বাংলাদেশকে ব্যর্থ প্রমাণের কালোচেষ্টা

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি
লিখেছেন মাসকাওয়াথ আহসান (তারিখ: শনি, ২৮/০২/২০০৯ - ১১:৫০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর সদর দপ্তরে ঘটে যাওয়া হত্যাযজ্ঞ, বাংলাদেশের একটি আধাসামরিক বাহিনীকে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়া এক মানবতাবিরোধী ষড়যন্ত্র হিসেবে ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বিষয়টি বিডিআর বিদ্রোহ বলে মনে হলেও বিদ্রোহের কারণ এবং ফলাফলের মধ্যে অবিশ্বাস্য ফারাক তৃতীয় একটি পক্ষের সক্রিয়তাকে একেবারেই সামনে নিয়ে এসেছে।

একটি প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত সুশৃঙ্খল বাহিনীর মধ্যে নরহত্যার উৎসবে মেতে উঠবার যে হিংস্র মানসিকতা দেখা গেল তাতে অনুমান করা যায় তৃতীয় পক্ষটি কী সুকৌশলে ভাইয়ের বিরুদ্ধে ভাইকে ব্যবহার করেছে।

বিদ্রোহী বিডিআর জওয়ানদের পক্ষ থেকে তাদের ওপরে সেনাশাসনের যে চিত্র তুলে ধরা হয়েছে, পারিশ্রমিক ও মুনাফা বৈষম্য, অপারেশন ডাল-ভাত বা নির্বাচনী দায়িত্বের জন্য পাওয়া সরকারি অর্থ দুর্নীতি, পদোন্নতি, ছুটি, বিশ্রাম এসব দাপ্তরিক প্রক্রিয়ায় নিষ্পেষণ কিংবা বিডিআর জওয়ানদের প্রতি সেনা কর্মকর্তাদের ঔপনিবেশিক আচরণ- এসবই তদন্তের দাবি রাখতে পারতো। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন যেভাবে একটি দুঃস্বপ্ন ঘেরা পরিস্থিতিকে মাতৃস্নেহে সামলালেন, তাতে ভাবতে অবাক লাগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে না জানিয়ে, আগামীমনস্ক একটি গণতান্ত্রিক সরকারকে না জানিয়ে কেন এ রকম মধ্যযুগীয় বর্বরতার পথ বেছে নিতে হলো?

জানানো হয়নি কারণ এই সেনা হত্যা, সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিডিআরের আক্রোশ বশত যতোটা তারচেয়েও বেশি একটি গণতান্ত্রিক সরকারের সম্ভাবনাকে অংকুরেই বিনষ্ট করা। দেশকে বিশ্বমানচিত্রে অকার্যকর রাষ্ট্র হিসেবে প্রমাণের চেষ্টা, আবারো।

আশার বিষয়, জাতি এখন ঐক্যবদ্ধ, উন্নয়নমুখী। বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া হাসিনা সরকারের এই এসিড টেস্টে বন্ধুর মতো সহযোগিতার এবং ঐক্যের হাত বাড়িয়েছেন। ফলে অতীতের মতো বিভাজন নীতি বা উদোর পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপানোর অপসংস্কৃতি কোনো জায়গা করে নিতে পারেনি।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বাজেট সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বরাবর প্রতিবাদী প্রগতিশীল গোষ্ঠীও পিলখানা ট্র্যাজেডির বর্বরতায় স্তব্ধ। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কোন দখলদার বাহিনী নয়, বহিঃশক্র নয় ফলে বিডিআর দরবার হলে নিরস্ত্র সেনা কর্মকর্তাদের উপরে গুলিবর্ষণ, হত্যার রিবংসায় মেতে ওঠা, মৃতদেহ নিয়ে পৈশাচিক কর্মকাণ্ড; সেনা কর্মকর্তাদের স্ত্রী সন্তান পরিজনদের নিরাপত্তাহীনতা, অপমান এবং শোকের অন্ধকার নিমজ্জিত করার যৌক্তিকতা সিজনড পর্যবেক্ষক কিংবা বিভিন্ন পন্থীদের পক্ষে খুজেঁ বের করা কঠিন।

দেশ যখন গণতন্ত্রের পথে দৃপ্ত যাত্রা অব্যাহত রেখেছে যখন বিভাজিত জাতির ঐক্যের পথ প্রশস্ত হচ্ছে, সংসদে সরকারি ও বিরোধীদলের বিভেদ ঘুচে গিয়ে উন্নয়নের একটি লেবেল প্লেয়িং গ্রাউন্ড তৈরি হচ্ছে, কেন বাংলাদেশ তখন এতটা পিছিয়ে দেয়ার কালো চেষ্টা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পিলখানার এ মৃত্যু উপত্যকায় গিয়েছিলেন ঘটনার একদিন আগে। তিনি অক্ষত অবস্থায় ফিরে এলেও, পচিঁশ তারিখের হত্যাযজ্ঞ সুকৌশলে তার পরিণতিও এমন হতে পারতো এমনি এক দম্ভ মেলে ধরে ষড়যন্ত্রকারীদের পক্ষ থেকে। কারণ পিলখানা উচ্ছৃঙ্খলতায় সেনা কর্মকর্তা ছাড়াও সন্নিহিত আবাসিক এলাকায় যে সিভিলিয়ান মৃত্যু ঘটেছে তাতে ঐ সহিংসতার নিষ্ঠুরতা ও দেশপ্রেমহীনতার প্রমাণ স্পষ্ট।

সেনাবাহিনীর যে কর্মকর্তারা নিহত হয়েছেন তাদের অনেকেই জঙ্গী বিরোধী তৎপরতায় পেশাদারিত্ব ও দায়বদ্ধতার পরিচয় রেখেছেন। ওয়ান ইলেভেন পরিবর্তন, মধ্যবর্তী দুর্নীতি বিরোধী অভিযান, নির্বাচন কর্মকাণ্ডে শৃঙ্খলা সহযোগিতা দিয়েছেন এদের বেশির ভাগই সেনা শাসন, জলপাই শাসন সামরিক শাসন এসব পশ্চাদপদ অপশাসনের অনিশ্চয়তাকে মিথ্যা প্রমাণ করে ওয়ান ইলেভেন দেশকে নৈরাজ্যের হাত থেকে রক্ষা করে নির্বাচনের ট্রেনে চড়িয়ে দিয়েছে, বাংলাদেশ এখন আবারো গণতন্ত্রে। ফখরুদ্দীন সরকারের পারফরমেন্স নিয়ে অনেক সমালোচনা থাকবেই, মইন উ আহমেদ ক্ষমতা গ্রহণের ব্যাগডেটেড পথে না গিয়ে, সেনাবাহিনী ব্যারাকে ফিরে গেছে। গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ওয়ান ইলেভেনের মৌল অঙ্গীকার পূরণের পরেও মধ্যবর্তী সেনা দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ ও তদন্ত হতে পারতো। কিন্তু পিলখানার ডেথ সার্টিফিকেট সেনা কর্মকর্তাদের পরিবারবর্গের প্রাপ্য হতে পারে না। নতুন সরকারকে ক্ষমতা গ্রহণের অব্যবহিত পরেই সুকৌশলে চাপে ফেলার ব্যর্থ চেষ্টা এই সেনা কর্মকর্তা নিধনযজ্ঞ।

দেশকে আরো অনিশ্চয়তার পথে যেতে না দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছেন এবং এই সাধারণ ক্ষমা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমার সঙ্গে প্রতিতুলনার দাবি রাখে। বড়মাপের রাজনৈতিক নেতারা ঔদার্যের শব্দমালায় জাতীয় ঐক্য এবং সংহতির চেষ্টা করেন। শেখ হাসিনার সে চেষ্টা সফল হয়েছে। কিন্তু পিলখানা ষড়যন্ত্রে জড়িতদের অনুপুঙ্খ তদন্ত ও বিচার রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার স্বার্থেই প্রয়োজন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন সেটা ব্যাখ্যা করেছেন। একইভাবে যে বাস্তবতায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান

যুদ্ধাপরাধীদের সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা করেছিলেন। জাতির জনকের হত্যাকাণ্ড এবং পরবর্তী রাজনৈতিক ধারা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ানো দেশদ্রোহী ও ষড়যন্ত্রমূলক আচরণের প্রমাণ জনসমক্ষে রেখে ফেলার পর, একাত্তরের ও দু হাজার নয়-এর বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র ও হত্যাযজ্ঞের বিচার এখন কেবল বাংলাদেশের ভবিষ্যতের স্বার্থেই।
পিলখানা ট্র্যাজেডি এবং একাত্তরের ট্রাজেডির ষড়যন্ত্রকারীদের খুজেঁ বের করা, সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে দেশপ্রেমিক বাংলাদেশ ঐক্যবদ্ধ।

একমাত্র সত্যের উদঘাটন এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিই পারে ভবিষ্যতের বাংলাদেশকে নিরাপদ রাখতে। কতিপয় স্বার্থপন্থীদের স্পেকুলেশনের ল্যাবিরিন্থে ঘুরপাক না খেয়ে বাংলাদেশপন্থী জনমানুষ সব সময় ঐক্য, শান্তি এবং মানবাধিকারের পক্ষে।


মন্তব্য

পলাশ দত্ত এর ছবি

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বাজেট সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বরাবর প্রতিবাদী প্রগতিশীল গোষ্ঠীও পিলখানা ট্র্যাজেডির বর্বরতায় স্তব্ধ।

-সেনাবাহিনী শব্দটি সেনাবাহিনীর হবে বলে মনে হচ্ছে।
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

আশার বিষয়, জাতি এখন ঐক্যবদ্ধ, উন্নয়নমুখী। বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া হাসিনা সরকারের এই এসিড টেস্টে বন্ধুর মতো সহযোগিতার এবং ঐক্যের হাত বাড়িয়েছেন। ফলে অতীতের মতো বিভাজন নীতি বা উদোর পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপানোর অপসংস্কৃতি কোনো জায়গা করে নিতে পারেনি।

সাধারণ ক্ষমাকে ভুল/অবিবেচনা প্রসূত বলে খালেদা জিয়া যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা কি আসলেই এসিড টেস্টে বন্ধুর মতো সহযোগিতার এবং ঐক্যের হাত বাড়ানো? নাকি চিরায়ত বিরোধিতার চর্চা?

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

আমারও এই একটাই জায়গায় দ্বিমত। বাকি পুরো লেখার সাথে সহমত। খালেদা জিয়া প্রকারান্তে বলেছেন, সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার কারণেই অফিসারদের হত্যা করা হয়েছে।

সৌরভ এর ছবি

খালেদা জিয়ার তথাকথিত নীতিনির্ধারকেরা তাকে সেইরকম বক্তব্যই লিখে দিয়েছেন। এতে আমি খুব একটা অবাক হই না।

ফাক্টস বলতেসে, অফিসারদের হত্যা করা হয়েছে ঘটনা শুরু হওয়ার এক-দুই ঘন্টার মধ্যে। আর সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা এসেছে পাঁচ-ছয় ঘন্টা পর।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

মুজিব মেহদী এর ছবি

এরকম একটা ঘটনার পরও পরকে মন্দ বলা ছাড়তে পারি না আমরা। এজন্যেই তিনি অমন করে বলতে পারেন। এসব বোধহয় আমাদের দেশেই সম্ভব।
..................................................................................
যেন ধ্যানের চেয়ে কখনো বেশি মূল্য না-পায় কোনো দৃশ্যগান, আর মানুষই যেন হয় প্রকৃত আরাধ্য জন আগুনে-ফাগুনে পুড়ে

... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

২৬ তারিখ সারাদিন গোলাগুলির ব্যাপারটাও ভাবার মতো।

আমি একজনা এর ছবি

আপনার সাথে সহমত

ক্লান্ত পথিক [অতিথি] এর ছবি

"সাধারণ ক্ষমাকে ভুল/অবিবেচনা প্রসূত বলে খালেদা জিয়া যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা কি আসলেই এসিড টেস্টে বন্ধুর মতো সহযোগিতার এবং ঐক্যের হাত বাড়ানো? নাকি চিরায়ত বিরোধিতার চর্চা?" ..............................সহমত

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র প্রমাণের যে ধারা ইতপূর্বে শুরু হয়েছিল এটা হয়তো তার লার্জস্কেল বহিঃপ্রকাশ। তবে সবাইকে ইউনাইটেড থাকতে হবে-- এর কোনো বিকল্প নেই। ডিভাইডেড হলে এখন কোনো দলের নয়, ক্ষতি হবে দেশের।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- খালেদা জিয়া সাধারণ ক্ষমা ঘোষণাকে 'কৌশলগত ভুল' বলছেন। তাঁর মতে তাহলে ঠিক কী করলে কৌশলগত ভুল হতো না, এটা জানতে খুব ইচ্ছে করছে!

সুদূর / অদূর অতীতে ঠিক যতোটা কঠোর ভাবে 'বিরোধিতা করার জন্যই বিরোধিতা করা' হয়েছে সেই মনোভাব কিঞ্চিৎ অনুপস্থিত ছিলো খালেদা জিয়া'র বক্তব্যে। তারপরেও তাঁর বক্তব্যকে ঠিক 'বন্ধুসুলভ' বলতে যা বুঝায় তা মনে হয় নি।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

সুদূর / অদূর অতীতে ঠিক যতোটা কঠোর ভাবে 'বিরোধিতা করার জন্যই বিরোধিতা করা' হয়েছে সেই মনোভাব কিঞ্চিৎ অনুপস্থিত ছিলো খালেদা জিয়া'র বক্তব্যে। তারপরেও তাঁর বক্তব্যকে ঠিক 'বন্ধুসুলভ' বলতে যা বুঝায় তা মনে হয় নি।
সহমত। তাঁর খেয়াল করা উচিত যদি 'কৌশলগত ভুল'-টা না করা হতো তাহলে কত বড় ভুল হতো। আজ এর চেয়েও বিরক্তিকর স্টেটমেন্ট দিয়েছে তারা।

তীরন্দাজ এর ছবি

একটি প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত সুশৃঙ্খল বাহিনীর মধ্যে নরহত্যার উৎসবে মেতে উঠবার যে হিংস্র মানসিকতা দেখা গেল তাতে অনুমান করা যায় তৃতীয় পক্ষটি কী সুকৌশলে ভাইয়ের বিরুদ্ধে ভাইকে ব্যবহার করেছে।

সেনা অফিসাররা তাদের অধস্তন ননকমিশন্ড সৈন্যদেরকে, বা বিডিআর সহস্যদের কখনো ভাই বলে ভেবেছে কি? যদি ভাবতো, তাহলে বাইরের কারো প্রভাবে, কুবুদ্ধিতে হলেও ঘটনাটি এতো বেশী রক্তক্ষয়ী হতো না। যখন উল্টো দিক থেকে আঘাতটি আসে, তখনই সুবিধানুযায়ী ভাইএর ভুমিকাটুকু পর্দার মতো সামনে তুলে ধরা হয়!

**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

চলুক

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

চলুক

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

চলুক
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

সাধু এর ছবি

সেনাপতি জিয়ার বিধবা স্ত্রীর বক্তব্যের মূল সুরটা ছিল অত্যান্ত দায়িত্ব ও কান্ডঞ্গান বর্জিত, মোটেই তা বন্ধুসুলভ নয় । এটা মানুষকে বিভ্রান্ত করতে পারে ।

অতিথি লেখক এর ছবি

এই ঘটনায় কার কি লাভ হইছে জানি না, তবে সবথেকে বড় ক্ষতিটা হইছে বাংলাদেশের!!

এই ক্ষতিটা বাংলাদেশীদেরকেই কাটিয়ে উঠতে হবে।

-সামুরাই

মাহবুবুল হক এর ছবি

খালেদা জিয়া সরকারকে চাপে রেখে সেনাবাহিনীর সেন্টিমেন্টকে কোলে টানার ঘৃণ্য খেলায় মেতেছেন। তা না হলে 'কি করিলে কি হইত' মার্কা দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য দিতেন না। তবে এবার তার কথা হালে তেমন পানি পাচ্ছে না। কারণ বাঙালির প্রাণশক্তি বারবার অদম্য ও অজেয় হয়ে ওঠে দুর্যোগের সময়। এই জাতীয় দুর্যোগেও একথা বাঙালি প্রমাণ করেছে।
প্রাণ নিয়ে বেঁচে আসা একজনের কাছে শুনেছি, অত্যাচারের ধরণ ছিল ভয়াবহ এবং নৃশংস। ১১ টা/ সাড়ে ১১টার মধ্যেই সেনা অফিসারদের হত্যাযজ্ঞ প্রায় শেষ হয়, তারপর চলে লুটপাট,পরিবারবর্গের ওপর অত্যাচার, আর পৈশাচিক কায়দায় উল্লাস প্রকাশের পর্ব। মন্ত্রীরা যখন দফায় দফায় যাচ্ছেন তখনও এসব থেমে ছিল না। বিশাল পিলখানার ছোট্ট কোণায় তাদের যাতায়াত সীমাবদ্ধ ছিল। গভীর রাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সফরের মাধ্যমে প্রকৃত অবস্থা আঁচ করতে পারে সরকার।
.................................................................................................................

--------------------------------------------------------
দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে/ লিখি কথা ।
আমি যে বেকার, পেয়েছি লেখার/ স্বাধীনতা ।।

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

খালেদা জিয়া বরাবরের মতো আগুন নিয়ে খেলছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, যখন সত্যিসত্যি সার্বভৌমত্ব বিপন্ন তখন সরকারের উচিত তা নিয়ে কথা বলা। কিন্তু রাজনীতি বলছে বিএনপি, আর প্রশাসনিক কাজ করছে আলীগ। আওয়ামী লীগ মনে হয় এখনো এ ঘটনার রাজনৈতিক তাতপর্য বুঝে ওঠেনি। তাদের বুদ্ধিজীবীদেরও মিডিয়ায় তাই দিশেহারা দেখাচ্ছে। বিএনপির লোকেরা বরং সুনির্দিষ্ট ও গোছানো কথা বলছেন।

সাধারণ ক্ষমা ঠিক ছিল। আজ বিডিআরের সাবেক প্রধান ও আর্মির লোকেরাও বলছে, বিডিআর হত্যকাণ্ডে জড়িত নয়, তাদের পটভূমি হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এর অর্থ তারাও বিদ্রোহীদের সাধারণ ক্ষমাই দিতেন। সুতরাং বিতর্ক সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নয়, টাইমিং নিয়ে । আরো স্পষ্ট করে বললে, আর্মিকে ততক্ষনাত এ্যাকশন করতে দেয়া বা না দেয়া নিয়ে। এটা আমরা আলাদা করে ফেলতে পারি সাধারণ ক্ষমার বিতর্ক থেকে।

মুম্বাইয়ে এর থেকে কম, মাত্র ১০/১২ জন সন্ত্রাসী বিরাট বাহিনীকে তিনদিন কাবু করে রেখেছিল। তারপরও কমান্ডো অভিযানের ফলে ফ্রেন্ডলি ফায়ারেই মারা গেছে বেশি লোক। আর এখানে হাজার হাজার সশস্ত্র লোক, জনারণ্য, অন্তর্ঘাতক পরিবৃত পরিবেশ ইত্যাদি মেলালে কোনোভাবেই বলা যায় না, যা হয়েছে তার থেকে ভিন্ন কিছু হতে পারতো।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

এনকিদু এর ছবি

যুদ্ধাপরাধীদের সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা করেছিলেন। জাতির জনকের হত্যাকাণ্ড এবং পরবর্তী রাজনৈতিক ধারা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ানো দেশদ্রোহী ও ষড়যন্ত্রমূলক আচরণের প্রমাণ জনসমক্ষে রেখে ফেলার পর, একাত্তরের ও দু হাজার নয়-এর বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র ও হত্যাযজ্ঞের বিচার এখন কেবল বাংলাদেশের ভবিষ্যতের স্বার্থেই।
পিলখানা ট্র্যাজেডি এবং একাত্তরের ট্রাজেডির ষড়যন্ত্রকারীদের খুজেঁ বের করা, সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে দেশপ্রেমিক বাংলাদেশ ঐক্যবদ্ধ।

একমাত্র সত্যের উদঘাটন এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিই পারে ভবিষ্যতের বাংলাদেশকে নিরাপদ রাখতে। কতিপয় স্বার্থপন্থীদের স্পেকুলেশনের ল্যাবিরিন্থে ঘুরপাক না খেয়ে বাংলাদেশপন্থী জনমানুষ সব সময় ঐক্য, শান্তি এবং মানবাধিকারের পক্ষে।

চলুক


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।