ডকিন্সখুড়োর ডুষ্টুবুদ্ধি

কৌস্তুভ এর ছবি
লিখেছেন কৌস্তুভ (তারিখ: সোম, ২০/০৬/২০১১ - ৪:০২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমাদের ডকিন্সখুড়ো একটা মাথাপাগলা লোক, সেটা সবাই জানে। ট্যাঙস ট্যাঙস কথা বলে। ধম্মকম্মের নাম শুনলেই তোপ দিয়ে উড়িয়ে যেতে চায়। এইসব বেয়াক্কেলে কাজের জন্য তার কপালে যে অনন্তকাল রৌরব নরক রয়েছে সে তো বলাই বাহুল্য। কিন্তু সেসব বাদ্দিয়েও খুড়ো কয়েকটা বড় বড় বদবুদ্ধি প্রচার করে গেছেন। সেলফিশ জিন, এক্সটেন্ডেড ফিনোটাইপ এসব বইতে সেসব ফলাও করে লিখেওছেন। সেদিন আমার এক দোস্ত কইল, ‘ভাইরে, খুড়োর ভিডিও দেখি, কড়া কড়া কথা মজাই লাগে, কিন্তু কোনো বই তো পড়ি নাই! Am I missing something?’ তাই ভাবলেম, ডকিন্সখুড়োর প্রধান বৈজ্ঞানিক দুষ্টুবুদ্ধিগুলোর একটা ছোট আলোচনা করা যাক, হাজার হোক খুড়ো তো আসলে একজন জীববিজ্ঞানী!

এক্সটেন্ডেড ফিনোটাইপ

ফিনোটাইপ বলতে ইস্কুলবেলায় শিখে এসেছি, কোনো জীবের শরীরে এক কি একাধিক জিনের বহিঃপ্রকাশ যে লক্ষণে দেখা যায়। পরে শুনলাম, কেবল জিন নয়, পরিবেশগত কারণেও যেসব লক্ষণ দেখা যায় তাও-ও ধরা হবে। কিন্তু এরপর খুড়ো বললেন, ভাই, জিন আর ফিনোটাইপের সম্পর্কটা কিন্তু অত সহজ নয়...

ফিনোটাইপ জিনিসটা বোঝা বেশ সোজা। বান্দরের ল্যাজ আছে, আমাদের নেই, ল্যাজ একটা ফিনোটাইপ। বেশ কথা, কিন্তু ‘ল্যাজের জন্য এই জিনগুলো’ বলা কি যায়?

টুকরো টুকরো করে ভেঙে নিলে মাঝেসাঝে সুবিধা হয়। যেমন মেন্ডেল প্র-প্র-দাদু দেখিয়েছিলেন, যদি পুরো ফুলটা না দেখে শুধু ফুলের রঙ দেখি, তাহলে তার জন্য একটা জিন হতে পারে। কিন্তু একটু বড়সড়, জটিল গুণাবলীর জন্য দেখি, তাহলে কয়েকটা জিন এভাবে আলাদা করা মুশকিল। তবে তা নিয়ে অত মাথা না ঘামালেও চলবে হয়ত, কারণ প্রাকৃতিক নির্বাচন সরাসরি কাজ করে এই গুণগুলোর উপরেই – তার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যে জিনগুলো জড়িয়ে আছে, তাদের উপর নির্বাচন পরোক্ষভাবেই হয়।

তাহলে প্রাকৃতিক নির্বাচনের মূল বাহন হিসাবে যদি ফিনোটাইপকে ধরি, তাহলে তার সংজ্ঞা বিস্তৃত করা প্রয়োজন, জীবদেহের জিনের আওতা থেকে নিয়ে এসে।

আবার অন্যদিকে, একটা জিন তো শুধু কেবল একটা ফিনোটাইপই নিয়ন্ত্রণ করে না। সাইড-এফেক্ট তো অনেকই থাকে। যে জিনের জন্য মটরগাছের ফুল লাল হয়, তার জন্যই গাছের কাণ্ডটাও লালচে রঙ ধরে। আর কোনো জিনে মিউটেশন হয়ে গণ্ডগোল লাগলে তো আরো মুশকিল – উল্টোপাল্টা কি হয়ে যাবে তার ঠিক নেই। একটা জিনে একটু বদল হলে ড্রসোফিলা মাছিদের পাখনা ছোট হয়ে বিকল হয়ে যায়, আরেকটা জিনে গড়বড় হলে মাথায় শুঁড়ের বদলে ঠ্যাং গজায়। সেসবও হিসাবে রাখতে হবে বই কি।

তবে ডকিন্সখুড়োর বক্তব্য, ফিনোটাইপ বলতে আমরা শুধু বুঝি যে দেহে জিনগুলো আছে শুধু তাতেই যে লক্ষণগুলো প্রকাশ পাবে, এরকম ভাবলে সংকীর্ণ করে রাখা হয়। এই যে মাকড়সা বাসা বানায়, সেটা তার জীবনধারার একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ, বাসা বানানো মাকড়সার একটা গুণ হিসাবেই ধরা উচিত – সরাসরি তার শরীরে লক্ষণীয় ফিনোটাইপ না হলেও, এটা একটা এক্সটেন্ডেড ফিনোটাইপ।

বা ধরেন, উইপোকার ঢিপি কি উইদের একটা লক্ষণ নয়? উঁচু উঁচু স্কাইস্ক্র্যাপার বানানো কি মানুষের বৈশিষ্ট্য নয়? একজন জীবের শরীরের ফিনোটাইপগুলো যেমন তার পরিবেশের সঙ্গে সরাসরি মিথষ্ক্রিয়ায় লিপ্ত হয় – তার মাধ্যমে সে ওই পরিবেশের মধ্যে কিছুটা মানিয়ে নেওয়ার, কিছুটা পরিবর্তিত করে সুবিধাজনক করার চেষ্টা করে, বীভারদের বানানো হ্রদও তো তাই... বরং সেটাকে এক অর্থে এক্সটেন্ডেড শরীর বলাই যেতে পারে হয়ত।

খুড়ো আরো একটা দরকারি পয়েন্ট বলেন এখানে – যে শরীরে জিনগুলো আছে, তার বদলে অন্য শরীরেও কিন্তু ফিনোটাইপের প্রকাশ হতে পারে! সাকুলিনা বলে একধরনের পরজীবী পোকা, পুরুষ কাঁকড়াদের শরীরে বাসা বেঁধে তাদের শরীরের হরমোন-ব্যবস্থাকে বিবশ করে দেয় – নির্বীজ করে ফেলে তাদের মহিলা কাঁকড়ায় রূপান্তরিত করে দেয়। তখন তারা মহিলাদের মতই আচরন শুরু করে, মহিলা সাকুলিনাটি তার দেহে যে ডিম-ভরা থলিটা পেড়েছে তাকেই নিজের ডিম মনে করে লালন-পালন শুরু করে। কাঁকড়াটির দেহে এই যে ফিনোটাইপ, তা তো সাকুলিনার জিনগুলির জন্য! প্রাকৃতিক নির্বাচন কাঁকড়ার এই ব্যবহার দেখলে এর পেছনে থাকা সাকুলিনার জিনগুলিকেই সুবিধা দেবে, তা তার শরীরের বাইরে হলেও।
বা ধরেন কর্ডিসেপস জাতীয় ফাঙ্গাসগুলোর কথা, যারা পিঁপড়ের মস্তিষ্কে বাসা করে তার আচারব্যবহার পুরো বদলে দেয় – পিঁপড়েটার মাথায় তখন একটাই ভাবনা – কি করে ঘাসের পাতাগুলোর সবচেয়ে মাথায় ওঠা যায়... এতে ফাঙ্গাসটার লাভ, কারণ পিঁপড়েটা মারা যাবার পর তাদের বীজ ছড়িয়ে পড়তে সুবিধা।

সেলফিশ জিন

ডকিন্সখুড়োর লেখা এই প্রথম বইটাই তাঁকে অনেক পরিচিতি এনে দিয়েছিল। এইটায় তিনি দাবি করেন, বিবর্তনের একক জীবদেহ নয়, বিবর্তনের প্রাথমিক, ক্ষুদ্রতম একক হল জিন।

কারণ হিসাবে তিনি বলছেন, অনুলিপি-একক তো জীবদেহ নয় – এই যেমন মানুষের সন্তান তার নিখুঁত প্রতিলিপি তো নয়ই, কারণ সে পাচ্ছে আপনার মাত্র অর্ধেক জিন। একমাত্র জিনই মোটামুটি অবিকৃত ভাবে (মিউটেশন বাদ দিলে) প্রজন্মের পর প্রজন্মে বয়ে যেতে পারে। আবার একটা দেহে যেসব জিন রয়েছে, সন্তানের দেহে যাবার সময় তাদের অনেকেই ঘেঁটে যায়, ফলে জিন-সমষ্টি বা ক্রোমোজম-কেও একক ধরা যায় না।

খুড়ো এবার তাঁর সবচেয়ে সাড়াজাগানো দাবিটা করলেন, যে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বিবর্তনের প্রভাব পড়ে একটা জিনের উপরেই, তার ফিনোটাইপগুলির মাধ্যমে, অতএব বিবর্তনের এককও হল জিন – কোনো জিনের গুণাবলী তার প্রতিরূপগুলির চেয়ে ভাল হলেই সেটি নির্বাচিত হবে, আর সফলতর অনুলিপির মাধ্যমে ভবিষ্যত প্রজন্মে বেশি ছড়িয়ে পড়বে।

অনুলিপি-একক হিসাবে প্রতিটি জিনের কাম্য, নিজে সফলভাবে বেঁচে থাকা, অর্থাৎ অবিকৃত থাকতে পারা দীর্ঘ দিন, এবং সফলভাবে প্রতিলিপি সৃষ্টি করতে পারা। কিন্তু কথা হল, জিন তো একা একা বেঁচে থাকতে পারে না – তার একটা বাহন লাগে, তাকে ধারণপোষণ করার জন্য – সেইটা হল জীবদেহ। জিনের বাঁচা-মরা-অনুলিপি তাই জীবদেহের উপরই নির্ভরশীল, তাই জিন সচরাচর চেষ্টা করে তার বাহন দেহটিকে ভালো করে গড়ে তুলতে, যাতে প্রতিদ্বন্দ্বীর তুলনায় বিবর্তনের যুদ্ধে সে-ই এগিয়ে থাকে।

কিন্তু জিনের সম্পর্ক জীবদেহের সঙ্গে ওই অতটুকুই – বাহনের; আপনার গাড়ির থেকে কি আপনি আপনার প্রাণটাকে মূল্যবান মনে করেন না? জিনও তাই ভাবে – দেহ যখন নশ্বর, তখন দেহের থেকে প্রজননকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া ভালো। একবার বীর্যদান করে ফেলার পর, পুরুষ-মাকড়সাটিকে স্ত্রী-মাকড়সা খেয়ে ফেললেও তাই সমস্যা নেই, তার জিনগুলো তো প্রসারিত হয়েই গেল তার অপত্যদলের কাছে, বরং তারা পাচ্ছে আরো নতুন, আরো তরতাজা অনেকগুলো শরীর, যারা আবারও তাকে প্রসারিত করবে...

এই-ই হল সেলফিশ জিনের আইডিয়া, যে বাহনের চেয়ে জিনের নিজের মূল্য বেশি। এক্ষেত্রে জিন যে ভাবনাচিন্তা করে, সচেতনভাবে স্বার্থপর হয়েছে, এমন নয়, ওটা বলার ভঙ্গি, যাতে তার স্ট্র্যাটেজি-টা ঠিকভাবে বোঝানো যায়; আমরা যখন বলি, ব্যাকটেরিয়ারা খুব ধূর্ত, পেনিসিলিনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে, তাদের নতুন স্ট্রেন এখন পেনিসিলিন-প্রতিরোধক, তখন যা বোঝাতে চাই, তেমনই আর কি।

কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাহন বদলে গেলেও কিছু আসে-যায় না, এই যেমন ওই সাকুলিনা যেমন কাঁকড়ার দেহটাকেই নিজের বাহন বানিয়ে ফেলে। বা যেমন ধরুন উইদের কথা – সেখানে একই মায়ের ডিম থেকে হাজার হাজার উইপোকার জন্ম হচ্ছে, যাদের অধিকাংশই নির্বীজ, কিন্তু তারা সবাই জিনগতভাবে একদম সমান, ফলে তাদের কাজই হল গোটা কলোনীর দেখভাল, যেহেতু একই জিন সবার মধ্যেই আছে।

এইভাবেই খুড়ো প্রমাণ করলেন, যে গ্রুপ সিলেকশন তত্ত্ব, যা বলে যে নির্বাচনের একক হল গোষ্ঠী, বা কিন সিলেকশন তত্ত্ব, যা ভাইবেরাদরদের নিয়ে দল করে থাকার, সবার আদরযত্ন করার অভ্যাসকে ব্যাখ্যা করে, বা ব্যক্তিনির্ভর সিলেকশন তত্ত্ব, সবকটারই মূলে আসলে জিন-ভিত্তিক সিলেকশন। ঠাম্মার পক্ষে নাতনীকে এত ভালোবাসা কেন সুবিধাজনক? কারণ তাঁর জিনের একটা বড় অংশ তাঁর নাতনীর মধ্যে আছে, আর তাঁর নিজের প্রজনন করার দিনও ফুরিয়েছে, এখন বংশে বাতি অর্থাৎ প্রজননের সম্ভাবনা কেবল ওই নাতনীরই। রাস্তার দুঃখী মানুষটাকেও কেন ঠাম্মা একখানা জামা দিতে চাইবেন? কারণ নাতনীর মত অত না হোক, ৯৯%-এর বেশি জিন তো তার সাথেও ঠাম্মার সমান...

তাহলেই দেখুন, জিন প্রয়োজনে স্নেহ-ভালোবাসারও উদ্রেক ঘটাতে পারে, প্রয়োজনে হতে পারে নির্মম। আবার ধরুন আমাদের দেহের যে এক বিশাল অংশ জাঙ্ক ডিএনএ, তার কথা। তাদের শরীরে কোনোই কাজ নেই, অ্যামিনো অ্যাসিড উৎপাদন মোটেই করে না তারা। তাহলে আমরা তাদের বয়ে বেড়াচ্ছি কেন? এর উত্তর এই, যে বিবর্তন আমাদের শরীরের লাভ-লোকসান দেখে না, দেখে জিনের লাভ-ক্ষতি। ওই জিনেরা সফলভাবে আমাদের দেহে হিচ-হাইকিং করতে পেরেছে, তাই প্রজন্মের পর প্রজন্মের দেহে সফলভাবে প্রতিলিপি হয়ে চলেছে তারা। বরং অল্প হলেও প্রতিবেশী, কর্মঠ জিনদের কাজে আসে তারা মাঝেমধ্যে, তবে সে কথা অন্যত্র।

মিম

মিম হল আমাদের সংস্কৃতি-বুদ্ধিমতায় জিনের সমান্তরাল। জীবদেহে অনুলিপির একক যেমন জিন, আমাদের ভাবনায়, সংস্কৃতিতে অনুলিপির একক হল মিম। জিন বয়ে চলে প্রজন্মের মধ্যে দিয়ে, আর মিম ছড়ায় সমাজে, একই সঙ্গে একাধিক প্রজন্মের মধ্যে। এই মিম-এর আইডিয়া ডকিন্সখুড়োর আরেকটা বড়, খুব জনপ্রিয় থিয়োরি।

যেমন ধরেন, মোটরবাইক ফটফটানো ছেলেছোকরাদের একটা অভ্যাস। এইটাকে একটা মিম হিসাবে ধরেন, যেটা একজন থেকে আরেকজনে ছড়িয়ে চলে দীর্ঘদিন মোটামুটি অবিকৃত ভাবে। কে কোন বাইক চালায় ইত্যাদি ডিটেল গুরুত্বপূর্ণ নয়।
আবার জায়গাভেদে মিমেরও বদল হয়। এই যেমন জাপানে দুটো হাত পাশে রেখে সামনে ঝুঁকে অভিবাদন জানানো হয়, কিন্তু শাহেনশা’র দরবারে আবার ঝোঁকার সময় ডান হাতটা ভাঁজ করে বুকের কাছে আনতে হবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মিমের বদলকে মিউটেশন ধরা যেতেই পারে। ইউরোপ থেকে আমেরিকায় আস্তে আস্তে খাবার সময় কাঁটাচামচ ধরার হাতটা হয়ে গেল বাঁ থেকে ডান।

জিনের যেমন বাহন লাগে, জীবদেহ, মিমেরও তেমনি বাহল লাগে – আমাদের মস্তিষ্ক। একখণ্ড ডিএনএ’র মত মিম একটা বাস্তব বস্তু নয়, একটা আইডিয়া, কিন্তু সেটাকে একটা অ্যাবস্ট্র্যাক্ট বস্তু হিসাবে সহজেই উপলব্ধি করা যায়। আর তার ফিনোটাইপ হিসাবে ধরা যেতে পারে আমাদের আচরণে তার বহিঃপ্রকাশকে, যেমন ওই বাইক হাঁকানো।

জিনের মতই মিমেরা আমাদের মাথায় জায়গা পাওয়ার, বংশবিস্তার করার জন্য মারপিট করছে, তাদের দক্ষতার তারতম্যে প্রাকৃতিক নির্বাচনের মতই বিজয়ী নির্ধারিত হচ্ছে। অনেকেই দেখাচ্ছেন, ধর্ম হচ্ছে একটা মিম, বিভিন্ন ধর্ম হচ্ছে তার বিভিন্ন প্রতিরূপ, আমাদের মাথায় কোনটা ঠাঁই পাবে তাই নিয়ে তাদের মধ্যে সংগ্রাম চলছে। টম ক্রুজের মাথায় যেমন সায়েন্টোলজি বাসা বাঁধতে পেল।

তবে মিমের সংজ্ঞা নিয়েও কিছু দোটানা রয়েছে। একক হিসাবে কাকে ধরা যায়? যেমন দেখেন, একটা ধর্ম তো একটা বিশাল জিনিস, প্রচুর নীতি-নিয়ম-আইডিয়া-আচারের সমষ্টি, প্রতিনিয়তই পরিবর্তিত হয়ে চলেছে। তাহলে একক কাকে ধরি? ধর্মের একটা ছোট অংশ, এই যেমন হিন্দুদের গরু না খাওয়া, এটাকে ধরব? বৈদিক যুগে খেত, মাঝে নিষিদ্ধ হয়, এখন আবার অনেকেই বীফের দিকে ঝুঁকছে; এইটাকে একটা (ধীরে ধীরে মিউটেশন হতে থাকা) আইডিয়ার ইউনিট বলা যায়?

এমনও বলা হচ্ছে, আজকের দ্রুত এগিয়ে চলা সমাজের তুলনায় জিন এবং প্রাকৃতিক নির্বাচন মানিয়ে নিতে পারছে খুবই ধীরে – সমাজের অগ্রগতির দ্রুতচ্ছন্দ ধারা বইছে মূলত মিম-ই...

------------------------------------------------------

সংক্ষেপে এই হল খুড়োর তিনটে প্রধান আইডিয়া। এগুলো যে একেবারে খুড়োরই প্রথম ভাবা তা নয়, তবে সাজিয়েগুছিয়ে ব্যাখ্যা করে উনিই প্রথম সবার নজরে আনেন। বিস্তারিত জানতে চাইলে নেট তো রয়েছেই, বইগুলোও ডকিন্সখুড়ো লিখেছেন খাসা, পড়তে মজাই লাগে; দুয়েকটা তো দোস্তকে উপহারও দিলাম...


মন্তব্য

পৃথ্বী এর ছবি

চমৎকার উত্তম জাঝা!

ডকিন্সকে আমার কাছে বিজ্ঞান সাহিত্যের শেক্সপিয়র মনে হয়, তাঁর লেখাগুলো সহজবোধ্য হওয়ার পাশাপাশি কাব্যিকও বটে। তাঁর "Unweaving the Rainbow" আর "River out of Eden" তো পুরো কবিতার বইয়ের মত! বাংলাদেশে ডকিন্স-সাহিত্যের হার্ডকপিগুলো পাওয়া গেলে ভাল হত, অনেকেই পড়তে চায় কিন্তু ইবুক পড়তে পারে না। কলকাতায় কি পাওয়া যায়?

কৌস্তুভ এর ছবি

ধন্যবাদ।

কলকাতায় আমাদের কিশোরবেলাতেও কিন্তু ডকিন্সের নাম তেমন শুনি নি, যতটা পরিচিতি হকিং বা ফাইনম্যানের আছে। সস্তা প্রিন্ট পাওয়া যায় বলে মনে হয় না।

আপনার যখন অনেকগুলো বই পড়া আছে, তখন একটা আলোচনা লিখুন না। "Unweaving the Rainbow"-র বক্তব্যটা নিয়ে বাংলাতেও আলোচনার দরকার আছে।

lনাবিক এর ছবি

দাদুর বইপত্র আপনার দু-একটা বাংলায় অনুবাদ করুন না
তাহলে আমরা এ প্রজন্মের কচিকাঁচারা(আমি ক্লাস নাইনে পড়ি) অনেককিছুই নতুন নতুন শিখতে পারতাম

কৌস্তুভ এর ছবি

আমার ধারণা মুক্তমনা'য় ডকিন্সের লেখা অনুবাদ করার প্রয়াস চলছিল। একবার খোঁজ নিয়ে দেখেন।

আপনি ক্লাস নাইনেই এধরনের বইয়ের প্রতি আগ্রহী হয়েছেন দেখে খুবই ভালো লাগল।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আরে অসাধারণ! অসাধারণ! তিনটে অংশের প্রথমটা ছাড়া বাকি দুটো জানা ছিলো। সেলফিশ জিন শুনতে শুনতে এক্সটেন্ডেড ফিনোটাইপ কিনবো ভাবছিলাম। কিন্তু কোনো তাড়া বোধ করছিলাম। এখন বর্ণনা পড়ে আর তর সইছে না। হাসি

কৌস্তুভ এর ছবি

হাসি

ওখানে উনি যে উদাহরণগুলোর মধ্যে দিয়ে এক্সটেন্ডেড ফিনোটাইপ-এর আইডিয়াটাকে প্রসারিত করেছেন, সেগুলো খুবই ইন্টারেস্টিং।

দময়ন্তী এর ছবি

বা: বা: বেশ শিশিবোতল মার্কা ব্যপারকে সহজ ভাষায় বলেছেন৷ আগ্রহ জাগল৷ চলুক

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

কৌস্তুভ এর ছবি

দেঁতো হাসি আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

সহজ ভাষায় বিজ্ঞান লেখনী ভালু পেলুম। বিজ্ঞানবিষয়ক লেখাগুলো এরকম সহজভাবে উপস্থাপিত হলে পড়তে এবং বুঝতে সহজ হয়, আগ্রহজাগানীয়া হয় তো বটেই। ধন্যবাদ।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

কৌস্তুভ এর ছবি

আহা, এইরকম শুনলে আমরাও উৎসাহ পাই। আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

অপছন্দনীয় এর ছবি

উত্তম জাঝা!

কৌস্তুভ এর ছবি

বলছেন? দেঁতো হাসি

অপছন্দনীয় এর ছবি

হ্যাঁ তবে একটা ক্ষেত্রে দ্বিমত আছে আমার...

বান্দরের ল্যাজ আছে, আমাদের নেই

নিজেরটা কি গুণতে ভুলে গেলেন?

কৌস্তুভ এর ছবি

অপছন্দনীয় এর ছবি

সন্ত্রাসবাদ নিপাত যাক রেগে টং

আয়নামতি1 এর ছবি

এমন খটমটে বিষয়গুলোকে এত সহজবোধ্য করে উপস্হাপনার জন্য উত্তম জাঝা! অনেক আনন্দ পেয়েছি পড়ে! অনার্য ভাইয়ার পরে আপনার লেখায় এমন সরল গতি পেয়ে নিজের অজ্ঞতা কিছুটা হলেও ঘুচলো। অনেক অজানা ব্যাপার জানলাম। সাকুলিনা নামের পরজীবি আর কার্ডিসেপসের বিষয়ে জেনে, ভয় পাইছি! ভয় পাইছি অবস্হা!

একটা প্রশ্ন এলো মাথায়(প্রশ্নটা বোকা বোকা মনে হলোও হাসিটা চেপে রেখেই যেন উত্তরটা দেয়া হয় ওঁয়া ওঁয়া )
কার্ডিসেপস নামের ফাঙ্গাস যে পিঁপড়ের মাথায় বাসা বেঁধে তার আচার-আচরণ পুরো বদলে দেয়' বলে উল্লেখ করা হয়েছে, তাহলে তখন এরকম আক্রান্ত একটা পিঁপড়ে কী দলীয় আচরণ ভুলে কেবলই ঘাসের পাতার এক্কেবারে চূড়ায় উঠতে থাকে? কারণ পিঁপড়ে তো খুব সুশৃঙ্খল প্রাণী এতে করে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয় নাকি ভাইয়া? এটা জানতে চাই,,,কেন? হিহিহি পিঁপড়ে নিয়ে একটা লেখায় আঁটকে আছি। আপনার এই তথ্যটা কাজে লাগানো যায় কিনা ভাবছি। একটু জানাবেন প্লিজ! সহজপাচ্য আরো অনেক অনেক লেখা চাই পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম আপনার জন্য (গুড়)

কৌস্তুভ এর ছবি

অনার্যদার অমন চমৎকার উপমা-সম্বলিত লেখা, তার সঙ্গে তুলনা করে আমায় বাধিত করলেন... লইজ্জা লাগে

কর্ডিসেপস-এর ভিডিওটা দেখলেন? ওইটা বিবিসি'র 'প্ল্যানেট আর্থ' সিরিজ থেকে নেওয়া। পরে একটা 'লাইফ' বলে চমৎকার সিরিজ হয়েছে, সেটাতেও পিঁপড়েদের উপর একটুখানি আছে।

আমি যেটুক বুঝেছি, পিঁপড়েরা এমনিতে খুবই গোষ্ঠীবদ্ধ সুশৃঙ্খল প্রাণী, বুদ্ধিশুদ্ধি বেশি নয় বলে ইন্সটিংক্ট-এ কাজ করে। তবে তাদের মধ্যেও গোলমাল হয় বইকি। এই তো দেখলাম, পাতা-কাটা পিঁপড়েরা পাতা কেটে পিঠে করে নিয়ে আসছে, বাসার তারা একরকম ফাঙ্গাসের কলোনি চাষ করে, নিজেরা পাতা হজম করতে পারে না, ফাঙ্গাসেরা পাতাটাকে পচিয়ে যা তৈরী করে সেটা খায়। আবার পচনের ফলে উৎপন্ন কার্বন-ডাই-অক্সাইড যাতে তাদের দমবন্ধ করে না মারে সেইজনে বাসায় অনেক ভেন্টিলেটর-ও আছে। হাসি
তা কিছু বদমাইস পিঁপড়েরা নিজেরাই অন্য একটা পিঁপড়ের পাতার উপর চেপে বসে, বেচারা পিঁপড়ে দেখতে পায় না, তাকে শুদ্ধু ডবল মোট বয়ে বাসায় ফেরে।

কর্মী পিঁপড়েদের বিশাল দলের পাশাপাশি যে সৈন্য পিঁপড়েরা থাকে, তাদের মূলত কাজ হল কেউ আক্রমণ করলে তাকে কচুকাটা করা, ধারালো দাঁড়া দিয়ে। কিন্তু দলে কেউ বেগড়বাঁই করছে কিনা সেটা তারা অত নজরে রাখে না, দুয়েকটা পিঁপড়ে এদিক-ওদিক চলে যেতেই পারে।

এমনই ফাঙ্গাসের আক্রমণে মাথাখারাপ পিঁপড়েরা দল ছেড়ে বা বাসা ছেড়ে ঘাসের মাথায় উঠতে গেলে এমনিতে কেউ নজর করে না। ওই যে বললাম, পিঁপড়েরা যে গোষ্ঠীবদ্ধ সেটা তো জন্মগত ইন্সটিংক্ট-এ, বিচারবুদ্ধি দিয়ে তো নয়। তাই তাদের মাথার সেই প্রোগ্রামিং একবার ওভাররাইট হয়ে গেলে ঠেকাবারও কেউ নেই।

তবে যদি কোনো পিঁপড়ের চোখে পড়ে, যে কেউ এমন পাগলা আচরণ করছে, তাহলে দ্রুতই তাকে ধরে বাসার থেকে বহুদূরে ফেলে দিয়ে আসে। এতে বাসার অন্যদের ওই সংক্রমণ হবার সম্ভাবনা কমে যায়। এইটা ওই ভিডিওটাতে আছে, দেখবেন।

হাসির কিছুই নেই, আপনি প্রশ্ন করায় খুবই আনন্দিত হলাম। এমন পাঠক পেলেই তো লেখায় মজা!

আয়নামতি1 এর ছবি

আপনি এতো চমৎকার করে বলে গেলেন ব্যাপারগুলো এখন তো ভাবতে হচ্ছে লেখাটা আদৌও দেয়া ঠিক হবে কিনা! পিঁপড়েদের নিয়ে সামান্য কিছু পড়ে তার উপর একটা হতচ্ছিরি গপ ফাঁদবার পাঁয়তারা করছি আর কী! ইতিহাস বিকৃত করার জন্য পিঁপড়েরা না আবার কাঁমড়াতে ছুটে আসে ওঁয়া ওঁয়া অসংখ্য ধন্যবাদ আর কৃতজ্ঞতা রে ভাইয়া হাসি

কৌস্তুভ এর ছবি

আরে, ডরাইলেই ডর, লিখে ফেললে কিসের ডর? দেঁতো হাসি

কৌস্তুভ এর ছবি

পিঁপড়েদের উপর আরো তিনটে ইন্টারেস্টিং তথ্য পেলাম...

এক, লংহর্ন পিঁপড়েরা এমনিতে অন্য পিঁপড়েদের মতনই - রাণী পিঁপড়ে কখনও একটা সময় কোনো পুরুষ পিঁপড়ের সঙ্গে মিলিত হয়, তারপর তার শুক্রাণু জমিয়ে রেখে দেয় শরীরে, সেটা ব্যবহার করেই ক্রমে ক্রমে অগুন্তি ছানাপোনার জন্ম দিতে থাকে। তা সাধারণভাবে যে (নির্বীজ) পিঁপড়েরা জন্ম নেয়, মানে কর্মী না সৈন্য পিঁপড়ে, তারা সবাই মায়ের অর্ধেক আর বাবার অর্ধেক জিন পায়। কিন্তু দারুণ ব্যাপার এই, যে মা যখন রাণী পিঁপড়ের জন্ম দেয়, তারা কিন্তু হয় মায়ের ক্লোন! আবার যখন পুরুষ পিঁপড়ের জন্ম দেয়, তারা হয় বাপের ক্লোন, মায়ের কোনো জিন বিনা-ই!
তাই একই কলোনীতে জন্ম নেওয়া ছেলে ও মেয়ে পিঁপড়েরা নিজেদের মধ্যে মিলিত হলে কোনোই সমস্যা নেই! এমনিতে এসব ক্ষেত্রে হয় ইনব্রিডিং (সেটা কী, তা নিশ্চয়ই জানেন), যেটা প্রকৃতিতে কাম্য নয়, কিন্তু এরা অদ্ভুতভাবে সেটাকে এড়াতে পেরেছে।

দুই, পিঁপড়েরা খুব সুশৃঙ্খল জাতি, সে তো আপনিই বলছিলেন। তারা খুব নিয়ম করে রাণীর, এবং তার সদ্যোজাত ছানাপোনার, যারা ভবিষ্যত কর্মী/সৈন্য হবে, তাদের দেখভাল করে। কিন্তু যদি প্রজননক্ষম ছেলেমেয়েরা জন্মায় এবং বড় হয়ে ওঠে, যাতে তাদের শরীরের বিশেষ কেমিকালগুলো প্রকাশিত হয়ে পড়ে, তাহলেই সবাই তাদের মারধর করে, তাড়িয়ে দেয়, বা বন্দী করে রাখে, বা মেরে ফেলে। কিন্তু যদি বাসা থেকে রাণী চলে যায়, বা মরে যায়, তখন কিন্তু তারাই খুব সমাদর পায় - বংশগতির একমাত্র আশা তো তখন তারাই!

তিন, দক্ষিণ আমেরিকার এক প্রজাতির পিঁপড়ে নাকি এখন মানুষের সাহায্যে সারা দুনিয়ার প্রতিটি মহাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। তাদের বলা হচ্ছে একটা সুপার-কলোনি, কারণ তারা নাকি প্রবাসের কলোনীর লং লস্ট ব্রাদারকে দেখলে চিনতে পারে! মানে জেনেটিকালি তারা যে সমান, সেটা তারা কোনোভাবে (রাসায়নিকের সাহায্যেই হবে) বুঝতে পারে, যেহেতু তারা পরষ্পরকে দেখলে আক্রমণ করে না - অথচ দুটো আলাদা কলোনীর লোকেরা অপরকে দেখলে সর্বদাই মারপিট করে তাড়িয়ে দেবার চেষ্টা করে।

আয়নামতি1 এর ছবি

দারুণ চমকদার তথ্য দিলেন কিন্তু কৌস্তভ! পিঁপড়েদের নিজেদের মধ্যে মারামারির তথ্যটা পড়েছি। সেখানে বাসস্হান দখলসহ খাদ্যের উপর কব্জার ব্যাপারটা এসেছে কিন্তু সেখানে যে 'জিন' ঘটিত আরেকটি কারণ যুক্ত, এটা জানা ছিলো না! দারুণ হলো এটা জেনে! যদিও আমি বিজ্ঞানের ছাত্রী নই, কিন্তু এসব বিষয়গুলো সহজপাচ্য হলে দিব্বি গপ্ করে খেতে ইচ্ছে করে। আপাতত মাথায় বেশ পেজগী লাগবে মনে হচ্ছে। কারণ জিন তত্ত্বের ব্যাপারটা অজানা থাকায় লেখাটা এক রকম হয়েছিলো এখন অন্যভাবে এগোতে হবে...আমার দ্বারা সেটা আদৌ সম্ভব কিনা, এটাও ভাবনার বিষয়। তবে লেখাটা হোক বা নাই হোক। এই তথ্যটা জেনে আমার দারুণ আনন্দ লাগলো!
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে হাসি

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

পরিসংখ্যান থেকে বিবর্তন/বংশগতিতে আসাটাকে অনধিকার প্রবেশ এবং আমার জন্য হুমকী হিসেবে নেয়া যেত। কিন্তু ভেবে দেখলাম ব্যাপারটাকে দলে ভারি হচ্ছি ভেবে নিলে রাজ্য সামলাতে সুবিধে, তাই উত্তম জাঝা! এবং (গুড়) দিয়ে অভিনন্দন জানালাম।

আমি বংশগতি/জেনেটিক্স নিয়ে একবার একটা সিরিজ শুরু করেছিলাম। কিন্তু সেটা ৪ পর্বের পর আর এগোয়নি। কারণ প্রথমত ব্যাপারটা শক্ত, নিজেই বুঝিনা ঠিকমতো মন খারাপ আর তাছাড়া পাঠকেরও খুব পছন্দ হয়নি সেগুলো। যাঁদের পছন্দ হয়েছিল তাঁদের জন্যই এগোনো যেতো বটে, কিন্তু সংখ্যাগুরু পাঠকের পছন্দের বিষয়গুলো ঠেলে ওদিকে আর যাওয়া হয়ে ওঠেনি পরে!

দুয়েকটা তো দোস্তকে উপহারও দিলাম...

দোস্তির ফর্মটা ডাউনলোড করার ঠিকানা দেন। এ সপ্তাহেই ফর্ম পূরণ করে দিচ্ছি। পরের সপ্তাহে বই পাঠিয়ে দিয়ে বাধিত করবেন! ধন্যবাদ। চোখ টিপি

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

কৌস্তুভ এর ছবি

হেহেহে, আসেন কোলাকুলি

আপনি বিজ্ঞানের উপর লিখলে সেটা পাঠকপ্রিয়তা পাবে না, তাই কি হয়? তবে বিজ্ঞানের পাঠক এট্টু কম, আর সিরিজের পাঠক/মন্তব্যকারী আরেকটু কমই হয়...

আপনি তো জেনা নামক কী এক জায়গায় থাকেন, সেখানে বই পাঠিয়ে তারপর আমার জেনা হোক আর কি! খাইছে

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

ইহা মোটেই "জেনা" নয়।

ইয়েনা

চোখ টিপি
সুতরাং... চোখ টিপি

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

কৌস্তুভ এর ছবি

ধুর! ইয়ে... না... কখনও নাম হয়? রেগে টং

অতিথি লেখক(শান্তিপ্রিয়) এর ছবি

কোন ছোটবেলায় জেনোটাইপ-ফেনোটাইপ পড়েছিলাম, একসময় শখ ছিল জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ব-- এসব নয়ে কিছি পেলেই গোগ্রাসে গিলতাম। অনেক কিছু জানা ছিল; কিছু নতুন জিনিস জানলাম। লেখা ভংগি ভাল লেগেছে। ধন্যবাদ আপনাকে; বিজ্ঞানের এ শাখার প্রতি আগ্রহের কথা ভুলেই গিয়েছিলাম; মনে করিয়ে দেয়ার জন্য। এমন আরো লিখলে বাঁধা পাঠক হয়ে থাকলাম হাসি

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনার সেই পুরোনো আগ্রহ মনে করিয়ে দিতে পেরেছি শুনে উৎসাহ পেলাম অনেক। হাসি

সুজন চৌধুরী এর ছবি

হুম... এই ছেলেটাও দগ্ধে গেলো!!!

কৌস্তুভ এর ছবি

আঁয়?

সুজন চৌধুরী এর ছবি

হুম, একেবারে বিদগ্ধ!
কোন ফাংগাস-টাংগাসে ধরলো নাকি?

কৌস্তুভ এর ছবি

আশালতা এর ছবি

কৌস্তুভ স্যার, ক্লাসে কিন্তু পেজেন আছি । কলা বিষয়ক ছাত্রী হলেও বিজ্ঞান ভালা পাই। এই ক্লাসটা একটু খটোমটো হইলেও খারাপ না, মোটামুটি হজম কর্তারসি । হাসি

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

কৌস্তুভ এর ছবি

ইয়েস ম্যাম! দেঁতো হাসি

guest এর ছবি

অনেকদিন ধরে সচলায়তন পড়ি, কিন্তু মন্তব্য করা হয়ে উঠেনা। একটি জিনিষ আমাকে
খুবই মর্মাহত করে তা হল বাংলা ভাষাকে ব্লগ সাইটগুলিতে অনেকে বিকৃত করে ফেলছেন।
যেমন ভালাপাই, মুঞ্চায়, হজম কর্তারসি ইত্যাদি। আমার মনে হয় বিষয়টি নিয়ে ভাবা দরকার।

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনার এই মন্তব্যটা মনে হয় আমার লেখার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়... আমি 'বিকৃত' ভাষা তেমন একটা ব্যবহার করি নি এই লেখায়। আর কথ্য ভাষার ব্যবহার যদি পাঠকের অসুবিধার সৃষ্টি না করে, তাহলে লেখকের ইচ্ছা হলে তা ব্যবহার করতে পারেন বলেই আমার মনে হয়।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

মন্তব্যটা পুরাই অফটপিক কিন্তু না মন্তব্য না করেও পারছি না। দুঃখিত কৌস্তুভ'দা!

পরিচিত পরিমণ্ডলে মানুষের কথ্য ভাষারীতিকে আপনি কিভাবে নেতিবাচক বিকৃতি বলছেন! বাংলা ব্লগ সাইটে ব্যাবহৃত আপাত বিকৃত অনেক শব্দের সংগেই লম্বা ইতিহাস জড়ানো। বাংলা ব্লগের ভাষারীতিতে অনেক "টার্ম"ই তাই নতুনদের কাছে বিকৃতি মনে হতে পারে। অথবা সেটা না হলেও, আমি আমার বন্ধুস্থানীয় কারো সঙ্গে কী ভাষায় কথা বলব সেটা একান্তই আমার/আমাদের ব্যক্তিগত ব্যপার। অনেকেই বাংলা ব্লগে তাঁর নিজের অথবা অন্য কোনো আঞ্চলের আঞ্চলিক শব্দমালা ব্যাবহার করেন। সেটাও কী বিকৃতি বলব আমরা!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

কৌস্তুভ এর ছবি

এনার মন্তব্যটা যে অফটপিক সেটা আমিও তো বললাম। হাসি

এইধরনের মন্তব্যে সচরাচর দুটো যুক্তি থাকে, যে দুটোর কিছুটা হলেও মেরিট আছে। কিন্তু ইনি কোনো ব্যাখ্যার দিকে যান নি, সরাসরি বিকৃতির ট্যাগ লাগিয়েছেন।

এক, অল্পবয়সী, অনভিজ্ঞ পাঠকেরা যদি ডুষ্টুবুদ্ধি-কেই সঠিক বানান ভেবে বসে, তাহলে মুশকিল।

দুই, একান্ত প্রয়োজন ছাড়া, মানে সংলাপের বাইরে, প্রাদেশিক কথ্য ভাষা ব্যবহার করলে অনেকে না-ই বুঝতে পারেন, যেমন সিলেটি ভাষায় মিম-আলোচনা হলে আমি বুঝতে পারব না।

আশালতা এর ছবি

সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ অনার্য সঙ্গীত।

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

আশালতা এর ছবি

নাম না জানা পাঠক, আপনাকে মর্মাহত করার জন্য দুঃখিত।
আপনাকে আমার দু একটা লেখা কষ্ট করে পড়ে দেখার অনুরোধ করছি, তাহলে অন্তত দেখবেন যে ফরমাল বাংলা ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাংলা ভাষা 'বিকৃত' করার অপচেষ্টা আমি কখনও করিনা।
কথ্য ভাষা কোন রিজিড ফর্ম না। এখানে কেউই অভিধান মেনে চলেনা, চললে আমাদের বাংলা ভাষা আজকের এই চেহারা পেত না। 'স্যার' সম্বোধন করে এই ছোট্ট দুষ্টুমিটুকু কেন করা হয়েছে আমাদের পরিচিত বলয়ের মধ্যে নন বলে সেটা আপনার জানার কথা নয়। আমি বিশ্বাস করি তার সুত্র এবং অর্থ কৌস্তুভ জানে এবং বোঝে । তারপরও আপত্তিকর ঠেকলে কৌস্তুভকে আমি মন্তব্যটি মুছে দিতে অনুরোধ করব।

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

কৌস্তুভ এর ছবি

ওহ, এইটা যে আপনাকে উদ্দেশ্য করে ছিল সেইটা বুঝতে পারি নি। আচ্ছা হ্যাঁ, প্রচণ্ড আপত্তিকর ঠেকল, বুকে শেলের মত ব্যাথা পেলাম; এক্ষুণি মুছে দিতাম কিন্তু কমেন্ট মডুরা ছাড়া মোছা যায় না... মন খারাপ খাইছে

তারাপ কোয়াস এর ছবি

ডকিন্সখুড়োকে ভালা পাই, আপনার লেখাটাও বড় উপাদেয়। উত্তম জাঝা!

অট: সেই চৈনিক বালিকাদের নিয়ে আর কোন পর্ব দেওয়া যায় না চোখ টিপি


love the life you live. live the life you love.

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

অ্যাই খবর্দার, আমি এখন ভালো হয়ে গেছি! চোখ টিপি

সুরঞ্জনা এর ছবি

দারুণ লেখা কৌস্তুভ ভাই!!! দেঁতো হাসি
উত্তম জাঝা!

দুদিন ধরে মন ভীষণ খারাপ ছিলো, নানা রকম খবরাখবর শুনে, মানুষের আচার-ব্যবহার দেখে কেমন যেন বিদ্বেষ জেগেছিলো মনে।
তখন সেলফিশ জিন বইটা চোখের সামনে ছিলো, নাড়াচাড়া করতে করতে প্রথম পৃষ্ঠা পড়ে ফেললাম। কি যে ভালো লাগলো...কি বলবো।

মানুষের ক্ষুদ্রতা, দুর্বলতা, এসবের কুপ্রভাব কাটিয়ে ওঠবার জন্য 'বড় ছবি'টার দিকে তাকানো জরুরী হয়ে পড়ে। যারা টেড এর লেকচার শোনে দুইবেলা, তাদের মন খারাপ হতেই পারবে না। হাসি

ডকিন্স আমার খুব প্রিয় ব্যক্তিত্ব, ভাগ্যে লেখাটা দিলেন, এখনো উনি অপরিচিতই আমাদের দেশে। আর meme উচ্চারণ যে মিম তাও জানলাম, নাহলে তো আমি মন দিয়ে 'মেমে'ই পড়ে আসছিলাম এদ্দিন ধরে। হাসি

ভালো লেখা , এমন আরো কোটি কোটি আসুক। হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

কৌস্তুভ এর ছবি

যা দিনকাল দেখছি, বিবর্তনের কী দায় পড়েছিল মনখারাপের মত একটা বাজে জিনিসকে মানুষের মনে উদ্ভব ঘটানোর, তাই নিয়ে গবেষণা করতে হবে! চিন্তিত

কিন্তু আমি তো আশা করে ছিলাম, সদ্য সদ্য পড়ছেন, কিছু ভুলটুল থাকলে আপনি শুধরে দেবেন... তাও, এত্ত বড় একটা মন্তব্য করার জন্য আপনাকে এত্ত এত্ত ধন্যবাদ!

meme এর উচ্চারণ gene এর মত। হাসি

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

এমনিতেই জ্বীন-পরীর গল্প শুনলেই গা ছম ছম করে। তার উপর আবার সাকুলিনা, ওরে বাপরে। একবার ভাবুন দেখি ওটা ধরলে কি হবে?

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

কৌস্তুভ এর ছবি

আমারও তো 'ওই সাকুলিনা আসছে' মনে করেই গা ছমছম করে ওঠে!

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

দারুণ লেগেছে। আমি খালি নামই জানতুম খুড়োর- আর সেলফিশ জিন থিওরী অল্পস্বল্প।

এই লেখা পড়ে বেশ কিছু প্রশ্ন জাগলো। তবে আপাতত দৌড়ের উপরে আছি, পরে সময় করে ফিরে আসবো আশা করি। ...

কৌস্তুভ এর ছবি

রিচার্ড ডকিন্স তো গণ্ডাদুয়েক বই লিখেছেন, সময় পেলে উল্টেপাল্টে দেখবেন। ওই সুরদি'র থেকেই কেড়ে নেবেন নাহয়। খাইছে

নিশ্চয়, নিশ্চয়, জানাবেন আপনার মনে কী এল...

স্বাধীন এর ছবি

চমৎকার লেখা। ডকিন্সখুড়োকে ভালু পাই। অনেকদিন আগে মুক্তমনায় জিন ও মিম নিয়ে একটি লেখা লিখেছিলাম যার আইডিয়া অনেকটাই ডকিন্সের সেলফিশ জিন থেকেই পাওয়া।

কৌস্তুভ এর ছবি

দারুণ একটা প্রবন্ধ, লিঙ্কটা দেওয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আরো কিছু লিখুন না এইসব নিয়ে।

কবি-মৃত্যুময় এর ছবি

এক্সটেন্ডেড ফিনোটাইপের ধারণা/সংগাটা দারুণ লাগল! যে ফিটেস্ট সেই টিকে থাকবে, সেই বোধ হয় সেলফিস জিন। তবে জিনই বিবর্তনের একক এটা কেমন যেন লাগল, আচ্ছা অন্য বিজ্ঞানীরা কি এই তত্ত্ব মেনে নিয়েছেন? তবে খুড়োর তিনটি ধারণাই দারুণ! আর

ধর্ম হচ্ছে একটা মিম, বিভিন্ন ধর্ম হচ্ছে তার বিভিন্ন প্রতিরূপ, আমাদের মাথায় কোনটা ঠাঁই পাবে তাই নিয়ে তাদের মধ্যে সংগ্রাম চলছে।

এটি আমার একটি ধারণার সাথে অনেকটা মিলে গেল।

বিজ্ঞান-প্রবন্ধ আরো লিখবেন আশা করি.............ধন্যবাদ। হাসি

কৌস্তুভ এর ছবি

থ্যাংকু!

যে ফিটেস্ট সেই টিকে থাকবে, সেটা তো প্রাকৃতিক নির্বাচনের মন্ত্র। সেলফিশ জিন তত্ত্ব বলছে, একটা জিনের মূল লক্ষ্য হল তার বংশগতি অর্থাৎ ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করা, তার (এক্সটেন্ডেড) বাহনের বাঁচা-মরা তার কাছে গৌণ।

না, সবাই একমত নন, এই তত্ত্বের বিরোধীরাও আছেন, তাঁদের বা তাঁদের গুরুর থিয়োরীই তাঁদের পছন্দ, যেমন গ্রুপ সিলেকশন, কিন সিলেকশন ইত্যাদি।

এখন আরও বেশি বিজ্ঞানী ক্রমে এইভাবে ধর্মকে ব্যাখ্যা করতে চাইছেন। এখন পড়ছি Daniel Dennett এর Breaking the Spell: Religion as a Natural Phenomenon, চমৎকার লেখা। উপরে যে Susan Blackmore এর ভিডিও দিয়েছি, তাঁর The meme machine বইটাতেও আছে।

কবি-মৃত্যুময় এর ছবি

আচ্ছা আচ্ছা!! হাসি

আর আমারও মনে হচ্ছে ধর্মের এই তত্ত্বটি একসময় প্রতিষ্ঠিত হবে।

বইটার আকর্ষণীয় বিষয় নিয়ে একটা পোস্ট দিয়েন, আমরাও জেনে গেলাম(এখনও ব্যাচেলরই শেষ হয় নি তাই সময় কিছু কম পাই অন্য বই পড়তে দেঁতো হাসি )!!!!

ফাহিম হাসান এর ছবি

কৌস্তুভ ভাই, আমার খুব জানতে ইচ্ছা করে কোন কোন জিনের জন্য আমরা প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে নারীর প্রতি তাচ্ছিল্য করি? আদিবাসীদের প্রতি উগরে দেই ঘৃণা? কোন ফিনোটাইপের বদৌলতে গড়ে উঠেছে এই ঘৃণার বসতি?

কৌস্তুভ এর ছবি

ব্যাটল অফ সেক্সেস তো খুব প্রাচীন জিনিস। আদিমযুগের সরল বহুকোষী জীবেদের সৃষ্ট যৌনকোষ - গ্যামেট যখন দুইরকম শ্রেণীতে পৃথক হয়ে যেতে আরম্ভ হল - একদল জীব প্রচুর গ্যামেট উৎপন্ন করে, কিন্তু সেগুলোয় অর্ধেক পাটি জিন ছাড়া আর কিছুই প্রায় থাকে না; অন্যদিকে একদল অল্প সংখ্যক গ্যামেট উৎপন্ন করে কিন্তু ভ্রুণের পোষণের মত খাদ্য তাতে ভরা থাকে, তাই সেগুলো হয় আকারে বড়, উৎপাদন করাও বেশি কষ্টের। সেই থেকে শুরু হল শুক্রাণু আর ডিম্বানু, সেই থেকে শুরু পুরুষ-নারীর বিভেদের। তখন থেকেই স্ট্র্যাটেজিরও পার্থক্য করার প্রয়োজন পড়ল। ক্রমে পুরুষদেহ আর নারীদেহ কারুর ক্ষেত্রে অল্প, কারুর ক্ষেত্রে প্রচুর আলাদা হয়ে পড়ল।

নারীদের পরিশ্রম বেশি, তাই তাদের দায়িত্বও বেশি; তারা চেষ্টা করল ফাঁকিবাজ পুরুষদের দিয়ে যথাসম্ভব বেশি কাজ করিয়ে নিতে। পুরুষ তো যত্রতত্র ডিম পেড়ে বেড়ালেই হল, তারা তাই-ই করতে চায় অনবরত, কিন্তু মিলনের সুযোগ, বংশগতির সুযোগ দেবার আগে নারীরা তাদের সঙ্গীকে যাচাই করে নিতে চাইল অনেকভাবে - সে সক্ষম, নীরোগ, গুণবান, দায়িত্বশীল কি না। সেই চলল ব্যাটল অফ সেক্সেস। তাই থেকে এল ন্যাচারাল সিলেকশনের সমান্তরাল, প্রতিদ্বন্দ্বী এক পন্থা - সেক্সুয়াল সিলেকশন।

জানি, আপনার প্রশ্ন ঠিক এটা ছিল না। কিন্তু পুরুষজাতির এমন আদিম ব্যবহার অতি প্রাচীন অভ্যাস, সুযোগ পেলেই তাদের মধ্যের সেই আদিম পশু-টা বেরিয়ে আসে। এইসব নিয়ে অনেক বই-ও আছে।

সজল এর ছবি

এই যে একটা সত্যিকারের জ্ঞানীব্লগ হাসি । আচ্ছা মিম কি কোন থিওরী, সচলেই মনে হয় এই নিয়ে একটা আলোচনা পড়েছিলাম।
আর ডকিন্সকে খুড়ো বলে ডাকার প্রতিবাদ জানাই। কাজেকর্মে এখনো উনি বেশ ইয়াং।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

কৌস্তুভ এর ছবি

প্যাপ!

হ্যাঁ, মিম একটা থিয়োরি তো বলাই যায়। সংস্কৃতিকে নতুনভাবে ব্যাখ্যা করার থিয়োরি। সচলে এই নিয়ে হিমুদা খানিক লিখেছিলেন, অন্যরাও অলস্বল্প লিখেছেন।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

পিঁপড়ে নিয়ে একটা গল্প লিখেছিলাম বহুবছর আগে। মনে হচ্ছে এই ডকুটা পড়ে গল্পটা লিখলে অনেক বেশী সমৃদ্ধ হতো। পিপড়ে নিয়ে আমার ব্যাপক আগ্রহ থাকলেও পড়াশোনায় গোল্লা। আপনার এই পোষ্ট থেকে ভালো মাল মশলার যোগান হবে। অশেষ ধন্যবাদ এরকম রসময় জ্ঞানী পোষ্ট উপহার দেবার জন্য। এই পোষ্টে কিন্তু পিপড়া আসতে পারে হাসি

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

কৌস্তুভ এর ছবি

গুড়ের আদানপ্রদান চললে আসতে পারে বৈ কি খাইছে আর এলে তো মুশকিল - প্রফেসর শঙ্কুর ব্যোমযাত্রীর ডাইরি গল্পটা মনে আছে নিশ্চয়ই দেঁতো হাসি

আপনার গল্প পড়ার জন্য লোভাতুর থাকি সবসময়ই, আর পিঁপড়েরা চরিত্র হিসাবে খুবই ইন্টারেস্টিং হতে পারে - পড়ান না গল্পটা!

অপছন্দনীয় এর ছবি

ব্যোমযাত্রীর ডায়েরী যেন কোনটা? ওই যেটাতে বিধুশেখর নামে রোবট ছিলো যেটা গান গাইতো "ঘঙো ঘাঙঙো কুঁক্ক ঘঙা...আগাঁকেঁকেই ককুং ঘঙা"? শেষটা টাফা গ্রহে গিয়ে পিঁপড়ের পাল্লায় পড়েছিলো শঙ্কু যেগুলো এখনো হাঁচতেই শেখেনি?

কৌস্তুভ এর ছবি

হাঁয়েস!

তুলিরেখা এর ছবি

এই ডকিন্সখুড়ারে পাইলে আমি নিতান্ত সাদামাঠা বাংলামতে কিছু অব্জার্ভেশন কইতাম, যা কিনা বড়ই গন্ডগোল পাকায় ভাবতে বসলে। মানে সেলফিশ জিনের নিরিখে আধুনিক মানুষ দেখলে।
ধরেন এই ডকিন্সখুড়ার মতই আরো কিছু বিজ্ঞানী সহকর্মী ও কর্মিনীরা।(এদের মধ্যে উড বি খুড়ীও ছিলেন হয়তো কেজানে হাসি ) যারা কিনা অনেকেই যৈবন কাটাইয়া দিলেন কাজ কইরা, কেরিয়ার ঠিক রাখতে বিয়া টিয়া করলেন না, বাচ্চাকাচ্চা ও হইলো না ন্যাচেরালি। তা বিজ্ঞানী হোক কি অন্য কাজের কাজী হোক, মানুষ বটে তো, জিনগুলি তো সেই একই জিনসেট, সেই সেলফিশ জিনের ঠেলা ওভাররাইড এনারা করলেন কেমন কইরা? চিন্তিত
মানে কইতে চাইতেছি তারে শুধু না, একদল এইটা ওভার-রাইড করতে পারেন সাকসেসফুলি, বিবর্তনবাদ মানে সেলফিশ জিন এই ত্যাদরামিকে কীভাবে সামাল দেয়? বিষয়ীজগতে কিন্তু এই লোকেরা বেশীরভাগ খুব সাকসেসফুল, আর দিনকাল ক্রমে আরো এইদিকেই যাচ্ছে, সেলফিশ জিন এবার কী করবে? চিন্তিত

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

কৌস্তুভ এর ছবি

মানুষ বুদ্ধিমান জীব কিনা, সচেতনভাবে অনেককিছু ওভাররাইড করতে পারে। আর তাছাড়া জিনের কাজকর্মের হার খুবই ধীরে, তাকে মিম সহজেই ওভাররাইড করে ফেলে। এত দ্রুত পরিবর্তনের হার জিন সামাল দিতে পারছে কই, আর প্রকৃতিই বা পারছে কই? কালচারাল ইভোলিউশন এত দ্রুত হারে হচ্ছে, যে জেনেটিক ইভোলিউশন সামাল দিয়ে উঠতে পারছে না...

guest_writer এর ছবি

ডকিন্স খুড়ো, যুগ যুগ জীও---- অণু

কৌস্তুভ এর ছবি

চলুক

সুমন_তুরহান এর ছবি

উত্তম জাঝা!

আরে এই চমৎকার লেখাটি এতোদিন পড়িনি! কৌস্তুভ'দাকে অনেক ধন্যবাদ ডকিন্সখুড়োর লেখা নিয়ে এতো মজাদার লেখা উপহার দেয়ার জন্যে। ডকিন্সের বইগুলোর মতো, আপনার লেখা পড়ার সময়ও মনেই হয়না বিজ্ঞানের কোনো জটিল বিষয় পড়ছি। রেটিং দিতে পারলে হাজার তারা দিতাম। এরকম আরো লিখুন! চলুক

অফ যা টপিক: গতবছর মেলবোর্নে এসেছিলেন রিচার্ড ডকিন্স 'The Greatest Show On Earth: The Evidence For Evolution'- বইটির ট্যুরে। খুড়োর লেকচার শুনতে গিয়েছিলাম। তাঁর মতো এতো সুন্দর করে খুব কম বিজ্ঞানীই বিবর্তনের মতো জটিল বিষয় বোঝাতে পারেন। জয়তু ডকিন্স ! )

সুমন_তুরহান এর ছবি

হায় হায়! থাম্বস ডাউন সিম্বলটা কি করে এলো উপরের মন্তব্যে? অ্যাঁ আমি মোটেও তা বলতে চাইনি। লিখেছিলাম 'অফ টপিক'। মোটেও থাম্বস ডাউন নয় বরং অনেক অনেক চলুক চলুক চলুক চলুক চলুক

কৌস্তুভ এর ছবি

হে হে হে... আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

আপনি খুড়োর লেকচার শুনেছেন? বাহ বেশ বেশ... আমাদের এদিকে অনেকদিন আসেননি...

সুমন_তুরহান এর ছবি

খুড়ো আসছেন আবার এদিকে আগামী বছর এপ্রিলে। এবার মনে হচ্ছে কনভেনশানটা গতবারের চেয়েও জম্পেশ হবে। পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

কৌস্তুভ এর ছবি

ঈর্ষা জাগাবার চেষ্টা করছেন? দাঁড়ান, হবে আপনার...

পারলে খুড়োর একটা ইন্টারভিউ নিয়ে ফেলবেন।

সুমন_তুরহান এর ছবি

হে হে! খুড়ো তো বিরাট সেলিব্রিটি, ইন্টারভিউয়ের চান্স পাবো বলে মনে হয় না। তবে চেষ্টা করবো। ইন্টারভিউ না নিতে পারলেও কনভেনশান নিয়ে একটা লেখা দেয়ার ইচ্ছে আছে আগামী বছর। হাসি

কৌস্তুভ এর ছবি

পারলে আপনার জন্য ইহজন্মেই থাকবে ৭২টি চকলেট... খাইছে

ধৈবত(অতিথি) এর ছবি

বিজ্ঞান বিষয়ক লেখাগুলো ঘাটতে ঘাটতে এই লেখাটা আজ এদ্দিন পর পড়লাম, আফসোস। আর দোস্তদের তো বইটা উপহার দিলেন। আমাকে কবে দিবেন, বলেন।

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনি আরো ঘনঘন চমৎকার সব রসময় লেখা লিখতে থাকুন, তারপর আপনার ভাগ্যেও শিকে ছিঁড়বে নিশ্চয়ই। খাইছে

ধৈবত(অতিথি) এর ছবি

রসময় লেখিয়ে সচলে এখন অনেক এসে গেছে। এবার আমার ক্ষ্যামা দিলেও চলবে। কিন্তু বইটা পাঠাতে যেন উনিশ-বিশ না হয়। দেঁতো হাসি

মৃত্যুময়-ঈষৎ এর ছবি

মানতে পারলাম না, ধৈবত। তোমার লেখা চাই, ঐরকম ভাষাশৈলী কমই পাই আজকাল। দ্রুত পোস্ট চাই ভাই। তবে পোস্টের শেষে পূর্বের সবগুলো লেখার লিংকু দিও, তাহলে আমরা পাঠকেরা তোমার পূর্ববর্তী লেখাগুলো একত্রে দেখতে পারব। দেঁতো হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

“selfish gene” মূল ধারণা কিন্তু রিচার্ড ডকিন্সের না।

রবার্ট ট্রিভার্স এর সায়েন্টিফিক পেপার গুলোকে ডকিন্স শুধু সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা করে জনপ্রিয় করেছেন।

ডকিন্স এর নিজের কোনও গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক আবিষ্কার নায়।

সে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে জনপ্রিয় করেছে, যার দরকার আছে, কিন্তু তাই বলে এই লোকটাকে বিজ্ঞানী বানিয়ে দেয়াটা ভুল হবে।

http://en.wikipedia.org/wiki/Robert_Trivers

http://roberttrivers.com/Robert_Trivers/Welcome.html

-- জ্যোতিস্কর দাদু

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।