রোজনামচা : ৫/১১/২০০৯

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শুক্র, ০৬/১১/২০০৯ - ৬:২৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

"সকাল থেকে লুকোচুরি খেলা শুরু করি, আমরা চোর আর সুর্য্য সিপাহি..." নাহ মানাচ্ছেনা পুরোপুরি, যদিও কয়েক দিন ধরে খেয়াল করেছি, সকালে ঘুম ভেঙেই এই গানটা ধরি বিড়বিড় করে।

আমরা চোরই, তবে সিপাহি এখানে অফিস টাইম, জ্যাম, বাহনের স্বল্পতা। দুটো মিনিট লেট হলে এমন ভাব দেখি, যেন গনহত্যার আসামি! ডিএসটির গুঁতোয় সকাল আটটা মানে যে আসলে সাতটা - মালিক পক্ষ ভুলেই গ্যাছে সেটা বেমালুম। অবশ্য তাদের অফিস টাইম যাচ্ছেতাই - মানে তাদের যা ইচ্ছে তাই মোতাবেক, আজ হয়েছিলো ভর দুপুরে, আর জ্যামে লেট এর কারনে ঝাড়ি খেলো আটটা তিনে ঢোকা ছেলেটা - লগবই সাইন বাধ্যতামূলক আমাদের কামলাদের জন্যে।

যাকগে, দিনটা খারাপ যায়না কোনদিনই, গান আছেনা? গান, হ্যাঁ গান - সারাদিন শুনি, অস্ফুট স্বরে গাই, কখনো বা কোরাস ধরি ক'জনা।

ইদানিং পিকনিক হচ্ছে হররোজ - খাবার সাপ্লাই করবার দোকানটার গনেশ উল্টেছে, রাঁধা হচ্ছে অফিসেই - তাই রোজ পিকনিক।

দু হপ্তা আগে চাকরী যাওয়া ছেলেটা ফোন করেছিলো, চাকরী জুটেছে, দরকার রিলিজ লেটার, সেটাও দিচ্ছে না মালিকের চামচা কাম সেক্রেটারি কাম বন্ধু। অনেকদিন পর আজ অফিসে মেঘ ডাকা শুনলো সবাই। ডেকে দেখালাম, রেজিগনেশনটা শুধু ডেস্কটপেই নেই, মোবাইলের মেইল ড্রাফট এও আছে।

ভালো লাগে না এরকম সময়, কেন শুধু শুধু অন্যের পেছনে আঙুল দেওয়া? অপর পক্ষ বিব্রত হয় ঠিকই, নোংরা আর গন্ধ ভরে কিন্তু তোমারই আঙুলে!

আবার নিজেকেই বোঝাই, দাসের জাত মালিক হলে এই-ই তো হবে! ব্রিটিশ বুট এখোনো পিঠে পড়া দরকার - মাঝে মাঝে খুব মনে হয়।

বিকেলটা আমার - একদম আমার - একার। কারো ভাগ নেই। মোড়ে নেমে এক কাল ধুলো ভরা চা খাই, মোড়ের দোকানে, রোজই ঢুকি কাঁচা বাজারে - সবুজ দেখি কাঁচা বাজারে, মনে হয়, সারা ঢাকার থেকে অনেক বেশি সবুজ আছে শব্জী-বাজারের কোনায় কোনায়।

"সবুজের ফিকে রং...." ধুস শালা! গান গুলো মাথায় কিলবিল করে কেনো? গলা যা তাতে কুকুর পালায়!

এলাকার একদম শেষ মাথায় কাকের বাসার উচ্চতার ফ্ল্যাট - সারা দিনের ক্লেদ ধুয়ে নিয়া যায় বাতাস - উদ্দাম শেতল বাতাস।

মাঝ রাতে ব্যালকনিতে চুপচাপ বসে ক্লান্তির হাতছানি উপভোগ করি।

"আমার দুবাহু প্রসারিত করে সূর্যের কোন অঞ্চলে
পাক খেয়ে নেচে অবশেষে এই শ্বেতাঙ্গ দিন শেষ হলে..."

নচিকেতায় শুরু দিনটা সুমনের রাতে এসে শেষ হয়,
ল্যাংস্টন হিউজ স্বপ্ন দেখায়।

- রাতমজুর


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ

- রাতমজুর

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

ভালো লাগলো হাসি
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ

- রাতমজুর

মণিকা রশিদ এর ছবি

ভালো লাগলো।
_______________________________
আর সব যুদ্ধের মৃত্যুর মুখে হঠাৎ হাসির মতো ফুটে ওঠা পদ্মহাঁস
সে আমার গোপন আরাধ্য অভিলাষ!
--আবুল হাসান

----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ

- রাতমজুর

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো লেগেছে! *তিথীডোর

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ

- রাতমজুর

অতিথি লেখক এর ছবি

"তবুও জীবন যাচ্ছে কেটে জীবনের নিয়মেই"

স্পার্টাকাস

অতিথি লেখক এর ছবি

তা ঠিক, জীবনের সিসটেমটা তার মতই চলছে

ধন্যবাদ

- রাতমজুর

প্রবাসিনী এর ছবি

সুন্দর লিখেছেন।
________________________________________________

হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে

________________________________________________

হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ, দেশে ফিরুন।

- রাতমজুর

অনিকেত এর ছবি

বাহ----!!

অতিথি লেখক এর ছবি

বাপ্রে! ধন্যবাদ,

- রাতমজুর

ভুতুম এর ছবি

ভালো লিখেছেন। আরো লিখুন।

--------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ, (লক্ষীপ্যাঁচা পুষেছিলাম দিন দুই, ভুতুম জোটেনি মন খারাপ )

- রাতমজুর

সাফি এর ছবি

অনেকদিন পর আজ অফিসে মেঘ ডাকা শুনলো সবাই-মানে?

অতিথি লেখক এর ছবি

গলাটা যথেষ্ট হেঁড়ে, হাইটের মারটা সৃষ্টিকর্তা রাক্ষুসে চেহারা আর মেঘডাকা গলা দিয়ে পুষিয়েছেন।

ধন্যবাদ,

- রাতমজুর

আলমগীর এর ছবি

চলুক।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ,

- রাতমজুর

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

ভালো লিখেছেন

অটঃ কোনো পাকি ম্যানেজমেন্টে কাজ করেন নাকি?

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

অতিথি লেখক এর ছবি

না রে ভাই, তেমন দিন এলে চাকরির খ্যাতা পুড়বো, আসলে বাঙালীর মত বড় শত্রু বাঙালীর আর নেই, একটুকু ক্ষমতা দেখাবার সুজোগ পেলে জাতভাইকে পিষে মারতে ওস্তাদ আমরা। ভালো থাকুন।

- রাতমজুর

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।