সেনাবাহিনির অজানা কথা

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শনি, ৩০/১১/২০১৩ - ১১:১২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বাংলাদেশ সেনাবাহিনি সব খেয়ে ফেলল। দেশের মানুষের ট্যক্সের টাকায় উনারা ফুর্তি করে বেড়াচ্ছেন। জাতিসংঘ মিশনে গিয়ে টাকা আর টাকা। এই দেশে সেনাবাহিনি দিয়ে কি হবে? বাংলাদেশ সেনাবাহিনি নিয়ে অনেক কথা প্রচলিত আছে। যার মধ্যে অনেক কিছু কিছু আমরা জেনে বলি আবার অনেক কিছু না জেনে বলি। আজকের আমার লেখাটির উদ্দেশ্য হচ্ছে আমাদের প্রচলিত ভুল ধারনা গুলো নিয়ে একটু আলোচনা করা:

১।
আমাদের অনেকেরই ধারনা আছে সেনাসদস্যরা বেসামরিক লোকজনকে ব্লাডি সিভিলিয়ান বলে গালি দেয়। আমি হলফ করে বলতে পারি এটা সেনাবাহিনি সম্মন্ধে জানা আমাদের প্রথম ভুল ধারনা। সেনাকর্মকর্তারা কোন বেসামরিক নাগরিককে ব্লাডি সিভিলিয়ান বলে গালি দেয় বলে আমি আজ পর্যন্ত শুনিনি। আপনাদের কাউকে কখনও দিয়েছে? তবে হ্যাঁ তারা ব্লাডি সিভিলিয়ান যে বলেনা তা নয়, বলে নিজেদেরকেই বলে। একটু খোলাসা করে বলি; যখন কোন সেনাসদস্য প্রশিক্ষন বা কোন কর্মকাণ্ডে ইচ্ছাকৃত দূর্বলতা বা ফাঁকিবাজি প্রদর্শন করে তখন তাকে অনেক রকম গালি দেওয়া হয়। ব্লাডি সিভিলিয়ান হল তার মধ্যে একটি। যা একান্তই তাদের নিজস্ব ব্যাপার। এতে আমাদের সিভিলিয়ানদের কিছু যায় আসেনা। যেমন আমরা কোন সেনাসদস্যদের হাটুর বুদ্ধির লোক বললে তাদের কিছু এসে যায়না।

২।
আমাদের অনেকের ধারনা আছে সেনাকর্মকর্তারা খুব একটা শিক্ষিত না, তারা এইচ এস সি পাশ করে সেনাবাহিনিতে যোগদান করে তাই তাদের বুদ্ধি বা জ্ঞান হাটু স্থানীয়। এখানে উল্লেখ্য যে ছাত্রটি বুয়েট বা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয় সেও কিন্তু এইচ এস সি পাশ করার পরে আমাদের প্রথাগত শিক্ষা পদ্ধতি গ্রহন না করে প্রফেশনাল শিক্ষা গ্রহন করে। তাই বলে কি একজন ডাক্তার বা ইঙ্গিনিয়ারকে আমরা শুধুমাত্র এইচ এস সি পাশ বলব? সেনাকর্মকর্তারা অনেকেই আছে যারা বুয়েট বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাল ভাল সাবজেক্ট এ সুযোগ পেয়েও সেনাবিহিনিতে যোগদান করে থাকেন। আমি এস এস সি ও এইচ এস সি তে বোর্ড স্ট্যান্ড করেও সেনাবাহিনিতে চান্স পাইনি। আমাদের ব্যাচের ৩০-৩৫ জন সেনাবাহিনিতে যোগদান করেছে যাদের এস এস সি বা এইচ এস সি কোনটাতে সম্মিলিত মেধাতালিকায় স্থান ছিল। সেনাসদস্যদের ৩ বছর মেয়াদী গ্র্যাজুয়েসন সম্পন্ন করতে হয়। সাফল্যের সাথে সামরিক শিক্ষা ও গ্র্যাজুয়েসন শেষ করার পরেই কেবল একজন সদস্য অফিসার হিসাবে কমিশন লাভ করে। এখনেই শেষ নয়। সেনাসদস্যরা তাদের কর্মজীবনে দেশে ও বিদেশে অসখ্য কোর্স বা প্রশিক্ষনে অংশগ্রহন করে থাকেন। ই এম ই, ইঞ্জিনিয়ার্স, সিগন্যালস কোরের অফিসার গন বুয়েট, বি আই টি বা এম আই এস টি থেকে যথাক্রমে ইলেক্ট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং, পুর কৌশল এবং কম্পিঊটার কৌশলে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। অর্ডন্যন্স কোরের অফিসারগন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বা লেদার টেকনোলোজিতে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করে। তাছাড়া অসখ্য সেনাকর্মকর্তা নিজ চেষ্টায় নিজের টাকা খরচ করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবসা প্রশাসন, অর্থনীতি,ইংরেজী, রাষ্ট্র বিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয়ে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করে থাকেন। অনেক সেনাকর্মকর্তাকে জানি যারা বিভিন্ন বেসরকারী বিশববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। হাটুতে বুদ্ধি থাকলে এগুলো সম্ভব হতো বলে আমার মনে হয়না। তাই সেনা অফিসারদের শিক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপনের পূর্বে এ ব্যাপারে আমাদের নিজেদের শিক্ষাটা ভাল করে যাচাই করে নেওয়ার দরকার আছে।

৩।
অসংখ্য মানুষের মত আমারও এক সময় ধারনা ছিল সেনাসদস্যরা বুঝি অনেক সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকে। এবার আসুন ব্যাপারটা ভাল করে তলিয়ে দেখি। সেনাসদস্যদের বেতন, ভাতা দেশের পে স্কেল অনুযায়ী অন্যান্য সরকারী কর্মচারী বা কর্মকর্তাদের মত একই রকম। সেনাসদস্যরা শুধু মাত্র প্রতিরক্ষা ভাতাটা একটু বেশি পেয়ে থাকেন। আমার মনে হয় এটা পৃথিবীর সব দেশের সেনাবাহিনি পেয়ে থাকে। এখন আসেন রেশনের কথায়; রেশন বাংলাদেশে সেনাবিহিনির পাশাপাশি পুলিশ, আনসার ও বিজিবি সদস্যরাও পান। আর একজন সদস্যের রেশন এর বাজার মূল্য কোনভাবেই ২০০০ টাকার বেশী না। একজন সেনাকর্মকর্তা বিয়ে না করা অবধি বাড়ী ভাড়া ভাতা পাননা যা অন্য সকল সরকারী কর্মকর্তা অবিবাহিত হলেও পেয়ে থাকেন। সরকারী একজন জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা সবসময় সরকারী গাড়ি পান কিন্তু একই স্ট্যাটাসের একজন সামরিক অফিসার ব্যাক্তিগত ব্যবহারের জন্য কোন গাড়ী পাননা। সপ্তাহে তারা টাকার বিনিময়ে শুধুমাত্র একদিন সরকারী গাড়ী ব্যবহার করতে পারেন। তাও ৬০ কিলোমিটার রেডিয়াসের মধ্যে। এবার আসি জাতিসংঘ মিশনের কথায়; প্রথমেই বলে রাখি বাংলাদেশ থেকে শুধুমাত্র সেনাসদস্যরাই মিশনে যায়না। পুলিশ সদস্যরাও যায়। একটা উদাহরন দেই তাহলে অনেকটা পরিষ্কার হবে। একজন মেজর পদবীর অফিসার যদি এক বছর মিশন করেন তাহলে পান ২২০০X১২=২৬,৪০০ ডলার বাংলাদেশী টাকায় যা মাত্র ২১,১২০০০ টাকা। এক বছর পরিবার পরিজন রেখে একটা বিপদ সংকুল দেশে পড়ে থেকে ২১,০০০০ টাকা উপার্জন কি খুব একটা বেশী? এই টাকাটাও যে সঞ্চয় হয় তা কিন্তু না। বেশীরভাগ সেনাকর্মকর্তা একটা গাড়ী কিনে বা বিদেশ ঘুরে এর সিংহভাগ শেষ করে ফেলেন। একটা উন্নত দেশে রেস্টুরেন্ট এর ওয়েটার হলে থেকে অনেক বেশী আয় করা যায়। আর আমাদের দেশে কর্পোরেট জগতে যারা আছেন তারাতো দেশে বসেই এর চাইতে বেশী টাকা রোজগার করেন।

৪।
সেনানিবাসের হাইরাইজ বিল্ডিং গুলো দেখে অনেকের ধারনা সেনাসদস্যরা বুঝি খালি সরকারী বাড়ী পান। মোটেও না। বাংলাদেশে সকল সরকারী চাকরীজীবীরাই সরকারী বাসস্থান পান। অনেকেই সেনাবাহিনিতে অফিসার আর সৈনিকের মাঝে বৈষম্যের কথা বলেন। আমিও বলতাম। কিন্তু আমরা কি ভেবে দেখেছি যার যেমন যোগ্যতা সে অনুযায়ীই সে সুযোগ সুবিধা পাবে। এটা নিয়ে বিভ্রান্ত হওয়ার কোন কারন নেই। সব খানেই এ ব্যাপারটা আছে। গ্রামীন ফোনের একজন এন্ট্রী লেভেল অফিসার আর একজন মিড লেভেল অফিসার কি সমান সুবিধা পেয়ে থাকেন? বা একটি ব্যাংকের ম্যানেজার আর সিকিউরিটি গার্ড কি সমান সুযোগ সুবিধা পায়? তাই এসব নিয়ে কথা বলার আগে আমাদের আরও জানার দরকার আছে।

৫।
এবার আসি ক্যডেট কলেজ, বি ইউ পি, আর্মড ফোর্সেস মেডিক্যাল কলেজ এসবের কথায়। আমাদের অনেকের ধারনা এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কেবল সেনাসদস্যদের সন্তানরাই সুযোগ পায়। আসলে কিন্তু তা নয়। একটু খোজ নিলে দেখবেন এসব প্রতিষ্ঠানে বেশীরভাগ বেসামরিক মানুষের সন্তানরাই পড়ালেখা করে। এসব প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয় আমাদের জাতীয় শিক্ষাক্রম ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের নীতিমালার আলোকে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো নিয়মের মধ্য দিয়ে পরিচালিত হয় বলে কোন সেশন জট নেই, রেজাল্টও ভালো। তাছাড়া সেনাবাহিনি নিজের গাটের পয়সা খরচ করে অটিস্টিক শিশুদের জন্য স্কুল পরিচালনা করে। সব সেনানিবাসেই এরকম একটি করে স্কুল আছে। সেসব স্কুলগুলোতে আপনার আমার মতো বেসামরিক লোকজনের বাচ্চা কাচ্চারা লেখাপড়া করে।

৬।
অনেকেই নাখোশ ঢাকা সেনানিবাসের অবস্থান নিয়ে। তাদের যুক্তি- ঢাকা শহরের মাঝখানে সেনানিবাসের অবস্থান অনেক সমস্যার তৈরী করছে। আমিও একমত এ ব্যাপারটাতে। কিন্তু আমাদের ভেবে দেখতে হবে ঢাকা সেনানিবাস যখন তৈরী হয়েছিল তখনকার ঢাকা শহর কই ছিল। আমাদের মত ছোট দেশ যার জনসংখ্যা ১৭ কোটি এমন দেশে ঢাকা শহরের বাইরে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে আরেকটি সেনানিবাস বানানোটা ওত সহজ নয়। আর ঢাকা সেনানিবাস অন্যান্য কনভেনশনাল সেনানিবাস এর মত নয়। এখনে মুলতঃ সেনা, নৌ ও বিমান সদর অবস্থিত। তাছাড়া রয়েছে কিছু লজিস্টিক স্থাপনা। এসব স্থাপনা রাষ্ট্রযন্ত্রের কাছাকাছি থাকাটা বাঞ্ছণীয়। ঢাকা সেনানিবাসকে ঢাকার অদূরে নিয়ে যাওয়া আর বংগভবন, গণভবন বা সচিবালয় ঢাকার বাইরে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব অনেকটা একই রকম। দুনিয়ার কোথাও বিমান বন্দর ও শহরের মাঝে থাকেনা। আমাদের কিন্তু আছে, তাই আমাদের এই চিন্তা সমূহে একটু পরিবর্তন আনতে হবে। আমেরিকার মত দেশ যাদের সম্পদের কোন সীমাবদ্ধতা নেই সেখানেও পেন্টাগন শহরের অভ্যন্তরে অবস্থিত। অনেকে বলেন সেনানিবাসের ভিতর দিয়ে বেসামরিক মানুষকে চলাফেরা করতে দেওয়া হয়না। কথাটা আংশিক সত্য মাত্র। ঢাকা সেনানিবাসের ভিতরে অহরহ বেসামরিক যানবাহন ও মানুষকে চলতে দেখি আমি। ঢাকা সেনানিবাসে প্রচুর বেসামরিক জনসাধারণও থাকেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে অহেতুক সেনানিবাসে ঘুরাঘুরি করতে চাইলে একটু আপত্তি আসতেই পারে।

৭।
সেনাসদস্যদের ডি ও এইচ এস এ প্লট পাওয়া নিয়ে আমাদের অনেক কষ্ট আছে। আরেভাই আমরাওতো (সাংবাদিক, লেখক, রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী, জজ, উকিল, খেলোয়াড়, ইত্যাদি) উত্তরা বা পূর্বাচলে রাজঊকের প্লট পাই তো সেনাবাহিনী পেলে সমস্যা কি? পুলিস, বি সি এস ক্যাডারের লোকজন ও পায়। অন্যদের নিয়েতো কাউকে কিছু বলতে শুনিনা। সমস্যা হল আমাদের প্লট ক্ষমতাশালীরা দখল করে আর সেনাবাহিনী নিয়মমাফিক জ্যেষ্ঠতা অনুযায়ী তাদের সদস্যদের মাঝে বিতরন করে। আর সেনাসদস্যরা প্লট কিন্তু ফ্রী অফ কোস্ট পায়না। আসলে নাথিং ইজ ফ্রী ইন দিস ওয়ার্ল্ড। কতজন সরকারী আমলা মারা গেলে তাদের কূলখানী গুলশানস্থ নিজ বাড়ীতে হয় আর কতজন সেনাসদস্য মারা গেলে তাদেরটা নিজ বাড়ীতে হয় সেটা খতিয়ে দেখলে জানতে পারবেন কে আসলে কোথায় প্লট পায়। কতজন বেসামরিক ৩য় শ্রেণীর কর্মচারীর বাড়ী ঢাকা শহরে আছে আর কতজন সেনাসদস্যের বাড়ী ঢাকা শহরে আছে তার একটা জরিপ হওয়া দরকার বলে আমি মনে করি। সেদিন পুলিশের এক সার্জেন্ট আর সচিবালয় কর্মরত আমার দুই আত্মীয়ের সাথে দেখা হল। দুজনেরই সন্তান পড়ছে ঢাকার নামী ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে। তাদের দুজনেরই ঢাকা শহরে ফ্ল্যাট আছে। উনাদের স্ট্যাটাস সশস্ত্র বাহিনির জেসিও সমতুল্য। কই কোনদিন শুনলামনাতো সেনাবাহিনির কোন জেসিওর ঢাকা শহরে বাড়ী বা ফ্ল্যাট আছে।

৮।
সেনাবিহিনিতে গলফ কোর্স নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলেন। কিন্তু আমরা কি জানি ঐ সব গলফ কোর্সে কতজন সেনাসদস্য খেলতে যান? গলফ ক্লাব সমূহের বেশিরভাগ সদস্যই কিন্তু বেসামরিক পরিমন্ডল থেকে আগত। বাংলাদেশের গলফের নায়ক সিদ্দিকুর রহমান কোন সেনাসদস্য নয়। গলফ ক্লাবগুলোর সদস্য হতে অনেক টাকা লাগে। কিন্তু ঢাকা ক্লাব বা গুলশান ক্লাবের মেমবারশীপ ফ্রী পাওয়া যায় বলে আমাদের অনেকের ধারনা!

৯।
আমাদের আরেক ব্যাথা হল সেনাবাহিনী ব্যবসা করে টাকা কামায়। তারা হোটেল বানায়, ব্যাংক খোলে আরও কতকি। আমাদের মধ্যে হিংসা জিনিসটা যে প্রবল তার একটা উদাহরণ হল এই বিষয় নিয়ে কথা বলা। সেনাবাহিনি যদি নিজের টাকায় ব্যবসা করে আমার সমস্যা কি? আমার টাকা কি মারছে? পুলিশ এর আছে পলওয়েল মার্কেট, পুলিশ প্লাজা, সেনাবাহিনির আছে রেডিসন, ট্রাস্ট ব্যাংক। আর সেনাপরিচালিত সব ব্যাবসা প্রতিস্টানের ম্যানেজমেন্ট এ আছে কিন্তু বেসামরিক লোকজন অথবা অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য। এসব কাজ করতে গিয়ে সেনাবাহিনি তার মিশন থেকে বিচ্যুত হচ্ছেনা।

১০।
আরেক পক্ষ আছেন যারা হরহামেশাই বলেন আমাদের দেশে সেনাবাহিনির দরকার টা কি? আমরা কার সাথে যুদ্ধ করব? আগুন লাগছে? সেনাবাহিনি দরকার। বন্যা হইছে? সেনাবাহিনি দরকার। বিল্ডিং ভাংছে সেনাবাহিনি দরকার। রাস্তা করা লাগবে সেনাবাহিনি দরকার। লেক বানানো লাগবে? সেনাবাহিনি দরকার। ফ্লাইওভার বানানো লাগবে? সেনাবাহিনি দরকার। ওয়াসা পানি দিতে পারেনা? সেনাবাহিনি দরকার। পুলিশ যানজট নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনা?সেনাবাহিনি দরকার। একটি স্বচ্ছ ভোটার লিস্ট করা লাগবে? সেনাবাহিনি দরকার। আপনার অফিসের জন্য একজন দক্ষ, সৎ, যোগ্য, কর্মঠ এমপ্লই লাগবে? রিটায়ার্ড সেনা অফিসার দরকার।

সেনাবাহিনি নিয়ে আমাদের ভুল ধারনাগুলো দূর করার সময় এসেছে। আমাদের সীমান্তের নিরাপত্তা দিতে বি এস এফ আসবেনা বা আমাদের সমুদ্র সীমা পাহারাদারি আমেরিকার মেরিন সেনারাও করে দিবেনা। আমাদের রক্ষা আমাদের নিজেদেরই করা লাগবে। তাই সেনাবাহিনি নিয়ে ইনিয়ে বিনিয়ে ভুল ভাল কিছু বলার আগে আমাদের সবারই ভাল করে জানার দরকার আছে বলে আমি মনে করি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনি নানা কারনে সময়ে অসময়ে বিতর্কিত হয়েছে তাদের নানাবিধ কর্মকাণ্ডের জন্য। এখন সেনাবাহিনি ঐসব বিতর্কের উর্ধে। বর্তমান সেনাবাহিনি ক্ষমতা দখল করবেনা বা কাউকে ব্লাডি সিভিলিয়ান বলে গালিও দিবেনা বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। একজন বেসামরিক মানুষের পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে আজকের কথাগুলো লিখলাম। ভুল হতে পারে। কোন সামরিক সদস্য এখানে থাকলে ভুল গুলো ধরিয়ে দিবেন দয়া করে।

সুনীল সাগর


মন্তব্য

মাহবুব লীলেন এর ছবি

বুঝলাম। বর্ণনাটা খুবই ভালো তাই নিজের অভিজ্ঞতা যোগ করে মূর্খতা করতে চাই না কিন্তু একটা প্রশ্ন:
এই লেখাটা কি 'সেনা-পাব্লিক ভাই ভাই; সেনা ছাড়া রক্ষা নাই' এমন কিছুর আগাম সাফাই?

সুনীল সাগর এর ছবি

না সেরকম কিছু না। সেনা পাবলিক ভাই ভাই। কিন্তু পাবলিক ছাড়া গতি নাই।

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখাটা পড়ে ভালো লাগলো। যদিও এর প্রায় সবটা আমার জানা। তারপরেও অসামরিক কারো কাছে থেকে সামরিক তথ্য পেতে ভালই লাগে।শুধু একটা বিষয় সংযোজন করতে পারি। সেনাবাহিনী সদস্যরা দুই বছর এর যে ট্রেনিং করেন ভাটিয়ারী তে সেটাতে তাকে একাডেমিক জ্ঞান এবং শারীরিক ভাবে শক্তিশালী করার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ প্রোফাইল দেয়া হয় যেটা তার সারা জীবন এর পাথেয় হয়ে যায়। এই প্রোফাইল কে বছর বছর আপডেট করে আরো বিভিন্ন ট্রেনিং আর কোর্স এর মাধ্যমে।

প্রথম মন্তব্যের জবাব এ বলতে চাই, আসলে পাবলিক এর মধ্যে থেকে কিছু সংখ্যক মানুষকে যাচাই বাছাই করে ট্রেনিং দিয়ে সেনাসদস্য করা হয়। বলা যায় সেনাবহিনী অন্য সব পেশাজীবী দের মত একটি সেবাদান কারী প্রতিষ্ঠান যাদের কাজ পাবলিক এর জানমাল এর নিরাপত্তার জন্য সরকার কে সহায়তা করা।

শিশির অশ্রু

rubai এর ছবি

সেনাবাহিনি নয় সেনাবাহিনী ।

মৃষৎ এর ছবি

আমার জানামতে বাহিনি কাহিনিই সঠিক।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

বাংলা একাডেমি'র সংক্ষিপ্ত বাংলা অভিধান "বাহিনী" কে সমর্থন করছে

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সুবোধ অবোধ এর ছবি

আপনি জীবনে কাউকে কখনো 'তুই একটা মানুষ'বলে গালি দিছেন??? বা কাউকে দিতে শুনেছেন?

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

রাব্বানী এর ছবি

হ, সমগ্র বাংলাদেশকে একটি সেনাবাহিনী ঘোষণা করা হোক।

hasan এর ছবি

আসেন ভাই, আপনারে কিসু তথ্য দেই... জানায়ে রাখি, জন্ম সুবাদে সারা জীবন টা ক্যান্টনমেন্ট এই পার করতেসি

১. কমিশন প্রাপ্ত অফিসার রা পাবলিক কোনো ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করতে পারেন না....এই মেন্টালিটি টা কই থেকে আসছে সেইটা বলেন...

২. কথা সত্য, কিন্তু আমার একটা প্রশ্ন আছে. আপনি বোর্ড স্ট্যান্ড করে আর্মি তে চান্স পাইলেন না, এর সাথে শিক্ষিত না অশিক্ষিত হবার সম্পর্ক টা কই? হইতে পারে আপনি মুরগি কিসিমের, পরীক্ষার সময় আপনার হাত পা কাপে, অথবা ISSB তে ইংলিশ প্রশ্নের জবাবে বাংলা উত্তর দিসিলেন, অথবা হাইপার পাকনা গ্রুপের লগে একসাথে পর্সিলেন নাহলে আপনার দুই হাটু একসাথে লাইগা যায়, চোখে ৬/৬ এর বদলে কম বেশি আসে. যেই কারণ গুলা বললাম, তার একটা তে আপনি ফাইশা গিয়া বাদ পড়া মানে কি আপনি অশিক্ষিত?

আবার আবার সব চাকরিতেই নিজেরে আপগ্রেড করা লাগে, এইটা নিয়ে এত কথা বলার কি আছে? ডাক্তারদের ডিগ্রী নিতে যেই পেইন খাইতে হয়, তা রীতিমত অমানবিক। নিজেরে আপগ্রেড করবেন, গভমেন্ট কোনো টাকা দিবে না, ফাউ সার্ভিস দিবেন, কোন আর্মি অফিসার রে এই কাজ করতে হয়? পার্সোনালি আমি যা দেখসি, রিটায়ার করা অফিসার রা মূলত অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কাজ করার জন্যে বিভিন্ন গার্মেন্টস নাহলে কোম্পানি তে জয়েন করেন, যেইখানে তাদের মোদ্দা কাজ হয় থার্ড পার্টি নাহয় নিম্ন মানের এমপ্লয়ীদের দাবড়ানো নাহয় দর কষাকষি করা...

৩. বেতন আসলেই কম, এইকথা ধ্রুব সত্য। কিন্তু অফিসার রা যেই ভর্তুকি গুলা পান, সেইগুলা ও বলেন। আপনাদের চুল কাটাইতে কয় টাকা লাগে, বছরে নতুন জামা জুতা কি ফাউ পান নাকি কিনতে হয়? বাচ্চা গুলার জন্যে স্কুল এ বেতন কত দেন, ওদেরকে স্কুল থেকে আনতে যেই বাস গুলা ইউস করেন ওইটার তেল এর টাকা কে দেয়? কয়েকটা ডিপার্টমেন্টাল স্তর আছে, যেইখানে বিশেষ ছাড় এ সব কিসু পেয়ে যান. আর গাড়ি এর গল্প বইলেন না, মাস এর কয় দিন একজন আর্মি অফিসার " অন পেমেন্ট" ব্যবহার করেন?

বাকি পয়েন্ট গুলা নিয়ে পরে কথা বলব, আগে এইটা ৩টা পয়েন্ট নিয়ে আপনার কথা শুনতে চাই.

সিপিথ্রিও এর ছবি

ডাক্তারদের হয়তো পেইন খেতে হয় কিন্তু তারা শেষ বয়সে যে ইনকামের সুযোগ পায় তত টাকা আর্মি অফিসার চোখেও দেখেনা।এত কিছু যখন জানেন আপনার নিশ্চয়ই আইডিয়া আছে আর্মি ট্রেনিংগুলো কিরকম। রাতের পর রাত ঘুম থেকে টেনে মাঠে দৌড়ায় নিয়ে বেড়ানো, প্রথম বছরে ঠিকমতো খেতে না দেয়া, জঙ্গলে রাত কাটানো, জোক ভরা পুকুরে নামিয়ে দেয়া, সামান্য অযুহাতে ক্যারিয়ার ধ্বংস করে একাডেমি থেকে বের করে দেয়া, সারাদিন সিনিয়রদের অকথ্য গালিগালাজ শোনা, ঈদে পর্যন্ত ছুটি না দেয়া, এগুলো করতে আপনি রাজি আছেন এসব সুবিধার বিনিময়ে? এত কিছু করার পরও যদি কিছু সুযোগ সুবিধা না দেয়া হয় তাহলে একটা ছেলে বা মেয়ে কলেজ পাশ করে কেন ঢুকবে সেনাবাহিনীতে? তখনতো ঢোকার মতো মানুষই পাওয়া যাবেনা। আর্মির ডিপার্টমেন্টাল স্টোর এমন কোন অভিজাত জায়গা না, বেশিভাগ অফিসারদের দৌড় ওই সিএসডি পর্যন্তই, আগোরা-মুস্তফা মার্টের মতো জায়গায় যাবার মতো সামর্থ বেশিরভাগেরই নেই। উপরে চাকচিক্য থাকলেও একটা লেভেলে যাবার আগে বেশিভাগেরই সাধারণ মধ্যবিত্তের মতোই জীবন কাটায়। এখন আপনি জেনারেল, ব্রিগেডিয়ার লেভেলের অফিসারের পাওয়া সুযোগের কথা ধরলেতো হবেনা, এই লেভেলের সব সরকারী কর্মচারী(যেমন সচিব) এরকম সুবিধা পায়।

আমি সেনাবাহিনীর কোনো সদস্য না, কিন্তু কাছ থেকে তাদের জীবন দেখার অভিজ্ঞতা থেকে বললাম। তাদের খারাপ দিকগুলো অনার্য সঙগীতের আগের লেখাতেই চলে এসেছে, নতুন করে বলার কিছু নেই, সেনাশাসন আমরা কেও চাইনা।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

ঈদে পর্যন্ত ছুটি না দেয়া

ডাক্তার, এয়ারপোর্ট অফিসার, আবহাওয়া কর্মকর্তা, পুলিশ, ড্রাইভার... ... এরাও ঈদের ছুটি পায় না ভাই (তালিকা আরো লম্বা হবে)

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সিপিথ্রিও এর ছবি

ছুটি ছাড়াওতো আরো কিছু কথা বলেছি। । ""রাতের পর রাত ঘুম থেকে টেনে মাঠে দৌড়ায় নিয়ে বেড়ানো, প্রথম বছরে ঠিকমতো খেতে না দেয়া, জঙ্গলে রাত কাটানো, জোক ভরা পুকুরে নামিয়ে দেয়া, সামান্য অযুহাতে ক্যারিয়ার ধ্বংস করে একাডেমি থেকে বের করে দেয়া, সারাদিন সিনিয়রদের অকথ্য গালিগালাজ শোনা, ঈদে পর্যন্ত ছুটি না দেয়া"" এই সবগুলো কাজ কোনো মোটিভেশন ছাড়া করতে রাজি হবেন আপনি বা কোন কলেজ পাশ ছেলেমেয়ে? সেই মটিভেশন কি হতে পারে? নিশ্চয় দেশসেবা না সেটা।

হিমু এর ছবি

মোটিভেশন হচ্ছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পর আড়াই বছরের মাথায় কমিশণ্ড অফিসার হিসাবে ক্যারিয়ার শুরু করা। বাংলাদেশে আর কোনো সার্ভিসে কি এত দ্রুত প্রথম শ্রেণীর অফিসার হিসাবে যোগ দেওয়া সম্ভব? সশস্ত্রবাহিনীতে যোগ দেওয়া ছেলেটা বা মেয়েটার বন্ধুরা ক্যারিয়ার শুরু করতে করতে সে সেনাবাহিনীতে ক্যাপ্টেন, বিমানবাহিনীতে ফ্লাইং অফিসার বা নেভিতে লেফটেন্যান্ট হয়ে যায়। মোটিভেশন হিসাবে এটা যথেষ্ট শক্তিশালী।

সিপিথ্রিও এর ছবি

অফিসার হিসাবেতো তাকে কিছু সুযোগ সুবিধা দিতে হবেতো নাকি? খালি "অফিসার" পদবীটার জন্যতো কেও আসবেনা।

হিমু এর ছবি

কিছু সুযোগ সুবিধা কি কম দেওয়া হয়ে গ্যালো? আর শরম দিয়েন না, আরো কী কী লাগবে বলে ফেলেন, আমরা আমরাই তো।

সিপিথ্রিও এর ছবি

নারে ভাই আমি সেনাবাহিনীর কেওনা, ভবিষ্যতে হবার সম্ভাবনাও নাই, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, কয়দিন পর সিভিলিয়ান চাকরিতেই ঢুকবো। ওদের সুবিধা দিলেও আমার কিছুনা, না দিলেও কিছুনা, বরং ২০০৭ এ বিশ্ববিদ্যালয়ে আক্রমণের জন্য ওদের প্রতি বিশেষ ক্ষোভও আছে। আমি জাস্ট আমার যুক্তি যা বলে তাই বলতেসিলাম, ব্যক্তিগত আক্রমণের কিছু নাই।

হিমু এর ছবি

ব্যক্তি-আক্রমণ তো করি নাই। কেউ যদি বলে অমুকের সুবিধা দরকার, আর আপনি যদি জানতে চান সুবিধা কম কী পড়লো, সেইটা ব্যক্তি-আক্রমণ হতে যাবে কেন?

অতিথি লেখক এর ছবি

এত কিছু করার পরও যদি কিছু সুযোগ সুবিধা না দেয়া হয় তাহলে একটা ছেলে বা মেয়ে কলেজ পাশ করে কেন ঢুকবে সেনাবাহিনীতে?

সেই সুযোগ সুবিধার কি সীমা-পরিসীমা নেই? একজন সেনা অফিসারের সাথে একজন পুলিশ অফিসারের জীবন তুলনা করলে পার্থক্যটা কত ব্যাপক বুঝতে পারবেন। সেনাবাহিনীর কোন সদস্যকেই রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে ডিউটি করতে হয়না। তাদের ডিউটি ব্যারাকের সীমানায়। আর একজন একজন ট্রাফিক পুলিশ বাথরুম বিহীন একটা ব্যস্ত সড়কে ঘন্টার পর ঘন্টা হাত আর বাঁশি দিয়ে কি অমানবিক পরিশ্রমটা করে যাচ্ছে বছরের পর বছর। একজন ট্রাফিক পুলিশের সারাজীবনের পরিশ্রমের সাথে সেনাবাহিনীর দুই বছরের ট্রেনিং তুলনা করা হাস্যকর। সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তার সহিত ব্যারাকে ডিউটি করে একজন সেনা সদস্য একজন পুশিল সদস্য থেকে নিরাপত্তা ভাতা বেশি পায়? কোন সেনা অফিসারকে রাত ১২ টায় ওঠে আসামি ধরতে যেতে হয়না, রাতের পর রাত বাইরে ডিউটি করতে হয় না, জনগনের ইটপাটকেল খেতে হয়না। পুলিশকে করতে হয়, বিডিআরের কথা বললে আপনার এই অজুহাতটাকে বড়ই বেমানান লাগবে। তারা কি বছরের পর বছর রাতের পর রাত মশার কাঁমড়,জোক আর সাপের কাঁমড় খেয়ে হেঁটে হেঁটে সীমান্তে পাহার দিচ্ছে না?
সেনাবাহিনীতে যে ট্রেনিংগুলোর কথা বললেন ওগুলো চাকরির অংশ, সেটা করতেই হবে। একটা ছাত্র যখন মেডিক্যালে ভর্তি হয় তখন থেকে এফসিপিএস পাশ করা পর্যন্ত কি অমানুষিক পরিশ্রম করতে হয়। এটা ডাক্তার হতে হলে করতেই হবে। এই অজুহাতে বড় বড় ডাক্তারদের কে কি সরকার আলিসান বাড়ি, দুই চারটা গাড়ি, ১০জন ভৃত্য দেয়? কয়টি স্কুল/কলেজ আছে ডাক্তার আর পুলিশের জন্যে? কয়টা পুলিশ লাইনে হসপিটাল আছে?

মাসুদ সজীব

সিপিথ্রিও এর ছবি

পুলিশকেও সুবিধা দেয়া উচিত এটার সাথে পুরোপুরি একমত, তাই তর্ক করবোনা এই নিয়ে, পুলিশকে বেতন-সুযোগ সুবিধা কম দেয়া তাদের দুর্নীতির একটা কারণ। তবে সেনাবাহিনীতেও কিন্তু ট্রাফিক পুলিশের মতো রাস্তায় কাজ করতে হয় মিলিটারী পুলিশকে তবে ক্যান্টনমেন্টে মানুষ কম বলে তাদের কাজ পুলিশের মতো কষ্ট না। আপনার বাবা পুলিশ এবং তিনি প্রাপ্ত সম্মান পাননি বলে আপনার কষ্ট আছে, আমি এটাকে সম্মান করছি এবং আশা করছি পুলিশের প্রতি এই বৈষম্য দূর হবে। আমাদের সরকার আরেক শ্রেণীকে চরম দুর্দশায় রাখে যাদের অনেক সম্মান পাওয়া উচিত, সেটা হলো শিক্ষক। ডাক্তারদেরও বিদেশে সরকারের পক্ষ থেকে অনেক সম্মান দেয়া হয়, যেটা এদেশে দেয়না।

মেঘলা মানুষ এর ছবি

তবে সেনাবাহিনীতেও কিন্তু ট্রাফিক পুলিশের মতো রাস্তায় কাজ করতে হয় মিলিটারী পুলিশকে তবে ক্যান্টনমেন্টে মানুষ কম বলে তাদের কাজ পুলিশের মতো কষ্ট না

তাদের ব্যবহার নিয়ে অনেক কম্প্লেইন আছে।

অতিথি লেখক এর ছবি

স্ট্যান্ড করে উনি টিকেন নাই এটা দিয়ে উনি বুঝালেন সেনাবাহিনীতে ঢুকতে আরো বেশি ট্যালেন্ট লাগে। সব প্রতিভার ছড়াছড়ি সেখানে। সেনাবাহিনীতে পরীক্ষা দিয়ে যারা ISSB পর্যন্ত গিয়ে ফিরে এসেছে তাদের অভিজ্ঞতা বলে সেনাবাহিনীতে কমিশনার পদে খুব ট্যালেন্ট/ভালো রেজাল্টের অধিকারীদের নেওয়া হয়না। আমি নিজে ISSB তে গিয়ে বাদ পড়েছি। আমার পরিচিত আমার চেয়ে একাডেমিক রেজাল্টে দুর্বল ৩ জন কে নিয়েছে। তাহলে বিষয়টা কি দাঁড়াল?

মাসুদ সজীব

সুনীল সাগর এর ছবি

ভাইজান চুল কাটাতে বেশীনা মাত্র ৬০ টাকা লাগে। বছরে নতুন জামা জুতা কিনতে হয়, ফাউ পাইনা। বাচ্চাদের স্কুলে আনতে ও নিতে টাকা দেওয়া লাগে মাসে মাসে। বেতনও দিতে হয়। মাসে ৪ দিন একজন আর্মি অফিসার অন পেমেন্ট পান।

সুনীল সাগর এর ছবি

ভাইজান আমি বলিনাই যারা চ্যান্স পায়না তারা অশিক্ষিত। আমি বলেছি যারা সেনাবাহিনিতে আছে তারা এত খারাপ ছাত্র না।

সেনাবাহিনিতেও উপরে উত্থতে গেলে আপগ্রেড করা লাগে। অনেক কোর্স করতে হয়। আমরা বাইরে যারা আছি তারা অনেক কিছুই জানিনা।

অতিথি লেখক এর ছবি

সেই পড়ালেখা সব সেক্টরেই থাকে। ব্যাংক, পুলিশ থেকে শুরু করে ডাক্তারি সব খানে পড়ালেখা করে, পরীক্ষা দিয়ে উপরের দিকে উঠতে হয়।

মাসুদ সজীব

ঘুমকুমার এর ছবি

আপনার বক্তব্যের সাথে মোটামুটি একমত। কিন্তু সেনাবাহিনী সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরী হওয়ার জন্য সেনাবাহিনীই দায়ী। হয়ত সবাই নয়, কিছু সংখ্যক সদস্য। কিন্তু তারপরেও সেটা দূর করার দায়িত্বও সেনাবাহিনীর। খুব বেশি দিন আগের কথা নয় যখন সেনাবাহিনী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের উপরে চড়াও হয়েছিল শুধুমাত্র তারা "এলিট" এটা প্রমাণ করার জন্য।
জানি সেনাবাহিনী অনেক ভাল কাজ করছে এবং অনেক প্রফেশনাল হয়েছে। নেতিবাচক ধারণাও সেই কারণে আস্তে আস্তে দূর হচ্ছে। রানা প্লাজার উদ্ধার কাজে সেনা সদস্যরা জান দিয়ে কষ্ট করেছেন। এই কারণেই যখন ছাগু গোষ্ঠী প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর চেষ্টা করেছে, সাধারণ মানুষ সেনাবাহিনীকেই ডিফেন্ড করেছে। জাতিসংঘ শান্তি মিশনে আমাদের সেনাবাহিনীর সাফল্যে আমরা গর্বীত হই।
কিন্তু ১৫ বছরের সেনা শাসন, ২ বছরের প্রায় সেনা শাসন আর কয়েকবারের শুদ্ধি অভিযান (অপারেশন ক্লীন হার্ট ইত্যাদি) তাদের সম্পর্কে যে নেতিবাচক ধারণা তৈরী করেছে সেটা মানুষের মন থেকে মুছতে সময় লাগবে বলেই আমার মনে হয়। আর এজন্য সাধারণ মানুষকে দোষ দেওয়া যায় না। তারা সেনাবাহিনীকে নিজেদের বন্ধুর চেয়ে আতঙ্ক হিসেবেই বেশি সময় দেখেছে।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

ব্লাডি সিভিলিয়ান হল তার মধ্যে একটি। যা একান্তই তাদের নিজস্ব ব্যাপার। এতে আমাদের সিভিলিয়ানদের কিছু যায় আসেনা।

আসে, যখন সেটা মেজর আনিসেরা ক্যান্টের বাইরে নিয়ে আসে... আপনার না আসলে সেটা আপনার ব্যাক্তিগত ব্যাপার

এখন আসেন রেশনের কথায়; রেশন বাংলাদেশে সেনাবিহিনির পাশাপাশি পুলিশ, আনসার ও বিজিবি সদস্যরাও পান।

চারজন সমান হারে পায় কি? দৃশ্যত পুলিশের খাটুনি সবচেয়ে বেশি কিন্তু।

বাংলাদেশে সকল সরকারী চাকরীজীবীরাই সরকারী বাসস্থান পান।

অসত্য তথ্য, অনুগ্রহ করে জেনে বলুন।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে অহেতুক সেনানিবাসে ঘুরাঘুরি করতে চাইলে একটু আপত্তি আসতেই পারে।

ক্যান্টনমেন্ট কি টুরিস্ট স্পট? অহেতুক ঘুরাঘুরি কে করতে চাইছে? কিন্তু পিক আওয়ারে মিরপুর-টু-এয়ারপোর্ট যাইতে দুনিয়া ঘুরতে হলে মেজাজ খারাপ হবে না ক্যান? (এখন নাহয় ফ্লাইওভার আছে)

বাংলাদেশ সেনাবাহিনি নানা কারনে সময়ে অসময়ে বিতর্কিত হয়েছে তাদের নানাবিধ কর্মকাণ্ডের জন্য। এখন সেনাবাহিনি ঐসব বিতর্কের উর্ধে।

১৯৭৫-১৯৯০ এর জন্য সেনাবাহিনি/আইএস্পিয়ারের কোনও আনুষ্ঠানিক মাথাব্যাথা দেখেছি বলে মনে পড়ে না, পেলে জানাবেন

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সুবোধ অবোধ এর ছবি

চলুক
এহহে!! ভাবছিলাম আমার প্রথম প্রশ্নের উত্তর দিলে তারপর একে একে আরো কিছু প্রশ্ন করব। তা আপনে কইরা দিলেন।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

আরো ছিল... কিন্তু এইগুলা চোখে লাগতেছে

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক

আর আর্মি ভাইয়েরা কয়েক বছর পরপর রাতের আধাঁরে রাষ্ট্রক্ষমতা কে নিজের করে নেয় সেটা আসেন আমরা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখে তাদের জয়গান গাই।

মাসুদ সজীব

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

"কিছু বিপথগামী সেনা সদস্য" এর দায় পুরো সেনাবাহিনী কে দিচ্ছেন কেন? সময় মত সেনাবাহিনী "প্রাতিষ্ঠানিক" ভাবে তাদের বকে দেয় নি, তো কি হয়েছে? ব্লাডি সিভিলিয়ানরাই যখন বলছে- এখন সেনাবাহিনি ঐসব বিতর্কের উর্ধেদেঁতো হাসি লাইনে আসুন

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

তারেক অণু এর ছবি
তারেক অণু এর ছবি

দুর্বল লেখা, ঠুনকো যুক্তি বিশেষ করে একপেশে ভাবে সেনাবাহিনীকে সকল বিতর্কের উপরে তুলে ধরার ছেলেমানুষি প্রচেষ্টা

হিমু এর ছবি

দশটা বিশাল বিশাল পয়েন্টে দুধভাত আপত্তিগুলি আলোচনা করে শেষে এক লাইনে সেনাবাহিনী অতীতে "নানা ভূমিকা"র জন্য "বিতর্কিত" হয়েছিলো লিখলেন দেখে বোঝা গেলো, সেনাবাহিনীকে নিয়ে মানুষ কোন বেদনা আর ভয় থেকে নানা কথাবার্তা বলে, সেইটা আপনি বোঝেন না।

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার পয়েন্ট আকারে তথ্যের মাঝে অসংখ্য গরমিল আর ভাসা ভাসা জ্ঞানের প্রকাশ রয়েছে। আমি সেই গরমিলপূর্ণ ভাসা ভাসা জ্ঞানের যুক্তি খন্ডনে যাচ্ছিনা আপতত। আমি নিজ অভিজ্ঞতাই বলি। আমার বাবা ছিলেন একজন পুলিশ অফিসার আর আমার মামা ছিলেন সেনাবাহিনীর একজন অফিসার। দুজনেই এইচএসসি পাশ করে যোগদান করেন নিজ নিজ কর্মে। কিন্তু দিনশেষে দেখা গেল আমার বাবার দৌড় থেমে গেছে ওসি পর্যন্ত গিয়ে আর সেই একি যোগ্যতা নিয়ে মামা দেশের সেনাবাহিনীর একেবারে সর্ব্বোচ পদে(লে জেনারেল) আসীন সেনা অফিসার ছিলেন কিছুদিন আগেও। এখন ত্যানা প্যাচিঁয়ে বলবেন না মামা বেশি ট্যালেন্ট ছিলো বলে উনি এত উপরে উঠে গেছেন। কিসের জোরে মামার এত উন্নতি হয়েছিলো এটা আমরা খুব ভালো করে জানি, সেনাবাহিনীতে কিসের জোরে প্রমোশান হয় এটা একটু খোঁজ নিয়ে জেনে নিবেন। কিসের জোরে প্রমোশান হয়েছে সেটা এখানে আলোচনা করার প্রয়োজন দেখছি না। আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি মামার জীবন, তিনি কেমন জীবন কাটিয়েছেন। পাশাপাশি দেখেছি আমার বাবা কেমন জীবন কাটিয়েছেন। কোন সাধারণ মানুষ কল্পনাও করতে পারবে না কতটা বিলাসিতাপূর্ণ সেই জীবন হতে পারে। কিছু উদাহারন দেই, মামার সরকারী বাবুর্চি হলো তিনজন, মালি চারজন, ঘর পরিস্কার করার জন্যে দুইজন, মামার সহকারী দুইজন। এইসুবিধা গুলো তাকে পেতে দেখেছি তিনি যখন একজন কুমিল্লা ক্যান্টেনম্যান্ট এর প্রধান। একটা দোতলা বাড়ি, বাড়ির সামনে ফুলের বাগান, অসংখ্য ফলের গাছ। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি সেই ফল বাগানে ফল ঝরে মাটিতে পড়ে থাকে, তুলে নিয়ে যাওয়ার কেউ নেই। দুটো গাড়ি, তিনজন ড্রাইভার আরো কত কি। লিষ্ট দিতে থাকলে শুধু লম্বা হবে। তারপর উনি যখন সাভারের প্রধান হলেন তখন দেখলাম অন্যরকম জীবন। উনার পাঁয়ের মুজা পরিয়ে দেয় একজন সিপাহী। দাস প্রথা বোধহয় একেই বলে। যতবড় অফিসারি হোক পুলিশ বাহিনীতে কোনদিন কোন সিপাহী তার অফিসারকে নিজ হাতে প্রতিদিন মোজা পরিয়ে দিবেন না, যেটা সেনাবাহিনীতে আছে। বৈষম্য আর ভেদাভেদের চরম দৃষ্টান্ত এটি। খাওয়া দাওয়ার সুযোগ সুবিধার কথা নাই বলি।

বিকেলে উনি গলফ খেলতে যেতেন, গলফ খেলার জুতার একটা রুম ছিলো। মাথার হ্যাড় রাখার একটা ‍রুম ছিলো। আশা করি বুঝে নিতে সক্ষম হবেন তার কত জোড়া জুতা আর মাথার হ্যাড ছিলো। তারপর আসি উনার বাড়ির কথা, ১ টাকা মূল্যে উনাকে সরকার ডি ও এইচ বাড়ি দিয়েছে। বারিধারাও তো একটা দিয়েছে। আর মিশনের কথা বলেন? কত % যায় সেনাবাহিনী থেকে আর কত% যায় পুলিশ থেকে একটু জেনে নিবেন।

মাসুদ সজীব

সিপিথ্রিও এর ছবি

সেনাবাহিনীতে জেনারেল থেকে বাকি পদে পলিটিকাল প্রমোশন হয় কিন্তু তার আগ পর্যন্ত নিজের যোগ্যতায় যেতে হয়। তবে আমি বলছিনা পলিটিকাল প্রমোশন ভালো জিনিস। ক্যান্টনমেন্টের প্রধান একটা বিশাল পোস্ট, এত বড় পোস্টের অন্য সরকারী কর্মকর্তারা এর থেকে কম সুবিধা পায় মনে করেন নাকি? কোন শহরের ডিসি কিভাবে থাকে খোজ নিয়ে দেখেন।

সুনীল সাগর এর ছবি

ভাই আপনার বাবার জন্য দুঃখ প্রকাশ ছাড়া আমার কিছু করার নাই। আপনার বাবার সাথে আমার মামার তুলনা না করে একই ডিপার্টমেন্টের একজন এস পি বা ডি আই জির তুলনা করলে বুঝতেন অফিসাররা সবখানেই এমন সুবিধা পেয়ে থাকে। এটা শুধু সেনাবাহিনি না।

সুনীল সাগর এর ছবি

সরি আমার মামা না কথা টা হবে আপনার মামা।

সুনীল সাগর এর ছবি

একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিষয়ে পাশ করে কেউ হয় ৩য় শ্রেণীর কেরানী আর কেউ বি সি এস পরীক্ষায় পাশ করে হয় ক্যাডার অফিসার। দুজনকে একসাথে মিলালে হবেনা। কেরানী সাহেব কিন্তু আজীবন কেরানী ই থাকবেন, কিন্তু অফিসার সাহেব অনেক উপরে উঠবেন।

অতিথি লেখক এর ছবি

শুধু জেনারেল থেকে না সব লেভেল থেকে সেখানে রাজনীতিকরণ চলে। আর একজন ডিসিকে পরীক্ষা দিয়ে ডিসি হতে হয়। আর ডিসির জীবন কখনো সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল এর মত সুযোগ সুবিধাপূর্ণ হয় না।

মাসুদ সজীব

সুনীল সাগর এর ছবি

হাসালেন। একজন ডিসিতো উপসচীব পর্যায়ের অফিসার। মানে সেনাবাহিনির মেজর। ডিসির তুলনা তো জেনারেল এর সাথে করলে হবেনা। জেনারেলের তুলনা করতে হবে একজন সচীবের সাথে। তাইলে দেখবেন কার ক্ষমতা বেশী।

অতিথি লেখক এর ছবি

তুলনাটা যা আপনি যে লেভেলেই করেন তারা অনেক বেশি সুযোগ পায় রাষ্ট্র থেকে। একজন অফিসার ব্যতিত পুলিশ সদস্য আর একজন সেনা সদস্যের মাঝে তুলনা করলেই পার্থক্য টা বুঝতে পারার কথা। সেটা বারবার ব্যাখা করার প্রয়োজন দেখছি না।

মাসুদ সজীব

অতিথি লেখক এর ছবি

এখানেইতো একটা বিশাল গেঞ্জাম। ডিসি হবার অন্যতম যোগ্যতা ৪৫+ বয়স। ন্যূনতম ১৫ পনেরো বছর সার্ভিস দিয়ে একজন উপসচিব হয়। অন্যদিকে এরাউন্ড ৩০ এ একজন সেনা কর্মকর্তা মেজর হয়।

সিভিল জবে একজন প্রকৌশলী/চিকিত্সক সেনাবাহিনীর সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট এর স্যালারিতে জব শুরু করে, অপরদিকে সেই একই চিকিত্সক বা প্রকৌশলী সেনাবাহিনীতে ঢুকলে ক্যাপ্টেন রেন্কে ঢুকে। তো স্টার্টিং স্যালারিতে বেশি হলো কার? সিভিল সার্ভিসের নাকি আর্মির?

শব্দ পথিক

সিপিথ্রিও এর ছবি

আর্মিতে স্যালারি বেশি বললে পাগলেও হাসবে, তাদের সুযোগ সুবিধা বেশি, স্যালারি না। ডিসি কখনোই মেজরের সমকক্ষ না, মেজর আরো অনেক নিম্নপদের।

সুনীল সাগর এর ছবি

বাংলাদেশ সরকারের ওয়ারেন্ট অফ প্রেসিডেন্স দেখেন তাহলে ক্লিয়ার হবে।

অতিথি লেখক এর ছবি

বাংলাদেশ সরকারের ওয়ারেন্ট অফ প্রেসিডেন্স আপনি চেক করে দেখেন, নিজের ভুল ধরতে পারবেন। ভুল এবং অযৌক্তিক তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করতে পারবেন এমন মানুষ সম্ভবত সচলায়তনে নেই।

১। একজন উপসচিব (ডিসি) এবং একজন মেজরের মূল বেতন সমান। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সহকারী অধ্যাপক মেজরের চেয়েও এক গ্রেড নিচে মূল বেতন পান। একজন সহযোগী অধ্যাপকের মূল বেতন লে: কর্নেলের সমান। একজন অধ্যাপকের মূল বেতন কর্নেলের সমান।

২। একজন বিশ্ববিদ্যালয় প্রভাষক/সহকারী সচিব/সহকারী পুলিশ সুপার/সহকারী প্রকৌশলী/সহকারী সার্জন এবং একজন সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট/ফ্লায়িং অফিসার/একটিং সাব লেফটেন্যান্ট এর মূল বেতন সমান।

আর সুযোগ-সুবিধা/ভাতা সামরিক বাহিনীর বেশি সেটা নিজেরাই বলেছেন।

শব্দ পথিক

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

সিভিল জবে একজন প্রকৌশলী/চিকিত্সক সেনাবাহিনীর সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট এর স্যালারিতে জব শুরু করে, অপরদিকে সেই একই চিকিত্সক বা প্রকৌশলী সেনাবাহিনীতে ঢুকলে ক্যাপ্টেন রেন্কে ঢুকে।

তথ্য কিঞ্চিত গড়মিল আছে, সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট নবম গ্রেড না... সিভিলের কর্মকর্তারা যেটা দিয়ে শুরু করে... ক্যাপ্টেন পর্যায়েই সেটা নবম গ্রেড হবার কথা... নিশ্চিত হয়ে জানাচ্ছি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

সাক্ষী সত্যানন্দ
একজন আর্মি ক্যাপ্টেনের স্টার্টিং স্যালারি ১৫০০০, একজন সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট এর ১১০০০।

এবং সিভিল জবে একজন বিশ্ববিদ্যালয় প্রভাষক/প্রথম শ্রেনীর যেকোন সরকারী কর্মকর্তার স্টার্টিং স্যালারি ১১০০০ যা একজন সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট এর স্টার্টিং স্যালারি।

এমআইএসটি'র লেকচারারের স্টার্টিং স্যালারি ১১০০০, যেখানে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট এর স্যালারিও ১১০০০।

আপনি বোধ হয় পদমর্যাদা এবং স্যালারীকে গুলিয়ে ফেলছেন।

শব্দ পথিক

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

ধন্যবাদ শব্দ-পথিক,
অনিচ্ছাকৃত ভুল তথ্যের জন্য আমি লজ্জিত এবং দুঃখিত :$
আসলে দুটো জিনিস কে গুলিয়েই ফেলেছিলাম মন খারাপ

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

আর্মি স্যালারি স্কেল

বেসামরিক জবের স্যালারি স্কেল

সচিবের বেতন ৪০,০০০ যেটা আর্মিতে মেজর জেনারেলের বেতনের সমান। লে: জেনারেলের বেতন ৪২,০০০ এবং জেনারেলের ৪৫,০০০।

নবম গ্রেডের কর্মকর্তার বেতন ১১০০০ যেটা সেনাবাহিনীর সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট এর বেতনের সমান।

শব্দ পথিক

robot  এর ছবি

ডিসির তুলনা দিলেন একজন মেজরের সাথে, আর ইউ কিডিং মি? ডিসি যতদূর জানি যুগ্মসচিব পর্যায়ের।

সব সরকারী কর্মকর্তা বাসস্থান পায় এই রূপকথা কৈ পড়সেন? বাঁশের কেল্লায়?

গালি তো মানুষ নিম্নশ্রেণীকেই দেয়। আরমির লোক যখন নিজেদের মধ্যে ফাঁকিবাজ বা অক্ষম বলে কাউকে "ব্লাডি সিভিলিয়ান" সেখানেই বোঝা যায় তাদের মন মানসিকতা কেমন ধরনের।

বাই দি ওয়ে, সেনাবাহিনী নিয়ে আমার চুলকানি নাই কোনো।

সুনীল সাগর এর ছবি

ভাই আপনার মনেহয় বাংলাদেশের ওয়ারেন্ট অফ প্রেসিডেন্স ট ভালো করে দেখার দরকার আছে। ডিসি যখন নিজ জেলায় দায়িত্ব পালন করেন তখন তিনি লেফটেন্যান্ট কর্নেল এর সমকক্ষ আর অন্যথায় তিনি উপসচীবের সমকক্ষ। আমরা না জেনে অনেক কিছুই বলি। একটু জানতে সমস্যা কি?

অতিথি লেখক এর ছবি

রোবোট

ওসিআর ভালো থাকলে মোটামোটি পলিটিকাল দিক বিবেচনা করে যোগ্য উপসচিবদের ডিসি পদে পোস্টিং দেয়া হয়। যুগ্ম-সচিবরা বিভাগীয় কমিশনার পদে পোস্টিং পান।

শব্দ পথিক

অতিথি লেখক এর ছবি

কথা বার্তা যেদিকে যাচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে সেনাবাহিনী অফিসার বেশি সুবিধা পাওয়ার যোগ্য কারণ সম মর্যাদার একজন সিভিল অফিসার সেই একই সুবিধা পেয়ে থাকেন। এটা একটা ভুল হিসাব। একজন ডিসি এর দায়িত্ব আর একজন ক্যান্টনমেন্ট প্রধান এর দায়িত্ব সমান কিনা সেটা ভেবে দেখা দরকার। তবে তার আগে যেটা ভেবে দেখা দরকার জনগণ এর ট্যাক্স এর টাকায় ডিসি হোক আর ক্যান্টনমেন্ট এর প্রধান হোক তারা কেন এত বিলাসিতা করবে। কেন তাদেরকে এত সুবিধা দিতে হবে যেখানে একজন সাধারণ মানুষকে না খেয়ে দিন রাত পার করতে হয়। কেন তাদের সুবিধা কমিয়ে সাধারণ মানুষের জন্য একটু খাবার আর মাথার উপর ছাদ এর ব্যবস্থা করা যাবে না?
শিশির অশ্রু

অতিথি লেখক এর ছবি

১। ব্লাডি সিভিলিয়ান বলে গালি দেওয়াটা তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু মনে হয়না আমার কাছে, তেমনি হাঁটু বাহিনী বলাটাও তেমন সিরিয়াস কিছু না।

২। শিক্ষা-দীক্ষার ব্যাপারটা অনেক ফেক্টরের উপর ডিপেন্ড করে। মেধাবী স্টুডেন্টকে অফিসার হিসেবে নেয়া সেনাবাহিনীর লক্ষ্য না, একটা অপটিমাইজেশনের ব্যাপার থাকে সেখানে। ঢুকার পর যার যার ক্যালিবার অনুযায়ী উচ্চ শিক্ষা অর্জন করে। তবে আমার পর্যবেক্ষণে ফেক্ট হলো, লং কোর্সের মানুষ যে যতো ডিগ্রী নেয় বা পড়ে তার প্রমোশন ততো কম হয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক এবং স্নাতকোত্তররাই সাধারণত টপ তিন রেন্ক লেভেলে ঢুকে। পড়াশুনায় যারা মেধাবী তারা প্রমোশনের রেসে পিছিয়ে যায় ক্রমশ।

৩। অবিবাহিত সেনা অফিসার অফিসার্স মেসে ফ্রি তে থাকে এবং খায়। এদিক থেকে অবিবাহিত অবস্থায় তাকে বাড়ি ভাড়া বেতনের সাথে দেয়ার কোন যৌক্তিকতা নাই। সেনা অফিসারদের চিকিত্সা সুবিধা ভালো, এটা দরকার দেখেই তারা পায়-এতে সিভিলিয়ান কারো আপত্তি আছে বলে মনে করিনা। সামরিক বাহিনীর রেশনের সাথে বিজিবির রেশন এমাউন্ট ম্যাচ করে, কিন্তু সারাবছর রাজপথে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করা পুলিশ-আনসারের রেশন সামরিক বাহিনীর তুলনায় নগন্য। টাকার বিনিময়ে গাড়ি ইউজ করতে আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধু কোন সেনা কর্মকর্তাকে দেখিনি। নিজের পরিচিত পরিমন্ডলে সেনা কর্মকর্তা যারা আছেন তারা (রেনক মেজর বা এর উপরে) ২৪ ঘন্টা গাড়ি ব্যবহার করতে পারেন, প্রটোকল না থাকলেও তারা সেটা করেন। বিজিবিতে যারা ট্রান্সফার হয়ে যান তারা প্রটোকল না থাকা স্বত্বেও ২৪ ঘন্টা গাড়ি, বাবুর্চি, রানার, ক্লিনার ইউজ করেন। ডিপার্টমেন্ট এর স্টাফদের বাড়িতে এনে কাজ করানো সেনা কর্মকর্তাদের একটা ডাল-ভাত ব্যাপার। সেনা কর্মকর্তাদের বাচ্চাদের স্কুলে পৌছে দেয়া, বা বউকে শপিং এ পাঠানোর জন্যও ডিপার্টমেন্ট স্টাফ, ড্রাইভাররা সার্ভিস দেয়। নিউ মার্কেট, গাউছিয়া এলাকায় সেনাবাহিনীর কিছু গাড়ি সবসময়ই দেখা যায়। নিজের ডিপার্টমেন্ট স্টাফদের হাউজ সার্ভেন্ট বানানো একটা প্রভাবক ছিল বিডিআর বিদ্রোহে, এটাকে চক্রান্তকারীরা সাধারণ সদস্যদের উস্কে দিতে ব্যবহার করেছে।

৪। সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা ছাড়া অন্য সবাইকেই বাড়ি পেতে দীর্ঘদিন ওয়েটিং লিস্টে থাকতে হয়। এমনকি সামরিক বাহিনীর সাধারণ সদস্যরা এক বছর সরকারী বাড়ি পেলে পরের দুই কি তিন বছর বাইরে ভাড়া বাসায় থাকতে হয়, কারণ বাড়ি অপ্রতুল। বাংলাদেশে কেবলমাত্র সামরিক বাহিনীর সকল কর্মকর্তা রিটায়ার করার পূর্ব পর্যন্ত সরকারী বাড়ি প্রাপ্তির নিশ্চয়তা পান।

৫। তথ্য সঠিক মনে হলো, তাই মন্তব্য নেই।

৬। পেন্টাগন স্রেফ একটা অফিস মাত্র, এটা সেনাবাহিনীর অস্ত্র-শস্ত্র রাখার কোন জায়গা না। বাই দ্যা ওয়ে, পেন্টাগন নদীর অপর পাড়ে ভার্জিনিয়াতে, রাজধানী কিন্তু ডিসিতে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় সকল সেনানিবাস লোকালয় এবং মূল শহর থেকে অনেক অনেক দূরে।

৭। ভাই সশস্ত্র বাহিনীর সাধারণ সদস্য এবং তাদের সিনিয়র স্ট্যাটাস জেসিওদের দাব্রিয়েই তো আমাদের সেনাবাহিনী জনতার চোখে হাঁটু বাহিনী। দাবড়ানো খাওয়া লোকদের ঢাকায় ফ্ল্যাট-বাড়ি থাকবে কিভাবে? বুঝায়া দেন।

৮। আর্মির গলফ ক্লাবগুলোর সদস্য হতে সিভিলিয়ানদের অনেক টাকা লাগে, কিন্তু আর্মির জন্য ফ্রি। ঢাকা শহরে এই পরিমান জায়গা নিয়ে গলফ ক্লাব থাকারই যুক্তি নেই কোন, গাজীপুর বা চট্টগ্রামের পাহাড়ী জঙ্গলে ঠিকাছে। সিদ্দিকুর রহমান আর্মি গলফ ক্লাবে বলা যায় শিশুশ্রমিক ছিলেন, ঠিক যেমনটা অনেক নামিদামি ফুটবলার বলবয় ছিলেন।

৯। হ ভাই, টাকা কামায় এটাতো ভুল কিছুনা, আমার এক আত্মীয় কর্নেল হয়ে রিটায়ার করে সেনাবাহিনীতেও সাপ্লায়ার। পূর্ব কানেকশন থেকে এবং প্রাক্তন সহকর্মীদের পার্সেন্টেজ দিয়েই তিনি বেশ কিছু কাজ আজীবনের জন্য করায়াত্ত করেছেন।

১০। কিসসু বলার নাই।

শব্দ পথিক
ডিসেম্বর ১, ২০১৩

বনি এর ছবি

অবিবাহিত সেনা অফিসার অফিসার্স মেসে ফ্রি তে থাকে এবং খায়।
ভূল তথ্য।

অতিথি লেখক এর ছবি

মেসে থাকার জন্য মূল বেতন থেকে কী টাকা দিতে হয়?

শব্দ পথিক

বনি এর ছবি

১০০% সত্য।মেস এ যদি এক কাপ চা ও খায় তার ও হিসাব লিখে রাখা হয় এবং মাসের শেষে থাকা এবং খাওয়ার বিল পরিশোধ করতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনি ভুল বলছেন। অবিবাহিত সেনা কর্মকর্তারা মূল বেতনের সাথে ২০-২৫ শতাংশ বাড়ি ভাড়া পান। মেসে থাকলে এই বাড়ি ভাড়াটা পাওয়া যায়না। সুতরাং মূল বেতন থেকে এক টাকাও কাটা যায়না।

আর খাবারের ব্যাপারে আসি, রেশন বাবদ যে খাদ্য দ্রব্য একজন সেনা কর্মকর্তা পান সেটা দিয়েই বেসিক ফুড পুরোটাই কাভার হয়, এখানে খাওয়া-দাওয়া করতে মূল বেতন থেকে এক পয়সা দেয়ার সুযোগ নেই। বরং কিছু কিছু কাঁচামাল উদ্ধৃত থাকে যেমন চাল, চিনি, ডাল, ভোজ্য তেল। আরেকটা কথা, সৈনিকদের খাদ্য তালিকায় যেসব খাবার থাকে বা বাজেট যতো ততোটা উধ্বর্তন কর্মকর্তারা খরচ করেন না উদাহরণস্বরূপ একজন সৈনিকের মাসে যে পরিমান মাংস খাবার কথা তাকে ততোটুকু দেয়া হয়না। এ খাতে যে পরিমান টাকা সেভ হয়, তা কোনো সেবাখাতে খরচ হয়না। পুরোটাই ব্যাটালিয়ন কমান্ডার বা সেক্টর কমান্ডার অনুগত ২/৩ জন সিনিয়র অফিসারকে নিয়ে মেরে দেন। সবাই এমন করেন তা না, কিন্তু একটা বড় অংশই এমন করেন।

শব্দ পথিক

পুতুল এর ছবি

১০।
আরেক পক্ষ আছেন যারা হরহামেশাই বলেন আমাদের দেশে সেনাবাহিনির দরকার টা কি? আমরা কার সাথে যুদ্ধ করব?

আগুন লাগছে? সেনাবাহিনি দরকার। বন্যা হইছে? সেনাবাহিনি দরকার। বিল্ডিং ভাংছে সেনাবাহিনি দরকার। রাস্তা করা লাগবে সেনাবাহিনি দরকার। লেক বানানো লাগবে? সেনাবাহিনি দরকার। ফ্লাইওভার বানানো লাগবে? সেনাবাহিনি দরকার। ওয়াসা পানি দিতে পারেনা? সেনাবাহিনি দরকার। পুলিশ যানজট নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনা?সেনাবাহিনি দরকার। একটি স্বচ্ছ ভোটার লিস্ট করা লাগবে? সেনাবাহিনি দরকার। আপনার অফিসের জন্য একজন দক্ষ, সৎ, যোগ্য, কর্মঠ এমপ্লই লাগবে? রিটায়ার্ড সেনা অফিসার দরকার।

আমার ধারণা সেনা বাহিনীর সুবিধার এই দিকটাই বেশী ভয়ানক। কারণ;
আগুন নেভাতেও সেনা বাহিনী তলব করার মানে হল; কার্জকর দমকল বাহিনী নেই। নেই কেন? জবাব হল; সেনাবাহিনী তো আছেই। আর দমকল বাহিনী দিয়ে হবেটা কী!

এই প্যারায় উল্লেখ করা বাকী সব দায়ীত্বও আসলে সেনাবাহিনীর নয়। এবং তার পরেও কাজ গুলো তারাই করছে। এর কারণ হল, আর কোন সংস্থাকে সেনাবাহিনীর মতো, কাজের এত যন্ত্রপাতি দেয়া হয় না। এমনকী চিকিৎসা ক্ষেত্রেও দেখা যায় ফেসেলিটির দিক থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল সবার উপরে।

এখন সংগত কারণেই প্রশ্ন উঠে; একটা দেশের জনগনের চিকিৎসার দায়ীত্ব কী প্রতিরক্ষা বাহিনীর?

সব মিলিয়ে আমরা বলতে পারি বাংলাদেশের যে কোন সমস্যা মোকাবেলা করার মতো যোগ্যতা তাদের আছে। তা হলে আর অন্য কোন সংস্থার দরকার কী? দীর্ঘ সামরিক শাসনের ফলে সিভিল সমাজ দুর্বল হয়ে গেছে। সামরিক শাকরা কখনো দুর্ণিতী বাদ দিয়ে ক্ষমতায় থাকতে পারে না। ক্ষমতা কিন্তু দখল করে দুর্ণিতীর বিরোদ্ধে কথা বলেই। দেশ পরিচালনার মতো বড় ক্ষমতা যারা পান, তারা আত্মী-স্বজন মিলে দুটপাট করেন। কিন্তু তাদের লুটপাটে নীচের সমর্থন আদায়ের জন্য নীচের দিকের একেবারে সিপাহী পর্যন্ত সবাই যেন কিছু পায়, সে জন্য এমন কিছু বারতি সুবিধা তাদের দেয়া হয়। ষ্টেডিয়াম বা হাসপাতাল। মানে ভাগাড়ে আর পরিচ্ছন্ন থাকে না আর কী। এই সবই একটি দরিদ্র দেশের চিণ্হ। দুনিয়ার সব দরিদ্র দেশে দেখবেন; যে কোন সমস্যায় আল কোরানের মতো সেনা বাহিনী। একই সাথে দুনিয়ার সর্ববৃহৎ সেনা বাহিনী আমেরিকার রাজনৈতিক বিষয়ে সাংঘাতিক রকম নীরব। সেখানে কিন্তু রাজনৈতিক সমস্যা আমাদের দেশের কম না। কিন্তু দেশের আভ্যন্তরিন ব্যাপরে তাদের তেমন কোন অংশ গ্রহন চোখে পরে না।

রানা প্লাজার উদ্ধার কাজে সেনা বাহিনী কেন লাগবে! আমরা কেন একটি সক্ষম দমকল বাহিনী তৈরী করছি না। কারণ করতে টাকা লাগে। দমকল বাহিনীর কোন প্রভাব রাজনীতিতে নেই। কাজেই তারা দামী ইকুইপমেন্ট এবং প্রশিক্ষণ পাচ্ছে না। আপনার উল্লিখিত দায়ীত্ব ছাড়া বাংলাদেশ সেনা বাহিনী আসলেই বিরত্ব পূর্ন আর কিছু করে নি। করার সম্ভাবনাও নেই।

ভারতীয় উপমহাদেশের সেনাবাহিনীর বিরত্ব যা আছে তা কেবল সিপাহীদের। সেনা অফিসারদের নয়। হয়তো সে জন্যই তার নামও সিপাহী বিদ্রোহ। অফিসাররা চলায় বলায় বিদেশী প্রভুদের মতোই। তাদের ভাবনা চিন্তায় এমন এক রকমের সুপিরিয়র ভাব থাকে যা কলোনিয়াল সময়ের ইংরেজদের ভেতরে ছিল। খুব যত্নের সাথে সেই বিরত্ব (?) তারা পরবর্তী জেনারেশনের কাছে দিয়ে যায়। এই মানুষিকতা একটা বড় সমস্যা। যার কারণে তারা রক্ষকের দায় ভুলে ভক্ষক হয়ে যায়।

যে দেশের ছেলে মেয়ে বোর্ডে স্ট্যান্ড করে সেনা বাহিনীর অফিসার হবার স্বপ্ন দেখে, সে দেশে সিভিল সমাজের গনতন্ত্র আসতে সময় লাগবে।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

মনজুর এলাহী এর ছবি

চলুক

যে কোন বিপদের সময় সেনাবাহিনীর মুখের দিকে হা করে তাকিয়ে থাকতে হয়- এটা জাতি হিসেবে আমাদের যে কত বড় অপমান তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর তাকিয়ে থাকার কারণও সুস্পষ্ট- তাদেরকে যে ভাবে ইকুয়িপ্ট করা হয়েছে- তা সংস্লিষ্ট কাজে নিয়োজিত সরকারী/স্বায়ত্বশাসিত ওয়ার্কফোর্সকে করা হয়নি। দমকল, সড়ক বিভাগ, ত্রাণ মন্ত্রনালয়- এ রকম আরো অনেক বিভাগ প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পাচ্ছে না যা দিয়ে তারা সেনাবাহীনির সাহায্য ছাড়াই দূর্যোগ মোকাবেলা করতে পারে।

---- মনজুর এলাহী ----

অতিথি লেখক এর ছবি

আমরা কেন একটি সক্ষম দমকল বাহিনী তৈরী করছি না। কারণ করতে টাকা লাগে। দমকল বাহিনীর কোন প্রভাব রাজনীতিতে নেই। কাজেই তারা দামী ইকুইপমেন্ট এবং প্রশিক্ষণ পাচ্ছে না। আপনার উল্লিখিত দায়ীত্ব ছাড়া বাংলাদেশ সেনা বাহিনী আসলেই বিরত্ব পূর্ন আর কিছু করে নি। করার সম্ভাবনাও নেই।

সহমত

এই প্যারায় উল্লেখ করা বাকী সব দায়ীত্বও আসলে সেনাবাহিনীর নয়। এবং তার পরেও কাজ গুলো তারাই করছে। এর কারণ হল, আর কোন সংস্থাকে সেনাবাহিনীর মতো, কাজের এত যন্ত্রপাতি দেয়া হয় না। এমনকী চিকিৎসা ক্ষেত্রেও দেখা যায় ফেসেলিটির দিক থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল সবার উপরে।

চলুক

মাসুদ সজীব

সিপিথ্রিও এর ছবি

একমত, দেশে যদি সবকিছু ঠিকমতো চলতো সেনাবাহিনীর দরকার থাকতোনা, সেনাবাহিনীর উপর নির্ভর করা খুবই বিপদজনক। কিন্তু আমরা এখনও সেই পর্যায়ে যেতে পারিনি।

অর্ণব এর ছবি

যে দেশের ছেলে মেয়ে বোর্ডে স্ট্যান্ড করে সেনা বাহিনীর অফিসার হবার স্বপ্ন দেখে, সে দেশে সিভিল সমাজের গনতন্ত্র আসতে সময় লাগবে।

চলুক

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

পুরো কমেন্টের সঙ্গে একমত পুতুল ভাই, কেবল

যে দেশের ছেলে মেয়ে বোর্ডে স্ট্যান্ড করে সেনা বাহিনীর অফিসার হবার স্বপ্ন দেখে, সে দেশে সিভিল সমাজের গনতন্ত্র আসতে সময় লাগবে।

এই অংশটুকু খারাপ লাগল, বোর্ডস্ট্যান্ড যদিও শিক্ষার নিশ্চিত মাপকাঠি নয়, তবু ব্যাপারটা কি কিছুটা হলেও মেধাবীদের রাজনীতি থেকে দূরে রাখবার মত হয়ে গেল? (যদিও সেটা হয়নি) সেনাবাহিনীও তো আর দশটা চাকুরীর মত পেশাদার একটা জায়গা হতে পারত ইয়ে, মানে...

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

rajib এর ছবি

সেনাবাহিনী নিয়ে ামার বিশেষ কোনো অভিযোগ নাই। কিন্তু আপনার লেখার যুক্তিগুলো খুব ঠুনকো। ১ নম্বর পয়েন্ট পড়লে যেকোনো ঠান্ডা মাথার মানুষেরও মেজাজ গরম হয়ে যাবে।

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক

মাসুদ সজীব

নীড় সন্ধানী এর ছবি

শিরোনাম পড়ে যে আশা নিয়ে পোষ্টে ঢুকলাম তার অনেকটাই বিফলে গেল। সেনাবাহিনীর সেরকম 'অজানা' কোন কাহিনী এখানে পেলাম না। আপনি যা বলেছেন তা মনে হয় কমবেশী সবাই জানে। সেনাবাহিনীর অজানা কাহিনী যেগুলো আমরা কখনো জানি না সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো-

১) সেনাবাহিনীতে কিভাবে আন্তর্জাতিক হাটবাজার সম্পন্ন হয়, বিশেষ করে ট্যাংক কামানসহ বড় বড় জিনিসপত্রগুলো কেনার সিদ্ধান্ত গ্রহন প্রক্রিয়াটা কি, কোন পদ্ধতিতে, কোন টেন্ডারে, কার কার অনুমোদনে সিদ্ধান্ত হয় এটা আমরা জানি না। প্রতিরক্ষা বাজেট আমরা জানি, কিন্তু কিভাবে খরচ হয় আমরা জানি না। ভেবেছিলাম সেই অজানা দিকগুলো জানা যাবে।

২) সেনা বাহিনীর সিভিলিয়ান ব্যবসাপাতি কে বা কারা নিয়ন্ত্রণ করে। যেমন সেনা কল্যান সংস্থার টাকা কিভাবে যোগাড় হয়, কিভাবে বিনিয়োগ হয়, মূনাফা কারা ভোগ করে, এখানে কিভাবে ভাগবাটোয়ারা ঘটে, এই ব্যাপারগুলো একেবারেই অজানা। সেনা কল্যান সংস্থার ব্যবসা নিয়ে কোন জবাব দিহিতা আছে কিনা, এদের ব্যবসা করযুক্ত বা করমুক্ত কিনা, ঠিকমত অডিট হয় কিনা। এগুলো হতে পারতো অজানা কাহিনী।

এই বিষয়গুলো কারো জানা থাকলে আলোকপাত করতে পারেন।

জানা কাহিনীগুলো নিয়ে বিতর্ক হতে পারে, সেদিকে না গিয়ে আমি দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী সম্পর্কে একটা সংক্ষিপ্ত মূল্যায়ন করি।

সেনাবাহিনী কোন ভিনদেশী মানুষ দিয়ে তৈরী প্রতিষ্ঠান নয়। সেনাবাহিনীতে এদেশের সন্তানই কাজ করে। আমার আপনার ভাই বেরাদরই এই বাহিনী চালায়। সেনাবাহিনী আর জনগন কোন প্রতিপক্ষ নয়। এদেশে সেনাবাহিনীর সাথে জনগনের মধ্যে যে দূরত্ব সেটা তৈরী করেছে শাসকমহল। ইচ্ছাকৃতভাবেই। এই সেনাবাহিনী বৃটিশ এবং পাকিস্তান এই দুই ঔপনিবেশিক শাসকের ঐতিহ্য নিয়ে গঠিত, ওই দুই শাসকের মূল উদ্দেশ্যই ছিল দমন পীড়ন, তাদের তৈরী গালি হলো ব্লাডি সিভিলিয়ান। দুর্ভাগ্য জনকভাবে বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পরও সেনাবাহিনী পাকিস্তানী চরিত্র ত্যাগ করতে পারেনি। বাংলাদেশেও সেনাবাহিনীকে সরাসরি জনগনের প্রতিপক্ষ করে রাখা হয় দুই দশক ধরে। মুক্তিযুদ্ধে সেনাবাহিনী ও জনগণ হাতে হাত রেখে যুদ্ধ করার পরও স্বাধীন দেশে সেনাবাহিনীকে পাকিস্তান চেহারায় রূপান্তরিত করা হয়। সেনাবাহিনীতে মুক্তচিন্তার দ্বার রুদ্ধপ্রায়। দীর্ঘকাল যাবত প্রগতিশীল বইপত্রিকা নিষিদ্ধ ছিল। সংগ্রাম ইনকিলাবের অবাধ প্রবেশ হলেও সংবাদ, প্রথম আলোর মতো পত্রিকা পুরোপুরি নিষিদ্ধ ছিল। কারা এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে? সরকার নাকি সেনাবাহিনীর নিজস্ব কোন শাখা? এই বিষয়টাও অজানা কাহিনীর অন্তর্ভুক্ত হতে পারতো।
সেনাবাহিনীর অফিসার এবং সাধারণ সরকারী অফিসারের মধ্যে তুলনাটা অমূলক। দুটো দল সম্পূর্ন আলাদা। দেশ সেবা আর দেশ প্রতিরক্ষা দুটো বিষয়কে গুলিয়ে ফেললে হবে না। সেনাবাহিনীকে বাড়তি সুযোগ সুবিধা দিয়ে পুষতে হয় কারণ তারা দেশের দুঃসময়ে কাজে লাগবে। দুঃসময় বলতে যুদ্ধ বোঝানো হয়। কিন্তু এদেশে গত চল্লিশ বছর ধরে কোন যুদ্ধ নেই। ফলে রাজনৈতিক দুঃসময়(!) গুলোতে সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করেছে, ক্ষমতা দখল করেছে, এরশাদের মতো চরিত্র সৃষ্টি করেছে। বলা বাহুল্য অধিকাংশ দুঃসময় গুলো সেনাকর্তাদের সরাসরি হস্তক্ষেপেই সৃষ্টি।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনি নানা কারনে সময়ে অসময়ে বিতর্কিত হয়েছে তাদের নানাবিধ কর্মকাণ্ডের জন্য। এখন সেনাবাহিনি ঐসব বিতর্কের উর্ধে। বর্তমান সেনাবাহিনি ক্ষমতা দখল করবেনা বা কাউকে ব্লাডি সিভিলিয়ান বলে গালিও দিবেনা বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।

এতটা নিশ্চিত হলেন কি করে? এরকম কথা বলার সময় এখনো আসেনি বাংলাদেশে। তবে বিশ্বাস করতে ভালো লাগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পাকিস্তানী ভুত থেকে মুক্ত হবে একদিন!

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

এতটা নিশ্চিত হলেন কি করে? এরকম কথা বলার সময় এখনো আসেনি বাংলাদেশে। তবে বিশ্বাস করতে ভালো লাগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পাকিস্তানী ভুত থেকে মুক্ত হবে একদিন!

চলুক

লেখকের উদ্দেশ্যে আর একটু যোগ করি,
"সম্পুর্ন অরাজনৈতিক ও দেশপ্রেমিক" সেনাবাহিনীতে ব্রিগেডিয়ার (অবঃ) আব্দুল্লাহিল আমান আজমী বছরের পর বছর "One of the finest officer" তকমা লাগিয়ে চাকুরি করে গেলে ভয় পাব না কেন বলুন তো, ঘরপোড়া গরু আমরা, সিদুরে মেঘ দেখলে ডরাতেই পারি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সুনীল সাগর এর ছবি

কেন রাজাকারের ছেলে হলে সেনাবাহিনিতে ভাল অফিসার হতে পারেনা? যে দেশের এইদেশেতো রাজাকার মন্ত্রী ও আছে তাও আবার এই সরকারের আমলে।

হিমু এর ছবি

আপনার লেজ এতক্ষণে বের হয়েছে।

আপনি এবার আসুন।

অতিথি লেখক এর ছবি

হিমু দা উত্তম জাঝা!

শব্দ পথিক

ঘুমকুমার এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার উপর-নিচ সবকিছুই এখন পরিস্কার সুনীল সাগর। অনেকক্ষণ পেচাইসেন-অসাম।

শব্দ পথিক

সিপিথ্রিও এর ছবি

ধুর মিয়া আপনাকে ডিফেন্ড করসি দেখে এখন রীতিমত লজ্জা লাগতেসে। আসলেই লেজ লুকানো সোজা কাজ নয়।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

এতক্ষনে অরিন্দম কহিলা বিষাদে... ধুর্মিয়া... আগে কইলেই হয়... বেহুদা টাইম লস করিনা...

এমন "One of the finest officer" কে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়ানো সেনাবাহিনী কেম্নে "বিতর্কের উর্ধে" থাকে সেটা নিয়ে চিন্তায় পড়ে গেলাম (আপনার দৃষ্টিকোণ থেকেই) ইয়ে, মানে...

আপনার আশু আরোগ্য কামনা করছি... খুদাপেজ হাসি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সুবোধ অবোধ এর ছবি

আজমী খুব সম্ভবত third division এ পাশ করে আর্মি তে চান্স পেয়েছিল (এই মুহূর্তে রেফারেন্স খুঁজে পাচ্ছি না)
মজার ব্যাপার হল সে সোর্ড অব অনার ও পেয়েছিল!!! জিয়া'র আমলে...
বুঝেনই তো!!!

অতিথি লেখক এর ছবি

হুম, আজমী ইন্টারে তৃতীয় বিভাগ পেয়েছিল।

শব্দ পথিক

shongshaptak এর ছবি

ঢাকা সেনানিবাসের এক মসজিদের সামনের কাতার থেকে আমাদের কয়েকজনকে পেছনে ঠেলে দেয়া হয়েছিল শুধুমাত্র ব্লাডি সিভিলিয়ান হবার কারণে।তারপরেও 'ব্লাডি সিভিলিয়ান' এ আমার কিছু আসে-যাবেনা ??

সংশপ্তক

অতিথি লেখক এর ছবি

আমার মনে হয়েছে আপনার লেখাটি কিছুটা একপেশে। সেনাবাহিনীতে আমাদের সবারই পরিবারের কেউ না কেউ আছে। তারপরও, আপনি সেনাবাহিনীর প্রতি জনসাধারণের বিতৃষ্ণাকে জনগণের ঈর্ষা বলে মোটাদাগে চিহ্নিত করেছেন। অযাচিত, অহেতুক ক্ষমতা প্রদর্শনও যে সেনাবাহিনীকে অপ্রিয় করে তুলছে, সে কথাটি বলছেন না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি স্মরণীয়।

সাধারণ আমজনতার সাথে এভাবেই একটা ব্যবধান তৈরি হয়েছে সময়ে সময়ে।
এই বিষয়টা এড়িয়ে যাওয়ায়, আপনার লেখাটা একজন সিভিলিয়ানের লেখা বলে ভাবতে কষ্ট হচ্ছে।
আর, অনেক যুক্তির দুর্বলতা অনেকেই চিহ্নিত করেছেন বলে সেগুলোর পুনরাবৃত্তি করছি না।

একবার কোন এক অস্ত্র উদ্ধারের জন্য দেশব্যাপী চালনো অপারেশনের সময় রাস্তায় টিনএজ-যুবক বয়সের অনেককে লম্বা চুলের জন্য হেনস্তা করা হয়েছিল-এসব সাধারণ জনসাধারণের মনে বিতৃষ্ণার জন্ম দিয়েছে। সেনা ক্যাম্পে অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে জিজ্ঞাসাবাদে অনেক সময় নিরীহ মানুষও হেনস্তা হয়েছে।

তাদের মিশনে যাওয়া ও সেই আয় তাদের প্রাপ্য। কিন্তু, বিদেশ ঘুরে সেই টাকা খরচ করে ফেলা বা গাড়ি কিনে শেষ করে ফেলা-এটা খুবই শিশুতোষ যুক্তি দিলেন আপনি।

অফিসের জন্য সৎ, দক্ষ অফিসার লাগলে অব: সেনা কর্মকর্তা নিয়োগ করার কথা বললেন। অনেক আধা-সরকারি প্রতিষ্ঠানে তাদের বসানো হয় রিটায়ারমেন্ট প্যাকেজ এর আওতায়। এযুগে সেনা বাহিনীর সদস্যদের জিজ্ঞেস করে দেখুন, তারা তাদের উপরের লেভেলের কতজনকে সৎ বলে মনে করেন।

তবুও কিছু বিষয়ে বলি, অনেক সুবিধাই কেবল উপরের লেভেলেই সীমাবদ্ধ থাকে, অনেক কষ্ট করেই তাদের কাজ করতে হয়, এটা সত্য।

বনি এর ছবি

"তবুও কিছু বিষয়ে বলি, অনেক সুবিধাই কেবল উপরের লেভেলেই সীমাবদ্ধ থাকে, অনেক কষ্ট করেই তাদের কাজ করতে হয়, এটা সত্য"।
সহমত

পাঠক  এর ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুটবল খেলায় আসন নিয়ে ঝামেলা করে আর্মির লোক ছাত্রকে লাত্থি মেরেছিলো বলে শুনেছিলাম। ঐ ব্যাপারটা নিয়ে যদি লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, সততা ইত্যাদি বর্ণনা দিয়ে দু'এক লাইন লিখতেন, জানতে পারতাম।

সবজান্তা এর ছবি

আপনার লেখাটা পড়ে বেশ কিছুক্ষণ হাসলাম। যদি আপনার বক্তব্য সত্যি হয়, অর্থাৎ আপনি একজন 'সিভিলিয়ান', এবং (ধরে নিচ্ছি) সেনাবাহিনীর কারো প্ররোচনা ছাড়াই আপনি লেখাটা লিখেছেন- তাহলে বলতে হয় আপনি তাদের ভালোর চে মন্দ করছেন বেশি।

মোটামুটি আপনার প্রতিটা যুক্তিতেই বেশ কিছু খামতি আছে। কিছু ইতমধ্যেই কেউ কেউ বলেছেন, আরো বেশ কিছু বাকি আছে। অনুরোধ থাকলো, এমন জোরের সাথে কোনো দাবি করার আগে নিজের যুক্তির লেভেলটা একটু উন্নত করে নিবেন। নাহলে আর কিছু না হোক, যাদের ডিফেন্ড করছেন, তাদেরও বিব্রত হতে হয়।

হাসিব এর ছবি
অতিথি লেখক এর ছবি

উপরে আপনাকে একটা প্রশ্ন করেছিলাম। উত্তর পাই নি। বিভিন্ন জনের প্রশ্নের উত্তরে আপনার যে যুক্তির নমুনা দেখলাম, তাতে কোন সদুত্তর আশা করাও বৃথা মনে হচ্ছে!
তবুও আরেকটা প্রশ্ন করি, সোজাসাপটা উত্তর দেন - একটা ছেলে সেনা অফিসার হতে চায় কি কারণে?? দেশ সেবার মহান ব্রত নিয়ে? নাকি জ্বলজ্বলে একটা ক্যারিয়ার এর আশায়???

সুবোধ অবোধ

সুনীল সাগর এর ছবি

এটা আপেক্ষিক ব্যাপার। একেকজনের একেক এইম থাকে। তবে দেশ সেবার চাইতে ক্যারিয়ারটাই বেশী মূখ্য। সেনাবিহিনতে যোগদান করার পরে তাদের মধ্যে যে দেশপ্রেম ইঞ্জেক্ট করা হয়না তা কিন্তু নয়। আপনার আর কি প্রশ্ন ছিল?

সুবোধ অবোধ এর ছবি

যদি কেউ ক্যারিয়ারের উদ্দেশ্যে নিজের আগ্রহে সেনাবাহিনী তে যায় তাহলে এত কষ্ট অত কষ্ট বলে লাভ কি??
৭ নং কমেন্টে প্রশ্ন করেছিলাম।

সুনীল সাগর এর ছবি

না আমি আর সিপিথ্রিও একই ব্যাক্তি নই। সেনাকর্মকর্তা আর সরকারী আমলার স্ট্যাটাসযে আমাদের সরকার এক করে দিয়েছে তাই তুলনাটা না করে উপায় কি বলেন।

ফেরদৌস এর ছবি

১) এখানে লেখক কে আর বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিচ্ছেন কে তা দেখে মজাও পাচ্ছি আবার অবাকও হচ্ছি। লেখকের নাম দেখছি সুনীল সাগর আর প্রায় প্রশ্নের ডিফেন্ড করছেন জনৈক সিপিথ্রিও। দু'জনেই কি এক ব্যক্তি? আর মোটামুটি লেখার ধরণ দেখে বোঝা যায় লেখক সেনা বাহিনীর সাথে সংশ্লিষ্ট। সেনা বাহিনীতে চাকরী করি এটা পাব্লিকলি বলার মধ্যে কোন গ্লানি আছে বলে মনে করেন নাকি সেনাসদস্যরা?

২) একজন সেনা কর্মকর্তা আর একজন সরকারী আমলার মধ্যে কেন তুলনা করা হবে এটা বুঝতে পারি না। একজন সদ্য কৈশোর উত্তীর্ণ ছেলে/মেয়ে কয়েক হাজার পরীক্ষার্থীর মধ্যে লিখিত পরীক্ষা দিয়ে এবং পরবর্তীতে দৌড়ঝাঁপ খেলায় জিতে গিয়ে মিলিটারি একাডেমীতে ঢুকে যায়। তারপর আরও দু'বছরের বিভিন্ন রকম দৌড়-ঝাঁপ, শারীরিক প্রশিক্ষণ শেষে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি পাশের সার্টিফিকেট নিয়ে সে বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণীর সরকারী কর্মকর্তা হয়ে যায়। ততদিনে তার বয়স বড়জোর ২২ কি ২৩। আর একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক কয়েক বছর ধরে কঠোর পরিশ্রম করে পড়ালেখার পর লক্ষ লক্ষ পরীক্ষার্থীর সাথে দু'বার লিখিত আর একবার মৌখিক পরীক্ষা দিয়ে প্রথম শ্রেণীর সরকারী কর্মকর্তা হবার যোগ্যতা অর্জন লাভ করে।অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তার বয়স ততদিনে ২৭-২৯ এ গিয়ে দাঁড়ায়। একজন নবিশ সিভিল কর্মকর্তার যে অভিজ্ঞতা, প্রজ্ঞা, বৈশ্বিক জ্ঞান থাকে তার সাথে একজন সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট এর তুলনাটা চরম হাস্যকর।আরও হাস্যকর একজন এস এস সি বা তারও কম পড়াশোনা করা ওয়ারেন্ট অফিসার বা সার্জেন্ট এর সাথে যেকোন নন-গ্যাজেটেড সিভিল সরকারী কর্মকর্তার তুলনা দেয়াটা। একটা ব্যারাকের কয়েক'শ অল্পশিক্ষিত, সদা-আজ্ঞাবাহী সৈনিককে তুই তোকারি করে খবরদারি করে কাজ আদায় করিয়ে নেয়া আর একটা দেশের প্রশাসন চালানো যে এক কথা নয় সেটা বুঝতে না পারলে কিছু বলার নেই।

৩) বৈদেশিক মিশন থেকে সেনাবাহিনী যে টাকাটা উপার্জন করে আনে সেটা কিন্তু বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। এটা কেউ উল্লেখ করলেন না এখানে। টাকাটা বাংলাদেশেই আসছে কিন্তু। আর এই বিপদসংকুল মিশনগুলোতে অনেক সেনা সদস্য প্রতি বছর প্রাণও হারান।

৪) মোদ্দা কথা, সেনাবাহিনী একটা সেবাদানকারী সংস্থা। দেশকে রক্ষা করা যার অন্যতম দায়িত্ব, দেশ শাসন করা নয়, জনগনকে শিক্ষা দেয়া তাদের দায়িত্ব বা কর্তব্য কোনটাই নয়।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

৪ নাম্বার মোদ্দা কথাটা আমরা জানি, উনারা জানেন তো? চিন্তিত

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

মন্তব্য নিস্প্রয়োজন!!!!

____________________________

অতিথি লেখক এর ছবি

স্বাধীন বাংলাদেশে এযাবত ৮ জন সাবেক সেনাপ্রধাণ প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করিয়াছেন !
দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের জন্মই হইয়াছে ক্যান্টনমেন্টে!

আমারে 'ভরসা' দিতে আইসেন না......বুদ্ধি আমার হাটুঁতে না .....

অতিথি লেখক এর ছবি

জনগোষ্টির এই অতিরঞ্জিত অবহেলিত অতিট্যালেন্ট(লেখকের ভাষায়) অংশটি বাকি অংশ "ব্লাডি সিভিলিয়ান" দের সিভিলিয়ান করার অভিপ্রায়ে নিজেদের অতি মূল্যায়ন করতে যেয়ে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সম্ভাবনাময় অনেক দেশকে তাদের কোলনিয়াল বাপদের সন্তুষ্ট করতে এমন বাঁশ দিয়েছে যে এই সভ্যতার সময়সূচীতে তাদের আর মেরুদণ্ড সোজা করে দাড়াতে হবে না ।

লেগে থাকেন ভাই আপনার হবে ।
শাকিল অরিত

ধুসর জলছবি এর ছবি

আপনার লেখাটা পড়ে কিছুক্ষন হাসলাম। আপনি সেনাবাহিনীর সদস্য না বলে দাবি করছেন। আমারও তাই ধারনা। কারণ আমি যতটুকু জানি চাকরিরত অবস্থায় কোথাও কোন বিবৃতি, লেখা কোন কিছু দিতে চাইলে তাদের সেটা নিয়ে অনেক মাথা ঘামানোর কথা। হাস্যকর যুক্তি সম্পর্কিত কোন স্টেটমেন্ট তাদের সাধারনত দেয়ার কথা না যদি না কেউ খুব ডেস্পারেট হয়। কারণ তাতে তাদের নিজেদেরই ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

যাই হোক, আপনার যুক্তিগুলো কোনটাই খুব স্ট্রং না। আমি শিরোনাম দেখে যেই আশা নিয়ে ঢুকেছি তাতে একটু হতাশ হলাম।

আমি জন্মসূত্রে এবং বিবাহ সুত্রে সামরিক বাহিনীর সাথে সম্পর্কযুক্ত। তাই অনেক কিছুই কাছে থেকে দেখেছি। অনেক অফিসার দেখেছি যাদের ভদ্রতাবোধ, ভাল আচরন, দেশপ্রেম, পড়াশোনার গভীরতা যে কোন মানুষকে মুগ্ধ করবে। অনেককে দেখেছি যাদের আচরণ শুধু সাধারন নাগরিকদের প্রতি না, নিজেদের অন্য সদস্যদের প্রতিও ভদ্র না। এরা মানুষকে মূল্যায়ন করতে জানে না। এরা অবশ্যই ব্লাডি সিভিলিয়ান এই মনস্তত্তে ভুগে, যেমন ভুগে ডাক্তার রা। ডাক্তার দের অনেক বড় একটা অংশ নিজেদের প্রভু ভাবে। এই কথাগুলো বলার কারণ হল আমার ধারনা ( ভুল ও হতে পারে) ভাল মন্দ মানুষ সব পেশাতেই আছে। আমি ডাক্তার বলে নিজের পেশার উদাহরণ দিলাম। তাই ব্যক্তিগত ভাবে পেশা দিয়ে আমি মানুষ বিচার করি না, বা কারও সম্পর্কে ঢালাও ভাবে কোন ধারনা পোষণ করি না। কিন্তু পাশাপাশি এটাও সত্যি সামরিক বাহিনী, ডাক্তার, এদের নিজেদের রেপুটেশন এর জন্য এদের নিজেদের অবশ্যই কিছু দায় আছে।
এ দেশের সামরিক বাহিনী মুক্তিযুদ্ধ করেছে সাধারন মানুষের পাশে কাধে কাধ মিলিয়ে। তারপরও তাদের এমন রেপুটেশন কেন হল, সেটা এখন সময় হয়েছে তাদের নিজেদেরই চিন্তা করে বের করা। সাফাই না গেয়ে বরং সমস্যা গুলো খুঁজে বের করে সমাধান করা উচিত। কিন্তু যারা মাথায় বসে তিন বাহিনী চালায় তাদের কি আদৌ এসব নিয়ে কোন মাথা ব্যথা আছে, আমার তো মনে হয় না । মাথার কথা বললাম যেহেতু চেইন অফ কমান্ড বলে একটা ব্যপার সামরিক বাহিনীতে আছে তাই বদলের চিন্তাটা মাথা থেকেই শুরু করতে হবে।

দুই যুগের সেনা শাসন এর কালে সামরিক বাহিনীকে ফান্ডামেন্টালিস্ট বানানোর জন্য যাবতীয় সব প্রক্রিয়াই চালু ছিল। যারা মত অনুযায়ী চলতে চায় নি, টিকতে পারেনি। তার বদলে ব্রিগেডিয়ার (অবঃ) আব্দুল্লাহিল আমান আজমী সব পরীক্ষায় প্রথম হয়ে টিকে ছিলেন। আর কিছুদিন টিকতে পারলে হয়ত চিফ হয়েও যেতেন , সবই উপর আল্লাহর ইচ্ছে।
সাধারন মানুষের চেয়ে যেহেতু সামরিক বাহিনী একটু বেশী ক্ষমতাবান ( না হলে কথায় কথায় ক্ষমতায় আসতে পারত না ) তাই তাদের ভাল হওয়ার দায়টাও সবার চাইতে বেশী বলে বিশ্বাস করি। কারণ তারা খারাপ হলে তার দুর্ভোগ টাও দেশের জন্য বেশী। আপনি যেভাবে সেনাবাহিনী নিয়ে নিশ্চিত ভাবে বললেন তারা আর ক্ষমতা দখল করবে না এত নিশ্চিত ভাবে বোধ হয় চিফ অফ আর্মি স্টাফ ও বলতে পারবেন না। কারণ তার ইচ্ছে না হলে তার পরের কারও ইচ্ছে থাকতে পারে। এখন যারা মাথায় আছে তারা তো জিয়া, এরশাদের আমলেই বাহিনীতে জয়েন করেছে, সেই সময়েরই প্রডাক্ট। এমন কথা বলার সময় এখনও আসেনি বলেই মনে হয়।
সামরিক বাহিনী সম্পর্কে দেশের মানুষের মনোভাব বদলাতে হলে, তাদের নিজেদেরই সেটা বদলাতে হবে। আগের কয়েক যুগের ইতিহাস মানুষকে ভুলিয়ে দিতে চাইলে ভবিষ্যতে কয়েক যুগ ভাল ইতিহাস গড়তে হবে। তখন এমনি সবাই ধারনা বদলে ফেলবে। এভাবে হাস্যকর যুক্তি দিয়ে ব্লগে লিখে এই মনোভাব বদলান যাবে না।
আপনি হয়ত সৎ মনোভাব নিয়েই প্রচেষ্টা চালিয়েছেন, কিন্তু সেক্ষেত্রে আরও যুক্তিবাদী হওয়া দরকার বলে মনে করি। ভাল থাকুন।

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক

শব্দ পথিক

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?