কাক - [দ্বিতীয় কিস্তি]

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বিষ্যুদ, ২২/০৭/২০১০ - ১২:১৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

প্রথম কিস্তি পড়তে ক্লিক করুন

০৩

সকাল ১০টায় রহমান সাহেব অফিসে ঢুকলেন। রুমে ঢোকার আগে প্রতিদিন নিজের দরজার সামনে দাঁড়ানো তার অভ্যাস। এই সময়টায় তিনি নিজের নেমপ্লেট পড়েন। নেমপ্লেট দেখলে তার কেমন যেন শান্তি শান্তি লাগে। জীবনে কি এটাই লক্ষ্য ছিল? মাঝে মাঝে তিনি জীবনের লক্ষ্য নিয়ে ভাবেন। কিন্তু লক্ষ্য বিষয়টা তার কাছে পরিস্কার না।

রুমে ঢুকেই রহমান সাহেব তার পিয়ন সুলতানকে ডাকলেন।
“কেমন আছো সুলতান?”
“ভাল আছি স্যার।”
“চেয়ারের হাতল এ ইদানিং ধুলা দেখা যাচ্ছে । ব্যাপার কি? চেয়ারের হাতল কি পরিস্কার করা হয়না?”

চুপ করে দাড়িয়ে রইলো সুলতান। এ জাতীয় কথাবার্তা চুপচাপ শুনতে হয়। বড় সাহেব যদি রেগে গিয়ে গায়ে হাত-ও তোলে সেটাও হজম করে ফেলতে হবে। অবশ্য আব্দুর রহমান সাহেব কখনো অধীনস্থদের উপর চোটপাট করেন না। কেউ ভুল করলে তার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন। চিৎকার চেঁচামেচির চাইতে নীরবতা এক ধরনের ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করে। ভুল করে ফেলা মানুষটির ভেতর তৈরি হয় অস্থিরতা। একদিকে ভয়, একদিকে অস্থিরতা, সব মিলিয়ে মানুষটি কেমন যেন হয়ে যায়। বিষয়টি আব্দুর রহমান সাহেব উপভোগ করেন।

“শোন, এক গ্লাস ঠান্ডা পানি আনো। ওতে বরফ কুঁচি দেবে। আর এক মগ এসপ্রেসো। যাবার সময় জহিরকে ভেতরে আসতে বলবে।”

সুলতান মাথা নিচু করে বেরিয়ে গেল। এসপ্রেসোটা ঠিক মতো বানাতে হবে। এই জিনিষ ঠিকঠাক না হলে বড় সাহেব খুব রাগ করেন। এসপ্রেসোতে আবার দুই চামচ ব্র্যান্ডি মেশাতে হয়। রহমান সাহেবের তাই পছন্দ। তার ভাষাতে বিষয়টি স্বাস্থ্যপান। স্বাস্থ্যপান করে দিনের কাজ শুরু করেন রহমান সাহেব ।

“স্যার, আসবো?”
“আসুন, জহির সাহেব।”

জহিরুল হক বুক ফুলিয়ে দাঁড়াতে ভালবাসে। স্যারের সামনে কাজটি কেন যেন সে করতে পারেনা। উল্টো কুঁজো হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।

“জহির সাহেব, আপনাকে ফাইল ইন্ডিকেটর বসাতে বলেছিলাম। বসিয়েছেন?”
“জ্বী না স্যার, বসানো হয়নি। আজ আসার সময় ইন্ডিকেটর নিয়ে এসেছি।”
“দেখি, কি এনেছেন?”

মোটা মোটা বইতে কতোটুকু পড়া হলো সেটা বোঝার জন্য বই বাধাই এর সময় লাল, নীল ফিতে জুড়ে দেয়া হয়। রহমান সাহেবও সেই ব্যাবস্থা করতে বলেছেন। তবে অবশ্যই ফিতে বসালে চলবে না। অন্য কিছু বসাতে বলেছেন তিনি। জিনিষটা হতে হবে আলাদা ধরনের কিছু। জহির হাতে করে একটা খাম নিয়ে এসেছে। খামটা সে রহমান সাহেবের হাতে ধরিয়ে দিল।

খাম খুলে রহমান সাহেব বললেন, “এগুলো কি? মুরগীর পালক নাকি? মুরগীর পালক দিয়ে ইন্ডিকেটর বানানোর বুদ্ধি করেছেন?”
“স্যার, পালক গুলো মুরগির না, কাকের।”
“কাকের?”
“জ্বি স্যার।”
“এজন্য কটা কাক মারতে হয়েছে?”
“মারা হয়নি স্যার। কাকের বাসা থেকে সংগ্রহ করানো হয়েছে।”

জহির কি মিথ্যা বলছে নাকি ভুল বলছে তা বুঝতে পারছেন না রহমান সাহেব। পালকগুলো টেনে ছেঁড়া হয়েছে। পালকগুলোর গোড়ার দিকে ছোট, খুবই ছোট আঁশের মতো মাংস লেগে আছে। তাতে রক্তের ছিটে ও দেখা যাচ্ছে। রহমান সাহেবের মুখ থমথমে হয়ে গেল।

“জহির সাহেব,এগুলো আপনি নিজে জোগাড় করেছেন? না অন্য কেউ জোগাড় করেছে?”
“আরেকজন কে দিয়ে জোগাড় করিয়েছি, স্যার।”
“লোকটি কে?”
“এক ওঝা স্যার। তার কাছে ধনেশ পাখির ঠোঁট, স্যালাম্যান্ডার, শজারুর কাঁটা,বানরের থাবা, কাকের পালক এইসব হাবিজাবি আছে। ওর কাছ থেকেই নিয়েছি।”
“পালক কাকের বাসা থেকে জোগাড় করা, এই বক্তব্য কি ওঝার?”
“জ্বী স্যার।”
“ওঝা ব্যাটা বিরাট ভণ্ড। কাক মেরে পালক টেনে ছেঁড়া হয়েছে। আপনাকে বলেছে কাকের বাসা থেকে নেয়া। এই যে দেখুন, পালকের গোড়ায় মাংসের আঁশ লেগে আছে।”

জহির পালক গুলো হাতে নিয়ে খুঁটিয়ে দেখলো। ঘটনা সত্যি। পালকের গোড়ায় মাংসের আঁশ দেখা যাচ্ছে। সে পালক গুলো খামের ভেতর ঢুকিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো চুপচাপ।

“জহির সাহেব, আপনাকে রকম কিছু আনতে বলেছিলাম। আপনি আনলেন কাকের পালক। কারনটা কি? এতে অন্যরকম কি আছে?”
“অন্যসব পাখির পালক স্যার খুব সহজেই পাওয়া যায়। কাকের পালক পাওয়া যায়না। কিন্তু স্যার দেখুন, ওরা সবসময় আমাদের আশেপাশেই থাকে। আবার স্যার, এরা সারাদিন ময়লা আবর্জনা ঘাটে কিন্তু এদের গা থাকে চকচকে। ময়লা গায়ে লাগেনা। বিষয়টা অস্বাভাবিক, তাই না স্যার?”
“না, অস্বাভাবিক না। এরা শরীর দিয়ে ময়লা ঘাটেনা, ঘাটে পা আর ঠোঁট দিয়ে। ময়লা গায়ে লাগার কোন কারন নেই। আর কাকের পালক পাওয়া যায়না, কে বললো? আপনার ভণ্ড ওঝাই তো কত সহজে পেয়ে গেছে। যাক গে, এ সম্পর্কে আমি আর কথা বলতে চাচ্ছিনা। ইন্ডিকেটর হিসেবে পালকের ব্যবস্থা করেছেন, ভালো করেছেন। কিন্তু বিষয়টা আমার পছন্দ হয়নি। এখন আপাতত পালকগুলো এখানে রেখে যান। আরও ভাল কিছু পাওয়া যায় কিনা দেখুন। আমার সুন্দর এবং অন্যরকম ডিজাইনের কিছু ইন্ডিকেটর প্রয়োজন। ক্লিয়ার?”
“জ্বী স্যার।”
“এখন আসুন।”
“জ্বী স্যার।”

এই সময় সুলতান পানি আর কফি নিয়ে উপস্থিত।
“তোমার মেয়ের খবর কি সুলতান?”
“ভালোনা স্যার। পড়তেই চায়না। খালি টিভি দেখে। ধইরা মারি, তাও পড়েনা।”
“বাচ্চাদের গায়ে হাত তোলা ঠিক না সুলতান । কালাম সাহেব কে সালাম জানাবে।”
কালাম সাহেব অফিসের হেড একাউন্টেন্ট। ফাইল সমস্যা নিয়ে তিনি নিজেও যন্ত্রণার মাঝে আছেন। হিসেবে দেড় কোটি টাকার গড়মিল।

রহমান সাহেবের অফিস রুমে একপাশে একসেট সোফা রাখা। সোফার মুখোমুখি করে রাখা হয়েছে একটা ডিভান। কালাম সাহেব কে সোফায় বসিয়ে রহমান সাহেব ডিভানে হেলান দিয়ে বসলেন। চুকচুক করে কফির মগে চুমুক দিচ্ছেন। কফি খাবার সময় তার মেজাজ হালকা তরল অবস্থায় থাকে। ব্রান্ডির কারনে কিনা কে জানে?

“কালাম সাহেব, শরীর ভাল?”
“জ্বী স্যার, আলহামদুলিল্লাহ। শুধু চোখের সমস্যাটা ভোগাচ্ছে।”
“চোখের ডাক্তার দেখিয়ে নিন। আচ্ছা, আপনার স্ত্রীর অফিসের ঝামেলা টা মিটেছে?”
“জ্বী না স্যার। সুফিয়া বিষয়টা নিয়ে খুবই পেরেশান। আর এদিকে আমার ফাইলের হিসেব মিলছেনা।”
“কালাম সাহেব, এই অফিসে কিছু অসৎ কর্মচারী আছে। আপনি কি তা জানেন?”
কালাম সাহেব হতভম্ব হয়ে রহমান সাহেবের দিকে তাকিয়ে রইলেন। এই লোক বলে কি? আর এই কথা তাকে বলারই বা অর্থ কি? কালাম সাহেবের চোয়াল আক্ষরিক অর্থেই ঝুলে গেল।
“মুখ বন্ধ করুন কালাম সাহেব। এত অবাক হবার কিছু নেই”
কালাম সাহেব মুখ বন্ধ করলেন।
“অফিসের এইসব প্রতারকদের আমি চিনি। তাদের পেছনে সবসময় লোক লেগে থাকে। তাদের ব্যাঙ্ক একাউন্ট, সম্পদের পরিমান, সবই এই অফিসের জানা আছে। এদের কারো একাউন্টে হটাৎ করে বেশি পরিমান টাকা জমা হলে অফিস তা জেনে যায়। কেউ হটাৎ কোথাও বেশী পরিমান টাকা খরচ করলে তার উৎস সম্পর্কে খোঁজ নেয়া হয়। লোক আসলে প্রথম দিকে সবার পেছনেই থাকে। অসৎ লোকজন সহজেই ধরা পড়ে। এদের উপর তখন আলাদা করে চোখ রাখা হয়। বুদ্ধিটা ভাল, তাই না কালাম সাহেব?”
“জ্বী স্যার, ভাল।”
“গতমাসে আপনার স্ত্রীর একাউন্টে বেশ কিছু টাকা জমা পড়েছে। সাইত্রিশ লাখ টাকার মতো। তাই না?”
“জ্বী স্যার। গ্রামের বাড়ীর জমি বিক্রি করেছি স্যার। বিশ্বাস করুন স্যার।” হড়বড় করে কথা বলা শুরু করলেন কালাম সাহেব।
“জানি কালাম সাহেব। টাকা কোথায় পেয়েছেন তা আমি জানি। আপনি যাতে আমার কথা বিশ্বাস করেন তাই টাকার কথাটা বললাম। অন্য কিছু না। তো, এই মাসে আবার লাখ তিনেক তুলেছেন। কারন কি?”
“সুফিয়ার অফিসের বদলি ঠেকানোর জন্য ঘুষ দিতে হবে স্যার।”
“ঘুষ একবার দিলে আরো দিতে হবে। যে বাঘ একবার মানুষের রক্তের স্বাদ পায় তার মুখে কিন্তু অন্য কিছু রোচেনা। কি, ঠিক না?”
“জ্বী স্যার।”
“আমাকে বললেই পারতেন।আমি ফোনে বলে দিতাম। টাকাটা কি দিয়ে ফেলেছেন?”
“জ্বী না স্যার।”
“দেয়ার দরকার নেই। আমি ফোন করে দেব। আপনার স্ত্রীর বসের নাম্বারটা লিখে টেবিলের উপর রেখে যাবেন। আর হিসেবের দেড় কোটি টাকার কোন খোঁজ পাওয়া গেল?”
“জ্বী না স্যার।”
“ঠিকমত খোঁজ করুন। আগামী হপ্তার মিটিং এ সব সাবমিট করতে হবে। মন দিয়ে কাজ করুন কালাম সাহেব। দুষ্ট গরুর চেয়ে মাঝে মাঝে শূন্য গোয়াল ভাল।”

তীব্র আতঙ্ক নিয়ে বেরিয়ে গেলেন কালাম সাহেব। তাকে শক্ত একধরনের ঝাঁকুনি দেয়া হয়েছে। মাঝে মাঝে অধীনস্থদের এ রকম ঝাঁকুনি দিতে পছন্দ করেন রহমান সাহেব। তার ধারনা এতে অফিসে কাজের গতি আসে। গতি জিনিষটা তার খুবই পছন্দ।

ডিভান থেকে উঠে এসে নিজের চেয়ারে বসলেন রহমান সাহেব। খাকি খামটার দিকে তাকিয়ে রইলেন দীর্ঘ সময়। খামের ভেতর পালক। মানুষের গায়ে লোমের জায়গায় যদি পালক থাকতো তাহলে কেমন হতো? মানুষের কি তাহলে পোষাকের প্রয়োজন হতো? কে জানে! হতো হয়তো। মানুষ অতি বিচিত্র প্রানী। এরা কখন যে কি করে, কিছুই বোঝা যায়না।

এসব ভাবতে ভাবতে রহমান সাহেব চেয়ারে হেলান দিলেন। রাত জাগার কারনেই কিনা কে জানে, তার তন্দ্রার মত হলো। তন্দ্রার মাঝে রহমান সাহেব অদ্ভুত একটি স্বপ্ন দেখলেন।

তিনি কথা বলছেন একটি কাকের সাথে। সেই কাকের আকার আয়তন মানুষের সমান। সে আবার মানুষের মত স্যুট পড়ে বসে আছে তারই অফিসে।
“স্যার, কাজটা কি ঠিক হলো?”
“কোন কাজ? আর আপনি অফিসে ঢুকলেন কি করে? আপনার কি এপয়েন্টমেন্ট আছে?”
“আমার এপয়েন্টমেন্ট লাগেনা। যেখানে ইচ্ছা সেখানে যাবার ক্ষমতা আমার আছে। যাকগে সেসব। কাজটা কি ঠিক হল স্যার?”
“কোন কাজের কথা বলছেন?”
“আমার পরিবারের সামনে আমাকে গুলি করে মেরে ফেললেন। তারপর আমার লাশটা কুকুর দিয়ে খাইয়ে দিলেন। আমি কি স্যার আপনার কোন ক্ষতি করেছিলাম? আমার পরিবারটা এখন কেমন করে বাঁচবে?”
“আপনার আবার পরিবারও আছে নাকি?”
“কেন থাকবেনা স্যার? আমার পরিবার থাকতে কি কোন বাধা আছে? মানুষেরই খালি পরিবার থাকবে? আমাদের পরিবার থাকবেনা? আমার বাচ্চাগুলোর এখন কি হবে স্যার?”
“আপনার বাচ্চাদের তো সমস্যা হবার কথা না। খাবার কি আপনাদের কিনে খেতে হয়? হয়না। তাছাড়া আপনার স্ত্রী তো আছেনই।”
“কথাটা তো স্যার ঠিক বললেন না। বাবার কাজ কি মা দিয়ে হয়? ওদের এখন কে উড়তে শেখাবে?”
“কেন, আপনার স্ত্রী শেখাবে। এ নিয়ে এতো দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই।”
“স্যার আবারো ভুল করলেন। সব যদি আমার স্ত্রীই করবে তাহলে পরিবারে আমার ভুমিকা কি? একবার ভাবুন তো, আপনি যা করেন তাতো আপনার স্ত্রীর পক্ষেই করা সম্ভব। তাহলে পরিবারে আপনার কাজটা কি? আপনি কি একছালা গাব?”
“একছালা গাব? এর মানে কি?”
“এর মানে ফক্কা। শূন্য। আপনার তো তাহলে পরিবারে কোন ভুমিকা নেই। আপনাকে যদি এখন আমি গুলি করে মেরে ফেলি, কেমন হবে?”

হঠাৎ করেই কাকটার পাখার জায়গায় মানুষের হাতের মত হাত দেখা গেলো। হাতে একটা এয়ারগান। সেই এয়ারগান রহমান সাহেবের দিকে তাক করা। এয়ারগান থেকে পুঁ পুঁ শব্দে গুলিও বের হল। রহমান সাহেবের তন্দ্রা ভেঙ্গে গেলো।

ইন্টারকমে পুঁ পুঁ শব্দ হচ্ছে।
রহমান সাহেব ইন্টারকমে সাড়া দিলেন।
“কি ব্যাপার জহির সাহেব?”
“স্যার, ম্যাডাম লাঞ্চ পাঠিয়েছেন। ভেতরে পাঠিয়ে দেবো?”
“দাও।”
টেবিলের দিকে তাকালেন রহমান সাহেব। টেবিলময় কাকের পালক ছড়ানো। তিনি পালক গুলোর দিকে তাকিয়ে রইলেন। পালক খামের ভেতর ছিলনা? এগুলো টেবিলে ছড়ানো কেন? কাকটাকে তার মারাটা বোধহয় আসলেই ঠিক হয়নি। আচ্ছা, তিনি মারা গেলে তার পরিবারের কি হবে? সব কি কুমকুমের পক্ষে সামলানো সম্ভব? কাকটার পরিবারে এখন কি হবে?

একসময় জহিরকে তিনি পালক নিয়ে যেতে বললেন। সোফার সামনের টেবিলে লাঞ্চ রাখা হয়েছে। শরীরটা ভালো লাগছেনা। চিন্তা ভাবনাও কিছুটা বিভ্রান্ত। দীর্ঘদিন পর রহমান সাহেব এক ধরনের অবসাদে ডুবে গেলেন। খেতে ইচ্ছে করছেনা। কিছু করতেও ইচ্ছে করছেনা। আকাশ দেখলে কেমন হয়? কতদিন আকাশ দেখা হয়না। অথচ একটা সময় ছিলো যখন মন খারাপ হলেই চোখ চলে যেত আকাশে। কেটে যেত ঘন্টার পর ঘন্টা। ব্যস্ততা, বয়স আর বাস্তবতা জীবন থেকে কতো অসাধারন সব মুহুর্ত কেড়ে নেয়।

রহমান সাহেব রুমের বাইরে লাল বাতি জ্বালিয়ে দিলেন। রুমের ভেতর ঢোকার জন্য এখন আর কেউ নক করবেনা। এরপর তিনি হাতে নিলেন জীবনানন্দের কবিতার বই। অফিসের শেলফে থরে থরে কবিতার বই সাজানো। বিশাল শেলফ। কবিতা আগে নিয়মিত পড়া হত। এখন আর সময়টাই হয়না। দীর্ঘদিন পর আকাশ দেখতে যখন ইচ্ছে হচ্ছে তখন কবিতাও পড়া হোক।

রহমান সাহেব এক পেগ ব্র্যান্ডি নিলেন। অফিস রুমেই ছোট্ট একটা ফ্রীজ আছে। তাতে নানারকম পানীয় রাখা। ডেলিগেটরা এলে এই জিনিষের প্রয়োজন হয়। ব্র্যান্ডির উপর দুটো বরফের কিউব ছেড়ে দিলেন তিনি। ব্র্যান্ডি উইথ রকস। শরীর থেকে অবসাদ দূর করতে হবে। হাতে অনেক কাজ। রহমান সাহেব নিজেই রিভলভিং চেয়ার টেনে জানালার কাছে নিয়ে এলেন। দীর্ঘদিন পর জানালার মোটা পর্দা সরানো হলো। বাইরে ঝকঝকে রোদ বোঝা যাচ্ছে। আকাশে মেঘ নেই।

চেয়ারে হেলান দিয়ে বসলেন রহমান সাহেব। বই খুলে ডুবে গেলেন কবিতায়। মাঝে মধ্যে গ্লাসে চুমুক চলছে। গলা দিয়ে নেমে যাচ্ছে ঠান্ডা, তরল আগুন। অবসাদ যাবো যাবো করছে।


অইখানে কিছু আগে-বিরাট প্রাসাদে-এক কোনে
জ্বলে যেতেছিল ধীরে এক্সটেনশন লেকচারের আলো।
এখন দেয়ালে রাত-তেমন ততটা কিছু নয়;
পথে পথে গ্যাসলাইটে রয়েছে ঝাঁঝালো
এখনো সুর্যের তেজ উপসংহারের মতো জেগে।
এখনও টঙ্গে চড়ে উপরের শেলফের থেকে
বই কি বিবর্ন কীট-ধুলো-মাকড়সা বার হবে
দোকানের সেলসম্যান চুপে ভেবে দেখে
এখনো নামেনি সেই নির্জন রিক্সাগুলো-নিয়ন্তার মতো
সমুহ ভীড়ের চাপে রয়েছে হারায়ে।
অজস্র গলির পথে একটা মানুষ
যুগপত রয়েছে দাড়ায়ে;
পৃথিবীর সকল হৃদয়ের প্রতীকের মতো;
এই রাত থেকে আরো গভীরতর রাতে
কলুটোলা- পাথুরিয়াঘাটা-মীর্জাপুরে
এসপ্লানেডের ফুটপাতে
মালাঙ্গা লেনের পথে- ক্রিক রো তে
ককবার্ন লেনের ভিতর
একজোড়া শিং যদি সেথা দেয় লোকটার টাকে-
পরচুলা চুরি করে নিয়ে গেছে তবে যাদুকর।
এখানে রাত্রির পারে তোমার নিকট থেকে আমি
চলে গেলে
চলে যাবো;
পৃথিবীর কাছ থেকে নয়;
রাত্রি এই সারা রাত জীবনের সকল বিষয়
হয়ে আছে।
তিত্তিরাজ গাছ থেকে শিশির নীরবে
ঝরে যায়;-
ডানার আঘাত যায় কাকদম্পতির;

‘কাকদম্পতি’ শব্দটিতে এসে থমকে গেলেন রহমান সাহেব। কাকদম্পতি? মানে কি? কাকদের কি তাহলে আসলেই পরিবার আছে? না থাকলে জীবনবাবু লিখবেন কেন? বিষয়টা কি কবির নিছক কল্পনা? রহমান সাহেব জানালা দিয়ে বাইরে তাকালেন। আকাশ দেখছেন তিনি।আকাশ থেকে চোখ ধীরে ধীরে নীচে নামছে।কারেন্টের তারে কাক বসে আছে। শত শত কাক। কারো মাঝে কেন যেন কোন অস্থিরতা নেই। একটা কাকও নড়াচড়া করছে না।

চেয়ার থেকে উঠে জানালার কাঁচে মুখ ঠেকালেন রহমান সাহেব। এরা এইরকম স্থির হয়ে বসে আছে কেন? কাক তো স্থির হয়ে বসে থাকার কথা না। এরা ক্রমাগত মাথা এদিক ওদিক ঘোরায়। দুটি বস্তুর অবস্থানগত দুরত্ব বোঝার জন্য তারা একাজ করে। তাছাড়া খাবার খোঁজাও একটা বিষয়। এর মাঝেই এরা ডাকাডাকি করে। স্থিরতা বিষয়টা এই পাখির মাঝে নেই। কোন কাক কি আশেপাশে মারা গেছে? এরা কি দেখছে? রহমান সাহেব খুব মনোযোগ দিয়ে কাক গুলোর দিকে তাকিয়ে রইলেন। এক সময় তার মনে হলো কাকগুলো তার দিকেই তাকিয়ে আছে। মাঝখানে একটা কাকের যেন কি হলো। সে উড়ে এসে বসলো তারই জানালার কার্নিশে। জানালা থেকে কার্নিশ দেখা যায়। খুব কাছ থেকে কাকটা এখন রহমান সাহেবের দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকিয়ে আছে। কাকটা একটু কেমন যেন। এর শরীর পুরো কালো না। গলার কাছটাতে সাদা ফুটকি আছে। কাকটাকে রহমান সাহেবের খুব পরিচিত মনে হচ্ছে। ঢাকা শহরে শত শত কাক,এর মাঝে এই কাকটাকে পরিচিত মনে হবার কোন কারন কি আছে?

এই কাক সকালের মৃত সেই কাকের স্ত্রী নয়তো? ধুর, তা হতে যাবে কেন? যত্তোসব আজেবাজে ভাবনা। এই কাকগুলো কি ডাকাডাকি করছে? একসাথে এতো কাক ডাকাডাকি করলে কেমন শোনাবে? কেমন শোনাবে সেটা বোঝার উপায় অবশ্য রহমান সাহেবের নেই। তার রুম সাউন্ডপ্রুফ।

“কেমন আছেন স্যার?”
“ভালো আছি।”

উত্তর দিয়ে রহমান সাহেবের মনে হলো প্রশ্ন কে করলো? রুমে তো কেউ নেই। বাইরে লাল বাতি জ্বলছে। কেউ ভেতরে ঢুকবেনা। রহমান সাহেব রুমের চারপাশে একবার চোখ বোলালেন। কেউ নেই। তাহলে কথা বললো কে? রহমান সাহেব আবারো জানালার বাইরে তাকালেন।কাকটা এখনো বসে আছে। ঘাড়টাও আগের মতই তার দিকে ঘোরানো। কারেন্টের তারে কাকের সংখ্যা কি আরো বেড়েছে? কাকগুলো আগের মতই স্থির। নড়াচড়া নেই।
“প্রশ্ন টা স্যার আমি করেছি।”
নিজের মনেই হা হা করে হেসে ফেললেন রহমান সাহেব। একটা কাক তার সাথে কথা বলছে। কি হাস্যকর একটা বিষয়! তিনিও সেই কাকের কথার উত্তর দিচ্ছেন। হা হা হা। এইসব ছেলেমানুষী ভার্সিটি বা কলেজ পড়ুয়া ছাত্রদের মানায়। সেই বয়সটাই তো তরল হবার। তার এখন সেই বয়স নেই। রহমান সাহেব জানালার কাছ থেকে সরে এলেন। গ্লাসে নিলেন আরেক পেগ। পর্দা ঠিক করে চেয়ার নিয়ে এলেন আগের জায়গায়। এরপর কবিতার বই শেলফে রাখলেন। চেয়ারে বসেই তার অস্বস্তি লাগতে লাগলো। এরপর লাল বাতি বন্ধ করে বেল টিপে ডাকলেন সুলতান কে।

“সুলতান কাক চেনো?”
“জ্বী স্যার, চিনি।” সুলতান রহমান সাহেবের দিকে অবাক হয়ে তাকালো। কাক না চেনার কি আছে? বাচ্চারাও তো কাক চেনে।
“স্যার, আপনার কি শরীর খারাপ?”
“নাতো। কেন?”
“এমনি স্যার।”
“বাইরে ইলেকট্রিক কেবলে অনেক কাক বসা। দেখে এসো এরা ডাকাডাকি করছে কিনা। রুমের ভেতরে শব্দ ঢোকেনা। কোন শব্দ পাচ্ছিনা।” কথা গুলো বলার পরই রহমান সাহেব একটু অবাক হলেন। সুলতানের কাছে তিনি কেন ব্যাখ্যা দিচ্ছেন? সমস্যা কি?
“যাও, শুনে এসো। এসে জানাবে।”

সুলতান বেরিয়ে গেলো। রহমান সাহেব হাতের গ্লাসে ছোট ছোট চুমুক দিচ্ছেন। টেবিলে ফাইল খোলা অবস্থায় পড়ে আছে। তার দৃষ্টি সিলিং এর দিকে। সিলিং ঝকঝকে সাদা। চোখে পড়ার মতো কিছু নেই। মাকড়সার বাসা থাকলে বোধহয় ভালো হতো। মিনিট পাঁচেক পরই ফিরে এলো সুলতান।

“স্যার, বাইরে কোন কাক নাই।”
রহমান সাহেবের ভ্রু কুঁচকে গেল। মিনিট কয়েকের ভেতরই সব কাক উড়ে চলে গেল? এমনতো হবার কথা না।
চেয়ার থেকে উঠে রহমান সাহেব নিজেই জানালার পর্দা সরালেন।তারে শত শত কাক বসে আছে। সংখ্যাটা বোধহয় বেড়েছে।
“এদিকে এসো সুলতান।”
সুলতান জানালার কাছে এগিয়ে গেল।
“বাইরে দেখো। ঠিকমত দেখো।”
রহমান সাহেব ঠিক কি দেখতে বলছেন তা সুলতান বুঝতে পারলোনা।
“কাক দেখতে পাচ্ছো?”
বাইরে কোথাও কাক দেখতে পেলোনা সুলতান। কারেন্টের তারও ফাঁকা।
“জ্বী স্যার দেখতেছি। দুইটা কাক বইসা আছে।একটা মা কাক, আরেকটা বাচ্চা। মা কাক বাচ্চা রে খাবার দিতেছে।”

রহমান সাহেবের কোঁচকানো ভ্রু আরো কুঁচকে গেলো। তারে বসা শত শত কাক। সুলতান বলছে দুইটা। সুলতান মিথ্যা কথা বলছে। সে কোন কাকই দেখতে পাচ্ছেনা। তাহলে কি তিনিই ভুল দেখছেন? ব্র্যান্ডি কি বেশি খাওয়া হয়ে গেলো? ব্র্যান্ডিতে তো কিছু হবার কথা না। মাত্র দুই পেগ গেছে। দুই পেগে তার কিছু হবার কথা না। তাহলে কি শরীর খারাপ করেছে? নাহ, রাত জাগাটা ঠিক হয়নি। কাকটাকেও মারা ঠিক হয়নি।

০৪

রহমান সাহেবের রুম থেকে বেরিয়ে সুলতান সোজা নিচে চলে গেল। স্যার এখন তাকে ডাকবেন না বলে মনে হচ্ছে। কারন স্যারের হাতে ব্র্যান্ডির গ্লাস দেখা গেছে এবং স্যারের এখন গভীর মনোযোগে কাজ করার কথা। অনেকক্ষণ ধরে সুলতানের চা খাওয়া হচ্ছেনা। অফিসের ভেতরেই চা খাবার ব্যাবস্থা আছে। কিন্তু সবসময় চা জিনিষটা নিজে বানিয়ে খেতে ইচ্ছে করেনা। এই কারনে মাঝে মাঝে সুলতান দোকানের চা খায়। দোকানের চা-টা ভালই হয়, তারপর কথা হচ্ছে চা টা বানায় মর্জিনা। বেদম কড়া মানুষ। মর্জিনা যদি লিকার ছাড়া গরম পানিও ধরিয়ে দিয়ে বলে, চা খান, সুলতান তাই হাসিমুখে খেয়ে নেবে। এই মানুষটাকে সুলতান খুবই পছন্দ করে। বিষয়টা অবশ্য গোপন। মর্জিনাকে জানানোর মত সাহস সুলতানের হয়নি। না জানানোর প্রথম কারন হচ্ছে মর্জিনার স্বামী-সন্তান আছে, দ্বিতীয় কারন হলো মর্জিনার সামনে গেলেই সুলতানের পেটের ভেতরটা কেমন যেন ফাঁকা ফাঁকা লাগে। তাই চা দেন এবং চা নেন ছাড়া তাদের মধ্যে তেমন কোন বাক্যালাপ হয়নি।

দোকানের কাছে গিয়ে কি মনে করে সুলতান কারেন্টের তারের দিকে তাকালো। শত শত কাক তারের উপর বসে আছে। ঘটনা কি? কিছুক্ষণ আগেও তো এখানে কোন কাক ছিলোনা। এই কয়েক মিনিটের ভেতর এতো কাক এলো কোথা থেকে?

সবকটা কাক একইদিকে মুখ করে বসে আছে। চুপচাপ, স্থির। গোটা দৃশ্যটার মাঝে বিচিত্র একধরনের অস্বাভাবিকত্ব আছে। সুলতান তা খেয়াল করলো না। চুপচাপ সে চা খেতে লাগলো। চা টা খেতে কি অসাধারন হয়েছে! কাকের কথা তার মাথায় রইলো না।

০৫

রাত নয়টায় রহমান সাহেবের ফাইল দেখা শেষ হলো। অফিসের ডেটাবেইজে যে হিসেব তার সাথে টাকার রসিদে মিল পাওয়া যাচ্ছেনা। ফাইলে বেশ কয়েকটি রসিদ নেই। এসব রসিদ বেশ কয়েকজনের হাতে। এদের মাঝে কেউ ভুল করেছে বা ইচ্ছে করে সরিয়েছে। মোট আট জনের হাতে বিভিন্ন খাতের রসিদ থাকে। তারাই রসিদ সাজিয়ে রাখে, বিল তোলে। বিল পরিশোধের বিষয়টি অবশ্য শুধুই কালাম সাহেবের হাতে। ঝামেলা কে করলো?

রাত সাড়ে নয়টায় রহমান সাহেব অফিস থেকে বাসায় রওনা দিলেন। অফিস ফাঁকা। সব কর্মচারী চলে গেছে। আছেন সুধু কালাম সাহেব আর রহমান সাহেব।দুজনে চারতলা থেকে লিফটে নিচে নেমে এলেন।

রিসেপশন ডেস্ক ফাঁকা। ডেস্কের উপর একটা কাক বসে আছে। অফিসের ভেতর কাক দেখে রহমান সাহেব খুবই বিরক্ত হলেন।

“কালাম সাহেব, রিসেপশন ডেস্কে ওটা কি?”
“কাক, স্যার।” অফিসের ভেতর কাক দেখে কালাম সাহেব নিজেও খুব অবাক হলেন। এতো রাতে অফিসের ভেতর কাক এলো কোথা থেকে? ইদানিং কাকেরা রাতের বেলাতেও ঘুরে বেড়ায় নাকি?
“দারোয়ানকে ডেকে কাক তাড়াতে বলুন। অফিসে লোকজন বোধহয় জানালা ঠিকঠাক মতো আটকায় না। দারোয়ান কে বলবেন সব জানালা ঠিক মতো লাগানো হয়েছে কিনা চেক করতে।” কথাগুলো বলেই রহমান সাহেব বেরিয়ে গেলেন।
দারোয়ান ডেকে এনে কালাম সাহেব নিজেও কাক খুঁজলেন। কোথাও কাকের নাম-নিশানা নেই।
“ভুল দেখলাম নাকি? ধুত্তরিকা।” বলে কালাম সাহেব নিজেও বেরিয়ে গেলেন।

দারোয়ান সব জানালা টেনেটুনে পরীক্ষা করে দেখলো। সব ঠিকমতোই লাগানো হয়েছে। কি যে বলে এইসব ভদ্র লোকজন! একটা কাক নাকি অফিসে ঢুকে বসে আছে। কাক কি এই অফিসে চাকরি করে? চাকরি না করলে তার অফিসের টেবিলে বসার দরকার কি? কাক বসে থাকে আবর্জনার উপর। এই অফিস কি ডাষ্টবিন? সারাদিন কাগজ-কলম নিয়ে বসে থেকে এদের মাথাই গেছে নষ্ট হয়ে। যত্তসব!

দরজায় তালা লাগিয়ে দারোয়ান বেরিয়ে গেলো অফিস থেকে।

ঠিক ওইসময় কাকটি চুপচাপ বসে আছে রহমান সাহেবের নেমপ্লেটের উপর। তার দৃষ্টি রহমান সাহেবের পাশের রুমটিতে। রুমটি সামাদ সাহেবের। তিনি রহমান সাহেবের জুনিয়র। কাকটি খুব মনোযোগ দিয়ে কিছু একটা বোঝার চেষ্টা করছে।

[চলবে]
--------
মানিক চন্দ্র দাস
manikchandradas10[অ্যাট]gmail[ডট]com


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

পড়ে মজা পাচ্ছি। চলুক

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রিয় অতিথি লেখক,
আপনার নামটা যদি লিখতেন, তাহলে আপনার নাম ধরেই সম্বোধন করতে পারতাম। লেখা পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আশা করছি পরের কিস্তিগুলোতেও আপনার মন্তব্য পাবো।
-----------------------------------------------মানিক

অতিথি লেখক এর ছবি

অপেক্ষা করছি পরের পর্বের জন্যে
__________
ত্রিমাত্রিক কবি

অতিথি লেখক এর ছবি

আমার টাইপিং স্পীড ভাই ঠেলাগাড়ির মত। তাও তাড়াতাড়ি দেবার চেষ্টা করবো।

-----------মানিক

মেহদী হাসান খান এর ছবি

সচলে স্বাগতম মানিকদা! হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

থ্যান্ডারু ঙ্কুন্ডুরু মেন্ডেরা হন্ডিরি দীন্ডারা
(অনুবাদঃ থ্যাঙ্কু মেহদী) (ঐডা তামিল ভাষার কাছাকাছি কোন এক ভাষা, বুঝছুইন?? কই তুই? ওয়ার্ডে নাকি?)

শাফি [অতিথি] এর ছবি

মগ ভর্তি এসপ্রেসো? অন্যরকম ইন্ডিকেটর হিসেবে কাকের পালক? তাও আবার ব্লাড আর ফ্লেশ সহ! জহির সাহেব তার নিজের কর্তব্য সম্পর্কে স্পস্ট ধারণা রাখেন বলে মনে হলো না।

এই গুলা আমার কাছে কেমন কেমন লাগল। তবে উপন্যাস ভাল চলছে। চলুক।

শাফি।

অতিথি লেখক এর ছবি

শাফি ভাই,
আপনার মন্তব্য মাথায় থাকলো। ভালো থাকবেন। লেখা পড়ার জন্য ধন্যবাদ।---------------------------------------------------মানিক

বইখাতা এর ছবি

চলুক প্রথম পর্বটা বেশি ভাল লাগলো।

অতিথি লেখক এর ছবি

বইখাতা,
ধন্যবাদ।
মানিক

অতিথি লেখক এর ছবি

ধূসর গোধূলি ভাই,
হাতের বুইড়া আঙ্গুল তুইলা যেই ভঙ্গিটা ধরছেন সেইটার জন্য ধন্যবাদ। আশা করি পরের কিস্তিগুলাও আপনি পড়বেন।
------------------------------------------------------------মানিক

লিও হক এর ছবি

পরিস্কার
= পরিষ্কার

'পুরস্কার' এ স

'পরিষ্কার' এ ষ
ব্যাবস্থা করতে বলেছেন[/quote = ব্যবস্থা
বাধাই
= বাঁধাই

আর পারুম না, তাইলে প্রুফ রিডিং এর ট্যাগা দিতে হইব।
গল্প বালু অয়েচে।
ড্রয়িং থাক্লে আরো বালু অতো।

অতিথি লেখক এর ছবি

লিও,
আমি কিন্তু তোমার কাছে ঘুড্ডি ম্যাগাজিনের প্রুফ রিডিং এর ট্যাগা পাই। যাউক গা। আমারে তুমিই না হয় ইলাস্ট্রেশন কইরা দেও। আমিতো ভাই সেই মানিক দা (সত্যজিৎ রায়) না যে ইলাস্ট্রেশন ও পারবো। গল্প ভালো লেগেছে শুনে ভালো লাগলো। ভালো থেকো।
---------------------------------------মানিক

Arif Khan এর ছবি

উপন্নাসের হাত চইলা আইছে।।।।এইবার হুমায়ুন আহমেদ লেখা বন্ধ করলেও কুন অসুবিধা নাই।চলুক মানিক চলুক>>>মানিক নামটা এমনিতেই আমার খুব পছন্দের।।।।

অতিথি লেখক এর ছবি

আরিফ ভাই,
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। এইখানে হুমায়ুন সাহেব রে না আনলে হইতো না? ভালো থাকবেন।--------------------------মানিক

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

জহির সাহেব, আপনাকে রকম কিছু আনতে বলেছিলাম
কিছু একটা বাদ পড়েছে এখানে।

আমার কাছে দারুণ লাগছে। আপনার লেখা খুবই ঝরঝরে, চমৎকার। এর চে বেশী আর কী বলব?

৫ তারা দিতে হচ্ছে।

কিছু বানানে সমস্যা আছে, বিশেষ করে 'কারণ' এবং 'অসাধারণ' বা 'সাধারণ' বানানগুলো সব 'ণ' দিয়ে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রিয় প্রকৃতিপ্রেমিক,
ন-ত্ব বিধানের ঝামেলাটা আমি কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করবো। ভুল ধরিয়ে দেবার জন্য ধন্যবাদ। পড়ার জন্যেও ধন্যবাদ। আশা রাখছি আপনি পরের কিস্তিগুলোও পড়বেন এবং ভুল থাকলে অবশ্যই বলবেন। আপনার লেখা পড়েছি। চমৎকার। ভালো থাকবেন।----------------------মানিক

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

আমার লেখা পড়েছেন জেনে ভাল লাগছে। তবে আপনি (এবং আপনার মতো আরো অনেকই আছেন সচলে) হলেন লেখক, আর আমি পাঠকও হতে পারিনি বোধহয়। আমি বলতে পারেন প্রকৃতি প্রেমিক, ভাবেই যার শেষ। হা হা হা..

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।