এ বিজয় আওয়ামীলীগেরই , চুড়ান্ত বিজয় হোক বাংলাদেশের

হাসান মোরশেদ এর ছবি
লিখেছেন হাসান মোরশেদ (তারিখ: মঙ্গল, ৩০/১২/২০০৮ - ৮:২৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

স্মরন করা যেতে পারে আহমদ ছফার সেই পুরনো কথাঃ- ' আওয়ামীলীগ জিতলেই বাংলাদেশ জিতেনা কিন্তু আওয়ামী লীগ হারলে বাংলাদেশ হারে'

ছফা কোন চিহ্নিত আওয়ামী বুদ্ধিজীবি ছিলেননা বরং জীবিতকালের পুরোটাই কঠিন বিরোধীতা করেছেন, আওয়ামী লীগ ও মৃত ছফার উপর শোধ নিয়েছে । যাক সে ভিন্ন প্রসংগ ।

আমি নিজে ও আওয়ামী লীগের কেউ নই, ছফার ও অন্ধ ভক্ত নই । কিন্তু আওয়ামী লীগ বিষয়ে ছফার মুল্যায়ন এর বিরোধীতার জায়গা খুঁজে পাইনা ।

আজ আওয়ামী লীগ জিতেছে । এ জয় অবিস্মরনীয়, অভূতপুর্ব । জোটের ল্যাজ স্বৈরাচার ছাড়াই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জিতেছে ।
এই জয় আওয়ামীলীগের, শোহেইল ভাইয়ের মতোই বলি - অতি অবশ্যই আওয়ামী লীগের । সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটার আওয়ামী লীগ নামের এই দলের নেত্রীর নেতৃত্বে আস্থা রেখে তাদের প্রতীকে ভোট দিয়েছেন বলেই এই ঐতিহাসিক জয় । এ হিসাব একেবারেই সোজাসাপ্টা ।

আওয়ামী লীগের এই জয়ের ফলে বাংলাদেশ আরেকবার হারার লজ্জায় বিবর্ন হয়নি । তাই আওয়ামী লীগ, তার নেত্রী ও কর্মীদের অভিবাদন জানাতে অন্ততঃ এই মুহুর্তে আমার কোন দ্বিধা নেই ।

তবে এই জয় মানেই বাংলাদেশের জয় নয় । কিন্তু বাংলাদেশ হারেনি বলে তার জয়ী হবার সম্ভাবনা অনেকবেশী জাগ্রত হয়েছে এবার ।
ইন্টেলেকচুয়াল মকারি বাদ দিলে সহজ সরল স্বীকারোক্তি করা যায়- '৭০ এর নির্বাচনের মাধ্যমে নিজে জয়ী হয়ে '৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে জয়ী করানোর নেতৃত্ব গ্রহন করেছিল শেখ মুজিবের আওয়ামী লীগ ।

'০৮ এর নির্বাচনে জয়ী হয়ে শেখ হাসিনার আওয়ামীলীগ আবার বাংলাদেশকে জয়ী করানোর নেতৃত্ব গ্রহন করতে ইচ্ছুক কিনা সে উত্তর পেতে আমাদের খুব বেশী দিন অপেক্ষা করতে হবেনা ।

এই রাজনৈতিক দলটির নিজেকে বদলানোর ইতিহাস আছে । বাংগালী মুসলমানদের কাছে মুসলিম লীগের বিকল্প হিসেবে গ্রহনযোগ্য হবার জন্য যে আওয়ামী মুসলিম লীগের জন্ম হয়েছিল- মুসলীম লীগের সাথে তার মৌলিক পার্থক্য ছিল সামান্যই ।
কিন্ত ধর্মাচ্ছন্ন একটা দেশে নাম থেকে মুসলিম শব্দ খসিয়ে ফেলে সর্বধর্মীয় রাজনৈতিক দলে পরিনত হবার সাহস তারাই করেছিল, মুলতঃ তরুন নেতৃত্বের সাহসী ভূমিকার কারনে । বাংলাদেশের মতো দেশে অন্ততঃ তাত্বিকভাবে হলেও সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা'র সংযোজন এই দলই করেছে। বিশাল সাংগঠনিক কাঠামোর সুযোগে ধর্ম নিরপেক্ষতাকে একটি গ্রহনযোগ্য শব্দ হিসেবে পৌঁছে দিয়েছে প্রান্তিক পর্যায় পর্যন্ত। অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতি, আপোষকামীতা, ভন্ডামী, বিশ্বাসঘাতকতার পর ও কিন্তু তারা তাদের দলীয়নীতি থেকে ধর্ম নিরপেক্ষতা উচ্ছেদ করেনি ।

শহীদ জননী জাহানারা ইমাম ঠিকই জানতেন আওয়ামী লীগ ঘাতক দালালের বিচারে যতোটা সরব ততোটা আন্তরিক নয়, তবু কিন্তু তিনি হাসিনাকে মঞ্চে নিয়ে এসেছিলেন, তবু কিন্তু হাসিনা আব্দুর রাজ্জাককে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি হিসেবে সক্রিয় রেখেছিলেন নির্মুল কমিটিতে । জাহানারা ইমাম কোন জাতীয় ব্যক্তিত্ব ছিলেননা, শিক্ষিত সচেতন মানুষেরা তাকে যেমন চিনতো প্রত্যন্ত অঞ্চলে তার তেমন পরিচিত ছিলোনা কিন্তু সীমান্তবর্তী একটা ইউনিয়নে পর্যন্ত নির্মুল কমিটির শাখা গড়ে উঠেছিল । ঐ পর্যায় পর্যন্ত নির্মুল কমিটি কার্যক্রম পৌঁছানোতে আওয়ামী লীগের তৃনমুলের নেতাকর্মীদের অংশগ্রহন অস্বীকার করা হবে সত্যকে চাপা দেয়া মাত্র ।

'৯৬ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জিতে ক্ষমতায় এসেছিল । ক্ষমতায় এসে তারা ঠিক তাই করেছিল যা করে থাকে আওয়ামী লীগের মতো দল । তারা কেবল নিজেদেরই জিতিয়েছে, দেশকে জয়ের গৌরব অনুভব করার সুযোগ দেয়নি । তারা জয়নাল হাজারী, শামীম ওসমান, হাজী মকবুলদের জন্ম দিয়েছে ।

কিন্তু আওয়ামী লীগের সেই ক্ষমতাকালীন সময়ে যে গডফাদারদের উত্থান ঘটেছিল সেটা কোন রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনার অংশ ছিলোনা । নিছক গুন্ডামী, আধিপত্য বিস্তার, চুরি চামারী, লুট । জয়নাল হাজারী, শামীম ওসমানরা এবার ছিল মৃত অধ্যায় ।
কিন্তু বিএনপি জামাত মিলিত শক্তি গত পাঁচ বছরে জন্ম দিয়েছিল রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের । রাষ্ট্রের সর্ব্বোচ্চ পর্যায় থেকে একেবারে ব্লু-প্রিন্ট বানিয়ে ফ্যাসিবাদের চুড়ান্ত প্রসার ঘটিয়েছিলো তারা । বিনাবিচারে মানুষ হত্যাই শুধু নয়, আইন করে সেই হত্যার বিচার চাওয়ার অধিকার রুদ্ধ করা হয়েছে ।

বাংলাদেশের মানুষ এই ফ্যাসিবাদকে প্রত্যাখান করেছে বলেই আওয়ামী লীগ জিতেছে । কিন্তু মানুষের বিজয় আসেনি এখনো । ঘাতক-দালালদের বিচার করতে হবে অতি দ্রুত, ক্ষমতার শেষ পর্যায়ে এসে এই ইস্যু নিয়ে কথা বলা যাবেনা আর । ঠিক যে যে কারনে ফ্যাসিবাদীদের মানুষ প্রত্যাখান করেছে সেই দুষ্টকারন গুলো যাতে আর ফিরে না আসে তার নিশ্চয়তা সৃষ্টি করতে হবে ।

শুভবোধ সম্পন্ন মানুষদেরকে আরো কাছাকাছি আসতে হবে, আরো শক্তিশালী হতে হবে- নতুন সরকারকে কথা শোনাতে বাধ্য করার মতো । আওয়ামী লীগের বিশাল কাঠামো আছে, এই কাঠামোটা দখল হোক হাজারী, ওসমানদের বদলে আবুল মাল আব্দুল মুহিত কিংবা আসাদুজ্জামান নূরের মতো মানুষদের দ্বারা । একজন আব্দুল মুহিত কিংবা নূরকে দিয়ে সমাজ বিপ্লব ঘটার ভরসা কেউ করেনা কিন্তু অতোটুকু ভরসা তো অন্ততঃ আমরা রাখতেই পারি যে ব্যক্তি কিংবা দলীয় স্বার্থে তারা মানুষ খুনের হুকুম দেবেননা ।

আওয়ামী লীগের জয় হয়েছে, এবার বাংলাদেশের জয় হোক ।।


মন্তব্য

তারেক এর ছবি

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করবে তারা -এটাই চাওয়া। এই দাবীতে আমাদেরও স্থির থাকা উচিত।
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

জুয়েল বিন জহির এর ছবি

তারেকের সাথে সহমত।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

সেটাই । জামাত-বিএনপি আলতু ফালতু বিষয় নিয়ে মাঠ দখল করার আগে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে আন্দোলন শুরু করতে হবে । নতুন সরকারকে বাধ্য করতে হবে প্রথম ১০০ দিনের কার্যসূচীর মধ্যেই এই কাজে হাত দিতে ।
তবে বিপদ আছে । জামাত এবার আন্ডারগ্রাউন্ডে যাবে। এমনিতে জামাতের আন্ডারগ্রাউন্ড ইউনিট আছে । বোমাবাজি, গুপ্তহত্যা, নাশকতা কিন্তু শুরু হবে ।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

তারেক এর ছবি

জামাত এখন মূল চেহারায় ফিরবে। ওরা এখন অনেক বেপরোয়া হয়ে পড়বে। নির্বাচনের আগে পরে বোমা,গ্রেনেড নিয়ে ওদের বেশ কিছু নেতারা গ্রেফতার হয়েছে... যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দ্রুত শুরু করতে না পারলে হবেও না আর। টু-থার্ড মেজরিটি পেয়েও ওদের বিচার না করার ব্যর্থতা কেউ ক্ষমা করবে না।
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রশাসনের প্রশ্রয় ছাড়া বোমাবাজি বা নাশকতা বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতায় সহজ নয়। কিন্তু সবই নির্ভর করবে আওয়ামি লিগের বুদ্ধিমত্তা ও সদিচ্ছার গভিরতার ওপর। হোপ ফর দ্য বেস্ট।

ধানসিঁড়ি

নিঝুম এর ছবি

কেবল রাজাকার কুত্তারবাচ্চা গুলার বিচার চাই । এই আমার চাওয়া । আর কিছু চাই না ।
--------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন

---------------------------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

"যুদ্ধপরাধীদের না বলুন" স্লোগানের পরে এবার "যুদ্ধপরাধীদের বিচার চাই" দাবী তুলতে হবে সর্বত্র ও ব্যাপকভাবে।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
একলা পথে চলা আমার করবো রমণীয়...

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

এনকিদু এর ছবি

এবার মনে হয় স্লোগানটা বদলে দেয়া যেতে পারে । "রাজাকারদের বিচার চাই" ।

নতুন করে ঘাতক দালাল নির্মূলের মত কিছু কি করা যায় ?


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

প্রফাইল [অতিথি] এর ছবি

নারে ভাই, জনগণের মেজরিটি ভোট দিয়েছে মহাজোটকে। মানে তাদের উছিলায় যাতে করে শ্বাস যাতে করে নাভি থেকে বুকে ফিরে আসে। পাব্লিক একটু শান্তি চায়।

জিততে হলে খেলা চাই, তারপর যুদ্ধ। খেলায় তো জিত হল। ট্রেনিং জমা পড়ে আছে ধূলোবালি কালিঝুলির সাথে। মীনাক্ষি বধের জন্য অর্জুন চাই। কিন্তু তারা ত' তপস্যায় না বসে রাতারাতি চরদখল শুরু করেছে। চাটার দল চাটতে শুরু করেছে।

যুদ্ধে জেতা এত সহজ? আগে মন দখল করা চাই, যেটা সবচে' কঠিন। 'না' বলতে বাঙালির সময় লাগে না।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

দলের জয় যতোটা কঠিন, দেশের জয় তার চেয়ে অনেক অনেক কঠিন । তাই তো বললাম, বোধ করি ।

আওয়ামীলীগ কে সাধু সন্ত কিংবা প্রচন্ড বিপ্লবী ভাবলে তো আশার গুড়ে বারবার বালিই প্রাপ্তি ঘটবে ।
তবে একে একবারে জামাত-বিএনপির মতো ফ্যাসিবাদী আখ্যা দিয়ে সবকিছু বাতিল করে দিলে ও কোন প্রাপ্তি নেই ।

কিছু স্বপ্নাচারী শুভবুদ্ধির মানুষ এই দলের বিশাল কাঠামোকে ব্যবহার করে বাংলাদেশের জন্মযুদ্ধের সুচনা করতে পেরেছিলেন ।
তেমন মানুষদের আধিপত্য যদি আবার প্রতিষ্ঠা পায় এর শরীরে সেটা সবার জন্য মঙ্গলময় ।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

yokel এর ছবি

যুদ্ধপরাধীদের বিচার অতি অবশ্যই যত দ্রুত সম্ভব করতে হবে এটা ঠিক, কিন্তু আজ সকালে প্রথম আলোতে পড়লাম ভার্সিটি, মেডিক্যাল কলেজগুলোতে আবার চর দখলের মত হল দখল, মারামারি, গোলাগুলি শুরু করে দিয়েছে ছাত্রলীগের সোনার ছেলেরা। আমি নিশ্চিত এটা দেশব্যাপীও শুরু হয়ে যাবে অচিরেই। রাষ্ট্রের ছত্রছায়ায় হাজারী-মকবুল তৈরি করা, ইউনিভার্সিটিতে সাধারণ ছাত্রদের জীবন অসহনীয় করে তোলা কোন দল যদি যুদ্ধঅপরাধ নিয়ে তৎপর হয় জনগনের কাছে তার গুরুত্ব অনেকটা ম্লান হয়ে যাবে। তাই আওয়ামী লীগ যদি ৯৬-২০০১ এর ভুলগুলো আবার করে তাহলে এই বিজয়ের কোন মানে নেই।

প্রফাইল [অতিথি] এর ছবি

সহমত।

কিছু অত্যন্ত মেধাবী, সাহসী, পরিশ্রমী, স্বপ্নাচারী, শুভবুদ্ধির মানুষ আসলে তৈরি করেছিলেন এই দলটি সেই পুরনো ঢাকার একতলা বাড়িটিতে। কাঠামো তারাই বিশাল করলেন কত দিনরাত পরিশ্রম করে। তাদের মূল চেতনা কিন্তু সাঙ্ঘাতিক বিপ্লবী ছিল, এবং পালের গোদারা ছিলেন রীতিমত সাক্ষাত অর্জুন। তারা যেমন তপস্যা করেছেন, তেমনি করেছেন লক্ষ্যভেদ।

দেশের মৌলিক সমস্যাগুলো মেটানোর জন্য মাঝামাঝি জায়গায় থাকার কোন সুযোগ নেই। এদেশটি মুক্তিযুদ্ধের সময় কাদা ছিল, এখন চোরাবালি। মন জয় করার মানে হল মনের মানচিত্র তৈরি করা। কাজটা ভয়ঙ্কর কঠিন, যার জন্য শুধু শুভবুদ্ধি নয় বরং প্রচন্ড মেধাবি, সাহসী, পরিশ্রমী একদল তরুণের নেতৃত্ব দরকার।

মনের দরজা খুলে দিয়েছে জনগণ, খুব অল্প সময়ের জন্য। ভেতরটা বড় অন্ধকার। আশ্চর্য প্রদীপটা ওখানেই আছে।

আরিফ জেবতিক এর ছবি

ব্রুট মেজরিটি দেখে আমি খুবই চিন্তিত । ব্রুট মেজরিটির ফলাফল সবসময়ই খারাপ । সেটি ৭০ হোক আর ০১ হোক , দেশে হোক কিংবা বিদেশে । উপমহাদেশে সবগুলো ব্রুট মেজরিটি শেষ হয়েছে জরুরী অবস্থা জারির মাধ্যমে । সামনে ভয়াবহ দূ:সময় ।

তবু আওয়ামীলীগ যদি ফোপর দালালি না করে নিজের আদর্শে অবিচল থাকে , তাহলে কিছুটা উন্নতি আশা করা যেতে পারে ।

সামগ্রিকভাবে এই ফলাফলে আমি হতাশ ও চিন্তিত ।

শামীম এর ছবি

একেবারে আমার মনের কথাটা বলেছেন। ব্যালেন্স নষ্ট হলে জাহাজ ডোবা ঠেকাতে ক্যাপ্টেনের দক্ষতার বিকল্প নেই। ভূঁইফোড় এবং পুরানা সোনার ছেলেদের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

তরুণ এবং অপেক্ষাকৃত ভাল প্রার্থীগণকে নির্বাচিত করে জনগণ তাঁদেরকে সঠিক পথে গিয়ে নিজেদের মাথা থেকে আগের টার্ম এবং রক্ষীবাহিনীর সময়কার অভিযোগের পাথর সরানোর বিরাট একটা সুযোগ দিয়েছে। এখানে মানুষের মন জয় করতে ব্যর্থ হলে, আবার জামায়াতের উত্থান দেখতে হবে .... .... পরবর্তী ২৫ বছরে আর ক্ষমতার কথা চিন্তা করা লাগবে না। মন খারাপ
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

এক্ষেত্রে আমার চিন্তা পুরো উলটা। ব্রুট মেজরিটির কারণে অনেক সিদ্ধান্ত নেয়াই এখন আওয়ামী লীগ সরকারের জন্য সহজ হবে। রাজাকার আর রাজাকার বান্ধবেরা হইচই করে খুব একটা সুবিধা করতে পারবে না। তবে সবকিছুই নির্ভর করে মানুষের জন্য কাজ করার ইচ্ছা কতোটা আছে তার ওপর।

গণতন্ত্রের জন্য সার্বিকভাবে ব্রুট মেজরিটির চেয়ে শক্তিশালী বিরোধী দল থাকা বেটার। তবে বিরোধী দল স্ট্রং করার জন্য যদি রাজাকার আর রাজাকার বান্ধবদেরকে আরো কিছু সিট দিতে হতো, সেটা হতো আরো লজ্জার। অতএব, বর্তমান পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের ব্রুট মেজরিটি অপশন হিসেবে বেটার। এখন এটার সদ্ব্যবহার বা অপব্যবহার নির্ভর করে আওয়ামী লীগের ওপর। অপব্যবহার হলে পাবলিকের লাথি যায়গামতো গিয়ে পড়বে।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

আহমেদুর রশীদ এর ছবি

পুরনো পৃষ্টাগুলো মনে রেখে যদি নতুন লেখা শুরু করতে পারে তবেই ভোটারদের আস্থার প্রতি সন্মান জানানো হবে।

---------------------------------------------------------

আমরা যারা শিখিনি চাষবাস,ফসলের গীত
গুলালিতে পাখি হত্যা

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.

একজন [অতিথি] এর ছবি

আমিও প্রচন্ড ভয় পাচ্ছি।
জামাত এখনি আন্ডারগ্রাউন্ড চলে গিয়েছে। আমাদের এখানে জামাতের এক রুকন ছিল। রাত ১.০০ টার পর থেকে আর ফোন ধরছে না।
আর আমার এক লীগের বন্ধু, যে ২ বছর ধরে ব্যাংকক থাকে, ওখানে ব্যবসা করে, সে আজকে সকালে দেশে আসার টিকিট বুকিংদিয়েছে, দেশ থেকে নাকি তার ডাক এসেছে, বিজয়ে যোগ দিতে.....!!
মনে হচ্ছে... আবার ৯৬ এর মত একই ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে।

কালকে যতখানি আনন্দ নিয়ে ঘুমাতে গিয়েছিলাম, এখন ততখানিই মন খারাপ।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

পোস্টের টাইটেল হিসেবে হিমুরটাই বেশি যুক্তিযুক্ত মনে হচ্ছে। মানুষের জন্য কাজ করার ইচ্ছা আওয়ামী লীগের আছে, এখন পর্যন্ত এরকম লক্ষণ খুব একটা স্পষ্ট নয়। তাদের নিজেদেরই আত্মবিশ্বাস ছিলো না, দেশের মানুষের ওপরেও বিশ্বাস ছিলো না বললেই চলে। এজন্যই তারা এরশাদের মত কালপ্রিটের সাথে জোট বেঁধেছে। এটাকে কৌশল হিসেবে ছাড়পত্র দিলে, ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর ধর্মবিক্রির পলিটিক্স কি দোষ করলো?

তবে পোস্টের বক্তব্যে চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন মানুষের জন্য কাজ করতে হলে কি করতে হবে আওয়ামী লীগকে। তাদেরকে তলায় হাত দিতে হবে। তারা কি করতে পারে, কি করতে চায়, আগামী দিনগুলোই তা বলে দিবে। তবে মানুষের জন্য কাজ করতে দেশের আপামর জনগণকে তারা সাথেই পাবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

নির্বাক এর ছবি

একমত। ৯৬ এর আওয়ামীলীগের চেহারা খুব একটা ভাল ছিল না। ২০০১ এ বিএনপি যখন একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আসল জনগনের অবস্থা তখন তথৈবচ। এবারেও গত সাত বছরের প্রতিশোধ নিতে আওয়ামীলীগ যে বেপরোয়া হয়ে উঠবেনা তার নিশ্চয়তা কোথায়?
_________________________________________
তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ
আমি আজ চোর বটে!

_________________________________________
তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ
আমি আজ চোর বটে!

খেকশিয়াল এর ছবি

এইমূহুর্তে
১, যুদ্ধাপরাধীর বিচার চাই, রাজাকারের বিচার চাই
২, ধর্মভিত্তিক সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ হোক, আসুন সবাই মৌলবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হই ।
৩, রাজনীতি আর রাষ্ট্রনীতি থেকে ধর্ম ঝেড়ে ফেলে দেয়া হোক, সবদিক দিয়ে দেশ হয়ে উঠুক অসাম্প্রদায়িক, পুরোপুরি অসাম্প্রদায়িক।

আরো আসছে...

------------------------------
'এই ঘুম চেয়েছিলে বুঝি ?'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

সৌরভ এর ছবি

আমি অনেক কিছু ছাপিয়ে নতুন প্রজন্ম কী চায়, সেইদিকে দৃষ্টি ঘোরাবো। নতুন কোন হাজারী-সেলিম তৈরি হবে না - অর্থনীতির চাকা থাকবে সচল। আমি মনে করি, নতুন প্রজন্মের প্রত্যাশা সেইখানেই। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক উন্নতির ট্র্যাকে আছে ঠিকই। সেই ট্র্যাক যেন শাসকেরা কুড়োল মেরে বিচ্যুত না করেন।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

সচেতনা এর ছবি

খুব ভাল লাগলো লেখাটা। যথার্থই জয় হোক বাংলাদেশের। আওয়ামী লীগের জয়ে খুশি সবার সাথে আমিও ভাগ করে নিলাম। এবার অন্তত সমস্ত অরাজকতার শেষ হোক। অন্যায়ের প্রতিকার হোক। বারবার এরকম সুযোগ আসবে না। বাংলাদেশের মানুষ যে উঠে দাঁড়িয়েছে নিজের অধিকারে এ থেকে সবারই শেখার আছে। নতুন বছরে বাংলাদেশের নতুন দিনের জন্য আগাম শুভেচ্ছা।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

এইমূহুর্তে
যুদ্ধাপরাধীর বিচার চাই

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

শেখ হাসিনা'কে বাংলা ব্লগোস্ফিয়ারের পক্ষ থেকে একটি সম্মানসূচক পিএইচডি (এবং আজীবন ব্যানমুক্ত অ্যাকাউন্ট) দেওয়া উচিত। সংসদে তো বিরোধী দল নেই, টিভি-পত্রিকায়ও ক'দিন পর নিজের লোক বসবে। রইলো বাকি ব্লগ। দেখেন তো ভাই হাসিনা'কে ব্লগ পড়াতে পারেন কিনা! চোখ টিপি

হাসান মোরশেদ এর ছবি

জনগন সকল ক্ষমতার উৎস । তারা যদি মনে করে দুষ্ট গরুর( পড়তে হবে বিরোধী দল) চেয়ে শূন্য গোয়াল ভালো- হাসিনার বাপের ও কিছু করার নাই হাসি
আওয়ামী লীগ নিশ্চয়ই টিভি-পত্রিকায় বিএনপি জামাতের লোক বসাবেনা ।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

রণদীপম বসু এর ছবি

এ মুহূর্তে যে দুঃসংবাদটা দিচ্ছি তা হচ্ছে-
ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হানাহানির খবর পাওয়া যাচ্ছে...(বাংলা ভিশন)

বেগম খালেদা জিয়া এ নির্বাচন মেনে নেননি এবং মহা জালিয়াতির জন্য নির্বাচন কমিশনকে তিনি ধন্যবাদ জানিয়ে (কটাক্ষ) এ নির্বাচনকে চারদলীয় জোটের পক্ষ থেকে প্রত্যাখ্যান করলেন......

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।