লজ্জা

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: রবি, ০৭/০৯/২০১৪ - ৩:০১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

গেলো শতাব্দীর আশির শতকের মাঝামাঝি বা শেষের দিকে বাংলাদেশে পাকিস্তানী ক্রিকেটার ইমরান খান বড় ধরনের ক্রেজ ছিল। চৌকস খেলোয়াড়, সাথে আবার লম্বাচৌরা গড়ন, সুদর্শন, ভরাট ম্যানলি গলা। মেয়েরা তাকে চায়, ছেলেরা তার মত হতে চায়, আর আমার মত ছয়/সাত বছরের শিশুরা তাকে আইডল মানে। আমিও তার ব্যতিক্রম ছিলাম না।
সেসময় ইমরান একবার বাংলাদেশে আসলেন কয়েকদিনের জন্য, বাংলাদেশের তরুনতরুণীর উচ্ছাস দেখে কে? যেখানে ইমরান যায়, পিছনে এক দঙ্গল পাগল ফ্যান। তখন শিশুদের টীকা দেবার প্রোগ্রাম খুব জোরেসোরে সরকার প্রচার করছে। ইমরান তাতেও অংশগ্রহন করলেন, কোলে নিয়ে শিশুদের ওরাল টীকা খাওালেন, টিভির বিজ্ঞাপন করলেন, ভাঙ্গা বাংলায় বললেন, ‘হাপনার শিশুকে টীকা দেন।‘ সাত বছরের আমি আরও মুগ্ধ হলাম... বাহ শুধু ক্রিকেটার ভালো তা নয়, মানুষও কত ভালো! কিছুদিন পর বাংলাদেশে ইমরান আবার এলেন পাকিস্তান জাতীয় দলকে নিয়ে, ভারতের সাথে প্রদর্শনী ম্যাচ খেলতে। আমি উৎসাহ নিয়ে খেলা দেখলাম, তবে মনে আছে লক্ষ্য করেছিলাম আমার আব্বা আম্মা একদমই উৎসাহিত না, না পাকিস্তান নিয়ে, না ইমরানকে নিয়ে। বুঝলাম না কেন, অবশ্য আমি ব্যস্ত ছিলাম আমার হিরোকে দেখা নিয়েই।
১৯৯২ সাল আসলো। বয়স তখন বারো বোধহয়, বিশ্বকাপ ক্রিকেট সেবার আস্ট্রেলিয়াতে। আমার জীবনের প্রথম বিশ্বকাপ ক্রিকেট দেখা! ইমরান তখনও খেলছে! পাকিস্তানের খেলা দেখার জন্য ভোর পাঁচটা থেকে উঠে বসে থাকতাম, স্কুলে যাবার আগে যতটুকু দেখা যায়। ইমরানের সাথে যোগ হল আরও কিছু নতুন হিরোঃ ওয়াসিম আকরাম, ইনজামাম। পাকিস্তান ফাইনালে উত্তীর্ণ হল উত্তেজনা ভরপুর সেমিফাইনাল ম্যাচে নিউজিলান্ডকে হারিয়ে! ইংল্যান্ডের সাথে ফাইনালের আগের দিন স্কুলে অ্যাসেম্বলিতে প্রধানশিক্ষিকা ঘোষণা দিলেন, বিশ্বকাপ ফাইনাল যাতে দেখতে পারি তাই পরের দিন স্কুল ছুটি। আমার খুশি দেখে কে? বাসায় ফিরে রাত্রে আব্বা আম্মা অফিস থেকে ফেরার পরই তাদের জানালাম। বললাম, ‘মামনি, কাল দেখবা পাকিস্তান আর ইমরান ঠিকই জিতবে, তুমি কি পাকিস্তান সমর্থন করবা না?’ আমার মা হেঁসে বলল ‘না বাবু, আমি পাকিস্তান কখনও কোন কিছুতেই সমর্থন করি না।‘
অবাক হলাম। আমার মা বরাবরই বেশ ধার্মিক, আগে দেখেছি কোন মুসলমান দেশের খেলা থাকলে (যেমন ১৯৯০ বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় মিশর বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের খেলাগুলো) সেই দেশগুলোকেই সমর্থন করেন। ভেবেছিলাম নিশ্চয় পাকিস্তানকেই সমর্থন করবে। জিজ্ঞেস করলাম, ‘কেন মামনি মুসলমান দেশ তো!’ মা বলল ‘বাবা মুসলমান দেশ হোক আর যাই হোক, ওরা আমাদের সাথে যা করে গেছে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত তার জন্য মরার দিন পর্যন্ত আর যাই করি, পাকিস্তানকে কোন কিছুতেই আমি সমর্থন করব না।‘ বাবার দিকে তাকালাম, দেখলাম বাবাও মায়ের কথায় মাথা ঝাঁকিয়ে সায় দিচ্ছেন।আমি বিরক্ত হলাম। মুক্তিযুদ্ধে আমরা পাকিস্তানকে হারিয়ে স্বাধীন হয়েছি, কিন্তু তার সাথে খেলার কি সম্পর্ক? আর ইমরান কত্ত ভালো একজন মানুষ! ঠোঁট উল্টিয়ে বললাম ‘ধুর, খেলার সাথে এসব কি যে মিক্স করছ, রাবিশ! কালকে দেখবা পাকিস্তানই জিতবে!’ মা শুধু হেঁসে বললেন, ‘কিছুটা বড় হলে তুই নিজেই বুঝবি বাবা।‘
পরের দিন খেলা পাকিস্তান ইংল্যান্ডকে মোটামটি সহজেই হারাল, ওয়াসিম আকরাম হলেন ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ। আমি খুশিতে পুরা বাড়ি নেচে বেড়ালাম। ইমরান ম্যাচ শেষে ট্রফি হাতে বললেন তার মায়ের নামে ক্যান্সার হাসপাতাল গড়বেন। আমি আরও মুগ্ধ হলাম, নাহ, আসলেই হিরোর মত হিরো!
সেদিন ছিল ২৫শে মার্চ, ১৯৯২। এর পরের দিন, ২৬শে মার্চ, শহীদ জননী জাহানার ইমামের নেতৃত্বে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি রাজাকারদের শাস্তির দাবীতে করা গণআদালতে রাজাকারদের প্রতীকী ফাঁসির রায় ঘোষণা করে। অবশ্য ঠিক তখন আমি শহীদ জননীর নাম জানতাম না, জানি এর কিছুদিন পরে যখন শুনলাম জাহানারা ইমাম নামে একজনকে নাকি বিএনপি সরকার দেশদ্রোহী ঘোষণা করেছে। জাহানারার ইমামের ছবি দেখলাম খবরের কাগজে, দেশদ্রোহী শুনলে যেমন ভয়ঙ্কর কারো চিত্র মাথায় আসে, তেমন তো একেবারেই দেখতে না! সাদা সাড়ী, চোখে বাইফকাল লেন্সের চশমা পরিহিত অত্যন্ত ভদ্র এবং মার্জিত দেখতে একজন মানুষ! দেখে আমার কৌতূহল জাগল, কে এই জাহানারা ইমাম, এবং কেন এমন নিরীহ দেখতে একজন মানুষ সরকারের কাছে দেশদ্রোহী? বাবা মাকে জিজ্ঞেস করলাম, উত্তর পেলাম, ‘আজ রাতে তোমাকে নিয়ে সোবহানবাগের জ্ঞানকোষে যাবো।‘ সেরাতে জ্ঞানকোষ থেকে আমাকে একটা বই কিনে দেয়া হল। বইটার নাম ‘একাত্তরের দিনগুলি’।
বইটা পড়ে শেষ করি বোধহয় দুই/তিন দিনে। এর আগে কোন বই পড়ে এতটা কেঁদেছি বলে মনে পড়ল না, আর সম্ভবত এখনও কোন বই আমাকে এভাবে প্রভাবিত করেছে বলে মনে হয় না। কেন আমার বাবা মা কিছুতেই কোন ব্যাপারেই পাকিস্তানকে সমর্থন করেন না বুঝলাম। জাহানারা ইমাম কেন শহীদ জননী বুঝলাম। তিনি কেন রাজাকারদের বিচারের জন্য এভাবে লড়ে যাচ্ছেন বুঝলাম। কি উদ্দেশ্যে একটা সরকার এমন মহীয়সী নারীকে দেশদ্রোহী ঘোষণা করতে পারে, এবং যেই দল সেই সরকার গঠন করেছে, তাদের ‘দেশপ্রেম’ কেমন সেটাও বুঝলাম। সেই দিন থেকে পাকিস্তান ও রাজাকারদের জন্য জন্মে ওঠা ঘৃণা ও বিদ্বেষ দিনে দিনে বেড়েই যাচ্ছে। সেই দিন থেকে পাকিস্তানের ব্যাপারে ক্রিকেট থেকে শুরু করে সবকিছুতেই রাজনীতি মেশানো আমার শুরু। এর পর আস্তে আস্তে আরও অনেক বই পড়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাসের ব্যাপারে অবগত হতে থাকলাম। কিশোর ও তরুন বয়সে পড়া বইগুলোর মধ্যে এম আর আখতার মুকুলের ‘মুজিবের রক্ত লাল’ এবং ‘আমি বিজয় দেখেছি’, অ্যান্থনি মাস্কারেনহাস এর ‘The Rape of Bangladesh’, রফিকুল ইসলামের 'A Tale of Millions' উল্লেখযোগ্য।
কিন্তু ছোটবেলার আমার সেই অবুঝ পাকিস্তান ও ইমরান প্রীতির জন্য আমি আজও নিজের কাছে লজ্জিত। শুধু তাই নয়, লজ্জা লাগে বাংলাদেশের সেই সকল তরুনতরুণীদের জন্যও, যারা আজ ‘ক্রিকেটের সাথে রাজনীতি মেশাবেন না, প্লিজ’ তত্ত্ব গুলে খেয়ে পাকি প্রেমে আত্মহারা হয়ে আছে। লজ্জা লাগে যখন দেখি সেই মেয়েটিকে, যে বাংলাদেশের মাটিতে পাকিস্তানের খেলা দেখতে যায় হাতে ‘Marry me Afridi’ প্ল্যাকার্ড নিয়ে। লজ্জা লাগে সেই ছেলেটাকে দেখলে, যে গালে পাকিস্তানের পতাকা এঁকে মিরপুর স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের খেলা দেখতে দেখতে খ্যামটা নাচ দেয়, তারপর জনৈক পাকিস্তানীকে খুঁজে বের করে তাকে ‘please, we are brothers, let’s exchange jerseys’ বলতে বলতে তার জার্সি নেবার জন্য হাতে পায়ে ধরে কাকুতিমিনতি করে। লজ্জা লাগে যখন দেখি বাঙালী মেয়েরা ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয় ‘uff Pakistani guyz r soo cute i wanna b a Meherjan 2 lolzzz xoxo!!’।
বারো বছর বয়সে বাবা মা হাতে ‘একাত্তরের দিনগুলি’ হাতে তুলে দিয়ে চোখ খুলে দিয়েছিল আমার। সবকিছুর সাথে এটার জন্যও আমি সবসময় তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ থাকবো। কিন্তু মনে প্রশ্ন জাগে, এত যে পাকি-প্রেমিক ছেলেমেয়েরা বাংলাদেশে, তাদের বাবা মা কি পারতেন না ছোটবেলায় তাদের হাতে ‘একাত্তরের দিনগুলি’র মত একটা প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বই তুলে দিতে? হয়ত তাহলে তারা আজ এমন হত না, তারাও আমার মত রাজনীতি মেশাতে শিখত পাকিস্তানের সবকিছুতে।
নিজের অতীত নিয়ে লজ্জা পাই, এদের দেখে লজ্জা পাই। এত লজ্জা আমি কোথায় রাখব?

- ইয়ামেন


মন্তব্য

এনকিদু এর ছবি

নিজের অতীত নিয়ে লজ্জা পাই, এদের দেখে লজ্জা পাই। এত লজ্জা আমি কোথায় রাখব?

কোথাও রাখার দরকার নেই।

নিজের অতীত নিয়ে লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই। আপনি নিজের অবুঝ অবস্থা থেকে চোখ খুলে বেরিয়ে এসেছেন। আপনার তো উলটা আরো ভাল লাগার কথা। আপনার আশেপাশের ছোট শিশু কিশোরদেরকে অনুপ্রানিত করার কথা।

অন্য কোন ব্যক্তির কর্মকান্ডের দায়িত্বইবা আপনি নিতে যাবেন কেন ? আমি বরং আপনাকে অনুরোধ করব আত্মোন্নয়নে মনোনিবেশ করতে। অন্য লোকের আজাইরা কাজের জন্য লজ্জা পাওয়ার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিলে ভীষণ বিপদে পড়বেন; ওদের লজ্জার ভারে আপনার মেরুদন্ড ভাংবে একদিন। আপনার মত মননশীল ও মুক্তিকামী বাঙালি তরুনদেরকেই তো দরকার। এই প্রজন্মে আমাদের সামনে অনেক কাজ। আলটপকা কোমর ভেঙ্গে পড়ে থাকলে চলবে ?


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ। অন্যদের বেকুবির দায়িত্ব অবশ্যই আমি নিতে যাব না, কিন্তু দেখলে আসলে লজ্জা এবং ফ্রাস্ট্রেশন বোধ করা থেকে নিজেকে থামানো মাঝে মাঝে একটু কঠিন হয়ে যায়। এসব দেখে তাদের প্রতি করুনা করা বোধহয় আমার কোনদিন কমবে না, তবে এতে আমার নিজের মেরুদন্ড আশা করি ভাঙবে না। চলুক

- ইয়ামেন

এক লহমা এর ছবি

নিজের ভুল বুঝতে পারার পর যে ভুল নিজে জেনে বুঝে করেননি তার জন্য দুঃখ যতই পান, বিরাট রকম কোন লজ্জা পাওয়ার দরকার আছে মনে হয় না। বিপরীতে আপনার মা-বাবা সেসময় আপনাকে ঠিক পথের খোঁজ দিয়েছেন, তাঁদের জন্য আপনার গর্ব হওয়ার পাশাপাশি আপনি নিজেও যে তাঁদের দেখান পথে চলতে পেরেছেন তার জন্য ভাল বোধ করবেন, এটাই মনে হয় ঠিক হবে। সঠিক পথে চলার জন্য আপনাকে অভিনন্দন।

যে বেহায়াদের জন্য আপনি লজ্জা পাওয়ার বেদনায় রয়েছেন, আপনার লজ্জা পাওয়া না পাওয়ায় তাদের কোন কিছু যায় আসে না। তাদের কাজের প্রতিবাদ যদি জারী রাখতে পারেন সেটায় বরং কিছু আসতে-যেতে পারলেও পারতে পারে।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

"তাদের কাজের প্রতিবাদ যদি জারী রাখতে পারেন সেটায় বরং কিছু আসতে-যেতে পারলেও পারতে পারে।"

সেটাই চালিয়ে যাই যতটা পারি ভাই। এখন শুনে কারো আত্মশুদ্ধি হবে কি হবে না তাদের ব্যাপার। অন্তত নিজের মনে সান্তনা নিজের চোখের সামনে কারোকে করতে দেখলে অন্তত বাঁধাটা তো দিলাম। কিন্তু তারপরেও, উপরে এনকিদু ভাইের মন্তব্যের উত্তরে যা বললাম, এসব পাকি-প্রীতি দেখলে ফ্রাস্ট্রেশন তা তাড়ানো মাঝে মধ্যে খুবই কঠিন হয়ে যায়।

- ইয়ামেন

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনি এদেশের ভাগ্যবান কিশোর তরুণদের একজন। যিনি কিনা বারো বছর বয়সে 'একাত্তরের দিনগুলি' দিয়ে শুরু করে ক্রমান্বয়ে এম আর আখতার মুকুলের ‘মুজিবের রক্ত লাল’ এবং ‘আমি বিজয় দেখেছি’, অ্যান্থনি মাস্কারেনহাস এর ‘The Rape of Bangladesh’, রফিকুল ইসলামের 'A Tale of Millions' এর মত বই পড়ে ফেলেছেন।

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

লজ্জা নয়, এ লেখার শিরোনাম হওয়া উচিৎ ছিলো ভুল ভাঙার পর অথবা আলোতে আগমন। লজ্জা পাবেন কেন, বরং আপনি গর্বিত বোধ করবেন নিজের জন্য, এবং অবশ্যই আপনার বাবা-মার জন্য।

আর সেই সাথে চেষ্টা করবেন আশেপাশের কিশোর-বালকদের ভুল ভাঙানোর জন্য।

____________________________

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ ভাই।

- ইয়ামেন।

মেঘলা মানুষ এর ছবি

অতীতের ভুল স্বীকারে সংকোচ না করাটাই বরং ভালো।
আপনার মত, আমিও একসময় ঐ ঘৃণ্য দেশটাকে সমর্থন করেছি;
স্কুলের আর প্রতিবেশী বন্ধুদের সাথে গড্ডালিকায় গা ভাসিয়েছি।
সেই সময়ের ভ্রান্তি থেকে অনেক আগেই বের হয়ে আসতে পেরেছি বলে আমি আজও আনন্দিত।

আপনি-আমি সত্যিই সৌভাগ্যবান যে ঘৃণ্য জিনিসটাকে তার প্রাপ্য ঘৃণা দিতে শিখেছি একটু দেরিতে হলেও, আজ আর আমরা কুন্ঠিত নই।

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

- ইয়ামেন

অতিথি লেখক এর ছবি

অবাক লাগলো আপনার লেখা পড়ে !! আপনি এত কথা বললেন, এত তরুন তরুনিকে দোষারোপ করলেন অথচ যারা এই খেলার আয়োজন করছে,যারা পাকি টিমের বিপরিতে খেলছে সেই বাংলাদেশ টিমকে কেনো দোষারোপ করছেন না? তারা বয়কট করুক। সরকার band করে দিক !! সকল পাকি product band করুক। মুক্তিযোদ্ধার পক্ষ এর দল হয়েও এই সরকার কেন এটা করতে পারল না। যেই তরুন সমাজ সামান্য পাখি পোষাক না পেয়ে suicide করে তাদের দোষ দিয়ে লাভ নেই ,তাদের দেখে লজ্জা পেয়ে, তাদের বাবামা কে দোষ দিয়েও লাভ নেই। তারুন‌্যটাই এমন ।
খেয়ালী পথিক

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

যারা পাকি টিমের বিপরিতে খেলছে সেই বাংলাদেশ টিমকে কেনো দোষারোপ করছেন না?

কোন বাংলাদেশ টিম? চিন্তিত

১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে যে টিমটি গ্রুপপর্বে ৬২ রানে পাকিস্তানকে হারিয়ে দিয়েছিল? ওইদিন খেলার আগে আর পরের "ওয়াসিম আকরামের" চেহারা পাশাপাশি রেখে দেখলে আমি অপার আনন্দ পাই শয়তানী হাসি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

শৈবাল দিঘিরে বলে উচ্চ করে শির
লিখে রেখো এক ফোটা দিলেম শিশির
খেয়ালি পথিক

এক লহমা এর ছবি

আরে, আরে আরে! এ খেয়ালের সুর যে আর ঢাকা থাকে না দেখি!

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

যে যেমন বুঝতে চায় বুঝুক, আমি শুধু বলতে চেয়েছি একবার পাকি টিমের সাথে জিতার আনন্দের চেয়ে অনেকবার তাদের কাছে হারার কষ্টটা বুকে বড় বেশি বাজে !!!
খেয়ালি পথিক

আয়নামতি এর ছবি

পথিক তুমি পথ হারাইছো?
যেদিকে পাকিস্হান সেদিক যান বাঙালিকে দেখায়ো না আঙুল, হয়ে যাবে নিজেই ভন্ডুল

এক লহমা এর ছবি

চলুক

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনাকে শুধু বলতে ইচ্ছে করছে, আমার বাবা মা বই দিয়ে নয় বাস্তব experience থেকে আমাকে শিখিয়েছেন,আমার বাবা সত্তিকারের মুক্তিযোদ্ধা,আর আমার ফুফু সেই ভয়াল সময়ের শিকার ছিল !!! আপনাদের অনেকের চেয়ে আমার বুকের কষ্ট , ঘৃনা অনেক অনেক অনেক বেশি ।

কল্যাণ এর ছবি

ঠিক বলেছেন খেয়ালি পথিক। তাছাড়া ধরেন পিপিলিকার পাখা ওঠে মরিবার তরে - তাই না? এই সব দুই দিনের পুলাপান কি বলতে কি বলে ঠিক নাই! ভাল মত বকা দিয়ে যান ত।

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

এক লহমা এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

কস্কি মমিন! রোগটা ঠিকই ধরছি দেহন যায় শয়তানী হাসি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

হে হে... ২০০৫ সালে অস্ট্রেলিয়াকে আশরাফুলের সেঞ্চুরির সাহায্যে হারানো অথবা ২০১২ সালে এশিয়া কাপের ফাইনালে যাবার থেকেও ১৯৯৯ সালে পাকিস্তানকে হারানো আমার কাছে আরও বেশী স্মরণীয় হয়ে আছে। হাসি

- ইয়ামেন।

এনকিদু এর ছবি

১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে যে টিমটি গ্রুপপর্বে ৬২ রানে পাকিস্তানকে হারিয়ে দিয়েছিল? ওইদিন খেলার আগে আর পরের "ওয়াসিম আকরামের" চেহারা পাশাপাশি রেখে দেখলে আমি অপার আনন্দ পাই

এটা একটা মিম হতে পারে, "ডলা দে‌য়ার আগে ও পরে"।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

ধ্রুব আলম এর ছবি

হারনের পরে যে 'ভাই, ভাই' লাগাইসিলো। আহারে! ওঁয়া ওঁয়া

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

সুজন্দা কুথায়? কাড়ড়ড়টুউউন হপে?

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

এনকিদু এর ছবি

আমিও একই অনুরোধ রেখে গেলাম, সুজন্দা একটা মিম নামায় দেন দেখি।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রথমত, আপনি বোধহয় 'ban' বলতে চেয়েছেন, কারন 'band' এর অর্থ কিন্তু নিষিদ্ধ করা না।
দ্বিতীয়ত, সরকারি স্তর থেকে ban করে দেয়ার ব্যাপারে আপনার সাথে আমি দ্বিমত পোষণ করছি। সরকার অবশ্যই 'ban' করতেই পারে, কিন্তু এই ব্যাপারে সরকারের হস্তক্ষেপ লাগবে কেন? পাকিস্তানকে ঘৃণা করতে শেখানো আমি মনে করি প্রতিটি দেশপ্রেমী বাপ মারই উচিৎ তাদের ছেলেমেয়েকে ছোটবেলা থেকে। সবকিছুতে সরকারকে হস্তক্ষেপ করতে হবে সে ব্যাপারে বিশ্বাসী নই আমি। এতে হিতে বিপরীত হবার সম্ভাবনাই বেশী।

- ইয়ামেন

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

আমি মুক্তিযুদ্ধের বই পড়ার সুযোগ পাইনি ছেলেবেলায়, আমার বেশ কয়েকজন আত্মীয় রাজাকার ছিল, আমার বাবা বিএনপির রাজনীতি করছেন সারাজীবন, স্কুল বেলায় বিএনপি ক্ষমতায়, বাংলাদেশ তখন টেস্ট খেলা শুরু করেনি, তবু কেন জানি ক্রিকেটে সাপোর্টিং টিম বেছে নিতে গিয়ে পাকিস্তান কে বাদ দিয়ে ভারতকে সমর্থন দিয়েছিলাম। কারণ ৭১-এর গল্প আমি শুনেছি, লোকমুখে, তাই ওয়াসিম, আনোয়ারের মতো পাপীরা আমাকে আকর্ষণ করতে পারেনি। শচীন, সৌরভকেই বেছে নিয়েছিলাম। ২০ বছর আগে নেয়া সেই সিদ্ধান্তাটাই আমার জীবনে সবচেয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত বলে আজ গর্ব করি। সময় যত গড়িয়েছে পাপীস্তানের সবকিছু আরও বেশি বেশি ঘৃণা করতে শিখেচি। পাপীস্তানকে ঘৃণা করি, ঘৃণা করি সব পাপী নাগরিককে।

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক

- ইয়ামেন

তারেক অণু এর ছবি
আয়নামতি এর ছবি

নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন এবং সেকথা বলার সাহস দেখিয়েছেন সেজন্য উত্তম জাঝা!
আপনিই কী বিশ্বকাপ নিয়ে পোস্ট দিয়েছিলেন? দারুণ একটা ডকু দেখলাম সেদিন।
জানিনা আপনার দেখা কিনা। ২০১০ এর। 'Once Brothers' দেখেছেন ওটা?
দেখে না থাকলে দেখবার চেষ্টা করবেন প্লিজ। খেলার সাথে রাজনীতি কিভাবে মিশে যায়...
বন্ধুত্বকেও অস্বীকারের স্পর্ধা যোগায় দেখলে বুঝবেন।

ধ্রুব আলম এর ছবি

পাকিদের ওয়ানডেতে অসামান্য ক্রীড়ানৈপুণ্যের উপরে একখান লেখা লেখিয়াছিলাম এককালে। পড়ে দেখতে পারেন।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

আপনার লজ্জা পাবার কারণ দেখি না। ওই বয়সে আপনার পাকিস্তান বোঝার কথা না। তবে আপনার বাবামা যদি ওই চেতনাসমৃদ্ধ মানুষ না হয়ে মোটামুটি 'নিরপেক্ষ'ও হতেন, তবে এই বয়সে আপনি একজন নিশ্চিত পাকপ্রেমিক হিসেবে আবির্ভূত হতেন। বাংলাদেশে এটাই সমস্যা। অধিকাংশ পাকিমানসিকতার মানুষ কিন্তু 'নিরপেক্ষতা' নামক ভাইরাস থেকেই পাকসারজমিনে কাত হয়ে যান। আপনার বাবামা দুজনকে স্যালুট!

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

মাসুদ সজীব এর ছবি

ছোট বেলায় এক সময় আমি নিজেও পাপিস্থান সাপোর্ট করতাম। রাজনৈতিক সাপোর্ট, খেলাধুলা সাপোর্টের ভিতগুলো মূলত পরিবার থেকেই গড়ে উঠে ছোটবেলায়। আমার বাবা ছিলেন বিম্পির সমর্থক, সেই সূত্রে পাপিস্থানের অন্ধ সমর্থক। আমাদের দাদার বংশ পুরোটাই তাই ছিলো। বাংলাদেশে সাধারণত বিম্পি আর পাপিস্থান সাপোর্ট মিলেমিশে একাকার। শৈশব-কৈশোরের দীর্ঘ একটা সময় অামিও ছিলাম পাপিস্থান আর বিম্পির সেই ছায়াতলে। তারপর যখন থেকে মুক্ত পৃথিবীতে এলাম, নিজের পথ চিনতে শুরু করলাম, তখন থেকেই তাদের প্রচন্ড ঘৃনা ভরে প্রত্যাখান করলাম। এবং এখন পাপিস্থানের মতো ঘৃনিত কোন শব্দ আমি বিশ্ব সংসারে আর খুঁজে পাই না। সত্য আর সঠিক বিষয়কে অনুধাবন করে মিথ্যে আর বেঈমান নরপশুর দল থেকে নিজেকে ফিরিয়ে আনতে পারাকে লজ্জা হিসেবে দেখার কিছু নেই। বরং এটি অর্জন, মৌলিক শিক্ষার সত্যিকার অর্জন। প্রতিক্রিয়াশীলদের শৃঙ্খল থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারায় আপনাকে তাই সাধুবাদ জানাই। সবাই যদি এমনটা পারতো মন খারাপ !

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।