স্ক্রু-ড্রাইভার ও ক্যাপস্যুল ৫০০ মিলিগ্রাম ! - এল.আর.বি ও ফিলিংস

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: সোম, ০৩/০৯/২০১২ - ২:৪১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

গোধূলির বর্ণিল আলোর উৎসব শেষে সন্ধ্যা হবে হবে প্রায়। আমি আর নানাজান পেনশনের টাকা তুলে বাড়ি ফিরছি। রাস্তায় নানাজানের কাছ থেকে ৩০ টাকা নিয়ে নানাজানকে রিক্সায় বসিয়ে রেখে কিনতে গিয়েছি এল.আর.বি-ফিলিংসের 'ক্যাপস্যুল ৫০০ মিলিগ্রাম'। আমার কেনা অডিও ক্যাসেটের অনেকগুলোই নানাজানের মমতাময় স্মৃতিতে আবৃত।

অনেকক্ষণ হল নানাজান রিক্সায় একা বসে আছেন। এদিকে আমি লাপাত্তা। কারণ, ক্যাসেটের এক দোকান থেকে অন্য দোকানে ঘুরছি। মফঃস্বলের ক্যাসেটের দোকান। আবার সেই দোকানে কিনতে গিয়েছি ‘৫০০ মিলিগ্রামের ক্যাপস্যুল’! আচানক ঘটনার মুখোমুখি হবার সম্ভাবনাও তাই জোরালো। হলও তাই, এক দোকানি আমার দিকে অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকালো। ব্যপারটা এমন যে, পাশেই ফার্মেসী রেখে আমি ক্যাসেটের দোকানে ‘ক্যাপস্যুল ৫০০ এমজি’ খোঁজার ছলে রসিকতা করার চেষ্টা করছি! যাই হোক, অবশেষে এক দোকানে পেয়ে গেলাম বহুল কাঙ্ক্ষিত সেই ‘ক্যাপস্যুল’। বগলদাবা করে ফিরলাম দুরন্ত উত্তেজনায়।

ফিরতেই নানাজানের ধমক। নানাজানের সেই ধমকও আমার সাম্প্রতিক উত্তেজনায় নিছক তুচ্ছই মনে হল আমার কাছে। পকেটে হাত দিয়ে চেপে ধরে রেখেছি আরাধ্য অ্যালবামটি। খুব ইচ্ছে হচ্ছিল, অ্যালবামটা খুলে উল্টে পাল্টে ক্যাসেটের কাভারটা দেখি। নাকের খুব কাছে চেপে ধরে গন্ধ নিই। পাছে নানাজানের কাছে ধরা খেয়ে যাই, এই ভয়ে সেটা আর করা হল না।

বাড়ি ফিরে নানাজানের চোখকে ফাঁকি দিয়ে দ্রুত চলে গেছি আমার পড়ার টেবিলে। টেবিলের নিচে বড় বড় ড্রাম কাত করে রাখা। তার নিচেই ছোট্ট একটি ক্যাসেট প্লেয়ার। টিনের ড্রামের নিচে দিয়ে রেখেছিলাম, কারণ ড্রামস বিটগুলো বাধা পেয়ে ধপ ধপ শব্দ হতো (এটা অবশ্য আমার বড় ভাইয়াদের নব্য আবিষ্কার ছিল সেই সময়ে)। ‘ডেস্কসেট’ বাজালে যে ধরণের ড্রামস বিট পাওয়া যায় অনেকটা তার কাছাকাছি।

ক্যাসেটটি পকেট থেকে বের করে চালিয়ে দিয়ে উত্তেজনা নিয়ে তাকিয়ে রইলাম ক্যাসেটের কাভারের দিকে। ক্যাসেটের এ-সাইডের সবগুলো গান এল.আর.বি’র। আর বি-সাইড পুরোটাই ফিলিংসের জন্য। মুহুর্তেই বেজে উঠলো মনোমুগ্ধকর এক যন্ত্রসঙ্গীত। আমি তন্ময় হয়ে শুনতে থাকলাম বাংলা ব্যান্ড মিউজিকের সেই গোল্ডেন পিসটি। প্রি-ভয়েজ ইন্সট্রুমেন্টালের পরই গেয়ে উঠলেন প্রিয় এবি দ্যা বস। ‘হাসতে দেখ, গাইতে দেখ, অনেক কথায় মুখর আমায় দেখ, দেখনা কেউ হাসি শেষে নিরবতা’ - শ্রুতিমধুরতায় মুহুর্তেই আমি ভেসে গেলাম অপার্থিব কোন এক সুরের ভুবনে।

একে একে টানা শুনতে থাকলাম ‘আমি ফিরে পেতে চাই/ফিরে ফিরে’, ‘আহা! জীবন’, ‘সাবধানে’ ও বহুল জনপ্রিয় ‘নীল বেদনায়’। এ-সাইড শেষ হতেই ক্যাসেট খুলে সাইড পাল্টে দিলাম। সেখানেও ছিল এক নতুন বিষ্ময়। প্রিয় জেমস ও ফিলিংস। ‘কত কষ্টে আছি’, ‘যতটা পথ তুমি চিনে রেখেছো’, ‘দূরে আছো তাই’, ‘হে পাগলি’, ও ‘তোমার নিষিদ্ধ ইতিহাস’। কত যে রাত পেরিয়ে গেছে এই গানগুলো শুনে তার ইয়ত্তা নেই। ওফফ, কি সব মন মাতানো পাগল করা এক একটি গান। লতিফুল ইসলাম শিবলী, অ্যাঞ্জেল শফিক ও দেহলভীর লেখা গানগুলো নিয়ে তৈরী ‘ক্যাপস্যুল ৫০০ এমজি’ আজও বাংলা ব্যান্ড মিউজিকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অ্যালবাম। এবং ইতিহাস অব্দি তাই থাকবে।

এল.আর.বি ও ফিলিংসের ফার্স্ট অ্যালবাম ছিল 'স্ক্রু- ড্রাইভার'। সাউন্ডটেকের ব্যানারে ১৯৯৬-এ প্রকাশ পায় অ্যালবামটি। প্রথম অ্যালবামের ব্যাপক জনপ্রিয়তায় ১৯৯৬-এ এল.আর.বি ও ফিলিংস ‘ক্যাপস্যুল ৫০০ এমজি’ অ্যালবামটি নিয়ে আবারও হাজির হয় শ্রোতাদের মাঝে। ফলাফল, দেশ কাঁপানো দুটি সফল, জনপ্রিয় ও বাংলা ব্যান্ড ক্ল্যাসিক অ্যালবাম।

মজার ব্যাপার হলঃ ‘স্ক্রু-ড্রাইভার’ অ্যালবামের আইয়ুব বাচ্চুর নিজের লেখা ‘নীরবে’ গানটি দিয়েই প্রথম বারের মত এল.আর.বি উপস্থিত হয় বিটিভিতে (তথ্য সূত্রঃ রিয়াদ ভাই, এক্স-ড্রামার/এল.আর.বি। ফ্রম ‘ঘুমন্ত শহরে’ টু ‘মনে আছে নাকি নাই’)।

স্ক্রু-ড্রাইভার অ্যালবামে এল.আর.বি-র 'নীরবে', 'কিছুই চাইবোনা', 'বন্দী জেগে আছে' ‘বেহিসেবী’ এবং ফিলিংসের 'মধ্য রাতের ডাকপিয়ন', 'যে পথে পথিক নেই', 'ব্যবিলন', 'পরাধীন বাংলা' অসম্ভব চমৎকার ও ব্যান্ড ভক্তদের কাছে আজও আগের মতই জনপ্রিয় ও পুরোপুরি নিখাদ রয়েছে।

এরপর ১৯৯৯-এ এসে ফিলিংস ভেঙ্গে গেল। ফিলিংস ভেঙে দিয়ে জেমস গড়লেন ‘নগর বাউল’ শিরোনামের একটি ব্যান্ড। ২০০০-০১ সালে প্রকাশ পায় ‘নগর বাউল’-র ফার্স্ট অ্যালবাম ‘দুষ্টু ছেলের দল’। না, পুরোনো ফিলিংসের স্বাদ আর কখনোই পাওয়া যায়নি। ঠিক একই ভাবে, ফিলিংসের জেমসও রূপ, রস ও স্বাদে হয়ে গেল পুরো ভিন্ন এক জেমস, নগর বাউলের জেমস।

আইয়ুব বাচ্চু ও জেমসকে অসংখ্য অ্যালবামে একসাথে দেখা গেলেও পুরোনো রূপে আর কখনোই দেখা যায়নি বাংলা ব্যান্ড মিউজিকের এই দুই কিংবদন্তীকে। তবে ২০০০ সালে প্রকাশ পাওয়া এবি-জেমসের ফার্স্ট ডুয়েট অ্যালবাম 'পিয়ানো' (প্রিন্স মাহমুদের কথা, সুর ও সঙ্গীতায়োজনে) অবশ্যই রিমার্ক্যাবল। বলতে গেলে তুমুল জনপ্রিয় একটি অ্যালবাম ছিল সেটি।

এক যুগেরও দীর্ঘ সময় পরে এখন মনে হচ্ছে মুগ্ধবিভোরতার যে জ্বরে আমি ভুগছি তা এল.আর.বি-ফিলিংস এর 'ক্যাপস্যুল ১০০০ মিলিগ্রাম' না খেলে সারবে না!

বর্তমান সময়ে যারা, এবি-এল.আর.বি কিংবা জেমস-ফিলিংসকে বাংলাদেশের ব্যান্ড মিউজিকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যান্ড হিসেবে জানেন, তারা অবশ্যই এও জেনে নেবেন, এবি-এল.আর.বি ও জেমস-ফিলিংসের শ্রেষ্ঠ কাজগুলোর অন্যতম এই অ্যালবাম দুটি। বর্তমান প্রজন্মের যারা এই অ্যালবাম দুটির সবগুলো গান শুনে দেখেননি, অনুরোধ রইল শুনে দেখার। এই দুটি অ্যালবাম ছাড়া এল.আর.বি ও ফিলিংসের পূর্ণাঙ্গ মূল্যায়ন সম্ভব নয়।

সৃজনশীল সৃষ্টিশীলতার যে নিরব প্রতিযোগিতা চলতো প্রতিটি অ্যালবামের প্রতিটি গানে এই অ্যালবাম দুটি শুনলে তার প্রায় পুরোটাই উপলব্ধি করা সম্ভব হবে। এবং বর্তমান সময়ের মিউজিক্যাল অ্যালবাম ও সৃজনশীল প্রতিযোগিতার তুলনামূলক পর্যালোচনায় এটাও বোধগম্য হবে বলে আশা করি।

*কাভার পেইজ দুটি ওয়েব থেকে নেয়া।

---------------------------
মোখলেছুর রহমান সজল


মন্তব্য

শান্তি প্রিয় এর ছবি

অবশ্যই অ্যালবাম দুইটি বাংলাদেশের ব্যান্ড এর সেরা অ্যালবাম,
২টা ব্যাপারে আমি আপানার সাথে একমত না।
১। LRB and Feelings যৌথও প্রথম অ্যালবাম হল Capsule 500mg (াপরিল, ১৯৯৬), দিতয় অ্যালবাম হল screw-driver (জুন, ১৯৯৬)।

২। LRB প্রথমবার বিটিভি তে আসে "সেই তুমি কেন" এই গানটি নিয়ে ১৯৯৩ সালে।

মোখলেছুর রহমান সজল  এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

রিয়াদ ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ হয়েছে। ভুলটা অনিচ্ছাকৃত। সেজন্য আমি দুঃখিত।

ক্যাপস্যুল ৫০০এমজি প্রথম নাকি স্ক্রু-ড্রাইভারস প্রথম অ্যালবাম এটা নিশ্চিত হতে পারিনি এখনও। তবে আপনার দেয়া তথ্যটাকে উড়িয়ে দিচ্ছি না। আমি জানতাম, স্ক্রু-ড্রাইভারসই এলআরবি ও ফিলিংসের প্রথম যৌথ অ্যালবাম।

সেই সময়ে এলআরবি-র ড্রামার ছিলেন রিয়াদ ভাই। তবে, কোন অ্যালবামটি প্রথম প্রকাশ পেয়েছিল, এই ব্যপারটি উনার এই মুহুর্তে ঠিক মনে পড়ছে না।

আমি রেফারেন্সসহ সঠিক তথ্যটি পেলে অবশ্যই জুড়ে দেব মন্তব্যে।

মোখলেছুর রহমান সজল  এর ছবি

স্ক্রু-ড্রাইভারস অ্যালবামটিই ফার্স্ট জয়েন্ট অ্যালবাম।
ক্যাপস্যুল ৫০০ মিলিগ্রাম সেকন্ড জয়েন্ট অ্যালবাম। (তথ্যসূত্রঃ এহসান এলাহী ফান্টি ভাই, এক্স-ড্রামার/ফিলিংস)

একটা সংশোধনঃ স্ক্রু-ড্রাইভারস অ্যালবামে ফিলিংসের গান হিসেবে 'পরাধীন বাংলা'র কথা উল্লেখ হয়েছে (যা ছিল টাইপো এরর)। এটা হবে 'বাংলার লাঠিয়াল'। জেমসের 'পরাধীন বাংলা' গানটি ব্যান্ড মিক্সড 'টুগেদার' অ্যালবামের।

শান্তি প্রিয় এর ছবি

হতেই পারে না, কারন আমার SSC শেষ পরীক্ষার দিন কিনেছিলাম এই Capsule 500mg অ্যালবামটি। আর এই অ্যালবামটির পাশাপাশি রিলিজ হয়েছিল আর একটি হিট অ্যালবাম "ওরা ১১ জন"
আর যখন কলেজ ভর্তি হব-হব, সেই সময় বের হয় স্ক্রু-ড্রাইভারস অ্যালবামটি, জুনের এর দিকে।
কিন্তু আমার কৈশোরের সময়টা আমার খুব ভালো মনে আছে, স্কুল এর পর কলেজ, "হাসতে দেখ গাইতে দেখ" কক্ষনও বলার না।
অ্যালবাম রিলেজ হওয়ার পর হল কুরবানি ঈদ, সেই দিন ভাসে এখনও চোখে হাসি

এখন এইভাভে বল্লে আর আমার কিছু বলার থাকেনা, (তথ্যসূত্রঃ এহসান এলাহী ফান্টি ভাই, এক্স-ড্রামার/ফিলিংস)
আর আমি চাই না, আমাদের সবার প্রিয় গানগুলি কে নিয়ে তানা-হিছ্রা করে ব্লগ হিট করার।

ধন্নবাদ, ভালো থাকবেন।

মোখলেছুর রহমান সজল  এর ছবি

হিট করা ব্লগ আমি লিখিনি। লিখতে চাই-ও না।
কোন গান নিয়ে তো টানা ছেঁড়া করা হয়নি। এই তথ্য আপনি কোথায় পেলেন?

অনুভূতিগুলো আপনার কাছে যেমন সজীব ও প্রাণবন্ত। তেমনি অন্যদের কাছেও কিন্তু একই রকম। সেখানে উত্তেজিত হবারতো কোন কারণ দেখিনা।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আমার কাছে কিন্তু আজও সেই আগের জনমে তুমি ছিলে আমার অথবা স্টেশন রোডের জীবনধারায়- গানগুলো অনেক বেশি আবেদনবহ।

আইউব বাচ্চু সোলসে থেকে বেরিয়ে আসার ঠিক আগে সোলস দুটো গান করেছিলো- ফেরারী এ মনটা আমার এবং দূর বনছায় মন ছুটে যায়, ডানা মেলে উড়ে যাওয়া পাখীর সাথে বিদায়ী রাতে। পরে ফেরারী এলআরবি রেকর্ড করলেও দূর বনছায় গানটি কেউই আর করেনি। বাচ্চু এবং নাসিম আলী খানের দ্বৈতকন্ঠে গানটি গাওয়া হয়েছিলো। অসাধারণ একটা গান। কেউ যদি গানটি শেয়ার করতে পারেন তো কৃতজ্ঞ থাকবো। অনেক খুঁজেও গানটি পাইনি। তবে প্রথম অন্তরাটি পর্যন্ত মুখস্থ ছিলো-

দূর বনছায়, মন ছুটেঁ যায়
ডানা মেলে উড়ে যাওয়া পাখীর সাথে
বিদায়ী রাতে।।

নগরীর কোলাহল ভালো লাগেনা
প্রাসাদের ভীড়ে মনে সুর জাগেনা
মন চায় সবুজের ছোঁয়া পেতে
বিদায়ী রাতে।।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

মোখলেছুর রহমান সজল  এর ছবি

ওফফ। জেমস ও ফিলিংস - স্টেশন রোড। আগের জনমে, স্টেশন রোড, আর নয় যুদ্ধ, যদি এমন হত গানগুলো চিরকালই আবেদনময়ী হিসেবেই থাকবে। জেমস সাধারণত গান লিখতেন না তেমন, কিন্তু স্টেশন রোডের এই গানগুলোর গীতিকার জেমস।

দূর বনছায় গানটা শুনে থাকার কথা। সোলসের ফুল কালেকশান ছিল আমার কাছে। হার্ড ডিস্ক ক্র্যাশ করাতে অনেক রেয়ার কালেকশান হারিয়ে গেছে।

অতীতের সব ভালোগুলোই তো আমাদের নিত্য সঙ্গী ও পথপ্রদর্শক।
তবে, ক্যাপস্যুল ৫০০ এমজি এবং স্ক্রু-ড্রাইভারস যে জোয়ারের সূচনা করেছিল তা বোধকরি অন্যতম ব্যপক সফলতা।

অবনীল এর ছবি

আসলেই আশি নব্বইয়ের দশকে এই ব্যান্ডগুলোর এলবামগুলো না শুনলে তরুন প্রজন্ম বুঝতে পারবে না এদের প্রকৃত প্রতিভা কি। এই মিক্সড এলবামগুলো সব অসাধারন গান এবং লিরিক্সে সমৃদ্ধ। সেই সময় আমরা পেয়েছিলাম একইসাথে দারুন সব রক সংগীতের বাদক, গীতিকার, সুরকার এবং কথাকারের সম্মিলন।

___________________________________
অন্তর্জালিক ঠিকানা

মোখলেছুর রহমান সজল  এর ছবি

আপনাকে ধন্যবাদ।

সেই সময়ের এক একটা অনুভূতি এক একটা সবুজ জমির মত।
বর্তমান সময়ের চাপা চাপা দালানকোঠা ও ধূলিকণাময় জঞ্জালের ভিতরে সেই সবুজ জমিটার কথা ভাবতে বড় বেশ ভালো লাগে। ফিরতে ইচ্ছে করে খুব বেশী, অনুভূতির সূতো ধরে সেই সবুজ জমির কাছে।

সত্যপীর এর ছবি

দুইটাই দুর্দান্ত অ্যালবাম। পোস্টের জন্য ধন্যবাদ, পড়ার পরে আবার গানগুলা শুনতে ইচ্ছা হৈল। বাকীদের জন্যেও অ্যালবামদুইটার লিঙ্ক দিলামঃ

..................................................................
#Banshibir.

মোখলেছুর রহমান সজল  এর ছবি

চলুক

আমার কিছু গান হারিয়ে গেছে
স্মৃতির কোন এক আঁধার জগতে
দুঃখের ঝড়ে পুড়ে জ্বলে গেছে
নিশ্চুপ রাতের ভালোবাসা নিয়ে
সে হারানো গানগুলো আমি ফিরে পেতে চাই
সে রাতের ভালোবাসা আমি ফিরে পেতে চাই ---- ফিরে ফিরে/ক্যাপস্যুল ৫০০ মিলিগ্রাম

CannonCarnegy এর ছবি

আশা করছিলাম কেউ না কেউ শেয়ার করবে। আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- সত্যপীর।
লেখা কৈশরের স্মৃতিতে টান দিয়ে নিয়ে গেলো।

কড়িকাঠুরে এর ছবি

ঐ সময়টাতে একদম ছোট ছিলাম- গান বোঝার জন্য তো অবশ্যই । কিন্তু সেই সময়ই মাথায় গেঁথে গিয়েছিল গানগুলো । আজও প্রায়ই চিল্লাই- লাফাই, একা একাই । অসাধারণ কথাগুলো এবি, জেমসের কণ্ঠে কী জাদুময়তা তৈরি করে এখনো!

যে ভাবে নব্বই টানে- আর কোন কিছু কী টানে সে ভাবে!?

মোখলেছুর রহমান সজল  এর ছবি

বাংলাদেশের ব্যান্ড সঙ্গীতের সবচেয়ে ভালো ও শ্রেষ্ঠ কাজগুলোতো সেই সময়েরই।
গানের কথা, সুর কিংবা সঙ্গীতায়োজন ---- অসাধারণ অসাধারণ।

তবে ২০০০ সালের পরও কিন্তু বেশ ভালো কিছু কাজ হয়েছে উল্লেখ করার মত।
প্রিন্স মাহমুদের দেয়াল দুই হৃদয়ের মাঝে, হারজিৎ, পিয়ানো, মেহেদী রাঙা হাত, দহন তোমার জন্য, ১২ মাস, হাসানের তাল। জুয়েল বাবু-র সন্ধি, সাদা কালো, সাত রঙের কষ্ট, সীমানা, নকশি কাঁথা, বৃহস্পতি, সুন্দরী। কিশোর শাহীনের মিলেনিয়াম। ব্যান্ড মিক্সড নীরবতা, একটি নারী অবুঝ, প্রেম, একা উদাসী মনে, ভালোবাসা সহ অনেক চমৎকার কিছু ব্যান্ড, মিক্সড ও সলো অ্যালবাম বেরিয়েছে ২০০০ সালের পরে। যে অ্যালবামগুলোতে নব্বই দশকের গান স্বাদ পাওয়া যায়।

তারেক অণু এর ছবি

খুব শোনা হত গানগুলো
চলুক

মোখলেছুর রহমান সজল  এর ছবি

হাসি
আমি এখনো শুনি।

বাপ্পীহা‌য়াত এর ছবি

চলুক
৯০ দশকের ব্যান্ডের গান - আহা! কতো স্মৃতি...

মোখলেছুর রহমান সজল  এর ছবি

হাসি

আজকের এই বর্তমান
কিছুক্ষণ পরে গেলো
স্মৃতির দেশে জায়গা দখল
চর দখলের মত . . .

কোন স্মৃতি ভুলতে চাইলে
ভোলা আর হয়না
ভুলতে হবে ভুলতে হবে
স্মৃতিরা করবে খেলা . . . স্মৃতি/বিষ্ময়-এল.আর.বি (১৯৯৮)

অতিথি লেখক এর ছবি

সময় কত বদলে গেছে। এখনকার ছেলেদের মাঝে সেই ফিলিংস কাজ করবে না। বাংলা ব্যান্ডের (এলআরবি, ফিলিংস/নগরবাউল, মাইলস, সোলস, ফিডব্যাক, আর্ক, ডিফারেন্ট টাচসহ ইত্যাদি) একটা ক্যাসেট ওরা ভিডিও গেমস খেলেনি বললেই চলে। এখনকার কটা ছেলে মাঠে খেলতে যায়? সবাই না তবে বেশির ভাগ ছেলেপেলেই যায় বিলিয়ার্ডে, আড্ডা দেয় ডিজ্যুস বাংলায়। আর পাড়ার ক্লাব অথবা লাইব্রেরি কালচার যে কী জিনিস তা বোধহয় ওরা শুনেই নি। যায় দিন ভালো যায়, আসে দিন খারাপ আসে।

দ্রোণ মৈত্র

মোখলেছুর রহমান সজল  এর ছবি

চিন্তিত

বদলে গিয়েছ তুমি বদলে গিয়েছি আমি
বদলে গিয়েছে সময় . . . বদলে গিয়েছে সময়/ঘুমন্ত শহরে -এলআরবি

ইনভারব্র্যাস এর ছবি

ক্যাপসূল ও স্ক্রুড্রাইভার কোনোটিই সম্ভবতঃ এলআরবির প্রথম এ্যালবাম নয়। যতদূর মনে পড়ে এলআরবির প্রথম এ্যালবামটি ছিলো একটি ডাবল এ্যালবাম। এটি বাংলাদেশের সর্ব-প্রথম (এবং সম্ভবতঃ অদ্যাবধি একমাত্রও) ডাবল এ্যালবাম রিলিজও। এ্যালবামটির নাম এখন আর মনে নেই, তবে হকার, শেষ চিঠি, মাধবী, ঘুমন্ত শহরে এসব জনপ্রিয় গানগুলো ছিলো ওই কালেকশনে (যদি স্মৃতি বিশ্বাসঘাতকতা না করে)।

ছোটোবেলায় হেভীমেটাল, হার্ড রক আর অল্টার্নেটিভ জনরার ভক্ত ছিলাম। এলআরবি-র "নীল বেদনায়" অসম্ভব রকমের পছন্দ ছিলো!

আহা! অনেক পুরণো সুখস্মৃতি মনে করিয়ে দিলেন! চমৎকার আর্টিকলটির জন্য ধন্যবাদ!

মোখলেছুর রহমান সজল  এর ছবি

ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

১৯৯২ সালে এল.আর.বি প্রকাশ করে তাদের ব্যান্ডের প্রথম ডাবল অ্যালবাম এল.আর.বি-১ ও এল.আর.বি-২। এল.আর.বি-ই বাংলাদেশের ইতিহাসের প্রথম ব্যান্ড যাদের ফার্স্ট অ্যালবাম ছিল ডাবল। এবং এল.আর.বি- ই প্রথম বাংলা ব্যান্ড যারা এ পর্যন্ত দুটি ডাবল অ্যালবাম প্রকাশ করে। দ্বিতীয় ডাবল অ্যালবামটি প্রকাশ পায় ১৯৯৮ সালে ‘আমাদের’ ও ‘বিষ্ময়’ শিরোনামে।

সবুজ শহিদুল এর ছবি

আমি একটা গান কিছুতেই খুঁজে পাচ্ছিনা কিন্তু গানটা খুব মিস করছি। অনুগ্রহ করে বলবেন কি এই গানটা কোন এ্যালবামের? আর গানটির ডাউনলোড লিঙ্কটা দিবেন।
""যে তুমি কথা রাখনি, কি লাভ এতোদিন পর এই আমার কাছে এসে ভুল বুঝে অবশেষে।
আমিত আজ শুধু আমার বুকে ব্যাথার নিয়ে পাহাড়

ছিঁড়ে গেছে গীটারের তার বাজবেনা সুর তাতে আর বুঝেওকি বোঝনি""

মোখলেছুর রহমান সজল  এর ছবি

যে তুমি কথা রাখনি, কি লাভ এতদিন পর ---
শিরোনামঃ শেষ দেখা - আইয়ুব বাচ্চু
গীতিকারঃ সালাউদ্দিন সজল
সুরকারঃ প্রিন্স মাহমুদ
অ্যালবামঃ প্রিন্স মাহমুদের সুরে 'শেষ দেখা'
লেভেলঃ সাউন্ডটেক/১৯৯৭

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।