বইয়ের পাঠক আর ক্রেতা

হিমু এর ছবি
লিখেছেন হিমু (তারিখ: শনি, ০৬/০২/২০১০ - ২:৪৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


বাংলাদেশে বইয়ের পাঠকসংখ্যা কত? কোন বয়সশ্রেণীর পাঠকের কাছে কোন ধরনের বইয়ের কদর বেশি? একটা বই একজন ক্রেতা কিনলে কয়জন পাঠক পড়েন? বই কেনার আগে একজন ক্রেতা কী কী দিক বিবেচনা করেন?

জানি না এর একটিরও উত্তর। ধারণা করতে পারি বড়জোর, আবছাভাবে। বই, ক্রেতা, পাঠক নিয়ে কথা বলতে গেলে আমাদের ঐ নিজস্ব আবছা ধারণার ওপর নির্ভর করেই থাকতে হবে হয়তো।

আমি জানি না, বাংলাদেশে বই নিয়ে কোনো বড় আকারের মার্কেট রিসার্চ হয়েছে কি না। সম্ভবত হয়নি। বই যে একটা পণ্য, একে ঘিরে যে সফল ব্যবসা হতে পারে, এই ধারণাটাই আস্তে আস্তে কার্পেটের নিচে চলে যাচ্ছে। নোট-গাইড আর রসময় গুপ্তের চটি চুরি করে হলেও বেচার আর কেনার লোক আছে, সাধারণ বইয়ের অত কদর নেই।

এর একটা কারণ হতে পারে সমন্বয়হীনতার অভাব। প্রকাশকের সাথে সম্পাদক আর লেখকের [কয়টা বই সম্পাদিত হয়ে বেরোয় বছরে?], কিংবা বিপণকের কোনো মান সমন্বয় ব্যবস্থা চোখে পড়ে না। প্রকাশক ও পুস্তক বিক্রেতাদের একটি সমিতি আছে, কিন্তু তারা কী করে আমি জানি না। শুধু টেক্সটবুক বোর্ডের কোনো সিদ্ধান্তের পর তাদের প্রতিক্রিয়া কাগজে পড়ে জানা যায়। কারণ নোট-গাইড আর রসময় গুপ্তের চটির মতো পাঠ্যবইয়ের বাজার দেশব্যাপী। সাধারণ বই ... আবারও কয়েক সারি পেছনে।

বইয়ের ব্যাপারটা অন্য যে কোন পণ্যের মতো করেই দেখা যেতে পারে, এর বড় চাহিদা তৈরি করতে পারলে এর মাথাপিছু খরচ কমে আসবে। একটি বই যদি ১০০ কপি ছাপা হয়, তাহলে তার যা খরচ, ১০০০ কপি ছাপালে হয়তো পার ইউনিট খরচ তার অর্ধেকে নেমে আসবে, ১০০০০ কপি ছাপালে হয়তো তারও অর্ধেকে [উদাহরণের খাতিরে লগ-স্কেল দিয়ে বলছি]। কিন্তু আমার মনে হয়, এক ধাক্কায় ১০ হাজার কপি বই ছাপা হবে, এমন লেখক বাংলাদেশে দুই তিনজন আছেন।

তাহলে বাকিরা কি পাতে ওঠার যোগ্য নন? মাহমুদুল হক কি একজন ফেলনা লেখক? কিংবা শহীদুল জহির? তাঁদের বই তাঁদের জীবদ্দশায় কয় কপি করে ছাপা হতো?

১০০ টাকা খরচ করে পাঠক অচেনা লেখকের লেখা না কিনে চেনা লেখকের বই কিনবেন। এটি পরীক্ষিত সত্য। অচেনা লেখককে পরিচিত করানোর দায় গ্রন্থবিপণনকারী প্রতিষ্ঠানের। এমন কোনো নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান আছে বলে আমার জানা নেই, প্রকাশক নিজেই সাধারণত বিপণনের কাজটি করেন। বেশির ভাগ প্রকাশক ঢাকাকেন্দ্রিক, তাঁদের সাথে ঢাকার বাইরে ছড়িয়ে থাকা গ্রন্থবিপণীগুলোর কেমন যোগাযোগ, বলা মুশকিল। সেবা প্রকাশনী বোধহয় এ ব্যাপারে সর্বাধিক এগিয়ে, দেশের একটা অখ্যাত রেলস্টেশনের বুকস্টলেও তাদের বই মেলে। অতখানি যোগাযোগের দায় বোধহয় আর কোনো প্রকাশক নিতে যান না।

একটা ছোটো সংখ্যা বলি। এজুকেশন বোর্ডের ওয়েবসাইটের স্ট্যাট ঘাঁটতে গেলাম [বিশ্রী ওয়েবসাইট, কোনো স্ট্যাট উদ্ধার করা যায় না ডেটাবেজ থেকে, স্ট্যাটিক একটা পেইজে ২০০৬ সালের তথ্য আছে শুধু], ঢাকা-চট্টগ্রাম-রাজশাহী-যশোর-সিলেট-কুমিল্লা-বরিশাল-মাদ্রাসা এই আটটি বোর্ডে মোট সাড়ে নয় লক্ষ পরীক্ষার্থী ছিলেন ২০০৬ সালে। যদি এঁদের মধ্যে ১০% সাধারণ বই পাঠক ধরা যায়, পঁচানব্বই হাজার পাঠককে আমরা পাই এই একটি ব্যাচ থেকেই। যদি কেবল শিক্ষার্থীদের সক্রিয় বই পাঠক ধরে নিই আমরা, তাহলে এর আগের চার ব্যাচ [ক্লাস এইট থেকে] এবং পরের চার ব্যাচ [অনার্স পর্যন্ত], মোট নয়টি ব্যাচে প্রায় আট লক্ষ পঞ্চাশ হাজার পাঠক আছে সারা দেশে। যদি একজন ধনবানের কেনা বই দশজন জ্ঞানবান পড়ে থাকেন, তাহলেও পঁচাশি হাজার বইয়ের ক্রেতা পাই আমরা, যে কোন এক বছরে। সারা বছরে বই কেনার পেছনে এঁরা যদি একশো টাকা খরচ করে থাকেন, তাহলে মাত্র পঁচাশি লক্ষ টাকার সাধারণ বইয়ের বাজার, বছরে। এই বাজারের একটা বড় অংশ দখল করে রাখেন হুমায়ূন আহমেদ এবং মুহম্মদ জাফর ইকবাল। বাকি লেখকরা কিছুমিছু পান।

বইয়ের বাজারটাকে আমরা মাছের বাজারের তো করে রেখেছি, যে ক্রেতা নিজেই উজিয়ে যাবেন। এখন বোধহয় সময় এসেছে একটু অন্যভাবে চিন্তা করার। বইয়ের বাজারকে পাঠক আর ক্রেতার সামনে নিয়ে যেতে হবে, সক্রিয়ভাবে। বইয়ের ব্যবহার খুব কমে গেছে, এটা বাড়াতে হবে। বড় কর্পোরেটগুলো এগিয়ে আসতে পারে পৃষ্ঠপোষকতার জন্যে। তাদের ভেন্ডররাও অনেক সময় টুকটাক এটাসেটা উপহার পাঠায় তাদের সন্তুষ্ট রাখার জন্যে, এ তালিকায় বইকে তোলা যেতে পারে। স্কুলকলেজ পর্যায়ে নানা কিসিমের প্রতিযোগিতা হয়, পুরস্কার হিসেবে বইকে অগ্রাধিকার দেয়া যেতে পারে। ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে আমবুলি ছাপানো কার্ড না কিনে বই কিনে প্রথম সাদা পাতাটায় প্রেমার্থী লিখে জানাতে পারেন তাঁর মনের কথা। জন্মদিন থেকে শুরু করে বিয়ে পর্যন্ত উপহার দিতে পারেন বই [তবে বই অনেকেই পছন্দ করে না]। দশ লক্ষ টাকা সমপরিমাণ বইয়ের জন্যে দশ টাকা দামের টিকেটে লটারি ব্যবস্থা চালু করতে পারে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র।

প্রকাশকরা সবাই সম্মিলিতভাবে একটি শক্তিশালী বিপণন ও বিতরণ নেটওয়ার্ক তৈরি করতে পারেন। অথবা যেমন চলছে তেমন চলতে দিতে পারেন। সেক্ষেত্রে পাঠ্যবই বাদে অন্য বইয়ের ব্যবসা লাটে তোলার জন্যে আপনাদের হাতে মোটামুটি পাঁচ বছর সময় আছে।


মন্তব্য

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আমি নিজেও কিন্তু জানতে চাই এবার নতুন/পুরাতন কোন লেখকের ভাল কোন বই এসেছে। কিন্তু কিভাবে জানব? প্রতিটি স্টলে ঘুরে প্রতিটি বই হাতে নিয়ে দেখে কি সেটি বোঝা সম্ভব!!!
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

হিমু এর ছবি

একটু সময় দিন। হয়তো, একটু শ্রমও চাইবো আপনার কাছ থেকে। কিন্তু সমাধান পাবেন।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

আলমগীর এর ছবি

এসএসসি/ইন্টার পাশ করাদের ১০% বই কিনে পড়বে এটা কোনমতেই হতে পারে না। বই কিনবে যার পয়সা আছে। আমি আমার জীবনের অধিকাংশ (সৃজনশীল) বই পড়েছি জেলা পাবলিক লাইব্রেরিতে। আমার বন্ধুদের অনেকেই তাই করেছে। ১০০/৮০টাকা দিয়ে বই কেনার সামর্থ্য আমার ছিলো না।

বইয়ের চাহিদা বাড়লে দাম কমে যাবে এটাও ঠিক না। আপনার যে বইটা ১০০ টাকায় বিক্রী হবে, তার বাঁধাইয়ের পেছনে খরচ অন্তত ১২টাকা। বইয়ের কাগজের খরচ, মলাটের খরচ, এগুলো কোনটাই কমবে না।
শুধুমাত্র ছাপা/কালি খরচ কমে ছাপার সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- "লেস প্রফিট, মোর টার্নওভার।" ছাপা বেশি হলে বইয়ের খুচরা মূল্য অবশ্যই কমবে আলমগীর ভাই। কিন্তু সেক্ষেত্রে বই বিক্রি হতে হবে। নাহলে প্রকাশকরা অল্প পরিমান ছাপাবে এবং সেই অল্প পরিমান থেকে নিজেদের টার্গেট লাভ তুলে আনতে বইয়ের খুচরা মূল্য বেশি রাখবে। মানে পাঠক বা ক্রেতার ইয়েমারা সারা আরকি!

এসেসসি, ইন্টারের পোলাপানদের ১০% জনসংখ্যা ৮০/১০০ টাকা খরচ করতে পারবে, এটা খুবই স্বাভাবিক। এই হিসাবটা যদি ২০% এও যায়, আমার মনেহয় না খুব অবান্তর কিছু হবে। এখন আমাদের দেশের লোকজনের হাতে অনেক টাকা। এই লোকজনের সংখ্যাটা সম্ভবত শতকরা ২০ ভাগের বেশি। আর এই কুড়ি শতাংশের মধ্যে আধেকও মিলবে না বলছেন এসেসসি বা ইন্টারের স্টুডেন্ট!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

আলমগীর এর ছবি

ভাইরে, প্রকাশকদের লাভ এমনিতেই খুব কম। খুচরা বিক্রেতারা ১৫-২৫% পায়। লেখক পায় ১০-১৫%। তার উপর ডিস্ট্রিবিউশন খরচ ধরেন। প্রকাশকের বিনিয়োগ ধরেন। দেখেন কত দাঁড়ায়। আমার ২/৩ বারের ছোট্ট অভিজ্ঞতা থেকে বললাম। বই প্রোডাকশনে সবচেয়ে বেশী খরচ হয় প্লেট মেকিংএ (আমাদের দেশে ভিন্ন প্রযুক্তি এখনও সহজলভ্য নয়)। একবার প্লেট বানালে যতবার ইচ্ছা ছাপতে পারে। প্রকাশকরা একবারে ১০ হাজার না ছেপে ৫০০ করে ছাপে- এই যা। কাগজ-কালি হয়ত বাকী রাখে। নতুন লেখকরা প্রায়ই নিজ খরচে বই ছাপেন।

পাইরেসির বিষয়টাও মাথায় রাইখেন। আমার ১২০টাকার একটা বই, কপি করে ৮০টাকায় বিক্রি হয়। প্রচার বাড়িয়ে প্রকাশকের লাভটা কী?

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাই আমার বলার আছে খালি একটা কথা। বাংলাদেশের সব মানুষ কি আন্ধা না কানা?
যদি বাঙালিরা ঠিক মত চোখে দেখেই থাকেন তবে এত বিশাল বিশাল মার্জিন দিয়ে, বড় বড় অক্ষতে, লাইনের মাঝে বিশাল বিশাল ফাঁক দিয়ে বই প্রকাশ করার কি দরকার? সেবা প্রকাশনী যে চাপায়া চাপায়,চিয়াপা চিপায়া ছোট ছোট অক্ষরে লাইনের মধ্যে কম ফাঁক দিয়ে এত দারুন দারুন বই ছাপছে সেগুলো কি কেউ পরছে না?
ভারতিয় বাঙলা বই গুলোরও অক্ষর ছোট, লাইনে ফাঁক কম ও মার্জিন কম। দেখতেও অসুন্দর না। পাঠক প্রিয়ও।

তাহলে আমাদের দেশে কেন এই অবস্থা। ৫০ পৃষ্ঠার একটা বইরে টেনেটেনে লম্বা করে, বড় বড় অক্ষরে দিয়ে ১০০ পৃষ্ঠা করা হয়। এইটা কি উচিৎ এতেতো দাম ও দ্বিগুন হয়ে যায়। আর সব বইয়ের হার্ড বাইন্ডীঙ্গের সাথে উন্নত মানের পেপার ব্যক বের করলে কি দামটা আরো কিছু কমে না?

আমিই তানভী |

হিমু এর ছবি

হে হে হে আমি চিপা দিয়ে নিজের ঢোল বাজাই একটুসখানি। আমিও পুস্তকী কাগুজেকাগু হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছি দুয়েকদিনের মধ্যে। আমার প্রকাশক মিলিটারি টাইপ, কথায় কথায় বন্দুক পিস্তল বের করে। পাণ্ডুলিপি পাঠাইলাম, ব্যাটা বলে এত কী লিক্সেন, ছোটো করেন! আমি আরো বড় বড় দুইটা গল্প লিখে আরো বড় করলাম। তখন তিনি ফতোয়া জারি করলেন যে বই ৫ ফর্মার বেশি হতে পারবে না। আমি চাইলে সমপরিমাণ লেখা যোগ করতে পারি, কিন্তু "পাঁচ ফর্মার স্কাই" ইজ দ্য লিমিট। তখন ফন্টের সাইজ করা হলো ১১। স্পেসিং কমানো হলো। মার্জিন কমানো হলো। ৭ ফর্মার জিনিস চেপেচুপে ৫ ফর্মায় ঢুকায় দিলো। প্রিন্ট নিয়ে দেখি আমিও আরামসে পড়তে পারছি [আমি ব্যাপক কানা]। ফেসবুকে একটা জরিপ নিয়েছিলাম ফন্ট সাইজের উপর, কেউ বলে ১৪, কেউ বলে ১৩, তবে সবাই একমত যে ১২র নিচে নামা উচিত না। অথচ ১২র জায়গায় ১১ করে ছাপলে ফর্মাখানেক কমে যায়। এইসব পাঠকরে হাতে একটা করলা ধরায় দেয়া উচিত বইয়ের সাথে।

পেপারব্যাক বের করতে চাইলে খুব ভালো কোয়ালিটির নিউজপ্রিন্ট লাগবে নতুন প্রেসগুলির জন্য। সেটা যদি সস্তায় নিশ্চিত করা যায়, পেপারব্যাকের সুদিন আবার ফিরে আসবে। বাঁধাইতে খরচ খুব একটা কমবে না।

একটা ব্যাপার দেখেন, হুমায়ূন আহমেদ বা জাফর ইকবালের বেশির ভাগ বইই কিন্তু পেপারব্যাক টাইপ। নিজে কিনে পড়লেন, আরো দশজনকে পড়তে দিলেন তারপর ভুলে থাকলেন। কিন্তু বাস্তবে ওনাদের বইগুলি রেফারেন্স বইয়ের মতো মজবুত। আর ভারি! এ কারণেই আমি জাফর ইকবালের বই অন্যের কাছ থেকে চেয়েচিন্তে পড়তাম, সমগ্র বের হলে কিনতাম। সেটার কাগজ-ছাপা-বাঁধাই সবই মোটামুটি ভালো থাকে।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

হিমু এর ছবি

আলমগীর ভাই, আমরা ১০% নিয়ে ডিসপিউট করতে পারি। আমার যুক্তিটা কিন্তু আপনার ক্ষেত্রেও ভুল নয়, আপনি ৯০% এর মধ্যে পড়েন। আমি নিজেই কোনো বই কিনতাম না পারতপক্ষে, আমার বড় ভাই আমাদের পরিবারের হয়ে যাবতীয় বই কেনার দায় গত তিন দশক ধরে বহন করে আসছেন। আর আপনি যখন উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্র ছিলেন, মনে হয় বইয়ের দাম ৮০-১০০র ঘরে যায়নি।

বইয়ের চাহিদা বাড়লে দাম কমবেই। অঙ্ক করে দেখুন। ভ্যারিয়েবল কস্টের স্লোপটা নিচে নেমে গেলেই দেখবেন কমছে। ১০০ কপির জায়গায় ২০০ কপি ছাপা হলে কমবে না, ১০০০ বা ১০০০০ হলে কমবে। মানে চাহিদাটাকে লোকাল থেকে গ্লোবাল স্কেলে নিয়ে যেতে পারলে।

তবে ছাপা বইয়ের ভবিষ্যৎ নড়বড়ে। এটাকে আরো নড়বড়ে করে দেয়ার জন্যে কাজ করছি আমরাও চোখ টিপি



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

আলমগীর এর ছবি

৮০/১০০ ঘরে ছিল বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বই। (মান উন্নত হওয়ার কারণেই হয়ত)। সেবা/প্রজাপতির বই ছিল ১৫টাকার মতো। ইমদাদ/হুমায়ূন ৬০/৬৫ হবে। এটাও কম না।

১০০ থেকে ১০০০ কী অত সহজ?

তবে ছাপা বইয়ের ভবিষ্যৎ নড়বড়ে।

একটা কিন্ডেল কিনি কিনি করে আটকে রাখছি মনটারে মন খারাপ

স্পর্শ এর ছবি

একটা কিন্ডেল কিনি কিনি করে আটকে রাখছি মনটারে

আমিও মন খারাপ
তবে কিন্ডলে বাংলা পড়া যাবে না মনে হয়। চিন্তিত


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

সাফি এর ছবি

"ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে আমবুলি ছাপানো কার্ড না কিনে বই কিনে প্রথম সাদা পাতাটায় প্রেমার্থী লিখে জানাতে পারেন তাঁর মনের কথা।"

আসলে এই আমবুলি ছাপানো কার্ড প্রমোট করার জন্য অনেক ব্যবসায়ী আছে, অথচ বইয়ের ব্যপারে সেটা নেই। তাছাড়া গল্প উপন্যাস বা ছিনেমাও এ ব্যপারে প্রভাবক। এসব ক্ষেত্রেও বই পিছিয়ে রয়েছে কার্ড বা চটকদারি উপহারের থেকে। আমাদের দেশে যেখানে আমরা রাস্তায় ঘন্টার পরে ঘন্টা সময় অলসভাবে ব্যয় করি, সেখানে সবাই বই হাতে নিয়ে রাস্তায় বেরুচ্ছে এমন হওয়াই উচিত বলে মনে করি।

হিমু এর ছবি

গাড়িতে বসে সময় কাটানোর জন্যে এখন সবাই এফএম রেডিও শোনে। দিনের বেলা জ্যামের সময়টা যাদের গাড়ি আছে তারা বই পড়তে পারবে। যাদের গাড়ি নাই ... তাদের জানটা হাতে নিয়ে ঘুরতে হয়, বই পড়বেন কখন?

আমি প্রেমদারদের প্রতি আহ্বান জানাই, আপনারা একে অন্যকে বই কিনে উপহার দিন। মাসে একটা। প্রথম পাতায় গত মাসের প্রেমের সামারি লিখবেন। পরবর্তীতে যখন আপনারা পার্টনার পাল্টাবেন [আই হোপ সো, একাধিক প্রেম করা উচিত জীবনে], তখন পুরনো প্রেমের একটা সিরিজ রিপোর্ট থাকবে হাতের কাছে হাসি । নতুন পার্টনারকেও ঐ অভ্যাসে ফেলে দেবেন। প্রেমও হবে, লেখক-প্রকাশকও খেয়েপরে বাঁচবে, আপনাদেরও অলস বিকেলে স্মৃতিচারণে সুবিধা হবে।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

তাসনীম এর ছবি

বইয়ের মার্কেটটা আসলে খুব ছোট...এজন্যই তেমন কোন মার্কেট রিসার্চ হয়নি। সেবা প্রকাশনী সেই সত্তরের দশকেই ডাকে বই পাঠাতো পাঠকের কাছে। পাঠকটাও ওরা তৈরি করে নিয়েছে। একই কথা হুমায়ূন আহমেদ এবং মুহম্মদ জাফর ইকবালের ক্ষেত্রেও...উনারাই উনাদের পাঠক তৈরি করে নিয়েছেন। বাংলাদেশে বোধহয় এটাই সত্যি, তৈরি পাঠক খুব কম, লেখককেই তৈরি করতে হয় নিজের পাঠক।

ব্যতিক্রম শুধু রসময় গুপ্তবাবু, উনার পাঠক সবসময় রেডি হাসি

--------------------------------------
যে কথা এ জীবনে রহিয়া গেল মনে
সে কথা আজি যেন বলা যায়।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

হিমু এর ছবি

এখন সমস্যা হচ্ছে, লেখককে নিজের পাঠক তৈরির জন্যে বৃহত্তর মিডিয়ার আশ্রয় নিতে হয়। হুমায়ূন আহমেদ আর ইমদাদুল হক মিলন বিটিভি আর জাফর ইকবাল সায়েন্স ফিকশন দিয়ে মোটামুটি পাঠক জয় করেছেন। আনিসুল হক তো নাটকসিনেমা আর প্রথম আলোর কলামের সূত্রে ব্যাপক এক্সপোজার পান, তিনি কিন্তু এদের সমকক্ষ হতে পারেননি। আমার মনে হয় নতুন পাঠক তৈরি করাটা এখন অনেক বেশি কষ্টকর। তৈরি পাঠকের পাতে মেরেকেটে উঠতে হবে এখন।

আরএমজি খাত সর্বদাই রমরমা হাসি



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

পৃথিবী [অতিথি] এর ছবি

আমার মনে হয় পাঠক তৈরী করে নেওয়ার প্রক্রিয়াটা অনেক কিছুর উপর নির্ভরশীল। হুমায়ুন আহমেদ কিন্তু তাঁর নাটকের মাধ্যমেই বিখ্যাত হয়েছেন, বইয়ের মাধ্যমে না। জাফর ইকবাল মূলত বিজ্ঞান কল্পকাহিনী লিখেন এবং বিজ্ঞান ও কল্পনার খুব সুন্দর মিলন ঘটাতে পারেন। দক্ষতা তো দূরের কথা, কয়জনই বা বাংলায় কল্পবিজ্ঞান লিখেন!

দেশে রাজনীতি নিয়ে অনেকেই লিখেন, সবার বিচার-বিশ্লেষণ যে ভাল তাও না। কিন্তু আপনার রাজনীতিজ্ঞান যতই ভাল হোক, প্রতিষ্ঠিত লেখকদের ভিড়ে আপনার বইটি হারিয়ে যেতে পারে। তাই রাজনীতির ক্যাটাগরীতে নিজের জন্য জায়গা করে নিতে হলে আদাজল খেয়েই নামতে হবে।

নাশতারান এর ছবি

শিশুকালে জন্মদিনে অনেক বই পেতাম। উপহার দেওয়ার বেলায়ও বই থাকত তালিকার শীর্ষে। বই দেওয়া-নেওয়ার সেই চল হয় কমে গেছে, নয়তো উঠে গেছে পুরোপুরি। শেষ কবে বই পেয়েছিলাম মনে পড়ে না। বই ভালবাসে এমন মানুষের সংখ্যা কমে গেছে হয়তো, অথবা বইয়ের চেয়ে সহজলভ্য আনন্দের উৎস তারা খুঁজে পেয়েছে। স্যাটেলাইট চ্যানেল আছে, এফেম বেতার আছে, মোবাইলে রাতভর ফাউ গ্যাজানোর সুযোগ আছে। ভালবাসার দু'টি কথা বলতে সৃজনশীল হবার প্রয়োজন হয় না এখন। সেজন্য আর্চিজ-হলমার্ক আছে। সর্বত্রই যদি পরিস্থিতি এমন হয় তবে বইয়ের বাজার অচিরেই লেখক এবং প্রকাশক সমাজের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে।
নব্য লেখকদের জন্য বাজারপ্রিয়তা পাওয়া আরো দুষ্কর।
কী করা যায়?
আমার মতে সচেতনভাবে মানুষের পাঠাভ্যাস তৈরি (অথবা পুণরুদ্ধার) করা প্রয়োজন। বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো বাজার বৃদ্ধির জন্য অহেতুক চাহিদা তৈরিতে ব্যস্ত। সেক্ষেত্রে পাঠক তৈরি করা কি অন্যায়ের পর্যায়ে পড়ে? আমরা বলব না যে "অমুক বইয়ের সাথে তমুক বই ফ্রি"। আমরা শুধু চাইব ছাপা হরফগুলোও যে ভালবাসা পাবার যোগ্য তা বোঝাতে। এ ভালবাসা ম্যাগি নুডুলসের মতো দু' মিনিটে তৈরি হয়না। রয়েসয়ে স্বাদ নিতে হয়। সেই স্বাদ বোঝাতে কিছু সক্রিয় উদ্যোগ নেওয়া জরুরি মনে হয় আমার।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

হিমু এর ছবি

পাঠাভ্যাসের কুলনেস ফ্যাক্টরটাও বাড়াতে হবে আর কি



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- সেবা প্রকাশনী আর অমুক প্রকাশনীর মধ্যেকার পার্থক্যটা খুব ব্যাপক।

অন্যের কথা জানি না, আমি নিজে সেবা প্রকাশনীর বইয়ের ভক্ত হয়েছি মূলতঃ তাদের বইয়ের ভেতরের জিনিষের কারণে। আমার হাতে পাঁচটা প্রকাশনীর পাঁচটা বই থাকলেও কোনো এক কারণে সেবা প্রকাশনীর বই খুঁজেছি আমি নবীনগর রেলস্টেশনের ছোট্ট টং দোকানে। এই আমার মতোই পাঠকের দ্বারাও সেবা প্রকাশনীর বিপণন কার্যটা সমাধা হয়ে থাকবে কোনো এক নাম না জানা স্টেশনের বইয়ের দোকান পর্যন্ত।

অন্যান্য প্রকাশনীগুলোও তো সেবা প্রকাশনীর এই পন্থাটা অবলম্বন করতে পারে, অন্তত শুরুতে।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

হিমু এর ছবি
নৈষাদ এর ছবি

এভাবে বললে কিছুটা অশালীন মনে হয়, তবুও বলতে হয় প্রকাশনা থেকে শুরু করে পাঠকের/ক্রেতার হাতে বইটা যাওয়া পর্যন্ত পুরো চেইনটার পরিবর্তন দরকার। দ্রুত আমি আমার নিজের কথাই চিন্তা করি।

প্রথম হচ্ছে নতুন একটা বই যখন প্রকাশ করা হচ্ছে, পাঠক কিভাবে জানতে পারছে? খুব বেশি বইয়ের সমালচনা চোখে পড়ে না। দেশের সাপ্তাহিক গুলোতে বইয়ের পাতা সচরাচর দেখা যায় না যেখানে বইয়ের আলোচনা থাকে (এবং ভরতের সাপ্তাহিক গুলির কথা চিন্তা করুন)। প্রকাশকদের সংগঠনরা কিন্তু একটা ওয়েব-সাইটে নতুন বইয়ের তালিকা দিতে পারে)। বইয়ের ক্ষেত্রে বিপণনের ব্যাপারটা প্রায় অনুপস্থিতই বলা যায়। (শুধু সাতের পাতায় তিন ইঞ্চি বাই তিন ইঞ্চি একটা বিজ্ঞাপণ কিন্তু বিপণন না)।

বিতরনের ব্যাপারটা চিন্তা করুন। ঢাকাতেই মনের মত একটা বাংলা বই কিনতে হলে নিউমার্কেট বা আজিজে যেতে হচ্ছে। ব্যাস্ত লোকজনের, যাদের বই পড়ার ইচ্ছা এবং সামর্থ্য দুটোই আছে, তাদের পক্ষে সবসময় সেখানে যাওয়া মনে হয় না সম্ভব (আজিজ আবার শুক্রবারে বন্ধ)। তারপর বই বিক্রয় কর্মীদের দক্ষতা সবসময়ই প্রশ্নের মুখোমুখি (আমি এরকম কেয়ারলেস বিক্রয় কর্মী অন্য কোন বিক্রয় ব্যবস্থায় দেখিনি)।

ভ্যালেন্টাইনস ডের কথা বলেছেন। চিন্তা করুন কার্ড, ফুল আর মোবাইল ফোন কোম্পানি গুলি এই এক বা দুই দশক আগে দেশে আসা একটা কনসেপ্টকে ধরে কীভাবে ব্যবসা করে যাচ্ছে...।

হিমু এর ছবি

এক প্রকাশককে বুদ্ধি দিলাম ডাকে বই পাঠানোর সিস্টেম করতে। বিয়াপক আইলসা লোক, তার উপর জমিদার বংশের ছেলে, বলে পোস্টাপিসে পাঠানোর লোক নাই।

ডাকে বই পাঠানো একটা খুব কার্যকর ব্যবস্থা হওয়া উচিত ঢাকা শহরে [ঢাকার বাইরেও]। কারণ ঢাকায় বই কিনতে গেলে যাতায়াত খাতেই ডাকমাশুলের কমপক্ষে তিনগুণ খরচ উঠে যায়। আর দোকানের কমিশন দিয়ে প্রকাশকের হাতে খুব বেশি লাভও থাকে না।

কাগুজে বইয়ের প্রচারের জন্যে আমরা নিজেরা একটা ব্যবস্থা শুরু করতে যাচ্ছি অচিরেই, প্রকাশায়তন থেকে। আশা করি সেটা ফল দেবে।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

ভাঙ্গা পেন্সিল [অতিথি] এর ছবি

নিজে পাঠক, সেই পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে জানতে চাইতেই পারি, আগেকার দিনে যমন সুলভ সুশীল ভার্সন ছিল বইয়ের, এখন কেন নেই? ছাত্ররা টিফিন-রিকশা ভাড়া থেকে কয়েকটা টাকা বাঁচিয়ে বই কিনবে সেই সুযোগ কি প্রকাশকেরা রেখেছেন? ৭০-৮০ পৃষ্ঠার বইয়ে বিশাল বড় ফন্টে লেখা, পড়তে এক ঘন্টা সময়ও লাগে না, এমন বইয়ের দাম ১৫০-২০০ টাকা! ঢাকা শহরের শিশু-কিশোরদের জন্য এমনিতেও লাইব্রেরীতে যাওয়ার জো নেই... এরকম দামে বই কিনে পড়তে গেলে জ্ঞানার্জন আর বিলাসিতার মাঝের সীমারেখা নিয়ে অনেকেই সন্দিহান হয়ে পড়ে। সুতরাং খুব ভাল লেখক(ভাল বলতে নাম-যশ বুঝালাম) ছাড়া আর কারো বই কিনে বিলাসিতা করার সুযোগ কি আসলেই আছে? সেবা প্রকাশনীর স্টলে এখনো ভিড় থাকে এই কারণেই...সস্তা দামে ভালো মানের কিছু লেখা পড়তে পারছে সবাই।

আমাদের যারা বই পড়ি...যারা সে অভ্যাস ধরে রেখেছি, তাদের অধিকাংশই বাবা মার সংগ্রহ কিংবা অন্যের দেয়া উপহারের বই, কিংবা সেবার রোমাঞ্চকর বই পড়া দিয়ে শুরু করেছি। নিজেরা যখন থেকে কেনা শুরু করেছি, তখন সেবা দিয়েই শুরু করেছি। তারপর সামর্থ্যে কুলালে কেউ চকচকা মোড়কের ধবেধবে সাদা কাগজে বিশাল ফন্টে লেখা লেখাগুলো পড়তে পেরেছি, কেউ পারিনি। উঠতি কিশোর কিংবা তরুণ ছাত্রদের কথা কিংবা নিম্নবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্তের কথা ভেবে কয়টা প্রকাশক বই বের করছে? আমাদের পাঠাভ্যাস তাই মিলিয়ে যাচ্ছে শূন্যে, এভাবে আস্তে আস্তে বই এর ভবিষ্যতও মিলিয়েই যাবে। এর পেছনে শুধু পাঠককেই দায়ী করলে চলবে না, লেখক প্রকাশকেরা বহুলাংশে দায়ী।

হিমু এর ছবি

সুলভ শোভনে আগে কিন্তু সেই একই কারণে দামের পার্থক্য ছিলো, ইকোনমি অফ স্কেইল। সেবার বইগুলো ছাপা হতো বিপুল পরিমাণে, তারওপর নিউজপ্রিন্টে। দাম কম রাখা সম্ভব হতো। সেবার প্রেসও খান্দানি আর পুরনো, সেটার ডেপ্রিসিয়েশন কস্টও কম। আর সেবার বই ছাপা হতো খুদিখুদি ফন্টে, ফলে বড়সড় বইয়ের কলেবরও কম রাখা যেতো। সবকিছু মিলিয়ে দাম কম।

এখন কিন্তু নিউজপ্রিন্ট আর সাদা কাগজের দামের পার্থক্য আগের তুলনায় কমে গেছে। নতুন প্রেসগুলির অনেকগুলোই নিউজপ্রিন্ট-বান্ধব নয় [আমার প্রকাশকের মেশিন নাকি নিউজপ্রিন্ট দিলে নষ্ট হয়ে যায়]। ফলে চাইলেও সুলভ সংস্করণ প্রকাশ করে দাম খুব একটা কমানো সম্ভব নয়। এ নিয়ে আলাপ করেছিলাম কয়েকজনের সাথে, তারা জানালেন, বড়জোর পাঁচ-ছয় টাকা কমানো যাবে।

ফন্টের আকারের ব্যাপারে আমি একমত। আমি বড় হয়েছি অতীতের খুদে হরফে ছাপা বই পড়ে, আমার কাছে বর্তমান প্রকাশনা স্ট্যান্ডার্ড সুতন্বী ১২ বেশি বড় মনে হয়, ১১টা ঠিক লাগে। কিছু বই দেখে মনে হয়েছে ১৩ বা ১৪তেও ছাপা হয় আজকাল।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

সুমন্ত আসলামের ৮০ পৃষ্টার বই পড়তে সময় লাগে সর্বোচ্চ ৩৫ মিনিট দেঁতো হাসি
...বড়ই ছোট ফন্ট কী না...

ইয়ে, বিষয়টা নীতিগর্হিত জানি- তবু বলি- নীলক্ষেতের দোকানগুলো না থাকলে কিভাবে বই পড়তাম, বুঝে উঠতে পারি না। আর বাইরের ভালো বই তো এখন দামের কারণে ছোঁয়ার বাইরে। টিনটিনের একেকটা বইয়ের দাম এখন আমাদের সময়ের তিনগুণ। রাদুগা/ প্রগতির চমৎকার বাঁধাইয়ের কিছু অনুবাদ ছিলো - ঐটাও অনেকদিন হলো থেমে গেছে...

_________________________________________

সেরিওজা

ভাঙ্গা পেন্সিল [অতিথি] এর ছবি

এখনকার চালু লেখকদের(হু.আ., মু.জা.ই ) বই সেবা পাবলিশ করলে বইটার সাইজ কদ্দুর হবে মনে হয়? আমার তো মনে হয় না ত্রিশ টাকার সাইজের বই হবে! পাঠকের সামর্থ্য প্রকাশকেরা গণায় ধরছে না, তো পাঠক বাড়বে কি করে? কিভাবে নতুন কোনো লেখক ভালো লেখে কিনা সেটা যাচাই করবে? তার চাইতে প্রতিষ্ঠিত লেখকের দুতিনটা বই আর সেবা থেকে বিদেশী লেখকদের অনুবাদ কিনে মেলা থেকে ফেরত যাবার সম্ভাবনা বেশি। তাতে লাভ হচ্ছে প্রতিষ্ঠিত লেখকদের যারা ছাইপাঁশ লেখলেও আমরা গিলছি...আর লাভ হচ্ছে বিদেশী লেখকদের, তাদের নাম-যশ আরেকটু ছড়াচ্ছে। অন্তর্জালে লেখকসত্ত্বার পরিচয়ের সৌজন্যে আমি হয়তো মাহবুব আজাদ কিংবা তারেক নুরুল হাসানের বই দুখানা কিনবো, কিন্তু আর কয়জনে কিনবে?

এই কথাগুলো এখানে এতো করে বলছি কারণ সচলের একটা প্রকাশনা সংস্থা নিয়ে পরিকল্পনা আছে, তারা হয়তো বাস্তবক্ষেত্রগুলো ভেবে দেখবে। পরিবর্তনের শুরু তো কাউকে না কাউকে করতেই হবে, তাই না?

বাউলিয়ানা এর ছবি

-আমার বাবার ছিল বদলির চাকরী। তাই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আমাদের থাকতে হয়েছে। প্রথমে বলি হাইস্কুলের কথা। জিলা স্কুলগুলো বা মফস্বলের বিভিন্ন স্কুলগুলোতে দেখেছি, যাদের বাবা-মা শিক্ষিত শুধু তারাই পাঠ্যবইয়ের বাইরে অন্য বই পড়ত। এই সংখ্যাটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোল নম্বর এক থেকে দশের মধ্যে থাকত।

-স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার ইনডোর গেইম (দাবা, বিতর্ক, সাধারন জ্ঞান প্রতিযোগিতা) গুলোতে পুরষ্কার হিসেবে সবসময় বই-ই পেয়ে এসেছি। যেগুলোর মধ্যে অবধারিত ভাবে থাকত রবিন্দ্র-নজরুল-শরত চন্দ্র কিংবা ডাঃ লুতফর রহমান।

-আজকে এত বছর পর যদি আবার জরিপ করি তাহলে দেখব, সেই রোল নং এক থেকে দশে থাকা ছাত্রদের মধ্যেই কেউ কেউ সৃজনশীল বই পড়ার আগ্রহ দেখায়।

-আমার বক্তব্য হলো পড়ার চর্চাটা শুরু করতে হবে একদম পরিবারের ভেতর থেকে। আমার অভিজ্ঞতা থেকে আমি দেখেছি, যে ছেলের মধ্যে পড়ার আগ্রহটা জন্মায় তার জন্য এটা গুরুত্বপূর্ন না যে তার বাসায় বই আছে কিনা। সে যেভাবেই হোক বই জোগাড় করে পড়বে, না পারলে পত্রিকা পড়বে। যখন সে বড় হবে এই পড়ার নেশাটা তার বংশধরদের মধ্যে সঞ্চালিত হবে।

হিমু এর ছবি

ডাঃ লুৎফর রহমান! ওফফফফ ... দুইখান বই ছিলো আমাদের বাসায়, মনে হয় বড় আপা বা বড় ভাইয়া প্রাইজ পাইসিলো কোনো এককালে ... "ধর্ম জীবন" আর "মহৎ জীবন" ... কী যে বিখাউজ! আল্লা উনাকে ভেস্তে নসিব করুন।

তাহলে দেখা যাচ্ছে, স্কুল পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা আয়োজন কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকের রুচি একটা বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

আমার মনে হয়, পত্রিকাগুলো একটা বড় ভূমিকা পালন করতে পারে বই ছড়িয়ে দেবার জন্যে। পত্রিকাতে একটা শিশুতোষ পাতা থাকে, সেই পাতায় শিশুরা লেখা পাঠায়। এর পারিশ্রমিক হিসেবে তাদের হুদাই প্রাইজবন্ড বা টাকা না দিয়ে ভালো শিশুতোষ বই পাঠানো যায়।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

বাউলিয়ানা এর ছবি

এটা একটা চমতকার আইডিয়া। পুরষ্কার হিসেবে পাওয়া বই সবসময়ই জীবনের একটা মূল্যবান বিষয়।

ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদি'তে হানিফ সংকেতকে এইজন্য আমি শ্রদ্ধা করি। তিনি আর সবার মত শুধু টিভি-ভিসিআর পুরষ্কার না দিয়ে বই দেবার সংস্কৃতি চালু রেখেছেন। দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় যেখানে শুধু বিটিভি দেখা যায়, এই বই পুরষ্কার দেবার ব্যপারটা অনেক প্রভাব ফেলে।

আলমগীর এর ছবি

"ধর্ম জীবন" আর "মহৎ জীবন" ...

"যুবক জীবন" মিস করছেন। সেইরম একটা বই।

হাসিব এর ছবি

-আজকে এত বছর পর যদি আবার জরিপ করি তাহলে দেখব, সেই রোল নং এক থেকে দশে থাকা ছাত্রদের মধ্যেই কেউ কেউ সৃজনশীল বই পড়ার আগ্রহ দেখায়।

আমার তো পুরোই ভিন্ন ধারনা ! এক থেকে দশের মধ্যে থাকতে হলে যেই পরিমান ফাইট দিতে হয় সেইটা দিতে তার "আউট" বই পড়ার সময় থাকে কোথায়? কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশের সেরা ছাত্রদের দেখা হয়েছে । মোটা দাগে তারা ব্যাপক খাটতে পারে । এবং পরীক্ষায় নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট উত্তরটা দিয়ে আসতে পারে । এবং তাদের জীবনটাই সীমাবদ্ধ থাকে ঐ করাতে । বাইরের বই পড়ার সময় নাই তাদের । আছে হয়তো কিছু ব্যতিক্রম । তবে বেশীরভাগের অবস্থা আমি যেটা বললাম সেটা ।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

এইখানে বস আমার একটু দ্বিমত আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে আপনার এই কথাটা প্রায় পুরোই সত্যি, মানে যতটুকু দেখেছি আর কী...। এই খানে সেরারা ফাইটে এতোই মশগুল থাকে, যে গ্রায়েম স্মিথ কুন দলের ক্যাপ্টেন- ঐটাও কইতারেনা দেঁতো হাসি ....সৃজনশীল বইয়ের লেখক হিসেবে তারা হুমায়ুন আহমেদ আর মুঃ জাফর ইকবাল স্যারের বাইরে কারো নাম জানেও না। এবং, জানা পর্যন্তই - তারা পড়ে না।

... তবে স্কুল কলেজের ক্ষেত্রে এটা সত্যি না। প্রায় প্রতিটা ক্ষেত্রেই এক-দশের মধ্যে একদুটা আউটবই পড়ুয়া বের হয়ে যেতো। অধিকাংশ ক্ষেত্রে মাঝামাঝি স্থানের ছেলেদের মাঝে। ... আর ক্লাসের ম্যাঙ্গোপাব্লিকের মাঝেও এই ধরণের দুএকটা খুব দুষ্প্রাপ্য ছিলো না।

_________________________________________

সেরিওজা

হাসিব এর ছবি

তো সেই আউট বই পড়ুয়াগুলা কৈ যাইতো ? তারা নিশ্চয়ই ইউনিতে ভালো করতো না । কারন এখনকার দিনে স্কুলে যথেষ্ট প্রেসার নিতে হয় টিকে থাকতে হলে ।

বাউলিয়ানা এর ছবি

আসলে পড়ুয়া ছাত্র মানেই যে ভাল ছাত্র তা কিন্তু না। আপনি নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন একটা ক্লাসে কিছু পড়ুয়া এমন থাকে যারা সত্যিকার অর্থেই ভাল ছাত্র (অনেকে বলেন "গিগ") তারা একাধারে ক্লাসের প্রথম দিকের ছাত্র আবার অন্যদিকে "আসিমভ" পড়েও শেষ ফেলেছে। কিন্তু বেশিরভাগ পড়ুয়া কিন্তু মাঝারি মানের ছাত্র। ক্লাসে তাদের রোল এক থেকে তিনের মধ্যে না হলেও একদম পিছিয়ে নেই। এরা মূলত স্কুলের বার্ষিক ম্যাগাজিন, দেয়াল পত্রিকা বের করার উদ্যোক্তা। তারা উচ্চশিক্ষার্থে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় যেখানেই যাকনা কেন সৃষ্টিশীল বই এর মূল ক্রেতা কিন্তু তারাই। আমার বক্তব্য হচ্ছে এই গ্রুপটাকে আরও বড় করে তোলা।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

হাসিবের সাথে একমত ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

হাসিব এর ছবি

বড় কর্পোরেটগুলো এগিয়ে আসতে পারে পৃষ্ঠপোষকতার জন্যে।

তাহলেই হৈছে । পুরো ব্যাপারটাকে অশ্লীল রকমের বাণিজ্যিকিকরণের পথে আর কোন বাঁধা থাকবে না । কর্পোরেটেরা চলে প্রফিট মোটিভে । প্রফিট মোটিভ সেইদিকে গাজর দেখবে যেদিকে জনপ্রিয়তা আছে । এর ফলে আখতারুজ্জামান ইলিয়াস আস্তে আস্তে হারাবে আর হুমায়ূন আস্তে আস্তে আরো উচুতে উঠবে ।

আর বইয়ের কাগজের বিষয়ে আমার কিছু অবজারভেশন আছে । সেদিন বানহফের বুকস্টলে কোন একটা লিস্ট দেখতেছিলাম । দেখলাম লিস্টের প্রথম দশটা বইয়ের সবগুলোই পেপারব্যাক । কাগজ নিউজপ্রিন্টের মতো । দাম ১০ ইউরোর মধ্যে । ১০ ইউরো মানে একটা সাধারণ রেস্তোরায় এক বেলার সস্তা খাবার । (বাংলাদেশে ভাতের হোটেলে এইটাতে কত টাকা লাগে? ঐ টাকায় সেবা প্রকাশনী টাইপ দৈর্ঘ্য প্রস্থে এক-দেড় ইঞ্চি মোটা বই পাওয়া যায় ?) বাংলাদেশের প্রেসের ব্যবসায়ীরা অনেকেরেই নয়াবাজারে গুদাম আছে । তারা কি একবারও দামি অফসেট আদমানির বদলে এইসব কাগজ আমদানির কথা চিন্তা করেছেন ? আমার ধারনা করেন নাই । জার্মানির প্রেস ঐ কাগজে ছাপতে পারলে বাংলাদেশের প্রেসও ঐ কাগজে ছাপতে পারার কথা ।

হিমু এর ছবি

ঐ কাগজ নাকি কী কী সব শুল্ক বাধার কারণে প্রচণ্ড এক্সপেনসিভ?

দেশ যে কাগজটাতে পত্রিকা ছাপে, সেইটা নিউজপ্রিন্ট, কিন্তু দুর্দান্ত কোয়ালিটি। আমি এই কাগজটার কথা জনে জনে জিজ্ঞেস করেছি, সবার একই বক্তব্য, এইটার খরচ নাকি অফসেটের সমান পড়ে।

জার্মানি কাগজ কিনে সুইডেন থেকে। নিজেও মনে হয় বানায়। ওদের খবরের কাগজের যে নিউজপ্রিন্ট, সেইটা দেখলে জিভে পানি চলে আসে। বাংলাদেশ নিউজপ্রিন্ট কাগজ কিনে ভারত আর ইন্দোনেশিয়া থেকে। এই দুই জায়গায় সম্ভবত কোয়ালিটি অত ভালো না।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

আলমগীর এর ছবি

কর্পোরেটেরা চলে প্রফিট মোটিভে । প্রফিট মোটিভ সেইদিকে গাজর দেখবে যেদিকে জনপ্রিয়তা আছে

সেটা কেউ আটকে রাখতে পারবে না। কালের কণ্ঠ দিয়েই দেখুন। দেশের ডান-বাম-মাঝ সব লেখক/কলামিস্টরের একসাথে করে ফেলছে।

নিউজপ্রিন্ট আর অফসেটের দামের পার্থক্য খুব বেশী না বাংলাদেশে। বাঁধাইয়ে কিছু করার সুযোগ আছে।

হাসিব এর ছবি

আলমগীর, আমি আসলে এটা বলতে চাই না যে আমাদের ১০০% কর্পোরেটমুক্ত সহিহ সমাজে বাস করা উচিৎ । আমি বলতে চাইছি এটাই যে এই কর্পোরেটেরা যেন বইয়ের বাজার গ্রাস না করে ফেলে । বইয়ের বাজার নিয়ন্ত্রনে আনা মানে হলো চিন্তাকে নিয়ন্ত্রনে আনা । কর্পোরেটরা এমনিতেই অন্য সফট মিডিয়া দিয়ে এই কাজটা ভালোভাবেই করছে । কর্পোরেটদের কাছে ধর্না দেবার আগে এই বিষয়টাই শুধু খিয়াল কৈরা ।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

কর্পোরেটেরা যেন বইয়ের বাজার গ্রাস না করে ফেলে । বইয়ের বাজার নিয়ন্ত্রনে আনা মানে হলো চিন্তাকে নিয়ন্ত্রনে আনা । কর্পোরেটরা এমনিতেই অন্য সফট মিডিয়া দিয়ে এই কাজটা ভালোভাবেই করছে ।

একমত ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

হরেকৃষ্ন এর ছবি

ধুসর গোধূলি লিখেছেন:
- সেবা প্রকাশনীর বই খুঁজেছি আমি নবীনগর রেলস্টেশনের ছোট্ট টং দোকানে।

আপনি কি আগের বহত্তর কুমিল্লা জেলার নবীনগর এর কথা বলছেন? এটি নদীবন্দর ছিল জানতাম, এখানে রেলশটেশন কবে হোল জানালে খুশি হব।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- আপনি যে নবীনগরের কথা বলছেন, আমি সেটার কথা বলছি নারে ভাই। আমি বলছি আমার দেখা ছোট বেলার একটা রেলস্টেশনের কথা।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

আমি বইয়ের ক্রেতা এবং পাঠক। আমার কেনা বইগুলো অন্তত ত্রিশ-পয়ত্রিশজন পড়ে! ব্যাগে সবসময় কোনও না কোনও বই থাকে, বাসে যাত্রার দুই-দুই চার ঘন্টাই বই পড়ে গান শুনে কাটাই। রেজাল্টের ধার ধারিনা বলেই পারি। আমাদের ব্যাচের আমার ডিপার্টমেন্টের একজনকেও গল্পের বই পড়ে সময় নষ্ট[!] করতে দেখিনাই। এরা মোটিভেটও হয়না, মাঝখানদিয়ে আমার সাধের বইগুলো হাওয়া হয়ে যায়! মন খারাপ

-------------------------
ওলো সুজন আমার ঘরে তবু আইলোনা
এ পোড়া মনের জ্বলন কেন বুঝলোনা!

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

আজকাল লোকজন (পড়ুন তরুণরা) এক হাজার টাকা দিয়ে নাকি পিজা খায়, আড্ডার নামে রেস্টুরেন্টে বসে ৬/৭শ টাকার বিল দেয়া এখন ডালভাত-- এরা বই কিনতে পারবেনা এটা বিশ্বাস করা শক্ত। তার উপর মোবাইলের বিল তো আছেই। এমন ফোন ওয়ালা আছে যার মাসে খরচ ৫০০টাকার কম?

বই কিনতে ইচ্ছে লাগে। বইয়ের প্রচারণাও গুরুত্বপূর্ণ। প্রচার না হলে পাবলিক বই কিনবেনা।

ভাঙ্গা পেন্সিল [অতিথি] এর ছবি

পড়ার অভ্যেসটা যে বয়সে তৈরি হয় তা হলো শৈশব, বিশেষ করে কৈশোর। আমি কৈশোরকেই গুরুত্ব দিব, কারণ কৈশোরেই আমরা নিজের পছন্দে বই পড়া শুরু করেছি, সে মাসুদ রানার অভিযানই হোক, আর তিন গোয়েন্দা কিংবা বনহুরের বইই হোক। একটা কিশোরের শখ করে পড়ার মতো দামে কি বই বিক্রি হয়?

শৈশব কৈশোরে যাদের গল্পের বই পড়ার অভ্যেসটা গড়ে ওঠেনি, সেসব তরুণদের বিশাল অংশকে ফ্রিও বই গেলাতে পারবেন না। তাই পিজা হাটের কিংবা মোবাইল বিলের যুক্তি বইয়ের বেলায় কি খাটে?

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

হুমম, তা বটে।

হাসিব এর ছবি

বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয় না । এইটা পুরান ডায়লগ । এখনকার সংস্কৃতি হলো বই কিনে কেউ কখনো ক্যুল হয় না ।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

বই কিনে কেউ কখনো ক্যুল হয় না ।

এই মন্তব্য লাইক করলাম ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

Shafqat এর ছবি

আমি বই কিনিনি অনেক বছর। একমাত্র কারণ হলো বাসায় এরিমধ্যে পুরনো বইগুলো অনেকটা অযত্নে পড়ে আছে।
আমার ব্যক্তিগত কিছু মতামতঃ
১। ইন্টারনেট এখন সস্তা। অনলাইনে খবরের কাগজ পড়া যায়। ঘরে খবরের কাগজের স্তুপ জমানোর চাইতে অনলাইনে পড়া স্বস্তিকর।
২। বই এমন এক জিনিস যে এটার বারবার ব্যবহার কিন্তু হয়না। আমার যদি প্রতিদিন একটা নতুন নতুন বই পড়তে ইচ্ছে হয় তবে ভাবুন মাসে আমার বাসায় ৩০টা নতুন বই আসবে। সামর্থ্যের কথা আমি ভাবছিনা, ভাবছি বাসায় স্পেসের কথা। স্পেস কই এত বই রাখার? যেখানে পড়ে ফেলার পর তৃষ্ণা মিটে গেল?
৩। যদি এমন করা যায় যে আমার ঘরে এসে সে বই কেউ মাসান্তে নিয়ে যাবে, ৫০% ডিসকাউন্টে...আমি কিন্তু দিয়ে দেব। কিংবা বিশ্বসাহিত্যের ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরীর কন্সেপ্ট আমার খুব ভাল লাগে। কিংবা ফোনে নতুন বই অর্ডার করলাম, আমার বাসায় দুইদিনের জন্যে দিয়ে গেল বইটা; পড়ার পরে ফেরত দিলাম, কিছু ফি-ও দিয়ে দিলাম তাহলে কিন্তু পড়ার তৃষ্ণাও মেটে আবার বাসায় বই জমেওনা।
৪। কোনও ওয়েবসাইটে যদি নতুন বইয়ের সামারি দেওয়া থাকতো, তাহলে ভাল হত। Dan Brown এর The Da Vinci Code, Digital Fortress, Deception Point ইত্যাদি বই খুব হঠাত করেই সবার ঘরে ঘরে দেখা যেতে লাগল। কারণ আর কিছুই না, ট্রাফিক সিগন্যালে প্রচুর বিক্রি। কিন্তু পাঠক কি করে জানল যে ঐ বইগুলো কেনার মত, পড়ার মত?

আমার মনে হয় ইন্টারনেট যেহেতু এখন সহজলভ্য, মানুষ সেলফোন থেকে ফেইসবুকিং কিংবা চ্যাটিং করে...এই মাধ্যমে নতুন লেখক বা বইকে অনেক জনপ্রিয় করা যায়। বই আমি "কালেকশনে" কখন রাখব? যখন সেটা আমার কাছে ওয়ার্থ মনে হবে। তার আগে তো বইটা আমার জানতে হবে, পড়তে হবে?

আমাদের ছোটবেলার সাথে তুলনা করে লাভ নেই। সেসময় আমরা কি ১২০০ থেকে ১৮০০ স্কোয়ারফিটের ফ্ল্যাটবাড়িতে থাকতাম? কিংবা তখন কি এত ঘন ঘন বাসা চেঞ্জ করতাম? যার বই কেনার হাত আছে সে অনেক বই-ঈ কেনে। যার পড়ার তৃষ্ণা আছে কিন্তু বই "রাখার" জায়গা নেই তারজন্য কিছু করুন? ঠকবেন না। একটা ল্যাপ্টপ কিন্তু ১০০টা বইয়ের চেয়ে বাসায় কম জায়গা দখল করে।

হিমু এর ছবি

আপনাকে পুরনো একটা লিঙ্ক দিলাম, পড়ে দেখতে পারেন। বাংলা নববর্ষে প্রকাশায়তন নামে একটা অনলাইন প্রকাশনা ব্যবস্থা চালু করবে সচলায়তন। গত বিজয় দিবসেই হওয়ার কথা ছিলো, কিন্তু আমরা পিছিয়ে পড়েছি।

আপনি একটা গ্যারেজ সেইল দিন। বইয়ের নামধাম লিস্ট করে একটা বিজ্ঞাপন দিয়ে দিন, পুরনো বইয়ের ভারমুক্ত হয়ে যাবেন। তারপর ধুমসে আবার নতুন বই কিনবেন। ওগুলির স্পেস নিয়ে চিন্তা করবেন না, আপনার গ্যারেজ একবার যারা চিনে যাবে তারা বারবার হাজিরা দিবে দেঁতো হাসি



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

শাফ্ক্বাত এর ছবি

আপনার লিংকটা ঘুরে আসলাম। সেখানে না লিখে এখানেই লিখে জানালাম, উদ্যোগটা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। মনে হলো যেন লেখাটা আমার সাথে ডিসকাস করেই লিখা হয়েছে চোখ টিপি
অপেক্ষায় থাকলাম ই-সংকলনের।
আপনার গ্যারেজ সেইলের ব্যাপারটা শুরু করবো। আমাদের চিটাগাং এর বইগুলো সেইল নয়, আমি দান-ই করে দিতে চাই। তবে দুঃখ পাব যদি কোনোদিন সেইসব বইয়ের পাতা ঝালমুড়ির ঠোঙায় খুঁজে পাওয়া যায় মন খারাপ

সবজান্তা এর ছবি

এতোক্ষণ মহারথীদের ভীড়ে গ্যালারিতে বইসা খেলা দেখতেসিলাম। কিন্তু এই ক্ষণে, আপনার মন্তব্যখানি দেখিয়া মাঠে নামিয়া আসিতে বাধ্য হইলাম।

কীভাবে আপনার 'দানেচ্ছুক' বইয়ের নাগাল পাইতে পারি, জানাইলে বাধিত হইবো।


অলমিতি বিস্তারেণ

তিথীডোর এর ছবি

নার্সারী ক্লাসে জীবনের প্রথম পুরস্কার পাওয়া বইটিও সযত্নে রক্ষিত আছে... জায়গা আছে অঢেল, দরকার হলে খাট পালং কিছু একটা হটিয়ে নেবো!
যোগাযোগ সুবিধার কথাও ভাবুন...
তাহলে বইগুলো কাকে দান করা উচিত?? দেঁতো হাসি

--------------------------------------------------
"আমি তো থাকবোই, শুধু মাঝে মাঝে পাতা থাকবে সাদা/
এই ইচ্ছেমৃত্যু আমি জেনেছি তিথির মতো..."
*সমরেন্দ্র সেনগুপ্ত

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

শাফক্বাত এর ছবি

আপনারা দুইজনেই আমাকে gtalk এ add করুন। সকালে আম্মুকে ফোন করে ব্যাপারটা জানাবো। কিন্তু মনে রাখবেন, মুড়ির ঠোঙা যেন না হয় সাধের বইগুলো!!

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- ভাইরে, শখের বই কখনো কাউরে দিয়েন না। হিমু যেটা বলছে সেটা দেখে শেখা। এখানে দেখি বেশ বয়স্ক কিছু লোকজন সপ্তাহান্তের বাজারে অনেক পুরনো কিছু বই নিয়ে বসে। দাম তেমন পায় না বটে। কিন্তু বইগুলো দেখলেই কেমন একটা মায়া চলে আসে। হয়তো এই বয়স্ক যখন তরুণ ছিলেন, তখন হয়তো কোনো এক জন্মদিনে এই বইটা উপহার পেয়েছিলেন ঠাকুর্দার কাছ থেকে। নিজের নাতিপুতি নেই বলে হয়তো এই মার্কেটে অন্যকারো নাতিপুতির জন্য রেখে যাচ্ছেন তাঁর শৈশবের স্মৃতিকে।

আপনি কেনো বইগুলো হাতছাড়া করবেন? একটু জায়গা নিয়ে রেখেছে বটে কিন্তু ঝামেলা তো করছে না। একেকটা বই হয়তো আপনাকে ফেলে আসা দিনের একেকটা অধ্যায়ে নিয়ে যাবে। এটা খারাপ কী!

দেখেন, বাঙালী মাইক পেলে কী করে। হুদাই বিশাল একটা লেকচার মেরে বসলাম।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

অতিথি লেখক এর ছবি

কর্পোরেট জগত আসলে ,আসলেই বই এর আকার/কন্টেণ্ট সব ই হবে ব্যবসা কে সামনে রেখে । তখন ভাল লেখক রা আরো পেছাবেন ।

আমার প্রায় ই দুঃখ হয় ভাবতে আমাদের লেখকদের বই গুলা এত ছোট কেন? (বড় ফন্ট দেবার পর ও! )

পাঠক হিসেবে খুব দামি কাগজে মোড়া প্রচ্ছদ চাই না , খুব বেশি সাদা কাগজ চাই না , চাই ভাল লেখা, চাই কম দামে কিনতে । গতকাল মেলায় গিয়ে মাত্র ৩ টি বই কিনেছি। দুইটা বই নতুন লেখকদের । ভাবতেও পারি নাই , দেখতে (এবং সত্যি ই ) ছোট বই গুলার দাম একশ করে হবে!! এই বই গুলা সেবার আকারে করা হলে দাম অনেক কম হত।
লেখার মানের কারণে অনেক পাঠক ও পড়ত বলেই আমার ধারণা

স্কুলে শিক্ষক রা বই উপহার দেন সব বোরিং বই গুলা! ইয়াক!
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র আমার বই পড়ুয়া স্বভাবটাকে অনেকটাই উস্কে দিয়েছিল, বাড়িয়েছিল বই পছন্দের এর সীমা ।

প্রিন্ট মিডিয়ার বাজে কাভারেজ ও ভাল লেখকদের পিছিয়ে পড়ার একটা কারণ ।

@হিমু ভাই পাঁচ বছর বেশি কম হয়ে গেল না ? পাঁচ বছরের মধ্যে আমরা শুধুই ইবুক পড়ব? তবে সময় খুব বেশি নেই এটা সত্য । আমাদের দেশে iPad, Kindle কমন হতে এখনো আরো কিছু সময় নেবে বলেই মনে হচ্ছে ।
@সুহান সহমত । আমাদের প্রথম ১০ জনের মধ্যে মাত্র একজন বই পড়ে। ওর বই এর দৌড় ও খুব সীমাবদ্ধ! বাকিরা তো উলটো দিকে দৌড় ।
কি কমু! স্কুল এ থাকতে আমাদের প্রথম দশজনের প্রায় সবাই ছিলাম বই পড়ূয়া । যদিও হুয়া/মজাই/সেবা এর মধ্যেই লিমিটেড থাকত সবাই । তবুও পড়ত । আর এখন!!!

বোহেমিয়ান

হিমু এর ছবি

হ্যাঁ। ৫ বছরের মধ্যে যারা পড়ার তারা ই-বুকই পড়বে কেবল। আর কিছু ব্যতিক্রম তো থাকবেই।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

হাসিব এর ছবি

হ । এইরকম কথা কম্পিউটার আসার সময় লোকজন বলতো । যে কম্পিউটার বই রিপ্লেস করবে । কিন্তু সেইটা কি হৈছে ?

হিমু এর ছবি

তারাও কি আমার মতো ৫ বছর সময় বেঁধে দিয়েছিলো? দিয়ে থাকলে ঠিক কাজ করে নাই।

তবে আমার কথা ঠিক না ভুল, সেটা ৫ বছর পার না হলে বলা যাবে না। ততদিন পন্ত ধৈজ্জধরেথাকোসুনা।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

মানুষের বই পড়ার কোনরকম আগ্রহই দেখিনা( ব্যতিক্রম হূ আ এবং মু জা ই)

"পড়ার বই" যা পড়লে একটা সরাসরি আউটপুট আছে সেটাই কেউ পড়তে চায়না। বেশিরভাগ মানুষ চোথা, পিডিএফ, পিপিটি, ভিডিও লেকচার এসব খোঁজে। আর স্কুল- কলেজে নোটবই, নোট। আর বাইরের বই যা থেকে সরাসরি কোন আউটপুট পাওয়া যায়না, যেটা মানুষ নিজের ভাল লাগার জন্য পড়ে সেই ভাল লাগা এখন অন্য অনেককিছু দিয়ে রিপ্লেস হয়ে গেছে। মোবাইল, নেট, টিভি, কেএফসি, এফএম রেডিও, রিয়েলিটি শো, গায়ে হলুদ...... ইত্যাদি দিয়ে।

বই আমাদের নাচ, গান দেখাতে পারেনা, কিন্তু যা পারে সেটা আসলে কাউকে বলে বা লিখে বোঝানো সম্ভব না। ঠিক কি কারণে কিছু ভুতে পাওয়া মানুষ বই কেনে, দুপুর রোদে নীলক্ষেতে ঘুরে ঘুরে পোকাধরা বই বাসায় এনে সেটাকে মলাট দেয়, নিমপাতা দেয়, সাময়িকী- বুকলেট ঘেঁটে মেলায় কি বই কেনা হবে তার লিস্ট করে, প্রিয় কিছু বই সাথে না থাকায় ক্ষিদা পায়না, ঘুম আসেনা...সেটা যারা বোঝেনা কোনদিনও বুঝবেনা। এদের সংখ্যা বাড়ছে এবং বাড়বে। আমার মনে হয়না আমাদের কিছু করার আছে।

যারা কেনার ঠিকই নিজের দায়িত্বে খুঁজে কিনবে, যারা কেনার না বাসায় এসে দিয়ে গেলেও তারা কিনবেনা।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে সুন্দর একটা আলোচনা পড়লাম, সময়োপযোগী লেখা, তবে জানি না এই সমস্যার সহজ সমাধান কি? বইয়ের বিক্রি বাড়াতে মূল্য হ্রাস এবং পাব্লিসিটি ২এরই দরকার আছে, এ তো আর নতুন কিছু না, এবং সবাই তা জানেন, তবে এর জন্যে পাঠককূলকে এগিয়ে আসতে হবে, শুধু লেখকের নাম দেখে বই না কিনে পড়তে উপভোগ করেন এমন মনোভাব নিয়ে যতদিন না বই পড়া শুরু করবেন, ততদিন নতুন লেখকদের বই ছড়িয়ে দেওয়া কঠিন হবে। আমার সহকর্মীদের দেখি, ভালো খারাপ কোন ব্যাপারনা, তারা কাজের ফাঁকের সময়টা কাটানোর জন্যে যাই পান না কেন হাতের কাছে, বেশ আগ্রহ নিয়েই পড়েন, জানিনা এমন মানসিকতা ডেভেলপ করতে আমাদের কতদিন লাগবে। তবে, চেষ্টা চালিয়ে যেতেই হবে, "বইকেনা" দিয়ে সৈয়দ মুজতবা আলী শুরু করেছিলেন, বাকী কাজ একটু একটু করে আমাদেরই এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

শুভ [অতিথি] এর ছবি

চিন্তাটা ভালো লাগলো। খুব সুন্দর প্রস্তাব।

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

এতক্ষণ মন্তব্যগুলো পড়লাম। এর সঙ্গে আমার কথাগুলো হচ্ছে যে,

পড়ুয়া তৈরী হয় ঘর থেকেই। কোনো একজনকে পাঠ্য বই ছাড়া অন্যান্য বই পড়তে দেখেলে অন্যান্যরা (ছোটরা) আগ্রহী হয়ে ওঠে। বাবার পাশে শুয়েই অনেক বইয়ের অর্ধেক পড়ে ফেলেছি। কিন্তু এখন আমার ঘরে কোনো বাড়তি বই নেই। ঘর পাল্টানোর সময় বউ বইয়ের বোঝাকে ঝামেলা মনে করে বলে সব বিদায় করে দিয়েছি। বউও পড়ুয়া নয় বলে, (এমন কি ঘরে কাউকে বাড়তি বই পড়তে দেখছে না বলে) আমার সন্তানরাও শিক্ষায়তনপাঠ্য বহির্ভূত বই পড়তে শিখবে না। হয়তো তাদের কোনো আগ্রহই তৈরী হবে না।

তবে কাগজের বই কোনো একদিন সত্যিই হয়তো হারিয়ে যাবে। যেমন হারিয়ে গেছে চাবি ঘুরিয়ে দম দেয়া ঘড়িগুলো।

___________________________________________
ভাগ্যিস, আমার মনের ব্যাপারগুলো কেউ দেখতে পায় না!

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

সময়ের অভাবেই এই আলোচনায় যোগ দেওয়া হইলো না। তবে আজকেই নুলিয়াছড়ির সোনার পাহাড় বইটা উল্টে প্রকাশকের নিবেদন পড়ে মনে হলো একটা অংশ এখানে তুলে দেই-

"বইটির প্রথম সংস্করণ শেষ হওয়ার পর দেখা গেল দ্বিতীয় সংস্করণ সাদা কাগজে বের করলে দাম পড়ছে বেশি, কারণ ততদিনে কাগজ ও ছাপার খরচ বেড়ে গেছে অনেক। এসব ভেবে, যারা স্কুলের টিফিনের পয়সা বাচিয়েঁ বই কেনে তাদের কথা সামনে রেখে বইটির পেপারব্যাক সংস্করণ বের করা হয় তখন। কিন্তু নিউজপ্রিন্টে বইটি পাঠক গ্রহণ করলেন না দাম কম হওয়া সত্বেও। তাই আবার সাদা কাগজে শোভন সংস্করণই বের করা হল। আশা করি পাঠক এবার খুশি হবেন।"
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

হিমু এর ছবি

আমার একটা পর্যবেক্ষণ আছে পেপারব্যাক নিয়ে। নিজে তেমন বই পড়েন না, এমন বাবা-মায়েরা যখন বাচ্চাদের বই কিনে দিতে যান, তখন তারা পেপারব্যাক দেখলে নাক সিঁটকান। সম্ভবত তাঁদের ধারণা, পেপারব্যাক বইগুলি "বাজে" হয়। তারা বাচ্চাদের হাতে পেপারব্যাক বই দেখলে সেটাকে নিয়ে খুব ভালোমতো উল্টেপাল্টে দেখেন, উল্টাপাল্টা কিছু আছে কি না।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

সিরাত এর ছবি

আলোচনা জুস লাগলো, সবাইকে ধন্যবাদ।

এখন কাগজের বইয়ের সাথে সাথে অনলাইন বইয়ের জনপ্রিয়তাও সেইরকম বাড়তেসে। বাংলায় এই কাজ করলে কিন্তু খারাপ হয় না। এই অ্যাঙ্গেলটা মাথায় রাখা দরকার।

সমস্যা একটাই, পাইরেসি ঠেকাইবেন ক্যামনে? আমি নিজেই তো আর বাঁধাই বই কিনি না, খালি নামাই। হাসি মন খারাপ

হিমু এর ছবি

এটার একটা প্রোপ্রায়েটরি সলিউশনের কথা চিন্তা করা হচ্ছে।

একটু ধৈজ্জ ধরো। সবই দেখবা। কারণ তুমি একাই হবা প্রকাশায়তনের কর্পোরেট ক্লায়েন্ট চোখ টিপি



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

আগার রূপা কি বানিয়ান প্যাহনোগি,
তো, রূপা ক্যায়া প্যাহনেগি? ইয়ে, মানে...

___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।