শুষ্ক হৃদয় লয়ে..

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বুধ, ০৭/১০/২০০৯ - ২:৩৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

গত কয়েকদিন ধরে মন অনেক খারাপ।

সচলায়তনের লেখক সংখ্যার চাইতে পাঠক যে অনেক বেশি এতে আশা করি আমার সাথে কেউ দ্বিমত করবেননা। এখানে আমরা এখন অনেকেই আছি যারা মাসের পর মাস চমৎকার লেখাগুলি পড়ে যাই নিজের অস্তিত্ব জানান না দিয়েই। আমাদের মাঝেই কেউ হঠাৎ একদিন সাহস করে একটি দুটি লেখা দিয়ে পরে সচলায়তনের লেখককূলেরও অংশ হন।

আমি ভেবেছিলাম সচলায়তনে নীরব পাঠিকা হিসেবেই সবসময়ে আমার উপস্থিতি থাকবে, কারণ ক্রিয়েটিভ লেখা লিখবার যোগ্যতা কোনোদিনই আমার হবেনা। তারপরেও হঠাৎ করেই সরব হলাম তানবীরা তালুকদারের এই লেখাটির অন্যায় হুল গায়ে খুব করে বিঁধেছিলো বলে। কিংবা সচলায়তনে এধরনের কোনো কথা কোনোদিন আশা করিনি বলে। এর আগেও ওঁর একটি মন্তব্যে তাঁর সাম্প্রদায়িক মনোবৃত্তি প্রকাশিত হয়ে পড়েছিলো। সেই স্মৃতি মাথায় থাকাতে হয়তো আবেগের প্রকাশ বেশিই আক্রমণাত্মক হয়ে গেছিলো। সেজন্য দুঃখিত। আন্তরিকভাবে।

তারপরে এই দু’দিনে ঘটে গেছে বহু অনভিপ্রেত ঘটনা। সেজন্য খারাপ লাগছে অনেক। কালকে রাত্রে হিমুর একটি কমেন্ট দেখে মনে হলো, এ বিষয়ে তানবীরার লেখার প্রতিবাদকারী হিসেবে আমার কিছু বলার আছে। তাই সাহস করে এই পোস্ট লিখছি।

হিমু লিখেছেন:
মডুর চোখ রাঙানির চেয়ে বড় শাস্তি সহসচলদের তিরস্কার। সেটাই হওয়া উচিত, সেটাই হয়েছে। জাহেদ সরওয়ার তার ভুল স্বীকার করেনি, উল্টো পোস্ট দিয়ে গালিগালাজ করেছে। ফলস্বরূপ জাহেদ সরওয়ার এখন মডারেশনের আওতায়। তবে তার পরও তার পোস্ট ও কমেন্ট প্রকাশিত হয়েছে, তবে তার নিজের ব্লগে।

চেনা অপরাধী তো কারো ভাসুর নয়, নাম নিতে সমস্যা কী? তানবীরা তালুকদার তার ভুল স্বীকার করেছে, এবং তার সাম্প্রদায়িক স্টেটমেন্টের দায় স্বীকার করে সচল থেকে দূরে থাকবে বলে জানিয়েছে।

শাস্তি মানেই যদি ঘাড়ে ধরে বের করে দেয়া হয়, তাহলে ভিন্ন কথা। ঐ পেশী প্রদর্শনটুকু ছাড়াও তো শাস্তি দেয়া যায়। যায় না?


তানবীরা যদি তাঁর ভুল বুঝতে পেরেই থাকেন, তাহলে কেন তাঁকে সচলায়তন থেকে দূরে থাকতে হবে, তা আমার বোধগম্য নয়।

আমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই যিনি কোনোদিন ভুল করেননা। দৈনন্দিন জীবনে আমরা অনেকসময়েই নিজেদের ভুলের জন্য ক্ষমা পাইনা, এবং অন্যের ভুলও সহজে ক্ষমা করতে পারিনা। ব্লগজীবনেও কি তার জের টেনে এখন প্রত্যেকে প্রত্যেকের নির্মম বিচারক হয়ে বসবো? নিজের ভুল বুঝতে পারাটাই সবচাইতে বড়ো কথা। তানবীরা যদি সত্যিই তাঁর ভুল বুঝতে পেরে থাকেন, তাহলে এর চেয়ে চমৎকার বিষয় আর কী হতে পারে? তাহলে তো তিনি এবার আরও ভালোভাবে সবার বন্ধু হতে পারবেন। সচলায়তনে তো বেশ কিছু হিন্দুও আছেন, হয়তো এবার কোনো অবর্ণবাদী হিন্দুর সাথেও তাঁর বন্ধুতা হয়ে যেতে পারে। আর যদি সত্যি সত্যি উনার মনোভাবের পরিবর্তন না হয়, তাহলে দু’মাস হোক, ছ’মাস হক, আর দু’বছর হোক, কোনো না কোনো লেখাতে মন্তব্যে তার ভেতরের সেই বিদ্বেষ ফুটে বেরোবেই। কিন্তু তখনকারটা নাহয় তখনি দেখা যাবে। একজন মানুষ ভুল স্বীকার করছেন, এর কি কোনো মুল্য নেই?

তাই তানবীরার লেখার প্রতিবাদকারী হিসেবে আমি উনাকে অনুরোধ করছি, আপনি নিজের ভুল বুঝে থাকলে, ফিরে আসুন। হয়তো আমরা বন্ধু হতে পারি।

আরেকটি কথা, মডারেটরদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এই লেখাতে এই মন্তব্যটি দেখুনঃ

মামুন হক লিখেছেন:
আপনে আবার আসলেন কোত্থেকে ফোড়ন কাটতে, ত্যানা প্যাচানো বন্ধ করেন।
সৎ সাহস থাকলে নিজ নিকে লিখেন আর নাইলে অফ যান। ছদ্মবেশীদের দেখতে পারিনা একদম।
এধরণের আক্রমণ কি সচলায়তনের কোনো লেখক আরেক লেখককে করতে পারেন? যদি এটি সচলায়তনের শিষ্টাচারসম্মত হয়, তবে আমার কিছু বলার নেই। আর যদি না হয়, তাহলে অতিথি লেখকদের প্রতি এধরণের অশিষ্ট আচরণের বিরূদ্ধে সচলায়তন কর্তৃপক্ষ কী ব্যবস্থা নিতে পারেন, তা আমি জানতে চাই।

স্মৃতিহারানি


মন্তব্য

হলুদ-মডু এর ছবি

সচলায়তনে এই ধরণের মন্তব্যের জবাবে বা মডারেটরদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পোস্ট দেওয়াকে প্রবলভাবে নিরুৎসাহিত করা হয়ে থাকে। ভবিষ্যতে এই বিষয়ে সতর্ক থাকার অনুরোধ করা হচ্ছে।

আপনার কোন অভিযোগ থাকলে contact@সচলায়তন.কম এ মেইল করে জানাবেন।

ধন্যবাদ।

অতিথি লেখক এর ছবি

আমি জানতাম না। সত্যি আমি দুঃখিত। আমি মেইল করছি।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- তানবীরার সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে দেখা যাচ্ছে এটাই সাম্প্রতিকতম সংযোজন। অনেকেই অনেক কিছু লিখেছেন এই নিয়ে, গোছানো, অগোছানো সবই। আর মোটামুটি সবগুলো লেখাই আমাদের সবার 'মনের কথা' হয়েছে। সবার মনের কথা একাধিকবার প্রকাশিত হয়ে যাবার পরেও আমরা এই নিয়ে সোচ্চার থেকেছি, তানবীরার সাম্প্রদায়িকতাকে চেপে ধরার জন্য। তাই ব্যাপারটা যেখানে শেষ হয়ে যেতে পারতো সেখানে শেষ হয়নি। পুরো সচলায়তনের ইতিহাস ধরে টানাটানি শুরু হয়েছে কয়েক জায়গায় দেখলাম। অমুক কবে তমুকের সাথে কর্কশ ভাষায় কথা বলেছে, তমুককে কর্কশ ভাষায় বিদেয় করে দেয়া হয়েছে। অমুকের ভাষা সুশীল না, তমুক বেয়াদব— এইসব ফাজুল কি বাত অনায়াসে চলে এসেছে সামনে। এইসব বাতচিত করার সময় আমাদের খেয়াল থাকে না যে সবসময় কিছু চোখ নিরন্তর তাকিয়ে থাকে সচলের পাতায়। সচলে আভ্যন্তরীন কিছু একটা হলেই সেই চোখ গুলো চকচক করতে থাকে। শুরু হয়ে যায় সচল নিয়ে গুটিবাজী। এটা নতুন কিছু না, সেই মান্ধাতার আমল থেকে দেখে আসতেছি। দেখে দেখে রীতিমতো বিরক্ত। যতোটা না বিরক্ত সেইসব চকচকে চোখের গুটিবাজীতে, তার চেয়েও বিরক্ত এইসব ব্যাপার নিয়ে সচলে ত্যানা প্যাঁচানোতে।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।