না বলা কথা

হিমু এর ছবি
লিখেছেন হিমু (তারিখ: শুক্র, ০২/১০/২০০৯ - ৪:৩৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আরিফ ঢোকে টলোমলো পায়ে। চোখে বিহ্বল দৃষ্টি, এক কোণে যে ছোটো টেবিলে আমরা বসে আছি, তা-ও যেন তার চোখে পড়ে না।

"মাক্ষি!" কামরুল দরাজ গলায় হাঁক ছাড়ে। পাশের টেবিলে বসা আহ্লাদী চেহারার মেয়েটা, আর তার মুশকো বয়ফ্রেন্ড ঘাবড়ে যায় কামরুলের নব্বই ডেসিবেল গর্জন শুনে। আরিফ ঘুমন্ত মানুষের মতো ঘাড় ফেরায়।

হাতছানি দিই আমরা।

টেবিল পর্যন্ত হেঁটে পৌঁছাতে গিয়ে একবার এক ওয়েটারের সাথে ধাক্কা খায় আরিফ, আর আহ্লাদী মেয়ের মুশকো বয়ফ্রেন্ডের জুতোও মাড়িয়ে দেয় বেখেয়ালে। আমাদের চেহারা আর সংখ্যা ঘাড় ঘুরিয়ে একবার কুটিল চোখে দেখে নিয়ে মুশকো চুপ করে যায়। আমরা না থাকলে সে নিশ্চিতভাবেই আরিফের ওপর কিছু চোটপাট নিতো বান্ধবীর সামনে।

রোকন আমার কানে কানে বলে, "মেয়েটা টেবিলের নিচ দিয়ে কী করছে দ্যাখ!"

আমি তাকাই। আহ্লাদী মেয়েটা তার স্যান্ডেল খুলে রেখে খালি পা তুলে দিয়েছে মুশকো ছোকরার পায়ের ওপর। রোকনের দিকে তাকিয়ে দেখি সে চকচকে চোখে গভীর মনোযোগে পর্যবেক্ষণ করছে সেই দৃশ্য।

বিরক্ত হয়ে আরিফের দিকে তাকাই। তার ধ্বসে যাওয়া চেহারা দেখে মনে হচ্ছে গুরুতর কিছু ঘটেছে।

রাশেদ বলে, "বয়। এতো দেরি ক্যান?"

আরিফ একটা চেয়ার ঘড়ঘড় করে টেনে নিয়ে বসে। মুশকো ছোকরা ঝট করে ঘাড় ফেরায়।

কামরুল বলে, "হইছে কী রে মাক্ষি? মাইর খাইছস নাকি?"

আরিফকে আমরা আড়ালে মাক্ষিচুস ডাকলেও সামনে তার আকিকা দিয়ে রাখা নামেই ডাকি, একমাত্র কামরুলই ব্যতিক্রম।

অন্যদিনের মতো আরিফ বিরক্ত হয় না মাক্ষি সম্বোধনে, ঘোর লাগা মানুষের মতো বলে, "একটা কোল্ড ড্রিংক দিতে ক।"

রোকন চটাশ করে তুড়ি ফোটায়। "ভাইয়া! কোক প্লিজ!"

চিমসে এক ওয়েটার মাথা ঝাঁকিয়ে রওনা দেয় কোক আনতে।

রাশেদ আরিফকে খুঁটিয়ে দেখছিলো কেবল, সে বলে, "পকেটমার হইছে নাকি?"

আরিফ এবার একটা রুমাল বার করে মুখটা একবার মুছে নেয়। তারপর দুই হাত গালে চেপে ধরে বিড়বিড় করে কী যেন বলে।

কামরুল বলে, "মাক্ষি কখনো মানিব্যাগ লইয়া বাসা থিকা বাইর হয় না। পকেটে মারার মতো কিছু থাকলে তো!"

আমি বলি, "শুনতে পাই না। জোরে ক।"

আরিফ কাঁপা গলায় বলে, "জুলেখার সাথে দেখা হইছিল!"

ব্যাপারটা যে গুরুতর, এবার আমরা বুঝে ফেলি। জুলেখা আরিফের পুরনো প্রেমিকা, দীর্ঘদিন তারা জমজমাট প্রেম করার পর একদিন জুলেখা হঠাৎ আরিফকে ছেড়েছুড়ে কয়েক মাসের মাথায় কাকে যেন বিয়ে করে ফেলে। আরিফ এ নিয়ে বড় মর্মযাতনায় ছিলো দীর্ঘদিন।

রাশেদ বলে, "কই দেখা হইলো?"

আরিফ ফোঁস করে একটা শ্বাস ফেলে বলে, "কইতাছি খাড়া। কোক কই?"

কোক হাতে পেয়ে আরিফ কোঁৎ কোঁৎ করে গিলে শেষ করবে ভেবেছিলাম, কিন্তু সে কয়েকটা মাঝারি চুমুক দিয়ে মুখ বিকৃত করে। "ঠাণ্ডা না!"

রোকন ওয়েটারকে টুশকি দিয়ে ডাকে। "ব্যাপার কী ভাই? কোক ঠাণ্ডা না ক্যান?"

ওয়েটার আমাদের ভালোমতোই চেনে। কয়েক বছর ধরে আড্ডা দিচ্ছি আমরা এই শরমা কুটিরে, নিয়মিত খদ্দের। সময়ের সাথে সার্ভিস ভালো হবার বদলে উল্টো সে নিজের দুর্ভাগ্যের সাথে আমাদের জড়াতে চায়। "কারেন্ট থাকে না স্যার!"

কামরুল বলে, "কই দেখা হইল কইলি না তো।"

আরিফ কিছুক্ষণ গুম হয়ে থেকে বলে, "বসুন্ধরায়।"

বসুন্ধরা মানে বসুন্ধরা সিটি শপিং মল। সেখানে আরিফ একা একা কী করছিলো, ভেবে পাই না। বসুন্ধরায় যেতে হলে আরিফ আমার বাসায় চলে আসে, তারপর আমার সাথে যায়। ওর মতো হাড়কঞ্জুষ একা একা বসুন্ধরায় কী করে?

আরিফ যেন আমার ভাবনা টের পেয়েই বলে, "মামার লগে গেছিলাম।"

রাশেদ বলে, "তারপর?"

রোকন আমার কানে কানে বলে, "মাইয়াটা কী করে দ্যাখ।"

তাকিয়ে দেখি মেয়েটা দুই পায়ের পাতায় খেলছে তার বন্ধুর পা নিয়ে। বিরক্ত লাগে রোকনের ওপর। বলি, "তুই ঐদিক চাইয়া রইছস ক্যান?"

রোকন বলে, "অপেক্ষা করতেছি কখন আরো উপ্রে উঠে!"

মেজাজটাই খারাপ হয়ে যায়। শুনি, আরিফ বলছে, "মামার বন্ধু আইছে যশোর থিকা। তারে ঘুরাইয়া দেখাইতেছে ঢাকা শহরের মার্কেট। আমারে কইলো, ল তুইও চল। আমি গেলাম। ফুড কোর্টে গিয়া দেখি জুলেখা!"

রাশেদ সহানুভূতির সুরে বলে, "তারপর?"

আরিফ সজল চোখে বলে, "সেই যে সেইদিন সন্ধ্যাবেলা আমারে কইলো, খুদাপেজ সোনা, উই আর ব্রেকিং আপ, দিস থিং বিটুইন আজ ইজ ওভার, তারপরে আর কখনো কোনো যোগাযোগ হয় নাই! ফোনে না, সামনাসামনি না!"

কামরুল বলে, "জুলেখার কথা কি মুখস্ত কইরা রাখছস?"

আরিফ করুণ চোখে তাকায় আমার দিকে। আমি কামরুলকে ধমকাই, "ফটর ফটর করিস না!"

রোকনটা প্যাঁচ লাগায়, "দোস্ত, গ্রামারে ভুল আছে।"

আরিফ এবার ক্ষেপে ওঠে, "কী ভুল?"

রোকন বলে, "আবার ক। কী জানি এক্টা ভুল আছে!"

আরিফ কোকে চড়াৎ করে এক চুমুক দিয়ে বলে, "ভুল থাকলে তুই ধরতে পারবি? তুই ইংরাজি পারস দুই কালাম? আইছস জুলেখার ইংরাজির ভুল ধরতে!"

কামরুল হাসে, "রোকইন্যা চুপ কর। জুলেখা ইংরাজিতে কাশি দিতো, মনে নাই?"

আরিফ খুবই ক্ষেপে গিয়ে কী যেন বলতে যায়, রাশেদ কামরুলকে থামিয়ে দেয়। "কামা, চুপ যা। জুলেখা ইংরেজি ভালোই পারে। আর আরিফের ইংরেজি খুব একটা সুবিধার না হইলেও স্মরণশক্তি ভালো। ও দোয়া কুনুত জানে।"

আরিফ কোকে চুমুক দেয় আবার। আমি আড়চোখে তাকিয়ে দেখি, আহ্লাদী মেয়েটার পা কোথায়।

আরিফ আবার কাঁদোকাঁদো গলায় বলতে থাকে, "দেখি ফুড কোর্টে একটা টেবিলে জুলেখা একা একা বইয়া রইছে!"

আমি সমবেদনার সাথে বলি, "গিয়া হাই-হ্যালো কস নাই?"

আরিফ নড়েচড়ে বসে চেয়ারে। "চাইছিলাম। দ্যাখ, একটা খুব ইমপরট্যান্ট কথা ওরে আমার বলার ছিলো। আমি গত ছয় বছর ধইরা ওরে কথাটা বলতে চাইতেছি, কিন্তু কোনো যোগাযোগ নাই। ও কই থাকে, কী করে, কিছুই জানি না! ক্যামনে কমু?"

রাশেদ বলে, "দোস্ত, যা হওয়ার তা তো হইয়াই গ্যাছে! এখন এই পুরানা কাসুন্দি নাড়িসচাড়িস না। ফরগেট ইট!"

আরিফের চোখ ছলছল করে ওঠে। "দোস্ত, পারি না! মেঘলা দিনে মনে হয়, এই তো সেদিন জুলেখার লগে রিকশায় কইরা ভিজতে ভিজতে যাইতেছি। আকাশে রইদ উঠলে মনে হয়, এইরকম দিনে একটা বেগুনী ছাতা মাথায় দিয়া জুলেখা আমার লাইগা খাড়াইয়া থাকতো টিএসসিতে ...!"

কামরুল চোখ মোছে। "টেরেজিডি!"

আরিফ ওজনে কামরুলের অর্ধেক না হলে হয়তো মারামারিই শুরু করে দিতো। "ওই চুতমারানি! আমার দুঃখ লইয়া মশকরা মারস? তোর মশকরার মায়রে ...!"

রাশেদ থামায় আরিফকে। "ঠান্ডা দেইখা কিসু খা। ও ভাই, ঠান্ডা কী আছে?"

ওয়েটার বলে, "কোক আছে স্যার! দিবো?"

আরিফ মুখ বিকৃত করে। "না! লাসসি খামু।"

রোকন টুশকি মারে, "লাসসি হবে?"

ওয়েটার বিনীত গলায় বলে, "আনতেছি স্যার!"

আমি বলি, "তারপর কী হলো?"

আরিফ বলে, "আমি মামার টেবিলে বইসা ভাবতেছিলাম, যাই, উইঠ্যা গিয়া বসি ওর কাছে। কথাটা বলি আজকে! এমন সময় দেখি ...।" ওর গলাটা ধরে আসে।

কামরুল বলে, "মিস্টার জুলেখা মাটি ফাইড়া বাইর হইলো?"

আরিফ বলে, "হ! টয়লেটে গেছিলো হালার পুতে। বিশ্বাস যাবি না কইলে, হালায় পুরাই খাইষ্টাচোদা একটা। দেখতে সাদা ছাগলের মতো, ভোটকা, গা ভর্তি লোম ...!"

রোকন বলে, "পুরাই তর অ্যান্টিথিসিস মালুম হইতেছে দোস!"

রাশেদ মোলায়েম বিরক্তিসূচক "আহ" বলে রোকন আর কামরুলকে থামানোর ভান করে। আমি তাকিয়ে দেখি রোকনের সন্দেহ ঠিক, আহ্লাদী মেয়েটা পায়ের বুড়ো আঙুল দিয়ে হিজিবিজি ছবি আঁকছে মুশকোর হাঁটুতে।

রাশেদ বলে, "তারপর?"

আরিফ মুখ কুঁচকে বলে, "তারপর আর কী! আমি আর গ্যালাম না উইঠা। অরা খাইয়াদাইয়া গ্যালো গিয়া।"

কামরুল বলে, "এতো নীরস কইরা কইস না! নিশ্চয়ই অরা একজন আরেকজনরে খাওয়াইয়া দিতেছিলো। মুখ মুছাইয়া দিতেছিলো ন্যাপকিন লইয়া ...!"

আরিফ বিড়বিড় করে বলে, "চুদি, তোর মশকরার মায়রে আমি ...।"

রোকন বলে, "ছয় বছর হইয়া গ্যাছে ব্যাটা! এখনও এতো ত্যাল থাকবো? আরিফ তুই কামার কথায় কান্দিসনা।"

আরিফ কান না দিয়ে পারে না। না কেঁদেও পারে না। সে ধরা গলায় বলে, "এই কথাটা যে কতোবার ওরে বলবো ভাবছি! রাত্রে ঘুমানোর আগে মনে পড়ে। স্বপ্নে দেখি ও একটা গাড়িতে চইড়া যাইতাছে আর আমি পিছে পিছে লৌড়াইতেছি, চিৎকার কইরা ডাকতেছি, জুলি, জুলি, কথাটা শুইনা যাও, প্লিজ ... গাড়ি থামে না! আর তরা, আন্টির পো, মশকরা চুদাস এইটা লইয়া? প্রেম করছস জীবনে যে আমার কষ্টটা বুঝবি?"

কামরুল কাঁদে, "কান্না ওঠে জগত জুড়ে ... হায় হোছেন রে হায় হোছেন ...।"

লাসসি আসে। আরিফ স্ট্র মুখে দিয়ে চোঁ-চাঁ চুমুক দেয়। আহ্লাদী মেয়েটার দিকে আড়চোখে তাকিয়ে দেখি, ওর পায়ের আচরণ। না, আর উঠছে না।

রাশেদ বলে, "তুই জুলেখার কাছে গিয়া ফোন নম্বর লইয়া লইতি। এতদিন পর নিশ্চয়ই আগের মতো গিয়ানজাম করতো না।"

আরিফ মাথা নাড়ে। "না। তা হয় না। অর জামাইয়ের সামনে গিয়া অর লগে আলাপ শুরু করা ... না দোস্ত! নিজেরে সামলাইতে পারতাম না!"

কামরুল বলে, "কী কইতে চাইছিলি জুলিরে?"

আরিফ ফোঁস করে ওঠে, "তরে কমু ক্যা?"

রোকন বলে, "হালকা লাগবে। আমাদের বল। আর একবার যখন ওরে দেখছস, বারবারই দেখবি। আজকে কইতারস নাই, কালকে কইয়া দিবি। সমস্যা কী?"

আরিফ মাথা নাড়ে।

রাশেদ বলে, "এখনও ওরে ভালোবাসস?"

আরিফের চোয়াল শক্ত হয়ে যায়। "না!"

কামরুল বলে, "তাইলে কী কইতি? আই হেইট ইউ, আমি তুমাকে ঘৃণা করি?"

আরিফ রক্তচক্ষু মেলে তাকায় ওর চেয়ে এক হাত লম্বা কামরুলের দিকে।

আমি বলি, "তাইলে বল, কী কইতি?"

আরিফ লাসসির গ্লাসে একটা কম্পিত চুমুক দিয়ে থম ধরে বসে থাকে কিছুক্ষণ, তারপর বিমর্ষ, মলিন কণ্ঠে বলে, "ওর কাছে তিন হাজার ট্যাকা পাই!"


মন্তব্য

_প্রজাপতি এর ছবি

বড়ই "টেরেজিডি"
গল্পের শেষটা ফাটাফাটি লাগলো দেঁতো হাসি
---------------------------------------------------------------
ছিন্ন পাতার সাজাই তরণী, একা একা করি খেলা ...

ছিন্ন পাতার সাজাই তরণী, একা একা করি খেলা ...

হিমু এর ছবি
সাইফ তাহসিন এর ছবি

জটিলস্য জটিল
গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি

গফডা আরেকটুন লাম্ফা হইলে অন্য জোড়া আরেকটু আগে বাড়তে পারত। ঐ জোকটা মনে পড়ল। এক ভুদাই একটা সিনেমা ৩৩ বার দেখসে, প্রতিবারই ৩০ মিনিট দেখে চলে আসে, কারন খুবই সোজা, ঠিক ২৯ মিনিটের সময় নায়িকা গোসল করতে যায়, কাপড় খুলতে শুরু করে, আর ৩০ মিনিটের সময় ট্রেন আসে, যদি ১ বার ট্রেন দেরী করে আসে?

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অতিথি লেখক এর ছবি

আমি আমার নিরস মন্তব্যখান লেখার পরেই মনে হল, গল্পের দৈর্ঘ্য নিয়ে মন্তব্য লিখলে কিছু রসের অবতারণা হত, মন্তব্য আবার করতে এসে দেখি আপনি মনের কথা লিখে দিয়েছেন॥
সাফি

সাইফ তাহসিন এর ছবি

হা হা হা, বস, দেখা যাচ্ছে বদ চিন্তা শুধু আমার মাথায় ঘুরে না। আপনার লেখাটা বেশ ভালো লাগল।

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

হিমু এর ছবি

ওকে, নেক্সট টাইম ... আশা হারাবেন না চোখ টিপি



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

অতিথি লেখক এর ছবি

আন্দাজ করার চেষ্টা করছিলাম কি কথা হতে পারে, তবে সবই খাইষ্টা লাইনে চিন্তা চলে যাচ্ছিল। শেষটা তাই ভালই মজা লেগেছে।

সাফি

হিমু এর ছবি

গোমরাহির পথ ছেড়ে দিয়েছি।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

স্বপ্নহারা এর ছবি

বস মহামারাত্মক! আপ্নের গল্প পড়ার সময় শেষটা আন্দাজ করার চেষ্টা করিনা...তবে একটা এক্সপেক্টেশন থাকে টাস্কি খাওয়া সমাপ্তির। সেই দিক দিয়া আপনি আন্দাজেবল...খাইছে

ব্যাপক মজা পাইছি!

-------------------------------------------------------------
স্বপ্ন দিয়ে জীবন গড়া, কেড়ে নিলে যাব মারা!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

হিমু এর ছবি
মূলত পাঠক এর ছবি

দুর্দান্ত! ভয়ানক রকমের ভালো হয়েছে হিমু সাহেব!

হিমু এর ছবি

ছোটো ছোটো ত্রুটি রয়ে গেছে গল্পটায়। পরে কোনো একসময় মেরামত করবোনি।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

গল্পটা দুর্দান্ত হয়েছে।
তারপরও ভালোর উপরও ভালো আছে তাই জানাই:
লাসসিতে চুমুক দেয়ার পর থেকে টানটান ভাবটা একটু কমে গেছে। আরেকটু টানটান করলে ভালো হয়।

শেষ বাক্যটা আসলে বন্ধুদের উদ্দেশ্য করে বলা হয়ে গেছে। এটা জুলেখাকে উদ্দেশ্য করা বলাটাই সঙ্গত হতো মনে হচ্ছে।
কী কইতি জুলেখারে ....এর উত্তর হয়তো হয় 'তোমার কাছে যে তিন হাজার ট্যাকা পাইতাম সেইটার কী অইবো?'

'ওর কাছে তিন হাজার ট্যাকা পাই' বাক্যটা তো আর সে জুলেখাকে কইতো না। সুতরাং যা কইতো যেভাবে কইতো সেভাবে দিলেই রস ঠিকমত পাওয়া যাবে।

(প্রতিদিন হিমু এইরকম গল্প পয়দা করে কি করে। মেশিন আছে নাকি?)
-----------------------------------------------
সচল থাকুন... ...সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

হিমু এর ছবি

হুমমম, গল্পটা হুট করে শেষ করার জন্যেই হয়তো টানটান ভাবটা কমে গেছে।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

যুধিষ্ঠির এর ছবি

ভালো লাগলো। তবে আপনার কাছ থেকে আমরা আরও অনেক ভালো আর মজার গল্প আগে পেয়েছি। গণ্ডার ধাওয়া করে সময় নষ্ট হওয়াটা এর জন্যে দায়ী কি না কে জানে... চোখ টিপি

আমার তো মনে হয় শেষ বাক্যটা যদি জুলেখাকে যেভাবে বলা হতো সেভাবে বন্ধুদেরকে বলা হতো, তাহলে বেশ অস্বাভাবিক শোনাতো। যেভাবে আছে সেটাই ঠিক আছে বলে মনে হচ্ছে।

গল্পের শেষটা পড়ে সাইনফেল্ড-এর একটা পর্বের কথা মনে পড়ে গেলো। জর্জ কস্ট্যানজা সেবার এক বালিকাকে নিয়ে লম্বা একটা ড্রাইভ দিয়ে অনেক দূরের কোন একটা জায়গায় গিয়েছে। যাবার পর বালিকা বললো যে সে জর্জের সাথে আর সম্পর্ক রাখবে না। অনেকদিনের সম্পর্ক ভেঙ্গে যাওয়ায় বিন্দুমাত্র দু:খের প্রকাশ না দেখিয়ে জর্জ প্রথম যে কথাটা বালিকাকে বললো সেটা ছিলো, "একটু আগে টোল বুথে টোল দেয়ার জন্য যে টাকাটা তোমাকে দিয়েছিলাম, ওইটার ভাংতিটা কি তুমি চলে যাবার আগে ফেরৎ দেবে"?

হিমু এর ছবি

হা হা হা, ঘরের খেয়ে বনের গণ্ডার তাড়ালে যা হয় আর কি!



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

ফিরোজ জামান চৌধুরী এর ছবি

ভালো লাগলো।

ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।

মেহদী হাসান খান এর ছবি

হাসি থামাইতে পারতেসি না বস। নিজেরে কামরুলের মত মহাপাষণ্ড মনে হইতেসে...

মামুন হক এর ছবি

আমি হিমুর লেখার পড়তে গেলে ইদানীং সব এন্টেনা উঁচা করে বসি, যাতে কোন সিগন্যাল মিস হয়ে না যায়।
গল্পের শেষটা এরকম কিছু হবে সেটা আমি আগেই এট্টু আন্দাজ করে ফেলছিলাম, তবে তাতে গল্পের মাহাত্ম্য এক্টুও কমে নাই। শুধু এটুক বোঝা গেল যে পুরানা কাস্টমাররা আপ্নারে আর এত সহজে ছাড় দিবেনা হাসি

সবজান্তা এর ছবি

আর তরা, আন্টির পো, মশকরা চুদাস

হা হা হা হা... এই লাইনটা পইড়া হাসি থামাইতেই পারতেছি না...


অলমিতি বিস্তারেণ

জি.এম.তানিম এর ছবি

দারুণ হো হো হো

শেষ লাইনের ব্যাপারে শোমচৌয়ের সাথে সহমত!
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

মজা পাইলাম মশকরার মায়রে... পইড়া !!
গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি

---------------------------------------------------------------------------

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

অতিথি লেখক এর ছবি

হিমু ভাই, ব্যপক ভালো লাগল।
দলছুট।

চশমাওয়ালি এর ছবি

গল্প যথারীতি ভাল পেয়েছি।
কিন্তু একটু মনে হয় যেন হুট করে শেষ হয়ে গেল। আরো লম্বা লম্বা লেখা ল্যাখেন প্লিজ।

---------------------------------------------
ল্যাসিক করাতে ভয় পাই আর লেন্স ভাল লাগে না।

---------------------------------------------
ল্যাসিক করাতে ভয় পাই আর লেন্স ভাল লাগে না।

হিমু এর ছবি

দেখি, বিষাদসিন্ধু রিমিক্স ছাড়ুম।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

হাসিব এর ছবি

টাকা তো জান্তাম ৫ হাজার আছিলো । দুই হাজার কি শোধ হৈছে তাইলে ?!

হিমু এর ছবি

জুলেখার সাথে এইসব কী শুরু কর্লেন আপ্নে?



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

দুর্দান্ত এর ছবি

ঝাক্কাস!
--
এক টিকিটে দুইটি ছবি।
মুশকো ও আহ্লাদি বিবি।
জুলি, মাক্ষির তিন হাজার
তুই কবে দিবি, কবে দিবি?

দ্রোহী এর ছবি

কী আশ্চর্য!!!! আমাদের আরিফকেও আমরা মাক্ষী নামে ডাকতাম। শালারপো ভীষণ হাড়কেপ্পন ছিলো!! চায়ে মাছি পড়লে সে ওই মাছির পুটকি চুষে চা টুকু খেয়ে নিতো!

হিমুর গল্প সম্পর্কে কীইবা বলার আছে আমার? তবে আহলাদী বালিকার পা আরেকটু উপরে উঠলে আরো ভালো লাগতো।

বইখাতা এর ছবি

দারুণ !

খেকশিয়াল এর ছবি

আপনে আন্টির পো এইটা কি লিখলেন হো হো হো

------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

আরিফ জেবতিক এর ছবি

গল্পের সবই ভালো লাগছে , তয় নায়কের নাম আমার নামের লগে মিলে যাওয়ায় একটু সমস্যা হইছে।
আমি একজনের কাছে সত্য সত্য টেকা পাই ৫০০ , আজ ৪ বচ্ছর চলে। মাঝরাইতে সেই কথা মনে হইয়া একটু কান্না কান্না লাগতেছে।

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

হো হো হো

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

হিমু এর ছবি

দোয়া ইউনুস পড়ে ব্যাপারটাকে ক্ষুদ্র ঋণের খাতে ফালায় দেন বস। ঐ লোকের চাল খুলে আনতে পারবেন অচিরেই, বিয়াপার্না।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

নাম না বলি এইবার এর ছবি

আমারও এক হালার্পো মোল্লার কাছ থিকা নগদ ২৭০০০ ট্যাকা পাওনা, হালায় ইসলামের দারোয়ান, মাগার আমার লগে ইমুন ইত্রামিডি করসে, কীয়ার কৈতাম ! মায়রে কাকা হালায় বলে আবার সিভিল ইঞ্জিনিয়ার, তাও বলে বুয়েট থেইকা পাশ করা !!!! মানিজ্জৎ সব ডুবাইল রে !!!!

বাইয়েরা, মাপসাপ কৈরা দিয়েন, লেখা জব্বর লাগসে, আর ঐ ঘাওয়ে লবণ পড়সে একটু মন খারাপ(

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

দূর্দান্ত হইছে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

জুলেখা ইংরেজি ভালোই পারে। আর আরিফের ইংরেজি খুব একটা সুবিধার না হইলেও স্মরণশক্তি ভালো। ও দোয়া কুনুত জানে।"

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

তানবীরা এর ছবি

আর আরিফের ইংরেজি খুব একটা সুবিধার না হইলেও স্মরণশক্তি ভালো। ও দোয়া কুনুত জানে।"

এই লাইনটা সবচেয়ে অসাধারণ

**************************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

হিমু এর ছবি

ফিরোজ ভাই, মেহদী, মামুন ভাই, সবজান্তা, তানিম, সুহান, দলছুট, দুর্দান্ত, দ্রোহী, বইখাতা, খেকশিয়াল, নজ্রুলিস্লাম, সিমন, স্বাতী আপা ... সবাইকে ধন্যবাদ।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

ঝিনুক [অতিথি] এর ছবি

"জুলেখা ইংরেজি ভালোই পারে। আর আরিফের ইংরেজি খুব একটা সুবিধার না হইলেও স্মরণশক্তি ভালো। ও দোয়া কুনুত জানে।"

--- গড়াগড়ি দিয়া হাসি
বেশি জোস!!!

ধৈবত(অতিথি) এর ছবি

গফ অ্যাকশান হইছে...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।