কাক- [ষষ্ঠ কিস্তি]

মানিক চন্দ্র দাস এর ছবি
লিখেছেন মানিক চন্দ্র দাস [অতিথি] (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৬/০৮/২০১০ - ৭:৫৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

[প্রথম কিস্তি]
[দ্বিতীয় কিস্তি]
[তৃতীয় কিস্তি]
[চতুর্থ কিস্তি]
[পঞ্চম কিস্তি]

১৬


“স্যার, ঘুমুচ্ছেন তো আরাম করেই।”
“খুব ক্লান্ত। ঘুমুতে তো হবেই। কাল আবার অফিস।”
“আপনার ম্যাডামের বাড়ি কি ঠিক হয়েছে?”
“এক দিনেতো আর ঠিক হবেনা। সময় লাগবে। ঘোরাঘুরি করে বাড়ি ঠিক করতে হবে। সে কাজের জন্য লোক লাগানো হয়েছে।”
“কি রকম বাড়ি প্রয়োজন স্যার?”
“যেসব বাড়িতে নিরাপত্তা ব্যাবস্থা ভালো সেইরকম একটা বাড়ি দরকার। ম্যাডাম তার বাচ্চাদের নিয়ে থাকবেন। নিরাপত্তার বিষয়টাই তাই আগে।”
“স্যার, আমার বাচ্চাদের নিরাপত্তা নিয়ে একটু ভাবতে বলেছিলাম। ভেবেছিলেন?”
“তোমার বাচ্চার কথা তুমি ভাবো। আমি কেন ভাবতে যাবো?”
“আমাকে তো স্যার ভাবার সুযোগ দিলেন না। তার আগেই মেরে ফেললেন। ফাইল সমস্যাটার সমাধান করে দিলাম, তাও আমার বাচ্চাদের কথা একটু ভাবতে পারলেননা? এতো অকৃতজ্ঞ কেন আপনি?”
“আচ্ছা ঠিক আছে। দেখা যাক।”
“আপনার আর না দেখলেও চলবে স্যার। ওরা আজ মারা গেছে। চিলে নিয়ে গেছে। ওর মা একা বাঁচাতে পারেনি। বেচারির পাখায় জখম হয়েছে। অন্যরা আসার আগেই সব শেষ। এবার স্যার আপনার শাস্তি পেতে হবে। আপনার কুকুরগুলো মরেছে না স্যার?”
“হ্যাঁ মরেছে।”
“আমার শরীরটা খেয়েছে, তাই ওদের মারা হয়েছে। বুঝতে পারছেন? এবার স্যার আপনার শাস্তি হবে। কঠিন শাস্তি।”
“যাহ ব্যাটা হুস...হুস...।”

শব্দের চোটে রহমান সাহেবের নিজেরই ঘুম ভেঙ্গে গেলো। ঘর এতো অন্ধকার কেন? তিনি বিছানায় উঠে বসলেন। পাশেই কুমকুম ঘুমিয়ে আছে নিশ্চিন্ত মানুষের মত। খুব পানি পিপাসা পেয়েছে রহমান সাহেবের। সারা শরীর ঘামে ভিজে গেছে। কেন যেন তার খুব ভয় লাগছে।
হাতড়ে হাতড়ে রুমের বাতি জ্বালালেন। আলোতে কুমকুমের সমস্যা হয়না। রহমান সাহেবের খুব খিদে পেয়েছে। ফ্রিজে কিছু কি পাওয়া যাবে? থাকার কথা।

রহমান সাহেব বিছানা থেকে নেমে সোজা ডাইনিং রুমে চলে গেলেন। বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে। ঘুমানোই স্বাভাবিক। রাত তো আর কম হয়নি।
ফ্রীজে পুডিং আছে। পুডিং বের করে তিনি খাওয়া শুরু করলেন। গপ গপ করে খাচ্ছেন। পুডিং তার পছন্দের খাবার। কুমকুম রাঁধেও ভাল।

“স্যার, আমারো খিদে পেয়েছে। আমাকেও একটু দিন।”

হঠাৎ শব্দ পেয়ে চমকে উঠলেন রহমান সাহেব। পাশের চেয়ারে চোখ পড়তেই তিনি নিজে চেয়ার থেকে ছিটকে পড়লেন।
চেয়ারে কাক বসে আছে। বিশাল এক কাক। রহমান সাহেব চিৎকার করতে চাইছেন, পারছেন না। গলা যেন আটকে গেছে।

“এতো ভয় পাচ্ছেন কেন স্যার? আপনাকে ভয় দেখানোর মতো সাধারন শাস্তি দেয়া হবেনা। আপনার শাস্তি হবে খুব কঠিন। খিদে পেয়েছিলো, তাই এসেছি।”

কাকটা নির্বিকার ভঙ্গিতে রহমান সাহেবের প্লেটের পুডিং খাওয়া শুরু করলো।
রহমান সাহেব চিৎকার করে অজ্ঞান হয়ে গেলেন। সেই চিৎকারে বাসার সবার ঘুম ভাঙ্গলো।

১৭


“কি হয়েছে তোমার?” কুমকুমের গলায় উদ্বেগ পরিস্কার টের পাওয়া যাচ্ছে।
রহমান সাবের জ্ঞান ফিরে এসেছে। তিনি মেঝেতেই বসে আছেন। খুব অস্থির লাগছে তার। তিনি কি পাগল হয়ে যাচ্ছেন? পুরো বিষয়টা কি কুমকুমকে বলা যায়? বললে আবার পাগল ঠাওরাবে নাতো? এতো সব ভেবে রহমান সাহেব কুমকুমকে প্রশ্ন করলেন, “এই ঘরে কোন কাক বসে থাকতে দেখেছ ?”

কুমকুম প্রশ্ন শুনে খুবই অবাক হলো। রাতদুপুরে একটা মানুষ খেতে বসে অজ্ঞান হয়ে গেলো। জ্ঞান ফেরার পর সেই মানুষটির প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে রুমে কি কোন কাক ছিলো? এইরকম উদ্ভট প্রশ্ন মানুষ করে?

“কাক? এতো রাতে? বাড়ির ভেতর এতো রাতে কাক ঢুকবে কেমন করে? দরজা-জানালা সবই বন্ধ।”
“দেখেছো কিনা তাই বলো। এতো কথা বলতে বলেছি?”
“নাহ, কোন কাক টাক ছিলোনা।”

মেঝে থেকে উঠে রহমান সাহেব চুপচাপ বেড রুমে চলে গেলেন। কিছুক্ষন ঘুমাবার চেষ্টা করলেন। কিছুতেই ঘুম এলোনা। ঘুমুবার ওষুধ খেয়ে ঘুমানো যায়। কিন্তু তিনি শুনেছেন এই জাতীয় ওষুধের কিছু ঝামেলা আছে। টানা খেলে, পরে নাকি ওষুধ না খেলে আর ঘুম আসেনা। এইরকম পরিস্থিতিতে তিনি পড়তে চাইছেন না।

বিছানা থেকে উঠে তিনি বারান্দায় গিয়ে বসে রইলেন। কুমকুম বেশ কয়েকবার ঘুমানোর জন্য ডাকলো। তিনি ঘুমাতে গেলেন না। কুমকুম ডাক্তার আনার কথা বললো। তাতেও রহমান সাহেব রাজী নন। ডাক্তার শ্রেনীটার উপর তার তীব্র একটা ক্ষোভ আছে।

সারা রাত বারান্দায় বসে বসে রহমান সাহেব ভাবলেন।

মানুষ কি সত্যি অন্য প্রানীর চেয়ে কম বুদ্ধিমান? বুদ্ধি কম হলে অন্য প্রানীর জায়গায় মানুষ কেমন করে সভ্যতা গড়ে তুললো? বাজে কথা। আরে, আশ্চর্য তো, তিনি নিজেও দেখি কাকের কথা বিশ্বাস করে বসে আছেন। ওগুলো স্রেফ স্বপ্ন। অন্য কিছু না।

আচ্ছা, তার কি কোন ধরনের হ্যালুসিনেসন হচ্ছে? হ্যালুসিনেসন এক ধরনের মানসিক সমস্যা। হঠাৎ করে কি কারো মানসিক সমস্যা হতে পারে? নাকি এই ধরনের সমস্যা বংশগতির সাথে সম্পর্কিত। বংশগত হবার কথা না। কারন তার পরিবারে এই জাতীয় সমস্যা কারো ছিলো শুনেছেন বলে মনে পড়ছেনা। আচ্ছা ঐ কাক ব্যাটা ফাইলের কথা বললো কেমন করে? কাকের কি সত্যি কোন ক্ষমতা আছে? ব্যাখ্যাতীত কোন ক্ষমতা? ধুর, তা কেমন করে হয়?

ভোর বেলার দিকে রহমান সাহেবের দুচোখের পাতা লেগে এলো। স্বপ্নে দেখলেন তিনি হাত-পা কুকড়ে ডাষ্টবিনে বসে আছেন। মুখ দিয়ে তিনি ময়লা খুঁটে খুঁটে খাচ্ছেন। সারা শরীরে কালো কালো পালক। ঐ তো এক টুকরো পুডিং পাওয়া গেছে। পঁচা পুডিং। তাও পুডিং তো। খারাপ কি? তিনি মনের আনন্দে পুডিং খাওয়া শুরু করলেন। পাশেই দুটো মড়া কুকুর পড়ে আছে। ওগুলো কি রন্টি-মন্টি? মড়া কুকুরদুটো হঠাৎ করেই জ্যান্ত হয়ে উঠলো। তারা তার ঘাড় কামড়ে ধরলো। এদের কামড়ে তো ব্যাথা পাবার কথা। কিন্তু ব্যাথা তো পাওয়া যাচ্ছেনা। কেমন যেন শীতল একটা অনুভূতি। ভেজা ভেজা। রহমান সাহেবের তন্দ্রা ভেঙ্গে গেলো।

কুমকুম ঘাড়ে হাত দিয়ে তার মাথা ঠিক করে দিচ্ছে। মাথা এক পাশে হেলে গিয়েছিলো। কুমকুমের হাত ভেজা, ঠান্ডা।

“কুমকুম, কুকুরদুটো কোথায়?”
“আবার কোথায়? সোবহান ডাষ্টবিনে ফেলে এসেছে। বললাম না তখন? এই সাতসকালে এই প্রশ্ন কেন?”
“নাহ, এমনি।”

১৮


রহমান সাহেব প্রতিদিন সকালে শেইভ করেন। ক্লীন শেইভড হয়ে অফিসে যাওয়াটা তার পছন্দ। আর দশ জনের মতো রহমান সাহেব শেইভ করার জন্যে ব্লেইড বা রেজর ব্যবহার করেন না। তিনি জীবনে প্রথম শেইভ করিয়েছিলেন সেলুনে। সেখানে নরসুন্দর ভদ্রলোক ব্যবহার করেছিলেন ক্ষুর। সেদিন থেকেই রহমান সাহেব ক্ষুর জিনিসটাকে পছন্দ করে ফেলেছেন। তাই তিনি শেইভের জন্যে ক্ষুর ব্যবহার করেন। ক্ষুর ধার দেবার জন্যে একটা লম্বা চামড়ার ফিতে বাথরুমের দেয়ালে ঝোলানো আছে। চামড়ায় ঘষে ক্ষুরে ধার দিতে হয়। ধার দেবার সময় মিহি ধরনের শব্দ হয়। শব্দটা রহমান সাহেবের বেশ ভালো লাগে।

আজকে রহমান সাহেবের হাত কাঁপছে। ভোরের তন্দ্রায় দেখা দুঃস্বপ্ন এর কারন। রহমান সাহেব মুখে ফেনা লাগিয়ে শেইভ করা শুরু করলেন। শেইভ করার কাজটি তিনি খুব মনোযোগ সহকারে করেন। গালের একপাশের দাড়ি কাটা শেষ। তিনি এবার আরেক পাশের দাড়ি কাটা শুরু করলেন। ঠিক এই সময় কে যেন বলে উঠলো, “স্যার, খুব সাবধান। পালক গুলো খুব শক্ত।”

রহমান সাহেব চমকে উঠলেন। হাতের ব্যালান্স নষ্ট হয়ে গেলো। গালের বেশ খানিকটা কেটে গেলো। প্রথমে বিষয়টা তিনি টের পেলেন না। পেছনে কেউ আছে কিনা দেখে নিলেন। বাথরুম ফাঁকা। কেউ নেই। এবার তিনি তাকালেন বেসিনের দিকে। বেসিন ভর্তি পালক। রহমান সাহেব নিজেকে শান্ত করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করলেন। বেসিনে পালক কেন? একি! রক্ত কিসের? রহমান সাহেব এবার তাকালেন আয়নায়। তার নিজের চেহারার জায়গায় বিশাল এক কাকের মাথা। মাথার একপাশে পালক নেই। পালকের জায়গায় গোলাপী ত্বক দেখা যাচ্ছে। ত্বক থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। বিভৎস এক দৃশ্য।
চিৎকার করে তিনি বাথরুম থেকে বেরিয়ে এলেন। কুমকুম সাথে সাথে ছুটে এলো। সাথে রাকিব- আনিকা।

“খোদা! এতোটা কাটলো কিভাবে?”

রহমান সাহেবের মুখ দিয়ে কোন কথা বের হচ্ছেনা। তার সারা শরীর থরথর করে কাঁপছে। কুমকুম রহমান সাহেবের গালে কাপড় চেপে ধরলেন। রক্ত পড়া বন্ধ করা দরকার। রক্ত বেরুচ্ছে প্রচুর। কাপড় ভিজে গেলো রক্তে। বরফ দিয়ে কাটা জায়গা চেপে ধরা হলো। লাভ হলোনা। ভয় পেয়ে গেলো কুমকুম। এতো রক্ত মানুষের শরীরে থাকে?

১৯


ক্লিনিক থেকে বেরিয়ে এলেন রহমান সাহেব। গালে তিনটা সেলাই পড়েছে। রক্ত বেরিয়েছে প্রচুর। শরীর দুর্বল লাগছে। বাইরে বেশ কড়া রোদ। বাইরে বের হবার সাথে সাথে রহমান সাহেবের মাথা ধরে গেলো। রোদ মনে হচ্ছে একেবার মগজের ভেতর ঢুকে যাচ্ছে। মাথা চিড়বড় করে উঠলো।

“গাড়ি কোথায় কুমকুম?”
“আছে বোধহয় আশেপাশে। রমিজকে তো আশেপাশেই থাকতে বলেছি।”

রমিজ হচ্ছে রহমান সাহেবের ব্যক্তিগত গাড়ির ড্রাইভার। স্যারকে সে বের হতে দেখেছে। দ্রুত গাড়ি নিয়ে সে গেইটে চলে এলো । গাড়ি দেখেই রহমান সাহেবের মেজাজ সপ্তমে চড়ে গেলো। চকোলেট রঙের একটা ঝাঁ চকচকে গাড়ি। তার সারা শরীরে সাদা সাদা কাকের বিষ্ঠা। দূর থেকে গাড়িটাকে হরিনের মতো লাগছে।

“রমিজ মিয়া, গাড়ি পরিস্কার করোনি কেন? সারা গাড়িতে কাকের গু। ডাষ্টবিনে নিয়ে গিয়েছিলে গাড়িটাকে ? ”

রমিজ খুবই অবাক হয়ে গেলো। কুমকুমেরও একই অবস্থা। গাড়ি পুরো ঝকঝক করছে। কোথাও কাকের বিষ্ঠার চিহ্ণও নেই।

“গু কই স্যার? পুরা গাড়িতো পরিস্কার।”
“আবারো মুখে মুখে কথা বলে! ” বলেই রহমান সাহেব দড়াম করে রমিজের গালে চড় বসিয়ে দিলেন। এই সামান্য নড়াচড়াতেই রহমান সাহেব বড্ড ক্লান্তি বোধ করলেন। তিনি হাত-পা এলিয়ে পড়ে যাচ্ছিলেন। রমিজ মিয়া রহমান সাহেবকে জাপ্টে ধরলো।

রহমান সাহেবকে আবারো ক্লিনিকে ভর্তি করা হলো। কুমকুম পড়ে গেলো দুশ্চিন্তায়। এইরকম একটা ভদ্র মানুষ এতো তুচ্ছ কারণে এরকম প্রতিক্রিয়া দেখালো কেন? আর কারনটাও তো সত্যি না। গাড়ির কোথাও কাকের বিষ্ঠা ছিলোনা। কুমকুমের মনে হচ্ছে কোথাও বিশাল একটা সমস্যা হয়েছে।

রহমান সাহেবকে কেবিনে রাখা হয়েছে। স্যালাইন চলছে। সাথে সিডেটিভও দেয়া হয়েছে। তিনি এখন ঘুমুচ্ছেন। কুমকুম কেবিনের বারান্দায় এসে দাঁড়ালো। কেবিন চার তলায়। ক্লিনিক চাতালে একটা ঝাকড়া জাম গাছ দেখা যাচ্ছে। গাছ ভর্তি কাক।

সবকটা কাক স্থির হয়ে বসে আছে। সব কেমন যেন থমথমে। এতো কাক কেন চারদিকে? এরই মাঝে একটা কাক এসে বসলো বারান্দার গ্রীলে। তার গলায় সাদা ফুটকির মতো দেখা যাচ্ছে। এই কাকটার উড়তে একটু কষ্ট হচ্ছে। ডানায় জখম আছে মনে হচ্ছে। কুমকুমের খুব কাছেই বসে আছে কাকটা। কুমকুমকে সে যেন গ্রাহ্যই করছেনা। অদ্ভুত তো!

----------------[ চলবে ]


মন্তব্য

দেবোত্তম দাশ এর ছবি

উমম, একসাথে পড়তে চাই পুরোটা
------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !

------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !

পলাশ পলু এর ছবি

শুরুর দিকে কাক টার জন্য খারাপ লাগলেও, এখন কিন্তু রহমান সাহেবের জন্য খারাপ লাগছে। বেচারা একটা কাক মাইরা মহা অশান্তিতে আছেন।

ভাই এগিয়ে যান। দারুন চলছে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।