে চ্যাটিং জগতে “মিথ্যা বলার স্বর্গ রাজ্য, ক্ষণিক প্রেমের পাঠশালা।” এখানে যারা লগইন করে তাঁরা সবাই বয়সে তরুণ এবং নিজেদের আসল পরিচয় গোপন রাখতে বেশি পছন্দ করে। এখানে মেয়ে ছেলে সাজে আবার ছেলে কৌতূহল বশে মেয়ে সেজে চ্যাট করে। গল্প একবার একজনের সাথে চ্যাট করছিল, সে ভেবেছিল গল্প মেয়ে, কারণ গল্পের আইডি দেখে বোঝার উপায় নেই ছেলে না মেয়ে। গল্পের আইডি “আকাশ আমার ঠিকানা”। গল্পকে মেয়ে ভেবে একবার একটা মেয়ে অনেক ক্ষণ চ্যাট করে, কিন্ত যখন জানতে পারল গল্প ছেলে তখন সে অনেক হতাশ হয়েছিল। কারণ সে ছিল বিবাহিত এবং ছেলেদের এড়িয়ে চলত। এমনিতে তার স্বামী চ্যাটিং পছন্দ করে না, তার পর যদি শোনে ছেলেদের সাথে চ্যাট করছে তাহলে নাকি তাকে আইএম এ ঢুকা বন্ধ করে দেবে। পরে গল্পের সাথে মেয়েটির ভালো বন্ধুত্ব হয়। নিজেদের মধ্যে সেল নাম্বার আদান-প্রদান করে। মেয়েটি সুযোগ পেলেই ফোনে গল্পের সাথে গল্প করে। কথা বলে গল্প জানতে পারে সে একজন আর্মি মেজরের স্ত্রী। তার একটা দুই বছরের মেয়ে আছে। গল্প এখানে চ্যাট করতে গল্প খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না। মিথ্যা তথ্যে ভরা। ছেলে নিজেকে বলে মেয়ে, আবার মেয়ারা ছেলেদের দৌরাত্ব্য থেকে রক্ষার জন্য ছেলে নাম নিয়ে চ্যাট করে। চ্যাটের আসল মজাটাই পানসে হয়ে যায়।

এরপরও গল্পকে সময় হত্যা করার জন্য এই “মিথ্যার স্বর্গ রাজ্যে” লগইন করতে হয়। নিজেকে যতটা সম্ভব সত্যের কাছা কাছি রেখে গল্প এখানে নিজের একাকীত্বটা শেয়ার করে। এইভাবেই একদিন চ্যাট করতে করতে আহান নামে এক ছেলের সাথে গল্পের চ্যাটিং হয় এবং তার সাথে ভাল বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। আহানও অনেকটা গল্পের মত। এই মিথ্যার স্বর্গ রাজ্যেও নিজেকে মিথ্যার বেসাতি থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করেছে। তাই তাঁরা এখন ভালো বন্ধু এবং নিয়মিত আইএম এ চ্যাট করে। আহান তার জীবনের অনেক কিছুই গল্পের সাথে শেয়ার করে। গল্পও তেমনি অনেক কিছু শেয়ার করে ভার্চুয়াল বন্ধু হিসাবে। ভার্চুয়াল বন্ধু হিসাবে তাঁরা দুজন এখন অনেক ভালো বন্ধু।

আহান বগুড়ার ছেলে। বগুড়া বিআইটি থেকে কম্পিউটারে গ্রাজুয়েশন করে এখন ডেনমার্কেরএকটা সফটওয়ার ফার্মে কাজ করে। ফার্মটির নাম হল “গ্রাফিক্স পিপলস”। আহান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষে পড়ে একটা মেয়ে কে ভালবাসে, মেয়েটিও তাকে খুব ভালবাসে। তাদের মুঠোফোনে কথা হয়, সময় সুযোগ হলে দেখাও হয়। মেয়েটির নাম ছোঁয়া।

আহান ঢাকা তার বোনের বাসায় থাকে। বনানীতে তার অফিস। বিদেশী কোম্পানী, প্রচুর কাজের চাপ। আহান অবসর খুব কম পায়। ছোঁয়া যেহেতু ছাত্রী সেহেতু তাঁর অঢেল সময়। ছোঁয়া প্রায়ই আহান কে ফোন দেয়, আহান কখনো কেটে ফোন করে আবার কখনো কাজের চাপে ধরতে পারে না, পরে ভুলে যায়, আর কল ব্যাক করা হয় না। এই নিয়ে ছোঁয়ার অভিযোগের অন্ত নেই। ছোঁয়া বুঝতে চায় না যে আহান চাকুরি করে, সব সময় ফ্রি নাও থাকতে পারে। আহান একদিন চ্যাট করার সময় গল্পকে বলেছিল,-“জানো দোস্ত, আমার ফোন একটু ওয়েটিং পেলেই সন্দেহ করে। কি করি বলত?” গল্প ঠাট্টা করে বলেছিল-“সন্দেহের কাজ করেছ বলেই সন্দেহ করে।” আহান একটা ইমোটিকন হাসি দিয়ে বলেছিল-দূর মিয়া, আমি ওকে অনেক ভাল বাসি, ওকে ছাড়া ভাবতে পারি না।” গল্প আহান কে বলল-“যে সম্পর্কের মধ্যে সন্দেহ থাকে সেই সম্পর্ক বেশী দিন থাকে না।” গল্পের এই কথা মাস না যেতেই সত্য প্রমাণিত হল। গল্প আহানের কষ্টে অনেক কষ্ট পেয়েছিল। ওদের সম্পর্কের টালমাটাল অবস্থা শোনে গল্পের অনেক খারাপ লেগেছে। আহান নিজের দিক থেকে অনেক চেষ্টা করেছে সম্পর্কটা ধরে রাখার কিন্ত ছোঁয়া নাকি কিছুতেই আহানের ব্যস্ততা মানতে চায় না। সে চায় মন চাইলে ফোনে কথা বলতে। সাপ্তাহিক ছুটিতে দেখা করতে। যেটা অনেক সময় ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও আহান সম্পাদন করতে পারে না। তৈরি হয় দূরত্ব। আহান ফোন দিলে ছোঁয়া ধরে না। অনেক বার ফোন দেয়ার পর ধরলে যেটা বলে তাতে আহান সন্তুষ্ট হতে পারে না। দুই মিনিট কথা বলার পর ছোঁয়া বলে “রাখি, তুমি ব্যস্ত মানুষ, তোমার কাজের ক্ষতি হচ্ছে।” যেই বলা সেই ফোন রাখা। কোন কথা শোনে না। আহান বিরক্ত হয়, তাঁর ভিতরে ছোঁয়ার উপর ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। আহান অনেক বার চেষ্টা করেছে ছোঁয়াকে বোঝানোর কিন্ত ছোঁয়া কিছুতেই বুঝতে চায় না। ছোঁয়ার ধারণা আহান ঢাকা গিয়ে অন্য কোন মেয়ের প্রেমে পরেছে তাই এখন তাঁকে অবহেলা করে। গল্প শুধু আহানের কথা গুলো শুনেছে। এইখানে হয়তো ছোঁয়ার অন্য কোন যুক্তি আছে যা গল্প কোনদিন জানবে না।

প্রথম প্রথম চ্যাট করতে গিয়ে গল্প আহান কে বলত “কি দোস্ত কোন শিকার পেলে?” আহান হেসে বলত-“যাও মিয়া আমি কি শিকার খুঁজতে আসি? আমার গার্ল ফ্রেন্ড আছে না?” সেই আহান একদিন গল্পকে বলে “দোস্ত দুই একটা মেয়ের আইডি দাও না।” গল্প শোনে অবাক্, বলে কি? নিতান্তই রসিকতা করে বলল, “এই কি কথা? ছোঁয়া শুনলে রাগ করবে না?” সে বলল-“দোস্ত অনেক ভাবলাম, তার পর তোমার কথা মনে পড়ল, সন্দেহ নিয়ে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা যায় না। আমি ওর সাথে সম্পর্ক ছেদ করা সিদ্ধান্ত নিয়েছি”। গল্প বলল-“ভেবে বলছ? ছোঁয়া কি বলে?” আহান একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল-“গত ১৫ দিন ধরে আমার ফোন ধরছে না, কিছু বলবে কি করে?” গল্প বলল-“একদিন সময় করে যাও, দেখা করো, তাকে সব বুঝাও, এইভাবে সম্পর্কটা ছেদ করা ঠিক হবে না।” সে বলল-“ওঁকে ওর এক কাজিন পছন্দ করে, হয়তো সেখানে নিজের সুখের ঠিকানা খোঁজে পেয়েছে।” তারপর গল্প কৌতূহল বশে জানতে চাইলাম-“তোমাদের কি কোন শারীরিক সম্পর্ক হয়েছিল?” আহান আমাকে একটা ইমোটিকন রাগ প্রকাশ করে বলল-“ না মিয়া।” গল্প নাছোড়বান্দা আবার জানতে চাইল-“কিস টিস কি হয় নাই?” সে সলজ্জ হাসির একটা ইমোটিকন দিয়ে বলল-“সেটা হয়েছে বেশ কয়েকবার।”

এরপর কয়েকদিন ধরেই আইএম এ এসেই আহান মেয়েদের নক করতে শুরু করল। অথচ এর আগে গল্প প্রেম করার জন্য প্রতিদিন মেয়েদের “হায়” দিত বলে আহান গল্পের নাম দিয়েছিল “শিকারী” আর এখন আহান নিজেই মেয়েদের ত্যক্ত-বিরক্ত করে চলছে। মেয়ে আইডি দেখলেই “হায়” দিয়ে বসে থাকে কেউ রিপ্লাই “হায়” দেয়, আবার কেউ দেয় না। তাই বলে আহান থেমে থাকে না। কেউ আবার রিপ্লাই “হায়” দিয়ে asl(age, sex and location) জানতে চায়। বিপরীত লিঙ্গের হলে কথা জমে, আর সমজাতীয় হলে জমে কিনা গল্প জানে না, কেননা গল্প নিজেও সমজাতীয় লিঙ্গের সাথে খুব বেশী চ্যাট করতে চায় না। গল্প শুনেছে এই মিথ্যার স্বর্গ রাজ্যে থেকেও নাকি অনেকে গার্ল ফ্রেন্ড যুগিয়েছে। গল্প তাই গত পাঁচ মাস ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছে কিন্ত কাউকে রাজী করাতে পারে নাই। পারে নাই বললে গল্পের যোগত্যা নিয়ে অবহেলা করা হবে। আসলে যারা রাজী হয় তারা সবাই গল্পের অনেক জুনিয়র। গল্প পড়া লেখা শেষ করে চার বছর ধরে চাকুরি করছে সেখানে কি কলেজের মেয়ের সাথে প্রেম করা চলে? তাই গল্প অনেক গুলো অফার ফিরিয়ে দিয়েছে নেহাত ছোট মেয়ে বলে। গল্পের এই দুরবস্থা থেকে পরিত্রানের জন্য উদ্ধার কর্তা আহান রুমে এসেই গল্পকে মেয়েদের তালিকা দিত যাতে গল্প নক করে। কিন্ত সময়ের দোলাচলে চিত্র এখন উলটো। এখন আহান গল্পের কাছে মেয়েদের তালিকা চায়।

সেদিন সাদিয়া নামে একটা মেয়েকে আইএম এ পেয়ে গল্প আহান কে বলল-“ দোস্ত সাদিয়া নামে একটা মেয়ে রুমে আছে, দেখো রিয়েল সাদিয়া কিনা? হলে শিকার করার চেষ্টা কর।” আহান গল্পের কথায় সাদিয়াকে “হায়” দিল। সাদিয়াও হায়ের উত্তর দিল দ্রুত, যেন আহানের “হায়ের” অপেক্ষায় ছিল। আহান দিব্যি গল্পকে ভুলে সাদিয়ার সাথে চ্যাট করতে শুরু করল। গল্প টিপ্পনী কেটে বলল-“ কি দোস্ত মেয়ে মানুষ পেয়ে কী বন্ধুকে ভুলে গেলে?’ আহান একটা ইমোটিকন হাসি দিয়ে জানান দিল-“না বন্ধু, প্রাথমিক স্টেজে আছি, তাই একটু সময় বেশি দিতে হচ্ছে। একটু সাইজে এনে নেই, তারপর তোমার সাথে কথা হবে।” ওরা প্রথমে চ্যাট রুমে কথা বলত, তারপর প্রাইভেট চ্যাট রমে কথা শুরু করল। এরপর সাত দিন না যেতেই আহান গল্পকে বলল-“দোস্ত সাদিয়া এখন আমাকে ফোন করে।” গল্পতো অবাক্, বলে কি। গল্প কিন্ত মনে মনে জেলাস ফিল করল। ভাবল শালায় ৫মাস ধরে চেষ্টা করছি একটাও পেলাম না। আর ওনি ১৫ দিনেই দ্বিতীয় জুলিয়েট জোগাড় করে ফেলল। তারপর গল্প আহানকে অভিনন্দন জানাল। তাঁরা এখন নিয়মিত মোবাইলে কথা বলে, আইএম এ চ্যাট করে, ইয়াহুতে চ্যাট করে। আহান যখন যেটাতে সময় করতে পারে সাদিয়া তখন সেটাতে আহানের সাথে কথা বলে। আহানকে নাকি এখন প্রতিদিন ফোন করে ঘুম থেকে তুলে দেয় অফিস যাওয়ার জন্য, অফিসে ঠিক মত পৌঁছল কিনা ফোন করে খবর নেয়। সাদিয়ার এই যত্নশীল আচরণে আহান কুপোকাত। সেদিন গল্প আহান কে বলল-“আহান তুমি যে সাদিয়ার সাথে জরাতে যাচ্ছো, ছোঁয়া যদি ফিরে আসে?” আহান গল্পের প্রশ্ন শোনে অনেক ক্ষণ নীরব ছিল- তার পর বলল-“দোস্ত আমি ছোঁয়াকে অনেক ভালবাসি কিন্ত ছোঁয়া আমাকে বুঝতে চায় না। সাদিয়া আমাকে যে ভাবে বোঝার চেষ্টা করছে, সেটা আমি কখনো ছোঁয়ার মাঝে পাইনি।” গল্প বলল-“দোস্ত আমি কিন্ত উওর পেলাম না।” আহান বলল-“ও আসবে না। ও অনেক জেদি মেয়ে। তাছাড়া কাজিনের সাথে ওর সম্পর্ক দানা বাঁধতে শুরু করেছে।” গল্প আহানের কথায় আশ্বস্ত হতে পারল না। আবার বলল-“এটা কি ছোঁয়া নিজে বলেছে?” আহান বলল-“না, আমি শুনেছি।” শোনা কথায় কান দিতে নেই ছোট বেলা থেকেই গল্প পড়ে আসছে। কিন্ত আজ এই বয়সে এসে আহান সেই শোনা কথায় তিন বছরের সম্পর্ক ছেদ করে নূতন সম্পর্ক গড়তে যাচ্ছে। গল্প জানে না “চিলে কান নিয়ে গেছে” কবিতাটি আহান পড়েছিল কি না। গল্প আর জানতে চাইনি।

নদী যেমন উৎস পথে কম শাখা -প্রশাখা ছড়ায় ঠিক তেমনি ভাল বাসা যখন শুরু হয় তখন আবেগটা বেশি থাকে সন্দেহে বা ভুল বোঝাবুঝি শাখা -প্রশাখা কম বিস্তৃত করে । নদী যতই উৎস পথ থেকে ছুটে মোহনার দিকে অগ্রসর হয় ততই শাখা -প্রশাখা বাড়তে থাকে, অনেক সময় মোহনায় আসার আগেই নিজের অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলে। মিশে যায় অন্য কোন নদীর গর্ভে। ঠিক তেমনি ভালবাসা, ভালবাসা শুরুর সময় সন্দেহ বা ভুল বোঝাবুঝি স্থান থাকে না। সময় নিয়ে অভিযোগ থাকে না। একে অন্যের প্রতি যত্নশীল হয়, এর কোন ব্যত্যয় ঘটে না। কিন্ত যতই সময় যায়, যত ঘনিষ্ঠ হয়, ততই চাওয়া -পাওয়া বাড়ে, খুঁটিনাটী ব্যাপারে সন্দেহের সৃষ্টি হয়, কাছে থাকার চাওয়া-পাওয়া নিয়ে ভুল বুঝাবুঝি হয়। শেষে কোন সম্পর্ক মোহনার খোঁজ পায় , আবার কোন সম্পর্ক মাঝ পথে অন্য কোন সম্পর্কের সাথে বিলীন হয়ে যায়।

এই লেখার দিন পর্যন্ত আহান - সাদিয়ার প্রেম এখনও উৎস পথেই আছে, তারা এখনো সশরীরে কেউ কাউকে দেখে নি। শুধু এমএমএস বিনিময় হয়েছে। প্রযুক্তি মানুষের জীবনকে কত সহজ এবং নির্ভার করে দিয়েছে। কত সহজে মানুষ জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গুলো নিতে পারছে ঘরে বসে। আমি আহানের প্রেমের সাফল্য কামনা করছি, আর সাথে সাথে এই ও আশা করছি, ছোঁয়ার মত যারা সন্দেহ প্রবণ বা বেশি আত্মকেন্দ্রিক, তাঁরা বাস্তবতার নিরিখে ভেবে, বুদ্ধি বিবেচনার মাধ্যমে ছাড় দেয়ার মানসিকতা নিয়ে সম্পর্কে জরাবে। গ্লোবালাইজেশনের যুগে শুধু শুধু সময় নষ্ট করার সময় ক্যারিয়ার সচেতন ছেলেদের নাই। তাঁরা জীবন গড়ার ফাঁকে ভালবাসে, ভালবাসার ফাঁকে জীবন গড়ে না। ক্যারিয়ার প্রতিষ্ঠিত হলে ভালবাসা বিরাজমান থাকবে , ক্ষুধার কারণে জানালা দিয়ে পালাবে না।
===============
লেখক: দলছুট


মন্তব্য

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

এটা ঠিক ছোটগল্পের সাইজে নাই... পূর্ণ গল্প সাইজের হয়ে গেছে

লেখাটা অনেক অগোছালো লাগলো... গল্পের প্রথমে এমন অনেক কিছু আছে যার সঙ্গে মূল গল্পের খুব দরকারী কিছু নাই। চরিত্র নির্মাণের জন্যও এতোকিছু লাগে বলে মনে হয় না। মোটকথা অনেক বাড়তি জিনিস আছে মনে হইলো...

আর শেষদিকের উপদেশ টাইপ কথাগুলা ভালো লাগলো না একেবারেই... মনে হইলো পুরা গল্প লিখে কোনো ফোকাস পয়েন্ট ঠিক করতে না পেরে এবার লেখক নিজের বয়ানেই নামছে গলা ছেড়ে...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতিথি লেখক এর ছবি

নজরুল ভাই ধন্যবাদ।
এখানে লিখতে এসে অনেক কিছু শিখতেছি। কূট মন্তব্যও সয্য করছি। অনেক পরামর্শ, নির্দেশনাও পাচ্ছি। কখনো ভাল লাগে কখনো মন খারাপ হয়। ভাবি আর লিখব না, কিন্তু যখন আপনার মন্তব্য পাই তখন ভাবি আবার লিখব।

এখানে প্রথম দিকে কথা গুলো বলেছি গল্পের একাকীত্ব বুঝানোর জন্য এবং কেন গল্প আইএম এ সময় কাটায় সেটার বুঝানোর জন্য।
যেহেতু আহান-সাদিয়ার প্রেম মাঝ পথে এবং আহানের ভাষ্যমতে শুধু মাত্র সময় না দেয়ার কারণে ছোঁয়ার সাথে সম্পর্ক ছেদ হয়েছে তাই শেষের কথা বলেছি।

গল্প শুধু কি মনের খোরাক? কিছু কি এখান থেকে পাঠকের শিখার নেই?

ধন্যবাদ নজরুল ভাই আমার সাথে থাকার জন্য। দোয়া করবেন যেন আর ভালো লিখতে পারি। ভালো থাকবেন।

দলছুট।

হিমু এর ছবি

অণুগল্প ট্যাগ দেখে ঢুক্সিলাম, ঢুকে দেখি নরমাল অণু না, পুরা পলিমার!



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

অতিথি লেখক এর ছবি

হিমু ভাই ধন্যবাদ পড়ার জন্য। হতাশ করার জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত। আমি আমার জীবনের একটা অংশ এখানে শেয়ার করতে গিয়ে গল্পের আশ্রয় নিয়েছি, ভাল লাগলে ধন্যবাদ, খারাপ লাগলে সময় নষ্ট করার জন্য আবারও দুঃখিত।

দলছুট।

মূলত পাঠক এর ছবি

মডারেটরদের এইটা প্রকাশযোগ্য মনে হয়েছে? বিস্মিত হলাম খুবই।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ মূলত পাঠক ভাই আপনার সহজ সরল সত্য কথার জন্য। আপনাদের লেখা পড়ে আমরা লেখার প্রেরণা পাই, আর কিছু লেখার চেষ্টা করি। আপনাদের ভাল লাগলে ধন্য হই, না লাগলে ভাল করার পরামর্শ, নির্দেশনা আশা করি।

হুমায়ন আহমেদের লেখাও যে সবাই পছন্দ করে সেটা কিন্ত না। তাঁর সব লেখাও যে ভাল তাও কিন্ত না, তারপরও প্রকাশ পায়, মানুষ পড়ে। লিখতে লিখতে মানুষ ভালো লেখক হয়। আপনার সব লেখাই যে সবার ভালো লাগে তাও কিন্ত নয়, তারপরও আপনার সব লেখাই সচলায়তনে প্রকাশ পায়।

আমি সব সময় মানুষের সমালোচনা নেয়ার জন্য অপেক্ষা করি, সমালোচনা আত্বোশুদ্ধির সুযোগ করে দেয়। আপনার রূঢ় মন্তব্যে আমি মোটেও কষ্ট পাইনি, বরং আপনাকে ধন্যবাদ জানাই আমাকে সাহায্য করার জন্য।

জীবনের ঘটে যাওয়া ঘটনাই গল্প। এটা কেউ সুন্দর ভাষায় উপস্থাপন করতে পারে কেউ পারে না, আমি হয়তো না পাড়াদের দলে। আপনি হয়তো পাড়াদের দলে, তাই বলে কি অবজ্ঞা!!!!
আমি যতদূর জানি, সচালায়তন ভিন্ন মাত্রার লেখা আশা করে। গতানুগতিক লেখার বাইরে সচলায়তন নূতন ধাঁচের লেখা খোঁজে এবং সেটা প্রকাশের চেষ্টা করে। আমি লেখাটা একটু ভিন্ন ভাবে লেখার চেষ্টা করেছি মাত্র। আপনার ভালো না লাগার জন্য আন্তরিক দুঃখিত।

সচলায়তনের কাছে জোর আবেদন, তারা যেন আপনাকে মডারেশন প্যানেলে অনর্ভুক্ত করে। তাহলে আমার মত লেখকের লেখা পড়ে পাঠকের সময় নষ্ট করতে হবে না।

আপনার মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। আমার একটু রূঢ় রিপ্লাইয়ের জন্য দুঃখিত।
দোয়া করবেন যেন ভাল লেখা লিখতে পারি।

দলছুট।

মূলত পাঠক এর ছবি

ভাই রে, আমার অন্য মন্তব্যটার পোস্ট করার সময় দেখলে বুঝবেন লিখেই খুব খারাপ লেগেছিলো তাই দ্বিতীয় বার মন্তব্য করেছি। আবার দুঃখ প্রকাশ করছি, আরেকটু সহনশীল হই নি বলে।

অতিথি লেখক এর ছবি

মূলত পাঠক ভাই, আমি কিন্তু কিছুই মনে করিনি। আপনার ভাল লাগেনি এটা আমার ব্যর্থতা।আমি আপনাদের লেখা পড়েই সচলায়তনে লিখতে উদ্বুদ্ধ হয়েছি। আপনারা আমাদের অগ্রজ। আপনাদের সমালোচনা আমাদের জন্য আশীর্বাদ। আপনাদের পরামর্শ, নির্দেশনা আমাদের জন্য চলার পথের পাথেয়। আমার কোন লেখায় যদি আপনি কষ্ট পেয়ে থাকেন, দুঃখ পেয়ে থাকেন, তাহলে আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত। আশা করি অনুজ হিসাবে ক্ষমা করবেন। আর ভাল লেখার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। দোয়া করবেন আপনার মন যেন হাসাতে পারি। আপনি যেন লেখা পড়ে ধারুণ বলতে পারেন।

ধন্যবাদ।

দলছুট।

আসমানী-মডু এর ছবি

ইদানীং সচলায়তনের গড় মানের চেয়ে নিম্ন মানের লেখার কয়েকটি ক্ষেত্রে প্রকাশ করছে আসমানী-মডু। অন্যান্য মডুরা হয়ত দ্বিমত পোষন করতে পারে। ক্ষেত্র তিনটি হল:

১। লেখককে উৎসাহ দিতে। আশা করা যায় লিখতে লিখতে লেখকটি লেখা শিখে যাবে।

২। লেখকের লেখার মানের একটা প্রমান রাখতে। এতে করে ভবিষ্যতে 'কেন আমাকে সদস্য করা হল না?' এই প্রশ্নটি আনতে পারবে না।

৩। বেনিফিট-অভ-ডাউট দিতে। লেখাটা হয়ত এক কথায় বাদ দেয়া যাচ্ছে না।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

আসমানী-মডুর সাথে একমত ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

কীর্তিনাশা এর ছবি

আমিও ।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

দলছুটের লেখা আমি প্রত্যেকটাই পড়েছি। একটা কারণেই, সে লিখতে চায়, নিজের লেখার উন্নয়ন চায়। সমালোচনা নেয়... চেষ্টাটা আছে।

এটুকু থাকলে আমি তার পাঠক হইতে রাজী।

অনেকেই আছেন, যারা লেখেন খারাপ না, কিন্তু নিজেরে পৃথিবীর সেরা লেখক ভাবেন
তাদের লেখা পড়তে আরাম পাই না

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ নজরুল ভাই। আপনাদের সমালোচনা আমার জন্য আর্শীবাদ। আশা করি সব সময় পাশে পাব আপনাকে।
অগ্রীম ঈদ মোবারক।

দলছুট।
=========
বন্ধু হব যদি বাত বাড়াও।

মূলত পাঠক এর ছবি

দুঃখিত, খুবই রূঢ় মন্তব্য করেছি। মুছে দিলেই হতো, তবে লেখক ইতিমধ্যে পড়ে থাকলে তো তাতে আর লাভ হবে না।

একেবারে কিছু মনে করবেন না তা বলবো না, তবে পরের লেখা লেখার সময় মানোন্নয়নের কথাটা অবশ্যই মাথায় রাখার অনুরোধ করবো। তবে লেখা থামাবেন না, লিখতে লিখতেই হাত খুলবে এই ভরসা রাখতেই হবে।

কীর্তিনাশা এর ছবি

দলছুট ভাই লেখা থামাবেন না, রুঢ় সমালচনায় দমে যাবেন না। দুই হাতে ঘ্যাজম্যাজ কইরা লিখা যান, কীবোর্ডে ঠাশ ঠাশ আওয়াজ তুইলা লিখা যান। আপনার আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকলে লেখা ভালো হইতে বাধ্য।

সচলে স্বাগতম।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ কীর্তিনাশা ভাই। অনেক ধন্যবাদ। আমি সমালোচনার ভয়ে দমে যাওয়া ছেলে না, আমি মনের আনন্দে লিখি, আমি জানি লিখতে লিখতে এক দিন ভাল লেখা বের হয়ে আসবে। আপনার উৎসাহমূলক মন্তব্যের জন্য আবারও ধন্যবাদ।

গল্পটা আপনার কাছে কেমন লাগল জানতে পারলাম না। আমি আমার নিজস্ব কিছু চিন্তাধারা গল্প আকারে সাজিয়েছি মাত্র। বলতে পারেন জীবনের কিছু কথা বলার চেষ্টা করেছি। ভাল না লাগলে আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।

আমি চেয়ে আছি সামনে যদি আসে কোনদিন শুভদিন।

দলছুট।

তীরন্দাজ এর ছবি

আপনার লেখার গতি ভালো, উপমাগুলো বেশ কাব্যিক, বর্ননাভঙ্গীতে যথেষ্ট সাবলীলতা আছে।

প্লট সাজানো ও গল্পের কাহিনীতে আরোহন আর অবরোহণের ও সমাপ্তির মাঝের দূর্বলতাগুলো কাটিয়ে উঠতে পারলে, আপনার গল্প অবশ্যই সুন্দর হবে। আপনি চেষ্টা করলেই পারবেন বলে আমার বিশ্বাস!

গল্প হিসেবে স্বার্থকতা না থাকলেও আপনার লেখাটি নিম্নমানের, একথা মানতে আমি একেবারেই রাজী নই।

**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ তীরন্দাজ ভাই। আপনার কথা গুলো আমি মনে রাখব। আসলে লিখতে লিখতে সব ঠিক হয়ে যায় জানি। আরো বেশী পড়তে হবে এবং লেখায় মনযোগ দিতে হবে, এটা আমি স্বীকার করি। কিন্ত অফিস করে বাসায় ফিরে অনেক কিছু আর করা হয় না।
আপনার সমালোচনা আমাকে উৎসাহিত করেছে বহুলানংশে। আপনাকে এর জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

অগ্রীম ঈদ মোবারক।

দলছুট।
=========
বন্ধু হব যদি বাত বাড়াও।

মধ্যসমুদ্রের কোলে এর ছবি

হুমম.....এক গল্প পড়ে অনেক কিছু শিখলাম। সাথে একটা মরালও পাওয়া গেলো।

স্পর্শ এর ছবি

বড় করে লিখতে চেষ্টা করি আমি নিজেও। কিন্তু পারি না। টেনেটুনে দুয়েক পাতা হয়! দম থাকেনা। আজ কিছুদিন বড় গল্প লেখার চেষ্টা করছি, ব্যর্থ হচ্ছি। আপনার এই ক্ষমতাটা আছে।

'গল্পে'র এই গল্পে এমনিতে হিসেবে 'ক্লাইমেক্স' বা এধরণের কিছু একটার অভাব ছিলো। আপনি একটা কাজ করতে পারেন। খুব ছোটো আকারে কিছু গল্প লেখার চেষ্টা করতে পারেন। তাহলে 'শব্দ সংখ্যা' আর 'কী বলতে চাচ্ছি' এই দুয়ের টানাপেড়নে পড়ে লেখাটা গুছিয়ে যাবে এমনিতেই।

এমন একটা কিছু বলার চেষ্টা করুন যেটা কেউ আগে ভাবেনি। এটাই নতুনত্ব। অথবা পুরানো কোনো ধারণা কে নতুন একটা ভঙ্গিতে বর্ণনা করার চেষ্টা করতে পারেন। যেমন এই গল্পে "গল্প" নামের একজন চরিত্র আমার কাছে নতুন লেগেছে। কাব্য শুনেছি, কিন্তু মানুষের নাম হিসেবে গল্প আমার কাছে নতুন। হাসি এরকম আরো কিছু।
মজার কিছু গল্প পড়ুন, এরপর বের করার চেষ্টা করুন কেন এই গল্প মজার/ভালো লাগলো। এই পদ্ধতিটা কাজে দেয়। হিমু ভাইরে গল্প গুলো নিয়ে স্টাডি করতে পারেন। তীরন্দাজও দূর্দান্ত গল্প লেখেন। তার পুরানো লেখা নিয়েও স্টাডি করে দখেন।

আপনার জন্য শুভকামনা।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

স্পর্শ এর ছবি

তথ্য-প্রযুক্তির এই ব্যাপারটা কিন্তু ভালো। আমরা তো আর নাইট ক্লাবে যাইনা।এখানে যুবক-যুবতীদের কোনো সোস্যাল গ্যাদারিং ও হয়না তেমন। আর এগিয়ে গিয়ে অপরিচিত কারো সাথে পরিচিত হওয়ার রীতিটা এদেশে চালু হয়নি এখনো। হলেও তেমন স্মার্ট আর কয়জন আছে?

সব মিলিয়ে এখন ভালোবাসার তথ্য-প্রযুক্তি যুগ চলছে। এইই ভালো।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার সুন্দর বিশ্লেষণ ধর্মী মন্তব্য আমাকে অনেক সাহায্য করবে? ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করবো না। চেষ্টা করবো আপনাদের সমালোচনা গুলো কে আপন করে নিতে, এবং পরবর্তীতে প্রয়োগ করতে।

অগ্রীম ঈদ মোবারক।

দলছুট।
=========
বন্ধু হব যদি বাত বাড়াও।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

আসমানি মডুর সাথে সহমত, অতিথিদের উৎসাহ দেয়াটা পুরো মাত্রায় সমর্থন করি।

... গল্প প্রসঙ্গে আসি। অণুগল্প এটাকে বলা যাবে না- আকারে এটি পূর্ণগল্প। কিন্তু যদি বিশ্লেষণে যাই- ছোটোখাটো কিছু ভুল ধরা পড়বে।

যথাসম্ভব ছোট করে লেখার প্লটটা আপনি আপনার মত করে লিখে ফেলুন- এতে করে বাহুল্য যে অংশগুলো আছে- সেগুলো বাদ যাবে, আমিও পাঠক হিসেবে আরাম পাবো।

এই জাতীয় গল্পের মূল যে আকর্ষণীয় অংশ- সেটা হলো টুইস্ট (মোচড়)। কাজেই সেটা যত নতুন হবে- পাঠক তত বেশি মজা পাবেন পড়ে। এই গল্পে 'গল্প' নামকরণটা আমার খুব ভালো লেগেছে- এরকম নতুন কিচু দেয়ার চেষ্টা করুন না...

আর সমালোচনা তো লিখিয়েদের সহ্য করে নিতেই হবে দলছুট ভাই, সচলায়তনের সবচেয়ে বড় শক্তি এটাই যে এখানে গড় লেখার মান বহু উঁচুতে- আর সুস্থ সমালোচনা এটার প্রভাবক।

... মন্তব্যে কোনভাবে আহত করে থাকলে দুঃখিত, সচলের গল্প লিখিয়েদের কাছে আমার দাবি একটু বেশি- তাই এ দীর্ঘ মন্তব্য।

ভালো থাকুন দলছুট ভাই।
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!

অতিথি লেখক এর ছবি

সমালোচনা শুনে আমি কখন ব্যাথিত হই না। নূতন চেতনা পাই, অনুপ্রাণীত হই। ভালো লেখার জন্য মনে মনে প্রতিজ্ঞা করি। আপনাদের কথা আমি আর্শীবাদ হিসাবে নেই। শিখতেছি, আরো অনেক শিখার আছে। দোয়া করবেন যেন ভালো লিখতে পারি।

অগ্রীম ঈদ মোবারক।

দলছুট।
=========
বন্ধু হব যদি বাত বাড়াও।

সমুদ্র এর ছবি

আপনার লেখার ইচ্ছে আছে, আর সেটা দিয়ে লেখাটা শিখেও নিতে পারবেন আমি নিশ্চিত। বর্ণনার অংশটুকু কমিয়ে সংলাপের মাধ্যমে চরিত্রগুলোকে সামনে নিয়ে আসতে পারেন। শেষে একটা ক্লাইম্যাক্স/মোচড় পাঠক সাধারণত আশা করে, সেদিকটাও খেয়াল রাখতে পারেন।
আমি নিজে গল্প লিখতে না পারলেও নিজেকে একজন ভালো পাঠক মনে করি, তাই একথাগুলো বলা।

আসমানী-মডুর সাথে সহমত।

"Life happens while we are busy planning it"

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার কথা গুলো মনে থাকবে। ধন্যবাদ সুন্দর মতামতের জন্য।

অগ্রীম ঈদ মোবারক।

দলছুট।
=========
বন্ধু হব যদি বাত বাড়াও।

তানবীরা এর ছবি

গ্লোবালাইজেশনের যুগে ছেলেদের এতো সময় নাই !!!! ওহ মাইয়ারাতো গ্লোবালাইজেশনের পার্ট না। তাদেরই কুনু কাম নাই দেহি। সময়ই সময়ই।

আগেতো জানতাম প্রেম জাত, ধর্ম, ভাষা, বর্ণ কিছুই চোখে দেখে না। আজকাল বয়সও চোখে দেখে। শুধু মেয়েরা কিছু দেখলেই দোষ দেখা যাচ্ছে।

যাহোক, মানুষের বুদ্ধিবৃত্তির বিকাশ কোনদিন ঘটবে এই শুভ কামনা রাখছি।

**************************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

অতিথি লেখক এর ছবি

আপু আপনার মন্তব্যে অনেক ক্ষোভ দেখলাম। গল্পের নায়িকা কিন্তু এখন ছাত্রী এবং শেষের কথা গুলো পরামর্শ মূলক,এখানে কিন্তু কোন কিছু মিন করে বলা হয় নি। মেয়েদের ক্ষেত্রেও একি কথা প্রযোজ্য। আশা করি আপনার ভুল ভাঙবে।

অগ্রীম ঈদ মোবারক।

দলছুট।
========
বন্ধু হব যদি হাত বাড়াও।

তিথীডোর এর ছবি

ক) পাঠকদের তখন অনেক ধৈর্য ছিল দেখা যায়। হাততালি

খ)

মেয়ে আইডি দেখলেই “হায়” দিয়ে বসে থাকে কেউ রিপ্লাই “হায়” দেয়, আবার কেউ দেয় না।

হায় হায়, 'হায়' ক্যামনে দেয়? হো হো হো হো হো হো

গ) প্রথম তিন প্যারায় মোট আটবার একাকীত্ব শব্দটা আছে। এজন্যেই কবি বলেছিলেন-- 'মানুষ তার চিবুকের কাছেও একা..'
[গভীর ফিলোসফিক ইমো]

ঘ)

গ্লোবালাইজেশনের যুগে শুধু শুধু সময় নষ্ট করার সময় ক্যারিয়ার সচেতন ছেলেদের নাই। তাঁরা জীবন গড়ার ফাঁকে ভালবাসে, ভালবাসার ফাঁকে জীবন গড়ে না।

হ, আকাইম্যা মেয়েমানুষ সব, বুঝেনই তো। সোয়ামির কান্ধে বসে খাওয়া ছাড়া তো আর গতি নাই...সেজন্য গ্লোবালাইজেশনের যুগে এসেও ক্যারিয়ারের খেতা পুড়িয়ে খালি ভালুইবাসে! ভালবাসার ফাঁকে জীবন তো দূর..সকালে নাস্তা খাওয়ার জন্য রুটিটাও গড়ে না। অন্তত কামারু ভাই সেরকম কাউকে দেখেননি কখনো। চুক চুক।

ঙ) দলছুট : সচলায়তন কীওয়ার্ড দিয়ে গুগল ঢুঁড়ে এসব এপিক পিস বের করেছিলাম। আজকের জন্য পেট ভরে গেছে আপাতত। লইজ্জা লাগে

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।