জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা- শহীদুল জহির

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: মঙ্গল, ০৩/০২/২০১৫ - ৮:৪৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমরা জাতি হিসেবে বড় দুর্ভাগা। স্বাধীনতার মাত্র ৩০ বছরের মাথায় স্বাধীনতাবিরোধীরাই রাষ্ট্রের ক্ষমতায় আসীন হয়েছে। এবং আজও তারা এদেশে বিশাল রাজনৈতিক শক্তি।

স্বাধীনতার পর এই শক্তির উত্থান সবাই প্রথম অনুভব করে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময়, যখন স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে জামায়াতও যোগ দেয় আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও অন্যান্য দলের সাথে।

সেই সময়, ৮৫ সালে লিখিত হয় উপন্যাসটি, যার বিষয়বস্তু রাজাকারদের উত্থান-পতন আর পুনর্বাসন। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বহু উপন্যাস লেখা হলেও স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে রাজাকারদের পুনরুত্থানের ইতিহাস নিয়ে তেমন কোন উপন্যাস রচিত হয়নি। খুব ছোট পরিসরে, মাত্র ৪৮ পৃষ্ঠার উপন্যাসে, পুরান ঢাকার কোনো এক এলাকার কোন এক অবিখ্যাত রাজাকারের স্বাধীনতার আগে ও স্বাধীনতার পরের কাহিনী বর্ণনার মধ্যে সেটিই তুলে ধরেছেন শহীদুল জহির।

বদু মাওলানা এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি। অথচ ৭১ এর শুরু থেকেই বদু মাওলানা কোণঠাসা হয়ে পড়েন তার এলাকায়। এমনকি তার সাথে বাচ্চা ছেলেপেলেরা পর্যন্ত বেয়াদবি করতে থাকে। ১৩ বছরের ছেলে আলাউদ্দিনকে একদিন রাস্তায় দাঁড়িয়ে পেশাব করতে দেখে উত্তেজিত হয়ে পড়েন তিনি-

‘হারামজাদা খাড়ায়া খাড়ায়া মোতচ, খাড়ায়া মুতে কুত্তারা’

‘কুত্তা তো মুখ দিয়া খায়বি, আপনে অখনতন হোগা দিয়া খায়েন’, আলাউদ্দিন পাল্টা উত্তর দিতে দ্বিধা করে না।

বদু মাওলানা বুঝতে পারে তার প্রভাব কমে আসছে এলাকায়। ঘর থেকে বের হওয়া কমে যায় তার। মার্চের পুরোটা সময় তো তাকে দেখাই যায় না কোথাও।

সেই বদু মাওলানাই এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে হয়ে উঠেন এলাকার দণ্ডমুণ্ডের কর্তা। আর এলাকায় মিলিটারি আসার পর প্রথম যে মানুষটি মারা যায়, তার নাম আলাউদ্দিন। বদু মাওলানার সাথে বেয়াদবির মাশুল দিতে হয় তাকে। ঐদিন আরও ছয় জন নিহত হয় পাকিস্তানীদের হাতে।
স্বাধীনতার পরপরই আবার ভূমিকার পরিবর্তন হয়। আওয়ামী লীগ নেতা আজিজ পাঠান ফেরত আসলে এলাকার নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন তিনি। বদু মাওলানাকে খুঁজে পাওয়া যায় না। ৭৩ এ সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা হলে এলাকায় ফেরত আসেন তিনি।

প্রথম দিকে কারো দিকে তাকানোরও সাহস হত না তার। আজিজ পাঠান তাকে আশ্বাস দেন যে, তাদের নেতা যেহেতু বদু মাওলানাদের ক্ষমা করেছেন, তার নিজেরও কোন প্রতিহিংসা নেই। এই আশ্বাসবাণীর পর ধীরে ধীরে পাল্টাতে থাকে বদু মাওলানার অবস্থা।

এলাকার লোকদের ঘৃণার মধ্যে বাস করলেও বিকশিত হতে বদু মাওলানা বেশিদিন সময় নেন না। কয়েকবছর পরেই এলাকার মানুষ তাকে আবিষ্কার করে নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের কাতারে।

বদু মাওলানার উত্থানের সাথে সাথে পরিবর্তন হয়ে যায় সত্যের, পরিবর্তন হয় ইতিহাসের। নিহত রাজাকার আবদুল গণি হয়ে যান শহীদ, আর একাত্তরে মিলিটারির হাতে নিহত খাজা আহমেদ আলী হয়ে যান মুনাফেক।

এরশাদবিরোধী আন্দোলনে আওয়ামী লীগের সাথে ঐক্য হয় বদু মাওলানার দলের। হরতাল পালন শেষে বদু মাওলানার ছেলে এলাকার ‘ভাইসব’দের ধন্যবাদ জানায়। যে বদু মাওলানা সালাম দিলে মানুষজন সালামের উত্তর দিতে পর্যন্ত অস্বীকৃতি জানাত, তারা আজ এলাকার লোকদের ভাই বনে যায়।

এদিকে আজিজ পাঠান দার্শনিকের মত উক্তি দিয়ে বেড়ান,

‘সময়ে মানুষকে অনেককিছু ভুলে যেতে হয়, বাস্তবতা অনেক সময় বড় হয়ে ওঠে’

কিংবা

‘রাজনীতিতে চিরবন্ধু বা চিরশত্রু বলে কিছু নেই’

আসল কথা হচ্ছে ‘স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তি’ যতই অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপাক না কেন, স্বাধীনতাবিরোধীদের বিকাশের ক্ষেত্রটি যে তারাই তৈরি করে দিয়েছিলেন, এই উপন্যাসটি পড়লে তা অনুধাবন করা যায়।

আমাদের জীবনে যে কালো অধ্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে সেটা ৮৫ সালেই টের পেয়েছিলেন ঔপন্যাসিক। তারই ফলাফল ‘জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা’। সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম উপন্যাসটি সম্বন্ধে বলেছেন, তিনি নব্বইয়ের দশকে দুটি উপন্যাস তিনি এক নিঃশ্বাসে শেষ করেছেন- তার একটি শহীদুল জহিরের জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা।

শহীদুল জহিরের লেখার ধরনটা আলাদা- এক নাগাড়ে গল্প বলে যেতে থাকেন তিনি, লাফিয়ে লাফিয়ে এক ঘটনা থেকে চলে যান আরেক ঘটনায়। ফলে অনভ্যস্ত পাঠকের জন্য একটু আয়াসপূর্ণ লাগতে পারে। আবার একই সাথে ব্যতিক্রমী ভাষার জন্য ভালো লাগার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়া যায় না।
পাঠক সমাবেশের নির্বাচিত উপন্যাস সংকলনে সে রাতে পূর্ণিমা ছিলর সাথে প্রকাশ পেয়েছে বইটি। আলাদা বই আকারে পাওয়া যাবে কিনা, তা নিশ্চিত নই।

বইটি প্রথম প্রকাশ পেয়েছিল ১৯৮৮ সালে।

আহাদুল ইসলাম
ফেসবুক


মন্তব্য

মাসুদ সজীব এর ছবি

উপন্যাসটি পড়ে অনেকদিন আগে একটা রিভি উ লিখেছিলাম, সেটাই তুলে দেই হাসি

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বাংলাসাহিত্যে অনেক উপন্যাস রচিত হয়েছে, একাত্তররের রণাঙ্গনের সাহিসকতা, পাকিস্থানীদের বর্বতা, সাহসী যোদ্ধাদের অপরিসীম ত্যাগ, যুদ্ধের বিভৎসতা, বিপর্যস্ত মানবতা সবকিছুর নিখুঁত ছবি আকঁতে চেয়েছেন লেখকরা, যার অনেকগুলোই বেশ সফল। শহীদুল জহিরের “জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা” সেই বর্ণনাময় মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস নয়। যেখানে সাহসী কোন বীরের গল্প নেই, নয় মাসের রণাঙ্গনের যুদ্ধের বর্ণনা নেই।তবু উপন্যাসটি হয়ে ওঠেছে মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতায় দেখা বর্তমান বিশ্লেষন আর তার মনস্তাত্ত্বিক উপখ্যান। উপন্যাসের পটভূমি ১৯৮৫র অর্থাৎ যুদ্ধের প্রায় ১৪ বছর পরে। ১৪ বছর পরে মুক্তিযুদ্ধ কতটুকু মুক্তি দিয়েছে সমাজকে, সমাজের মানুষকে, তা তুলে ধরতে চেয়েছেন লেখক নির্মোহ ভাবে। এবং রাজনৈতিক বিবেচানয় এমন নির্মোহ উপন্যাস বাংলা সাহিত্যে বিরল। তিনি মুক্তিযুদ্ধকে শুধু নয় মাসের ফ্রেমে বন্দি করেননি, তিনি বুঝিয়েছেন ৯ মাস যুদ্ধ করে হয়তো স্বাধীন হওয়া যায় কিন্তু মুক্তি নয়। স্বাধীনতা আর মুক্তি এ দুটোর মাঝে বিস্তর ব্যবধান। সেই ব্যবধানটুকুই ফুটে উঠেছে তাঁর লেখা উপন্যাসে। যে স্বাধীন দেশে বি-জাতীয় শত্রুর ভয়ে নয়, দেশীয় মানুষের ভয়ে এখনো হাজার হাজার মানুষকে দেশ ছাড়তে হয়। জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতায় শহীদুল জহির সমকালের বাংলাদেশের কথা বলেছেন, যেখানে তিনি একেঁছেন রাজাকারদের বিভৎসতার এক অতীত, তিনি বলেছেন রাজকারদের পুনর্বাসনের আর ক্ষমতায়নের সেই গল্প, যে গল্প এখনো চলমানান আর সেই ধারায় নীরবে অসংখ্য মানুষ মজিদের মতো দেশান্তরি হয়ছে যার খোঁজ কেউ রাখেনি, এখনো রাখে না...!

মাত্র আটচল্লিশ পৃষ্ঠার একটি উপন্যাসে কি করে সমগ্র বাংলাদেশের চিত্র আঁকা সম্ভব তার অনন্য উদাহারন বইটি। আয়তনে ক্ষুদ্র হলেও বৃহৎ এক ব্যাপ্তি আছে প্রতিটি অক্ষর জুড়ে। বদু মাওলানা একাত্তরের ঢাকায় শ্যামাপ্রসাদ চৌধুরি লেনের শান্তিবাহিনীর প্রধান, যিনি যুদ্ধকালীন সময়ে তার অপরিসীম ক্ষমতা আর তার নিষ্ঠুরতা দেখিয়েছেন মিষ্টি হাসির অন্তরালে। যার নির্দেশে একদিনে সাতজন মানুষ খুুন হয় চৌধুরি লেনে, মজিদের বোন ধর্ষিত হয়, তার লাশ পাওয়া যায় রায়ের বাজারে। যিনি মানুষ হত্যা করে মাংসকে ছিটিয়ে দিতেন আকোশে, আর অসংখ্য কাক সেই মাংস খাওয়ার জন্যে জড়ো হতো চৌধুরি লেনের আকাশে। বদু মাওলানাকে দিয়ে শহীদুল একাত্তরের রাজাকারদের চিত্র এঁকে দিয়েছেন নতুন প্রজন্মের কাছে। যেই বদু মাওলানা চৌধুরি লেনে অসহায় সব হারানো অসহায় মানুষগুলো চোখে সবচেয়ে ঘৃণিত ব্যাক্তিতে পরিণত হন, যুদ্ধের পর যিনি পালিয়ে যান। অবাক বিস্ময়ে সেই অসহায় মানুষগুলো দেখে স্বাধীনতার মাত্র বছর দুয়েক পর সেই বদু মাওলনা সাধারণ ক্ষমায় আবার ফিরে আসে পুরোনো চেহোরায়। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বকারী দলের স্থানীয় নেতা আবদুল আজিজ যিনি নিজেও শ্যামাপ্রসাদ লেনের বাসিন্দা ছিলেন, যুদ্ধের সময় যার বাড়ি ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে বদু মাওলানা, সেই আজিজ স্বাধীনতার পর যখন মজিদের কাঁধে হাত রেখে বলে রাজনীতি করতে হলে অতীতের অনেক কিছু ভুলে যেত হয়, মজিদ যখন দেখে আবদুল আজিজ, বদু মাওলনাকে ক্ষমা করে বুকে টেনে নেয় তখনি আসলে মজিদের বিশ্বাস আর আশাার সকল স্তম্ভগুলো ভেঙ্গে পড়ে। ভেঙ্গে পড়ে বাংলাদেশ, এই ভেঙ্গে পড়ার মধ্যদিয়েই রাজাকারদের আবার উত্থান শুরু হয়..! বাংলাদেশ আবার বাঙলাস্থান হওয়ার পথে পা বাড়ায়।

আবদুল আজিজ বলেছিলেন অনেক কিছু ভুলে যেতে হয় রাজনীতির খাতিরে কিন্তু আবুদল মজিদের সেই কথাটি কে সত্য মনে হয়না। সে তার বোনকে হারিয়েছে একাত্তরে, সে ভুলেনি, তাই নিজের মেয়ের নাম রেখেছিলো বোনের নামে। আবদুল মজিদ জানে একাত্তরকে ভুলেনি বাংলার সাধারণ নিরুপায় ক্ষমতাহীন মানুষ, এমনকি ভুলেনি রাজাকাররা। তাই যখন মজিদ দেখে রাজকার-রা আবার প্রতিষ্ঠিত, তাই সে বুঝে উঠে রাজাকারদের সে ঘৃণা করে এই খবর রাজাকার বদুর জানা, এবং সুযোগ পেলে বদু মাওলানা সেই ঘৃণার প্রতিশোধ নিবে। রাজাকারদের পুনর্বাসন ঠেকানোর ক্ষমতা আবদুল মজিদের নেই, যেহেতেু রাষ্ট্রক্ষমতার নীরব সমর্থনের মধ্য দিয়ে তারা এগিয়ে যাচ্ছে তাই নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতেই আবদুল মজিদ তার মহল্লা ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেয়। মজিদ চায়নি তার মেয়ের পরিণতি বোনের মতো হোক। তাই একসময় ছোটবেলার মহল্লা ছেড়ে যায় মজিদ। মজিদের চৌধুরি লেন ছেড়ে যাওয়া আসলে রুপক অর্থে। বাংলাদেশে যেমন অসংখ্য মানুষ গত কয়েকদশকে দেশ ছেড়েছে সেটিকেই তুলে ধরেছেন লেখক। সবকিছু মিলিয়ে মুক্তিযুদ্ধ আর তার পরবর্তী বাংলাদেশের চিত্র নিয়ে লেখা ”জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা” অসামান্য এক উপন্যাস হিসাবে বাংলা সাহিত্যে অমর হয়ে থাকবে।

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

অতিথি লেখক এর ছবি

অসাধারণ রিভিউ।

হাসিব এর ছবি

আসল কথা হচ্ছে ‘স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তি’ যতই অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপাক না কেন, স্বাধীনতাবিরোধীদের বিকাশের ক্ষেত্রটি যে তারাই তৈরি করে দিয়েছিলেন, এই উপন্যাসটি পড়লে তা অনুধাবন করা যায়।

এই বিষয়ে আরেকটু বিস্তারিত বলুন। এটা কি আপনার মত নাকি বইতে এরকম একটা মত প্রচলনের চেষ্টা হয়েছে?

অতিথি লেখক এর ছবি

বিস্তারিত বলার মত তেমন কিছু নাই।
এই উপন্যাস লেখা হয়েছে ১৯৮৫ তে। আওয়ামী লীগ বিএনপি জামায়াত একত্রে আন্দোলন করছে এরশাদের বিরুদ্ধে।এলাকার বদু মাওলানারা হরতাল পালনের জন্য এলাকার ভাইদের ধন্যবাদ জানাচ্ছেন।

এসব দেখে আবদুল মজিদরা হতাশ হয়ে পড়লে আওয়ামী লীগের নেতা বলে,

'চিরশত্রু বা চিরবন্ধু বলে কিছু নেই'

যেই বদু মাওলানারা ৭১ এ আবদুল মজিদের বোনকে খুন করেছে, হত্যা করেছে এলাকার বহু মানুষকে, তাদেরকেই সমর্থন করে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা যখন এই উক্তি দেন, তখন এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে তাদের প্রশ্রয়েই বদু মাওলানারা বিকশিত হয়েছেন।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

হাসিব, পোস্ট লেখকের comprehension-এর প্রকৃতিটা বোঝার চেষ্টা করুন। ২০০১ সালের আগে বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় তিনি স্বাধীনতাবিরোধীদের দেখতে পাননি। জেনারেল জিয়ার আমলে স্বাধীনতাবিরোধীদের তেলে-চর্বিতে বাড়তে দেখেননি। এরশাদবিরোধী আন্দোলনের আগে নাকি তাদের উত্থান কেউ অনুভব করেনি। আশির দশকের শুরু থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিরোধ আন্দোলনের মতো বিষয়গুলো সম্ভবত তার জ্ঞাত নাই।

শহীদুল জহিরের অবস্থান নিয়ে সন্দেহ করার মতো কিছু আমার চোখে পড়েনি। আপনি উপন্যাসটি পড়তে চাইলে আমাকে বলতে পারেন।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মাসুদ সজীব এর ছবি

পান্ডব দা সহমত। শহিদুল জহিরের অবস্থান নিয়ে সন্দেহ করার মতো কিছু নেই। উনার লেখা-সাক্ষাৎকার কোথাও তিনি পোষ্ট লেখকের মতো সরলীকরণ করেন নি।

৮৫-র আগে কে রাজাকারদের দেশে ফিরিয়ে এনেছিলো? আর কে-ইবা প্রতিষ্ঠা করেছিলো?

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

নাশতারান এর ছবি

আমি পড়তে চাই, পাণ্ডবদা।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

পড়িনি। লিস্টে টুকে নিলাম।

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

স্বাধীনতার পর এই শক্তির উত্থান সবাই প্রথম অনুভব করে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময়, যখন স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে জামায়াতও যোগ দেয় আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও অন্যান্য দলের সাথে।

হুমম.........

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

Sayeed Khan এর ছবি

আসল কথা হচ্ছে ‘স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তি’ যতই অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপাক না কেন, স্বাধীনতাবিরোধীদের বিকাশের ক্ষেত্রটি যে তারাই তৈরি করে দিয়েছিলেন- ব্যাখা দিলে ভাল হত।

তৌকির হোসেন এর ছবি

যতই উপন্যাসের ভেতরে যাচ্ছি, বিমোহিত হচ্ছি। এত কম দৈর্ঘ্যে মুক্তিযুদ্ধের খুঁটিনাটি কি নিদারুণ দক্ষতায় ফুটিয়ে তুলেছেন। জাদুবাস্তবতার মূর্ছনার তালে নিজেকে হারাতে হয় লেখার মধ্য দিয়ে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।