কাক [ অষ্টম কিস্তি ]

মানিক চন্দ্র দাস এর ছবি
লিখেছেন মানিক চন্দ্র দাস [অতিথি] (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৯/০৯/২০১০ - ২:০৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

[প্রথম কিস্তি] [দ্বিতীয় কিস্তি] [তৃতীয় কিস্তি] [চতুর্থ কিস্তি] [পঞ্চম কিস্তি] [ষষ্ঠ কিস্তি] [সপ্তম কিস্তি]

নামটা কিরকম যেন! নিশিত শব্দের অর্থ কি? নিশীথ মানে রাত। নিশিত মানেও কি ওইরকম কিছু? এতো রাতে ভদ্রলোককে ফোন দেয়াটা কি ঠিক হবে? রহমান কি আসলেই মানসিক রোগী? কে জানে!

দ্বিধায় পড়ে গেলো কুমকুম। দ্বিধা নিয়েই সে ঢুকলো বেডরুমে। দেখা গেলো, রহমান সাহেব শিশুদের মতো হাত-পা কুঁকড়ে ঘুম। মাঝে মাঝে মাথা নাড়ছেন। মুখ থেকে বিড়বিড় শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। লোকটা ভাত খায়নি। খাবার জন্য ডাকাটা কি ঠিক হবে? নাহ, ঘুমাচ্ছে ঘুমাক। ভাত খেয়ে কুমকুম, রহমান সাহেবের পাশেই শুয়ে পড়লো। সামনে কেমন দিন কে জানে! অজানা আশঙ্কায় মাঝে মাঝে তার বুক কাঁপছে। একসময় ঘুম নেমে এলো চোখে।

সে রাতে কিছুই হলোনা। রহমান সাহেব শান্তিমতো ঘুমালেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে কুমকুম দেখলো রহমান সাহেব তখনো ঘুমিয়ে। রহমান সাহেবের মুখের দিকে তাকালো কুমকুম। চুলগুলো চোখের উপর এসে পড়েছে। সে রহমান সাহেবের চুলগুলো চোখের উপর থেকে সরিয়ে দিলো। আহারে বেচারা! ঘুমাচ্ছে ঘুমাক। কুমকুম জানালার পর্দা সরিয়ে হাঁটতে গেলো । হাঁটা শেষ করে , বাচ্চাদের নাস্তা খাইয়ে একবার বেডরুমে ঘুরে গেলো সে। রহমান সাহেব তখনো ঘুমিয়ে।

সকাল নয়টার দিকে রহমান সাহেবের স্বপ্নে আবারো কাক দেখা দিলো। তিনি এবার দেখলেন একটা ডাষ্টবিনের মাঝখানে তিনি কাকতাড়ুয়ার মতো দাঁড়িয়ে আছেন। সারা শরীরে কাক বসে আছে। কাকতাড়ুয়া থাকে ক্ষেতে, ডাষ্টবিনের মাঝে তো থাকেনা। তিনি ডাষ্টবিনের মাঝে কাকতাড়ুয়া হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন কেন? শুধু দাঁড়িয়ে থাকলে একটা কথা ছিলো, তার সারা শরীরে কাক বসে আছে। সবকটার মুখে ময়লা। কয়েকটা তার উপরে বসেই ময়লা খাচ্ছে। কোনটার মুখে মুরগীর নাড়িভূড়ি, কোনটার মুখে মড়া ইঁদুর। কোনটা তার শরীরে ঠোঁট ঘষছে। একটা একেবারে তার ঠোঁটে ঠোঁট ঘষছে। একটা কাক তার বুকে ঠোকর বসাচ্ছে। কাকটার গলায় সাদা ফুটকি। কি অসম্ভব দুর্গন্ধ চারপাশে। স্বপ্নের মাঝেও রহমান সাহেব প্রবল দুর্গন্ধ টের পেলেন।

মাথা ঘোরাতেই দুটো কুকুরের শরীর দেখা গেলো। কুকুরগুলোর শরীর ঠোকড়াচ্ছে কতগুলো কাক। একসময় কুকুরের শরীরে বসে থাকা কাকগুলো উড়ে এসে বসলো তার শরীরে। আর তার শরীরে বসে থাকা কাকগুলো উড়ে গিয়ে বসলো কুকুরগুলোর শরীরে। ডিউটি বদল করার মতো তারাও ঠোকড়ানোর ডিউটি দিচ্ছে পালাক্রমে। দুর্গন্ধের পরিমান বাড়ছে। এইপর্যায়ে কুকুরদুটো মাথা উঠালো। তাদের চেহারায় কালো কালো গর্ত। চোখ উধাও। কাক ঠুকরে চোখ তুলে ফেলেছে। ফাঁকা জায়গায় কিলবিলে পোকা দেখা গেলো। সাদা সাদা পোকা। রহমান সাহেব পোকাদেরও পরিস্কার দেখতে পেলেন। তাদের সাদা গায়ে চোখটুকু কালো। সেই কালো অংশটুকু আবার ঝকঝক করছে। রহমান সাহেব অবাক হলেন। পোকাদের চোখ ঝকঝক করে নাকি?

কুকুরদুটো মাথা তুলে বাতাস শুঁকলো। একপর্যায়ে তারা বললো, “স্যার, এতোদিন আমরা আপনার বাসা পাহারা দিলাম, এবার আমাদের জন্য কিছু একটা করুন। আমাদের বাঁচান স্যার। এরাতো আমাদের খেয়ে ফেলছে।”

রহমান সাহেব তীব্র চেষ্টা করছেন হাত পা নাড়াতে। তিনি কুকুরদুটোর কাছে যেতে চাইছেন। তার পা ময়লায় ডুবে আছে। টেনেও পা উঠানো যাচ্ছেনা। এবার কাকেরা তার শরীর থেকে উড়ে গিয়ে কুকুরদের উপর প্রবল বেগে ঝাঁপিয়ে পড়লো ।

তিনি কুকুরদুটোকে বাঁচানোর জন্য উঠে আসার তীব্র চেষ্টা করছেন। তার এই প্রচেষ্টা দেখে কাকগুলো একযোগে হেসে উঠলো। কাহ...কাহ...কাহ...

এই পর্যায়ে রহমান সাহেবের ঘুম ভেঙ্গে গেলো। স্বপ্নের আতঙ্ক তার মাঝে পুরোপুরি রয়ে গেছে। চোখ মেলতেই তিনি দেখলেন জানালার গ্রীলে একটা কাক বসে আছে। মুখে মড়া ইঁদুর। রুমের ভেতর ভয়াবহ দুর্গন্ধ। কি সমস্যা, রুমে এতো দুর্গন্ধ কেন? রহমান সাহেবের মাথা পুরোপুরি এলোমেলো হয়ে গেলো।

কিছুক্ষন পর কুমকুম রুমে ঢুকে স্তম্ভিত হয়ে গেলো। রহমান সাহেব বিছানার চাদর সারা শরীরে জড়িয়ে নিয়ে ‘দ’ এর মতো বসে আছেন। চাদরের রঙ কালো। হাত দুটো দুপাশে ছড়িয়ে দিয়ে উড়ার মতো ভঙ্গি করছেন। মুখে বিশাল একটা মড়া ইঁদুর। ইদুরের রক্ত তার দাঁতে, ঠোটে লেগে আছে। কুমকুম কে দেখে রহমান সাহেব মুখের ইঁদুর খুব যত্ন করে বিছানার উপর রাখলেন। হাত দুটো পেছনে ভাঁজ করা। ইঁদুর রাখলেন বিছানায় উঁবু হয়ে। তারপর তিনি বড় বড় চোখ করে কুমকুমের দিকে তাকালেন । একসময় জোরে জোরে কা কা করে উঠলেন। ঘরের ভেতর প্রচন্ড দুর্গন্ধ। এই দুর্গন্ধে শরীর গুলিয়ে উঠে। কুমকুম দৌড়ে বাথরুমে ঢুকে গেলো। হড়হড় করে বমি করে বেসিন ভাসিয়ে দিলো। মনে হচ্ছে পেটের ভেতরের সব কিছু বেরিয়ে আসবে। শরীর ভেঙ্গে আসতে চাইছে। বেসিন ধরে কোনমতে নিজেকে সামলে নিলো সে। একসময় বমির বেগ কমে এলো। কুমকুম বাথরুম থেকে বেরিয়ে এলো ।

“কি কুমকুম ভয় পেয়েছ ?”

কুমকুমের মুখ দিয়ে কোন শব্দ বেরুলোনা। তার বিস্ময় এবং বিবমিষা কোনটাই কাটেনি।

“আমি কাক । কাককে কেন ভয় পাচ্ছো ? ভয় পাবার কিছু নেই। কা কা কা...।”

কুমকুম দৌড় দিয়ে বেরিয়ে এলো বেডরুম থেকে। বেরিয়েই সে দরজা আটকে দিলো। এক্ষুনি নিশিত বাবুকে ফোন করতে হবে। এক্ষুনি।

২৫

কুমকুম নিশিতবাবুকে ফোন করলো। একবার, দুবার, তিনবারের সময় ওপ্রান্ত থেকে ফোন উঠানোর শব্দ পাওয়া গেলো।

“হ্যালো, স্লামালাইকুম।”
“কাকে চাচ্ছেন?”
ভদ্রলোকের গলা ভারী। একটা খসখসে ভাবও আছে।
“আমি নিশিতবাবুর সাথে কথা বলতে চাইছি। তিনি কি আছেন?”
“বলছি।”
“আমি খুব সমস্যায় পড়ে আপনাকে ফোন করেছি।”
“হুমম।”

কি সমস্যা, জাতীয় প্রশ্ন করলেননা নিশিতবাবু। তার গলায় কোন আগ্রহ আছে বলেও কুমকুমের মনে হচ্ছেনা। কেমন যেন অন্যমনস্ক তার গলা।

“সমস্যাটা আমার হাজবেন্ডকে নিয়ে।”
“আমিতো এখন রোগী দেখা ছেড়ে দিয়েছি। রিটায়ার্ড করেছি। ”
“নিশিতবাবু, রিয়া নামে আপনার এক রোগী ছিলো। তার কাছ থেকে আপনার নাম, ঠিকানা যোগাড় করেছি।”
“হুমম।”

নিশিতবাবুর কথা শুনে মনে হলোনা তিনি রিয়া নামের কোন রোগীকে চিনতে পারছেন। কুমকুম তাও হাল ছাড়লোনা।

“নিশিতবাবু, আমি আমার স্বামীকে কোন হাসপাতালে নিতে চাইছিনা। এজন্যেই আপনার সাথে যোগাযোগ করলাম। দু-তিনদিন আগেও মানুষটা সুস্থ্য ছিলো। হঠাৎ করে আজ সে বলছে সে নাকি কাক।”
“আচ্ছা। আপনার স্বামী কবে থেকে অসুস্থ্য ?”

কুমকুম খুবই হতাশ হলো। এই লোক ঠিকমতো কথা শুনছেনা। শুনলে এই প্রশ্ন তার করার কথা না। আর ফোন কে করেছে এই প্রশ্নটাও তিনি করেননি।

“আমার স্বামী দু-তিনদিন আগেও সুস্থ্য ছিলো। আর নিশিতবাবু, আপনি আমার নামটাও জানতে চাননি। আপনি কি ব্যস্ত ?”
“নাতো। ও আচ্ছা। আপনার নামটা যেন কি?”
“নার্গিস সুলতানা।”
“তো, মিসেস নার্গিস, আপনার স্বামী কাক হয়ে গেছে ?”
“কাক হয়ে যায়নি। তার বক্তব্য সে কাক।”
“আচ্ছা। মিসেস নার্গিস, মানুষ, বিশেষত পুরুষ মানুষ জীবনে নানা সময় নিজেকে নানারকম প্রাণী মনে করে। কেউ মনে করে সে সিংহ। তখন সে ঘাড় ছাপানো চুল রাখে। চেয়ারে হেলান দিয়ে পা সামনে ছড়িয়ে বসে। মাথা আস্তে আস্তে এদিক ওদিক ঘোরায়। পুরুষদের এরকম কিছু সমস্যা হয়। এটা কোন বিষয় না।”
“পুরুষেরা নিজেকে যখন সিংহ ভাবে তখন কি হরিন ধরে ধরে খায়? খায়না। আমার স্বামী নিজেকে শুধু কাক ভাবলে আমি আপনাকে ফোন করতাম না। তার মুখে আজ মড়া ইঁদুরও দেখেছি। তাই আপনাকে ফোন দিলাম। আচ্ছা আমি রাখি। স্লামালেকুম।”
“শুনুন শুনুন। রাখবেননা।”

কুমকুম কিছু শুনলোনা। তার আগেই ফোন রেখে দিলো। লোকটা আচ্ছা পাগল তো। পুরুষেরা একসময় নিজেকে নাকি সিংহ ভাবে। যত্তোসব। বেডরুমে গিয়ে একবার অবস্থাটা দেখে আসলে কেমন হয় ? কি করছে ও? এখনো কি মড়া ইঁদুর মুখে? সে কি ইঁদুর খাচ্ছিলো? কুমকুমের সমস্ত শরীর ঘিনঘিন করে উঠলো।

২৬

নিশিত কান্তি দে, ক্লিনিক্যাল সাইকিয়াট্রির একজন প্রফেসর। বেশ কিছু ডিগ্রী তার আছে। আগে নিয়মিত রোগী দেখতেন। হাসপাতাল থেকে রিটায়ার্ড করার পর আর রোগী দেখেন না। স্ত্রী পরমা পেশায় শিক্ষক। বাংলার অধ্যাপক। দুজনে মিলে টোনাটুনির সংসার। ছেলে বিলেতে পড়ছে। স্ত্রী পরমা ছেলের সাথে দেখা করতে গিয়েছেন আজ বেশ কয়েকদিন । এই কয়েকদিনে নিশিত বাবুর সিগারেট খাবার মাত্রা বেড়ে গেছে। সারাদিন এবং রাতে তিনি বাড়িতেই থাকেন। ক্রমাগত সিগারেট খান। ঘুমান আর বই পড়েন। বই পড়তে পড়তে ঘুম, ঘুম থেকে উঠে আবার বই। মাঝে মাঝে সিগারেটের তৃষ্ণায় ঘুম ভাঙ্গে। রাতে একঘন্টা তিনি নিয়ম করে টিভি দেখেন। তখন ঘরের সমস্ত বাতি বন্ধ থাকে। টিভিতে শব্দ থাকেনা। আরামেই কাটছে দিন। মাঝে মাঝে অবশ্য খেতে বাইরে যান। না যেতে ইচ্ছা করলে নিজেই রান্না করে নেন।

এখন তাকে বাড়িতে সংগ দেবার মতো মানুষ কেউ নেই। শুধু পোষা বিড়ালটা আছে। বিড়ালের নাম রাখা হয়েছে অনামিকা। নাম রাখার কাজটা করেছে পরমা। বাংলার অধ্যাপক বলেই হয়তো তার মাথায় সহজ কোন নাম আসেনি। বিড়ালের নাম হয়ে গেছে অনামিকা। তাতে অবশ্য বিড়ালের কোন সমস্যা হয়নি। সে ডাক বোঝে এবং সবসময় আশেপাশেই থাকে। আপাতত সে নিশিতবাবুর গায়ে গায়ে লেগে থেকে সময় পার করে।

আজ যখন ফোন এলো তখন নিশিতবাবুর বিছানা ছেড়ে উঠতে ইচ্ছে হচ্ছিলো না। তার হাতে তখন টেনিদা সমগ্র। কি অসাধারন লেখা! নারায়ন বাবুর হিউমার সেন্সটাও অসাধারন। ফোন উঠাতেই শোনা গেলো রোগীর কথা। এখন ছাত্ররা ডাকলে তিনি রোগী দেখতে যান। ছাত্রদেরও বলা আছে যে খুব বিচিত্র কোন কেইস না হলে তাকে ডাকা যাবেনা। মানুষের মনের বিচিত্রতা তার খুবই পছন্দের বিষয়। বিচিত্র অংশটুকু ছকের মাঝে ফেলে দেয়া আনন্দের বিষয়। শেষ বয়সে এসে এই আনন্দটুকু তিনি পেতে চান।

ফোন পাবার পর থেকে তিনি বইতে মন বসাতে পারছেন না। কেমন যেন অস্থির লাগছে। ভদ্রমহিলা বোধহয় খুব রেগে গেছেন। হঠাৎ করেই ফোন রেখে দিয়েছেন। ঠিকানাটাও জানা হয়নি। অবশ্য ফোন নাম্বার থেকেও ভদ্রমহিলার ঠিকানা বের করে ফেলা যাবে। সমস্যা হবেনা।

পরবর্তী এক ঘন্টা নিশিতবাবু কুমকুমের ঠিকানা যোগাড় করতে ব্যস্ত রইলেন। একটা মানুষ নিজেকে কাক ভাবছে। মড়া ইদুর খাচ্ছে, বিষয়টা দেখা দরকার। মাঝখান থেকে নিশিতবাবুর টেনিদা পড়া মাথায় উঠলো।

২৭


বিকেল চারটার দিকে নিশিতবাবু কুমকুমদের বাড়ি খুঁজে পেলেন। এর আগে এদিক ওদিক দীর্ঘ সময় হাঁটতে হয়েছে। লোকজন উলটাপালটা দিক দেখিয়ে দিয়েছে। মাথার উপর তীব্র রোদ নিয়ে তিনি হাঁটাহাটি করেছেন।

বাড়ির গেইটে তার পরিচয় দিতে হলো। সোবহান বাড়ির ভেতরে গিয়ে অনুমতি পাবার পর দরজা খুলেছে।

কুমকুমদের বসার ঘর বেশ সাজানো। ঘরের ভেতর প্রকৃতির একটা অংশ তৈরি করার চেষ্টা করা হয়েছে। জানালার পাশে চমৎকার দুটো বনসাই রাখা। সোফাসেট গাছের ডাল দিয়ে বানানো। কি গাছের ডাল এতো শক্ত হতে পারে তা নিশিতবাবু বুঝতে পারলেন না। সোফার পাশে মানিপ্ল্যান্ট জাতীয় গাছ লাগানো। রুমের উপরে ফলস সিলিং লাগানো। সিলিং এ নির্দিষ্ট দুরত্ব পরপর বাতি লাগানো। এ ধরনের জিনিষ দোকানে দেখা যায়। তবে এই রুমটাতেও দেখতে খারাপ লাগছেনা। দেয়ালে দুটো ওয়াটারকালার ঝুলছে। পেইণ্টিং এর বিষয়বস্তু বৃষ্টি। একপাশে ফ্যামিলি ফটোগ্রাফ।

নিশিতবাবু সোফায় বসে পুরো রুমটাতে চোখ বুলিয়ে ফেললেন। পায়ের নিচে কার্পেট। তার উপরে পাটি বিছানো। একটু পরেই কুমকুম এসে ড্রইং রুমে ঢুকলো।

“আপনি নিশ্চয়ই মিসেস নার্গিস ?”
“জ্বী। আপনি বসুন। দাঁড়াতে হবেনা। এতো ঘেমেছেন কিকরে? ”
“অনেকক্ষন হাঁটতে হলো। বাড়ি খুঁজে পাচ্ছিলাম না। কয়েকজনকে ঠিকানা জিজ্ঞাসা করলাম। একেকজন একেকদিকে দেখিয়ে দেয়। খুব খারাপ অবস্থা।”
“ঠিকানা পেলেন কোথায়?”
“আপনি রিয়া নামের এক রোগীর কথা বলেছিলেন। আমার দেখা রোগীর সমস্ত তথ্য আমার কাছে লেখা আছে। অনেক গুলো ডায়েরী। তাতে রিয়া নামের রোগী আগে খুঁজে বের করলাম। চারজন রিয়া পাওয়া গেলো। তাদের সবার কন্টাক্ট নাম্বারে ফোন করলাম। একজনকে পাওয়া গেলো যার বান্ধবী হচ্ছে কুমকুম। তার কাছ থেকে ঠিকানা নিয়েছি। তারপর আপনার ফোন নাম্বার থেকে টিএন্ডটি তে খবর নিলাম। প্রথমে তো ওরা ঠিকানা বলতেই চায়না। পরে ম্যানেজ করে ফেলেছি। রিয়ার দেয়া ঠিকানা আর টিএন্ডটি থেকে পাওয়া ঠিকানা মিলিয়ে দেখলাম। একই ঠিকানা। তারপর চলে এলাম।”
“আপনার ফোনে কলার আইডি ওঠেনা?”
“হ্যাঁ, উঠে। কেন?”
“ঐ নাম্বারে কলব্যাক করলেই তো আমাকে পেতেন। এতো যন্ত্রনা করে ঠিকানা যোগাড় করতে হতোনা।”
“তাইতো ! কথাটা আমার মাথাতেই আসেনি। আমাকে এক গ্লাস জল দিতে পারেন? হাঁটতে হাঁটতে জান শেষ। ”
“আনছি। আপনি আরাম করে বসুন।”

পানির সাথে কুমকুম নাস্তাও নিয়ে এলো। বুড়ো মতন একটা মানুষ রোদে ঘেমে একসা হয়ে এসেছে। তাকে কি শুধু পানি দেয়া যায়?

নিশিতবাবু খাবার খেলেন খুব যত্ন করে। বোঝা যাচ্ছে তার খুব খিদে পেয়েছিলো। খাওয়া শেষ করে তিনি বললেন,”আপনার ছেলেমেয়েরা কোথায়?”

কুমকুম প্রথমে কিছুক্ষন চুপ করে রইলো। তারপর বললো, “ওদের ছোট বোনের বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছি।”
“হুমম। আপনার স্বামীর নাম কি?”
“আব্দুর রহমান।”
“কি করেন?”
“চাকরী।”
“এই বাড়ি আপনাদের?”
“জ্বী। আমার শ্বশুরের কেনা বাড়ী।”
“আচ্ছা। আচ্ছা। রহমান সাহেব এখন কোথায়?”
“বেডরুমে। দরজা আটকে রেখেছি।”
“চলুন দেখে আসি।“

দুজনেই বেডরুমের দরজা খুলে ভেতরে ঢুকলেন। রহমান সাহেব বিছানার মাঝখানে পা ভাঁজ করে বসে আছেন। হাত দুটো বিচিত্রভাবে পেছনে ভাঁজ করে রাখা। তার চোখ জ্বলজ্বল করছে। জানালা খোলা। রুমের ভেতর বিশ্রী গন্ধ।

রুমের গন্ধে নিশিতবাবু ছোটখাটো একটা ধাক্কা খেলেন। এই গন্ধের সাথে তিনি পরিচিত। মাংশ পঁচা গন্ধ। রুমের ভেতর মাংশ পঁচা গন্ধ কেন? যে বাড়ির ড্রইংরুম এতো গোছানো, সেই বাড়ির বেডরুমে এইরকম গন্ধ থাকার যুক্তিসংগত কোন কারন নেই। কুমকুম শাড়ির আঁচল দিয়ে নাক চাপা দিয়েছে। নিশিতবাবু শান্তভাবে ধাক্কাটা সামলে নিলেন। রুমের চারদিকে একবার চোখ বোলালেন। জানালার প্রতিটি পাল্লা খোলা। মেঝেতে কালো একটা কাপড় পড়ে আছে। বিছানার ম্যাট্রেস দেখা যাচ্ছে। এই কাপড় খুব সম্ভবত বিছানার কভার। মেঝেতে বেশ কয়েকটা পালক পড়ে আছে। পালকের পাশে বেশ কয়েক ফোঁটা রক্ত। শুকিয়ে কালচে মেরে গেছে। রহমান সাহেবের মুখের চারপাশেও রক্ত শুকিয়ে আছে। রক্ত কি তার ব্যান্ডেজ থেকে এসেছে? তার মুখে ব্যান্ডেজও আছে। ব্যান্ডেজটা কিসের? ব্যান্ডেজ লাল হয়ে আছে। মেঝের রক্ত কি ব্যান্ডেজ থেকে এসেছে? ভদ্রলোক জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছেন।

রহমান সাহেব নিশিতবাবুর দিকে তাকালেন। তারপর ভয়াবহ কর্কশ গলায় বললেন, “কেমন আছেন নিশিতবাবু?”
“ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন? ”
“ভালো। এখানে কি জন্যে এসেছেন? ”
“এমনি। দেখতে এলাম আপনাকে।”
“আমিতো আপনার পরিচিত কেউ না।”
“পরিচিত কেউ ছিলেন না। কিন্তু এখন পরিচিত।আপনি তো আমার নামও জানেন। ”
“জ্বী জানি। আমরা সবই জানি। আপনি ছোট বেলায় আমাদের দুজনকে পুষতেন। তখন আপনি বোধহয় ক্লাস থ্রীতে পড়েন। রাতে খাঁচাটা নিচে রেখেছিলেন কেন? নিচে না রাখলেই ওরা বেঁচে যেতো। বেজীতে খেতে পারতোনা।”
নিশিতবাবু খুবই অবাক হলেন। এইলোক এসব জানলেন কি করে? তিনি বললেন,” আমরা অর্থ কি রহমান সাহেব? আপনার সাথে কে কে আছে?”
“আমরা মানে কাক। আমরা কাকেরা। আপনি ছোট বেলায় দুটো কাক পুষতেন। ঠিকনা?”
“হুমম ঠিক। ”
“ঠিকমতো যত্ন করতে না পারলে পুষতে গেলেন কেন?”
“রাতে খাঁচা ঝুলিয়ে রাখতে মনে ছিলোনা।”
“যাদের আকাশে উড়ে বেড়ানোর কথা তাদের আপনি খাঁচায় আটকে রাখলেন। এটা হলো একটা অন্যায়। তারপর আপনার মনে না থাকায় ওরা মারা গেলো, এটা আরেকটা অন্যায়। আপনার শাস্তি হওয়া উচিৎ ছিলো।”
“কিসের শাস্তি?”
“অন্যায়ের শাস্তি।”
“বেজীরা কাক খেলো আর শাস্তি পাবো আমি?”
“দোষ করেছেন আপনি। বেজীতো তার খাবার পেয়েছে, তাই খেয়েছে। তাদের কোন দোষ নেই। প্রাণীজগতে খাদ্যশৃঙ্খল বলে একটা বিষয় আছে। নিয়মটা প্রকৃতির তৈরি করা। সে নিয়ম আমরা সবাই মেনে চলি। মানুষই একমাত্র প্রাণী যে এই নিয়মের বাইরে পা দেয়। কারন তাকে সেই ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। মানুষ সেই ক্ষমতা ব্যবহার না করে করছে অপব্যবহার। আপনিও করেছেন। তাই আপনার শাস্তি হওয়া উচিৎ ছিলো। বাচ্চা ছেলে বলে শাস্তি দেয়া হয়নি।”
“আচ্ছা। আচ্ছা।”
“আপনি এখানে আমার চিকিৎসা করতে এসেছেন। তাইনা ?”
“নাতো। কুমকুম আমার মেয়ের মতো। ওর সাথে দেখা করতে এলাম।”
“নিশিতবাবু, কেন অযথা মিথ্যা বলেন? মিথ্যা বলা ঠিকনা। মানুষের এই এক সমস্যা। এরা অকারনে মিথ্যা বলে। আপনারা এতো মিথ্যা বলেন কেন?”
“মানুষ প্রয়োজনে মিথ্যা বলে। মিথ্যা বলতে যে মেধার প্রয়োজন হয় তা অন্য কোন প্রাণীর নেই। তাই অন্য কোন প্রাণী মিথ্যা বলতে পারেনা। মানুষ পারে। ”
“ভুল বললেন নিশিতবাবু। মানুষ অযথাই মিথ্যা বলে। আপনি যানতো নিশিতবাবু। আপনার সাথে কথা বলতে ইচ্ছা করছে না।”

নিশিতবাবু চুপচাপ রুম থেকে বেরিয়ে গেলেন। তার মাথায় রাজ্যের দুশ্চিন্তা ঢুকে গেছে। পেছন পেছন কুমকুম ও বেরিয়ে এলো।

“মিসেস নার্গিস, আপনার সাথে একটু কথা বলা প্রয়োজন।”
“চাচা, একটু আগে আপনি বললেন আমি আপনার মেয়ের মতো। আর এখন বলছেন মিসেস নার্গিস। কথাটা কি ঠিক হলো? আপনি আমাকে কুমকুম বলে ডাকবেন এবং অবশ্যই তুমি করে বলবেন। আমি আপনাকে চাচা বলেই ডাকবো। ”

নিশিতবাবুর মুখে হালকা হাসির রেখা দেখা গেলো। এই মেয়েটা এতো আবেগপ্রবন কেন? নাকি স্বামীর এই অসুস্থ্যতা তাকে এইরকম আবেগপ্রবন করে তুলেছে? তিনি বললেন, “আচ্ছা, ঠিক আছে।”

“আপনি কি বলবেন চাচা? আচ্ছা আপনি দুপুরে খেয়েছেন? বাসায় অবশ্য রান্নাই করা হয়নি। এই অবস্থায় কি রান্না করা যায়? আমার মাথা পুরো এলোমেলো হয়ে আছে চাচা। আচ্ছা ও সুস্থ্য হবেতো?”
“দেখা যাক কি হয়। দুশ্চিন্তা করোনা। মাথাটা ঠান্ডা করো, তারপর আমার কয়েকটা প্রশ্নের উত্তর দাও। ”

২৮

“আমি আসবো, তা কি তোমার স্বামী জানতো?”
“নাতো চাচা। এ বিষয়ে ওর সাথে আমার কোন কথাই হয়নি।”

নিশিতবাবুর দুই ভ্রু কুঁচকে গেলো। তার ফর্সা মুখে রক্ত জমছে। তিনি প্রথমে সোফায় হেলান দিয়ে বসলেন। এরপর সামনে ঝুঁকে এলেন। কেমন যেন অস্থির লাগছে। অস্থির লাগছে কেন? খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু কি চোখ এড়িয়ে যাচ্ছে? চোখের সামনে যে জিনিষ থাকে সেই জিনিষটাই সহজে চোখে পড়েনা। এখানেও কি তাই হচ্ছে?

“তোমাদের টেলিফোন ড্রইং রুমে। এর এক্সটেনশন কি বেডরুমেও আছে?”
“জ্বী চাচা আছে। ”
“তুমি আমাকে ফোন কোন ফোন থেকে করেছো? ড্রইং রুমেরটা থেকে নাকি বেডরুমেরটার থেকে?”
“ড্রইংরুম থেকে করেছি।”
“তখন রহমান সাহেব কোথায় ছিলেন?”
“বেডরুমে।”
“হুমম। আমার নাম কি তোমার স্বামী আগে থেকে জানতো?”
“জানার তো কথা না চাচা। আমি ওকে আপনার বিষয়ে কিছুই বলিনি।”
“তুমি যখন ফোনে কথা বলেছো তখন কি বেডরুমের ফোন তোলা হয়েছিলো? টের পেয়েছো কিছু?”
“আমার মাথা তখন এলোমেলো হয়ে ছিলো। তুললেও টের পাইনি।”
“রহমান সাহেবের গালে একটা ব্যান্ডেজ। কিসের জন্যে বলতো?”
“শেইভ করতে গিয়ে গাল কেটেছে। সেলাই দিতে হয়েছে। এজন্যই ওকে ক্লিনিকে নিয়ে গিয়েছিলাম। ওখান থেকে বেরুবার সময় সে কি অবস্থা! খোদা!”
“কি অবস্থা? খুলে বলো।”

কুমকুম পুরো ঘটনা খুলে বললো।

“স্রেফ কাকের বিষ্ঠা নিয়ে এতো হুলস্থুল?”
“জ্বী চাচা। কিন্তু বিষয় হচ্ছে আমাদের ড্রাইভার কিংবা আমি, কেউই গাড়িতে কোন কাকের বিষ্ঠা দেখিনি। ছিলোনা।”
“হুমম। কাক নিয়ে তোমার সাথে রহমান সাহেবের কোন কথা হয়েছে?”
“হয়েছে।”
“বলতো শুনি।”

পুরো ঘটনা এবং কথোপকথন কুমকুম সময় নিয়ে বর্ননা করলো। নিশিতবাবু যথারীতি চুপচাপ মনোযোগ দিয়ে শুনলেন। কোন প্রশ্ন বা মন্তব্য করলেন না। সব শুনে তিনি সম্পুর্ন আলাদা একটি বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করলেন।

“তোমার স্বামীর বাম হাতের কব্জিতে একটা কাটা দাগ। দাগটা বেশ গাঢ়। দাগটা কিভাবে হয়েছে?”
“কেটে গিয়েছিলো।”
“আচ্ছা তোমার স্বামীর পুরো নাম আব্দুর রহমান, তাইতো? ”
“জ্বী।”
“তিনি আগে কখনো দীর্ঘদিন কোন ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নিয়েছেন?”
“কোন সাইকিয়াট্রির ডাক্তারের কাছে যাননি। তবে ডাক্তারের কাছে গিয়েছেন।”
“সেই কাগজগুলো দেখানো যাবে?”
“কাল দেখাই চাচা? সব কাগজ বেড রুমে। রুমটাতে ঢুকতে আমার ভয় লাগছে। আম্মাকে ফোন করে আসতে বলবো। বাড়িতে আমার খুব ভয় লাগছে চাচা। ”
“ভয় লাগাটা স্বাভাবিক। আচ্ছা আমি কাল আবার আসবো। বিকেলের দিকে আসার সম্ভাবনাই বেশি। কালকে দেখি রহমান সাহেবের সাথে কথা বলে। তখনই সিদ্ধান্তে আসা যাবে যে ওনাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে কিনা।”
“চাচা, আমি ওকে হাসপাতালে নিতে চাইছিনা। বোঝেনই তো, মানুষের মুখ।”
“আচ্ছা দেখা যাক, কতদূর কি হয়।”
[/justify]

( চলবে )


মন্তব্য

মূলত পাঠক এর ছবি

পরের পর্ব শিগগির চাই, পাঠকের দাবি!

মানিক চন্দ্র দাস এর ছবি

ভাইরে, আমি নিজে ডাক্তার মানুষ। সামনে আবার ঈদে হাসপাতালে টানা ৭২ ঘন্টা ডিউটি পড়ছে। হিন্দু সকল ডাক্তার এখন এই ঈদের ছুটিতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এর সকল দায়িত্ব পালন করবে। এমনিতেই ডাক্তার রোগীর তুলনায় অনেক কম। এখন অবস্থা আরো শোচনীয়। তাও রোগী দেখতেই হবে। এই মানুষ গুলোর টাকায় আমরা সরকারী মেডিক্যাল এ পড়েছি। এদের তো উপেক্ষা করা যায়না। তাও আমি চেষ্টা করবো সামনের অংশ তাড়াতাড়ি দিতে। হয়তো তিন দিনের মাঝেই। পড়ার জন্য ধন্যবাদ ভাই। ভালো থাকবেন।

পলাশ পলু এর ছবি

হুম ভাই ভালই এগিয়ে যাচ্ছে কাকের অগ্র যাত্রা। এগিয়ে যান।

মানিক চন্দ্র দাস এর ছবি

দেঁতো হাসি

নাজমুস সাকিব [অতিথি] এর ছবি

ইন্টারেস্টিং পয়েন্ট এর আভাস পাচ্ছি মানিকদা । এর পরের পর্ব শিগগির চাই আমিও ।
-----
নাজমুস সাকিব

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

৬ থেকে ৮ সবগুলো এক বসায় পড়লাম। দারুণ এগুচ্ছে ভাই। আপনাকে দিয়েই হবে। চলুক।

মানিক চন্দ্র দাস এর ছবি

ধন্যবাদ পিপিদা। ভালো থাকবেন। ঈদ মুবারক।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ধন্যবাদ মানিক ভাই। আপনার তো ঈদ মাটি-- তবে কষ্ট করবেন মানুষের জন্য সেটাও অবশ্য এক ধরনের আনন্দ। আপনাদের ডাক্তারদের কষ্টটা আমি বুঝি। কিন্তু কী করবেন বলেন কাজটাই এরকম-- দিন নাই রাত নাই যখন তখন কল এলেই উঠে দৌড়।

সংসপ্তক এর ছবি

চলুক
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা

.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা

মানিক চন্দ্র দাস এর ছবি

ধন্যবাদ। ঈদ মুবারক

অতিথি লেখক এর ছবি

ইন্টারেস্টিং মোড় নিচ্ছে! পরের পর্বের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি...আপনার জন্য ঈদের শুভেচ্ছা রইল হাসি

মানিক চন্দ্র দাস এর ছবি

দেঁতো হাসি

দেবোত্তম দাশ এর ছবি

পড়ে চলেছি ...
------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !

------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !

মানিক চন্দ্র দাস এর ছবি

ধন্যবাদ দেবোত্তম দা। ভালো থাকবেন।

রেশনুভা এর ছবি

এক বসায় আট পর্ব পড়লাম। অবশ্যই প্রিন্ট করে নিয়ে। স্ক্রীনে একদমই পড়া আগায় না।

হূলস্থুল ব্যাপার। আমার কাছে দারুণ লেগেছে। মাঝে মাঝে কাকের সাথে সংলাপগুলো একটু দীর্ঘ মনে হয়েছে তবে উপন্যাসে ওটা হতেই পারে। কুমকুম কে অনেক সময় দেননি লেখার সময়। ঐ চরিত্রটার আর একটু ব্যপ্তি আশা করছি।

অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি পরের পর্বগুলোর জন্য।

ভালো থাকুন। ঈদ মোবারক।

মানিক চন্দ্র দাস এর ছবি

ধন্যবাদ রেশনুভা। ঈদ মোবারক। ভালো থাকবেন।

অতিথি লেখক এর ছবি

মানিকদা, এক বসায় পুরোটা পড়ে ফেললাম। খুব ভালো হচ্ছে। অসাধারণ!!!
আপনার হাতে লেখা আছে ভাই। আপনি চালিয়ে যান। মনে হল কোন প্রতিষ্ঠিত লেখকের উপন্যাস পড়ছি! আমি সচলে নতুন। মাত্র এক মাস হলো। নইলে আপনার লেখা আরও আগে পড়া হতো। 'কাক' উপন্যাসটির কাহিনী, গতি, বুনন, চরিত্র নির্মাণ, লেখনী- সবকিছুই এককথায় অসাধারণ!!! এত ব্যস্ততার মাঝেও যে আপনি সময় করে লিখে যাচ্ছেন তার জন্য আপনাকে স্যালুট!!!

হুমায়ূন আহমেদ নিয়ে আগের মন্তব্যগুলো তে অনেক বলা হয়েছে। ওদিকটায় আর গেলামনা।

আপনার হাতে শক্তি আছে, যার মাধ্যমে আপনার নিজের স্টাইলের লেখা পাঠকদের পাওয়া সম্ভব। আপনি যদি লেখালেখিটা নিয়মিত চালিয়ে যান তাহলে খুব ভালো করতে পারবেন। এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।

ভালো কথা, পরের কিস্তিগুলো কই? এরপর আর লিখেননি?

ভালো থাকবেন। অনেক অনেক শুভকমনা। হাসি

--শাহেদ সেলিম

মূলত পাঠক এর ছবি

আরে, এইটা শেষ করলেন না?

পাঠক এর ছবি

হুমায়ুন আহমেদের লেখার প্রবল ছাপ আপনার লেখায়,মিসির আলি কে সুন্দর ভাবে নিসিতবাবু বানিয়ে দিলেন,সাবাস দাদা চালিয়ে জান,আপনার হবে।

মানিক চন্দ্র দাস এর ছবি

ধন্যবাদ পাঠক।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।