অ্যাটেনবুড়ো

হিমু এর ছবি
লিখেছেন হিমু (তারিখ: মঙ্গল, ১৩/১২/২০১১ - ১২:৩২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

যখন ছোটো ছিলাম, তখন আগন্তুক বড়দের গৎবাঁধা প্রশ্নের মুখে পড়তাম, বড় হয়ে কী হবে? বড় হয়ে যাওয়ার পর কেউ জিজ্ঞেস করে না, বুড়ো হয়ে কী হবে?

বুড়োদের ওপর আমাদের কোনো ভরসা বোধহয় নেই। মানুষ বুড়ো হয়ে একটা কিছু হবে, এই আশাবাদে হয়তো মানুষ কখনো পৌঁছানোর মতো শক্তিশালী হতে পারেনি। সেই আদিকাল থেকে, যখন আমরা শিকার করতাম আর এটাসেটা কুড়িয়ে খেতাম, দিন শেষ করতাম আগুনের পাশে গোল হয়ে ঘিরে বসে, তখন থেকেই হয়তো বুড়োরা কোনো কিছু না হওয়ারই প্রতীক। মানুষ শিশু থেকে যুবক হবে, সন্তানের জন্ম দেবে, তারপর বুড়ো হয়ে যাবে। বার্ধক্য মানুষের স্বেচ্ছা গন্তব্য নয়, অলঙ্ঘ্য পরিণতি কেবল। কেউ বুড়ো হতে চায় না বলেই হয়তো আর ভাবে না, বুড়ো হয়ে কী হবে সে।

আমি অনেক বছর বেঁচে থাকতে চাই, বুড়ো হতে চাই, আর যেনতেন বুড়ো নয়, একজন অ্যাটেনবুড়ো হতে চাই।

শরীর সুস্থ না থাকলে, বা মন খারাপ থাকলে নেট ঘেঁটে বিবিসির ডকুমেন্টারিগুলো খুঁজে বের করে দেখি। সেখানে ডেভিড অ্যাটেনবুড়ো জীবনের প্রতি কী প্রবল কৌতূহল আর ভালোবাসা নিয়ে আমাদের এই একলা গ্রহের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেড়াচ্ছে। পত্রিকায় খবর পড়ি, কোনো এক নরপশু হাসান সাঈদ সুমন তার স্ত্রীকে অন্ধ করে দিয়েছে সন্দেহের বশে, ব্লগে আর ফেসবুকে পড়ি, আরো সহস্র অমানুষ তার সমর্থনে কীবোর্ড খুলে ঝাঁপিয়ে পড়েছে, তখন শুনি, একজন অ্যাটেনবুড়ো হেডফোন ফিসফিস করে বলছে, দেখো, আলোর জন্যে একটা গাছের কী অতুল তৃষ্ণা, সে কেমন করে আলোর দিকে বেড়ে উঠছে। স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখি, কোথায় এক বৃষ্টিঘন জঙ্গলে আকাশ লেহনের সংকল্প নিয়ে বেড়ে উঠছে এক একটি বৃক্ষ। পরিমল জয়ধর তার কিশোরী ছাত্রীকে ধর্ষণ করে, আমাদের সমাজের মানসধর্ষকেরা হাত খুলে লিখে চলে, ঐ কিশোরীরই চরিত্র খারাপ, তার বেশভূষা ধর্ষণের আমন্ত্রণ জানায়। হেডফোনে অ্যাটেনবুড়ো বলে, দ্যাখো, নিউজিল্যাণ্ডের কোন দুর্গম পর্বতে একটা কাকাপো টলতে টলতে এগিয়ে যাচ্ছে পাহাড়ের চূড়ার দিকে, যেখানে সে একটা গর্ত খুঁড়ে তাতে মুখ লাগিয়ে ডাকবে তার সঙ্গিনীকে, সেই ডাক বিবর্ধিত হয়ে ছড়িয়ে পড়বে তার একান্ত উপত্যকায়, মাদী কাকাপো, যদি বিলুপ্ত হয়ে না থাকে, তার ডাক শুনে এগিয়ে যাবে সেই পাহাড়শিখরের দিকে, আর চেষ্টা করবে তাদের এই বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতিটিকে রক্ষার জন্যে। সড়ক দুর্ঘটনা হয়, আমাদের দরিদ্র চলচ্চিত্র জগতের পাঁচজন মানুষ এক লহমায় হারিয়ে যায়, আমাদের নির্লজ্জ দুর্নীতিবাজ মন্ত্রী গিয়ে আহত বাকিদের বলে, দোষ কিন্তু আপনাদের চালকেরই ছিলো। স্ক্রিনে দেখি, পলিনেশিয়ার দূর দ্বীপে মানুষ দেখে অনভ্যস্ত একটা পাখি কী অসীম আস্থা নিয়ে বসে আছে অ্যাটেনবুড়োর হাতে, আর বুড়োটা সেই পাখির মাথায় হাত বুলিয়ে ফিসফিস করে বলছে সেই পাখিদের গল্প, কী করে তারা অদ্ভুত কোনো শব্দ শুনলেই আকাশ ফুঁড়ে দুড়দাড় করে হাজির হয় সেই দূর দ্বীপের ঘন জঙ্গলের মাঝে এক ঘাসের চত্বরে। গল্পের মাঝেই পাখিটা নিঃশঙ্ক চিত্তে অ্যাটেনবুড়োর হাত বেয়ে তার কাঁধে উঠে পড়ে সন্তানের মতো, তারপর বাতাসে ডানা ভাসিয়ে চলে যায় তার যেখানে যাওয়ার। আমাদের একজন লেখক বইমেলা শেষে বাড়ি ফেরার পথে নিজের বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে আক্রান্ত হন ঘাতকের হাতে, আরেকজন লেখক তাঁর মৃত্যুর চার বছর পর প্রবাস থেকে ডুকরে ওঠেন সেই হামলার সাফাই গাইতে, ব্লগে-ফেসবুকে দেখি আরো অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন অমানুষের দল বলছে, মারছে ঠিকই আছে, মাইর খাওয়ার মতই কাম কর্ছে। স্ক্রিনে দেখি, হাঙ্গেরির এক বুনো নদীতে নৌকায় চুপ করে একটি দৃশ্যের অপেক্ষায় বসে আছে অ্যাটেনবুড়ো, একদিনের জন্যে সেই নদীর বুক থেকে জেগে উঠে আকাশের অধিকার দাবি করছে নিযুত মে ফ্লাই, মৃত্যুর আগে একমাত্র সঙ্গমের উদ্দেশ্যে। একটা বুনো ক্যাকটাসের গোল ডাল গড়াতে গড়াতে গিয়ে ঠেকছে মরুভূমিতে চরে বেড়ানো অ্যাটেনবুড়োর হাতে, অ্যাটেনবুড়োর পাশে বসে একটা সিলের ছানা বরফের গোল শ্বাসগর্তে অপেক্ষা করছে তার মায়ের জন্যে, দক্ষিণ মহাসাগরের পানি চিরে সূর্যের দিকে চাইছে একটা ঝিল্লিমুখো তিমি, আর তার লেজের ঝাপটায় ভিজে যাচ্ছে আমাদের অ্যাটেনবুড়ো, একটা সাগরসীমের গাছ টুপ করে তার একটি বীজ ভাসিয়ে দিচ্ছে নদীর বুকে, অ্যাটেনবুড়ো ফিসফিস করে বলে চলছে টেকো শকুনের অসাধারণ ঘ্রাণশক্তির কথা, গভীর বিষাদ নিয়ে বলছে প্রকৃতির বুক থেকে হারিয়ে যাওয়া হলদে-কালো ডোরা ব্যাঙের বিলুপ্তির কাহিনী, পিতার ভালোবাসায় গাছের ডাল থেকে কোলে তুলে নিচ্ছে একটা গম্ভীর ক্যামেলিয়নকে। ওদিকে পত্রিকায় দেখি মন্ত্রীরা চুরি করে, হিংস্র মানুষ পিটিয়ে মেরে ফেলে নিরীহ মানুষকে, পুলিশ ছাত্রের পা ভেঙে দেয়, মা খুন করে সন্তানকে, শিশু ধর্ষিত হয় বৃদ্ধের হাতে, বনের পাশে তামাক আর ইঁট পোড়ানোর ভাঁটা চলে জমজমাট, একটা ঘরছাড়া বাঘ অবাক চোখে দেখে তাকে নিধনে এগিয়ে আসা হিংস্রতর মানুষকে। অ্যাটেনবুড়ো যখন চারশো মিলিয়ন বছরের পুরনো পাথরখণ্ড বুকে চেপে ধরে সেই পাথরের বুকে রেখে যাওয়া প্রাণীর শরীরের আভাস দেখিয়ে ফিসফিস করে বলতে থাকে, দেখো প্রাণ কত সুন্দর, প্রকৃতি কী গভীর মমতায় তার স্মৃতি ধরে রেখেছে, তখন আমাদের প্রধান দৈনিকে দেখি বুদ্ধিবেশ্যারা মাত্র চল্লিশ বছরের পুরনো যুদ্ধের ইতিহাস নষ্ট করে বিকল্প ইতিহাস লেখে।

আমরা তো একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করতে চাওয়া জাতি হতে চেয়েছিলাম। এমন কেন হলাম, যখন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় টপকানো মানুষেরাই একেকটা প্রচণ্ড অমানুষ হয়ে ওঠে? যাদের শিক্ষিত হওয়ার কথা, তারাই দেখি সবচেয়ে বর্বরের মতো কথা বলে। অ্যাটেনবুড়োকে দেখি জঙ্গলে পাহাড়ে হামাগুড়ি দিয়ে একটা ছোট্ট ফুলের কাছে নতজানু হয়ে বসে বলতে, কী করে সেই ফুল নিজে টিকে আছে, আর টিকিয়ে রেখেছে আরেকটি পতঙ্গকে।

অ্যাটেনবুড়োকে মনে হয় উন্মাদে ভরা পৃথিবীতে শেষ সুস্থ লোক, শ্রোতার অভাব পরোয়া না করে বকে চলা এক উদভ্রান্ত আত্মমগ্ন গল্পদাদু, যে বছরের পর বছর ধরে বলে চলছে পৃথিবীর গল্প, প্রকৃতির গল্প, প্রাণের গল্প আর ভালোবাসার গল্প। মনে হয়, আমাদের তথাকথিত শিক্ষিত সব বর্বরের বিনিময়ে প্রকৃতির কাছে একজন অ্যাটেনবুড়ো চেয়ে নিই আমাদের জন্য।

বুড়ো হয়ে একজন অ্যাটেনবুড়ো হতে চাই। হতে না পারলেও চাওয়াটা ধরে রাখতে চাই। আমি এক স্বার্থপর বিশ্বনিন্দুক। পৃথিবীর খুব কম মানুষকেই আমি ভালোবাসি। তার মধ্যে অ্যাটেনবুড়ো একজন। এই লোকটা সারা পৃথিবীর মানুষের জন্যে সম্পদ।


মন্তব্য

স্বাধীন এর ছবি

চলুক

কৌস্তুভ এর ছবি

ওহ, এই বুড়োকে যা ঈর্ষা হয়! অ্যাটেনবুড়ো নামটা ভালো দিয়েছেন।

সুরঞ্জনা এর ছবি

"অ্যাটেনবুড়োকে মনে হয় উন্মাদে ভরা পৃথিবীতে শেষ সুস্থ লোক"

চলুক

হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

নিটোল এর ছবি

গুরু গুরু

_________________
[খোমাখাতা]

তিথীডোর এর ছবি

চলুক
এই ভিডিওটা দেখলাম আজ সকালে। কী অদ্ভুত!

আমরা তো একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করতে চাওয়া জাতি হতে চেয়েছিলাম। এমন কেন হলাম, যখন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় টপকানো মানুষেরাই একেকটা প্রচণ্ড অমানুষ হয়ে ওঠে? যাদের শিক্ষিত হওয়ার কথা, তারাই দেখি সবচেয়ে বর্বরের মতো কথা বলে।

মন খারাপ

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

উচ্ছলা এর ছবি

আপনার চাওয়া সফল হোক।

লেখা প্রাণকাড়া হাসি

তারেক অণু এর ছবি

যদি সুযোগ পাই চলমান তারুণ্যের কিছু বছর অন্য কোন ব্যক্তিকে দেবার, নির্দ্বিধায় সবার আগে ডেভিড অ্যাটেনবোরোকে বেছে নিয়ে কৃতার্থ হব। উনি কয়েক ঘণ্টা বেশী কাজ করলেও আমার সারা জীবনের চেয়ে অনেক লাভবান হবে জীবজগৎ। এই কথাটা মাকে জানালে তিনিও খুশি মনেই সায় দিয়েছিলেন।

ডেভিড বিশ্বের সব জায়গাতেই গিয়েছেন, কেবল তারুণ্যে স্বপ্ন দেখা এভারেস্টের শিখর ছুতেঁ পারেন নি সময়ের অভাবে, যদি কোন দিন যেতে পারি সেই পর্বত শীর্ষে সবার আগে তার ছবি থাকবে আমার সাথে, ডেভিডের কাছে অঙ্গীকার থাকল।

অরিত্র অরিত্র এর ছবি

চলুক

তাসনীম এর ছবি

লোকটা কি আওয়ামী না বিএনপি পন্থী?

সে যাই হোক এই বুড়োর সামান্য যেই কাজকর্ম দেখেছি তাতে আমিও মুগ্ধ।

অ্যাটেনবুড়োকে মনে হয় উন্মাদে ভরা পৃথিবীতে শেষ সুস্থ লোক, শ্রোতার অভাব পরোয়া না করে বকে চলা এক উদভ্রান্ত আত্মমগ্ন গল্পদাদু, যে বছরের পর বছর ধরে বলে চলছে পৃথিবীর গল্প, প্রকৃতির গল্প, প্রাণের গল্প আর ভালোবাসার গল্প। মনে হয়, আমাদের তথাকথিত শিক্ষিত সব বর্বরের বিনিময়ে প্রকৃতির কাছে একজন অ্যাটেনবুড়ো চেয়ে নিই আমাদের জন্য।

চলুক

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

সাফি এর ছবি

লাইফ যখন আমেরিকায় রিলিজ হলো, তখন অপেরাহ উইন্ফ্রেকে দিয়ে ধারাবর্ণনা করা হয়েছিল। কিন্তু ব্রিটিশ ভার্সানে ঠিকই অ্যাটেনবুড়োই ছিল। ফলাফল প্রথমটা চরম ফ্লপ, দ্বিতীয়টা আমাজনের বেস্ট সেলার তালিকায় উঠে।

চরম উদাস এর ছবি

চলুক চমতকার

আমাদের তারেক অণু বুড়ো হয়ে তারকাণুবুড়ো হবে নিশ্চ্য়।

সাফি এর ছবি

তারেক অণু বুড়ো হয়ে তেজস্ক্রিয়তারেকাণু হবে খাইছে

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

তারেক অণু এর ছবি

আমি বুড়ো হব না, যেমন ডেভিড হয় নি ! স্বপ্ন দেখতে দোষ কি !

হাওয়াইমিঠাই এর ছবি

এটা পড়তে পড়তে একটা কথাই মনে হল।। আমাদের ও একজন তরুন অ্যাটেন আছেন। আমার প্রিয় ব্লগার "তারেক অনু"।
বুড়ো উনি হবেন না জানি, কিন্তু এখনই তেজস্ক্রিয়তা ছড়ানো শুরু করেছেন।

একদিন ঠিকই উনি দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে BBC, CNN, national Geography, Histry র পর্দায় লাল সবুজ পতাকা নাড়বেন।

অরিত্র অরিত্র এর ছবি

হো হো হো

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

চমৎকার।

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

প্রশ্ন আর হতাশা গুলো আমাদেরও............. মন খারাপ

আমি অনেক বছর বেঁচে থাকতে চাই, বুড়ো হতে চাই, আর যেনতেন বুড়ো নয়, একজন অ্যাটেনবুড়ো হতে চাই।


_____________________
Give Her Freedom!

অমিতাভ এর ছবি

মুগ্ধ হলাম। স্যালুট।

Guest _Writer neelkomolinee এর ছবি

এক কথায় অনবদ্য।

ফাহিম হাসান এর ছবি

খাসা লিখেছেন। তবে এই বুড়ো ঘাড়ে চাপলে খবর আছে। রাত পার হয়ে যাবে ডকু দেখতে দেখতে।

প্রিয়ম  এর ছবি

গুরু গুরু হাততালি

আলভীমাহমুদ এর ছবি

লেট কইরা ফেলসেন,বুড়ো ঘাড়ে উঠে গেসে (ক্যান যে ব্লু প্ল্যানেট নামাইতে গেসিলাম!আর ক্যান যে HDটা পাইলাম না!) এই বুড়োরে যতটা ঈর্ষা করি আর কাউরে মনে হয়না এতোটা করি,এদের মত মানুষরে দেখলে নতুন করে নিজের ক্ষুদ্র মানব জীবনের ক্ষুদ্রতা বুঝতে পারি মন খারাপ একদিনের জন্যও যদি ওই বুড়ো চোখজোড়া দিয়া দুনিয়াটা দেখতে পারতাম মন খারাপ(

অরিত্র অরিত্র এর ছবি

অস্বাধারন লিখেছেন হিমু ভাই............
গুরু গুরু

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

উত্তম জাঝা!

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

রু (অতিথি) এর ছবি

স্বার্থপরের মতো কামনা করি আপনার এই চাওয়া যেন পূরণ না হয়।

দুর্দান্ত এর ছবি

এটেনবুড়োকে ভালবাসি।

দ্রোহী এর ছবি

বাংলার অ্যাটেনবুড়ো রাজাকারকুল শিরোমনি আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী কম যায় কীসে?

সাঈদী নিজের চোখে দেখছে পেঙ্গুইন পাখি পানির মধ্যেও ডুবাইতে পারে, বাতাস দিয়াও উড়তে পারে। অ্যাটেনবুড়ো কি পেঙ্গুইন উড়তে দেখছে? দেঁতো হাসি

গৃহবাসী বাঊল এর ছবি

জোরে বলেন " সুবহানআল্লাহ"

আল্লাহ্‌ তার দুনিয়ায় অসংখ্য নেয়ামত দিয়ে রাখছেন। আমাদের হুজুরে আ'লা, আল্লামা সেলোয়ার হোসেন থুক্কু দেলোয়ার হোসেন তার মোটামুটি সবই দেখছেন। কথা সত্য। এত বড় বড় রাজাকার, আল-বদর যুদ্ধের ৪০ বছর পরও বহাল তবীয়তে যদি মন্ত্রিত্ব নিয়া বাইচা থাকতে পারে, তাইলে পেঙ্গুঈন মাত্র তিন মাস বরফের উপ্রে দাড়াইয়া ডিমে তা দিতে পারবো না কেন? আবার তাদের কিছু বল্লেও আল্লাহ্‌র গজব নেমে আসে। এইগুলি আল্লাহ্‌র নেয়ামত ছাড়া আর কি?

হিমু এর ছবি

পেঙ্গুইন বরফের উপর ডিম পাড়ে দেখেই হয়তো আল্লামা দেলো এতো খুশি। ডিমটা আফটার অল, ঠাণ্ডা। উনি ঠাণ্ডা ডিম ভালোবাসবেন, এ আর বিচিত্র কী?

অ্যানিম্যাল প্ল্যানেটে উটপাখি নিয়ে কিছু দেখায় না?

গৃহবাসী বাঊল এর ছবি

যেই ডিম নিয়া উনি এত জ্ঞানগর্ভ বক্তৃতা দিছেন, ঐ ডিম যে উনার চুলায় যাবে এইটা কি উনি আগে জানতেন? জানলে কি আর ভাষণ দিতেন?
এনিম্যাল প্লানেট উটপাখি নিয়া কিছু দেখায় কিনা জানি না, তবে “আলু”মল যে দেখায় তা জানি। কিছু দেখলেই মাথা নিচে পাছা উঁচায়। এইটা কি উনাদের জন্য কোন সংকেত চিন্তিত , যে যাই ঘটুক না কেন, পাছা উঁচানো চইলত ন। পাছা উঁচাইলে উটপাখির ডিম বাইর হওয়ার বদলে অন্দরে প্রবেশ করিবে।

কী কমু এর ছবি

মেরুভল্লুকও অ্যান্টার্কটিকায় থাকে নাকি, জানতাম না তো? অ্যাটেনবুড়োও জানেন না। আর এই 'পানির পাহাড়'এর মহাদেশ সম্পর্কে পবিত্র গ্রন্থগুলোয় কিছু লেখা দেখি না কেন? আল্লাহ্ কি চোদ্দশ' বছর আগে জানতেন না এসবের কথা?

ওডিন এর ছবি

ইশ! আমি এই ভিডিওটা এইখানে পোস্ট করার জন্যেই তড়িঘড়ি করে লগ ইন করলাম দেঁতো হাসি

তারানা_শব্দ এর ছবি

বহুদিন পর সচলে লগ ইন করলাম শুধু মাত্র এই কমেন্টটা করার জন্য! দ্রোহীদা অসংখ্য ধন্যবাদ। অনেক দিন পর প্রাণ খুলে হাসলাম। তবে সবচাইতে বেশি মজা পাইসি ইউটিউবের এক জনের মন্তব্যে -- "নতুন প্রজাতির পেঙ্গুইন সাঈদীর ডিম থিকা জন্মাইছে! কি তেলেসমাতি!" হিহিহিহিহি গড়াগড়ি দিয়া হাসি

"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"

ধুসর গোধূলি এর ছবি

নাহ্, তোগো জ্বালায় আর পারলাম না বিবাহের কথা ভুলে থাকতে! সবার প্রাণের দাবী রাখতেই আমি অদ্য ঘটিকায় ঠিক করলাম, বড় হয়ে অ্যাটেনবুড়োর নাতনীটাকেই ধুগোনী বানিয়ে তাঁর নাতজামাই হিসেবে অ্যাটেন্ড করবো।

বাধাই হো, মুবারক হো প্রিয় অ্যাটেনবুড়ো!

নিশা এর ছবি

চলুক

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

লেখা পড়ে আমি ভাষাহীন। অসাধারণ উপস্থাপনা।

লাবন্যপ্রভা এর ছবি

থ্যাংকস, আই ফউন্দ সামথিং

বাপ্পী হায়াত () এর ছবি

লিখাতে উত্তম জাঝা!

অ.ট. হিম্ভাই, আপনিও কি শেষ পর্যন্ত নৈরাশ্যবাদী'দের দলে যোগ দিচ্ছেন? আপনার লেখার টোন (প্রথম ভাগ) মনটাকে একদম খারাপ করে দিল মন খারাপ

হিমু এর ছবি

না, নৈরাশ্যবাদীদের দলে আমি নাই। এ জন্যেই অ্যাটেনবুড়ো হতে চাই।

তারাপ কোয়াস এর ছবি

অ্যাটেনবুড়োকে ভালা পাই।


love the life you live. live the life you love.

রাসেল এর ছবি

সচলে প্রতিদিন বেশ কয়েকবার করে ঢুঁ মারি শুধু আপ্নের লিখা পড়ার জন্য । ধন্যবাদ আপনাকে অসাধারণ একটা
লিখা দেওয়ার জন্য। হিমু ভাই আপ্নের লিখাগুলি শুধু সচল পাঠক না, সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

আমি শিপলু এর ছবি

বুড়া হবার আগেই অ্যাটেনবুড়ো হতে চাই। লেখায় পাঁচতারা সাথে একটা আস্ত চাঁদ।

পৃথ্বী এর ছবি

আমার তথ্যচিত্র দেখতে চরম বোরিং লাগে, তথ্যচিত্রের চেয়ে বই বেশি প্রিফার করি। তবে চোখের বিবর্তন নিয়ে এটেনবুড়োর একটা ছোট্ট ডকু দেখেছিলাম, যথারীতি অসাধারণ। আপনার এই অদ্ভুত সুন্দর লেখাটি পড়ার পর মনে হচ্ছে এটেনবুড়োর ডকুগুলো নামিয়ে নিতে হবে। ফেসবুকে বাঙ্গালী তরুণ প্রজন্মের যে কুৎসিত চেহারা দেখছি, মনে হচ্ছে অনুপ্রেরণার জন্য একজন বুড়োর দ্বারস্থ হতে হবে।

আচ্ছা Attenborough এর বাংলা কি আসলেই অ্যাটেন"বুড়ো" খাইছে

প্রদীপ্ত এর ছবি

Hats off. চলুক

নৈষাদ এর ছবি

চমৎকার। পছন্দের মানুষ এই 'বুড়ো'।

আনিস মাহমুদ এর ছবি

পুরো সৃষ্টি জুড়ে মানুষ শুধু বুড়োই হয়ে যাচ্ছে, ম্যাচিওর হচ্ছে খুব কম মানুষই।

লেখা যথারীতি অসাধারণ।

.......................................................................................
Simply joking around...

মেঘা এর ছবি

মুগ্ধতা।

তাপস শর্মা এর ছবি

বুড়োকে গুরু গুরু । তারপর বলি লেখাটাও উত্তম জাঝা!

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

এতো ভালো হয়েছে লেখাটা, কী বলব হিমু ভাই! এই লেখাটা বোধহয় আমাদের অনেকের হয়ে আপনি লিখেছেন!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

চলুক

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু

ওডিন এর ছবি

আমি স্বেন হেদিন হইতে চাইছিলাম। আমি শার্লক হোমস হইতে চাইছিলাম। আমি ব্রুস ওয়েইন হইতে চাইছিলাম। মাগার আমি শেষ পর্যন্ত আমি হয়ে গেলাম। মন খারাপ

তবে আপনার জন্য শুভকামনা থাকলো হিমুভাই। আপনি বুড়ো হবেন না, অ্যাটেনবুড়ো হবেন। হাসি

 মর্ত্যমানবী এর ছবি

অনেক ভাল্লাগলো। চলুক

শ্যামল এর ছবি

আমি জোয়ানকালে মাসুদ রানা হইতে চাইছিলাম। কিন্তুক বুইড়া কালে এটেনবুড়ো হইতে মুঞ্চায়।
ভালবাসি বুইড়া রে।

শ্যামল এর ছবি

ধুরু হিমু ভাই, আপনে খালি প্যাচ লাগান। আজীবন মাসুদ রানা থাকতে চাইছিলাম, এখন বুইড়াকালে এটেনবুড়ো হইতে মুঞ্চায়।

হেমন্তের ঘ্রাণ এর ছবি

একটু আগে এ টি এন নিউজ এক্সট্রা তে শুয়োরের বাচ্চা গোলাম রাজাকারের কমেডি দেখে অনেক্ষন হাসলাম । এখন আপ্নার এই লেখাটা পড়ে কেন জানি মন খারাপ হয়ে গেল ! হাসি

নীড় সন্ধানী এর ছবি

এই বুড়োর সমস্ত ভিডিও কি একটা ফাইলে পাওয়া যাবে কোথাও? যত গিগাই হোক নামায়ে রাখতাম

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

সুমাদ্রী এর ছবি

খুব ভাল একটা লেখা লিখেছেন হিমু ভাই, আমিও এ্যাটনবুড়ো হতে চাই।

অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।

তৌফিক জোয়ার্দার এর ছবি

অসাধারণ একটি লেখা। দারুন মুগ্ধতাজাগানিয়া।

কল্যাণ এর ছবি

গুরু গুরু

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।