মহাভারতের মহাভজঘট ০২: কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন

মাহবুব লীলেন এর ছবি
লিখেছেন মাহবুব লীলেন (তারিখ: বিষ্যুদ, ১২/০২/২০১৫ - ৪:৫০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

যত দিন ধইরাই লেখা হউক আর যত মাইনসেই কাহিনি যোগ করুক না ক্যান; মহাভারতের কাহিনিখান এখনো প্রচারিত আছে একক মানুষ বেদব্যাস কৃষ্ণ দ্বৈপায়নের নামে; এবং মহাভারতের প্রধানতম ভজঘট হইলেন স্বয়ং এই বেদব্যাস কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন। তো এই কৃষ্ণ দ্বৈপায়নের একখান কাব্যিক বর্ণনা দিছেন রায়গুণাকর ভারতচন্দ্র রায় তার অন্নদামঙ্গলের পাতায়:

দাঁড়াইলে জটাভার
চরণে লুটায় তাঁর
কক্ষলোমে আচ্ছাদয়ে হাঁটু
পাকা গোপ পাকা দাড়ি
পায়ে পড়ে দিলে ছাড়ি
চলেন কতক আঁটুবাঁটু

কক্ষলোম মানে হইল বগলের লোম। বগলের লোমে নাকি দ্বৈপায়নের হাঁটুগুলাও ঢাইকা গেছিল। বুইঝেন কিন্তু; স্বভাব কবিরা স্বাধীনতা পাইলে পদ্য মিলাইবার লাইগা কত দূর পর্যন্ত যাইতে পারে। মাইনসের বগলের লোমে নাকি হাঁটু পর্যন্ত ঢাইকা যায়...

তো এমন মইনসের চুল আর দাড়িগোঁফ দিয়া যে রাস্তা মাপার সার্ভেয়ারগো গজফিতা বানানো যাইব সেইটা তো স্বাভাবিক কথা। এইখানে কিন্তু যুক্তি; বিজ্ঞান; আর ইতিহাস পুরা অচল। মহাকবি নামে পরিচিত কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন নিজেই হাজার বছর ধইরা শত শত কবির রচনায় স্বয়ং একখান মহাকাব্যে পরিণত হইছেন। তার জীবনী পড়লে মনে হইব চুলদাড়ি জটাজুট নিয়া তিনি যেই জন্মাইছিলেন তারপর খালি হাঁটতেই আছেন তো হাঁটতেই আছেন। হাঁটতে হাঁটতে তিনি বেদমন্ত্রগুলারে চাইরভাগে ভাগ করেন; রচনা করেন বেদের ব্যাখ্যা বেদান্ত; রচনা করেন আঠারোখান পুরাণ আর আঠারোখান উপপুরাণ এবং সর্বশেষ রচনা করেন একখান মহাভারত। মোট আটত্রিশখান গ্রন্থ প্রচলিত আছে তার নামে; যদিও হিসাবে নিকাশে গবেষণায় তার নামে প্রচলিত সব কর্ম নিয়াই আছে লাখে লাখে প্রশ্ন; যার মইদ্যে প্রধানতম প্রশ্ন হইল তার নামে প্রচলিত বেশির ভাগ পুস্তকই স্বাভাবিক নিয়মে তিনি মইরা যাইবার পরের রচনা...

মাইমল কন্যা সত্যবতীর গর্ভে ব্রাহ্মণ পরাশরের ঔরসে জন্ম নেওয়া এই দ্বৈপায়ন শুকদেব ধৃতরাষ্ট্র পাণ্ডু ও বিদুরের পিতা আর মহাভারত-কাহিনির একখান চরিত্র...

কালা রঙের কারণে কৃষ্ণ আর দ্বীপ বা চরে জন্ম নিবার কারণে দ্বৈপায়নের পাশাপাশি মুখে মুখে আউলাঝাউলা হইয়া ছড়ানো বেদমন্ত্রগুলারে তিনি বিষয়ভিত্তিক চাইরভাগে ভাগ করেন বইলা তার সম্মানজনক নাম বেদব্যাস মানে বেদের ভাগকর্তা। বেদের পাঠ যাতে নির্ভুল হয় সেজন্য তিনি বেদরে ভাগবাঁটোয়ারা করার পর চাইর শিষ্য; পৈল বৈশম্পায়ন সুমন্ত আর জৈমিনি; প্রত্যেকরে একখণ্ড কইরা আর পুত্র শুকদেবেরে মুখস্থ করাইছিলেন একসাথে চাইর খণ্ড বেদ; যাতে শুকদেবের পাঠের লগে অন্যগো পাঠ মিলাইয়া সঠিক পাঠখান পাওয়া যায়। নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী আরেক ধাপ আগাইয়া গিয়া কন- দীর্ঘ দিন থাইকা শূদ্র আর নারীগো বেদপাঠ বিষয়ে যে নিষেধাজ্ঞা আছিল তা তিনি উঠাইয়া দিয়া সকলের লাইগা বেদ উন্মুক্তও কইরা দেন। দ্বৈপায়ন সম্পর্কে তার আরো তিনটা আবিষ্কার দারুণ। তিনি কন দুনিয়াতে প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে দ্বৈপায়নই প্রথম উদ্যোক্তা; এক জায়গায় বেশি দিন থাকলে বনের ক্ষতি হয় এবং বনের পশুপাখি ধ্বংস হয় বইলা বনবাসকালে তিনি পাণ্ডবগো ঘন ঘন বন বদলাইতে পরামর্শ দিছেন; দ্বিতীয়ত দুনিয়াতে তিনিই পয়লা যুদ্ধকালীন নিয়মকানুন নির্ধারণ করেন। আর দুনিয়াতে যুদ্ধ সাংবাদিকতা এবং যুদ্ধক্ষেত্রে সাংবাদিকের অবাধ অধিকার তিনিই পয়লা চালু করেন। সেই হিসাবে সঞ্জয় হইল দুনিয়ার পয়লা প্রোফেশনাল সাংবাদিক...

তো এই দ্বৈপায়ন ব্যাসরে তার মা সত্যবতী ডাইকা আনছিলেন মৃত সৎ ভাই বিচিত্রবীর্যের বৌদের গর্ভে সন্তান জন্ম দিতে। মায়ের বিবাহ রাজবাড়িতে হইলেও মা না ডাকা পর্যন্ত জীবনেও তিনি রাজবাড়ি আসেন নাই। মহাভারতের শেষ দিকে ভীষ্মের বয়ানে তখনকার যে সংস্কৃতি পাওয়া যায় সেই সূত্রে তিনি মায়ের বিবাহকারণে মায়ের স্বামী রাজা শান্তনুর পোলা আর উত্তরাধিকার হইবার কথা। কিন্তু নিজে তিনি ঋষি মানুষ; নিয়ম মানেন না বরং নিয়ম বানান। তাই মায়ের বিবাহ রাজা শান্তনুর লগে হইলেও তিনি যেমন রাজবাড়িতে যান না; তেমনি নিজেরেও পরিচয় দেন না শান্তনুপুত্র কিংবা শান্তনুর উত্তরাধিকার হিসাবে; বরং নিজেরে তিনি পরিচয় করান মুনি পরাশরের সন্তান কইয়া...

পয়লা দিকে হরিভক্ত এবং শেষ দিকে হরভক্ত এই ঋষি টোল চালাইয়া বইপুস্তক লেইখা ঘুইরা বেড়াইবার পরেও আছিলেন বহুত সংসারী মানুষ। জঙ্গল জীবনেই টেম্পোরারি বৌ ঘৃতাচীর গর্ভে তার আছিল এক পোলা; শুকদেব। যিনি পরে হইয়া উঠেন চতুর্বেদী ঋষি। কিন্তু এই শুকদেব যখন সন্ন্যাসী হইয়া গেলো; কাব্যমতে বৃদ্ধ বাপের কান্দনে জঙ্গলের গাছ কাঁইপা উঠলেও শুকদেব ফিরল না; তখন অন্যের খোপে পাইড়া যাওয়া ডিম ফুইটা যে তিনটা বাচ্চা হইছিল তার; তাগো কাছেই বিনা নিমন্ত্রণে বারবার ছুইটা আসছেন ব্যাস দ্বৈপায়ন। বড়ো পোলা ধৃতরাষ্ট্রটা আন্ধা আর লোভী; মাঝে মাঝেই মহাভারতে দেখি পোলারে আইসা বোঝান পিতা দ্বৈপায়ন। মাইজা পোলা পাণ্ডুটা অসুস্থ আর আঁটকুড়া; কিন্তু ক্ষেত্রজের যুগে যখন নির্বাসনে যুধিষ্ঠির জন্মাইল পুত্রবধূ কুন্তীর গর্ভে; রাজবাড়িতে পরবর্তী উত্তরাধিকার জন্মাইবার সংবাদটাও পৌঁছাইয়া দিলেন দ্বৈপায়ন; যাতে তখনো অপুত্রক ধৃতরাষ্ট্র পরে কোনো বাগড়া না দেয় পোলাপাইনগো মাঝে যুধিষ্ঠিরের বড়োত্ব নিয়া। গান্ধারীর গর্ভসংকট? সেইখানেও দ্বৈপায়ন...

পাণ্ডু অকালে মইরা গেলেও রাজবাড়িতে তার পাঁচ পোলা নিশ্চিন্ত আছিল ভীষ্মের ছায়ায়। কিন্তু যখন জতুগৃহ পুড়াইয়া তারা পলাইল? তখন এই পাঁচ নাতির আক্ষরিক অর্থেই অভিভাবক আবার দ্বৈপায়ন। বুদ্ধি দেওয়া; নিজে হাত ধইরা ছদ্মবেশ পরাইয়া নিজের শিষ্যের বাড়িতে রাখা আর নিজে পুরোহিত হইয়া পাঁচ নাতিরে দ্রুপদের মাইয়ার লগে বিবাহ দিয়া আবারো শক্তিশালী করা...

তার ছোট পোলা বিদুর; বিচিত্রবীর্যের দাসীর গর্ভে জন্মাইছিল বইলা রাজ বংশে উত্তরাধিকার পায় নাই। কিন্তু তিনি যেমন বিদুরের মায়ের দাসত্ব মুক্ত কইরা দেন তেমনি ধৃতরাষ্ট্র আর পাণ্ডুর ক্ষেত্রে যেখানে কন তারা অম্বিকা আর অম্বালিকার পোলা; সেইখানে বিদুরের ক্ষেত্রে কন- আমার সন্তান। আবার পুত্রহীন বিদুর মরার কালে তার শেষকৃত্যের লাইগা সম্রাটরেও মনে করাইয়া দেন- তুমি কিন্তু বিদুরেরই অংশ যুধিষ্ঠির...

সবখানেই মহাভারতের লেখক দ্বৈপায়ন মহাভারতের সক্রিয় চরিত্র হইয়া মারাত্মক প্রকট; এমনকি কুরুযুদ্ধেও দেখি তিনি ঋষির গাম্ভীর্য নিয়া খাড়াইয়া দেখতে আছেন নিজের বংশনাশ...

কাব্যকাহিনি মতে ইনি নিজে কলম দিয়া লিখতেন না। লেখাইতেন গণেশরে দিয়া। কিন্তু নৃতত্ত্বমতে আর্যঘরানার মানুষগুলা আছিল আকাট নিরক্ষর; লেখাপড়া জানতই না তারা। লেখাপড়া জানত এই অঞ্চলের আদিবাসী মানুষ; মানে খ্রিস্টপূর্ব ২৮০০ থাইকা খ্রিস্টপূর্ব ১৭০০ পর্যন্ত চলা সিন্ধু সভ্যতার মানুষ; যার মইদ্যে আছিল বিনায়ক বা গণেশ; যাগোরে আর্যঘরানার প্রাচীন সাহিত্যে রাক্ষস আর সিদ্ধিনাশক কইয়া বহুত গালাগালি করা হইছে। গণেশ নাকি তাগো সব সিদ্ধি নাশ কইরা দিত। কিন্তু বচ্ছরের পর বচ্ছর মাইনসের মুখে মুখে ঘুইরা যখন মহাভারত পাল্টাইয়া যাইতে শুরু করল; তখন তারা ভাইবা দেখল যে এইটারে লেইখা বান্ধাইয়া না থুইলে মাইনসে নতুন নতুন ভার্সন বানাইতেই থাকব দিনের পর দিন। আর সেই উদ্দেশ্যে তারা গিয়া গণেশরে শুরু করে তেলানি- মোগো পুস্তকখান লেইখা দেও মাস্টর...

কিন্তু গণেশ মাস্টার কি আর সহজে রাজি হয়? রাজি হয় না সে। তারপর আর্যরা তারে লোভায়- সিদ্ধিনাশক থাইকা তোমারে সিদ্ধিদাতার পদে প্রমোশন দিমু মাস্টর; পুস্তকে তোমারে সম্ভ্রান্ত বংশজাত দেবতা কইয়া নমো নমো কইরা সকল দেবতার আগে করব তোমার পূজা...

বহুত তেলানোয় গণেশ রাজি হয় আর আমরা বিশ্বাসী মহাভারতে দেখি দ্বৈপায়ন মুখে মুখে শোলক বইলা যাইতাছেন আর শিবনন্দন গণেশ তা লিখতাছেন একটার পর একটা; যদিও গণেশের নামে যত কাহিনি আছে তার অর্ধেক কাহিনিতেও শিব-পার্বতীর লগে গণেশের কোনো সম্পর্ক নাই...

এইখানে একটা কথা কইয়া যাওয়া দরকার; তা হইল আর্য কিন্তু কোনো জাতি আছিল না; আছিল একটা ভাষাগোষ্ঠীর মানুষ। এই আর্যগোষ্ঠীর মইদ্যে বহুজাতির মানুষ যেমনি আছিল তেমনি অসুর নামে পরিচিতরাও কিন্তু আর্য। শুরুতে বোধ হয় দেবতা আর অসুরে কোনো ফারাকও আছিল না। প্রাচীন সাহিত্যে প্রায় সব দেবতারেই যেমন কোনো না কোনো সময় অসুর কওয়া হইছে তেমনি অন্যদেরও কওয়া হইছে আর্য...

যাই হউক; কম্মজীবনে দ্বৈপায়ন বেদ বিভাগকর্তার পাশাপাশি বেদান্ত; আঠারো পুরাণ এবং আঠারো উপপুরাণের রচনাকার; এই বিষয়ে আগেই বহুত প্যাঁচাল পাইড়া আসছি। সেইগুলা আমার বিষয়ও না। কিন্তু আমার হিসাবে কয় মহাভারত গ্রন্থখানও সত্যবতীপুত্র এবং শুকদেব ধৃতরাষ্ট্র পাণ্ডু বিদুরের পিতা বেদব্যাস কৃষ্ণ দ্বৈপায়নের লেখা না। এইটা হইতেই পারে না। হইতে পারে এইটা বেদব্যাস কৃষ্ণ দ্বৈপায়নের মা এবং তার বংশের কাহিনি কিন্তু কোনোভাবেই তার লেখা না। কারণ মহাভারতমতে ব্যাস জীবিত আছিলেন জন্মেজয়ের সময়। জন্মেজয়ের লাইগাই তিনি স্লিম সাইজের ‘জয়’ নামে মহাভারতের আদিপুস্তক রচনা কইরা শিষ্য বৈশম্পায়নরে পাঠান জন্মেজয়রে তা শুনাইয়া আসতে। জন্মেজয় হইল দ্বৈপায়নের নাতির নাতি পরীক্ষিতের পোলা। তো জন্মেজয়ের সময় পর্যন্ত কর্মক্ষম অবস্থায় বাঁচতে হইলে দ্বৈপায়নের কর্মজীবী বয়স হইতে হয় কমপক্ষে দেড়শো বছরের বেশি। এইরকম দীর্ঘ কর্মজীবী বয়স তখনই সম্ভব যখন বহুত প্রজন্ম মানুষের কাহিনি এক মানুষের নামে চালাইয়া দেওয়া হয়; অথবা এক মানুষের জীবনী কয়েকশো প্রজন্মের মানুষ লেখে; অথবা বয়সটা যখন ধর্মবিশ্বাস দিয়া মাপা হয়; অথবা যখন মাইনসের বয়স গুনার দায়িত্বখান কবিদের হাতে পড়ে তখন। কিন্তু ইতিহাস আর বিজ্ঞানমতে মানুষ বর্তমানে যতটা দীর্ঘজীবী; ইতিহাসের কোনো কালেই তার থিকা বেশি আছিল না কোনো দিন; বরং বহুত সংক্ষিপ্ত আছিল পুরানা মানুষের জীবনী আর সক্ষমতার কাল...

এই ক্ষেত্রে মহাভারতের বয়ানকার সৌতির কথাখান ধরলে কিছু ভরসা পাওয়া যায়- কয়েকজন কবি এই ইতিহাস পূর্বে বলে গেছেন...। শুধু দরকার তার বাক্যের দুইটা শব্দ ‘ব্যাসপ্রোক্ত মহাভারতকথা’ কথাটারে বদলাইয়া যদি কওয়া হয় ‘ব্যাসের জীবনী মহাভারত কথা’ তাইলেই ধইরা নেওয়া যায় ব্যাসের বংশে ঘটা ঘটনা আগেও বহু কবি বইলা গেছেন; যা জন্মেজয় শুনছেন অন্য কোনো ব্যাসের কাছে আর শুনছেন সৌতিও...

মহাভারতের মহাভজঘট ০১: ঘটনাকাল


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

লীনেন দা, এক কৃষ্ণ দ্বৈপায়নেরে লইয়া গোটা ৩০০০ পৃষ্ঠার আর এক ভারত রচনা হইতে পারে।যত পড়ি ততই অবাক হই ।এই নিয়া কালী প্রসন্ন সিংহ অনূদিত মহাভারত তিনবার পড়লাম তারপরও খায়েশ মিটে নাই । আপনি আগাইয়া যান আর আমরা পড়ার জন্য পেছনে পেছনে আসতাছি।

-------
রাধাকান্ত

মাহবুব লীলেন এর ছবি

রচনা করা লাগবে না; উনারে নিয়া যেসব কাহিনি আছে তা সংকলন করলেই ৩০ হাজার পাতা পার হয়ে যাবে...

০২
কালীপ্রসন্ন ৩ বার পড়লে তো পুরষ্কার দাবি করা উচিত

স্বপ্নহারা এর ছবি

ব্যাপক ভাল্লাগতাসে, লাইনে আছি

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

মাহবুব লীলেন এর ছবি

ইস্টকে আর বেশি কিছু নাই কিন্তু

অতিথি লেখক এর ছবি

লীনেন দা, রাজনীতি ও সমাজনীতি থেকে শুরু করে সাম, দান, ভেদ ও দন্ডনীতির যে অপার ভান্ডার উনি দিয়ে গেছেন তার তুলনা আমি কোন কিছু দিয়ে করতে পারিনা।
যেমন করে প্রশ্ন না উঠলে উত্তরের প্রকাশ হয় না তেমনি দ্বৈপায়ন না থাকলে এই জ্ঞানভান্ডার থেকে আমরা বঞ্চিত হতাম।

-------------
রাধাকান্ত

মাহবুব লীলেন এর ছবি

কথার সাথে প্রায় একমত। তবে উনি বোধহয় দিয়ে যাননি; বরং উনার নামে চালিয়ে দেয়া হয়েছে

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

এইরকম দীর্ঘ কর্মজীবী বয়স তখনই সম্ভব যখন বহুত প্রজন্ম মানুষের কাহিনি এক মানুষের নামে চালাইয়া দেওয়া হয়; অথবা এক মানুষের জীবনী কয়েকশো প্রজন্মের মানুষ লেখে; অথবা বয়সটা যখন ধর্মবিশ্বাস দিয়া মাপা হয়; অথবা যখন মাইনসের বয়স গুনার দায়িত্বখান কবিদের হাতে পড়ে তখন।

হ্যাঁ, ব্যাসদেব তো এভাবেই দীর্ঘজীবী, এ কারনেই তো তার বয়সের কোন গাছপাথর নাই। এবং এখানেই মহাভারতের বিউটি। যদি কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বলে আসলেই কেউ থাকত, এবং তার একটি বস্তুনিষ্ঠ জীবনী কিংবা পারিবারিক ইতিহাস লেখা হত, তাহলে কয়জন আর সেটা পড়ার আগ্রহ বোধ করত।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

ব্যাস কিন্তু ব্যক্তির চেয়ে গোষ্ঠী বা ঘরানা হবারই সম্ভাবনা বেশি। বেদের ব্যাখ্যা কিন্তু ব্যাসকূট হিসাবেই পরিচিত; তা যেই লিখুক না কেন। আবার যে আসনে বসে বেদ পড়া হয় তারও নাম ব্যাস আসন; মানে যিনি সেই আসনে তখন বসেন তিনিও ব্যাস। আবার এখনো ‌'ব্যাস' পদবিওয়ালা মানুষও কিন্তু আছে...

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

ব্যাস কিন্তু ব্যক্তির চেয়ে গোষ্ঠী বা ঘরানা হবারই সম্ভাবনা বেশি

হতে পারে। কিন্তু তা না হলেই বা অসুবিধা কি? আমার তো মনে হয় মহাভারতের কোন চরিত্রকে আক্ষরিক অর্থে নেয়া এবং তার জন্মসাল, রাজত্বের কাল, ইত্যাদি বিষয় নিয়ে পেরেশান হয়াটাই হাস্যকর ব্যাপার।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আপনার বলার জায়গা আছে। কিন্তু কথাটার সথে আমার দ্বিমতও আছে জানায়ে গেলাম

অতিথি লেখক এর ছবি

লীনেন দা, আপনি আমি সহ আরো অনেকে যারা ভারত বা মহাভারত পড়ি বা বিশ্লেষন করি তারা কেউ ঐ সময়টাতে যেহেতু ছিলাম না তাই জানিনা তখন কি হইছে মূলত? সবই থিসিস কইরা বাহির করতাছি?আবার থিসিস ও একেক জনের একেক রকম,তাই না? কিনতু বেসিক টা ঠিক রাইখা বাকিটার উপর অনেকে অনেক রং চড়াইছে।মূল দান টা উনার ছিল, আছে ও থাকবে বাকীটা হইলো অন্যদের । তাও খারাপ না । উনি বেশীর ভাগ দিয়া গেছেন সেটা আমি যুক্তিতেও মানি আবার বিশ্বাস ও করি বাদ বাকি গুলা আস্তে আস্তে অন্যদের দ্বারা এক্সটেনশান হইছে।

---------------
রাধাকান্ত

মাহবুব লীলেন এর ছবি

অতীতকে জানতে হলে অতীতে থাকা কিন্তু অনিবার্য না। ডাইনোসর যারা আবিষ্কার করেছে তারা কেউ ডাইনোসর যুগের মানুষ না

০২
প্রশ্নটা বেসিক নিয়েই। মহাভারতের 'বেসিক'যদি কিছু থেকে থাকে (জয়) তাহলে তা রচনা হবার কথা জন্মেজয়ের সময়। কিন্তু জন্মেজয়ের সময় এসে যদি সত্যবতীপুত্র দ্বৈপায়নের মহাভারত (জয়) লিখতে হয় তবে তখন তার বয়স হতে হয় ১৫০ বছরের বেশি (জন্মেজয় তার ষষ্ঠ প্রজন্ম)। মানুষের এই বয়স কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য না

০৩
মহাভারত (যুধিষ্ঠিরের অভিষেক; যা প্রমাণিত); বেদ আর পুরানের রচনাকালের মধ্যে কয়েক শ থেকে কয়েক হাজার বছরের ব্যবধান; আমার আগের পর্বে এগুলার সন তারিখ আছে। এখন দ্বৈপায়নের নামে প্রচলিত ৩৮খান গ্রন্থ তার রচনা বলে ধরে নিতে হলে ধরতে হয় তিনি জীবিত ছিলেন অন্তত আড়াই থেকে পৌনে তিন হাজার বছর...। মূলত এই ৩৮টা বইয়ের কোনোটাই এক ব্যক্তির লেখা না। এবং সম্ভবত এর মধ্যে একটা অক্ষরও সত্যবতীপুত্র কৃষ্ণ দ্বৈপায়নের না... পুরাটাই তার নামে চলে কিন্তু তিনি এসবের কিছুই লেখেন নাই

এক লহমা এর ছবি

চলুক

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

nipu এর ছবি

বেদব্যাসের রচনার কথায় আসছিনা। কিন্তু বেদব্যাস বলে আদৌ কেউ ছিল কিনা এ ব্যাপারে কোন প্রন্ততাত্তিক/ ঐতিহাসিক... সন্দেহাতীত প্রমান আছে কি?
মানে গোপালভাড়ের মত ব্যাসদেব নিজেই একটা সংকলিত ফিগার নয় তো?
বুজতে পারছি অনেক দিন আগের ব্যাপার। তারপরেও... এতো প্রভবশালী একটা লোকের কিছু হার্ড এভিডেন্সতো সার্ভাইব করার কথা। তো, আদৌ কিছু কি আছে?

মাহবুব লীলেন এর ছবি

বেদব্যস একটা পদবি; বেদের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ যারা করতেন তারা প্রায় সকলেই এই পদবাচ্য হতেন

০২
পুরাণে অনেকগুলো পদবির ক্ষেত্রে এক ব্যক্তি কল্পনা করায় এদের জীবন অতি দীর্ঘ হয়ে যায়। তার মধ্যে আছে দেবরাজ ইন্দ্র; দেবগুরু বৃহস্পতি; বিভিন্ন ঘরানার ঋষি; শুক্রাচার্য (দেবতাদের বিরুদ্ধ রাজ্যের কূলগুরুর পদ) এবং সম্ভবত ভীষ্ম (হস্তিনাপুরের সেনাপতি পদ)

০৩
কবি কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন বেদব্যাস একটা সংকলিত ফিগারই
তার হার্ড এভিডেন্সের মূলে তার স্কুল বা ঘরনাই কিন্তু মূল ভিত্তি
তার অন্তত ৫জন বিখ্যাত শিষ্য ছিলেন পৈল-বৈশম্পায়ন-সুমন্ত- জৈমিনি আর শুকদেব (শুকদেব তার ছেলে)
এরা সবাই আবার নিজেদের গুরুকূলে বিখ্যাত আচার্য ছিলেন। বৈশম্পায়ন আর জৈমিনি সরাসরি যুক্ত ছিলেন মহাভারত রচনা আর প্রচারে
হইলে হইতে পারে এইসব গুরুকুলের কবিরা যা কিছু তৈরি করেছেন সবই প্রচার করেছেন আদিগুরু দ্বৈপায়নরে নামে

অতিথি লেখক এর ছবি

অতীতকে থিসিসের মাধ্যমে আমরা জানছি কিন্তু দেখেন সময় থেকে সময়ান্তরে কিন্তু এক একটা যুক্তি ও প্রতিযুক্তির মাধ্যমে তা আবার একটু একটু করে পরিবর্তিত হচ্ছে । আচ্ছা আপনি যদি দেখেন মহাভারত নিয়া এই পর্যন্ত হাজারো আলোচনা , সমালোচনা ও শত শত বই পুস্তক রচিত হয়েছে । গবেষনা হয়েছে ও হচ্ছে । তার মানে টা কি? এক এক জন এক এক রকম করেই কিন্তু তার যুক্তি প্রতিষ্ঠিত করতে চাচ্ছে এবং করছেও বটে। কোনটাকে কি ফেলে দেয়া হচ্ছে? এই যে আপনি যুক্তি দিচ্ছেন এটা ও কি ফেলে দেয়া যাচ্ছে? মোটেও না। তাহলে একটা রহস্য থেকেই যাচ্ছে।সেই রহস্য ভেদ করতে গিয়ে নানান মুণির নানান মত তৈরী হচ্ছে।এখানেই মহাভারতের মজা।রহস্যের বৃন্তে নিজেকে ও ভারতকে লুকিয়ে রাখার জন্যই মনে হয় দ্বৈপায়ন এমন একটা কীর্তি গড়েছিলেন।

আমি কিন্তু আপনার কোন কিছুকে ছোট করছি না কাজেই ভুল বুঝিয়েন না প্লিজ। আমিও আপনার মতোই এগিয়ে যেতে চাই । আপাতত ভারত নিয়েই পড়ে থাকতে চাই, পুরাণ গুলো নিয়ে আমারও দ্বিমত আছে।

-----
রাধাকান্ত

মাহবুব লীলেন এর ছবি

মহাভারত নিয়ে ঘাঁটাঘাটিতে যদি মজাই না পা্ওয়া যেত তবে এই কঠিন খাটনি কে খাটতে যায় বলেন?
আর এইটা যদি সোজাসাপটা একটা বই হতো তাহলে তো কথা বলারই জায়গা থাকত না কোথাও

০২
আমি সকলেরই মত দেবার জায়গাটা রেখেই কিছু কিছু ক্ষেত্রে শুধু কিছু দ্বিমত করার সুযোগটা নিয়েছি; নিজের মতো পাঠটা তৈরি করতে
আমার পাঠটা একেবারে নৃতাত্ত্বিক পাঠ না; সেইটা করতে গেলে কুরুযুদ্ধ এবং ভীষ্মকে বাদ দিয়েই আমাকে গল্পটা বলতে হতো; এবং আমার হিসাবে সেইগুলা বাদ দিলে মহাভারতে সাহিত্য অংশ মারাত্মক খণ্ডিত হয়; তাই শেষ পর্যন্ত আমারটা গল্প; আর আর্যভট্ট- বরাহ মিহির- অতুলসুর; ইনাদেরগুলা নৃতাত্ত্বিক পাঠ

অতিথি লেখক এর ছবি

আমি ছোট বেলা থেইকা মহাভারত রে রাজনৈতিক ইতিহাস হিসেবে দেইখা আসতাছি সেই হিসাবে আমি সবসময় এইটারে রাজনৈতিক ভাবে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করি কিন্তু কিছু কিছু মানুষ ও অবস্থাতে যখন উপনীত হইয়া যাই তখন আর কিচ্ছু বলার থাকে না। তিনটা চরিত্র আমারে সর্বদাই ভাবের ঘোরে রাখে
১) দ্বৈপায়ন ২)দেবব্রত ৩)যাদব শ্রেষ্ঠ মাধব ।

তবে কর্ণাট রাজ্যের রানীর মতো আমি বলতে পারি না যে আমি শুধু তিনজন কবিরে চিনি!যার মইধ্যে ব্যাস(দ্বৈপায়ণও আছে।বিষ্ণু পুরাণে ২৮ জন ব্যাস এর নাম পাওয়া যায় । অদ্ভুদ ব্যপার হইলো তার মইধ্যে বাল্মীকির নাম ও আছে।অহো ভাগ্য এই যে মহাভারতের মইধ্যে দ্বৈপায়ণ এর অবদানের পাশাপাশি অন্যদের অবদান থাকলেও দ্বৈপায়ন রে অতিক্রম করার সাহস হয়তো কেউ দেখাইতে পারে নাই ।তাই তার নামেই মহাভারত প্রতিষ্ঠিত। তার কারনটা এই যে ,ঐ দ্বৈপায়নের ভেতরে এক মহান শক্তি থাকার কারনে কেউ তার ধারে কাছে ঘেষতে পারতো না।

----------
রাধাকান্ত

মাহবুব লীলেন এর ছবি

তিনটা চরিত্রই দারুণ আকর্ষণীয়। দ্বৈপায়নরে নিয়া আমার একটা কাব্যিক নোট আছে। এইটা অবশ্য যুক্তিটুক্তির বাইরে খালি কাব্য। দেখতে পারেন

ভীষ্মকে নিয়ে যা বলার তা অভাজনের মহাভারতেই বলে দিয়েছি। কৃষ্ণকে নিয়ে আলাদা করে একটা লেখা তৈরির ইচ্ছা এবং বেশ দীর্ঘ নোটও ছিল; কিন্তু ভয়ে ওই চিন্তা বাদ দিয়েছি; কৃষ্ণকে নিয়ে কিছু লিখব না আর...

ময়ুখ কিরীটি এর ছবি

বিজ্ঞানের সাথে সব কয়টা ধর্মেরই একটা বিরোধ আছেই......সনাতম ধর্মমতে মানুষের প্রাচীন আয়ুস্কাল বেশিই ছিল- পূর্বে মানুষ আরো সবল এবং দীর্ঘায়ু প্রাপ্ত ছিল.....অনেক মনীষীর বা ঋষিদের বেলায় এটা দেখেছি.....সুতরাং বেশি আয়ুর বিষয়টি তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেয়া যায় না বলে আমার মত!!

তবে আপনার বিশ্লেষণ পড়তে ভালো লাগে......এত সব অনিশ্চয়তার মাঝে সুনির্দিষ্টতা খোঁজার প্রয়াসটা আমার নিজের মাঝেও আছে.....ইতিহাসের অনেকটাই অনিশ্চিত বলেই এটা বোধহয় বেশি বিশ্বাসযোগ্য ও পাঠকপ্রিয়.....সামনে জানালার ওপারে মেঘলা আকাশকে চোখের সামনে রেখে এমন মহাভজঘট পড়ার অনুভূতিটা তাই অতুলনীয় হাসি

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আপনার প্রথম যুক্তিটা কিন্তু বিজ্ঞান স্বীকার করে না; বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিতও না। ইতিহাসে বর্তমান কালেই মানুষ তুলনামূলক বেশি দীর্ঘজীবী..

০২

দ্বিতীয় যুক্তির সাথে দ্বিমত নেই

অতিথি লেখক এর ছবি

"বিজ্ঞানের সাথে সব কয়টা ধর্মেরই একটা বিরোধ আছেই......সনাতম ধর্মমতে মানুষের প্রাচীন আয়ুস্কাল বেশিই ছিল- পূর্বে মানুষ আরো সবল এবং দীর্ঘায়ু প্রাপ্ত ছিল.....অনেক মনীষীর বা ঋষিদের বেলায় এটা দেখেছি.....সুতরাং বেশি আয়ুর বিষয়টি তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেয়া যায় না"-------ময়ুখ কিরীটি এর এই কথাটা ভাল লাগলো।

আসলে, সনাতন ধর্মমতে যে কয়জন প্রলয় পর্যন্ত অমর হওয়ার বরদান পেয়েছেন তার মধ্যে দ্বৈপায়নও আছেন এটা অবশ্য ধর্ম বিশ্বাসের কথা। বিঞ্জানে অবশ্য এগুলো টেকে না।

-------
রাধাকান্ত

মাহবুব লীলেন এর ছবি

মহাভারতের সাথে সনাতন ধর্মের সংযোগ স্বীকার করা হয়; কিন্তু গীতা ছাড়া আমি কিন্তু কোনো সংযোগ পাই না...
আর যখন নৃতাত্ত্বিকরা মহাভারতে কুরুযুদ্ধের অস্তিত্বই অস্বীকার করেন তখন মহাভারতের সাথে গীতারও সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়

০২
দ্বৈপায়নকে যদি বেদবিজ্ঞ/বেদব্যাস ধরা হয়; সেখানেো কিন্তু সনাতন ধর্মের সাথে দ্বৈপায়নের সম্পর্ক বিশেষ থাকে না। কারণ সনাতন ধর্মের সাথে বেদের দূরত্বও কিন্তু বিশাল; বেদ পড়লেও তা স্পষ্ট হয়ে উঠে। সনাতন ধর্মের সকল দেবতাই যেমন অবৈদিক (ব্রহ্মা বিষ্ণু শিবসহ বাকি সব দেবদেবী) তেমনি আচারগুলাও অবৈদিক

০৩
মহাভারতের সাথে সনাতন ধর্মের সংযোগ দাবি করা হয়; কিন্তু আমার তা মেনে নিতে আপত্তি আছে; অন্তত পুথিঁপুস্তক ঘেঁটে আমার বরং ভিন্নই মনে হয়

(ধর্ম নিয়ে আর আলাপ করব না ভাইজান। এই আলাপ যাতে না করতে হয় সেজন্য আমার বইয়ে আমি গীতা পুরা বাদ দিয়া গেছি ভয়ে। বইয়ের ভণিতায় তা পরিষ্কার বলেও দিয়েছি)

আয়নামতি এর ছবি

পোস্ট এবং মন্তব্য উপভোগ করলেম। আর কয় পর্ব বাকি আছে ভাইয়া?

মাহবুব লীলেন এর ছবি

বই তো কবে শেষ। এখন খালি প্যাচালগুলা এইখানে শেয়ার দিচ্ছি

আয়নামতি এর ছবি

প্যাচালগুলো উপভোগ্য কিন্তু। এগুলো বইতে রাখেননি?

মাহবুব লীলেন এর ছবি

বইয়ে রাখি নাই মানে? পুরা ৪৫ পৃষ্ঠা জুইড়া প্যাচাল পাড়ছি

অতিথি লেখক এর ছবি

কি যে কন আফনে লীনেন দা!প্রথম জীবনে অন্ধ ভাবে সব বিশ্বাস করতাম কিন্তু এক বিবেকানন্দ সব আউলা ঝাউলা বানাইয়া দিছে।তার পর ধর্ম কি জিনিস কিছুটা জানলাম আর কি। তবে আগের মতো ভয় নাই আর,কারন বিবেকের ভাষাতেই বলি সত্য বাইর করতে বহুত কিছু উলট পালট করতে হয় শুধু "আমি শ্রেষ্ঠ" এই গোড়ামি বাদ দিতে হইবো।

---------
রাধাকান্ত

মাহবুব লীলেন এর ছবি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

বই নিয়া কি ভজঘট লাগল? এই সপ্তাহেও এসে নাই। ওঁয়া ওঁয়া

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

মাহবুব লীলেন এর ছবি

মহাভারতে সপ্তাহের কোনো হিসাব নাই; আছে দিন মাস বচ্ছর (সবগুলার আগে হাজার বসাইয়া কথা কইতে হয়)

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

ইয়ে, মানে...

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অকিঞ্চন জন এর ছবি

ব্যাসদেব জয় লেখা শুরু করে আর তাঁর শিষ্যরে মুখে যা কইয়া গেছিল তার আগে পিছে মধ্যে সংযোজনের ফল মহাভারত। ব্যাস দেব বেঁচে থাকতেই যে পুরা ভার্সন লেখা হয়েছে তার কোন নজির কোথাও পাওয়া যায় না। আপনি যে পুরোপুরি ব্যাসদেবকে বাতিল করে দিচ্ছেন লেখক হিসেবে সেটা মানা যায় না।

আমি মনে করি ব্যাসদেব আরম্ভ করেছিলেন। তাঁর প্রটোকল ফলো করে অন্যরা পূর্ণতা দেয়। এইকারনেই হয়ত কেউই এই গ্রন্থ নিজের দাবী করেন না। আর মহাভারতে সব বিষয়ই বাড়িয়ে বাড়িয়ে বলেছে নয়ত গোপন করার জন্য দেব দেবতাকে হাজির করা হয়েছে। আসলে মহাভারতে যদি রাজা জন্মেজয় দেখত যে তাঁর পূর্ব পুরুষদের কুকর্মগুলোকে প্রকাশ করে দিচ্ছে তাহলে উনি তৎক্ষণাৎ প্রচার বন্ধের উদ্ধেগ নিতেন। এই ভীতিও কিন্তু কাজ করাটা স্বাভাবিক। এই ভীতি থেকে অতিরঞ্জন ও দেবদেবতাদের দিয়ে গর্ভ ধারণ ইত্যাদি করানো হতে পারে।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

ব্যাস বার্ধক্যের কারণে জন্মেজয়ের আসরে যেতে পারেননি; শিষ্যকে দিয়ে পাঠিয়েছেন; এমন কথা কিন্তু আছে। তার মানে কিন্তু জন্মেজয়ের সময় তার জীবিত থাকারই ইঙ্গিত...

০২
আপনার বিশ্লেষণে আমার বিশেষ কোনো দ্বিমত নেই

অতিথি লেখক এর ছবি

আচ্ছা লীনেনদা কোন একটা বইয়ের মইধ্যে পাইছি ঠিক মনে করতে পারতাছি না কে মহাভারত বইটা অনুবাদ করছে যে মহাভারত কথা বলার সময় সর্পযঞ্ঝের সময় ব্যাসদেব কিন্তু উপস্থিত আছিল!প্রসাদ বাবুর বিশ্লেষনে ও কিন্তু এই উপস্থিতির ব্যপারটা আছে। খু্‌ইজা দেখি বইয়ের নামটা দিতে পারি কিনা।
--------------
রাধাকান্ত

মাহবুব লীলেন এর ছবি

ব্যাস কিন্তু একইসাথে উপাধীও। বেদবেত্তা প্রায় সবাইকেই ব্যাস বলা হতো। বাল্মিকীও কিন্তু একজন ব্যাস। আর বর্তমানেও যে আসনে বসে গীতা পাঠ করা হয় তাকে অনেকক্ষেত্রে ব্যাসাসন বলা হয়। আর যিনি পাঠ করেন তিনি ওই সময়ের জন্য ব্যাস.... সুতরাং ব্যাস আজকেও যেকোনোখানে উপস্থিত থাকতে পারেন

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনারা এত্ত টিটকারী মারতে পারেন ভাই। মহাভারত পড়া হয় নাই। তবে যত টুকু শুনেছি, কর্ণ আমার ফেভারিট। আমার হিরো, ট্রাজিক হিরো কর্ণ। পলিটিক্যাল উপন্যাস মহাভারত, এটা ট্রাজেডিও বটে। সবাই জটলা পাকিয়ে স্বর্গে না গেলে ব্যাপারটা হয়ত আর শেষ হত না।
ইসরাত অমিতাভ

মাহবুব লীলেন এর ছবি

কোনো বিষয়ে কোনো দ্বিমত নাই। শুধু কই আমি কিন্তু টিটকারি মারি নাই। দুই দশকের বেশি সময় গাধা খাটনি দিছি মহাভারতের পিছনে

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।