শিক্ষা - যুক্ত হওয়া

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শনি, ১৬/০৬/২০১২ - ৩:০৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

"শিক্ষা' একটি স্বেচ্ছাসেবামূলক উদ্যোগ।

গ্রাম এবং মফস্বলের স্কুল কলেজগুলোর স্বল্পসুবিধাপ্রাপ্ত ছেলেমেয়েদের কাছে প্রচলিত শিক্ষা কার্যক্রমকে আরো সহজবোধ্য ও আকর্ষণীয় করে তোলাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। পাশাপাশি গ্রামের বা মফস্বলের তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে থাকা একজন স্টুডেন্টকে মেইনস্ট্রিমের একটা স্টুডেন্ট যেসব সুযোগ সুবিধা পায় সেগুলোর সাথে পরিচিত করে তোলাও আমাদের অন্যতম লক্ষ্য।

এ লক্ষ্যে আমরা কয়েকটি ধাপে কাজ করছি। আমাদের কাজগুলো সম্পর্কে শিক্ষা - কার্যক্রম লেখাটা থেকে ধারণা পাওয়া যাবে।

আমাদের কার্যক্রম সবার সামনে তুলে ধরার পর সরাসরি, ফোনে আর ফেবু, মেইল মারফৎ অনেকজন আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এই উদ্যোগে সহায়তা করার জন্য। তাই সবার জন্য তুলে ধরছি কিভাবে যুক্ত হওয়া যায় এই কার্যক্রমগুলোর সাথে।

(কেবল উপস্থাপনার সুবিধার্থে কয়েকটি গ্রুপে ভাগ করেছি। কেউ ভিন্নার্থ খুঁজবেন না দয়া করে!)

১) বুয়েটের শিক্ষার্থীদের জন্যঃ

আমাদের মেজর ৩টা গ্রুপে (থিওরী, ইন্সট্রুমেন্টাল, দৌড়ঝাঁপ) বুয়েটের বেশ কয়েকটা টিম কাজ করছে। আপনি যদি আগ্রহী হন তবে প্রথমেই ঠিক করে নিন কোন গ্রুপে কাজ করা আপনার জন্য সুবিধাজনক। তারপর আপনার আগ্রহের কথা জানিয়ে দিন এই ঠিকানায় (shikkha_bd@yahoo.com)। তাছাড়া আমরা সপ্তাহের বেশিরভাগ দিনই ক্যাফেতে বা ক্যাম্পাসের কোথাও বসি, আড্ডা দেই, ফাঁকে ফাঁকে কাজ করি। সবচেয়ে ভাল হয় যদি আপনি চলে আসতে পারেন আমাদের সেই আড্ডাগুলোতে! তাহলে কথা বলাটাও সেরে ফেলা যাবে, সাথে আমাদের কাজগুলো নিয়ে আপনার ধারণাও হয়ে যাবে।

আরেকটা কাজ করতে পারেন। "শিক্ষা' নিয়ে আপনি নিজে আগ্রহী হলে, আপনার ক্লোজ দুইটা ফ্রেন্ডকেও আগ্রহী করে তুলতে পারেন (ডেস্টিনি?! দেঁতো হাসি )। সেক্ষেত্রে আপনাদের ৩-৪ জনকে নিয়েই একটা টিম তৈরি করে আপনাদের পছন্দের গ্রুপের কাজে অন্তর্ভুক্ত করে নেয়া যাবে। এতে সবচেয়ে বড় সুবিধা হল আপনি গ্রুপ বা প্রোজেক্ট ঠিক করা, কাজ করার সময় ঠিক করাসহ অনেকক্ষেত্রেই তুলনামূলকভাবে বেশি স্বাধীনতা পাবেন।

আমাদের টিমগুলো সাপ্তাহিকভিত্তিতে কাজ করে। আপনাদেরও এক সপ্তাহের কাজ দিয়ে দেয়া হবে, আপনি আপনার টিমমেটদের নিয়ে সেগুলো কমপ্লিট করে সপ্তাহান্তে জমা দিবেন। অবশ্য 'কাজ' এর কথা শুনে ঘাবড়ানোর কিছু নাই!! কাজের উদাহরণ হতে পারে একটা নষ্ট সিডির উপর সাত রঙ করা কাগজ আঠা দিয়ে লাগিয়ে বর্ণচাকতি তৈরি করা কিংবা চাঁদার সাথে কালি শেষ হয়ে যাওয়া কলম আর সুতার সাথে ইটের টুকরো বেধে উচ্চতামাপার 'যন্ত্র' তৈরি করা!!! হাসি

২) অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্যঃ

আপনাদের জন্য সবচেয়ে বড় সুবিধা হল পুর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সবসময়ই প্রচুর ছেলেমেয়ে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাথে যুক্ত থাকে, কাজ করে। তাই আপনাদের জন্য কাজ শুরু করা তুলনামূলকভাবে অনেক সহজ। আপনি এককভাবে আমাদের কাছে আপনার আগ্রহের কথা জানাতে পারেন কিংবা নিজেদের মাঝে কথা বলে, আলোচনা করে তৈরি করে ফেলতে পারেন নতুন একটা টিম।

ইন ফ্যাক্ট আপনি এককভাবে যোগাযোগ করলেও আমরা প্রথমে আপনার ভার্সিটিমেটদের নিয়ে টিম বানিয়ে দেয়ার কাজটাই করব। তাই সবচেয়ে ভাল হয় যদি আপনি নিজেই আপনার সমমনাদের খুঁজে নিয়ে টিম বানিয়ে ফেলেন! (আর বন্ধুর সাথে কাজ করার মজা কে না জানে!!! সে "ভাল' কিংবা "একটু কম ভাল' - যে কাজই হোক না কেন!!! দেঁতো হাসি তাই, 'শিক্ষা'র কাজ করার ক্ষেত্রেও বন্ধুদের সাথে কাজ করার মজাটা মিস করা উচিত হবেনা!!!) এজন্য বানিয়ে ফেলুন বন্ধুদের নিয়ে আপনাদের টিম, দরকার হলে নিজেদের টিমের একটা বাহারি নামও দিয়ে দিতে পারেন! (এক্ষেত্রে আমাদের কচিকাঁচা টিমের কথা বলা যেতে পারে! উনারা সম্প্রতি নিজেদের "আমি ও আমরা সম্প্রদায়' বলে ঘোষণা করেছেন!!! খাইছে )

যাই হোক, টিম বানানো হোক বা না হোক, আপনি আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন এই মেইল আইডির মাধ্যমে (shikkha_bd@yahoo.com)। আপনার আগ্রহ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আর তার ভৌগোলিক অবস্থানের উপর ভিত্তি করে আমরা আপনার জন্য কিছু কাজ অ্যাসাইন করে দিব। সেটা হতে পারে লেখালেখির কাজ বা ইন্সট্রুমেন্ট তৈরির কাজ। কিংবা হতে পারে আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের একটা স্কুলে মাঝেমাঝে পড়ানোর কাজ! হাসি

৩) যারা এখনও শিশু(!), তাদের জন্যঃ

(আমরা প্রথমে ভাবিনি যে স্কুল কলেজে পড়ছে এমন বাচ্চা ছেলেমেয়েও এই প্রোজেক্টে কনট্রিবিউট করতে চাইবে! সত্যিই তাদের এই আগ্রহ প্রকাশ অনেক বেশি খুশির একটা ব্যাপার!!!)

তোমাদের আগ্রহই আসলে তোমাদের জন্য সবচেয়ে বড় পাথেয়। তোমরা এখন হয়তো সেভাবে "অনেক' কিছু করতে পারবেনা; পড়ালেখা, বাসার গাইডেন্স, সর্বোপরি নিজেদের বয়সের কারণে। কিন্তু তোমরা যদি লেগে থাকো তাহলে অবশ্যই একদিন ইফেক্টিভ চেঞ্জমেকার হয়ে উঠবে।

তোমরা এখন সবচেয়ে বড় যে কাজটা করতে পারো তা হল - বন্ধুর সাথে শেয়ার করতে শেখা! তুমি তোমার বন্ধুটার সাথে কথা বলতে শেখো, তার সাথে তোমার জানা-অজানা-আগ্রহের বিষয়গুলো শেয়ার করতে শুরু কর। দেখবে, তুমি তোমার বন্ধুটার কাছ থেকেই অনেক অনেক কিছু শিখতে পারছো, শেখাতে পারছো। কারণ বড়রা যাই বলুক তাই বলুক, আমি বা আমরা কিন্তু সবচেয়ে বেশি বন্ধুর কথাই শুনি!!! খেলার মাঠের কোন ঝামেলা হোক, আর হাতখরচের টাকা শেষ হয়ে যাওয়া হোক - আমি কিন্তু প্রথম আমার বন্ধুটাকেই ডাক দেই, পাশে পাই।

তাই তোমরা এখন থেকে এই সম্পর্কটাকে আরেকটু ভালমতো কাজে লাগানো শুরু করতে পারো। দেখবে তোমাদের মাথা থেকেই আজব আজব আর দারুন দারুন সব আইডিয়া বের হয়ে আসছে!!! ইন ফ্যাক্ট আজকে যে 'শিক্ষা'র কাজ নিয়ে আমরা দৌড়ঝাঁপ করছি, সেরকম একটা আইডিয়া সেই ক্লাস নাইন টেনে পড়ার দিকে আমার মাথায় এসেছিল। সময়ের সাথে ভুলেও গেছিলাম ঠিকই, কিন্তু পরিস্থিতির সাথে ঠিকই আবার মনে পড়েছে। এখন তোমাদের স্বপ্ন দেখার বয়স; স্বপ্ন দেখো, স্বপ্ন দেখাও। আর খুব বেশি অসাধারণ হবে যদি এই বয়সেই স্বপ্নপূরণের পথে একটু একটু করে পা বাড়াও। তবে তাড়াহুড়ার কিছু নেই। তুমি তোমার স্বপ্নপূরণের জন্য অনেক সময় পাবে জীবনে!!! হাসি

যাক, আমাদের কাজের কথায় ফিরি। তোমরা যদি ছোটদের এই প্রোজেক্টে কাজ করতে চাও, তাহলে ভাল হয় থিওরী নিয়ে কাজ শুরু করলে। তুমি যদি কোন একটা টপিক একটু ভাল বোঝো, তাহলে সেটা নিয়ে দুপাতা লিখে ফেল। একদম সঠিক হতেই হবে এমন বাধ্যবাধকতা নেই, লিখে ফেলাটাই বড় কথা। সাথে অ্যাড করে নাও তোমার যত জিজ্ঞাসা। তারপর পাঠিয়ে দাও আমাদের মেইলে (shikkha_bd@yahoo.com)। তোমার লেখা আর জিজ্ঞাসা আমাদের কনটেন্ট ডেভেলপে সরাসরি হেল্প করবে!!! হাসি (আর লেখাটা অবশ্যই নিজেদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবে! খুব সুন্দর হবে যদি কয়েকজন বন্ধু মিলে একটা লেখা দাঁড় করাতে পারো!)

সবচেয়ে ভাল হয় যদি ইন্সট্রুমেন্ট তৈরির কাজেও হাত দিতে পারো। নিজেরাই তৈরি করে ফেলতে পারো নিজের বই এর সব এক্সপেরিমেন্টগুলোর সেটআপ। আর তারপর তোমার সেই সেটআপ আর আইডিয়ার কথা শেয়ার কর তোমার বন্ধুদের সাথে। আর সম্ভব হলে মেইল কর আমাদের ঠিকানায়! হাসি

সাথে সাথে মাথায় রাখতে পারো গুগল সায়েন্স ফেয়ার এর কথা! (এই বিষয়ে এখানে বেশি কিছু বললামনা! গুগল করে দেখো!!!)

৪) সাবেক(?) শিক্ষার্থীদের জন্যঃ

আমরা জানি আমাদের আগে আরো অনেকেই এভাবে দেশের সেবায় এগিয়ে এসেছেন। আমরা খুব বেশি চাই আপনারা আপনাদের সেই অভিজ্ঞতাগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করুন। আমরা সবকিছুই 'ঠেকে ঠেকে শিখতে' চাইনা, যতটুকু পারি 'দেখে শিখার' ইচ্ছা আমাদের। যেন আমাদের পূর্বসূরিরা যতদূর কাজ এগিয়ে গেছেন, আমরা খুব দ্রুতই সেখানে পৌঁছাতে পারি এবং সেখান থেকে আরো সামনে এগিয়ে যেতে পারি। তাই, আপনারা উপদেষ্টা বা পরামর্শক হিসেবে এগিয়ে আসতে পারেন আমাদের জন্য!

আর আপনারা যদি সময় বের করতে পারেন, তবে আমাদের বাইরের ইভেন্টগুলোতে (দৌড়ঝাঁপ টিম!) যোগ দিতে পারেন। বড়রা আমাদের সাথে একসাথে কাজ করছেন - এই বিষয়টা আমাদের জন্য খুবই ইন্সপায়ারিং হবে! আপনারা সম্ভব হলে লেখালেখির কাজটাতেও হাত দিতে পারেন। বিশেষত যারা ব্লগে লিখছেন, আপনারা যদি আমাদের টেক্সটবইগুলো থেকেও টপিক সিলেক্ট করে তার উপর লেখা শুরু করেন, তবে সেটা পুঁজি করে আমরা আরো একটু সামনে এগিয়ে যেতে পারি। তাছাড়া আপনারা আইডিয়া দিতে পারেন এক্সপেরিমেন্টাল সেটআপ বানানোতে। কারো যদি ধারণা থাকে কোথায় আমরা এই ইন্সট্রুমেন্টগুলোর প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রগুলো সহজে পেতে পারি - এই ইনফোটুকু দিয়েও আপনারা অংশ হয়ে যেতে পারেন আমাদের কার্যক্রমের।

আপনারা আরেকটা বড় হেল্প করতে পারেন দেশে বা বিদেশে যারা এই রকম কাজ করছে, তাদের সাথে আমাদের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ তৈরিতে সহায়তা করে। (পরের অংশে তুলে ধরছি কোন সংস্থা কিভাবে আমাদের সহায়তা করতে পারে!)

আপনারা নিজেদের বাস্তবতাগুলোকে মাথায় রেখেও সামনে এগিয়ে আসবেন এটাই আমাদের কামনা।

৫) বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার জন্যঃ

দেশে এখন অনেকগুলো 'স্টুডেন্টবেসড' স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অসাধারণ সব কাজ করছে! আপনি যদি এমন কোন একটি সংস্থার সাথে যুক্ত হন এবং আগ্রহী হন আমাদের সাথে কাজ করার জন্য - ফিল ফ্রি টু কনট্যাক্ট আস!!! আমরা চাই 'ভার্সিটিপড়ুয়ারা দলে দলে গ্রামে-গঞ্জে পড়াচ্ছে' - এই কনসেপ্টটার প্রচার হোক আরো বেশি বেশি। সেটা যেই ব্যক্তি বা সংস্থাই করুক না কেন, আমাদের আপত্তি নেই। বরং তাদের সাথে আমরা আমাদের রিসোর্স শেয়ার করতে প্রস্তুত আছি। আর, প্রতিষ্ঠানের নামধাম কি হবে ইত্যাদি নিয়েও আমাদের খুব বেশি অ্যালার্জি নেই। আশা করি সেরকম ঝামেলাও পোহাতে হবেনা!!! তাই, এখানেও আগের কথাই রিপিট করব - আপনাদের ছোট্ট একটা বর্ণনা আর কাজের আগ্রহের কথা জানিয়ে মেইল করে দিবেন (shikkha_bd@yahoo.com) ঠিকানায়। হাসি

আপাতত এটুকুই লিখলাম। আরো অনেককিছু লেখা বাকি আছে। শীগগিরই নতুন লেখা দেয়ার চেষ্টা করব! হাসি

পরিবর্তন আসবেই।


মন্তব্য

অন্যরকম ধ্রুব এর ছবি

এহ হে রে! নামটা লিক্‌তে ভুলেই গেলুম! অ্যাঁ

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

চলুক

মরুদ্যান এর ছবি

চলুক

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।