প্রথম আলো ও নির্বাচনী সাংবাদিকতা: নিরপেক্ষতা বনাম এজেন্ডার ফারাক

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: মঙ্গল, ০৭/০১/২০১৪ - ১০:৫০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ভূমিকা:

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরদিন জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো’র অনলাইন ও প্রিন্ট সংস্করণের কয়েকটি ছবি, সংবাদ ও শিরোনাম ফেসবুকসহ সাইবার পরিসরে আলোচনা তুলেছে। ‘হাঁটুপানির জলদস্যু’ ফেসবুক আইডি থেকে ‘ভোটারসারিতে অপেক্ষমান হিন্দুদের ছবি ছাপিয়ে সারা দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর বিম্পিজামাতের আক্রমণকে উসকানি দেওয়ার জন্য দৈনিক প্রথম আলোর ফটোসাংবাদিক সাজিদ হোসেন, সম্পাদক মতিউর রহমান ও প্রকাশকের বিচার চাই। অবিলম্বে তাদের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের আওতায় এনে গ্রেফতার করা হোক।’

নির্বাচনে প্রথম আলোর ভূমিকা প্রসঙ্গে এই স্ট্যাটাসটি আমাদের বেশ মনযোগবিদ্ধ হয়েছে। এ ছাড়াও রায়হান রশীদ, অভিজিৎ রায়সহ বহু ব্লগার, ফেসবুকারের মতামত আমরা গত দুই দিন ধরে খেয়াল করছি। এসব আলোচনার পাশাপাশি পত্রিকাটিকে সমালোচনা ও নিন্দা করার ইভেন্ট দেখতে পাচ্ছি। আমরা এই এই পরিস্থিতি সৃষ্টির কারণ অনুসন্ধান করেছি। নির্বাচনের দিন (৫ই জানুয়ারি, ২০১৪ খ্রিস্টাব্দ) ও পরদিন (৬ই জানুয়ারি, ২০১৪ খ্রিস্টাব্দ); এই দুই দিনের প্রথম আলোর অবস্থানটা জেনে নেয়ার চেষ্টা করেছি।

কেন এই লেখা?

আমরা দু’জনেই পেশায় শিক্ষার্থী, সাংবাদিক ও সাংবাদিকতা বিদ্যায়তনের শিক্ষক। আমরা প্রথম আলোও পাঠক। এসব কারণে, প্রথম আলোর অবস্থানটি বুঝে নেয়ার জন্য এই চেষ্টা। সচলায়তন ব্লগের একজন নিয়মিত ব্লগার এই লেখাটি (ফেসবুকে আমাদের কাথাবাত্রা খেয়াল করে ভাবনাটি গুছিয়ে, লিখিতভাবে প্রকাশের জন্য) লিখতে বিশেষ উৎসাহ দিয়েছেন। তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা। আমরা মনে করি, 'নির্বাচনে প্রথম আলোর ভূমিকা' নিয়ে একটি সিরিয়াস কাজ হওয়া উচিত। নির্বাচনী সাংবাদিকতার নামে এই পত্রিকাটি যেসব শিরোনাম ও ছবি প্রকাশ করেছে, প্রথম ও শেষ পাতায় যেভাবে সংবাদ বিন্যাস করেছে, সম্পাদকীয় লিখেছে, সম্পাদকীয় পাতায় মতামত প্রকাশ করেছে এবং নির্বাচন ইস্যুতে সম্পাদকীয় অবস্থান নিয়েছে; তা বিশ্লেষণপূর্বক একটি ভালো মানের একাডেমিক কাজ দরকার। এই কাজটি ‘হয়তো’ সেইরকম একটি কাজের সূচনা। যদিও আমাদের ব্যক্তিগত ব্যস্ততা ও পেশাগত ব্যস্ততার কারণে এই পর্যবেক্ষণটি তাড়াহুড়ো দোষে দুষ্ট। ভবিষ্যতে এই ইস্যুতে আরো একটি ভালো ‘লেখা’র মাধ্যমে বাংলাদেশে নির্বাচনে প্রথম আলোর অবস্থান প্রসঙ্গে সময় নিয়ে ও গুছিয়ে লিখতে চাই।

‘না ভাবিয়া লিখিলে জার্নালিজম, ভাবিয়া লিখিলে সাহিত্য’:

দেশের বিজনেস জার্নালিজমের খ্যাতনামা প্রতিবেদক ও প্রথম আলোর অন্যতম বার্তা সম্পাদক, ব্লগার শওকত হোসেন মাসুমের একটি লেখার সূত্র ধরেই আমরা লেখা শুরু করলাম। ‘আমার বই: কেলেঙ্কারির অর্থনীতি’ শীর্ষক নিজের বই পরিচিতে তিনি লিখছেন- ‘‘আমি লেখক না, রিপোর্টার। সম্ভবত আমার কথা ভেবেই প্রমথনাথ বিশী বলেছিলেন, ‘না ভাবিয়া লিখিলে জার্নালিজম, ভাবিয়া লিখিলে সাহিত্য।’ আবার ড. আকবর আলি খানের বইয়ে আছে, ‘সাংবাদিক হচ্ছেন এমন একজন ব্যক্তি যিনি নিজে যা বোঝেন না তা সবাইকে বুঝিয়ে বেড়ান।’’

নির্বাচনোত্তর সংখ্যালঘু সহিংসতায় প্রথম আলোতে প্রকাশিত এই ছবিকে দায়ী করে ফেসবুকে রায়হান রশীদ বলেন-‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা বা মিডিয়ার স্বাধীনতা যে কোন গণতান্ত্রিক সমাজের মূল স্তম্ভগুলোর একটি। কিন্তু এটা কোনো একচেটিয়া লাইসেন্স না, এটা কোন এবসোলিউটও না। আমরা যেন সেটা ভুলে না যাই। সারাজীবন এই পত্রিকাটি অন্যের দায়বদ্ধতা আর জবাবদিহিতা নিয়ে কথা বলেছে। এবার পত্রিকাটির নিজের জবাবদিহির সময় এসেছে।’ কিন্তু, সেই শওকত হোসেন মাসুম ফেসবুকে গতকাল বললেন- ‘অনলাইনে আমরা যত ছবি তোলা হয় সব দিয়ে দেই, সেরকম একটি ছবি সম্ভবত এটি। অসংখ্য ভোট কেন্দ্রের ছবি সেখানে আছে। কিন্তু এতেই সংখ্যালঘুরা উসকানি পেয়েছে?’ বুঝতে বাকি থাকে না, প্রমথনাথবাবুর কথাটিই ঠিক! প্রথম আলোর বার্তা সম্পাদক মহোদয় ফেসবুকে দাবি করছেন, সংখ্যালঘুরা ভোট দিচ্ছেন এমন ছবি প্রথম আলো নাকি ছাপায়নি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে- প্রথম আলো দুইটা ছবি ছাপিয়েছে যেখানে স্পষ্টত দেখা যাচ্ছে চট্টগ্রাম ও সিলেটের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ভোট দিতে যাচ্ছে।

ছবি শুধু ছবি নয়:

যা ছবি তুলে আনা হয় সব অনলাইনে প্রকাশ করে দেয়াটা দায়িত্বশীলতা নয়। প্রশ্নটা সেন্সরশিপের, সম্পাদনারও। আমরা মনে করি, সেল্পসেন্সরশিপ, সম্পাদনা, প্রকাশিতব্য ছবির সম্ভাব্য সামাজিক প্রতিক্রিয়া বুঝেই কোন ছবি প্রকাশ করা উচিত বার্তা বিভাগের। দুর্যোগকালীন সময়ে, রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় অবশ্যই দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার অংশ এইরকম ভাবনা ভাবে। যুদ্ধ, হামলা, খুন, সহিংসতার কত আকারে এবং প্রকারের ছবি যে সংবাদকক্ষে চলে আসে তার ইয়ত্তা নাই। বীভৎস, হাড়কাঁপানো, অবিশ্বাস্য, মর্মস্পশী ছবিও সংবাদপত্রের নিউজম্যানেজমেন্ট রুমে চলে আসে। কিন্তু বার্তা সম্পাদক, সহসম্পাদক- সিনিয়র নিউজ ব্যবস্থাপকরা মিলে বেশ কয়েকটি অনুমিত শর্ত মাথায় রেখেই বিচার-বিশ্লেষণের পর অনেক ছবি ছাপানো যায় না। একে একাডেমিক আলোচনায় বলা হয় সাংবাদিকতা দায়িত্বশীলতা। আমাদের অনেক ‘ফাটাফাটি ছবি’ ছাপানো থেকে বিরত থাকতে হয় কেবলমাত্র শান্তিরক্ষা ও দাঙ্গার প্রসার ‘আর বাড়তে না দেয়া’র জন্য। দৈনিক আজকের কাগজ ভারতের বাবরি মসজিদের ওপর দাঁড়িয়ে জঙ্গি হিন্দু মৌলবাদীরা মসজিদ ভাঙতে-ভাঙতে যে-উল্লাস করেছিল, সেটা হাতে পেয়েও তাৎক্ষণিক প্রকাশ করেনি। তা কেবল কেবল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করার আন্তরিক প্রচেষ্টার নমুনা হয়েই উদাহরণ হয়ে থাকলো।
কিন্তু, প্রথম আলো বার্তা বিভাগের কেউ কেউ ফেসবুকে দাবি করছেন, সংখ্যালঘুরা ভোট দিচ্ছেন এমন ছবি প্রথম আলো নাকি ছাপায়নি। কিন্তু প্রথম আলো দুইটা ছবি ছাপিয়েছে যেখানে স্পষ্টত দেখা যাচ্ছে চট্টগ্রাম ও সিলেটের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ভোট দিতে যাচ্ছে। প্রকাশিত ছবির ম্যানিপুলেশন নিয়েও কোন কোন ব্লগার এই সচলায়তেই প্রশ্ন তুলেছেন। এই প্রশ্ন বার্তা সম্পাদককে ফেসবুকে করা হলেও তিনি এড়িয়ে গেছেন।

প্রথম আলো’র পরামর্শকের কথার মূল্য থাকলো কই?

নির্বাচনী সাংবাদিকতায় ছবি প্রকাশের ক্ষেত্রে সাবধানতার শেষ নেই। এক্ষেত্রে আমরা প্রথম আলো কৃর্তপক্ষেরই একজন পরামর্শকের বক্তব্যকে যাচাই করে দেখতে পারি। ‘পত্রিকায় নির্বাচনী ফিচার’ এক নিবন্ধে প্রথম আলোর পরামর্শক ও লেখক-গবেষক কিউ এ তাহামিনা লিখেছেন ‘ফিচার ছবি এবং কার্টুন নির্বাচনী রিপোটিং এর গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। ভালো ছবি ও কার্টুন পত্রিকার চেহারা ও প্রতিপাদ্য দুইয়েরই শ্রীবৃদ্ধি করে। সম্পাদককে রিপোর্টার, ফিচার লেখকেদের একটা ভালো দল দাঁড় করাতে হবে। অন্য পত্রিকা কে, কীভাবে এগুচ্ছে সেদিকেও চোখ রাখা ভালো।’ তাহলে কী দাঁড়ালো? সংখ্যালঘুর ছবি প্রকাশ করে পরদিন সংখ্যালঘুর বাড়িতে হামলা করা হলো, এতে কি পত্রিকায় শ্রীবৃদ্ধি হয়? আমরা বুঝলাম- সম্পাদক মহাশয় একটি ভালো দল দাড় করিয়েছেন শুধু এজেন্ডা সাংবাদিকতাকে অনুসরণ করার জন্য, ভোটের প্রকৃত চিত্র এতে উঠে আসেনি। অন্য ভাতৃপ্রতিম ও প্রতিযোগি পত্রিকা কে, কীভাবে এগুচ্ছে সেদিকেও চোখ রাখলেন না তারা।

সংখ্যালঘুদের ছবি প্রকাশ করে পরদিন সংখ্যালঘুদের উপর হামলার দায় নেয়া উচিত কি? বার্তা সম্পাদক শওকত হোসেন মাসুম প্রকাশ্যে বলেছেন ’যা ছবি তোলা হয়, সব অনলাইনে প্রকাশ করি’- ছবি যাচাই-বাছাই-সম্পাদনার কাজে যদি এতটুকু উদারনীতি/উদাসীনতা পত্রিকা কর্তৃপক্ষের থাকা উচিত কি? এসব ঔচিত্যের জবাব দেয়া উচিত প্রথম আলো কর্তৃপক্ষের। পাঠক হিসেবে এই প্রশ্ন তোলা আমাদের দায়িত্ব বলে মনে করি।

মধ্যরাতের সংস্করণে কেন প্রধান শিরোনামের এত বড় পরিবর্তন?

আমরা সাংবাদিকতার সাথে যুক্তরা সবাই জানি, সংবাদপত্রের দুটি সংস্করণ থাকে। একটি প্রথম সংস্করণ (মফস্বলের পাঠকদের জন্য এই সংস্করণ), অপরটি নগর (ঢাকা অঞ্চলের জন্য ভোর রাতে প্রকাশিত হয়) সংস্করণ। ঘটনার পরিবর্তনের কারণে এই সংস্করণ পরিবর্তিত হয়। অঞ্চলভেদে, সংবাদ গুরুত্বভেদেও সংস্করণে চেঞ্জ আসে। কিন্তু দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরদিন প্রথম আলো’র দুই সংস্করণে সম্পূর্ণ পৃথক দুইটি শিরোনাম আমরা পেলাম। বৃহত্তর চট্টগ্রাম সংস্করণে প্রথম আলো'র প্রধান শিরোনাম ছিল 'আরেকটি একতরফা নির্বাচন'। আর, নগর সংস্করণের প্রধান শিরোনাম ছিল- 'জাল ভোট কলঙ্কিত নির্বাচন' ।

নগর সংস্করণটিই ইন্টারনেট এডিশনে এখন পর্যন্ত বিদ্যমান। আমাদের বিনীত প্রশ্ন, মধ্যরাতেই প্রথম আলোর এই সংস্করণ পরিবর্তন হলো কোন ইঙ্গিতে? প্রথম আলোর সংস্করণে ‘একতরফা নির্বাচন’ কেনই বা পরিণত হলো ‘জাল ভোটের কলঙ্কিত নির্বাচনে’? ধরলাম, জালভোটের নির্বাচন কলঙ্কিতই হয়ে থাকলো, কিন্তু আমাদের মনে এই প্রশ্নটিও উঁকি দেয় যে, মধ্যরাতে দুই সংস্করণের এই তফাতের পেছনে কোন বিশেষ মহলের অনুরোধ, নির্দেশ বা আদেশ ছিল কিনা। ‘একতরফা’ নির্বাচন আর ‘কলঙ্কিত’ নির্বাচনের মধ্যে প্রথম আলোর বার্তা বিভাগ কোন পার্থক্য না পেলেও আমরা আকাশ-পাতাল পার্থক্য দেখি। কারণ, বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পাঠককে প্রথম আলোর বার্তা বিভাগ প্রথমেই জানিয়েছেন এই নির্বাচনটি ‘একতরফা’। কিন্তু বার্তা বিভাগ তাতেই সন্তুষ্ট নয়, তারা সারা বিশ্ব, সারা ঢাকা শহরের মানুষকে জানলো হলো এই নির্বাচন ‘কলঙ্কিত’। সংবাদের বডিতে কোন আপডেট, বড় পরিবর্তন না এনে শিরোনামের এমন বাহারি প্রদর্শনীর মাধ্যমে পত্রিকা কর্তৃপক্ষের ‘চেষ্টা’টি আমাদের যথেষ্ট কৌতুহলী করছে।

আঞ্চলিক প্রকাশনাটি কী বলছে?

জাতীয় পত্রিকার নগর সংস্করণ ও আঞ্চলিক সংস্করণের এই পার্থক্যের পর আমরা চোখ ফেরাতে পারি প্রথম আলোর আঞ্চলিক প্রকাশনা ‌‘আলোকিত চট্টগ্রাম’এর দিকে। দেখুন নির্বাচনের দিন এই পত্রিকার সংহিসতা, ভয়, দুশ্চিন্তা ছাড়া পাঠককে আর কিছুই দিতে পারলো না। বৃহত্তর চট্টগ্রামের জন্য আঞ্চলিক প্রকাশনা ‘আলোকিত চট্টগ্রাম’র (৫ই জানুয়ারি, ভোটের দিন) প্রথম পাতাজুড়ে প্রধান শিরোনাম ছিল ‘ভোটারদের মনে শঙ্কা, উৎকণ্ঠা’। এরপর দ্বিতীয় প্রধান খবর ‘চট্টগ্রামে এক বছরে ৭৬ খুন’। খুন-সহিংসতা-শঙ্কা ছাড়া প্রথম আলো কিছুই দিবে না, এটা আমাদের অনুমেয়। কারণ এই পত্রিকার সম্পাদকীয় অবস্থানই ছিল ‘নির্বাচন পেছানো’ (দ্রষ্টব্য সেদিনকার সম্পাদকীয়)। সমাজে উৎকণ্ঠা-শঙ্কা থাকলে পত্রিকায় তা ছাপানো যায়। কিন্তু নির্বাচনী সাংবাদিকতায় তা পরিপূর্ণ হয় না। কারণ, এই ধরণের সংবাদ বিন্যাস ও এজেন্ডা সেটিং জার্নালিজমে ভোটারদের আরো আতঙ্কগ্রস্থ করে তোলে।

তাহলে দেখি, সমকালের আঞ্চলিক পাতাটি কী বলছে। সমকালের আঞ্চলিক প্রকাশনা ‘প্রিয় চট্টগ্রাম’র (৫ই জানুয়ারি, ভোটের দিন) প্রথম পাতায় আছে সাতটি সংবাদ। ক্রমান্বয়ে শিরোনামগুলো দেয়া হলো-

পটিয়া: নৌকা নাকি নাঙ্গল
বন্দর-পতেঙ্গা: চাল ডাল তেল দিয়ে ফুরফুরে লতিফ
সাতকানিয়া-লোহাগড়া: কার পক্ষে মমিনুল
বাঁশখালী: জাফরুলের চেয়ারে বসছেন কে
কোতোয়ালী-বাকলিয়া: বিএসসির হাতেই ‘তুরুপ’
রাঙ্গামাটি: শেষ হাসি কার
বান্দরবান: বীর বাহাদুরের বিজয়ে বাধা বিদ্রোহী প্রার্থী
তার মানে, সমকালের প্রিয় চট্টগ্রামের প্রথম পাতায় একনজের সারা বৃহত্তর চট্টগ্রামের ভোটের চিত্র, সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং ভোটের দিন জনমনের আগ্রহকে খুঁজে পাওয়া যায়। পাঠকের অনুমিত আগ্রহকে আমলে নিয়ে সমকাল সংবাদ প্রকাশ করেছে, সমকালের সাংবাদিকতা কোন বিশেষ উদ্দেশ্যকে মাথায় রেখে হয়নি বলে আমাদের অনুমান। শুধু পাঠক বা ভোটারের অনুমিত আগ্রহই নয়, পাঠকের প্রকৃত আগ্রহই ছিল সমকালের এইসব সংবাদ। তা না হলে চট্টগ্রামেই কেন দেশের সবচেয়ে বেশি ভোট পড়বে? প্রথম আলোর সংবাদ বিন্যাসে ভোটকে আতঙ্ক ও শংকার মধ্যে উপস্থাপন করা হলেও সমকাল পাঠকের মেজাজ বুঝতে পেরে যথাযথ সংবাদ বিন্যাস করেছে বলে আমরা মনে করি। চট্টগ্রামে এত ভোট কেন? সমকালের সংবাদগুলো সত্য হলো কেন? চট্টগ্রামে সহিংসতা-শঙ্কা ছিল না কেন? এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার দায় অনুসন্ধানী সাংবাদিক ও সমাজবিজ্ঞানীদের। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না, প্রধানমন্ত্রী সর্বশেষ চট্টগ্রামে ভাষণে বলেছেন- ‘টুঙ্গিপাড়ার চেয়ে বেশি এসেছি চট্টগ্রামে, ভোট চাই’!

নির্বাচনী সংহিসতা কাকে বলে?

ভোটের দিন প্রথম আলোর সংবাদ বিন্যাস যে ভোটারদের আরো আতঙ্কগ্রস্থ করে নি তার নিশ্চয়তা কতটুকু? ৫ তারিখের প্রথম পাতায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে যার শিরোনাম শুধু ‘একতরফা’ নয় ‘প্রাণঘাতী’ নির্বাচন’। ভোটের দিন প্রথম পাতায় তিন কলামের এই নিউজের মূল বিষয়- নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর গত ৪০ দিনে সারা দেশে প্রাণ হারিয়েছেন ১২৩জন। আমরা গভীর বিষ্ময় ও অবাক হয়ে খেয়াল করলাম, নির্বাচনের দিন এই শিরোনামের সংবাদ কতটুকু গ্রহণযোগ্য? ১৩ই ডিসেম্বর রাতে কাদের মোল্লার ফাঁসি হওয়ার জের ধরে যারা সহিংসতায় মারা গেলো, তারাও কি এই নির্বাচনী সহিংসতার অংশ? তফসিল ঘোষণার পর সহিংসতা-খুন যা হয়েছে তার বেশিরভাগ হয়েছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার-রায় প্রকাশ-রায় কার্যকরের জের ধরে। যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসির জেরে সহিংসতাকে নির্বাচনী সহিংসতার মোড়কে উপস্থাপন করে প্রথম আলো কার্যত নির্বাচনকেই কি প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করেনি?

এজেন্ডা সেটিং জার্নালিজম?

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের শুরু থেকেই প্রথম আলো এ নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘এজেন্ডা সেটিং তত্ত্ব’র সার্থক প্রমাণ দেখিয়েছে। শুধু ৫ তারিখের পত্রিকার দিকে তাকালেই দেখবো আতঙ্কের নির্বাচন আজ প্রধান শিরোনাম। এমনকি তারা নিজেদের ভূমিকারও পরিবর্তন করেছে। যেই প্রথম আলো ১/১১ এর একনিষ্ঠ সমর্থক ছিলো বলে আমাদের অনুমান, সেই পত্রিকাতেই এসেছে “কিন্তু এক-এগারোর পটপরিবর্তনে তাদের সেই চেষ্টা ভেস্তে যায়, ফরে উৎসবমুখর এক নির্বাচনের মাধ্যমে দুই বছরের সেনাসমর্থিত অস্বাভাবিক সরকার পেরিয়ে গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ”

৫ জানুয়ারি তারিখের প্রথম আলোতে ১৪ পাতার পুরোটাই ভোট নিয়ে সাজানো; আর পুরো পাতাটিতেই এসেছে নির্বাচনের উত্তাপ নেই এমন একটি তথ্য। নির্বাচনের আগে যদি খুব বেশি এরকম তথ্য পাওয়া যেত তাহলে প্রথম আলোর এরকম একটা ভূমিকা মানা যেত, কিন্তু ঠিক নির্বাচনের মুহূর্তে এসে এভাবে বলা কতটা গ্রহণযোগ্য? কেন তাদের ভূমিকায় এতটা পরিবর্তন? এর মধ্যে কি বিশেষ কোন ইন্ধন আছে। এমন নয় যে তাদের সব তথ্যই ভিত্তিহীন কিন্তু কী এমন এজেন্ডা তাদের হাতে এলো যার কারণে সবকিছুকেই পরিবর্তন করে ফেলতে হলো। ৫ জানুয়ারি তারিখের প্রথম আলোর চতুর্থ পাতায় এক কলামের বক্স স্টোরি ভোটকেন্দ্রে মল ঢেলে দিলো বিরোধীরা এরকম একটি স্থুল সংবাদকে ভালো (!) ট্রিটমেন্টই দিয়েছে প্রথম সারির পত্রিকাটি। প্রার্থীরা আয়কর জমা দেননি কিংবা আয়কর হিসাব জমা দেন নি- এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা তো নির্বাচনের আগেও বিশদভাবে করা যেত, কিন্তু কেন শুধুমাত্র ভোটের দিনে এগুলো নিয়ে এত বেশি আলোচনা? আমাদের বিনীত জিজ্ঞাসা, প্রথম আলো নিজেকে নিরপেক্ষ প্রমাণ করতে গিয়ে কি বিতর্ক আর সহিংসতাকে উসকে দিলো না? ৬ জানুয়ারি তারিখের পত্রিকার শিরোনাম ছিলো জাল ভোট, কলঙ্কিত নির্বাচন। সংবাদভাষ্যে প্রকাশ “সরকারের মুখে সন্তুষ্টি, ভেতরে হতাশা”, তবু কেন্দ্র দখল ব্যালট ছিনতাই। যে ছবিগুলো প্রথম পাতায় ব্যবহৃত হয়েছে তা নিয়ে আপত্তি উঠার অনেক কারণ আছে। এভাবে ভোট দেয়ার সময় কেউ ধরা পড়লে তার তো হাত লুকানোর কথা বা মুখ লুকিয়ে রাখার কথা, এভাবে ক্যামেরার দিকে মুখ ফিরিয়ে তাকানোর কথা নয় বলে আমরা মনে করি। পাবনার যে কেন্দ্রে জালভোট দেখানো হয়েছে লোয়ার ফোল্ডে, সেখানেও প্রশ্ন থেকে যায় ভোট চলাকালীন সময়ে এরকম এক্সক্লুসিভ ছবি কীভাবে পেলো প্রথম আলো? প্রশ্নটা এসেই যাচ্ছে!

নির্বাচনী প্রতিবেদন কেমন হওয়া উচিত?

‘নির্বাচনী প্রতিবেদনের গুরুত্পূর্ণ তথ্যসূত্র’ শীর্ষক একটি প্রবন্ধে আতাউস সামাদ লিখেছেন- ‘ভালো রিপোর্ট প্রকাশ প্রচার করে গণমাধ্যম জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারে। এখানে ভালো রিপোর্টের অর্থ হলো তাতে থাকবে পুঙ্খানুপুঙ্খ, যথার্থ, ভারসাম্যপূর্ণ এবং মানসম্পন্ন বিবরণ যাতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রাথীদের যোগ্যতা, সম্ভাবনা, শক্তি ও দুর্বলতা পরিমাপ করা যায়।’ এক্ষেত্রে বলা যায়, প্রথম আলো পুঙ্খানুপুঙ্খ, যথার্থ, ভারসাম্যপূর্ণ এবং মানসম্পন্ন বিবরণ প্রকাশ করেনি। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রাথীদের যোগ্যতা, সম্ভাবনা, শক্তি ও দুর্বলতা পরিমাপ করেনি, যা করেছে সমকাল। এত আশঙ্কা, এত নিরাপত্তাহীনতার চিত্র প্রথম আলো কেন ৪ জানুয়ারি থেকে দেওয়া শুরু করলো? বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সাকুলেশনের এই পত্রিকাটি আগে কেন আশঙ্কা প্রকাশ করে ঘন ঘন রিপোর্ট দেয়া হয়নি। যাদের নিজস্ব নীতিমালা আছে, তারা কেন এভাবে ঘন ঘন নিজেদের নীতিমালা পরিবর্তন করছে?

উপসংহার:

নির্বাচনী সাংবাদিকতাকে প্রভাবমুক্ত রাখার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি তেমন কোন নির্দেশনা, বিধিমালা বা আচরণবিধি নেই। যদি থাকতো, তাতে আমরা দেখতাম প্রথম আলো কর্তৃপক্ষ সেইসব বিধি লঙ্ঘন করলো কিনা। যেহেতু নেই, সেহেতু দুধের স্বাদ ঘোলে মিটাতে গিয়ে আমরা একটি উদ্ধৃতি দেখতে পারি। ‘নির্বাচন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া’ শীর্ষক এক গবেষণামূলক নিবন্ধে গবেষক ও সাংবাদিকতার শিক্ষক যথাক্রমে আলিমূল হক ও আব্দুর রাজ্জাক খান লিখেছেন- ‘সংবাদ উপস্থাপনার ক্ষেত্রে কি কোন কূটকৌশলের আশ্রয় নেয়া হয়েছে যা কোন নির্দিষ্ট দল বা প্রার্থীল জন্য উপকারি বা ক্ষতিকর (এ ধরণের কূট কৌশলের মধ্যে আছে: ক্যামেরার কলা-কৌশল, সম্পাদনা কৌশলের ব্যবহার, কোন প্রাথী বা দলের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল বা বিনষ্ট করার উদ্দেশ্যে অপ্রমাণিত তথ্যাবলী প্রচার ইত্যাদি)? উদ্দেশ্যমূলকভাবে কোন অনির্বরযোগ্য মতামত জরিপের ফলাফল প্রচার করা হচ্ছে কি, যে জরিপের ফলাফল প্রচার কোন দল বা প্রার্থীর জন্য সুবিধাজনক বা ক্ষতিকর?’ আমরা মনে করি, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে দৈনিক প্রথম আলো এই গবেষকদ্বয়ের সবটুকু করণীয়কে লঙ্ঘন করেছে। আমরা এতক্ষণ শুধু নির্বাচনের আগে-পরেরদিনের প্রথম আলোর প্রথম পাতার সংবাদ বিন্যাস ও ছবি উপস্থাপন এবং শিরোনাম নিয়ে কথা বললাম। কিন্তু একটি জাতীয় নির্বাচনক একটি জাতীয় পত্রিকা কিভাবে দেখলো সেইটা আরো বড় পর্যবেক্ষণ দাবি করে। সময়ের স্বল্পতা ও প্রস্তুতির ঘাটতির জন্য এই মুহূর্তে সেই বড় কাজটি করা গেল না। কিন্তু আমরা কথা দিলাম, বাংলাদেশের সাম্প্রতিককালের নির্বাচনগুলোতে প্রথম আলোর অবস্থান নিয়ে আমরা একটি সিরিয়াস কাজে হাত দিবো।

আমরা মনে করি, ফেসসবুক বা সাইবার পরিসরে প্রথম আলোর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উদগীরণ, ক্ষোভের মধ্যে একফোঁটা ঘি ফেলার জন্য আমরা এই লেখা লিখি নাই। প্রথম আলো বর্জনও ‘হয়তো’ কোন সমাধান নয় বলে মনে করি। তাহলে সমাধান কী? আমরা সমাধান টানি নাই। আমরা মনে করি, আমাদের দরকার প্রথম আলোর প্রতি সতর্ক নজরদারি আরো বৃদ্ধি করা, দায়িত্বশীল সমালোচনা অব্যাহত রাখা। তবে, সবচেয়ে বেশি উচিত- প্রথম আলোর চাইতেও একটি ভালো মানের 'কাগজ' নির্মাণের পরিকল্পনা করা এবং সেই সংগ্রামে নিজেকে বুদ্ধিবৃত্তিক ও শারীরিকভাবে যুক্ত রাখা।

রেফারেন্স:

আমার বই: কেলেঙ্কারির অর্থনীতি- শওকত হোসেন মাসুম
প্রথম আলো, ৫ই জানুয়ারি, ২০১৪ খ্রিস্টাব্দ
প্রথম আলো, ৬ই জানুয়ারি, ২০১৪ খ্রিস্টাব্দ
প্রথম আলো, অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত ছবি
সমকাল, ৫ই জানুয়ারি, ২০১৪ খ্রিস্টাব্দ
নির্বাচন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া: আলিমুল হক ও আব্দুর রাজ্জাক খান, নির্বাচনী রিপোর্টিং, সাংবাদিক সহায়িকা তথ্যপঞ্জি, সেড, তৃতীয় সংস্করণ, সম্পাদক: ফিলিপ গাইন, পৃষ্ঠা ২৪২
পত্রিকায় নির্বাচনী ফিচার: কিউ এ তাহামিনা, নির্বাচনী রিপোর্টিং, সাংবাদিক সহায়িকা তথ্যপঞ্জি, সেড, তৃতীয় সংস্করণ, সম্পাদক: ফিলিপ গাইন, পৃষ্ঠা ৮৫
নির্বাচনী প্রতিবেদনের গুরুত্পূর্ণ তথ্যসূত্র: আতাউস সামাদ; নির্বাচনী রিপোর্টিং, সাংবাদিক সহায়িকা তথ্যপঞ্জি, সেড, তৃতীয় সংস্করণ, সম্পাদক: ফিলিপ গাইন, পৃষ্ঠা ৭

লেখক পরিচয়:

নিশাত পারভেজ, শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ,
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং খণ্ডকালীন সাংবাদিক।
https://www.facebook.com/parveznishat

রাজীব নন্দী, শিক্ষক, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ,
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
https://www.facebook.com/rajibndy


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রথম আলোর স্বরূপ ক্রমশঃ উন্মোচিত হচ্ছে। এটি পুরাপুরি দেশকে অস্থিতিশীল করার অপঃপ্রয়াস, যার বিচার হওয়া উচিত।
--অভয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক

প্রথম আলুর চক্রান্ত নতুন নয়, অনেকবার লোক দেখানো ক্ষমা চেয়ে পার পেয়ে গেছে, সময় এসেছে মহাচুদুরবদুর রহমানের মতো মতি চোরাকেও আইনের কাঠগড়ায় দাড় করানো। এমন সাম্প্রদায়িক উস্কানি দেওয়ার পরও যদি প্রথম আলুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না হয় তবে মহাচুদুরবুদর রহমানকে ও স-সম্মানে ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানাই। দুই ভাই মিলে ছড়িয়ে দিক সাম্প্রদায়িকতার বিষ। সেই বিষে পুড়ে ছাই হোক বাড়ি ঘর। মন খারাপ

মাসুদ সজীব

ধুসর গোধূলি এর ছবি

শওকত হোসেন মাসুম, গতকাল ফেসবুকে লিখেছেন:
অনলাইনে আমরা যত ছবি তোলা হয় সব দিয়ে দেই, সেরকম একটি ছবি সম্ভবত এটি। অসংখ্য ভোট কেন্দ্রের ছবি সেখানে আছে। কিন্তু এতেই সংখ্যালঘুরা উসকানি পেয়েছে?’

এই যদি হয় একটি পত্রিকার বার্তা সম্পাদকের বক্তব্য, তাহলে তার অধীনে যারা প্রদায়কের কাজ করে, তাদের কী অবস্থা হবে, সেটা সহজেই অনুমেয়। গ্রামের হাটে জটলা পাকিয়ে যুবক ও বিবাহিত ভাইদের জন্য ওষুধ বিক্রি করা আর কোনো পত্রিকায় বার্তা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করা যে এক জিনিস না, সেটা এই মাসুম বার্তা সম্পাদককে কে বুঝাবে?

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রথম আলোর কমেন্ট সেকশনের দিকে লক্ষ্য করলেও অনেক কিছু বোঝা যাবে। এরা এদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে অনেকদূর এগিয়ে গেছে। এদেরকে এখনই বন্ধ করতে হবে, নতুবা ১০ নম্বর বিপদ সংকেতের সম্মুখীন হতে হবে।

-এস এম নিয়াজ মাওলা

এক লহমা এর ছবি

চলুক
" বার্তা সম্পাদক শওকত হোসেন মাসুম প্রকাশ্যে বলেছেন ’যা ছবি তোলা হয়, সব অনলাইনে প্রকাশ করি’- "
কি বলা যথার্থ হবে একে - ব্যাখ্যার অতীত দায়িত্বজ্ঞানহীনতা না কি সুচতুর অজুহাত-এর আড়ালে নোংরা উদ্দেশ্যসিদ্ধির ছক সাজিয়ে নেওয়া?

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

আয়নামতি এর ছবি

চলুক

ধরে নিলাম জনগণের প্রতিবাদের মুখে প্রথম আলোর মত ধান্ধাবাজ পত্রিকাগুলো বন্ধ হয়ে গেল। কিন্তু শওকত হোসেন মাসুমের মত লোকগুলো অন্য পত্রিকার লেজুরবৃত্তিতে পুরোনো মানসিকতারই চর্চা চালিয়ে যাবেন না যে সে গ্যারান্টি কোথায়! তাই এইসব মানসিকতারও পরিবর্তন চাই।

চরম উদাস এর ছবি

চলুক
দারুণ কাজ

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

পরিশ্রমী লেখা। ভন্ডদের স্বরূপ উন্মোচনের জন্য এরকম লেখা আরো দরকার।

____________________________

অতিথি লেখক এর ছবি

আদালত শুধু এই পোষ্টের বিষয়বস্তু আমলে নিয়ে স্বপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করতে পারে।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

সম্ভবতঃ সুমন্ত আসলাম আর আরিফুরের অবস্থা দেখেই সানাউল্লাহ লাবলু কিংবা শওকত হোসেন মাসুম কেউই সাহস পাচ্ছেন না ইয়ে, মানে...

গডফাদারদের দুষ্টচক্র না ভাংলে ভারবাহীদের সংখ্যা বাড়বেই কেবল...

আমাদের দরকার প্রথম আলোর প্রতি সতর্ক নজরদারি আরো বৃদ্ধি করা, দায়িত্বশীল সমালোচনা অব্যাহত রাখা। তবে, সবচেয়ে বেশি উচিত- প্রথম আলোর চাইতেও একটি ভালো মানের 'কাগজ' নির্মাণের পরিকল্পনা করা এবং সেই সংগ্রামে নিজেকে বুদ্ধিবৃত্তিক ও শারীরিকভাবে যুক্ত রাখা।

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।