শরমিন্দা শব্দমালা

মাহবুব লীলেন এর ছবি
লিখেছেন মাহবুব লীলেন (তারিখ: মঙ্গল, ২১/০৮/২০১৮ - ১২:৪৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমি জাতীয় সংসদের পেশাবখানায় গেছি; জাতিসংঘের কয়েকটা শাখা অফিসের পেশাবখানাতেও গেছি। সবখানেই দেখছি পেশাবের ঘটির উপর দুয়েকটা এক-দেড় ইঞ্চি কোকড়ানো বাল পইড়া আছে। তার মানে সংসদ কিংবা জাতিসংঘেও বাঙালি বাল নিয়া ঘোরে। কিন্তু তারপরেও বালেরে বাল কইতে শরমায় বাঙালি…
ক্যান?

০২
সকল প্রাপ্তবয়স্কের চ্যাটে যেই জিনিস গজায় সেইটার লাইগা একটার বেশি দুইটা শব্দ বানাইবার দরকার মনে করে নাই বাঙালিরা। এইটাই হয়; একনামে যে জিনিস সকলে চিনে সেইটার প্রতিশব্দ তৈয়ারি হয় না। বাংলায় ভাতের প্রতিশব্দ নাই। ক্ষিদা-জোয়ান- বুড়া- ধনি- গরিব কিংবা জন্ম- মরারও প্রতিশব্দ নাই; একইভাবে চোদারও কোনো প্রতিশব্দ বানাইবার দরকার মনে করে নাই পূর্ব প্রজন্মের মানুষ…

প্রতিটা ঘরেই চোদাচুদি হয়। অথচ বাংলায় কথাটা লিখলে খ্যাকখ্যাক কইরা উঠে মানুষ। সঙ্গম- যৌন মিলন কত কি শব্দের বোরখা দিয়া চোদাচুদি বোঝানোর চেষ্টা করা হয় সাহিত্যে পত্রিকায় কিংবা পুস্তকের পাতায়…
ভদ্রতা বজায় রাইখা একবার এক বয়স্ক শিক্ষার ক্লাসে তিন বাচ্চার এক বাপেরে যৌন মিলন কথাটা বুঝাইতে গিয়া বিচি খইসা পড়ার অবস্থা হইছিল আমার…
অথচ কতই না সোজা হইত যদি কইতে পারতাম চোদাচুদির আগে চোদনটুপি পইরা নিয়েন…

এই শব্দগুলা বুঝাইতে গিয়া ভদ্র লোকেরা অবশ্য এইগুলার ইংরেজি কয় এখন। নারী পুরুষের যৌনাঙ্গের পাঠ্যপুস্তকি নামগুলাও আমদানি বাংলা। পুস্তকের বাইরে মানুষ প্রকাশ্যে পেনিস-ভেজাইনা নিয়া কথা কয়; কিন্তু অতি পরিচিত সোনা-বোদা; কিংবা ধন-স্যাটা নিষিদ্ধ…
ডাক্তার কিংবা স্বাস্থ্যকর্মীরা হয় ইংরেজি না হয় আজিব বাংলায় এই শব্দগুলা কন লোকজনের লগে। ফলে কন্ডম বিতরণের এক বছর পরে দেখা যায় বাচ্চা পয়দা কমে নাই। কারণ লম্বা কন্ডমের মাথা কাইট্টা ব্যবহার করছে মানুষ। অথবা ঘুমন্ত সোনায় কন্ডম পইরা বৌর কাছে যাইতে যাইতে খুইলা পইড়া গেছে লুঙ্গির তলায়….
তাগোরে কেউ বাংলায় বুঝাইয়া কয় নাই- কন্ডম কিন্তু পেটলাগা আটকাইবার ওষুধ না; বরং মাল আটকাইবার জিনিস। অথবা ধন খাড়া হইবার পর এই টুপি পরিতে হয়…

বাংলা ভাষার পয়লা পুটকিটা মারছে বহিরাগত বামুনরা। ওরা সারা বাঙালিরে অসভ্য মুর্খ কইয়া পয়লা বানাইছে নমশূদ্র। তারপর তাগো বিচি হাতানো একদল পয়সাপাত্তিওয়ালা লোকজনরে প্রমোশন দিয়া বানাইছে কায়স্থ। আর এই কায়স্থগো মাধ্যমেই বিস্তার করছে সভ্যতার সংবিধান…
বামুনগো লেখা বাংলা ভাষার গ্রামার পড়লে ওইটারে বাংলা হিসাবে চিনতে কষ্ট হয়। হুমায়ূন আজাদ একবার হিসাব কইরা দেখাইছিলেন যে বাংলা ভাষায় সংস্কৃত শব্দ আছে মাত্র কয়েক ডজন; অথচ সেইগুলা লেখার লাইগা রীতিমতো একজোড়া বাড়তি বর্ণ আছে বাংলা ভাষায়…
আর তার থিকা বড়ো কথা; এককালে সাধুভাষা নামে একটা আবাল ভাষাও চালু কইরা দিছিল তারা; চলছিল বহু যুগ…

হায়াৎ মামুদ একবার কইছিলেন; সাধু ভাষা বাংলার আলাদা রূপ না; ওইটা আলাদা একটা ভাষা। কথা সত্য। সাধুভাষা একটা আলাদা ভাষা; যেইটা উচ্চবর্ণের উপনিবেশের ভাষা; এর বিপরীতের বাংলা ভাষারে অসাধু ভাষা না কইলেও বহুকাল এরে কাজগে পত্রে চণ্ডালি ভাষা কিন্তু বলা হইছে…

সেইযুগ কাইটা যাবার পর শ্বশুর ঠাকুর আর জামাই চৌধুরী মিল্লা চলতি ভাষা নামে আরেকখান ভাষা পয়দা করলেন। ক্রমে ক্রমে যেইটার নাম হইয়া পড়ল শুদ্ধভাষা; মানে চাষার ভাষাগুলা এইবার তালিকাভুক্ত হইল অশুদ্ধের খাতায়….
বাঙালির বাংলা শব্দ নিয়া মাইনসে হাসে। বাঙালির বাংলা উচ্চারণ নিয়া মাইনসে হাসে। আবার সেই শুদ্ধ ভাষা শিখতে হইলে বাঙালিরেই চোখমুখ বেকাইয়া উচ্চারণ শিখতে হয়…

এরই ফাপড়ে বাংলা ভাষায় বাংলা শব্দের ঢোকার রাস্তাটাই বন্ধ হইয়া পড়ল। জাতে উঠার নামে সংস্কৃত ছাড়াও ঢুকতে থাকল আরবি ফারসি তুর্কি আরো কত কী। আর এখন যেইখানে মুখ আটকায়; সেইখানে ঢুইকা পড়ে ইংরেজি শব্দ। এখন নতুন শব্দ তৈরি হওয়া তো দূরের কথা; বালের মতো পরিচিত পুরানা শব্দ কইতে গেলেও ডর লাগে ভদ্রসমাজ থাইকা না একঘরে হইয়া যাইতে হয়…

০৩
কবি পারভেজ চৌধুরী। কেউ কেউ তারে মিডিয়া মানুষ হিসাবেও চিনেন। কথা কইতে কইতে একদিন বলছিলেন- গণজাগরণ মঞ্চ বাংলাদেশের রাজনীতির ভাষা বদলায়া দিছে…
এর লগে আরেকখান কথা জুইড়া দিছিলেন যে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের রাজনীতি দুই পরের্ব ভাগ কইরা আলোচনা হইবে; এক গণজাগরণ মঞ্চের আগের পর্ব আর গণজাগরণ মঞ্চের পরের পর্ব…

বেশ আগে বলা কথাটা নিয়া অত ভাবিটাবি নাই। কিন্তু গণজাগরণ মঞ্চের পরে আরো দুইটা গণ আন্দোলন দেখলাম আমরা। গণজাগরণ মঞ্চের পরে চাকরি কোটা সংস্কার আন্দোলন; আন্দোলনকারীগো গড় বয়সও গণজাগরণিগো থাইকা আট-দশ বছর কম। তারপর সদ্য ঝিমানো কিশোরগো ন্যায় বিচার দাবির আন্দোলন; এই আন্দোলনকারীগো বয়স কোটাসংস্কারীগো থাইকাও আরো পাচ সাত বছর কম…
গণজাগরণ থাইকা ন্যায় বিচার আন্দোলন পর্যন্ত গত তিনটা গণ আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য গুতাগুতি করলে পরিষ্কারভাবে সকলেই বাইর করতে পারেন। সেই দিকে না যাই…

কিশোরগো আন্দোলনটারে মোটামুটি গুজব থিউরি দিয়া চাইপা ধরছে সরকার; এইটা নিয়া এখনো বিবিধ ত্যানা প্যাচাইতেছে বিভিন্ন জন। নতুন কইরা আর কোনো ত্যানা যোগ করার ইচ্ছা আমার নাই। তবে এই আন্দোলন থাইকা একটা সরাসরি লাভ হইছে বাংলা ভাষার। সেইটা হইল ভাষার মুক্তি…

আন্দোলনে মাইর খাইলেও বাংলায় বালেরে বাল কইবার সাহস দিয়া গেছে বাচ্চা পোলাপান…
জয়বাংলা

[ইহা সুমন চৌধুরী অণুপ্রাণিত টাইপকৃত রচনা। তথ্যসূত্র চাহিয়া লজ্জা দিবেন না]


মন্তব্য

ভিলেন এর ছবি

বামুনদের উপর রাগ করলে বালও বাদ দিতে হবে। বাল একেবারে খাঁটি সংস্কৃত। রামায়নে আছে উড়ুক্কু পবন দেবের বীর্য এক বেচারী সুন্দরীর চুল আর ঘাড়ে গিয়ে পড়ে। চুল অর্থাৎ বাল থেকে তারপর বালির জন্ম হয়, গ্রীবা থেকে জন্ম নেয় সুগ্রীব।

বামুনগন্ধী বাল বলা ছাড়েন। ঠাকুর-চৌধুরীমুক্ত খাঁটি বাংলায় একটা কিছু বলেন।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

বিলেন ভাইয়া কি চৌধুরী নাকি বামুন?

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

মাহবুব লীলেন এর ছবি

সংস্কৃত বাল মাথার উপরে থাকে বইলাই তো জানতাম। আমি তো তলারটা নিয়া কথা কই

০২
ঠাকুর-চৌধুরী এখন শুধুই একখান লাস্ট নেম; নট এ খান্দান। দেখেন না আমাগো কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা রাশেদ খানের বাপের লাস্ট নেম বিশ্বাস?
০৩
ভাষার মইদ্যে খাটি বইলা কিছু নাই...

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

মোটামুটি এই বিষয়েই এইখানকার কয়েকজন বন্ধু-বান্ধবের সাথে আলোচনা হইতেছিল দুইদিন আগে। আমরা যত স্বচ্ছন্দে ইংরেজিদে তথাকথিত খারাপ কথা বলতে, লিখতে বা পড়তে পারি বাংলায় এর অর্ধেক কেউ কইলেও সেইটারে আমরা অস্পৃশ্য বানায়ে দেই। অথচ এমন না যে এইসব ভাষা বাংলাদেশের মানুষ ব্যবহার করে না।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

মাহবুব লীলেন এর ছবি

হ। রাজভাষায় ফাক কইলে তা সুমধুর শোনায়

সুমন চৌধুরী এর ছবি

গুরু গুরু

একলোক ডাক্তারের কাছে গেছে কোন একটা সমস্যা নিয়া। ডাক্তার তারে জিগায়, "ইন্টারকোর্সের সময় টেস্টিকল্সে ব্যাথা হয়?" রোগী তো আর বুঝে না। সে অসংস্কৃত মানুষ। ডাক্তার এইবার বাংলায় কয়, "সঙ্গমের সময় অণ্ডকোষে ব্যাথা হয়?" এইবার তো সে আরো বুঝে না। কিছু একটা আন্দাজ কইরা কয়, "না কালকেও তো ডিম খাইলাম"

শেষে রাগের চোটে ডাক্তার কয়,"আরে চুদার সময় বিচিতে ব্যাথা হয়?"
এইবার রোগী কয়,"ছি: "

মাহবুব লীলেন এর ছবি

ছি ছি ছি। ভদ্রলোক এমুন কথা কয় কেমনে?

সুমন চৌধুরী এর ছবি

অথচ চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের ঐকথা জানার সত্যিই দরকার ছিল।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

ডাক্তার নিয়া আরো সমস্যা আছে। এমনকি ডায়রিয়া নামে যে মহামারি টাইপের রোগ; ওইটারে বাংলাদেশে কোনো জায়গায় ডায়রিয়া কয় না। বিবিধ বৈশিষ্ট্য মিলায়া একবার দেখছিলাম এর ৪০টার বেশি নাম আছে; কিন্তু ডায়রিয়া নাই।ফলে এনজিওকর্মীরা যখন গিয়া জিগায়- তিন আঙুলের এক চিমটি লবণ; এক মুঠো গুড় আর আধা সের পানি মিশাইলে কী হয়? লোকজন উত্তর দেয়- ডায়রিয়া হয় স্যার

সুমন চৌধুরী এর ছবি
হিমু এর ছবি

লোকজন এনজিওকর্মীদের স্যার বলে কেন? আর এনজিওকর্মীরাই বা সেটা বরদাশত করে কেন?

মাহবুব লীলেন এর ছবি

গ্রামের লোকজন শার্ট ইন কইরা পরা সাহেবগো স্যার ডাকে। আমি বহুত বছর এনজিওতে কাম করছি; কিন্তু শার্ট ইন কইরা পরি না বইলা কেউ আমারে স্যার ডাকে নাই

হিমু এর ছবি

গ্রামের লোকের গু নরম হলে ডায়রিয়া এনজিওতে দৌড়াদৌড়ি পড়ে যায়, গ্রামের লোকের শিশ্ন নরম হলে কন্ডম এনজিওতে দৌড়াদৌড়ি পড়ে যায়, কিন্তু গ্রামের লোকের আদব নরম হলে সবাই খুশি থাকে। বাঙালের মগজের ঘটিতে উপনিবেশের ফেলে যাওয়া এই কোঁকড়ানো স্যারের বদলে জনাব-মশায়-ভাই-কাগু-একটাকিছু চালু না হলে ভাষার মুক্তি বালেই আটকে থাকবে।

"এনজিও"রও একটা বলে-আরাম বাংলা দরকার। চোদনটুপির মতো।

হাসিব এর ছবি

পুটুনদা কি শার্ট ইন করেন?

জয়ন্ত এর ছবি

আমার মনে হয়েছে মেলামেশা শব্দটি ব্যবহার করলে অশ্লীললতার দায়ও নিতে হয়না আবার রোগীকে বুঝানো ও যায়।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

যায় না মনে হয় সবসময়। অবশেষে একটু কাছে গিয়ে ফিসফিস করে আসল কথাটা বলতে হয়।
আর মেলামেশা শব্দটার ঝামেলা অনেক। যত লোকের সাথে আমাদের মেলামেশা তত লোকের সাথে যৌনসম্পর্ক থাকে না।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

খাইছে মেলামেশারে যদি চোদনের প্রতিশব্দ হিসাবে নিতে হয় তাইলে সারা জীবন যে মা বাপেরা কয় অমুক তমুকের লগে মেলামেশা করবি না; সেইগুলার অর্থ তবে কী বুঝতে হবে?

সুমন চৌধুরী এর ছবি

বাঙ্গালীর মনে ময়লা

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

এক ডাক্তার শুনছিলাম আপনার ভাষায় মেলামেশা বোঝানোর জন্য 'যাতায়াত' শব্দটা ব্যবহার করছিল। প্রশ্নটা অনেকটা এমন ছিল, 'আপনার স্ত্রীর সাথে আপনার নিয়মিত যাতায়াত হয়'? শেষ পর্যন্ত বোঝানোর জন্য নাকি ডাক্তার সাহেবকে অনেক অঙ্গভঙ্গি আর ইঙ্গিতের সাহায্য নিতে হইছিল।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

হিমু এর ছবি

"মেলামেশা" শুধু বললেই চলবে না, সঙ্গে ডক্টর ইভলের মতো কোটমার্ক দিতে হবে।

মানুষকে যদি আধুনিক চিকিৎসা দেওয়া যায়, আধুনিক শব্দও দেওয়া যাবে। যে রোগী চোদনের বাইরে কিছু বোঝে না, সে চিকিৎসা নিতে এসে সঙ্গম/মিলন এসব শব্দ শিখে নিতে পারে। খামোকা ঘোমটা দিতে গিয়ে মেলামেশার মতো নিরীহ শব্দে বাড়তি ব্যঞ্জনা যোগ করা নিরর্থক এবং সমাজে অযৌন মেলামেশার বিস্তারের জন্য হানিকর। মেলামেশা শব্দটাকে চোদনের বিকল্প হিসেবে চালাতে থাকলে পরস্পরকে হাসিমুখে শুভেচ্ছা জানানো নারী আর পুরুষকে অশিক্ষিত লোক যৌনসঙ্গী ঠাউরে বসতে পারে (এবং বসেও)।

হাসিব এর ছবি

সবই বুঝলাম। ক্ষারাপ বাঙালী নিজে যা বলতে চায় সেটা সে বলতে পারে বলে মনে হয়। সে যেইটা বলে, যেইটা বলে না - সেইটা সে নিজে ঠিক করুক।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

হ। বলা শুরু করছে তো

সোহেল ইমাম এর ছবি

গুরু গুরু

আন্দোলনে মাইর খাইলেও বাংলায় বালেরে বাল কইবার সাহস দিয়া গেছে বাচ্চা পোলাপান…

---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

জাতে ওঠার আর পথ রাখলেন না! জাত জিনিসটা কাজে দেয়, বিশেষত যখন অন্য কোন যোগ্যতায় না কুলায় তখন জাতই কেবল টেনে তুলতে পারে! আপনে সেই সামান্য আশাও "সঙ্গম" করে দিলেন! মন খারাপ

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

মাহবুব লীলেন এর ছবি

কী আর করা। প্রাচীন তামিলে সঙ্গম সাহিত্য নামে একটা যুগের বিশাল সাহিত্য ভাণ্ডার আছে। তবে সেইগুলা কিন্তু চোদনসাহিত্য নহে। বরং 'মেলা সাহিত্য' মানে বহু মানুষের মিলিত হওয়ারে তারা কইত সঙ্গম। সেই মেলায়/সঙ্গমে সাহিত্য প্রতিযোগিতা হইত; লেখকরা সারা বছর লেইখা মেলায় আইনা প্রকাশ করত (এক অর্থে আমাগো বইমেলা কেন্দ্রিক সাহিত্যগুলারেও কিন্তু সঙ্গম সাহিত্য বলা যাইতে পারে)। তো সঙ্গমরে যদি খালি কাপড়ের তলায় ঢুকায়া রাখি তাইলে নদী সঙ্গমরেও তো ইংরেজিতে রিভার সেক্স অনুবাদ করতে হবে

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

১.
ভাষা নিয়ে শরমাশরমির ব্যাপার দুনিয়ার সব ভাষাভাষীদের মধ্যে আছে। মানুষ যেদিন থেকে ভদ্রসভ্য হবার, বয়োজ্যেষ্ঠ-বয়োকনিষ্ঠ বিভাজন করার, আনুষ্ঠানিকতা-অনানুষ্ঠানিকতা ইত্যাদি ব্যাপার তৈরি করেছে সেদিন থেকে মানুষের ভাষায় এসব শব্দকে একটু আড়াল করতে শুরু করেছে। তারও আগে মানুষ নিজের শরীরের কিছু কিছু অংশ ঢেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে যে, ঐ অংশগুলো একটু ‘বিশেষ’। সুতরাং ঐ বিশেষ অংশগুলো সম্পর্কিত বিষয়ে ভাষায় আড়াল আসার ব্যাপারটি স্বাভাবিক। বিদ্যমান সমাজব্যবস্থায় তার প্রয়োজনও আছে।

২.
যৌনাঙ্গ ও তার পরিপার্শ্ব বিষয়ক, এবং যৌনতা সম্পর্কিত সকল বাংলা শব্দের একাধিক প্রতিশব্দ আছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের জানার সীমা অতদূর নয়। তার দরকারও পড়ে না। পল্টনের মোড়ের রিকশাচালককে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’-এ যেতে অনুরোধ করলে তিনি গন্তব্যটা না-ই বুঝতে পারেন। কিন্তু তাকে যদি বলা হয়, ঢাকা ‘ইনভার্সিটি’ যাইবেন? তখন তিনি আর দ্বিমত করেন না। শ্রোতার বোধগম্য ভাষায় কথা বলতে না পারলে সকল ভালো ভালো শব্দ বাংলাদেশের বামপন্থীদের বক্তৃতার মতো সাধারণ্যে অবোধ্য থেকে যাবে।

সংস্কৃত শব্দ আর তার ব্যাকরণ হচ্ছে বাংলা ভাষার ওপর চেপে থাকা সিন্দাবাদের দৈত্য। তথাকথিত সাধু আর চলিত ভাষার মিশ্রনকে বলে ‘গুরুচণ্ডালী’ দোষ। লক্ষণীয়, এখানে গুরুর বিপরীত শব্দ শিষ্য নয়, চণ্ডাল। যারা বাংলার মানুষের মুখের ভাষাকে চণ্ডালের ভাষা ভাবে সেইসব স্বঘোষিত গুরুদের সম্মার্জনী দিয়ে বিতাড়িত করা দরকার।

এক কালে ‘দাসমনোবৃত্তি’ শব্দটাকে আমরা কয়েকজন একটা বিশেষ অর্থে ব্যবহার করতাম। সেটা হচ্ছে, দাসমনোবৃত্তিসম্পন্ন মানুষ = যার কাছে তার সামনের মানুষটি হয় তার দাস অথবা সে নিজেই তার দাস। একটা জনগোষ্ঠী আছে যারা এই বিশেষ অর্থের দাসমনোবৃত্তিসম্পন্নদের কাছাকাছি। তাদের সামনে থাকা সবাই তার প্রভু। তারা আপ্রাণ চেষ্টা প্রভুদের ভাষা, পোশাক, সংস্কৃতি, রীতি নকল করার। সেই জনগোষ্ঠীর মধ্যে যাদের যৌনগন্ধী শব্দ উচ্চারণে বাধো বাধো ঠেকে তারা প্রভুর ভাষার শরণ নেবে – এমনটাই তো হবার কথা।

৩.
‘গণজাগরণ মঞ্চ’ আন্দোলন বাংলাদেশের মানুষের ইতিহাসে একটা বিরাট ঘটনা। এই ঘটনা দেশের মানুষের মধ্যে বেশ কয়েকটা মেরুকরণ স্পষ্ট করে দিয়েছে।

‘নিরাপদ সড়ক আন্দোলন’ ভাষার মুক্তি দিয়েছে এমনটা মনে করি না। তবে এই আন্দোলনও একটা বিরাট ঘটনা। এই আন্দোলন ক্ষমতাকাঠামো আর কর্তৃত্বকাঠামোর কিছু অংশের অপদার্থতা প্রমাণ করে দিয়েছে। তাছাড়া এখন ছোটরা ভাবে, বড়দের সাহায্য ছাড়াই তারা বড় ঘটনা ঘটাতে সক্ষম।

সংযোজনঃ
একটা বাক্য বা বাক্যস্থিত কোন শব্দ বা পদের প্রয়োগ অশুদ্ধ হতে পারে, বানান ভুল হতে পারে – কিন্তু ভাষা অশুদ্ধ হতে পারে না। ভাষা সাধু-অসাধু হতে পারে না। দাপ্তরিক কাজ করার জন্য, শিক্ষা দেবার জন্য একটা ভাষার একটা বিশেষ রূপকে স্ট্যান্ডার্ড ধরে আগানো যেতে পারে। ভাষার সেই রূপটিকে যদি ‘প্রমিত ভাষা’ বলা হয় তাতে জোর আপত্তি করার কিছু দেখি না।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

হিমু এর ছবি

শ্রোতার বোধগম্য ভাষায় কথা বলতে না পারলে সকল ভালো ভালো শব্দ বাংলাদেশের বামপন্থীদের বক্তৃতার মতো সাধারণ্যে অবোধ্য থেকে যাবে।

বাংলা ভাষা নিয়ে আলাপে বাবুসুলভ "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়" আর জবাবে রিকশাওলার "ইনবারছিটি" টিটকিরিটা প্রায়ই চলে আসে। গোড়ায় এটা এক্কাগাড়ির কুট্টি কোচোয়ানের জবাব ছিলো, এক্কাগাড়ির যুগ পার হয়ে যাওয়ায় রিকশাওলা চলে এসেছে। এই চুটকির একটা অন্ধকার দিক আছে। এটা এমন এক আমলের, যখন বাংলা ভাষাকে পূর্ববঙ্গেই কোণঠাসা করার একটা চেষ্টা বহাল ছিলো, ইংরেজিশিক্ষিত এলিট এবং ভারতভাগের সুফলভোগী উর্দুপ্রেমী দু'তরফ থেকেই। এই চুটকির স্বতসিদ্ধ হচ্ছে, "আমজনতা" "মেকি বাংলা" বোঝে না। বাংলা ভাষা তো শুধু অশিক্ষিতের ভাষা নয়। যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বোঝে না, তার মুখের কথাকে ভাষার কষ্টিপাথর বানাতে গেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠারই তো কোনো দরকার পড়ে না। যারা এই চুটকিকে জনপ্রিয় করেছেন, তাঁরা আমজনতাবান্ধব ভাষার গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে ভাষার স্বল্পজনবোধ্য প্রয়োগকে (যেটা জ্ঞানচর্চার সব শাখার ক্ষেত্রে অবশ্যম্ভাবী) অস্বীকারের একটা ক্ষেত্রও তৈরি করেছেন। বাংলা ভাষাটাকে কোচোয়ান-রিকশাওলার সাথে যোগাযোগের চেয়ে বেশি কিছু হিসেবে দেখতে যে একটা মহল প্রজন্মপরম্পরায় নারাজ, সেটা চুটকির এক্কাওলার রিকশাওলায় বিবর্তনেও স্পষ্ট।

ছোটো বাচ্চা শালদুধ ছাড়া কিছু খায় না, কিন্তু বড়দের তরফ থেকে চেষ্টা থাকে ক্রমশ তাকে ভাত-মাছ ধরানো, ভাত-মাছকে গুলে শালদুধ বানানো নয়। ভাষার ব্যাপারটাও এমনই নয় কি?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

যে ক্লিশে গল্পটা আমি উল্লেখ করেছি সেটার নির্মাণের পেছনে বাংলা ভাষাকে কোনঠাসা করার বা অকার্যকর দেখানোর উদ্দেশ্য ছিল কিনা সেটা নিশ্চিত নই, তবে অনেকে এই উদ্দেশ্যে গল্পটা ব্যবহার করে থাকতে পারে সেটা স্বীকার করি। আমি গল্পটাকে ব্যবহার করেছি শ্রোতার বোধগম্যতার ব্যাপারে বক্তার দৃষ্টি রাখার প্রসঙ্গে — এটা শুধু বাংলা কেন, যে কোন ভাষার ক্ষেত্রে সত্য।

একটা ভাষার বিভিন্ন রূপ থাকে — সাধারণ্যে বোধগম্য, প্রমিত রূপ (এর ব্যাখ্যা উপরে দিয়েছি), পণ্ডিতদের জন্য, খিস্তির জন্য ইত্যাদি। ইংলিশ ভাষাটার এমন রূপ যদি কেউ গুনতে যান (ক্রিওলগুলোসহ) তাহলে তিনি গুনে কুলিয়ে উঠতে পারবেন না। একটা জার্নালে আমি যে ভাষায় লিখবো বন্ধুদের আড্ডায় নিশ্চয়ই সে ভাষায় কথা বলবো না। ইত্তেফাকের সম্পাদকীয়র ভাষা আর তাজাখবরডটকমের শিরোনামের ভাষা এক না। ভাষার এই রূপভেদ তার সৌন্দর্য, মাধুর্যকে বাড়ায়, তাকে ব্যবহারবান্ধব করে তোলে।

বাংলা ভাষাকে অবজ্ঞার চোখে দেখানোর বা অধিকাংশ কর্মে অকার্যকর দেখানোর চেষ্টাটা কিয়দংশ অজ্ঞতাপ্রসূত আর অধিকাংশ উদ্দেশ্যমূলক। বাংলাদেশে আইন বিভাগ ও চিকিৎসা বিভাগের ভাষা বাংলা না করার পেছনে এমন কিছু উদ্দেশ্যমূলক প্রচেষ্টা লক্ষ করা যায়। বিদ্যমান আইনের ভাষ্যগুলো এমনভাবে বাংলা করা হয় যে তার অর্থ বুঝতে স্নাতকপাশ বাঙালীর ঘাম ছুটে যায়। এই অচলায়তন ভাঙার জন্য আইন প্রনয়ণ করা ও তার প্রয়োগের জন্য কঠোর হওয়া যথেষ্ট নয়।

দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পরীক্ষায় বাংলা বা ইংলিশ যে কোন একটি ভাষায় উত্তর লেখার সুযোগ আছে, কিন্তু বাংলায় বইয়ের অভাবে শিক্ষার্থীরা (বিশেষত বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা) ইংলিশে লিখতে বাধ্য হন। এই অবস্থার যখন পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব হবে তখন অনেকগুলো অচলায়তন এমনিতেই ভেঙে যাবে, পূর্বোক্ত ক্লিশে গল্পটিও আর হালে পানি পাবে না।

দুনিয়ার সব ভাষাতেই ধার করা শব্দ আছে। একটা ভাষায় বিদ্যমান একটি শব্দের বিদেশি প্রতিশব্দকেও গ্রহন করা অস্বাভাবিক কিছু নয়। ‘ইউনিভার্সিটি’ বা ‘ভার্সিটি’ শব্দটি যদি সাধারণ্যে গ্রহনযোগ্যতা পেয়ে থাকে তাহলে তাকে ‘বিশ্ববিদ্যালয়’ শব্দটির প্রতিশব্দ হিসাবে গ্রহন করতে বাধা কোথায়?


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

হিমু এর ছবি

দুনিয়ার সব ভাষাতেই ধার করা শব্দ আছে। একটা ভাষায় বিদ্যমান একটি শব্দের বিদেশি প্রতিশব্দকেও গ্রহন করা অস্বাভাবিক কিছু নয়। ‘ইউনিভার্সিটি’ বা ‘ভার্সিটি’ শব্দটি যদি সাধারণ্যে গ্রহনযোগ্যতা পেয়ে থাকে তাহলে তাকে ‘বিশ্ববিদ্যালয়’ শব্দটির প্রতিশব্দ হিসাবে গ্রহন করতে বাধা কোথায়?

এ চুটকির সমস্যাটা ভার্সিটি বা ইউনিভার্সিটিকে গ্রহণ করায় নয়, বরং "বিশ্ববিদ্যালয়"কে সাধারণের কাছে অগ্রহণযোগ্য বা অপ্রয়োজনীয় হিসেবে জাহির করায়।

আরেকটা ব্যাপার লক্ষণীয়, এ চুটকির কোনো সংস্করণ কিন্তু আমাদের সংসদ ভবন এলাকা, যেটাকে আমরা সংক্ষেপে সংসদ বলি, নিয়ে চালু নেই। রিকশাওলা সিয়েঞ্জিওলা কেউ "সেকেন্ড ক্যাপিটাল" বা "পার্লামেন্ট" বলে যাত্রীকে টিটকিরি মারে না, কারণ "সংসদ" শব্দটা যখন চালু হয় তখন রাজনৈতিক আবহ ও গণমাধ্যমের ভাষার ঝোঁক পাল্টে গেছে।

পৃথিবীর সব ভাষাতেই ধার করা শব্দ আছে, কিন্তু ক্ষুদ্রঋণ শেষ পর্যন্ত খাতকের চাল খুলে নিয়ে যাওয়ার দিকে চলে যায়।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

প্রথমত, চুটকিটির রচনা ও ব্যবহারের উদ্দেশ্যের বিষয়টি আমাদের আলোচনায় আগেই স্পষ্ট হয়ে গেছে। সুতরাং এটা নিয়ে আর কথা বাড়ানোর দরকার নেই, বোধ করি। আমার ঠিক এর আগের মন্তব্যে (তারিখ: মঙ্গল, ২৮/০৮/২০১৮ - ৩:০৩অপরাহ্ন) উদাহরণ হিসাবে ভার্সিটি/ইউনিভার্সিটি না বলে ফোন/মোবাইল/কম্পিউটার ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করলে সম্ভবত বিভ্রান্তি তৈরি হতো না। দুঃখিত।

দ্বিতীয়ত, ধার করা শব্দের ক্ষেত্রে আমি যেগুলো সাধারণ্যে গ্রহনযোগ্যতা পেয়ে গেছে সেগুলোকে বিদ্যমান বা নবনির্মিত বাংলা শব্দের প্রতিশব্দ হিসাবে গ্রহন করার কথা বলেছি। নিজের পুঁজিপাটা ছাড়া কেবল ধার করে চলতে গেলে মহাজন খাতকের ঘরের চাল কেন পরনের কাছাসহ খুলে নিয়ে যেতে পারে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

হিমু এর ছবি

চুটকিটা নিয়ে বেশি পেঁচিয়ে ফেললাম, দুঃখিত। আরেকটা লেখার অংশ হিসেবে এটা নিয়ে ভাবছিলাম, এখানে আলোচনায় প্রসঙ্গটা এক চিমটি পেয়ে ঝেড়ে দিলাম।

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

যৌনাঙ্গ ও তার পরিপার্শ্ব বিষয়ক, এবং যৌনতা সম্পর্কিত সকল বাংলা শব্দের একাধিক প্রতিশব্দ আছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের জানার সীমা অতদূর নয়।

ভাষার বিশদ না জানলেও সাধারন মানুষও এসব অঙ্গ কিংবা ক্রিয়াকর্মের নানা প্রতিশব্দ স্থান কাল পাত্র ভেদে ব্যবহার করে থাকে। শিক্ষা দীক্ষা কিংবা সামাজিক অবস্থানের নিরিখে অতি সাধারন মানুষজনও স্বাভাবিক ভদ্র পরিবেশে যৌনাঙ্গের একটি ভদ্রস্থ প্রতিশব্দই ব্যবহার করে থাকে, সেটা কোথাও সোনা, কোথাও বাচ্চা, কোথাও বাবু ইত্যাদি। যৌনকর্মের ব্যাপারেও তাই। আবার সেই মানুষটিই যখন অস্বাভাবিক উপস্থাপনের প্রয়োজন বোধ করে, তখন ভিন্নরকম শব্দরাজি ব্যবহার করতে দ্বিধা বোধ করে না।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আলোচনায় পাণ্ডবদা প্রবেশ করার পর বিষয়টা যেই উচ্চতায় গেছে; সেইটা দেইখা বহুত ভাইবা আবিষ্কার করলাম যে ওই উচ্চতায় নাগাল পাওয়া আমার কম্ম নহে

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আলোচনা করলো বারো জনে আর দোষ পড়লো আমার ঘাড়ে! এইডা কিমুন বিচার!


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

ভাষার মুক্তি ঘটেছে বলে উল্লসিত হবার কোন কারন আছে বলে মনে হয় না, বরং বলা চলে মুখের অর্গল খুলে গিয়েছে। সভ্যতার এই এক দায়- জননাঙ্গ ঢেকে রাখতে হয়, জননক্রীড়া সঙ্গোপনে করতে হয়, এমনকি এ সংক্রান্ত শব্দরাজির প্রকাশ ঘটাতে হয় রয়েসয়ে। "চ্যাটের বাল" কিংবা "চোদার টাইম" জাতীয় শব্দরাজি স্কুলের কিশোর কিশোরীরা সর্বসমক্ষে ব্যাবহার করলে ভাষার কী মঙ্গল সাধিত হবে তা বোধগম্য নয়। তবে একবার বলার অভ্যাস রপ্ত করে ফেললে রাগের মাথায় মেয়ে তার বাবাকেও বলে ফেলতে পারে তুমি আমার সাউয়ার বাল, কিংবা ছেলে তার মা'কে বলে ফেলতে পারে তোমাকে আমার চোদার টাইম নাই। সেই ভয়াবহ সময়ের আগমন কোনভাবেই কাম্য নয়।

সুশীল বাংলায় যৌনকেশের কোন প্রমিত প্রতিশব্দ নেই। "বাল" শব্দটি কেন, কবে থেকে, বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত হয় তাও গবেষণার দাবী রাখে। এটি সংস্কৃতজাত তথা ইন্দো-ইউরোপিয়ান শব্দ নয়, দেশীয় শব্দও নয়। এর মূল উৎস কি ফারসি? যাদের মাধ্যমে বাল শব্দটি আমাদের কাছে এসেছে বলে অনুমিত, সেই হিন্দি উর্দুভাষীদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা বেশ করুন, তাদের সবই বাল- শির কা বাল, গালো কা বাল, হাতো কা, পাও কা বাল, আবার ল্যাওড়া কাও সেই বালই। তুলনায় দৈহিক কেশের জন্য আমাদের দুটি শ্লীল (চুল ও পশম) এবং একটি অশ্লীল(বাল) মোট তিনটি শব্দ আছে, মাথার জন্য চুল, বগলের, বুকের, হাতের বা পায়ের জন্য পশম, আর যৌনকেশের জন্য সাধারন্যে কিছুই না, অসাধারন্যে বাল। চোদা শব্দটি অবশ্য দেশীয়, মূলগত ভাবে সাঁওতালি। তবে সেখানে এর অর্থ অশ্লীল, যৌনকর্ম নয়। সংস্কৃতেও চোদ শব্দটি আছে, তবে তার বেশ কয়েকটি অর্থের কোনটিই যৌনকর্মের সমার্থক নয়।

বস্তুতপক্ষে আমাদের দেশে (এবং অন্যান্য দেশেও) মাটির কাছাকাছি যাদের অবস্থান, তুলনামূলকভাবে তারাই ইতর তথা অশ্লীল তথা খিস্তী তথা স্ল্যাং শব্দের ব্যবহার বেশী করে থাকেন। নারী পুরুষ নির্বিশেষে প্রধানত রাগ বা বিরক্তির প্রকাশ হিসেবে সাধারন মানুষ খুবই সতস্ফুর্তভাবে যৌনতা সম্পর্কিত স্ল্যাং ব্যবহার করে থাকেন, স্বাভাবিক অবস্থায় হয়ত সেসব শব্দ ব্যবহার করেন না। একটি বাস্তব উদাহরন দেই- আমাদের গ্রাম সম্মন্ধীয় চাচা হাটে যাবেন, কিন্তু ঘর থেকে বের হতে দেরী করছেন। কেন দেরী করছেন, সে প্রশ্নের উত্তরে আমাকে জানালেন, তোমার চাচী এখনও জিনিসপত্র গোছগাছ করে দিতে পারে নাই। একই প্রশ্ন পাড়ার বন্ধুস্থানীয় অন্য একজন করলে খুবই বিরক্ত চাচা তাঁকে বললেন- আমাগো তার সাউয়ায় অখনও ত্যাল নেওয়া হয় নাই। যতদূর মনে হয় একই প্রবনতা পৃথিবীর অন্যান্য ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর মধ্যেও আছে। কিন্তু শিক্ষিত ও সভ্য মানুষকে জ্ঞানও যেমন অর্জন করতে হয়, ভাষার ব্যবহারেও তেমনই হতে হয় সংযত। আমাদের গদ্য সাহিত্যের শুরুর দিকে স্ল্যাং শব্দের কিছু ব্যবহার ছিল বটে, তবে বিদ্যাসাগর, বঙ্কিম হয়ে রবীন্দ্রনাথে এসে তা যথেষ্টই পরিমিত হয়েছে। তবে পরবর্তীতে অর্গল খানিকটা মুক্তও হয়েছে নিঃসন্দেহে। স্ত্রী জননাঙ্গ বুঝাতে বিদ্যাসাগর ব্যাবহার করেছিলেন "জন্মস্থানমধ্যবর্তী প্রস্রবণগিরি", এখন কিন্তু এ ক্ষেত্রে যোনীর অকৃপণ ব্যবহার বজায় রয়েছে।

এক লহমা এর ছবি

সহমত।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

মন মাঝি এর ছবি

০১
জীবনে ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তি বা ভিন্ন ভিন্ন ধরণের ব্যক্তির সাথে আমাদের ভিন্ন ভিন্ন সম্পর্ক। এই ভিন্ন ভিন্ন সম্পর্কের ভিন্ন ভিন্ন চরিত্র বা ব্যঞ্জণা আছে। আর এই সম্পর্কভেদে সেই সম্পর্কের ব্যঞ্জণাভেদ জীবনের এক অপূর্ব সৌন্দর্য্য! এটা আমার ও আমাদের জীবনকে বৈচিত্র্যময় করে, আনন্দময় করে, সমৃদ্ধ করে। কোনো হঠকারী ভাষিক রোবোটীকরণের নামেই আমি এই অমূল্য সম্পদ স্যাক্রিফাইস করতে রাজি নই। থ্যাঙ্ক ইউ ভেরি মাচ!

০২
বাবা-মায়ের সাথে আমাদের সম্পর্ক একরকম, বুজম ইয়ার-দোস্তদের সাত্থে আরেকরকম, সন্তানের সাথে অন্যরকম। কলিগ বা অচেনা মানুষের সাথে আরেকরকম। একজন প্রাপ্তবয়ষ্ক মানুষ আর একটা শিশুর সাথেও আমরা ভিন্ন ভিন্ন ভাবে রিলেইট করি। এই সম্পর্কের ধরণভেদে এদের সাথে আমাদের আচরণ এবং ভাষার ব্যবহারও অনেকখানি বদলে যায়। এদের প্রত্যেককে আমরা ভিন্ন ভিন্ন ভাবে আমাদের হৃদয়ে অনুভব করি, উপলব্ধি করি, উপভোগ করি। তারই ছাপ পড়ে আমাদের ভাষাতে। প্রশ্ন হলো - জীবনে মানবিক সম্পর্কের এই বিশাল বৈচিত্র্যকে, এই ক্যালাইডোস্কোপিক সৌন্দর্য্যের উদযাপনকে বামুন-বিদ্বেষের নামে, অন্ত্যজ-পূজার নামে, "শ্রেণীচ্যুতি"-র নামে, প্রোলেতারীয় একনায়কতন্ত্রের নামে বা বাঙালিপনার কোনো বিশেষ ইন্টারপ্রিটেশন বা সংজ্ঞার নামে আগপাস্তলা "চুদে" দিয়ে এক লাথিতে নর্দমায় পাঠিয়ে দিতে হবে, নাকি পশ্চাতবর্তনের মাধ্যমে সভ্যতাপূর্ব এককোষী এ্যামিবা-যুগে ফিরে যেতে হবে?

যাজ্ঞে, আমি এই ভাষা-সম্পর্ক-পরিবেশ-কনটেক্সট ইত্যাদির বৈচিত্র্যকে উদযাপন করাটা সভ্যতার অংশ বলে গণ্য করি - যা কাম্য এবং আরাধ্য। একে শ্রেণীবৈষম্য, জাত-বর্ণ-বংশ-কৌলিন্য-পদমর্যাদাবাজি বা তজ্জনিত উচ্চম্মন্যতা, চৌধুরিপনা বা ঔপনিবেশিকতা দিয়ে সবসময় ব্যাখ্যা করতে যাওয়াটা শুধু ভুলই নয়, দুরমুজ দিয়ে পিটিয়ে বাতাসের জ্যুস বের করার মতো মনে হয় আমার কাছে। আর হ্যাঁ, সভ্যতা যদি উঁচু জাত বা তথাকথিত "বামুন-কায়েত"-দেরই হয় শুধু, এবং বামুন-কায়েতদের সৃষ্টি বা চর্চা বিধায় তা হয় শুধু খারাপ এবং বর্জনীয়, তাহলে দুনিয়ার সমস্ত জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চাও তো তাহলে খারাপ এবং বর্জনীয় হয়ে যায়, কেননা যুগ-যুগ ধরে পৃথিবী জুড়ে উঁচুশ্রেণী তথা বামুন-কায়েতরাই তো জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা ও সৃষ্টি করে এসেছে। অন্ত্যজরা নয়। বামুন-কায়েত-বাবু-চৌধুরী বিরোধিতার খাতিরে তাহলে কি এখন থেকে আমরা অশিক্ষা আর অজ্ঞানতারই চর্চা করবো? আমার তাই এই বামুন-কায়েত-চৌধুরী বিদ্বেষকে মাঝেমাঝে এবং ক্ষেত্রবিশেষে একধরণের রিভার্স-রেইসিজম মনে হয়, যার সাথে কখনো-সখনো অবস্কিউরান্টিজমও মিশে যায়। বছর দুয়েক আগে এই অভিনব প্রপঞ্চের কারনেই আমার অতিপ্রিয় কিন্তু গ্রামীণ, অসচ্ছল এবং অভিমানী এক বড়ভাইর সাথে সম্পর্কচ্ছেদ হয়ে যায়। তার সাথে আর দেখা হয়নি - গতমাসে তিনি মারা গেছেন। ভীষণ মন খারাপ হয় আছে। আমার এই বিশাল কমেন্টটা শুধু এই পোস্টটাকে কেন্দ্র করে নয়, তাকে এবং তাঁর সাথে শেষ ঝগড়াটির কথা স্মরণ করেও।

****************************************

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

কেননা যুগ-যুগ ধরে পৃথিবী জুড়ে উঁচুশ্রেণী তথা বামুন-কায়েতরাই তো জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা ও সৃষ্টি করে এসেছে। অন্ত্যজরা নয়।

- এই অংশটুকু স্যুইপিং কমেন্ট হয়ে গেলো না?


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মন মাঝি এর ছবি

বিরল ব্যতিক্রম তো থাকতেই পারে, কিন্তু এটাই ওভারহোয়েল্মিং বাস্তবতা বলে মনে করি।

****************************************

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ঠিক আছে, আপনার অবস্থান বোঝা গেলো। এখন দয়া করে একটু ব্যাখ্যা করুন উঁচু শ্রেণী বা বামুন-কায়েত বলতে আপনি কাদের বোঝাচ্ছেন আর অন্ত্যজ বলতেই বা কাদের বোঝাচ্ছেন। বিষয়টা তাহলে পাঠকদের কাছে পরিষ্কার হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মন মাঝি এর ছবি

জো হুকুম, মিলর্ড!

যে 'অবস্থান' এবং শব্দগুলি এই লেখার কন্টেক্সটে আমার কাছে একেবারে জলবৎতরলং-বোধ্য মনে হয়েছিল লেখার সময়, সেগুলি নিয়েই আপনি এত জেরবার হচ্ছেন, 'বুঝতে' গিয়ে এমন ধাপে ধাপে ছাই মেখে অর্থের পিচ্ছিল মাছকে পাকড়ে ধরার মতো কষ্ট পেতে হচ্ছে জেনে সত্যি লজ্জায় আমার মাথা কাটা যাচ্ছে। এমন জানলে এইসব অর্থহীণ অর্বাচীণ কথাবার্তা লিখতামই না আমি। আমার কথা বুঝতে গিয়ে কেউ বিন্দুমাত্র কষ্ট পাক তা কখনই আমার উদ্দেশ্য ছিল না।

অন্ত্যজ বলতে আমি তাদেরই বোঝাচ্ছি (বর্তমান কন্টেক্সটে) যাদের - ইংরেজিতে যাকে বলে - "যে পরের বেলার খাবার কখন-কোথায় জুটবে জানে না", বা বাংলায় - নুন আনতে পান্তা ফুরায় বা দিন আনি দিন খাই - আক্ষরিক অর্থে সেই আর্থিক সঙ্গতির মানুষ, যাদের নিজের বা নিজের ও পরিবারের অন্ন-সংস্থান করতে গিয়েই দিনের প্রায় পুরোটা সময় বেরিয়ে যায় (অনেকের ক্ষেত্রে প্রায় সেই শিশু-কিশোর বয়স থেকেই হয়তো) - তারপর আর জ্ঞানবিজ্ঞান-শিক্ষা ও চর্চা করার সময়-শক্তি-সুযোগ-সঙ্গতি-অবসর কিচ্ছু অবশিষ্ট থাকে না! জ্ঞানবিজ্ঞানের নবদিগন্তের সূচণা তো মঙ্গলগ্রহ দুরস্ত। আর যাদের অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থানের সংস্থানের পরেও জ্ঞানবিজ্ঞানশিক্ষা ও চর্চার জন্য প্রয়োজনীয় সময়-সুযোগ-শক্তি-সঙ্গতি অবশিষ্ট থাকে - বা যারা অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থানের সংস্থানের জন্যই পেশা হিসেবে জ্ঞানচর্চা করার সৌভাগ্যে ভাগ্যবান - এদেরকেই আমি বলছি বামুন-কায়েত। আমার ধারণা ছিল, এটুকু এই লেখা আর আমার মন্তব্যের কন্টেক্সটে খুব একটা দুর্বোধ্য ছিল না - কেউ আমার সাথে একমত হোক বা না হোক। বোঝাই যাচ্ছে আমার ধারণা ভুল ছিল এবং তাতে হয়তো কেউ কেউ বিরক্ত বা বিব্রত হয়েছেন। সে জন্যে আবারও আমি করজোড়ে বহুৎ শরমিন্দা। কারও মনে, মনোভাবে বা লালিত বিশ্বাসে আঘাত দেয়া আমার উদ্দেশ্য ছিল না, আঘাত না দিয়ে শুধু ভিন্ন মতামতটাই জ্ঞাপন করার উদ্দেশ্য ছিল। কিন্তু উল্টোটা হয়ে গেলে সেটা নিতান্তই অনিচ্ছাকৃত। এখানে আমি শুধু এটুকুই যোগ করতে চাই যাতে কারও মনে সন্দেহ না থাকে - একটু মনোযোগ দিয়ে আমার মূল মন্তব্যটি পড়লেই দেখা যাবে আমি কিন্তু "বামুন-কায়েত" বা "অন্ত্যজ" শব্দগুলির উপর কোনোরকম মূল্যাবধারণ বা ভ্যালু জাজমেন্ট আরোপ করিনি বা কারও পক্ষাবলম্বনও করিনি।

ঠ্যাঙনোটঃ (১) আমার মূল মন্তব্যের মুল বক্তব্য কিন্তু এই 'জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা' প্রসঙ্গটা আসার আগেই শেষ হয়ে গেছে। এই প্রসঙ্গটা নেহাৎ সাইড ইস্যু ছিল। (২) এই পোস্টে এইসব প্রসঙ্গে আর বাক্যব্যায় করার বিন্দুমাত্র আগ্রহ বোধ করছি না আমি। তাই এরপরও কারও কাছে কিছু অপরিষ্কার থাকলে তার প্রতি নিজের মতো করে যা খুশি বুঝে বা না বুঝে নেয়ার উদাত্ত আহবান রইলো!
ধন্যবাদ।

****************************************

ফিরোজ এর ছবি

আপনি যাদের "অন্ত্যজ" বলতেছেন, প্রাচীন গ্রীসে তাদের বলা হইত "পেনেতেস", ছোটলোক। গায়ে খাটা কাম সব এরা করত। গ্রীকরা এই কাজকাম পাত্তা দিত না, বলত এইটা নিজের জন্য। খাটনির উল্টা কাম ছিল "পলিতিকা", নগর-কর্ম, যেইটা পরের জন্য করা হইত বইলা গ্রীকদের দাবী। এই "নিঃস্বার্থ" কামের শর্ত আছিল "স্খোলে", অবসর। অবসর যার আছে সেই শুধু পলিতিকায় ঢুকতে পারত। এই স্খোলে থেইকাই আসছে স্কুল। পলিতিকার মধ্যে শিক্ষা, যুদ্ধ, চিকিতসা সবই আছে।

তাছাড়া লিখার জিনিস বরাবরই দামী আছিল, গুহার গায়ে ছবি আকার আমলেও। মুখে মুখে জ্ঞান চর্চা হয়, কিন্তু সেই জ্ঞান লিখ্যা না রাখলে চর্চার খবর সময়ের পেটে হজম হইয়া যায়।

এক লহমা এর ছবি

হ, জ্ঞান- বিজ্ঞানের চর্চা ইচ্ছামত চালাইতে গেলে জমান পয়সা লাগে, অবসর লাগে। তা না হইলে হেই চর্চাও অন্যের খেদমত - পেন্তেসি কাম। পিরথিমী দুই ভাগে বিভক্তঃ বামুন-কায়েত, যাগর অবসর আসে আর অন্ত্যজ চাঁড়াল, যাগর অবসর নাই।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

এক লহমা এর ছবি

সহমত।
সম্পর্কচ্ছেদ - সেই ত ব্যথা! মুখ খুলতে ইচ্ছে করে না এখন অনেক সময়-ই। বয়স হয়েছে, ক্রমাগত একলা হয়ে যাচ্ছি। সম্পর্ক ক্রমাগত মহার্ঘ হয়ে উঠছে।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

মন মাঝি এর ছবি

শেষ তিনটি বাক্য আমিও টের পাই এখন। হা হা হা

****************************************

অতিথি লেখক এর ছবি

সম্পাদকে যদি ছাপে, যদি বই বান্ধে প্রকাশকে, আর দোকানদার মশয় বেইচা দুইটা পয়সা করতে পারে তবে দারোগায় কী কহিলো তাতে কী আসে যায় লীলেন? টিকলে টিকলো না টিকলে নাই, লিখতে হইলে টিকি থাকতেই হবে এমন কি কোন কথা আছে? যদি থাকে তাইলে সেই টিকিতে টিকের আগুন। এইবার বলো নাটিকের কী করলা। টিকিয়া আছে?

---মোখলেস হোসেন

এক লহমা এর ছবি

গুরু গুরু

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

মাহবুব লীলেন এর ছবি

টিকিয়া আছে খসড়ায়

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখালেখির যতটুকু আমার বোধে কুলায় তাতে বুঝি একজন লেখকের শক্তির সর্বোত্তম প্রকাশ ঘটে নাটকে। তুমি নাটক লিখছ জেনে তাই দারুণ খুশি হয়েছিলাম। শেষ করো ভাই।

---মোখলেস হোসেন

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আমিন

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।