প্রত্নসম্পদ বিষয়ক সাম্প্রতিক ঘটনাবলী ও প্রাসংগিক কিছু তথ্য

হাসান মোরশেদ এর ছবি
লিখেছেন হাসান মোরশেদ (তারিখ: রবি, ০২/১২/২০০৭ - ৬:৪০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

..

প্রত্নসম্পদ নিয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনাসমুহ ও সাম্প্রতিক আলোচনায় ফ্রান্সের একটি মিউজিয়ামের নাম এসেছে বারবার । বাংলাদেশের সংবাদপত্র সমুহে এই মিউজিয়ামের নাম উল্লেখ করা হয়েছে 'গুইম'।
ইংরেজীতে দেখছি এর বানান 'Guimet Museum' । মুল ফরাসীতে Musée Guimet ।
আগ্রহী পাঠক উইকি থেকে এই মিউজিয়ামের বিস্তারিত দেখতে পারেন 'Guimet Museum'

উইকি জানাচ্ছে প্যারিসে অবস্থিত এই মিউজিয়ামটি মুলতঃ এশিয়ান আর্টের মিউজিয়াম । এশিয়ার বাইরে এতেই রয়েছে এশিয়ান আর্টসের সর্ববৃহৎ সংগ্রহ ।

আরো আগ্রহী পাঠক নিচের লিংক থেকে দেখে নিন এই মিউজিয়ামের নিজস্ব সাইটঃ
museeguimet

সাইটটি ফরাসী ভাষায় তবে ইংরেজী দেখার ও অপশন আছে ।

মিউজিয়ামের সাইট থেকে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে যে, তারা প্রায়ই এশিয়ান আর্টের প্রদর্শনী করে থাকে । এর আগে যে সব প্রদর্শনী হয়েছে এখানে সেগুলো হলোঃ


মিউজিয়ামের আপকামিং ইভেন্ট তালিকা থেকে জানা যাচ্ছে কিছুদিন পর তারা গাংগেয় বদ্বীপের পুরাতত্ব সমুহের প্রদর্শনী করতে যাচ্ছে । লক্ষ্যনীয় ভারতীয় পুরাতত্ব নয়, একেবারে আলাদা করে উল্লেখ করা হয়েছে বাংলাদেশের পুরাতত্ব হিসাবে ।

এ বিষয়ে বিস্তারিত বর্ননা দেয়া হয়েছে নিচের লিংকেঃ
Masterpieces-of-Gange-delta

শুধু বাংলাদেশের পুরাতত্বই নয়, এর পর পর তারা আয়োজন করবে জাপানের শিল্পগুরু HOKUSAI এর শিল্পকর্ম প্রদশর্নী ।

---------------------
---------------------

এ পর্যায়ে আমরা যারা খুব সাধারন মানুষ, একেবারের ভিতরের খবর টবর জানা থেকে বঞ্চিত তাদের বিভ্রান্ত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয় ।
যেখানে এশিয়ার আরো অন্যান্য দেশের শিল্পকর্ম প্রদর্শনী হয়ে গেছে, আরো হবে- সেখানে বাংলাদেশের প্রত্নতত্ব প্রদর্শনে আপত্তি কোথায়? কেনো এর বিরুদ্ধে মামলা? কেনো প্রতিবাদ? মানববন্ধন?

রফিকুন্নবী,শিশির ভট্টাচার্য্যের মতো মানুষেরা যখন এই প্রতিবাদের আয়জনে যুক্ত তখন এই উদ্যোগ নিয়ে নেতিবাচক ধারনা পোষন করা যায়না । নিশ্চয়ই কিছু একটা সমস্যা আছে । সমস্যা না থাকলে কেনোই বা আদালতে মামলা আর কেনোইবা সরকার আদালতের রায় উপেক্ষা করে,প্রতিবাদ আমলে না এনে এই সব সম্পদ ফ্রান্সে পাঠাতে এতো মরিয়া?

সমস্যা আরো জটিল হয়ে যায় যখন আমাদের পত্রপত্রিকায় এই ইস্যু নিয়ে স্পষ্ট তথ্যমুলক কিছু পাওয়া যায়না । সবাই রিপোর্ট করছেন মানববন্ধনের, একজন গ্রেপ্তার হওয়ার । কিন্তু মুল বিষয়টা আসলে কি?
যারা প্রতিবাদের আয়োজক তারা ও কি কোন প্রকারে এই তথ্যটা স্পষ্ট করছেন-কেনো এই প্রতিবাদ কর্মসুচী? যেখানে এশিয়ার অন্য কোন দেশে তাদের প্রত্নসম্পদের প্রদর্শনীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভের কোন খবর পাওয়া যায়নি সেখানে আমরা কেনো ক্ষুব্ধ?

এ বিষয়ে সবচেয়ে দায়িত্ব সরকারের। সরকার ও জানাচ্ছেনা এই প্রত্নসম্পদ কেনো ফ্রান্সে যাচ্ছে? কতোদিনের জন্য যাচ্ছে? কবে ফিরবে? প্রত্নসম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার কি কি ব্যবস্থা গ্রহন করেছে? সোজা কথা বিক্ষুব্ধ গন ও দেশবাসীকে আস্বস্ত করার সহজ দায়িত্বটা সরকার এড়িয়ে গেছে,যেমন সরকার বরাবরই যায় ।

------
------

এ পোষ্টের সকল তথ্য সরবরাহ করেছেন সচলায়তনের শিল্পীবন্ধু জিয়াউল পলাশ
বর্তমান ব্যানারটি ও তার ডিজাইন করা ।


মন্তব্য

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

মোরশেদ ভাই, আপনি তো নতুন প্রশ্নের জন্ম দিলেন। রেজোয়ান ভাইয়ের পোস্ট পড়ে মনে হল সেখানে অনেক প্রশ্নেরই উত্তর দেয়া আছে। যদিও সেটিকে পূর্ণাঙ্গ বলা যাবে না।

প্রশ্ন হল কোর্টে মামলা থাকাবস্থায় কিভাবে এগুলি নিয়ে যায়। সরকার হয়তো ভেবেছে ফ্রান্সের সাথে যেহেতু চুক্তি একটা হয়েছে আর প্রদর্শণীর জন্য যেহেতু সেগুলো পাঠাতেই হবে তাই হয়তো অনেকটা গায়ের জোরেই সম্পদগুলো পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে।

কথা হল পুরা ব্যাপারটাতে স্বচ্ছতা কতটা ছিল। মামলাই বা কেন হল। আগেই বলেছিলাম আমরা সাধারণ মানুষ খুব কমই স্বার্থ দ্বারা চালিত হই। তেনারা কেন মামলা করলেন আর কেনই বা আন্দোলন করলেন তা তাঁদের কাছ থেকেও পরিস্কার নয়। কেউ কেউ ব্যাখ্যা দিয়েছেন ওঁনাদের মতামত নেয়া হয়নি বলেই এই আন্দোলন; কথাটা উড়িয়েও দেয়া যায়না। আমরা সাধারন পাবলিক পত্রিকা থেকে যা পড়ি বা জানি তাই নিয়েই ভাবি। পত্রিকাতে সম্ভবত সেরকম রিপোর্টারের অভাব আছে যারা এসবের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারে, অথবা এসব নিয়ে আগ্রহী মানুষের সংখ্যা হয়তো কম তাই প্রকৃত বিষয় উদ্ঘাটনে তাদের আগ্রহ নেই।

আপনার দেয়া তথ্য অনুযায়ী ব্যাপারটা স্বাভাবিক হলে তো কোন কথাই নেই। তবে অস্বচ্ছ কাঁচের দেয়াল দেয়া ঘরের ভেতরে কি হচ্ছে তা বাহিরে থেকে থেকে বুঝা কঠিন। ফ্রান্সে পাঠানোর নামে এর একটা অংশ আসলে যে পাচার হচ্ছে না তারই বা নিশ্চয়তা কি? আর ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় তো পাবেই।

আবারো ধন্যবাদ।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

সরকার আদালতের রায় উপেক্ষা করে ফ্রান্সে পাঠিয়েছে ঠিক ।
কিন্তু কথা হলো, এটা আদালত পর্যন্ত গড়ালো কেনো? আপত্তিটা কিসের?
দেখা যাচ্ছে, এর আগেও তারা এশিয়ান অন্যান্য দেশের সম্পদ নিয়ে প্রদর্শনী করেছে । অন্য কোন দেশে প্রতিবাদের কোন খবর পাওয়া যায়নি ।
তাহলে আমাদের দেশে কেনো প্রতিবাদ?
প্রতিবাদকারীদের যুক্তি কি? তারা কি চাননা দেশের প্রতন সম্পদের দেশের বাইরে প্রদর্শনী হোক? নাকি তারা আশংকা করছেন-দেশের বাইরে গেলে এগুলো আর ফেরত আসবেনা?

আমি কিন্তু কোথাও স্পষ্ট করে কোন ভাষ্য পেলাম না । না প্রতিবাদকারীদের না সরকারের ।
-----------------------------------------
মৃত্যুতে ও থামেনা উৎসব
জীবন এমনই প্রকান্ড প্রচুর ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

বিপ্লব রহমান এর ছবি

প্রতিবাদকারীরা কিন্তু বলেছে, কতোটি প্রত্নসম্পদ কতোদিনের জন্য কি প্রক্রিয়ায় বিদেশে যাচ্ছে, এর কোনো স্পষ্ট ঘোষণা সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি। তারাও স্বচ্ছতা দাবি করেছে। আর তাদের আরেকটি অভিযোগ, এক্ষেত্রে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ প্রত্নসম্পদগুলোর যথাযথভাবে বীমাও করেনি!

আর সরকার পক্ষ তো প্রত্নমূর্তির মতোই নিশ্চুপ, স্থবির। তাদের এই মহানিশ্চুপতা তথা স্থবিরতাই সমূহ সন্দেহ ঘনিভূত করেছে।


আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

তানভীর এর ছবি

শুনেছি, দরিদ্র রাষ্ট্র থেকে প্রত্নতত্ত্ব সম্পদ লুণ্ঠন ঠেকাতে ইউনেস্কোর যে সনদ আছে তাতে ফ্রান্সের 'গিমে' যাদুঘর সই করে নি। তাই এত আন্দোলন।

তবে আমারো কথা- "যেখানে এশিয়ার আরো অন্যান্য দেশের শিল্পকর্ম প্রদর্শনী হয়ে গেছে, আরো হবে- সেখানে বাংলাদেশের প্রত্নতত্ব প্রদর্শনে আপত্তি কোথায়?"---এইসব আন্দোলন আমার কাছে অনেকটা ফ্রি সাবমেরিন কেবল বসানোর প্রস্তাবে দেশের তথ্য পাচারের অভিযোগ তুলে প্রথমবার যেমন বাতিল করা হয়েছিল (পরে টাকা গচচা দিয়ে আবার বসানো হয়েছে!), তার মত ঠেকছে। হয়ত রাজনৈতিক দলগুলোই দেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার জন্য কলকাঠি নাড়ছে। দেশের প্রত্নতত্ত্ব বিদেশে প্রদর্শনী হলে তো দেশেরই সুনাম। কি জানি ভাই, কম বুঝি আসলেই!!

========
"পুনরায় রৌদ্রহীন রৌদ্রে আমি, পথহীন পথে"

হাসান মোরশেদ এর ছবি

ধন্যবাদ তানভীর ।
একটা জরুরী তথ্য পাওয়া গেলো যে, উক্ত মিউজিয়াম ইউনেস্কোর সনদে স্বাক্ষর করেনি । ধারনা করা যায়,প্রত্নসম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই সনদ জরুরী কেনোনা শেষপর্যন্ত এগুলো বিশ্বসম্পদ ।
এখন জানা দরকার-আফগানিস্তান,ভিয়েতনাম,চীন ও জাপানের যে সকল প্রদর্শনী সেই মিউজিয়ামে হয়ে গিয়েছে সে গুলো নিরাপদ ছিলো কিনা শেষ পর্যন্ত?
নাকি আমাদের শিল্পবোদ্ধারা অন্যদের চেয়ে বেশী সতর্ক ও দায়িত্বশীল?
-----------------------------------------
মৃত্যুতে ও থামেনা উৎসব
জীবন এমনই প্রকান্ড প্রচুর ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

তানভীর এর ছবি

হ্যাঁ, সেটাই। অন্য দেশগুলো যাদের আগে প্রদর্শনী হয়েছে, তাদের পক্ষ থেকে যদি মিউজিয়াম সম্পর্কে যদি কোন অভিযোগ না থেকে, তবে আমাদেরও আপত্তি করার কোন কারণ দেখি না। আর এই ধরনের কোন অভিযোগ উঠলে কোন প্রতিষ্ঠান তো টিকে থাকতে পারবে না। এমন না যে বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব লুন্ঠন করলে এদের আখেরে খুব লাভ হবে!

========
"পুনরায় রৌদ্রহীন রৌদ্রে আমি, পথহীন পথে"

বিবাগিনী এর ছবি

আমাদের শিল্পবোদ্ধারা বেশি দায়িত্বশীল ?কষ্টের ব্যাপার হল,এটা মানা একটু কষ্ট।‌‌কোথাও কোন একটা ঝামেলা আছে।আমিও বেশি বুঝিনা।
ধন্যবাদ হাসান ভাই আর তানভীরকেও।

::একাকিত্বের বিলাস আমার অনেকদিনের সাধ::

‌‌::একাকিত্বের বিলাস আমার অনেকদিনের সাধ::

হাসান মোরশেদ এর ছবি

আমাদের শিল্পবোদ্ধারা বেশি দায়িত্বশীল

এটা সিদ্ধান্ত নয় হে প্রিয় বিবাগিনী । বুঝতে চাওয়া আসলে বিষয় কি? তানভীরের মন্তব্য থেকে তথ্য পাওয়া গেলো ঐ মিউজিয়াম ইউনেস্কো সনদে স্বাক্ষর করেনি । এটাই যদি প্রতিবাদের যুক্তি হয়ে থাকে তাহলে খোঁজ নেয়া দরকার-অন্য দেশগুলো এই তথ্য জেনে শুনেই তাদের শিল্পকর্ম মিউজিয়ামকে দিয়েছে কিনা?
-----------------------------------------
মৃত্যুতে ও থামেনা উৎসব
জীবন এমনই প্রকান্ড প্রচুর ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ইউনস্কো সনদে স্বাক্ষর করার ব্যাপারটা আমিও এনটিভির সংবাদে শুনেছি।

এমন না যে বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব লুন্ঠন করলে এদের আখেরে খুব লাভ হবে!

দু:খিত, একমত নই। ওদের লাভই হবে, বরং বাংলাদেশ চিল্লাফাল্লা করলেও হয়তো কোন লাভই হবেনা (আসলেই যদি তারা প্রত্নতত্বগুলোর এক বা একাধিকটা মেরে দেয়। তখন হয়তো দেখা যাবে তারা কাগজ নিয়ে হাজির হয়েছে যে ওগুলো তাদের কাছে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। এমনটি যাতে না হয়ে থাকে সেটাই কামনা করছি।)

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

ভেতরের বিষয়টা কী সেটা জানা দরকার।
বাংলাদেশে এরকম অনেক ঘটনা ঘটে যার আড়ালে কল-কাঠি নাড়ায় অন্য কেউ।

প্রথম কথা হলো, প্রত্নতত্ত্বের এরকম প্রদর্শনী সারা পৃথিবীজুড়েই হয়ে থাকে। কিছুদিন আগে ব্রিটিশ মিউজিয়াম আয়োজন করেছিলো চীন থেকে আনা মাটির সেনাবাহিনীর প্রদর্শনী। ক'দিন পর মিলেনিয়াম ডোমে শুরু হবে তুতেন খামেনের মমি আর অন্যান্য বিষয়বস্তুর প্রদর্শনী।

সুতরাং দেশের প্রত্নতত্ত্ব বাইরে যাবে না বলে যারা প্রতিবাদ করছেন তাদের বক্তব্য ধোঁয়াটে। তাদের প্রতিবাদের মূল কারণটা পরিষ্কার নয়।

কিন্তু যেভাবে চৌর্যবৃত্তির ভঙ্গিতে এগুলো যাদুঘর থেকে ট্রাকে চড়ানো হলো তা খুবই নিন্দনীয়। যাদুঘর কর্তৃপক্ষের একটা স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেয়া উচিত ছিলো।

যারা মামলা করেছেন তাদেরও স্পষ্ট ব্যাখ্যা দরকার।

ফ্রান্সের সংশ্লিষ্ট মিউজিয়াম প্রত্নতত্ত্ব চুরির সাথে জড়িত, বাংলাদেশের সরকার এসব কাজে পরোক্ষ মদদ দিচ্ছে, ফ্রান্সের এ্যাম্বাসেডার বা বাংলাদেশের আদালত সবাই এরকম একটা দুই নম্বরির সাথে জড়িত - এতো নেগেটিভ তত্ত্ব এক কথায় মেনে নেয়া যায় না।

ভেতরের বিষয়টা কী তা জানা দরকার। বিশেষজ্ঞ কমিটিতে যাদুঘরের কেউ নিশ্চয়ই ছিলেন। ফ্রান্সের মিউজিয়াম আদালতে কী বক্তব্য দিয়েছে এসব কেউ বলছে না। এগুলো প্রকাশিত হওয়া দরকার।

বাংলাদেশ সম্পর্কে আমরা ক্রমাগত দেশের বাইরে ভুল মেসেজ পাঠাচ্ছি। আমাদের দেশে বিদেশিরা চলচ্চিত্র বানাতে যেতে পারে না, ছবি তুলতে যেতে পারে না, সংবাদ সংগ্রহ করতে যেতে পারে না। আমরা কি নিজেদের ক্লোজড সমাজ হিসেবে গড়তে চাই? সেই আদি অকৃত্রিম বাঙালি....

রবীন্দ্রনাথ তো কবেই পথ দেখালেন, দেবে আর নেবে...মিলিবে মেলাবে...

সাংস্কৃতিক বিনিময় খারাপ কিছু নয়। তবে পদ্ধতিতে যদি ত্রুটি থাকে তবে তা দূর করা উচিত। প্রত্নসম্পদ চুরি হওয়ার আশংকা দূর করতে গ্রহণযোগ্য যেসব পদক্ষেপ নেয়া উচিত তার পরামর্শ দিলে সরকার বা যাদুঘর শুনবে না এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। প্রতিবাদকারীরা প্রতিবাদের মূল সুর হওয়া উচিত ছিলো সে জায়গায় - প্রত্নতত্ত্বগুলো সঠিক নিয়ম-কানুন মেনে তবেই দেশের বাইরে পাঠানো হোক।

-----------------------------------------------
খড়বিচালি জোগাড় করি, ঘর বানাবো আসমানে

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ঠিক। পুরা ব্যাপারটা জানা গেলে সত্যিই ভাল হতো।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

ফ্রান্সের মিউজিয়াম আদালতে কী বক্তব্য দিয়েছে এসব কেউ বলছে না।

ফ্রান্সের মিউজিয়াম কি এই মামলার কোন পক্ষ? নাকি বিক্ষুব্ধ নাগরিকগন সরকারী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন?
-----------------------------------------
মৃত্যুতে ও থামেনা উৎসব
জীবন এমনই প্রকান্ড প্রচুর ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

বিবাগিনী এর ছবি

হাসান ভাই আসলে অনেক ধরনের অভিমান আর ক্ষোভ থেকেই হয়ত এমন বলি।উনারা দায়িত্বশীল হলে সবচেয়ে ভাল তো আমাদেরই।
আমার এক জাপানি শিল্পী বন্ধু মাকিকো‌‌ বলছিল জাপান শুধু ফ্রান্সে না,আরো অনেক জায়গায় প্রদর্শনী করে।আর এই যাদুঘরটি সহ ফ্রান্সে চুক্তি মোতাবেক একক ও যৌথভাবে জাপান সরকার তিনবার এমন প্রদর্শনী করেছে ইদানিং।এমন হয়ত হতে পারে যে জাপান বা এমন প্রভাবশালী দেশের সাথে উল্টাপাল্টা কিছু করার সাহস নেই কারো।যেটা আমাদের বেলায় খাটেনা।তাই আমাদের বেশি সাবধান হওয়া দরকার।
::একাকিত্বের বিলাস আমার অনেকদিনের সাধ::

‌‌::একাকিত্বের বিলাস আমার অনেকদিনের সাধ::

কেমিকেল আলী এর ছবি

এমন হয়ত হতে পারে যে জাপান বা এমন প্রভাবশালী দেশের সাথে উল্টাপাল্টা কিছু করার সাহস নেই কারো।যেটা আমাদের বেলায় খাটেনা।

সম্পূর্ণ একমত এই কথার সাথে

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

আমরা কি নিজেদের ক্লোজড সমাজ হিসেবে গড়তে চাই? সেই আদি অকৃত্রিম বাঙালি....

বিগ সি'র সাথে এটা নিয়ে একটা বিতর্কে যেতে চাইছিলাম। কিন্তু ডিসেম্বরের শুরু, টার্ম ফাইনালের মৌসুম তাই বাদ দিচ্ছি, কারণ সময় নাই। তবে একটা কথা মনে হয় আমরা স্বীকার করব-- আমরা অবশ্যই ক্লোজড সমাজ চাইনা কিন্তু নিজেকে খুলে দেয়ার আগে মনে হয় নিজেকে গড়াটা দরকার। মুক্তবাজার অর্থনীতির ব্যাপারটা একটু ভেবে দেখুন। ভারত আর বাংলাদেশের তুলনা করলেই আমি কি বলতে চাইছি সেটা বোঝাতে সক্ষম হব।

আমাদের দেশে কোন কিছুই দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করে করা হয়না। জাতি হিসেবে আমরা আগেও হুজুগে ছিলাম, এখনো হুজুগে। আমাদের নেতাদের উপর আমরা ভরসা করতে পারিনা, কারণ আমরা নিজেরাইতো একে অপরকে ভরসা করতে পারিনা।

বঙ্গোপসাগরে আমেরিকার জাহাজ আসলে আমরা খুবই সন্দেহপ্রবণ হয়ে পড়ি। একই সূত্রে চিন্তা করলে রাস্ট্রে রাস্ট্রে মিলে চৌর্যবৃত্তি করতে পারে এটা ভাবা কি অতি সন্দেহপ্রবণতা? বিশেষত যে সময়ে এবং যে ভাবে ঘটনা ঘটছে তাতে আমার সন্দেহ করার যথেস্ট কারণ আছে।

আপনার মত করে চিন্তা করতে আমার আরো সময় লাগবে, হয়তো আরো অভিজ্ঞতারও প্রয়োজন। প্রোএ্যাকটিভ হতে চাই, কিন্তু পারিপার্শিকতাই আমাকে রিএ্যাকটিভ করে রাখে। মন খারাপ

রাগিব এর ছবি

কিন্তু, একই যুক্তিই তো সাবমেরিন কেবলের জন্য দেখানো হয়েছিলো, তাই না?

সেই অতি সন্দেহপ্রবণতার ফলাফল, তথ্যপ্রযুক্তিতে আমাদের ১৪ বছর পিছিয়ে যাওয়া।

----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
http://www.ragibhasan.com

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

বহমান এর ছবি

সাবমেরিন কেবলের সাথে প্রত্ণতত্ত্ব নিদর্শনের তুলনা করা মনে হয় ঠিক না, সাবমেরিন কেবলের অভাব জনিত ক্ষতি সময়ের সাথে পুরনযোগ্য যার উদাহরন এথনকার EDGE, GPRS, Zoom ইত্যাদি । দেখাযাক আগামী ১০ বছরে কত সাফল্য আসে? কিন্তু প্রত্ণতত্ত্ব নিদর্শনের অভাব কি পুরনযোগ্য?

বিবাগিনী এর ছবি

জাতীয় যাদুঘর আর বরেন্দ্র যাদুঘরের দুজন হর্তাকর্তা কে ছয়মাস পুরাকীর্তিগুলার সাথে ফ্রান্সে ঘুরে বেড়াতে মোটা টাকা দিচ্ছেঐ ফরাসী যাদুঘরটা।কেমন কেমন যেন লাগে।‌‌
::একাকিত্বের বিলাস আমার অনেকদিনের সাধ::

‌‌::একাকিত্বের বিলাস আমার অনেকদিনের সাধ::

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

এটা হয়তো চুক্তির অংশ। কিন্তু সূত্রটা দিলে ভাল হতো।

বিবাগিনী এর ছবি

প্রপ্রে ভাই সমকালে পেলাম লেখা।জানি না হয়তো আমরা বেশি ভয় পাচ্ছি।দোয়া করেন তাই যেন হয়।এইযে লিংক টা
http://www.shamokal.com/details.php?nid=81497
‌‌::একাকিত্বের বিলাস আমার অনেকদিনের সাধ::

‌‌::একাকিত্বের বিলাস আমার অনেকদিনের সাধ::

রাগিব এর ছবি

ক'দিন আগেও দেখলাম, ফারাও তুতেনখামেনের মমির প্রদর্শনী হচ্ছে লন্ডনে, আর পরের বছর সেটা হবে ডালাসে। (http://www.kingtut.org/ ) এরকম প্রত্নসম্পদের আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীটা খুব নিত্য-নৈমিত্তিক একটা ব্যাপার।

আমাদের দেশের "বুদ্ধিজীবী"দের চিন্তাধারা সম্পর্কে খুব উন্নত ধারণা আমার নেই। যখন আমাদের ভবিষ্যত ঝরঝরে করে দেয়া আন্দোলনের সমর্থনে বুয়েটের ক্যাফের চত্ত্বরে বিভিন্ন কবি-সাহিত্যিক টাইপের বুদ্ধিজীবীকে ভাষণ দিতে বা গান গাইতে দেখতাম, তখন এদের চিন্তাধারা সম্পর্কে ধারণা পেয়ে গিয়েছিলাম। আরো পাকাপোক্ত হয়েছিলো, যখন মানসিক সমস্যাগ্রস্ত লায়নকে নিয়ে দেশের বিপুল সংখ্যক "বুদ্ধিজীবী" সরকারী দলের "ক্যাডার"-এর "মাস্তানির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ" জানিয়েছিলো।

এসব কিছু থেকেই বুঝতে পারি, বিবৃতি দেয়া বুদ্ধিজীবীর পাল আসলে আদৌ কিছু না জেনেই এসব বিবৃতিতে সাক্ষর করে থাকে। ঠিক যেমন বই না পড়ে বা কার্টুন না দেখেই অনেক কাটমোল্লা লাফায়।

যদি সরকারী পর্যায়ে চুক্তি হয়ে থাকে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স সরকারের এইসব প্রত্নসামগ্রী নিয়ে, তাহলে সমস্যাটা কোথায়, তা আমার মাথায় আসে না। "নকল বানিয়ে ফেলবে", "আসলটা মেরে দিবে" - এটা নিতান্তই বাল্যখিল্য চিন্তাধারা ... সাবমেরিন কেবলে তথ্যপাচার হয়ে যাবে বলে যারা চিল্লিয়েছিলো, তাদের মতই।

----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
http://www.ragibhasan.com

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- তুতেনখামেনের প্রদর্শনী সারা পৃথিবীব্যাপি নামকরা। বড় বড় উদ্যোক্তারা এটা করে থাকে। বন-লন্ডন-ডালাস ঘুরে বেড়ায় তুতেনখামেন। মাঝপথে কোন অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটলে স্বভাবতই অন্যরা পূর্বের আয়োজকের দিকে অপমানের আঙুল তুলবে।
আমাদের প্রত্নতত্ত্বগুলো কি এতোটাই জনপ্রিয় সারা পৃথিবীব্যাপী?

নেগেটিভ ইস্যুগুলোই মাথায় আগে আসে রাগিব ভাই। গিমে'র জায়গায় লুভর কিংবা জার্মান ভিত্তিক কোন আয়োজক হলে হয়তো এরকম চিন্তাটা ভর করতো না।
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- প্রথম ব্যাপার হচ্ছে আমাদের দেশের কতোজন মানুষ এসব প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদের ব্যাপারে ওয়াকিবহাল? যাদুঘরে সে সম্পদের কি কি রক্ষিত আছে সেটাই বা আমরা কজন জানি? এখন সেই তালিকা থেকে কিছু বাদ পড়লে বা যোগ হলে আমরা কতোটা কনসার্ণ সেখানে? তাইলে শুধু শুধু হাউকাউ কিংবা কোর্ট-কাচারী করা কেনো?

দ্বিতীয় ব্যাপার হলো, গিমে যাদুঘর সম্পর্কে বাজারে খুব কটু একটা কথা প্রচলিত আছে যে তারা আসল জিনিষ নিয়ে পঁচা জিনিষ ফেরত দেয়। এমন একটা জাদুঘরের সঙ্গে ধোয়াটে চুক্তি না করলেই কি হতো না সরকারের?
চীন কিংবা ভারতের কথা আলোচ্য না। এদের সঙ্গে টেটনামী করে খোদ বড়মামাও শান্তি পাবে না। কিন্তু আমরা? আমাদেরকে ত্রিশূলে বসিয়ে তেরাস্তার মাথায় দাঁড় করিয়ে রাখলেও কি টু শব্দটি করতে পারবো আমরা? এই অবস্থায় সর্বোচ্চ আদালতের আদেশটি অমান্য করে কাভার্ড ভ্যানে করে যাদুঘরের দূঃপ্রাপ্য জিনিষ গুলো কেনো পাঠানো লাগবে, কীসের আশায়, কোন অঙুলি হেলনে?
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

গিমে আসলের বদলে নকল ফেরত দেয়, এই অভিযোগটা ব্লগে অন্যান্য জায়গায়ও পড়লাম। কিন্তু সত্যি কথা বলতে নানান ভাবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে গুগল সার্চ করেও গিমে'র ব্যাপারে এই জাতীয় কোন গুজবের ক্ষীণতম আভাস আমি ইন্টারনেটে কোথাও পাইনি। এরকম আকাম যদি একটা মিউজিয়াম করে থাকে, সেটার কথা কোন না কোনভাবে মিডিয়া বা নেটে আসতে বাধ্য। কিন্তু কেউ কোন সোর্স দেখাচ্ছেন না। বিশ্বাসযোগ্য সূত্র পেলে ভালো হতো। এমনিতেই এতো ধোঁয়াটে কেস।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

দৃষ্টিপাত ব্লগে নাঈম মোহাইমেন একটা লেখা দিয়েছেন - সেখানে কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে গিমে'র বিরুদ্ধে। এই আলোচনায় সেগুলা কাজে দিতে পারে।

নাঈমের ব্লগে একজন মন্তব্যকারী ফরাসী দূতাবাসের সাংস্কৃতিক এটাশে'র বাজে রকমের উন্নাসিকতার উদাহরণ দিয়েছেন। দুঃখজনক ব্যাপার।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

বিবাগিনী এর ছবি

ফ্রান্স হঠাৎ আমাদের পূরাকীর্তি নিয়ে মাতল কেন এইটা একটু মেছো মেছো লাগছিল।কিন্তু তারা তো ১৯৯৩ থেকেই এ নিেয়ে কাজ করছে বলে পড়লাম http://nation.ittefaq.com/issues/2007/11/16/news0360.htm
কি জানি।সব কেমন যেন এলোমেলো।

‌‌::একাকিত্বের বিলাস আমার অনেকদিনের সাধ::

‌‌::একাকিত্বের বিলাস আমার অনেকদিনের সাধ::

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

পশ্চিমে বড় বড় মিউজিয়ামগুলা কোন শো নামানোর দুই-তিন-চার বছর আগে থেকে কাজ শুরু করে। গিমে'র মূল ফোকাস এশিয়া-বিষয়ক শিল্প-পুরাকীর্তি। তাই এই শো অকস্মাৎ বা অপ্রত্যাশিত নয়।

বরং নাঈম মোহাইমেন যে সব অভিযোগ এনেছেন, সেগুলাতে মনোনিবেশ করা যেতে পারে। সেগুলা অনেক বেশী প্র্যাক্টিকাল এবং ন্যায়সংগত অভিযোগ বলেই মনে হয়েছে। বিশেষত এই অংশ চোখে পড়ার মত --

Musee Guimet is one of 18 museums that have signed a Declaration on Importance and Value of Universal Museums, which opposes returning art works, especially ancient ones, to their original owners. This is in direct opposition to the UNESCO Convention on Stolen and Illegally Exported Cultural Objects (1995).

Opposes returning art works to their original owners! এইটাকে বাড়াবাড়ি বলতেই হবে। সবাইকে আরেকবার দৃষ্টিপাতে নাঈমের লেখাটা দেখতে অনুরোধ করবো।

-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

অনেকেই হয়তো আপনার দেয়া লিংকে যাবেননা, তাই আমি
আরএকটু যোগ করছি:
"
c) Guimet director Jean-Francois Jarriage in the late 50’s had worked in the department of archeology in Bangladesh (then East Pakistan). During this period, one of the most prized artefacts, a relic casket was taken to France for restoration. Mr. Zakaria, former secretary of the ministry of culture has been unsuccessfully campaigning for the return of the casket for the last 49 years."
সূত্র: http://www.drishtipat.org/blog/2007/12/01/tintin-bengal/

বজলুর রহমান এর ছবি

এটাই তো যথেষ্ট প্রমাণ!
আমার সন্দেহ হচ্ছে পশ্চিমা দেশগুলোর ধারণা বাংলাদেশ এক তালেবানী দেশে পরিনত হবে ( হয়তো তাদেরই এটা পরিকল্পনা)। সেক্ষেত্রে এখানকার বৌদ্ধ ও হিন্দু পুরাকীর্তিগুলো আফগানিস্তানের মতো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং এটা হয়তো তাদের ধারণা অনুযায়ী সুরক্ষার একটা ব্যবস্থা। নিয়ে যাবে , কিন্তু আরে ফেরত দেবেনা, অন্তত আসলটি নয়। এর আগে গিমে জাদুঘর আফগান প্রদর্শনী করেছে লুন্ঠিত পুরাকীর্তি দিয়ে, যদিও এই জাদুঘর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রত্নতত্ত্বে বিশেষায়িত।
যদি সৎ উদ্দেশ্যে এটা একটা সাময়িক প্রদর্শনী হয় আমাদের বরং সাধুবাদ জানানো উচিত। ভ্রাম্যমান প্রদর্শনী থেকে অন্তত প্যারিসে অবস্থানরত বাঙ্গালীরা এবং তাঁদের বন্ধু-বান্ধবরা বাংলার ঐতিহ্য সম্পর্কে কিছু ধারণা পাবেন।
তবে তালিকা যে সম্পূর্ণ ছিল সেই সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া, এবং ফেরত আসার পরে আবার বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মৌলিকত্ব যাচাই করা প্রয়োজন।

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

আরো একটা লিংক এই বিষয়ে - কমেন্ট সেকশানে খুব দরকারী প্রশ্ন চলে আসছে।

http://www.drishtipat.org/blog/2007/11/30/guimet-protests/

তবে মজার উপর ডবল মজা। নাঈম অভিযোগ করেছেন যে গিমে একটা শয়তানী ডিক্লারেশান সই করেছে। গুগল করলাম চেক করার জন্যে। ডিক্লারেশান খুঁজে পেলাম, ১৮টা মিউজিয়ামের নামও পেলাম যারা এই ডিক্লারেশানে সই করেছে। কিন্তু গিমে'র নাম নেই তাতে। ফ্রান্স থেকে শুধু মাত্র ল্যুভ্‌-এর নাম আছে।

ঘোলা জল ঘোলাতর... নাঈমকে এই তথ্যের ব্যাপারে প্রশ্ন করলাম। তিনি হয়তো আরো জানবেন এ বিষয়ে।

http://www.clevelandart.org/museum/info/CMA206_Mar7_03.pdf

-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

আরিফ জেবতিক এর ছবি

বিষয়টির গভীরে যাওয়ার জন্য হাসান মোরশেদের চেষ্টায় সাধুবাদ ।

যাইহোক ,নৈতিক ভাবে আমি এই শিল্পকর্মের ফ্রান্স যাওয়ার বিরোধী ।

হাসান মোরশেদ যে প্রদর্শনীগুলোর তালিকা দিয়েছেন , সেগুলোতে আরেকবার চোখ বুলাই :

আফগানিস্তানের প্রত্নতত্ব প্রদর্শনী
চৈনিক শিল্পকর্মের প্রদর্শনী
ভিয়েতনামের ভাস্কর্য প্রদর্শনী
জাপানী চিত্র প্রদর্শনী

এখানে সদয় পাঠকের কাছে অনুরোধ বিষয়টি খেয়াল করার জন্য ।

১. প্রত্নতত্ব প্রদর্শনী হয়েছে শুধু মাত্র আফগানিস্তানের ।(আফগানিস্তান সম্মন্ধে নতুন করে সচল পাঠকদেরকে অবগত করার চেষ্টা করার দরকার আছে কি ? )

২.ভিয়েতনামের ভাষ্কর্য কিংবা জাপানি চিত্রকর্মের মতো বাংলাদেশের ভাষ্কর্য কিংবা চিত্রকর্ম নিয়ে প্রদর্শন হলে আমার আপত্তি নয় বরং উল্লাস থাকতো ।

---------------------------------------------
পুরো বিষয়টি অস্বচ্ছ । আর অস্বচ্ছ প্রক্রিয়া বরাবরই সন্দেহ আর গুজবের জন্ম দেয় ।
কতোটি প্রত্মতত্ত্ব নেয়া হয়েছে , সেগুলোর লিস্ট এবং ছবি এভেইলেবল নয় ।
তুতেন খামেনকে হজম করা সম্ভব হবে না ,কিন্তু গরীব দেশের অনির্দিষ্ঠ সংখ্যক প্রত্নতত্ত্বকে হজম করা চোখের নিমিষে সম্ভব ।

স্মরন করা যেতে পারে যে কিছু দুর্লভ সিনেমার প্রিন্ট অনেকদিন ধরেই ভারত চাইছিল ,কিন্তু সেগুলোর বিনিময় মূল্য বাংলাদেশ যা চেয়েছিল সেটা ভারত দিচ্ছিল না ।
পরবর্তীতে তথাকথিত ফিল্ম উৎসবের নামে বাংলাদেশ সরকারের কর্তাব্যক্তিরা দেশের সম্মান বৃদ্ধির স্বার্থে এই প্রিন্টগুলো প্রদর্শনের জন্য ভারত পাঠিয়েছিলেন । ছবিগুলো সেখান থেকে ‌"হারিয়ে গেছে । "

নিকট অতীতের এই ধরনের সম্মান বৃদ্ধিজনিত সফর ও হারানোর কাহিনীতে আমি আশংকিত ।

কেউ হয়তো সিদুরে মেঘ দেখলে কবিতা লিখেন ,কিন্তু আমি ভয় পেয়ে দড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতেই চাই ।

বিবাগিনী এর ছবি

আমি শেষ মেষ অনেক হাউকাউ ভেবে কূল পাইনা।
আমি আরিফ ভাইয়ার দলে।
‌‌::একাকিত্বের বিলাস আমার অনেকদিনের সাধ::

‌‌::একাকিত্বের বিলাস আমার অনেকদিনের সাধ::

মুজিব মেহদী এর ছবি

প্রত্নবস্তু ফ্রান্সে নেয়ার বিরোধিতা যাঁরা করছেন, তাঁরা অযথাই করছেন ভাবতে ভালো লাগে না আমার। বিরোধিতা করা যেতে পারে এরকম কিছু তথ্য অনেকের মন্তব্যেই এসেছে। এক্ষেত্রে আরো যেসব কারণ কাজ করে থাকতে পারে বলে আমার মনে হয়।

১. বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর-এর Antiquities (Amendment) ordinance ১৯৭৬ এর ২২ ধারা অনুসারে বিদেশে প্রত্নবস্তু বিনিময়ের ক্ষেত্রে অনন্য প্রকৃতির প্রত্নবস্তু দেয়া যাবে না। প্রেরিত প্রত্নবস্তুগুলোর মধ্যে অনেকগুলো অনন্য প্রকৃতির, যার কোনো দ্বিতীয়টি এদেশে নেই । যেমন ময়নামতির ব্রোঞ্জ নির্মিত বজ্রসত্ত্ব, অবলোকিতেশ্বর, পাহাড়পুরের বুদ্ধমূর্তি, অর্ধনরেশ্বর প্রভৃতি।
২. যতদূর জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে ফ্রান্সের গিমে জাদুঘরের, ফ্রান্স সরকারের সঙ্গে নয়।
৩. প্রত্নবস্তুগুলো গিমে জাদুঘর তাদের তত্ত্বাবধানে নিচ্ছে। অথচ চুক্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে প্রত্নবস্তুগুলো ফ্রান্সে যথাযথভাবে আনা নেয়া এবং তদারকির জন্য জাতীয় জাদুঘরের একজন এবং অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করবেন। এতে চুরি হলে বা নষ্ট হলে দায়িত্ব বর্তাবে আমাদের উপর।
৪. বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক সংগঠক কামাল লোহানী কিছুক্ষণ আগে এক বক্তৃতায় জানালেন যে, তথ্য আছে গিমে জাদুঘরের বর্তমান পরিচালক পাকিস্তান আমলে জাদুঘরের মহাপরিচালক ড. নাজিমউদ্দিনের আন্ডারে চাকরি করতেন। তখন তিনি একটি প্রত্নবস্তু সরিয়ে নিয়েছিলেন।
৫. শোনা যাচ্ছে, বৈধ এই চালানটির সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে দেশের নানাপ্রান্ত থেকে উদ্ধার হওয়া প্রত্নবস্তুর একটি চালানও যাবে। যেগুলোর সঠিক হিসাব কারো কাছেই নেই।

আরেকটি তথ্য ব্যাপারটা নিয়ে অন্যরকম করে ভাবতে সহায়তা করতে পারে। সেটি হলো এই যে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের মোকাম্মেল হোসেন ভূঁইয়া তথ্য দেন যে, ১৯৮৭ সালে ফ্রান্স বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে ইউরোপের বিখ্যাত চিত্রকর্মের একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করে; কিন্তু প্রদর্শিত সমস্ত চিত্রকর্মই ছিল মূল চিত্রকর্মের অনুকৃতি। এ বিবেচনায় এটা বলাই যায় যে, প্রদর্শনীর জন্য আমাদের দেশের অনন্যপ্রকৃতির প্রত্নবস্তুগুলোও হয়ত রেপ্লিকা তৈরি করে নেয়া যেত।
...................................................................
অসংখ্য 'নেই'-এর ভিড় ঠেলে
জ্বলজ্যান্ত 'আছে' খুঁজে পাওয়া হলো আসল ফকিরি

... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী

মুজিব মেহদী এর ছবি

একটি সংশোধনী:
ড. নাজিম উদ্দিন আহমেদ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক।
...................................................................
অসংখ্য 'নেই'-এর ভিড় ঠেলে
জ্বলজ্যান্ত 'আছে' খুঁজে পাওয়া হলো আসল ফকিরি

... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আগে সবকিছু কেড়ে নিয়ে যেতো
আর এখন আমরা নিজেরাই নিয়ে দিয়ে আসি

উপনিবেশ আর আধুনিক গণতন্ত্রে এইটাই পার্থক্য

তানভীর এর ছবি

উদ্ধৃতি
আফগানিস্তান সম্মন্ধে নতুন করে সচল পাঠকদেরকে অবগত করার চেষ্টা করার দরকার আছে কি ?

অবগত করলে বাধিত হব। আফগানিস্তানের আজকে দুরাবস্থা হলেও একসময় আফগানিস্তান বাংলাদেশের চাইতেও অনেক সমৃদ্ধ ছিল। অতীতে একসময় কাবুল/গজনী থেকেই উপমহাদেশ শাসন করা হত। বাংলা কখনো উপমহাদেশ শাসন করেছে বলে আমার জানা নেই। আফগানিস্তানে পাওয়া বামিয়ান বুদ্ধ মূর্তি (যেগুলো তালেবানরা ধ্বংস করেছিল) মানের কোন পুরাকীর্তিও বাংলাদেশে আছে বলে জানি না। পুরাকীর্তি যেগুলো মিউজিয়ামে প্রদর্শিত হয়েছে সেগুলো যে নিম্নমানের তাও বলা যাবে না।

আমাদের অবশ্যই প্রত্ন-সম্পদ বিদেশে পাঠানোর আগে ভালো করে খোঁজ-খবর নিয়ে এবং স্বচ্ছ্ব প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই পাঠানো উচিত। তবে আমাদের সবসময়ই এই অতিমাত্রার সন্দেহ-প্রবণতা এবং অতি গুরুত্বপূর্ণ ভাবার মানসিকতা আমার কাছে খুবই হাস্যকর ঠেকে। আমাদের জলসীমায় বিদেশী জাহাজ সাহায্য করতে এলে আমরা ভাবি ঘাঁটি করতে এসেছে, সাবমেরিন কেবল বসাতে গেলে ভাবি তথ্য পাচার হয়ে যাচ্ছে, দেশের নিরাপত্তার ভয়ে এশিয়ান হাইওয়েতে যুক্ত হই না, বন্দরে প্রাইভেট টার্মিনাল করতে দেই না, এই রকম আরো কত কিছু! বাংলাদেশ কি সত্যিই এত গুরুত্বপূর্ণ যে সবাই লোলুপ দৃষ্টিতে দখল করে নেবার জন্য, সবকিছু হাতিয়ে নেবার জন্য তাকিয়ে আছে? অনেক কষ্ট হয় যখন দেখি বাংলাদেশ নামটাও অনেক বিদেশী জানে না, অনেক কষ্ট লাগে যখন বিদেশীরা বাংলাদেশ বলতে শুধুমাত্র একটি দারিদ্র-কবলিত, দুর্যোগ-আক্রান্ত দেশ বোঝে। আমরা অনেক সময় গর্ব করে বলি এখন আমরা দীন-হীন হলেও অতীতে নাকি আমরা খুবই সমৃদ্ধ ছিলাম, বিদেশীরা সব লুটে-পুটে নিয়ে গেছে বলেই আজ এই অবস্থা। আমিও তাই ভাবতাম। কিছুদিন আগে গোলাম মুরশিদের 'হাজার বছরের বাঙ্গালী সংস্কৃতি' নামে একটা গবেষণামূলক বই পড়লাম। জানলাম, হাজার বছর আগেও আমরা একইরকম দীন-হীন ছিলাম। সমৃদ্ধ ছিল অন্যান্য জনপদ। মোগল কর্মচারীদের ধরে-বেঁধে বাংলায় পাঠাতে হত। কারণ, এই জংলা, গরীব জায়গায় কেউ থাকতে চাইত না। আমরা গল্প করি, শায়েস্তা খানের আমলে টাকায় আট মণ চাল পাওয়া যেত। যেত, কিন্তু ওই একটা টাকা উপার্জনের সামর্থ্যও অধিকাংশ লোকের ছিল না। আমাদের অতীত ইতিহাস কেবল জমিদার-রাজা-বাদশা দ্বারা শোষণের ইতিহাস। দৃষ্টিপাতের ব্লগে দেখলাম একজন ফরাসী এটাশের উদ্ধৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশের নাম নাকি প্যারিসের অধিকাংশ লোক জানে না। এটা নিয়ে কি আমরা রাগান্বিত হব প্যারিসবাসী মূর্খ বলে? বরং রূঢ় বাস্তবতা হল পৃথিবীর অধিকাংশ লোকই বাংলাদেশের নাম জানে না as they give a damn to Bangladesh. বিশ্ব রাজনীতি-অর্থনীতি-সমাজে বাংলাদেশের কি কোন অবদান আছে যে কারো এই দেশের নাম জানা জরুরী? অথচ আমরা, আমাদের রাজনীতিকদের দেখে মনে হয় এই বাংলাদেশের বাইরে বাকী পৃথিবীর কোন অস্তিত্বই নেই, বাকী পৃথিবীর সাথে তাল মেলাবার কোন তাড়া নেই, কুয়ো পাড়ের ব্যাঙ্গের মত আমরাও নিজেদের নিয়ে খালি ঘ্যানর-ঘ্যানর করতেই ব্যস্ত আর ব্যস্ত চিলে কান নিয়ে যাওয়ার ভয়ে।

দুঃখিত, অপ্রাসঙ্গিক কিছু মন্তব্য করলাম। কাউকে যদি দুঃখ দিয়ে থাকি তবে আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী।

========
"পুনরায় রৌদ্রহীন রৌদ্রে আমি, পথহীন পথে"

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

তানভীর ভাই,

আমার মনে হয় দাবীটা এখানে স্বচ্ছতার। পুরাপুরি ১০০% স্বচ্ছতা দাবী করার অধিকার আছে প্রটেস্টারদের। গিমে কত বড় বা ছোট যাদুঘর, সেটা গুরুত্বপূর্ণ না। যা প্রত্নসম্পদ যাচ্ছে সেটার কি ঐতিহাসিক গুরুত্ব, তা নিয়েও তর্ক হচ্ছে না।

বরং পুরা ব্যাপারটা একটা জবরদস্তি আর ঘোলাটে তাড়াহুড়া প্রসেসের ভেতর দিয়ে গেলো, এটা অস্বীকারের উপায় নেই। সেটা সরকারী কর্মকর্তাদের অদক্ষতা আর অপেশাদারীত্বের জন্যেই হোক বা গিমে সেই অদক্ষতার সুবিধা নিলো কিনা, সে জন্যেই হোক। পুরা ঘটনাটা গিমে আর সরকারের জন্যে একটা PR disaster-ই বলা চলে। কারণ প্রটেস্টারদের যে দাবী (যার সব না হলেও কিছ কিছু আমার কাছে ন্যায়সংগত ঠেকেছে - দ্রষ্টব্য দৃষ্টিপাত), সেটা তো তারা পাত্তা দিলোই না, কোন জবাব দেওয়ারও চেষ্টা করলো না, উলটা মানুষ পিটিয়ে রাতের আধাঁরে একটা মেলোড্রামা তৈরী করলো। আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন, যে এই দাবীগুলা যদি কোন পশ্চিমা দেশে তুলতো, তাহলে কমিটি গঠন করে পুরা প্রসেস তিনবার রিভিউ করে তবেই মাল ছাড়া হতো।

অনেকে গিমে বেসরকারী মিউজিয়াম, সেটা নিয়ে আপত্তি তুলেছেন। সেটাও জরুরী না। এখন পশ্চিমের বেশীর ভাগ মিউজিয়ামই ঐ ভিত্তিতে চালানো হয়, যদিও বা অনেক ফান্ডিং সরকার থেকে আসলো।

বিদেশীদের নিয়ে অতিরিক্ত সন্দেহপ্রবণতা আমাদের মজ্জাগত এতে আপনার সাথে দ্বিমত নেই। খারাপ লাগে যখন দেখি, সাবমেরিন কেবল বা হাইওয়ে নিয়ে চিল্লা-পাল্লা বা যে কোন রকমের বিদেশী বিনিয়োগ প্রপোজাল বা বেসরকারীকরণ নিয়ে হৈচৈ। দেশে পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের অভাবে ৪ থেকে ৫ লক্ষ মানুষ প্রতি বছর বাইরে চলে যাচ্ছে, এবং ভবিষ্যতে আরো লক্ষ লক্ষ যাবে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। যারা সনাতনী অনুতপাদনশীল অর্থনীতি নিয়ে খুশী থাকতে চান, সেটা তারা বুঝবেন।

কিন্তু এটাও ঠিক যে পুরাপুরি ১০০% ট্রান্সপারেন্সি দাবী না করে আমরা শুধুমাত্র পশ্চিমাদের গুডউইলের উপর ভরসা করতে পারি না। বিশেষ করে এই প্রত্নগুলার ব্যাপারে। তৃতীয় বিশ্বের অশিক্ষিত চাষাদের বোকামি দেখে তাদের সাথে ঠগবাজি করতে চাওয়াটা এখনো পশ্চিমাদের জন্যে অসম্ভব কিছু না। এটা সন্দেহ না, কেবলমাত্র ডিউ ডিলিজেন্স।

-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

আরিফ জেবতিক এর ছবি

তানভীর আইয়ের মূল্যবান কমেন্ট পড়ে বাধিত হলাম ।
(সমস্যা হলো যা বুঝাতে চাই , সেটা লিখে বুঝাতে পারি না , এ কারনেই আজতক আর লেখক হয়ে ওঠা হলো না ।) যাক , আফগানিস্তানের সমৃদ্ধ ইতিহাসের কথা তানভীরের কাছ থেকে জেনে সমৃদ্ধ হলাম । উনাকে কৃতজ্ঞতা ।

তবে আমার আলোচ্য দিক আফগানিস্তানের ইতিহাস নয় বরং গত কয়েক বছরের রাজনৈতিক অরাজকতা । এধরনের অরাজকতায় যে কোন দেশের সম্পদ লুন্ঠন খুবই স্বাভাবিক বিষয় এবং আফগানিস্তান থেকে প্রত্ন সম্পদ বের করে নিয়ে আসা হয়তো খুব অস্বাভাবিক কিছু নয় । হাসান মোরশেদের পোস্টের সূত্র ধরে আমি এই দিকে জোর দিচ্ছি যে আফগানিস্তানকে বিবেচনায় নেয়াটা আমাদের জন্য সঠিক হবে না ।

তানভীর আইয়ের মতো যারা বিশ্বাস করেন এবং বলেন ,এমন না যে বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব লুন্ঠন করলে এদের আখেরে খুব লাভ হবে! তারা নিশ্চয়ই এই প্রত্ন সম্পদ ফ্রান্সে পাঠানোর উদ্যোক্তা , কিন্তু বাকি সবাই এরকম ভাবতে পারছেন না ।

প্রত্ন সম্পদের প্রদর্শনীর সাথে সাবমেরিন কেবলের তুলনাটা বেশ কয়েক জায়গায় দেখলাম , এবং এই দুইটি কিভাবে পরষ্পরের তুলনা হতে পারে ,এখন পর্যন্ত সেটা বুঝতে পারি নি ।সাবমেরিন কেবলে সময়মতো যুক্ত না হতে পারায় আমাদের কতোটুকু ক্ষতি হয়েছে সেটা নিয়ে যদি হাসান মোরশেদ আরেকটি আলোচনার সূত্রপাত করেন ,সেখানে আলোচনায় যুক্ত হওয়ার আগ্রহ রাখি । কিন্তু প্রত্ন সম্পদের বিদেশ যাওয়ার বিষয়টি একটি ভিন্ন বিষয় ।

নীতিগত ভাবে প্রত্ন সম্পদের বিদেশে প্রদর্শনীর ব্যাপারে কেউ আপত্তি করছেন বলে চোখে পড়ে নি , আমি নিজেও প্রদর্শনীর বিষয়ে কোন দ্বিমত করছি না , কিন্তু নিম্নোক্ত কারনে সন্দেহ প্রকাশ করতে হচ্ছে ।

১. কতোগুলো পত্ন সম্পদ বাইরে গেছে সেই তালিকাটি প্রকাশ্যে আসে নি ।এসেছে শুধু সংখ্যা । (সেটাও অনেক আলোচনার পরে ।)

২. এই প্রদর্শনীর সাথে ফ্রান্স সরকারের কোন সংশ্লিষ্ঠতা নেই ।

৩.এই প্রদর্শনীর জন্য পত্ন সম্পদগুলোর বীমা মূল্য জানানো হচ্ছে না ।

৪. গিমে জাদুঘর নিয়ে যে অভিযোগের কথা শুনছি এখানে ওখানে , সেটা আশংকা করার মতো ।

৫. প্রত্ন সম্পদ ফ্রান্স বা অন্য কোন জায়গায় প্রদর্শনের সময় সেই দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস সেগুলোর দায়িত্বে থাকা উচিত ,তারাই জাদুঘরের সাথে সমন্বয় করবে ,কিন্তু সরাসরি জাদুঘরের দায়িত্বে দিয়ে দেয়াটা সঠিক হবে কি না দ্বিতীয়বার চিন্তার সুযোগ আছে ।
-------------------------------------
বাংলাদেশ নিজেকে অতিমাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভাবে ,এটা প্রায়শই বিরক্তিকর এই বিষয়ে তানভীরের সাথে একমত । কিন্তু তৃতীয় বিশ্বের একটা দেশ যখন করাপ্ট সরকার যন্ত্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ,তখন সাধারন জনগনের সচেতনতা সেই দেশের জন্য খারাপ না ।

রাজার কাছে অনেক ধন আছে দেখে গরীব চড়ুই যেন তার নিজের কাছে থাকা আধুলিটা অপব্যয় করে না বসে ,সেটাও দেখতে হবে।

হিমু এর ছবি

বিদেশীদের, বিশেষ করে শ্বেতাঙ্গদের ব্যাপারে আমাদের আস্থার জায়গাটা তৈরি হয় কোথায়? সেদেশে বাস করে তাদের আচরণ দেখে?

বাগদাদে হামলার কয়েকদিনের মাথায় বাগদাদ যাদুঘরকে লুণ্ঠন করা হয়েছে। হালাকু খান না, শ্বেতাঙ্গ সৈন্য, সাংবাদিক, বেসামরিক কর্মকর্তার ব্যাগে করে, পকেটে করে নিয়ে গেছেন হাজার হাজার বছরের পুরনো প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ। সোজা বাংলায় এরা চোট্টা। এই চোট্টাদের কোন অভাব কোন জাতির মধ্যেই নেই। দুঃখিত, দে আর নট হোলিয়ার দ্যান আজ। তাদের জীবনযাত্রার মান যখন উন্নত ছিলো না, তারা আমাদের চেয়েও তখন বর্বর ছিলো। বাংলাদেশ কখনো উপমহাদেশ শাসন করেনি, কিন্তু ভিনদেশে গিয়ে মানুষকে মেরে কেটে লুটেও শেষ করেনি।

একটা যাদুঘর যদি দেখে, তৃতীয় বিশ্বের কোন দেশের যাদুঘরের কর্মকর্তারা অদক্ষ, তারা তার সুযোগ নিতেই পারে। যেভাবে কেটেকুটে মূর্তি পাঠানো হচ্ছে ফ্রান্সে, তা একটু অদ্ভূত, এতো তাড়াহুড়ো কীসের? মিউনিখের আলটে পিনাকোঠেকে দেখার সময় শুনেছি, কখনো কখনো কোন চিত্রকর্ম প্যাক করার জন্য সপ্তাহ পর্যন্ত লেগে যায়। আমাদের নিদর্শনগুলি কি এতোই ফেলনা?

গিমে যাদুঘরে এই নিদর্শনগুলি প্রদর্শিত হলেই সারা পৃথিবী বাংলাদেশের নাম শুনে ধন্য ধন্য করবে না। তবে প্রদর্শনে আপত্তি জানানোর কিছু নেই, ব্যাপারটা রয়েসয়ে যত্ন করে হলে আরো ভালো লাগতো। আমার আপত্তি নিদর্শনগুলির প্রতি উভয় পক্ষের যত্ন ও মনোযোগের অভাব।

অন্যান্য দেশের উদাহরণ এসেছে নানা প্রসঙ্গে। আসলেই সব দেশকে একভাবে দেখা হয় না। একজন বাঙালিকে একজন জাপানির চেয়ে অনেক বেশি নাজেহাল হতে হয় পদে পদে, কারণ সে গরীব দেশের একটা লোক, কে জানে হয়তো চোর! আজকের ইয়োরোপ মিষ্টি কথা বলে সম্পদ এক জায়গায় চড়ো করেনি, হাতে তলোয়ার আর বন্দুক নিয়ে, লক্ষ লক্ষ মানুষ হত্যা করে জড়ো করেছে। সভ্যতার বড়াই এরা করে ঠিকই, কিন্তু বাস্তব সত্য হচ্ছে এরা সভ্যতা ধ্বংস করেছে সবচেয়ে বেশি।

গরীবের বউ সবার ভাবী, সবাই সুযোগ নিতে চায়। বুদ্ধিজীবীদের সুযোগসন্ধানী আচরণের ব্যাপারে অভিযোগ এসেছে, কিন্তু কেন তারাই সব সময় প্রতিবাদে এগিয়ে আসেন? কেন একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, কেন একজন ব্যারিস্টার, কেন একজন ডাক্তার-প্রকৌশলী-ব্যাঙ্কার এগিয়ে এসে সোচ্চার হন না এ ব্যাপারে?


হাঁটুপানির জলদস্যু

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

ধন্যবাদ হাসান মোরশেদ সহ সবাইকে। এই ব্যাপারটা নিয়ে আমিও আপনাদের সবার মতই ধাঁধাঁয় ছিলাম। আমিও নকল ফেরত দেবার কথাই শুনেছিলাম। অনেক কিছুই জানলাম এই পোস্ট ও কমেন্টগুলো পড়ে। সাদা দেখলেই পা* খুলে দেওয়ার বাতিক তো আমাদের আজকের না। যুগ যুগ বাইরে থেকেও অনেকের সাদাপ্রীতি যায় না। সুতরাং দেশের কর্তাদের দিকটা বুঝতে পারছি। অন্তত আদালতের রায় পর্যন্ত অপেক্ষা করা যেত। অবশ্য, যেমন দেশ তার তেমনই তো আদালত হবে!

হাসান মোরশেদ এর ছবি

আলোচক সকলকে অশেষ কৃতজ্ঞতা ।
সুবিনয় মুস্তফী,তানভীর আই,আরিফ জেবতিক,শোহেইল মতাহির সহ সকলের মন্তব্য থেকেই বেশ কিছু জরুরী তথ্য বের হয়ে এসেছে ।

আমি এখনো কনফিউজডদের দলে । এটা যদি স্রেফ একটা প্রদর্শনী হয়ে থাকে তবে তাই হোক । কিন্তু যদি প্রদর্শনীর নামে সম্পদ হারানোর আশংকা থাকে-তাহলে প্রতিবাদ প্রতিরোধ খুব জরুরী ।সফল হোক বা না হোক । সব প্রতিবাদ সফল হয়না-তাই বলে মানুষ মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকেনা ।

সরকার কনফিউশন তৈরী করে । হয় ইচ্ছে করেই করে কিংবা মানুষকে তারা তুচ্ছ জ্ঞান করে । প্রতিবাদকারী হিসেবে যাদের নাম এসেছে,তারা শ্রদ্ধেয় জন । তাদের উপর বিশ্বাস কিংবা ভরসা হারানোর কিছু নেই । বাংলাদেশে 'বুদ্ধিজীবি' একটা কমন গালি হয়ে দাঁড়িয়েছে । বুঝে না বুঝে সকলকে আমরা এক কাতারে ফেলে দিতে উৎসুক । একজন র'নবী কিংবা শিশির ভট্টাচার্য্য যখন রাস্তায় নেমে আসেন আমি তাকে গুরুত্বপুর্ন মনে করি ।

তবে প্রতিবাদকারীদের পক্ষ থেকে তথ্য সরবরাহে ঘাটতি আছে । দেশে যারা আছেন তারা ঠিক কতোটুকু তথ্য পেয়েছেন জানিনা কিন্তু আমরা যারা দেশের বাইরে-তারা যে এই প্রতিবাদের সপক্ষে খুব জোরালো তথ্য পাইনি তার প্রমান তো এই পোষ্ট । বাংলাদেশের কোন পত্রিকাতেই এমন কোন ফিচার আর্টিকেল চোখে পড়লোনা যেখানে দু পক্ষের স্পষ্ট বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে ।

আমার আরো জানতে ইচ্ছে করছে-আলোচ্য মামলা বিষয়ে । মামলার বিষয় কি ছিলো? প্রদর্শনীর জন্য প্রত্নসম্পদ আদৌ পাঠানো যাবেনা নাকি যথেষ্ট নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে পাঠানো যাবেনা? আদালত আসলে কি রায় দিয়েছে কিংবা মামলার প্রকৃত অবস্থা?
পত্রিকা থেকে যতোটুকু বুঝা যায় আদালত রায় ঘোষনা করেনি এখনো তবে ইনজাংশন জারী করেছে । ইনজাংশন থাকা অবস্থায় সরকার কি করে পাঠায়? এ ক্ষেত্রে তো সরকারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা হওয়ার কথা ।
খুব ঢাকঢোল পিটিয়ে নভেম্বরে বিচার বিভাগ স্বাধীনের ঘোষনা দেয়া হলো । নাকি স্বাধীন(!) বিচার বিভাগের অবমাননা বোধ নেই?

এ বিষয়ে কেউ কোন তথ্য শেয়ার করলে কৃতার্থ হবো ।
-----------------------------------------
মৃত্যুতে ও থামেনা উৎসব
জীবন এমনই প্রকান্ড প্রচুর ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

দেশে এতো টক শো হয়। তো এ নিয়ে টক শো-তে দুপক্ষকে আনা হয়নি?
-----------------------------------------------
খড়বিচালি জোগাড় করি, ঘর বানাবো আসমানে

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

আলোচনাটা খুব বিশদ হয়েছে এবং অনেক তথ্য যেমন পাওয়া যাচ্ছে তেম্নি জাতি হিসেবে আমাদের মনস্তত্বও ধরা পড়ছে। বিরাট বিশাল হাঙরদের মাঝে আমাদের অবস্থা পুঁটি-কই-ইলিশের মতো।

ধন্যবাদ হাসান মোরশেদ। সচলায়তনে আলোচনাটা না হলে পত্রিকা বা অন্য ব্লগ ঘেঁটে এতোসব জানা হতো না।

কিন্তু কিঞ্চিত ভয়ও ঢুকে গেলো মনে। এখন মনে হচ্ছে:

*আমাদের সেনাবাহিনীকে বিভিন্ন দেশে এভাবে কি পাঠানো উচিত? ওদের ব্রেন-ওয়াস করে যদি শেষমেশ দেশের বিরুদ্ধেই ব্যবহার করা হয়?
*আমাদের পাট-শিল্পটা ধ্বংস হয়ে গেলো। কয়েক বছর পর দেখা যাবে আমেরিকার ল্যাবরেটরি থেকে পাটের বীজ বেরুচ্ছে। সারা পৃথিবীতে পাট বেচছে আমেরিকা।
*ছাত্র-ছাত্রীরা যে লন্ডন-জার্মান-আম্রিকায় পড়তে যাচ্ছে। বিদেশীরা ওদের ব্রেন খুলে রেখে খালি খুলিটাসহ ফেরত পাঠাবে না তো?
*এই যে নাসা-আমেরিকার বানানো ইন্টারনেট-ইমেইল-ক্যাবল দিয়ে দেশটা ভরে ফেললাম এখন যদি ওরা ওয়েব দিয়ে কোনো বিষ ছড়ায়?
*এমনিতেই গুগল ম্যাপের কারণে দেশের কোনো গোপনীয়তা রইলো না, আকাশ থেকে রাষ্ট্রপতির রান্নাঘর পর্যন্ত দেখা যায়, কিন্তু স্যাটেলাইটগুলো চুম্বক লাগিয়ে সব সম্পদ শুন্যে নিয়ে যাবে নাতো?
*দেশের আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্ট গুলোতে বিদেশি এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ নামছে প্রতিদিন। বিমানবালা, ক্রু, পাইলট এরা আসলে কতটা পেশাদার আর কতটা বিদেশি স্পাই?
*এই যে বছরে হাজার হাজার ক্ষমতাশালী-ধনাঢ্য লোক ভারত-সিঙ্গাপুর-ব্যাংককে ব্রেন টিউমার -ক্যান্সারের চিকিত্সা করতে যাচ্ছেন। এরা কি শেষ পর্যন্ত ঠিক ব্রেন নিয়ে ফেরত আসেন? এদের ওপর দেশ চালনার ভার। এখন থেকে যাওয়ার আগে তাদের ব্রেনে অমোচনীয় কালি দিয়ে একটা দাগ দেয়ার সিস্টেম চালু করা উচিত না?

অনেক প্রশ্ন মাথায় আসছে। ভেবে কূল পাচ্ছি না। এখন আর হাসান মোরশেদকে দেয়া ধন্যবাদ ফেরত নেয়ার ইচ্ছা হচ্ছে। আচ্ছা আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন মাথায় ঘুরছে:

প্রত্নতত্ত্ব বিষয়ক বিশেষজ্ঞ কমিটির কাউকে বিনা খরচায় ফ্রান্স ঘুরানোর কোনো প্রস্তাব গিমে যাদুঘর দেয়নি? কেন? তাদের এত বড় সাহস?

বরেন্দ্র আর ঢাকা যাদুঘরের কর্মচারিরা যাচ্ছে মূর্তিগুলোর সাথে আর বড় বড় শিল্পী, জ্ঞানী ব্যক্তি যারা এ সম্পর্কে ফ্রান্স বা ইংলিশ ভাষায় দু'কথা বলতে পারতেন, তাদেরই নেয়া হচ্ছে না?
বিরাট ষড়যন্ত্র মনে হচ্ছে।

আচ্ছা ফ্রান্সের কোনো ব্লগার নেই সচলে? এটাও একটা বিস্ময়ের বিষয় ফ্রান্সে যারা যায় তারা কি সচলে আসে না? তারা কিছু একটা করুক....

আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় খবরটা কি গুরুত্ব পাচ্ছে না? প্রত্নতত্ত্বগুলো গিমে যাদুঘর যদি হজম করে ফেলে তবে আমরা কি করতে পারি সে সম্পর্কে কেউ আলোকপাত করলে ভালো হতো। সুজন চৌধুরী কী বলেন?

-----------------------------------------------
খড়বিচালি জোগাড় করি, ঘর বানাবো আসমানে

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

আরিফ জেবতিক এর ছবি

শোহেইল ভাই যদি তার অন্যান্য ভয় বা আশংকার ( যেগুলো উল্লেখ করলেন ) সেগুলোর সাথে প্রত্ন সম্পদকে একসাথে দেখে থাকেন , তাহলে সেটা ঠিক হবে না ।

অন্যান্য যে কোন ক্ষতি হয়তো পূরনীয় , এমন কি খালেদা জিয়ার রাশি রাশি স্যুটকেস ভরে যদি সোনাদানা আর টাকা পয়সাও নিয়ে যায় , সেটাও আবার দেশের জন্য রোজগার হয়ে যাবে ; কিন্তু প্রত্ন এমন একটা বিষয় সেটা নতুন করে তৈরী করা যাবে না ।

পুরো বিষয়টি নিয়ে একটি স্বচ্ছ এবং পরিষ্কার স্টেটমেন্ট সরকারের কাছে দাবী করাটা , এবং সন্তোষ জনক ব্যাখ্যার আগে প্রত্ন সম্পদের পরিবহন বন্ধ রাখাটাকে আমি যৌক্তিক মনে করছি ।

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

আরিফ, দেশের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমিও আপনার মতো উদ্বিগ্ন।

তবে বাংলাদেশের নানাস্তরের রাজনীতির পাল্টি খাওয়া দেখতে দেখতে বিশ্বাসটা বড় নড়বড়ে হয়ে গেছে।
এখন পর্যন্ত কেউ সঠিক করে বলতে পারছেন না চুক্তিটা কার সাথে কার হয়েছে?
যাদুঘরের সাথে যাদুঘরের না সরকারের সাথে সরকারের?

সে যাক, চুক্তিতে কী ছিলো সে কথাও কেউ বলছে না।

প্রতিবাদের মূল বিষয়বস্তুর সাথে আমি একমত। কেন এভাবে চোরের মত করে সরানো হলো এগুলো এ নিয়েও আমার সন্দেহের চোখ বড় হয়ে উঠছে।
কিন্তু প্রতিবাদকারীদের দাবী ও ভঙ্গির সাথে আমি একমত নই।
সুশীল সমাজের আস্থার সরকারের কোনো বক্তব্যও তো দেখি না।

হাসিনা-খালেদার অর্থ পাচারের চেয়ে এটা যদি বড় হয় তবে এর কেন বিচার হবে না এ বিষয়ে সর্বময় ক্ষমতাধারী মঈন উ আহমেদ কী বলেন?
-----------------------------------------------
খড়বিচালি জোগাড় করি, ঘর বানাবো আসমানে

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

তানভীর এর ছবি

সুবিনয় মুস্তফী, ধন্যবাদ এবং সহমত।

মাননীয় আরিফ জেবতিক, প্রথমেই জানিয়ে রাখি বাংলা ব্লগিং জিনিষটাই আমি আবিষ্কার করেছি আপনার সাড়া জাগানো 'ভ্যালেরি' পোস্ট দেখে। এই সুযোগে জানিয়ে রাখলাম আপনার প্রতি অশেষ শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা। আমি যে অনুভূতি প্রকাশে নিতান্ত কাঁচা তার প্রমাণ হল আমার এই মন্তব্যটার আপনার কোট করা দেখে-"এমন না যে বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব লুন্ঠন করলে এদের আখেরে খুব লাভ হবে! " যেটা বুঝাতে চেয়েছি তা হল, যতটুকু জানি এটা একটা এশিয়ান আর্ট মিউজিয়াম। তার মানে এশিয়ার সব দেশের প্রত্নতত্ত্বের ব্যাপারেই এদের আগ্রহ আছে। বাংলাদেশের সাথে যদি এরা কোন আকাম করে, আমি, আপনি হাজারটা ওয়েবসাইট খুলে, সব দেশের যাদুঘরে যোগাযোগ করে এদের আকামের খবরটা তো সহজেই জানিয়ে দিতে পারি। বাংলাদেশের প্রত্নসম্পদ লুট করে এরা পার পেয়ে যাবে এবং এটা করার জন্যই এ প্রতিষ্ঠান বসে আছে, তারা এটাতে খুবই লাভবান হবে এটা একটু কেমন কষ্টকল্পনা ঠেকে। আর ফখরুদ্দীন গং-রা যদি এই চুরির সাথে যুক্ত থাকে তবে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে প্রদর্শনী করে পাচারের চেয়ে দেশ থেকেই চুপিসারে এই সম্পদ ওদের হাতে তুলে দিতে কি কোন অসুবিধা ছিল? নাকি এরা এতই বেকুব! তারেক রহমান গং-রা ওমরাহ-র নামে সুটকেসের লটবহর করে দেশ থেকে কি কি পাচার করেছে, তার হদিস কি আমরা আজও বের করতে পেরেছি?

আপনার দেয়া যুক্তিগুলো বুঝতে পেরেছি এবং একমত। তাই আবারো বলছি, স্বচ্ছ্ব প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই প্রত্নসম্পদ বাইরে পাঠানো উচিত।

হিমু, সাদারা যে পৃথিবীর সব আকামের মূলে তাতে কোন সন্দেহ নাই। সেদিন 'ব্লাড ডায়মন্ড' ছবিতে দেখলাম, আফ্রিকার দেশগুলোতে ইচ্ছাকৃতভাবে গৃহযুদ্ধ লাগিয়ে রেখে সাদারা কিভাবে হীরা পাচার করছে। তবে আমাদের আফ্রিকার হীরাও নাই (ভারতে ছিল একসময়, ইউরোপীয়রা সব লুটে নিয়ে গেছে, কোহিনূর এখন ইংল্যান্ডের রাণীর মাথায়!), ইরাকের তেলও নাই, যুক্তরাষ্ট্র বা তার মিত্র ইজরায়েলের জন্য কোন হুমকিও নই আমরা। আকাম করে আমরা যেমন কাফফারা দেই, বাংলাদেশের মত দেশগুলাতেও আম্রিকা/ইউরোপ মাঝে মাঝে সেইরকম কাফফারা দিতে আসে। তাতেই আমরা স্বভাবের দোষে নিজেদের খুব গুরুত্বপূর্ণ ভাবি।

এই পোস্টে এইখানেই ক্ষ্যান্ত দিলাম। এইসব পুলিটিক্স-মুলিটিক্স আসলেই কম বুঝি। মাথা দিয়া ধোঁয়া বাইর হয় হাসি

========
"পুনরায় রৌদ্রহীন রৌদ্রে আমি, পথহীন পথে"

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

আফ্রিকার হীরাও নাই, ইরাকের তেলও নাই

কিন্তু ন্যাচারাল গ্যাসের প্রকান্ড রিজার্ভ আছে বাংলাদেশের মাটির তলায়। ডিক চেনি'র মত বাজে লোক শুধু চেহারা দেখাইতে বাংলাদেশে গেছিলো, সেইটা কিন্তু ভাইবেন না। আগামী শতকে রিসোর্স নিয়া যে লড়াই হবে বাঘ আর কুমীরে - আমেরিকা, ভারত আর চীনের মধ্যে - বাংলাদেশ সেই লড়াইয়ের একটা ব্যাটলফিল্ড হবে মাত্র।

ইতিমধ্যে আমেরিকার ইরাক যুদ্ধে ব্যস্ত থাকার সুযোগ নিয়ে চীন আফ্রিকার তাবত সরকারদের সাথে নানা রকম চুক্তি-সহযোগিতা পাকাপোক্ত করে নিচ্ছে। সেটা চীন তাদের মনের উদার থেকে করছেনা। বরং আফ্রিকার তেল, ইউরেনিয়াম সহ আরো হাজারো প্রাকৃতিক সম্পদের অ্য্যাক্সেস নিশ্চিত করার জন্যেই এই তৎপরতা। এ নিয়ে গত এক বছরে মিডিয়াতে বিস্তর লেখালেখি হচ্ছে। আমার ধারণা বাংলাদেশও এক সময় এই কামড়া কামড়িতে পড়ে যেতে বাধ্য।

http://news.bbc.co.uk/2/hi/africa/7081530.stm
http://www.economist.com/books/displaystory.cfm?story_id=10170440

-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

সুমন চৌধুরী এর ছবি

সহমত



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

হ, জাতি হিসেবে আমাদের কেউ চেনেনা তাই আমাদের দেশের সম্পদ বিদেশে প্রদর্শনী করে দেশ চেনানোই উত্তম। দেশে থেকে তো আর এমন কিছু করার আমাদের মুরোদ নেই।

তারা ভালোয় ভালোয় ফেরত দিলে তো কোন চিন্তাই নেই। আর ফেরত না দিলেই বা চিন্তা কি? ওসবের মাধ্যমেই প্যারীবাসী তথা বিশ্ববাসী আমাদের নামই জানতে পারবে। আর তাছাড়া এখানো তো ওসব প্রত্নতত্ত-ফত্ত কেউ দেখেওনা- বুঝেওনা।

বরেন্দ্র যাদুঘরে থাকবে আমাদের চাষাভূষা মানুষের কালো কালো মুর্তি; আর প্রত্ন না কি যেন ওগুলো থাকবে প্যারিসের যাদুঘরে--বন্যেরা বনে সুন্দর শিশুরা মাতৃক্রোড়ে।

একটা প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করছে। এই সব অমূল্য সম্পদ ওখানে পাঠিয়ে দেশের নাম কামাই ছাড়া আর কী পাচ্ছি বলুন তো কেউ একজন?

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

সাবমেরিন কেবল তো আসছে অনেক দিন হয়; তাতে অনেকেরই অনেক লাভ হয়েছে। মানুষ মোবাইলে চ্যাট করছে, ট্রেনে বসে ব্লগ লিখছে, আরো কত কি!

আরিফ জেবতিক এর ছবি

সেটাই ।
তবে আমার কোন লাভ হয় নাইরে ভাই ।
আগেও ইউটিউব দেখতে পারতাম না ,এখন্ও পারি না । হাসি

হিমু এর ছবি

সাবমেরিন কেবল জিনিসটা তো বড় একটা ছবির টুকরো। আইটি বুমের সময় এ প্রস্তাব এসেছিলো বাংলাদেশে, আমাদের আমলার তথ্য পাচারের ভয়ে রাজি হননি। এখন আইটি বাস্টের পর আমরা বিপুল অঙ্কের টাকা খরচ করে জিনিসটা আনিয়েছি। রোগী মরার পর ডাক্তার এলেও কিন্তু ভিজিট দিতে হয়। ভারত কিন্তু আউটসোর্সিঙের পুরো সুযোগটা নিয়েছে।

সাবমেরিন কেবলের ওপর ক্ষোভ পুষে রাখবেন না। জিনিসটা কাজের, একে কাজে লাগানোর ইচ্ছাও থাকতে হবে।


হাঁটুপানির জলদস্যু

আরিফ জেবতিক এর ছবি

ঠিক , ক্ষোভটা ডাক্তার আর ঔষধের উপর নয় , সময় মতো ডাক্তার ডাকতে না পারার ।
আমি যে গ্রুপের হয়ে কাজ করি ,তারা বাংলাদেশে প্রথম ডাটা এন্ট্রির একটা বিশাল প্রজেক্ট করেছিল । নর্দান ডাটা এন্ট্রি নামের সেই প্রতিষ্ঠানে তিনশ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছিল ।

সমস্যা হলো , সেখানের দুইশ কম্পিউটারের প্রতিটিকে মাসে একবার করে কাস্টম অফিসারেরর সামনে হাজির করতে হতো , কাস্টম অফিসার নিশ্চিত হতেন যে এই কম্পিউটারগুলো সহিসালামতে আছে , এগুলো খোলাবাজারে বিক্রী করে দেয়া হয় নি । এই ধরনের মূর্খ সিস্টেম যদি একটা দেশে থাকে , সেই দেশে আইটি ব্যাবসা হয় না । কয়েক বছর পরে সেই কোম্পানি গুটাতে হলো , আর আমাদের বিদেশী পার্টনার এখন ভারতে চুটিয়ে ব্যাবসা করছে ।

এই দেশে সবকিছুকেই সন্দেহের চোখে দেখা হয় , সরকার মনে করে সব ব্যাবসায়ী চোর ,শেয়ার বাজার একটু বাড়লেই সরকার একে থামানোর জন্য উঠে পড়ে লাগে । (যাক..এটা অন্য প্রসঙ্গ , এই পোস্টের সাথে সম্পর্কযুক্ত নয় ।)

মাসুদা ভাট্টি এর ছবি

হাসান,
এউ মুহূর্তে আমি প্যারিসে আছি, গতকাল আমি ও ব্যারিস্টার তানিয়া আমির এখানে এসেছি, যদি কোনওভাবে এই পাচারকর্ম থামানো যায়। একটি বিষয় এখানে স্পষ্ট, তাহলো, বাংলাদেশ থেকে এই প্রত্নরাজি বের করে দেওয়ার পেছনে অনেক বড় পরিকল্পনা কাজ করছে। একটি ছোট্ট ও সাধারণ তথ্য হচ্ছে, আফগানিস্তান থেকে ইতিহাস রক্ষার ধূ্য়া তুলে বৌদ্ধ মূর্তি এই মউজিয়ামে নিয়ে আসা হয়েছে। বাঙালির ইতিহাস রক্ষার কি তবে দায়িত্ব শিগ্গিরই পশ্চিমের ওপর বর্তাতে যাচ্ছে? এরকম কিছু প্রশ্ন নিয়ে এগুলেই এই প্রত্নপাচার বিষয়টি খোলাশা হবে।
খুব কষ্ট করে এখানে বাংলায় লিখছি, কথা হলো ইউরোপীয় অথরিটির সঙ্গে যাদেরই যোগাযোগ আছে, দয়া করে সবাইকে প্যারিসের এই প্রতিবাদে অংশ নিতে আহ্বান জানাচ্ছি। গিমে যাদুঘরের সামনে একটি প্রতিবাদ এবং আইনী প্রক্রিয়ায় এই পাচার ঠেকানোর জন্য আমরা কাজ করছি।
আশা করি ব্লগের সবাই এগিয়ে আসবেন। দু.খিত লিখতে খুব অসুবিধে হচ্ছে। যাহোক, শিগ্গিরই পরবর্তী পদক্ষেপের কথা জানাচ্ছি। লন্ডনে ফিরে বিস্তারিত লিখতে পারবো আশা করি।
ধন্যবাদ।

মাসুদা ভাট্টি এর ছবি

আরেকটি তথ্য হচ্ছে, শিল্পী সাহাবুদ্দিনের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া এই মুহূর্তে চলছে। আমরা এখন ওখানেই, ব্লগবন্ধুদের কোনও পরামর্শ সাদরে গৃহীত হবে।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

ধন্যবাদ মাসুদা।



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

হাসান মোরশেদ এর ছবি

কৃতজ্ঞতা ।
আমরা যারা উদ্বিগ্ন আছি তাদের জন্য আপনার দেয়া তথ্যগুলো খুব কাজে আসবে ।
ফ্রান্সে কি হচ্ছে সেটা কাইন্ডলি আপডেট করুন । আমরা বাইরে থেকে কি করতে পারি তার ও একটা ধারনা দিন ।
অপেক্ষায় থাকলাম ।
-----------------------------------------
মৃত্যুতে ও থামেনা উৎসব
জীবন এমনই প্রকান্ড প্রচুর ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

গতকালকের প্রথম আলোয় সংস্কৃতি সচিব এবিএম আব্দুল হক চৌধুরীর বক্তব্য দেখলাম। সরকারের অবস্থান সেখানে স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

তিনি বলেছেন, প্রত্নতত্ত্বসামগ্রীর সাথে সরকারী কর্মকর্তা গেছেন। তারা এগুলো বুঝে নিয়ে ফেরত আসবেন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সাথে ফ্রান্স সরকারের যথাযথ চুক্তি আছে।

এবিএম আব্দুল হক চৌধুরী ১৯৭৯ ব্যাচের মেধাবী ও দেশপ্রেমিক কর্মকর্তা। হক ভাইয়ের সাথে আমি মেলবোর্নে একই পাড়ায় প্রায় বছর দেড়েক কাটিয়েছি। সরকারী বক্তব্য বাদ দিলেও আমি ব্যক্তিগত সেই পরিচয়ের সূত্রে তার ওপর আস্থা রাখতে পারি। আমি বিশ্বাস করি যথাসময়ে প্রত্নতত্ত্বসামগ্রীগুলো বাংলাদেশে ফেরত আসবে। তাছাড়া ফ্রান্সে প্রদর্শিত হওয়ার কারণে সেগুলোর প্রতি বিশ্ববাসীর দৃষ্টিও পড়বে।

আমার মতো যারা উদ্বিগ্ন ছিলেন, তারা এখন কিছুটা আস্থা রাখতে পারেন যে খারাপ উদ্দেশ্যে পাচার করা হয়নি এসব প্রত্নতত্ত্ব। তবে সতর্ক থাকা ভালো। মাসুদা ভাট্টি যেমন বলছেন তেম্নি যদি ফ্রান্স সরকার ও সংশ্লিষ্ট মিউজিয়ামকে ভদ্র ভাষায় আমাদের এই উদ্বিগ্নতা জানিয়ে দেয়া যায় তবে ভালো।

তবে তাদেরকে চোর সাব্যস্ত করে বক্তব্য দেয়ার মানে হয় না। বরং বলা উচিত, আমরা উদ্বিগ্ন, আমরা প্রদর্শন শেষে এসবের বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে ফ্রান্স সরকারের গ্যারান্টি চাই।
-----------------------------------------------
খড়বিচালি জোগাড় করি, ঘর বানাবো আসমানে

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

যাক অনেকটাই আশ্বস্ত করলেন। হাসি

হিমু এর ছবি

আদিকালে চোর ঘরে ঢুকতো সিঁদ কেটে। সুবিধামতো ধরতে পারলে গৃহস্থ তাকে সাইজ করতো। এখন চোর চুক্তিটুক্তি করে আসে, তাকে মুখের ওপর চোরও বলা যায় না। চুরি যদি নিতান্ত হয়েও যায়, আবার ঘরদোর লাগিয়ে ফ্যাকাসে মুখে শুয়ে পড়তে হবে।

সরকারী আমলারা যখন আশ্বস্ত করেছেন, তখন এ যাত্রা হয়তো কিছু না-ও হতে পারে। কিংবা কে জানে হয়তো সেই প্রহরারত কর্মকর্তারাও আর ফিরবেন না, নিজেরাই হারিয়ে যাবেন প্রত্নামোদী ইয়োরোপীয়দের ভিড়ে। হয়তো সহি সালামতে সব নিদর্শন ফিরে আসবে, কিংবা হয়তো যা আসবে তা রেপ্লিকা।

যাদুঘর যদি হাত সাফাইয়ের খেল শুরু করে, অনেকেই ধরতে পারবেন না। কিংবা কে জানে হয়তো পারবেন ...।

খুবই অনিশ্চয়তার ব্যাপার। বাজি ধরলে কেমন হয়?


হাঁটুপানির জলদস্যু

আরিফ জেবতিক এর ছবি

শোহেইল ভাইয়ের প্রথম আলো সংক্রান্ত তথ্যের সাথে এটাও যুক্ত করতে চাই যে , একই দিন প্রথম আলোর সম্পাদকীয়তে জানানো হচ্ছে ,

১. সরকারের গঠিত একটি কমিটিও উল্লেখ করেছে যে এই চুক্তিটি ত্রুটিপূর্ণ । (ত্রুটিপূর্ণ চুক্তির কথা মনে এলেই আমাদের স্মরণ হতে পারে কাফকো চুক্তিটির কথা । )

২. প্রত্ন সম্পদ দেশের বাইরে নেয়ার জন্য জাদুঘর ট্রাস্টি বোর্ডের অনুমোদন লাগে , যেটি এক্ষেত্রে নেয়া হয় নি ।

-----------------------------
কালের ইতিহাসের পাতা
সবাইকে কি দেন বিধাতা?
আমি লিখি সত্য যা তা,
রাজার ভয়ে গীত ভনি না।

যূথচারী এর ছবি

বাপরে...
এই আলোচনা-টা তো সাংঘাতিক দিকে দিকে বাঁক নিয়েছে!

সাধারণ তিনটি তথ্য দিচ্ছি (যদিও তথ্যগুলো এই আলোচনার বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে আছে)।

এক. ১৯০৫ সালের মনুমেন্ট প্রিজারেভশন অ্যাক্ট যা ১৯৬৮ সালে বদল করে অ্যান্টিকুইটি অ্যাক্ট হিসেবে প্রবর্তন করা হয় এবং ১৯৭৬ সালে সামান্য সংশোধন করা হয়, যেটি এখন বাংলাদেশের প্রত্নসম্পদ সংরক্ষণের প্রধান আইন, সেই আইন অনুসারে অন্যন্য প্রত্ননিদর্শন যার অন্য দ্বিতীয়টি নেই, তা বিদেশে প্রদর্শনের জন্য পাঠানো নিষিদ্ধ। (তবে...)

দুই. ফ্রান্সের যে জাদুঘরটিতে এই নিদর্শন প্রদর্শিত হতে যাচ্ছে, ঐ জাদুঘর পুরাকৃতি সংরক্ষণের আন্তর্জাতিক সনদে স্বাক্ষর করেনি।

তিন. ইতোপূর্বে বাংলাদেশের পুরাকৃতির যে প্রদর্শনী ফ্রান্সে হয়েছিল, প্রায় তিন দশক পরেও ঐ নিদর্শন সমূহ বাংলাদেশে ফেরত আসেনি।


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...

সুমন চৌধুরী এর ছবি

জাফরের কমেন্টে বিপ্লব।



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

আরিফ জেবতিক এর ছবি

তিন. ইতোপূর্বে বাংলাদেশের পুরাকৃতির যে প্রদর্শনী ফ্রান্সে হয়েছিল, প্রায় তিন দশক পরেও ঐ নিদর্শন সমূহ বাংলাদেশে ফেরত আসেনি।

ভয়ংকর তথ্য !

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেক কিছুই জানলাম। ধন্যবাদ।
________________
অপলক

হিমু এর ছবি

তবে আমরা অনেক উন্নতি করেছি। আগে মন্ত্রীমিনিস্টারদের সরকারী সফরে ২টা জিনিসের জন্য ১৮৯টা লোক যেতো। এখন কিন্তু পরিস্থিতি অনেক ভালো, ১৮৯ টা জিনিসের জন্য ২ টা লোক যাচ্ছেন।

আমার প্রশ্ন হচ্ছে, ওনারা ঠিকমতো আগলে রাখতে পারবেন তো? ফ্রান্স খুবই সুন্দর দেশ, যদিও যাইনি, কিন্তু অনেক গল্প শুনেছি। ওখানে মনোরম পরিবেশে মাথা ঠিক রাখাও নাকি একটু মুশকিল। দুষ্টু ফরাসীরা যদি ফট করে জিনিসপত্র নিয়ে টানাটানি শুরু করে, দু'জন মোটে সরকারী কর্তা কিভাবে সামলাবেন?

নিদর্শন পিছু একজন কর্তা পাঠানো হোক।


হাঁটুপানির জলদস্যু

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

হিমু, আপনার ব্যস্ততা কেমন? খুব না হলে আপনিও তো যেতে পারেন চোখ টিপি

হিমু এর ছবি

আমি গেলে প্রথম উইকএন্ডেই সব নিদর্শন নিলামে চড়াবো। টাকাপয়সা যা পাবো তা কোঁচায় বেঁধে নিয়ে আসবো। পরের সামারে স্পেন ভ্রমণে বেরোবো ঐ টাকা নিয়ে।


হাঁটুপানির জলদস্যু

আদিত্য এর ছবি

এইটা কি হিসেব দিলেন, দৈনিক ৮০ ডলারতো তেমন কিছুনা এদেশের প্রতিদিনের খরচের জন্য! আমি যদ্দুরজানি শিশির'দাদের যেসব সাংপাংগ এদেশে আসেন আর্ট রেসিডেন্সির জন্য তারওতো ১২০ থেকে ১৫০(ডিপেন্ড করে কত পয়সাওয়ালা সংগঠন ডাকছে) ডলারের উপর পান। সো ভাই হুডাই লোকজনদের চোর বানায়েন না। পারলে কিছু সলিড তথ্য দেন। আর হোপফুলি প্যারিসের শো'টা হতে যাচ্ছে গ্লোবালি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রদর্শনী। দেখার বিষয় হবে শো শেষে যখন সব ঠিকঠাক মতো ফিরে যাবে বাংলাদেশ, তখন নিন্দুকেরা কি বলেন তা; যদিও তখনো কেউ কেউ বলবেন ফেরত পাঠানো জিনিষগুলো নকল (ঠিকটা পাঠালেও)! ভয় হয়, আমরা কি ক্রমেই অতি মাত্রায় সন্দেহপ্রবন ও আত্মবিশ্বাসহীন জাতিতে পরিণত হচ্ছি ??

অরূপ এর ছবি

দৈনিক ৮০ ডলার বেশ কমন পার ডিয়েম অ্যামাউন্ট, বিশেষত ইউরোপের জন্য। ইউকে বা ফ্রান্সে এই পয়সায় তিনবেলা খাবার আর ট্যাক্সির খরচ ধরলে মনে হয় কিছু বাঁচে না..

বজলুর রহমান এর ছবি

(১) সম্পূর্ণ বিস্তারিত তালিকা প্রকাশ করতে হবে এবং তাতে জাদুঘরের সংস্লিষ্ট সব কর্মকর্তা/কর্মচারী (যাঁরা প্যাকিং করেছেন, বিশেষ করে তাঁরা) একমত হতে হবে।
(২) ফিরে আনার পরে, হিসাব মিলিয়ে প্রতিটি বিচ্ছিন্ন আইটেম আবার কার্বন ডেটিং করে দেখতে হবে।
(৩) ফিরে আসার আগে যদি আমাদের জাতীয় জাদুঘরে কোন অজ্ঞাত গোষ্ঠীর বোমা ফাটে, এবং সে কারণে গিমে জ়াদুঘর/ফরাসী সরকার বা অন্য কেউ ফেরত দিতে আপত্তি জানায়, তাহলে আমি অনুমান করতে পারব কে তার জন্য দায়ী।

"Err on the side of caution."
সবকিছু ঠিক-ঠাক সম্পন্ন হলেও এ সরকার বাহবা পাবেন না, "স্বাধীন" বিচার ব্যবস্থার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ প্রদর্শনের জন্য।

ধ্রুব হাসান এর ছবি

ধন্যবাদ সুশান্ত প্রেস রিলিজটি প্রকাশের জন্য, এতে অনেক অমূলক সন্দেহের অবসান হবে আশাকরি; এতে একটি বিষয় পরিস্কার -চুক্তিটি হয়েছে ফরাসী দূতাবাসের সাথে , গিমে এখানে আয়োজক হলেও রক্ষণা বেক্ষনের দ্বায়িত্ব ফ্রান্স সরকারের। আরেকটু শুধু যোগ করি এধরনের প্রদর্শনীর প্রস্তুতি নেয়া হয় কমপক্ষে ৬ থেকে ১ বছর আগে থেকে; সুতারাং এটা বলা বাহুল্য যে এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মহল পূর্ব থেকেই অবগত ছিলেন। আজকে হঠাত ৩ দিন বা ৭ দিন আগে যদি কেউ প্রতিবাদ করে তো ঐ প্রতিবাদই প্রশ্নবিদ্ব হতে বাধ্য। সুতারাং সরকারের লুকিয়ে পাঠানোর ব্যাপারটা একেবারেই অবান্তর; কেউ দিনের বেলা এতো বড় ট্রাকে করে লুকিয়ে মাল পাঠায়না, চুরি করার অনেক সহজ তরিকা আছে, এতো জটিল পথে যাওয়ার দরকার পরে না। এখানে আরেকটা ব্যাপার উল্লেখ করি, ১৯৯৯ সাল,আমি তখন আর্ট কলেজের ছাত্র সে সুবাদে আমার অনেক শিক্ষক এবং বন্ধুই খ্যাতনামা শিল্পী এদের অনেকের সাথেই যেতাম বিভিন্ন মিউজিয়ামে, বিশেষ করে আমার আগ্রহের বিষয় ছিলো পূরাকীর্তিগুলোর ফিগর ষ্টাডি, সেসময় আমারা জাদুঘরের অনেকের হাতে নাজেহাল হতাম ষ্টাডি করতে গিয়ে। একটা ঘটনা বলি, তখন এশিয়ান বিয়ান্যল চলছিলো মিউজিয়ামে, ঐ প্রদর্শনী দেখতে গিয়ে দেখি অনেক পুরানো পূরাকীর্তি পরে আছে সিড়ির নীছে - প্রায় সব ধূলোতে মাখা স্যাতস্যাতে জায়গায় ফেলে রাখা। তখন যাদুঘরের দ্বায়িত্বরত ব্যক্তিটিকে জিজ্ঞেস করা মাত্র খেপে উঠলেন তিনি, বললেন আমাদের কাজই নাকি গন্ডগোল পাকানো, আরো নানা কথা। সে যাইহোক আমি আমি নিজে প্রায় ৪-৫ বছর আমদের জাতীয় সম্পদ এরকম অবহেলাই পরে থাকতে দেখেছি এবং আরো খারাপ লেগেছে যখন আমাদের শ্রদ্বেয় খ্যাতনামা শিক্ষকদের এই ব্যাপারে কিছু করতে বলার পরও চুপ থাকতে দেখেছি, এমন কি আমাদেরো নিরুতসাহিত করতেন নানা হতাশা ব্যক্ত করে। সো আজকে যখন এদের অনেককেই দেখি এসব নিয়ে প্রতিবাদ করতে তখন মুখ টিপে হাসা ছাড়া আর কীইবা করার আছে! আশা করি প্রদর্শনীটা সাকসেসফুল হোক। মনে মনে ইচ্ছে আছে যদি ছুটি মিলেতো জানুয়ারীর শেষ নাগাদ গিয়ে দেখে আসার; বিশেষ করে লোকজনের রেস্পন্সটা দেখার ইচ্ছে, দেখা যাক!

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

সুশান্তকে প্রেস রিলিজের কপিটা দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
উপরে আদিত্যের মন্তব্য অবশ্যই সমর্থন করি। অনেকটা আমারই বক্তব্য।

বজলুর রহমানের শেষ মন্তব্যের আবেগকে শ্রদ্ধা করি কিন্তু তাতে যুক্তির অভাবই দেখতে পাই। এই ক্ষেত্রে কেন দাপ্তরিক নিয়ম-রীতির ব্যত্যয় করে মালামাল প্যাকিংয়ের বিষয়ে সব কর্মচারিদের সমর্থন দরকার বুঝলাম না। যেকোনো দপ্তরের প্রধান সেটা পরিচালনার দায়িত্ব নেন। সবাইকে দায়িত্ব দিলে জবাবদিহিতার কেন্দ্রটা হালকা হয়ে যায়। সুতরাং দপ্তর প্রধানের জবাবদিহিতাই যথেষ্ট।

দ্বিতীয়ত: কার্বন ডেটিং আনার পরে করা হবে নাকি আনার আগে করা হবে সে দায়িত্ব অবশ্যই যাদুঘর কর্তৃপক্ষের। দু'জন কর্মকর্তা গেছেন যারা নিশ্চয়ই এই চৌর্যবৃত্তির সুযোগের জন্য এতোটা দিন যাদুঘরে কাজ করে জীবন কাটাচ্ছেন না। তাদেরও দায়িত্ববোধ নিশ্চয়ই আছে, দেশপ্রেমও আছে। তারা নিশ্চয়ই জিনিসগুলো চোখে চোখে রাখবেন এবং কোনো সন্দেহ দেখা দিলে যথাযথ পর্যায়ে ঘন্টা বাজাবেন।

তৃতীয়ত: বজলুর রহমান যাদুঘরে বোমা ফাটার আশংকা করছেন। খুব একটা অমূলক নয়। ছাত্রশিবির গং যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাত্রা শুরু করে তখন অপরাজেয় বাংলা আর শিশু একাডেমির সামনে রাখা দূরন্ত ভাষ্কর্যের ওপর আক্রমণ করেছিলো। একটু খোঁজ নিলে জানতে পারবেন, দেশের সব ভাষ্কর্য ভেঙে ফেলার জন্য তারা শপথও নিয়েছিলো।

তবে বজলুর রহমানের একথাটা আমি সমর্থন করি যে বিচার ব্যবস্থার ফাঁক গলে সরকারের এরকম সন্দেহজনক পাচার করবার ভঙ্গি নিন্দনীয়। যেহেতু আমাদের এই সরকার কথা বলে কম, সেহেতু আমরা জানতে পারিনি যে বিচার বিভাগের নৈতিক সমর্থন এতে রয়েছে কিনা এবং ফ্রান্স সরকারের সাথে চুক্তির মর্যাদা রক্ষায় প্রশাসনিক দক্ষতা প্রদর্শনের বিষয়ও ছিলো কিনা। তাছাড়া আমাদের দেশের সরকার খুব কম ক্ষেত্রেই প্রতিবাদকারীদের ভেতরের অসদুদ্দেশ্য নিয়ে মন্তব্য করে থাকে, আদালত-মামলার ভয়ে। সেরকম কোনো বিষয়ও এখানে ছিল কিনা তাও আমাদের জানায়নি সরকার।

সচলে এই বিষয়টা নিয়ে বেশ বিস্তৃত আলোচনা হলো। যা খুব আশার বিষয়। বিভিন্ন জাতীয় ইস্যুতে এরকম বির্তক ও তথ্য যোগান চালু থাকলে ব্লগিং জাতীয় ক্ষেত্রে একটা জোরদার ভূমিকা রাখতে পারবে। তবে ঠিক গুজব বা শোনা কথার ভিত্তিতে মন্তব্য না করে আরো বেশি তথ্য, তত্ত্ব ও প্রমাণ সরবরাহ করলে এরকম আলোচনা বেশি কার্যকর হতে পারে।
-----------------------------------------------
খড়বিচালি জোগাড় করি, ঘর বানাবো আসমানে

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

সুধীর এর ছবি

আজ থেকে বহু বছর আগে জিয়ার আমলে জাতীয় জাদুঘর থেকে অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন বিদেশী সংগ্রাহকদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা-পরিচালক-কিউরেটর সাহেব অভিযুক্ত হয়েছিলেন তাঁরই সহকর্মীদের সাক্ষ্যে। কিন্তু এই সুদর্শন, সুভাষী মানুষটি সুশীল সমাজে, সাংস্কৃতিক অঙ্গনে, টিভিতে এতই সুপরিচিত ছিলেন যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী মহোদয়ের সুপারিশে কারাদণ্ড হতে কোন রকমে অব্যাহতি পেয়েছিলেন।
এই হলো আমাদের বুদ্ধিজীবী রাঘব-বোয়ালদের দেশপ্রেম।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।