মেহেরবানি

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শুক্র, ০৪/১২/২০০৯ - ৭:১১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সকালে উঠে দাঁত ব্রাশের পর প্রতিদিনকার মতো কম্পু চালু করে পাঁচটা ট্যাবে খবরের কাগজখুলে পড়া শুরু করলাম। হেডলাইন পছন্দ হইলে বিস্তারিত, না হইলে হেডলাইনেই খতম। ত্রিতীয় ট্যাবের সাইটে প্রথম পাতার হেডলাইনগুলো দেখতে দেখতে চোখে পড়লো পরপর তিনটা লনচডুবি সংক্রান্ত হেডলাইন। তিন নাম্বারটার হেডলাইন্টা একটু খাপছাড়া মনে হওয়ায় মারলাম ক্লিক।

বিস্তারিত পড়ে আমি যারপর নাই আনন্দিত (!)। ঘটনা অসামান্য। সরকার আমাদের প্রতি মুল্যহীন লনচডুবিজনিত মূর্দার জন্য তাদের পরিবারকে এইবার তিরিশ হাজার টাকা দিয়া খুশি কর্তেসেন(আগের বার মাত্র বিশ হাজার টাকায় সমাধা করা হইসে)। যদি একই পরিবারের দুইজন মারা যান সেক্ষেত্রে তারা পাবেন পয়তাল্লিশ হাজার টাকা (পুর্ববর্তি সময় যা তিরিশ হাজারে সীমাবদ্ধ ছিলো)। পাশাপাশি যে সকল অসীম সৌভাগ্যবান ও ভাগ্যবতী তাদের স্বজনদের লাশ খুঁজে পেয়েছেন তাঁদের জন্য বিশেষ পুরষ্কার হিসেবে আছে সরকারের তরফ থেকে লাশ দাফনের জন্য নগদ তিন হাজার টাকা। আসেন সবাই এই বদান্যতাকে মুবারকবাদ জানাই। মাশাল্লাহ, সুবহানাল্লাহ।

লনচডুবিতে মৃতদের পরিবারের টাকা পাওয়ার বিষয়টা আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানের পরিধির মধ্যে ছিলো না। সেই কারনেই এতোটা চমকানো অবস্থা আমার। গত জোট সরকারের আমলে ছাগল দেয়ার বিষয়টা অবশ্য ভুলি নাই।

সরকারের আমলা এবং নীতিনির্ধারকদের কাছে আমার বেয়াদবের মতো একটা প্রশ্ন করতে মন চায়, প্রতিবার লনচডুবিতে পুরষ্কার ঘোষনার পরিবর্তে প্রতি ঈদে লনচঘাটে সরকারের তরফথেকে একটু কড়া নজরদারি আমরা আশা করতে পারি কি?

পুনশ্চঃ
শেষ খবর অনুযায়ি, উদ্ধার কাজের সমাপ্তি ঘোষনা করে ফিরে গেছে উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা ও রুস্তম। বেয়াদব জনগনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যমতে এখনো উদ্ধার হয়নি শতাধিক যাত্রির লাশ।
ডুবে থাকা যাত্রিদের কাছে আমার বার্তা- ডুবে থাকুন ভাই। মরেইতো গেছেন এখন আর কষ্ট কী? আপনাদের পরিবার হয়তো আপনাদের কল্যানে কিছু অর্থসাহায্য পেয়ে যাবে কিংবা অতি সংবেদনশীল কোন নেতা বক্তৃতাকালিন সময়ে স্থাপিত আত্মিয়তার কল্যানে সে টাকা পকেটে পুরবেন। আপনাদের কোন কিছুতেই আর কিছু যায় আসে না। কিন্তু সাবধান, নদীর পানি গন্ধ কইরেন না।

পুনঃপুনশ্চঃ
ভাইরে আমার কিচ্ছু ভালো লাগতাসেনা। সুইসাইড খাওনের মনচাইতাসে।

---- মনজুর এলাহী ----


মন্তব্য

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

সরকারের আমলা এবং নীতিনির্ধারকদের কাছে আমার বেয়াদবের মতো একটা প্রশ্ন করতে মন চায়, প্রতিবার লনচডুবিতে পুরষ্কার ঘোষনার পরিবর্তে প্রতি ঈদে লনচঘাটে সরকারের তরফথেকে একটু কড়া নজরদারি আমরা আশা করতে পারি কি?
সমর্থন জানাই।

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাইরে আমার কিচ্ছু ভালো লাগতাসেনা। সুইসাইড খাওনের মনচাইতাসে।

খাই হালান, কি অবি বাচি থাকি ?

নীল ভূত।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

আরে বস, সুইসাইড খাইলে আগে আমারে একটা আত্মীয় হই এমন সার্টিফিকেট দিয়া যাইয়েন, আর তারপরে লঞ্চে উইঠা পড়েন, ফাউ সুইসাইড না খাইয়া আমাগো কিসু দিয়া যান চোখ টিপি হেই পাত্তি দিয়া কয়দিন সচলাড্ডা করুম ইস্টার কাবাবে দেঁতো হাসি

লেখাটা পড়ে মাঠা কিঞ্চিত খারাপ হইল, দুনিয়াজুড়া আসলেই পচুর গিয়াঞ্জাম
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অতিথি লেখক এর ছবি

সাইফ ভাই কি এখন ঢাকায় ?
নাকি স্টার কাবাব মটুদেশেও কাবাব ফ্যাক্টরি খুলসে?

---- মনজুর এলাহী ----

দুর্দান্ত এর ছবি

যার গেছে তার সবই গেছে। ক্ষতিপূরনের হক তাদের অবশ্যই আছে।
তবে এই ক্ষতিপূরনের দায় সরকারের ঘাড়েই কেন শুধু পড়বে। লঞ্চের মালিকের কি কোন দায় নেই? লঞ্চের মালিক যদি লাপাত্তা হয়, তাহলে তার বীমাকারি তো আছে। সাধারনবীমা কর্পোরেশানের নৌবীমা ছাড়া আমাদের দেশে নৌপরিবহনের ছাড়পত্র মেলার কথা না। এই ধরনের ঘটনার পরে লঞ্চ কোম্পানী অবশ্যই বীমা থেকে টাকা তুলবে। সেই টাকায়ও তো যাত্রীদের হক থাকবে।

অতিথি লেখক এর ছবি

দুর্দান্তদা, বীমাকোম্পানি গুলোর নৌবীমাপত্রের বিষয়াবলির মধ্যে কিন্তু (যাত্রিবাহি নৌবাহন) যাত্রিদের ক্ষতিপুরণের বিষয়টাও থাকে। আমি একাডেমিক সুত্রে বেশ কয়েকটা বীমা কোম্পানির পলিসি চেক করতে গিয়ে এ জিনিসটা খেয়াল করেছি। আর যদি এটা সব বীমা কোম্পানির নৌবীমাচুক্তিতে না থাকে তবে তা যোগ করার বাধ্যবাধকতা সরকার দিতেই পারে। তাতে বীমার প্রিমিয়াম সামান্য বাড়া ছাড়া কোন অসুবিধা হবার কথা নয়... কিন্তু আসল কথা হচ্ছে, সরকার চালায় রাজনীতিকরা আর তাদের পেশা কেবল একটা না। ডুয়েল মেজর হিসেবে তারা আবার ব্যবসাও করেন। যে লঞ্চ ডুবে গেছে তার মালিক কিন্তু জোট সরকারের যুবরাজ।
আমরা শুধু বসে বসে তামাশা দেখি, কিছু করিও না- করার চেষ্টাও করি না।

---- মনজুর এলাহী ----

দুর্দান্ত এর ছবি

এটা সব বীমা কোম্পানির নৌবীমাচুক্তিতে না থাকে তবে তা যোগ করার বাধ্যবাধকতা সরকার দিতেই পারে।

এই আইন তো আছেই। তবে জায়গামত প্রয়োগ নাই।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- লাভ নাই বস কোনো দাবি দাওয়া জানাইয়া। তার চেয়ে চলেন আমরা বাংলাদেশের সরকার নামক বোবাকালা, প্রতিবন্ধী সিসটেমটারে একটা হাঁটু ইশটাইলে অভিনন্দন জানাই 'একজন মরলে আরেকজন ফ্রী' মতবাদের চলন ঘটানোর জন্য।
"দল, সরকারকে স্যালুট দিবে, স্যালুট দেহ্"
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।