প্রসঙ্গ সমকামিতা: কয়েকটি প্রশ্ন

জ্বিনের বাদশা এর ছবি
লিখেছেন জ্বিনের বাদশা (তারিখ: সোম, ১০/১১/২০০৮ - ৪:৪৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

চিন্তার প্রগতিশীলতা আর কর্মের প্রগতিশীলতার সংঘর্ষ

লেখাটার জন্য একটা সাবটাইটেলের প্রয়োজন ছিলো, সেটাই উপরের গাঢ় অক্ষরে লেখা। এই পোস্টে আসলে সমকামিতাকে পটভূমি ধরে চিন্তার সুশীলতা আর কর্মের সুশীলতার মাঝে পার্থক্য থাকতে পারে কিনা সেটা নিয়ে কিছু "ফুড ফর থটস" সবার সাথে শেয়ার করতে চাই।

সাবটাইটেল থেকেই বোঝার কথা, তাও পরিস্কার করেই বলি, যখন কোন বিতর্কিত বিষয়ে আপনার মতামত চাওয়া হয়, তখন খুব সহজেই প্রগতিশীলতার মানদন্ডে মেইনস্ট্রিমে থাকা মতের পক্ষে বলে দিয়ে নিজেকে একটা অবস্থানে তুলে ধরা যায়। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে আমরা সেটা কতটা মানি, সেই প্রশ্নটা আসলেই থেকে যায়। যেমন, আমাদের জাপান প্রবাসীদের একটা উদাহরণ দিতে পারি, যেখানে কোন আড্ডায় দেখা যাচ্ছে আমরা সবাই দূর্ণীতির বিরোধিতা করছি, দেশের দূর্ণীতিবাজ অফিসারদের কিভাবে শাস্তি দিলে কতটা লাভ হবে সেসব নিয়ে বিরাট জটিল সব তত্ব দাঁড় করিয়ে ফেলছি, অথচ অনেকেই বছরের পর বছর দেশ থেকে দুই নম্বরী উপায়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স এনে গাড়ী মেইনটেইন করছি; কারণ এদেশে লাইসেন্স নেয়া অনেক ঝামেলা, সবচেয়ে ঝামেলাবিহীন উপায় হলো লাখ তিনেক ইয়েন (দুলাখ টাকার মতো) খরচ করে ড্রাইভিং স্কুলে ভর্তি হওয়া, কিন্তু আজাইরা খরচ করবে কে?অথবা আরেকটু সার্বজনীন উদাহরণ দেয়া যায়, যেমন ধরুন কোন ধর্ষনের কাহিনী আসল খবরে, আপনার পাশের কেউ কষ্টের সুরেই বলে উঠলো "মেয়েটার মান-ইজ্জত সব গেছে", আর সেটা শুনে আপনি বেশ প্রগতিশীল একটা টোনে বলতেই পারেন, "মান-ইজ্জত শেষ হবার কি আছে? মেয়েটার প্রতি সমাজের এই দৃষ্টিভঙ্গি!! এগুলোই দায়ী ....ব্লা ব্লা ব্লা"। কিন্তু একটু ঠান্ডা মাথায় ভাবলে, এভাবে বলা সহজই, কিন্তু বিয়ের পাত্র-পাত্রী পছন্দ-টছন্দ হবার পর যদি জানা যায় পাত্রী বছর পাঁচেক আগে ধর্ষিত হয়েছিলো --- কজন পিছিয়ে পড়বেনা?
তো, এটাই হলো চিন্তা আর কাজের ক্ষেত্রে প্রগতিশীলতার পার্থক্য। যে লোকটি ভুয়া লাইসেন্স আনাবেন বা যে লোকটি "ধর্ষিতা" শুনে বিয়ের সন্মন্ধ ভেঙে দেবেন, তাঁকেই দেখা যাবে যে বিতর্কে আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে দূর্ণীতির বিরুদ্ধে, ধর্ষনের সাপেক্ষে সমাজের অবস্থানের বিরুদ্ধে প্রাণপণ তর্ক করে যাচ্ছেন। ব্যাপারটা এমন না যে তিনি ভন্ড, ব্যাপারটা এমন না যে তিনি আসলেই যা বলছেন তা ভাবছেননা। আসলে এটাই মানুষের জন্য খুব স্বাভাবিক, নিজেকে সে সমাজের জেনারেল টেন্ডেন্সীর সাপেক্ষে একটু স্পেশালিটি দিতে চায়, হয়তোব।

এখন আসি সমকামিতা প্রসঙ্গে। সমকামিতা এখনকার সমাজে একটা হট টপিক, নিঃসন্দেহে। আমাদের দেশে এখনও ব্যাপারটাকে নিচু চোখে, হাস্যকর চোখে ("ফালতু" টাইপের শব্দ) দেখা হয়, তবে উন্নত বিশ্বের ট্রেন্ডটা এখন অন্যরকম। প্রায় অনেক দেশেই সমকামিতাকে মেনে নেয়া হয়েছে, প্রকাশ্যে নিজের সমকামিতার কথা বলতে সেখানে আর বাঁধা নেই। বিষমকামীদেরও একটা বিশাল অংশ সমকামীদের অধিকারের পক্ষে কথা বলছেন। আশা করা যায় যে অদূর ভবিষ্যতেই সমকামীদের অধিকার নিয়ে কোন বিতর্কই থাকবেনা, এবং এটাও আশা করে যায় অদূরভবিষ্যতকে আরেকটু দূরে ঠেলে দেখলে, সেখানে দেখা যাবে যে, বাংলাদেশের মতো গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ডে পিছিয়ে পড়া সমাজেও বিষয়গুলো খাপ খেয়ে গেছে। ইনফরমেশন টেকনোলজীর এক্সপোনেনশিয়াল অগ্রগতির সাথে সাথে সমাজের পরিবর্তনও একটা সেমি-এক্সপোনেনশিয়াল বেগ পাচ্ছে -- বলা যায়।

এটা এখন প্রমাণিত যে সমকামিতা মানুষের একটা প্রাকৃতিক প্রবৃত্তি। আমেরিকার পুরুষদের উপর চালিত জরিপে দেখা যায় যে ১০% পুরুষ ১৫ থেকে ৬০ এর মধ্যে কমপক্ষে ৩ বছরকাল সমকামিতার মধ্য দিয়ে গেছে, এবং ইংল্যান্ড/জার্মানী/আমেরিকান পুরুষদের উপর চালিত আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, ২% থেকে ৫% এর মতো পুরুষেরা সারাজীবন সমকামী ছিলেন/আছেন। মেয়েদের হারটা পুরুষের চেয়ে কিছু কম। সব মিলিয়ে আমরা ধরে নিই যে ৩% পুরুষ আর ২% মহিলা প্রাকৃতিকভাবে সমকামী। মানে গড়ে প্রতি ৪০ জন মানুষের মধ্যে একজন সমকামী। সচলেও ৩০০ জন সদস্য থাকলে অন্ততঃ ৭/৮ জন থাকার কথা, যারা সমকামী।

এখন কয়েকটা প্রশ্ন, যতদূর সম্ভব একদম আপনার নিজের সিনারিও ভেবে উত্তরটা ভাবুন।

প্রথম প্রশ্ন:
ধরুন আপনার সন্তানটির মধ্যে সমকামিতার লক্ষণ দেখতে পেলেন। আপনি কি এটাকে একটা সমস্যা হিসেবে নেবেন? মন খারাপ করবেন?তাকে বাঁধা দেবেন? অথবা কোন রকম থেরাপি (সায়েন্টিফিক/সোশ্যাল/রিলিজিয়াস) নেয়াতে উৎসাহিত করবেন?

দ্বিতীয়প্রশ্ন:
আপনি যদি উন্নত দেশে প্রবাসী হন, তাহলে হয়ত সামাজিক কারণে আপনার সন্তানটির নিজের সমকামিতা উপভোগের সম্ভাবনা বেশী, যেটা ভবিষ্যতে আপনার পরিবার, বন্ধুবান্ধব সবাই জানবেন। আপনি কি করবেন? দেশে শিফট করার কথা ভাববেন?

তৃতীয় প্রশ্ন:
আপনি যদি এখন দেশে থেকে থাকেন, এবং ভাবেন যে সন্তানকে তার নিজের পথে বাঁধা দেবেননা, তাহলে কি সমাজের কাছে মুখ রক্ষা করতে বিদেশের সেটল হবার চেষ্টা করবেন, না সমাজে থেকে ফাইট করবেন?

আবার একটু আলোচনায় আসি, উপরে উল্লিখিত প্রাকৃতিক সমকামিতা বলতে মূলতঃ এটাই বোঝায় যে এরা জন্মগতভাবেই সমকামী। মানে এদের জেনেটিক কোডেরই কোথাও সমকামিতার একটা ফাংশন ঢোকানো আছে। তাছাড়া ইমোশোনাল, সাইকোলজিকাল সমকামিতাও আছে, তবে সম্ভবতঃ সেটার শতকরা হার অনেক কম। এখন খেয়াল করুন, জেনেটিক্সের উপর রিসার্চ যেভাবে এগুচ্ছে তাতে আর খুব বেশী একটা সময় লাগবেনা যে জন্মের পরই বাচ্চার জিন/ডিএনএ পরীক্ষা করে বলে দেয়া যাবে যে তার সমকামী/বিষমকামী হবার চান্স কতটুকু। আবার হয়তো জেনেটিক ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে ১০০ ভাগ বিষমকামীও করে ফেলা যাবে অদূরভবিষ্যতেই। এখন আরেকটা প্রশ্নে আসি:

চতুর্থ প্রশ্ন:
ধরুন চিকিৎসাবিজ্ঞানের সেরকম উন্নতির সময়ে আপনার সন্তানটি জন্মালো, আর জন্মের পর ডায়াগনোসিস করে দেখা গেলো যে শিশুটি সমকামী হবে। কিন্তু চাইলে জেনেটিক চিকিৎসার মাধ্যমে খুব সহজে এবং কম খরচে বাচ্চাটিকে বিষমকামী করে ফেলা যাবে। আপনি কি করবেন? চিকিৎসা করাবেন?

পাশ্চাত্যে এবং মোটামুটি সারা পৃথিবীতেই এখন যে ট্রেন্ড, তাতে বলা যায় যে আর বছর দশ-বিশেকের মধ্যে হয়ত সারা পৃথিবীতেই সমকামীরা নিজেদের ইচ্ছে মতো কোন ডিসক্রিমিনেশন ছাড়াই সমাজে ঘোরাফেরা করতে পারবেন। অর্থাৎ এখন পর্যন্ত মানব সভ্যতার ইতিহাসে সমকামীরা যেরকম কষ্ট করে বিষমকামীর অভিনয় করে সন্তানের মাতা-পিতা হয়ে এসেছেন, সেটা কমে যাবে, অথবা একেবারে থেমে গেলেও অবাক হবার কিছু নেই। এর ফলে যেটা হতে পারে, তা হলো, নেক্সট জেনারেশনে জিনের হস্তান্তরটা সমকামীদের ক্ষেত্রে জেনারেশন বাই জেনারেশন অনেক কমে যাবে। মানে, এটা চলতে থাকলে সময়ের সাথে সাথে একসময় সমকামীরা এক্সটিন্ট হয়ে যাবে।

যেহেতু এরকম সমস্যার সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে, কাজেই প্রাকৃতিকভাবেই সমকামী মানুষেরা হয়ত চাইবেন অন্ততঃ নিজের বংশধর রেখে যেতে। যেটা প্রকাশ পাবে ভবিষ্যতে তাঁদের নিজ সন্তানের প্রতি এফিনিটি থেকে, অর্থাৎ সমাজে সমকামীদের নিজ সন্তান তৈরীর একটা চল শুরু হতে পারে। সেটা যেহেতু নিজের পার্টনারের মাধ্যমে সম্ভব না, সেহেতু, স্পার্ম ব্যাংকে ডোনেশন-লোন দুটোই হয়ত তারা করতে চাইবেন।

পঞ্চম প্রশ্ন (ছেলেদের জন্যে):
ধরুন আপনি স্পার্ম ডোনার। আপনি জানলেন যে একজন লেসবিয়ান মহিলা আপনার স্পার্ম নিতে চাচ্ছেন ব্যাংক থেকে, আপনার অনুমতি প্রয়োজন। অনুমতি দেবেন?

ষষ্ঠ প্রশ্ন (মেয়েদের জন্যে):
ধরুন আপনি স্পার্ম লোন নেবেন। যার স্পার্ম নেবেন তাঁর প্রোফাইলের সবকিছু পছন্দ হলো, কিন্তু শেষে জানলেন যে ভদ্রলোক একজন গ্যে। আপনি কি করবেন?

বিঃ দ্রঃ
সমকামিতা নিয়ে আমার পড়াশোনা সীমিত ;)। জেনেটিক্স/ ডিএনএ এসব নিয়ে আরো সীমিত। হয়তো আমি যেভাবে ভাবছি বাস্তবে জেনেটিক্সের মাধ্যমে সেক্সুয়াল ওরিয়েন্টেশন নিয়ন্ত্রণ অত সহজ নাও হতে পারে। তাও, উপরের সম্ভাবনাগুলোকে কল্পকাহিনী ভেবে হলেও নিজের উত্তরগুলো যাচাই করুন।

[নিজের মতামত বলতে পারি, সমকামীদের যাবতীয় অধিকার দেয়ার পক্ষে আমি। কিন্তু উপরের প্রশ্নগুলো নিয়ে যখন ভাবতে গেলাম, বিশেষ করে নিজ সন্তানের ব্যাপারে, সত্যি বলতে কি, আমি শুধু এটাই মনে মনে ভাবলাম যে, "আমাকে যাতে কোনভাবেই এমন পরিস্থিতিতে পড়তে না হয়" -- এটা আমার একেবারে অনেস্ট অনুভূতি।]


মন্তব্য

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

নিজের সন্তানের ক্ষেত্রে যদি টের পাই সে প্রাকৃতিক ভাবেই সমকামী, তাহলে আমার তো কিছু করার থাকবে না। তাকে ফেরানোর চেষ্টা মানে গাধা পিটিয়ে ঘোড়া বানাবার অপচেষ্টা।

আর হ্যাঁ, যদি প্রাকৃতিক ভাবে সেটা না হয় তাহলে তাকে বাধা দেই জোরকরি বা তালা দেই কিংবা যাদু না সোনা না বলে কয়ে যেভাবেই হোক বিষমকামী হতে বাধ্য করবো।

____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

নিজের সন্তানের ক্ষেত্রে যদি টের পাই সে প্রাকৃতিক ভাবেই সমকামী, তাহলে আমার তো কিছু করার থাকবে না। তাকে ফেরানোর চেষ্টা মানে গাধা পিটিয়ে ঘোড়া বানাবার অপচেষ্টা।

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং করে যদি প্রাকৃতিক সমকামী কাউকে বিষমকামী করে ফেলা যায়, তাহলে কি সেই সুযোগ নেবেন? (চতুর্থ প্রশ্ন)

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- প্রথম তিনটা প্রশ্ন পড়ে মোটামুটি শিউর ছিলাম, "তাইলে হালায় বিয়া-ই করুম না!"

কিন্তু বাঁচালেন চতুর্থ প্রশ্ন দিয়ে, "যাব্বাবা, অল্পতে চোখটা বাঁচলো!"

পঞ্চম প্রশ্নের প্রসঙ্গেই যাবো না, কারণ যাবতীয় জিনিষপাতি 'ডোনেট' করার নাম শুনলেই আমার ডর করে। বিশ্বাস করেন আমি এখনো আমার ব্লাড গ্রুপই জানি না। রক্তদানের কথা শুনলেই কমপক্ষে তিনবার মূর্ছা যাই। মন খারাপ

কমেন্ট আপডেটঃ সচলে তাইলে লোহার জাইঙ্গার প্রচলনটা করে ফেলতেই হবে দেখছি! চিন্তিত

মেম্বর ধুরুহী আর মোঢিমু'র করা ফ্যাশন শোটা অর্গানাইজ কর্তে হইবে শীঘ্রই। দেঁতো হাসি
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

তাইলে তো নিজের বিয়ার সম্ভাবনারে বিজ্ঞানের উন্নয়নের সাথে সমানুপাতিক বানায়া ফেললেন মনে হয় চোখ টিপি ... বাই দ্য ওয়ে, জেনেটিক্সের বিজ্ঞানীরা যদি এখন হঠাৎ কইরা কয় এতদিন জেনেটিক্স নিয়া আমরা যা মইছি সব চাপাবাজি ছিলো --- কি অইবে? চোখ টিপি
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

মুশফিকা মুমু এর ছবি

সচলেও ৩০০ জন সদস্য থাকলে অন্ততঃ ৭/৮ জন থাকার কথা, যারা সমকামী।

চিন্তা করতেসি কে কে হইতে পারে চিন্তিত

আমার মতে সমকামি বন্ধু-বান্ধব থাকায় কোন অসুবিধা নেই, আমার ছিলও, তবে আমার ছেলে-মেয়ে হলে তা মানতে পারব না।
প্রশ্নের উত্তর:
১) অবশ্যই মন খারাপ করব, হয়ত বাড়ি থেকে বেরও করে দেব, তবে যেহেতু এখনও মা হইনি তাই হয়ত তখন অন্যরকম ফিলিংস থাকতেও পারে। জানিনা।
২) না
৩) নট এপ্লিকেবল
৪) অবশ্যই বিষমকামি করে ফেলব।
৬) নিব না।
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

তানবীরা এর ছবি

মুমু তোমার মধ্যের সুন্দর সরলতা আর সত্য বলার সাহস আমাকে বরাবরই মুগ্ধ করে। এখন আমি মা তোমাকে একটা কথা বলছি,

১. সন্তান মেন্টালী রিটায়ার্ড, ল্যাংরা। লুলা যাই হোক, ত্যাগ করা কিন্তু এতো সোজা না।
২. আমরা অনেক কিছুই ভাবি মেনে নিতে পারবো না কিন্তু পরিস্থিতি জীবন অনেক কিছুই বাধ্য করে মেনে নিতে। এক সময় সেটাই এতো স্বাভাবিক হয়ে যায় যে সেটার মধ্য আর অস্বাভাবিকতাই লক্ষ্য করা যায় না। ধরো উদাহরন মাত্র, এইযে আজকাল এতো এতো বাঙ্গালী ছেলে বাইরে হাত পুড়িয়ে রেধে খাচ্ছে তারা কিন্তু দেশে থাকতে তা ভাবতেই পাড়তো না।
৩. জীবন আসলে ঢের ঢের বড় - কবির নামটা এই মূহুর্তে মনে পড়ছে না।
৪. ভালো মন্দ যাহাই আসুক সত্যরে লও সহজে ----রবি ঠাকুর। জীবনের বেশীর ভাগ চাওয়ার সাথেই যেহেতু পাওয়ার মিল থাকে না তাই জীবনের ভালো থাকার উপায় হলো কারো প্রতিই বেশী ডিমান্ড না রাখা।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

মুশফিকা মুমু এর ছবি

হুমমম আপু আপনি ঠিক বলেছেন, আসলেই আমরা অনেক কিছুই ভাবি একভাবে আবার পরিস্থিতির জন্য অন্যকিছু করি, নিজের এক এক্সপেরিয়েনস থেকেই বলছি একথা। অনেকে উদারতার কথা বলে যখন আসলেই কিছু হয় তখন মানতে পারেনা, আবার অনেকে মানতে পারবেনা বলে পরে সাভাবিক ভাবেই সব মেনে নেয়। মেন্টালী রিটায়ার্ড বা ল্যাংরা ছেলে-মেয়েকে ত্যাগ করবে কেন বাবা মা ইয়ে, মানে... । আমি মা তো হইনি এখনো তাই অনেক কিছুই সহজে বলতে পারি, আসলে যখন হবো তখন হয়ত তার অপোসিট টাই করব।
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

চিন্তা করতেসি কে কে হইতে পারে

অন্ততঃ ধুসর গোধূলী না চোখ টিপি
হ্যায় যেভাবে দিনরাত শালী-শালী করে!!
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

কীর্তিনাশা এর ছবি

আমার উত্তরটাও আপনার উত্তরের মতো -

"আমাকে যাতে কোনভাবেই এমন পরিস্থিতিতে পড়তে না হয়"

সমকামিদের অধিকার প্রতিষ্ঠা হোক তাতে আমার কোন সমস্যা নেই। কিন্তু ব্যাপারটার সাথে নিজের সন্তান বা প্রিয়জনকে জড়িয়ে চিন্তা করাই মুশকিল আমার জন্য। এক কথায় অসম্ভব।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

হুমমমম ... যাক, নিজের মতো একজন পাওয়া গেলো হাসি
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

পুতুল এর ছবি

আমার মতে সমকামিতা কোন সমস্যা নয়। কিন্তু জেনেটিক্যাল কোন কারন এখনো আমি জানিনা। যে কজন সমকামী মানুষ দেখেছি, মানুষ হিসাবে তাদের খুব ভাল লেগেছে। কে কী ভাবে তার যৌনাকাঙ্খা মেটাবে সেটা তার একান্ত ব্যাক্তিগত ব্যাপার। সব হেথারো মানুষের যৌন রুচি এক রকম নয়। এক একজন একেক ভাবে যৌনান্দ পায়।
আমাদের দেশে অঞ্চল ভেধে সমকামী পুরুষদের বেশ সংগঠিত মনে হতো। কথা গুলো আমার শোনা কথা। যেমন সিলেট অঞ্চলে নাকী "ঘাটু" নামে এদের আক্ষ্যায়ীত করা হতো। চট্রগ্যামেও এদের কথা শোনা যায়।
আমার মতে সমকামীতা মানব সভ্যতার সমান বয়সী। সব দেশে সব সমাজে সব সময় তা ছিল।
কোন একটা ধর্মের বইতে পড়েছিলাম "সাহাবী প্রশ্ন করছে - হুজুর আমরা বিবিদের খুব মিস করছি! হুজুরের জবাব - তোমরা চাইলে বন্দীদের সাথে আজল (শব্দটার মানে কী) করতে পার!
(দয় করে কেউ ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে দেখবেন না)
শুধু আমার কৌতূহল ব্যাপারটা কী? ধর্মেও স্বীকৃত?

কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আমাদের মেয়ে পৃথিবীতে আসছে। বাবা হিসাবে আমি চাইব আমার সন্তান যেন সুখী হয়। একটা লম্পট দায়ীত্বহীন ছেলের প্রেমে পরে দুর্বিসহ জীবনের চেয়ে একজন সমকামী মেয়ের সাথে আমার মেয়ে যদি সুখে থাকে তবে আমার, তাতেই সুখ।
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

ধর্মে মনে হয় নিষেধ ... যতটুকু জানি ... আজল হলো ইজ্যাকুলেশনের আগে উইথড্র করা ... যাই হোক, ধর্ম এখানে প্রসঙ্গ না

বাঙালী হিসেবে আপনাকে ম্যাভেরিক মানতেই হয়
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

জিজ্ঞাসু এর ছবি

ব্যাপারটা আদৌ স্বাভাবিকতা বলে কেউ মেনে নেয়নি। অন্যান্য handicap দের ক্ষেত্রে যেমন আমরা সামাজিক ন্যায়পরায়ণতা ও আইনানুগ সাম্যের পক্ষে, সমকামীদের ক্ষেত্রেও তেমন। দৃষ্টিভঙ্গিটা বদলাবে এক্ষেত্রে। সমকামীতাকে গ্রহণ করার প্রশ্নে নয়। সমকামী বা স্বাভাবিক বা বৈকল্যগ্রস্ত সবার ক্ষেত্রে মানবীয় সমানাধিকারের দৃষ্টিভঙ্গির প্রশ্নেই সমাজে পরিবর্তন এসেছে বা আসবে।

যেহেতু ব্যাপারটা স্বাভাবিক নয় তাই নিজের ক্ষেত্রে মেনে নেয়া কঠিন। সম্ভব হলে অবশ্যই স্বাভাবিকতায় ফিরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করাই যুক্তিসঙ্গত। যেমনটা অন্যান্য handicap দের বেলায় প্রযোজ্য।

___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

এখানেই আসলে প্রশ্নটা:
সমকামিতাকে হ্যান্ডিক্যাপ বা বৈকল্য বলে ধরা হয়না এখন আর। এটা স্বাভাবিক ব্যাপার। তারপরেও এর প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিটা পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে পারছেনা। সম্ভবতঃ এর স্বাভাবিকতাটা সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবার ট্রানজিশন পিরিয়ড চলছে বলেই। পঞ্চাশ বছর পর সচলের পাঠকরা স্তুপ থেকে এই পোস্টটা উদ্ধার করে পড়লে হয়ত ভাববে -- আহা! মানুষ কত অদ্ভুতরকমের ভাবনা ভাবত সেসময়!

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

হিমু এর ছবি

১. মেজাজ খারাপ হয়ে যাবে ভাই। কী করুম এখনও জানি না। তবে ব্যাপারটা ঠিক সিগারেট ছাড়ানোর মতো না সম্ভবত। কথা বলে যদি কাজ না হয় তাহলে কিছু করার থাকবে না।

২. না। কেউ যদি সমকামী হয় তাহলে সে দেশান্তরী হয়েও তা পরিত্যাগ করতে পারবে না। স্থান এখানে তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। হুদাই লাগেজ টানা হবে।

৩. পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে। আমি যতদূর জানি সমকামিতা বাংলাদেশে আইনত নিষিদ্ধ। দেশে থেকে তার জন্যে ফাইট করা অত্যন্ত কঠিন একটা কাজ হবে। সেই শক্তি আর ধৈর্য আরো বছর কুড়ি পরে (সন্তানের পনেরো বছর বয়স ধরে হিসাব করছি আর কি) আমার থাকবে কি না আমি নিশ্চিত নই।

৪. আমি যদি কোনদিন সন্তানের পিতা হতে চাই, তাহলে পৌত্র দৌহিত্রের পিতামহ মাতামহও হতে চাইবো। কাজেই জেনেটিক্যাল এনজিনিয়ারিঙের সুযোগ পেলে হয়তো এই পরিবর্তনের সুযোগটি গ্রহণ করবো।

৫. আমি লেসবিয়ান কোন মহিলাকে কষ্ট করে স্পার্ম ব্যাঙ্কে যেতে দিতেই নারাজ। তিনি সম্মত থাকলে ব্যাপারটা নিয়োগ পদ্ধতিতেই হতে পারে দেঁতো হাসি , যেভাবে ব্যাসদেব পান্ডু আর ধৃতরাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছিলেন। আপত্তির কিছু নাই। কত অপচয় হলো ... আর এ তো বেশ ভালো প্রস্তাব হাসি


হাঁটুপানির জলদস্যু

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

৪ নং-এর জন্য একটা ভালো যুক্তি খুঁজছিলাম .... বিশেষ করে ধরুন নিজের স্ত্রীর সাথে যদি ব্যাপারটা নিয়ে দ্বিমত দেখা দেয় তখন কি যুক্তি দেখাবো তা নিয়ে ... গুড পয়েন্ট .... আমি আরো কয়েক জেনারেশন নিজের জিন রেখে যেতে চাই

৫ নং এর জন্য আপনার প্রতি শুভকামনা রইলো ... স্বপ্নপূরণ হোক চোখ টিপি
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

হিমু এর ছবি

এইটা কি ইনসাফ হইলো বস? স্বপ্ন দেখাইলেন আপনে, পূরণের দায়ও তো আপনাকেই নিতে হবে। যেম্নে পারেন আমারে একজন রূপসিনী স্পার্মিৎসুকা লেসবিয়ান যোগাড় কইরা দেন।


হাঁটুপানির জলদস্যু

ধুসর গোধূলি এর ছবি

আমি যদি কোনদিন সন্তানের পিতা হতে চাই, তাহলে পৌত্র দৌহিত্রের পিতামহ মাতামহও হতে চাইবো।
দোস্ত, তুই মাতামহ হইবি কেমনে? চিন্তিত
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

হিমু এর ছবি

মাতামহ মানে নানা। বাংলাটাই শিখতে পাল্লি না।


হাঁটুপানির জলদস্যু

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- হৈ ব্যাটা, আমি কি মাতামহী বুঝাইলাম নাকি?

জিজ্ঞেস করলাম জনসংখ্যার এই দুর্দিনে তুই কয় বাচ্চার গর্বিত বাপ হৈতে চাস? একের অধিক নাকি? আর যদি পয়লাটা পোলা হয় তাইলে মাতামহ হবি ক্যামনে হালায়?
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

হিমু এর ছবি

আমার মনে হয় জ্বিনের বাদশার ডিসকাশনটার একটা সিরিয়াস চেহারা আছে। এই থ্রেডে খোশগল্প আর না করি।


হাঁটুপানির জলদস্যু

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

এই বিষয়ে আমার ভাবনা খুব একটা ক্লিয়ার না... তাই জবাব দিতে চাচ্ছি না। আমি সমকামী বেশ কজনের সাথেই (ছেলে এবং মেয়ে) মিশেছি। আমার নিজের এই বিষয়ে আগ্রহ হয়নি। কিন্তু তাদের সাথে আমার খারাপ লাগেনি কখনোই। ঘৃণা বা অন্য যা কিছু তাদের জন্য আমাদের সমাজে প্রচলিত তা ছাড়াই মিশতে পেরেছি।

নিজের সন্তানের বেলায় কি করবো তা এখনো জানি না। তার বেসিক স্কুলিংয়ের সময়টায় চেষ্টা করবো ভালো কিছু দিতে। তবে তারপরে সে নিজের সিদ্ধান্তেই চলবে। আমি বাধা দিবো না এটা বলতে পারি। হয়তো কষ্ট পাবো, তবু হয়তো মেনে নেবো।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- বস, আমার নিজের জবাবটা পুরা ফান করে দেওয়া হলেও জ্বিনের বাদশা'র পোস্টের মূল ফোকাসটাই কিন্তু ওখানে। "মেনে নেওয়া"- এটা আমরা যতো সহজে বলতে পারি, যখন সমস্যাটা সামনে এসে দাঁড়ায় তখনই বুঝা যায় এই সহজে বলে ফেলা "মেনে নেওয়া"টা আসলে কতোটা কঠিন।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

হুমমম ... বাস্তব পরিস্থিতিতে হয়ত এটাই আমাদের করতে হবে ... মনে কষ্ট পাওয়াটাকে মনে হয় এড়ানো কঠিন হবে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

প্রথম প্রশ্ন:
ধরুন আপনার সন্তানটির মধ্যে সমকামিতার লক্ষণ দেখতে পেলেন। আপনি কি এটাকে একটা সমস্যা হিসেবে নেবেন? মন খারাপ করবেন?তাকে বাঁধা দেবেন? অথবা কোন রকম থেরাপি (সায়েন্টিফিক/সোশ্যাল/রিলিজিয়াস) নেয়াতে উৎসাহিত করবেন?

এটাকে সমস্যা হিসেবেই নেয়া হবে। থেরাপি নিতে উৎসাহিত করা হবে। কাম স্পর্শের পাশাপাশি মানসিক ব্যাপারও। তবে প্রকৃতির বংশরক্ষা নিয়মে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আগ্রহ থাকাটাই স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে অস্বাভাবিকতাকে একটি রোগ হিসেবে দেখা যায়। তবে সমকামী কাউকে ভিন্নচোখে দেখার কিছু নেই, অস্বাভাবিক পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণে সাহায্য করা যেতে পারে।

দ্বিতীয়প্রশ্ন:
আপনি যদি উন্নত দেশে প্রবাসী হন, তাহলে হয়ত সামাজিক কারণে আপনার সন্তানটির নিজের সমকামিতা উপভোগের সম্ভাবনা বেশী, যেটা ভবিষ্যতে আপনার পরিবার, বন্ধুবান্ধব সবাই জানবেন। আপনি কি করবেন? দেশে শিফট করার কথা ভাববেন?

আমার পোলায় সমকামী হইলে কার বাপের কি?

তৃতীয় প্রশ্ন:
আপনি যদি এখন দেশে থেকে থাকেন, এবং ভাবেন যে সন্তানকে তার নিজের পথে বাঁধা দেবেননা, তাহলে কি সমাজের কাছে মুখ রক্ষা করতে বিদেশের সেটল হবার চেষ্টা করবেন, না সমাজে থেকে ফাইট করবেন?

আমার পোলায় সমকামী হইলে কার বাপের কি? - এটা বাংলাদেশে বসেও সত্য।

চতুর্থ প্রশ্ন:
ধরুন চিকিৎসাবিজ্ঞানের সেরকম উন্নতির সময়ে আপনার সন্তানটি জন্মালো, আর জন্মের পর ডায়াগনোসিস করে দেখা গেলো যে শিশুটি সমকামী হবে। কিন্তু চাইলে জেনেটিক চিকিৎসার মাধ্যমে খুব সহজে এবং কম খরচে বাচ্চাটিকে বিষমকামী করে ফেলা যাবে। আপনি কি করবেন? চিকিৎসা করাবেন?

চিকিৎসা করানোই ভালো।

পঞ্চম প্রশ্ন (ছেলেদের জন্যে):
ধরুন আপনি স্পার্ম ডোনার। আপনি জানলেন যে একজন লেসবিয়ান মহিলা আপনার স্পার্ম নিতে চাচ্ছেন ব্যাংক থেকে, আপনার অনুমতি প্রয়োজন। অনুমতি দেবেন?

তাকে চিকিৎসা করানো হবে। আশাকরি চিকিৎসার পরে আর তাকে কষ্ট করে স্প্যার্ম ব্যাঙ্কে দৌড়াতে হবে না। আর যদি একান্তই গো ধরে চিকিৎসা করাবেই না, তাইলে কি আর করা। দিমু। একটু স্প্যার্মই তো।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

আপনি তাহলে সমকামিতাকে অস্বাভাবিক বলে ভাবছেন? বিজ্ঞানীরা কিন্তু ভিন্ন কথা বলছেন।

পাঁচ নম্বর উত্তর পইড়া কতক্ষণ গড়াগড়ি খাইলাম চোখ টিপি
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

অভিজিৎ এর ছবি

আমি সমকামিতা নিয়ে একসময় ডিটেল একটা সিরিজ শুরু করেছিলাম সচলায়তনে। সিরিজটা আরো বারাবার ইচ্ছে ছিলো। কিন্তু সময়াভাবে করতে পারিনি। তবে প্রশ্নগুলোর উত্তর অন্ততঃ বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোন থেকে সেখানেই দিয়েছি। লেখাটা আছে এখানে ঃ

সমাকামিতা কি প্রকৃতিবিরুদ্ধ?

এছাড়া স্নিগ্ধার এই লেখাটিও হয়ত অনেকের কাছে আলাদা মনোযোগ দাবী করবে

এবারে জিনের বাদশার প্রশ্নগুলোর উত্তর দেয়া যাক -

১) আধুনিক চিকিৎসকেরা এবং মনোবিজ্ঞানীরা সমকালিতাকে কোন রোগ বলে মনে করেন না। উল্লেখ্য, ১৯৭৩ সালের ১৫ ই ডিসেম্বর American Psychiatric Association (বহু চিকিৎসক এবং মনোবিজ্ঞানীদের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা সংগঠন) বিজ্ঞান্সম্মত আলোচনার মাধ্যমে একমত হন যে সমকামিতা কোন নোংরা ব্যাপার নয়, নয় কোন মানসিক ব্যধি। এ হল যৌনতার স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। এদের স্কসুয়ার ওরিয়েন্টেশন সংখ্যাগরিষ্ট মানুষদের থেকে আলাদা। ১৯৭৫ সালে American Psychological Association একইরকম অধ্যাদেশ দিয়েছিলেন। সকল আধুনিক চিকিৎসকই আজ এ বিষয়ে একমত। কাজেই আমার সন্তানের মধ্যে সমকামিতার লক্ষণ দেখা দিলে এটাকে সমস্যা হিসবে দেখবার কোন কারণ নেই, বরং সমকামিতার কারণে সামাজিকভাবে কোথাও নিগৃহিত কিংবা ডিস্ক্রিমিনেটেড হচ্ছে কিনা সেটা দেখাই হবে পিতা হিসেবে আমার দায়িত্ব।

বাকি প্রশ্নগুলোর উত্তর প্রচ্ছন্নভাবে হলেও আমার লেখায় রয়েছে।



পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)


পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

তার মানে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সুযোগ আপনি নেবেননা, ধরে নেয়া যায়, রাইট?
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

এনকিদু এর ছবি

পঞ্চম প্রশ্নে আমার উত্তর ১০০ বার হ্যাঁ । ভাবতেই আমার রক্ত টগবগ করে ফুটতে শুরু করেছে । স্পার্ম কেমনে ডোনেট করে ? আপনার পরিচিত লেসবিয়ান থাকলে খবর দিয়েন, আমি রেডি ।

-----------------------------------------
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

স্পার্ম ডোনেট করার কথা ভেবে বেশী আনন্দিত হয়ে লাভ নেই .... ঐ লেসবিয়ানের সাথে আপনার দেখাও হবেনা চোখ টিপি
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

এনকিদু এর ছবি

দেখা হওয়ার দরকার নাই । জেনেটিক কোড ছড়িয়ে দিতে পারলেই চলবে ।

-----------------------------------------
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

হিমু এর ছবি

এনকিদুর উৎসাহ দেইখা টেনশনে পড়লাম। এত কম্পিটিশন। ও তো মনে হচ্ছে একাই দুনিয়ার তাবৎ স্পার্ম-সাবস্ক্রাইবার লেসবিয়ানের মার্কেট দখল করে ফেলবে। হেই মিয়া, লাইনে খাড়াও।


হাঁটুপানির জলদস্যু

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

হা হা হা হা .... এতক্ষণে হয়ত এনকিদুর আর লাইনে দাড়ানোর উৎসাহও নাই চোখ টিপি
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

এনকিদু এর ছবি

কে কইল ? সারাদিন কি স্পার্ম দেয়ার লাইনে দাঁড়িয়ে থাকব নাকি, সরকরী ব্যাংকের মত । আরো কত জরুরী কাজ আছে না হাসি

উৎসাহ কমেনাই এক বিন্দুও, একটু ব্যাস্ত ছিলাম আর কি ।

-----------------------------------------
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

এনকিদু এর ছবি

এনকিদুর উৎসাহ দেইখা টেনশনে পড়লাম। এত কম্পিটিশন। ও তো মনে হচ্ছে একাই দুনিয়ার তাবৎ স্পার্ম-সাবস্ক্রাইবার লেসবিয়ানের মার্কেট দখল করে ফেলবে। হেই মিয়া, লাইনে খাড়াও।

বস, তাবৎ দুনিয়ার অধিকার (স্পার্ম) বঞ্চিত লেসবিয়ানদেরকে সাহায্য করা আমার একার পক্ষে সম্ভব না । এখানে কম্পিটিশনের কিছু নাই, কোলাবরেশন দরকার ।

-----------------------------------------
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

স্পার্ম ব্যাংকে ডোনেটে উত্সাহীদের জন্যে একখান ছবি দিলাম।
বড়োদের ছবি। নিজ দায়িত্বে দেখুন।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
একলা পথে চলা আমার করবো রমণীয়...

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

শামীম এর ছবি

১. ধরুন আপনার সন্তানটির মধ্যে সমকামিতার লক্ষণ দেখতে পেলেন। আপনি কি এটাকে একটা সমস্যা হিসেবে নেবেন? মন খারাপ করবেন?তাকে বাঁধা দেবেন? অথবা কোন রকম থেরাপি (সায়েন্টিফিক/সোশ্যাল/রিলিজিয়াস) নেয়াতে উৎসাহিত করবেন?

যেহেতু বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমাণিত যে এটা অসুখ না তাই চিকিৎসার প্রশ্নটা অবান্তর (তবে বৈজ্ঞানিক তত্ত্বও ১৮০ ডিগ্রী ঘুরে যাওয়ার নজির আছে চিন্তিত)

মৃত্যূ সত্য। তাই বলে মানুষের দীর্ঘজীবি/এমনকি চিরজীবি হওয়ার চেষ্টায় কমতি দেখি না। সুতরাং সমকামীতা বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমাণিত স্বাভাবিক বিষয় হলেও নিজের পক্ষে মেনে নিতে কষ্ট হবে (এটাও আবার আমার স্বাভাবিক সীমাবদ্ধতা!)।
মন খারাপ করবো।
বাঁধা দেব না সম্ভবত।
থেরাপী দেয়ার চেষ্টা করবো ..... কিন্তু এটা রোগ নয় বলে বরং যেটা করার কথা বলেছেন সেটা অনেকটা চুলে বানরের রং লাগানোর মত কিংবা গ্রাফটিং করে অঙ্গ পরিবর্তনের মত ব্যাপার। হিজরাদের ব্যাপারে আমি সমকামীদের চেয়ে বরং বেশি সহানুভুতিশীল। কারণ আমরা দৈহীক অসুখগুলো চোখে দেখি আর মানসিক অসুস্থতা(!)গুলো দেখি না।

২.আপনি যদি উন্নত দেশে প্রবাসী হন, তাহলে হয়ত সামাজিক কারণে আপনার সন্তানটির নিজের সমকামিতা উপভোগের সম্ভাবনা বেশী, যেটা ভবিষ্যতে আপনার পরিবার, বন্ধুবান্ধব সবাই জানবেন। আপনি কি করবেন? দেশে শিফট করার কথা ভাববেন?

নাহ্ ।

৩. আপনি যদি এখন দেশে থেকে থাকেন, এবং ভাবেন যে সন্তানকে তার নিজের পথে বাঁধা দেবেননা, তাহলে কি সমাজের কাছে মুখ রক্ষা করতে বিদেশের সেটল হবার চেষ্টা করবেন, না সমাজে থেকে ফাইট করবেন?

মুখ রক্ষার প্রশ্ন আসছে কেন? সন্তানের এইরকম ভিন্নতা কি আমার ব্যর্থতা বলে স্বীকার করছি তাহলে?

কারো ক্যান্সার/ডেঙ্গু হলে যদি লজ্জিত না হই, তাহলে মানসিক ভিন্নতার জন্য কেন হব।

৪. ধরুন চিকিৎসাবিজ্ঞানের সেরকম উন্নতির সময়ে আপনার সন্তানটি জন্মালো, আর জন্মের পর ডায়াগনোসিস করে দেখা গেলো যে শিশুটি সমকামী হবে। কিন্তু চাইলে জেনেটিক চিকিৎসার মাধ্যমে খুব সহজে এবং কম খরচে বাচ্চাটিকে বিষমকামী করে ফেলা যাবে। আপনি কি করবেন? চিকিৎসা করাবেন?

দেশে ডাক্তারগণ রোগী শিকারের জন্য কত কিছুই বলে! তবে যদি পরিবারের মধ্যে থেকে নিরপেক্ষ এবং সেই ধরণের ব্যবসায়ী মনোভাব ছাড়া কোন ডাক্তার নিশ্চিত করে এই ধরণের ব্যাপার তবে বিষমকামী করানোর প্রয়াস নেব।

৫. ধরুন আপনি স্পার্ম ডোনার। আপনি জানলেন যে একজন লেসবিয়ান মহিলা আপনার স্পার্ম নিতে চাচ্ছেন ব্যাংক থেকে, আপনার অনুমতি প্রয়োজন। অনুমতি দেবেন?

অনুমতি দেব না। যেহেতু সমকামীদের সংখ্যা বাড়াতে চাই না ... মায়ের জিন থেকে ঐধরণের বৈশিষ্টের আমদানী নিজের দায়িত্বে কেন নেব?

-------
পরিস্থিতিতে পড়লে অনেক উত্তরই পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। তবে অমন অবস্থায় যেন না পড়তে হয় সেই আকাঙ্খাই করি।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

কিন্তু এটা রোগ নয় বলে বরং যেটা করার কথা বলেছেন সেটা অনেকটা চুলে বানরের রং লাগানোর মত কিংবা গ্রাফটিং করে অঙ্গ পরিবর্তনের মত ব্যাপার।

বস্, ঠিক ধরতে পারলামনা কি বলতে চাইলেন।
আমি বলতে চাচ্ছি, বিজ্ঞানীরা রোগ নয় বলে ঘোষনা দেবার পরও দুনিয়াজুড়ে বাবা-মা'রা নানাবিধ থেরাপির চেষ্টা করে যাচ্ছেন ঠিকই ... কারণ নিজের বেলা এটাকে অনেকেই অত সহজে মেনে নিতে পারছেননা ... সে প্রসঙ্গেই প্রশ্নটা এসেছে

মুখ রক্ষার প্রশ্ন আসছে কেন? সন্তানের এইরকম ভিন্নতা কি আমার ব্যর্থতা বলে স্বীকার করছি তাহলে?

হুমম, মুখ রক্ষার প্রশ্ন আসছে কেন বলা যায় ... কিন্তু বাংলাদেশে বসে "আমার ছেলেটা গতকাল একটা ছেলেকে বিয়ে করেছে" বলে বাবা-মা কি বন্ধুবান্ধবদের সুখবর দিতে পারবে?

যেমন আপনাকেই প্রশ্ন করা যায়, ধরুন, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং করে আপনি সমকামিতার লক্ষণওয়ালা বাচ্চাকে নিশ্চিত বিষমকামী করে ফেললেন। আপনি কি সেটা লোকজনের সাথে শেয়ার করবেন, না চেপে যেতে চাইবেন?
বাংলাদেশের ট্রেন্ড কিন্তু চেপে যাওয়া।
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

শামীম এর ছবি

অনেকে চুলে বিভিন্ন রং লাগায়। লাল নীল বেগুনী, এমনকি বানরের মত রংও। অনেকেই চামড়ার রং পরিবর্তনের জন্য অপেক্ষাকৃত ফর্সা চামড়া লাগায়। সেগুলো কোন অসুখের চিকিৎসার মধ্যে পড়ে না .... তবুও খরুচে।

সমকামীতা অস্বাভাবিকতা নয় জানার পর থেকে স্বাভাবিকতায় ফেরৎ আসার জন্য থেরাপীগুলোও সেরকম মনে হচ্ছে। .... অসুস্থতা হলে না চিকিৎসার প্রশ্ন আসে।

উপরের বাক্যটায় স্ববিরোধীতা আছে। বিজ্ঞানীগণ সমকামীতাকে স্বাভাবিকতা বলে স্বীকার করার পরও আমি আবার অন্য স্বাভাবিকতায় ফেরৎ যাওয়ার চেষ্টা করানোর কথা বলছি। এটার কারণ হল, মনোদৈহীক আনন্দের পাশাপাশি সেক্সের অপর উদ্দেশ্য হল বংশ বিস্তার ---- এটাই প্রকৃতির স্বাভাবিকতা এবং জীবনের প্রবহমনতা নিশ্চিত করে। সমকামীতা এই পয়েন্টে একটা ডেড-এন্ড .... তাই স্বাভাবিক হলেও কাম্য নয়।

খেয়াল করলে দেখবেন শুধু আনন্দের জন্য সেক্স করাটাকে কৌশলে নিরূৎসাহিত করা হয়েছে বিভিন্ন দর্শনে/ধর্মে। বহুগামীতা/জেনা করা সেজন্যই হয়তো সমর্থন করা হয় না। সম্ভবত ডেড-এন্ডের পেছনে শক্তিক্ষয় রোধ করার উদ্দেশ্যেই এই ধরণে বিধিবিধান।

যা হোক এই পোস্টের পরিপ্রেক্ষিতে এটা (ইথিকসের প্রশ্ন) অফটপিক/অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যায়।
----------

যদি কোনো মনোচিকিৎসক এটা চেপে যাওয়া বাচ্চার মানসিক গড়নের জন্য সাহায্যকারী বলে মনে করে .... তাহলে চেপে যাবো। তা'নাহলে চেপে যাওয়ার কোন কারণ নাই। .... একজনকে ডেড-এন্ড থেকে ফিরিয়েছি - এটাতো লজ্জার কিছু না। বাংলাদেশের ট্রেন্ডটা অজ্ঞতা থেকে ... পাছে লোকে কিছু বলে'র দলে আমি থাকতে ইচ্ছুক নই এবং ইতিমধ্যেই বাঙালী ট্রেন্ডের বাইরে অনেক কিছুই করে ফেলেছি .....

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং-এর কিছু বেসিক প্রশ্ন মাথায় এসে গেল। যখন টেস্ট করে দেখা গেল বাচ্চা সমকামী হবে ... তখন বাচ্চা আসলে কয় কোষী? ভ্রূণ হয়ে থাকলেও তো কয়েকশোটা কোষ (cell) থাকবে। কীভাবে সবগুলো কোষের কোড পরিবর্তন করা সম্ভব। যতদুর জানি, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং-এ যেই কোষে পরিবর্তন করা হয় সেটা থেকেই একই কোড যুক্ত বাকী কোষগুলো উৎপন্ন হয়।

অর্থাৎ বলতে চাইছি, আমি সমকামী হতে চাইলে আমার একটা/দুইটা কোষের জেনেটিক গড়ন পরিবর্তন করে সেটা দেহে সেট করে দিলে কি হবে? -- আমার জানামতে হবে না। কারণ একটা কোষ সবগুলো কোষকে নিয়ন্ত্রণ করে না।

জেনেটিকালি মডিফাইড বীজগুলো কীভাবে হয়? এটাকি একটা বীজের মধ্যের কোন কোষকে পরিবর্তন করা হয়... নাকি বীজ হওয়ার আগেই পুং বা স্ত্রী-রেনুকে পরিবর্তন করে তারপর সেটা দিয়ে নিষিক্ত করানো হয়? অথবা নিষিক্ত হওয়ার পরে উৎপন্ন প্রথম কোষটিতেই পরিবর্তন করা হয় .... তারপর সেটা থেকে অন্য কোষগুলো উৎপন্ন হয়।

তাই যদি হয়, তাহলে স্বাভাবিক ভাবে গর্ভের বাচ্চা সমকামী হবে জানার পর জেনেটিকালি মডিফাই করার উপায় নাই বলেই মনে হয়। বরং টেস্টটিউব বেবি তৈরী করতে গেলেই সেটা সম্ভব।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

বস, জেনেটিক চকিৎসার ডিটেইলস তো আমি জানিনা ... আপাততঃ কল্পকাহিনী হিসেবেই ভাবুন

ডেড-এন্ডের পয়েন্টটাও ভেবে দেখার বিষয়

এক্ষেত্রে আরেকটা সমস্যা হবে দম্পতির উভয়ের মতামত .... ধরুন স্বামী চায় তার জিন ছড়াক বংশপরম্পরায় আর তাই সে চিকিৎসা করানোর পক্ষপাতি, আর স্ত্রীর সেটা নিয়ে মাথাব্যাথা নেই, তাই সে চিকিৎসা না করানোর পক্ষপাতি -- তখন কাকে প্রিফারেন্স দেয়া হবে

আরেকটা পয়েন্ট হলো, বাবা-মাকে যদি সন্তানের সেক্সুয়াল ওরিয়েন্টেশনের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধিকার দেয়া হয়, তাহলে সমকামী কেউ যদি নিজের সন্তানকে বিষমকামী থেকে সমকামী বানিয়ে ফেলতে চায় -- তখন কি সেটা প্রকৃতির বিরুদ্ধে বলে হাউকাউ হবে কিনা? মানে বলতে চাচ্ছি, "সমকামীকে বিষমকামী বানিয়ে ফেলা"টা মানুষ যতটা স্বাচ্ছন্দ্যের সাথে ভাবতে পারে, "বিষমকামীকে সমকামী বানিয়ে ফেলা"কে কি ততটা স্বাচ্ছন্দ্যের সাথে ভাবতে পারে বা পারবে?
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

শামীম এর ছবি

জোড়া লাগানো বাচ্চাকে আলাদা করার অপারেশনকে প্রকৃতির বিরূদ্ধ বলে হাউকাউ দেখি নাই। তবে জোড়া লাগানো অবস্থায় বেঁচে থাকা এবং দৈনন্দিন কাজ কর্ম করা সম্ভবত বেশ অসুবিধাজনক। কাজেই এক্ষেত্রে আপত্তি না উঠাই স্বাভাবিক। সমকামীরা সে অর্থে কোন ক্ষেত্রেই সমাজে অসুবিধা সৃষ্টি করছে না!

কিন্তু অন্যভাবে চিন্তা করে দেখুন। জন্ম নিয়ন্ত্রনের বিকল্প হিসেবে সমকামী বাড়ানোর প্রজেক্ট কি হাতে নেয়া যায়? কিংবা কোন দৈব দূর্ঘটনায় যদি সকল বা বেশিরভাগ মানুষ সমকামী হয় তাহলে কি সেটা মানব জাতিকে নির্বংশ করবে না? আশা করি সেরকম ঘটনা ঘটার আগেই মানুষ ছাড়াই বাচ্চা উৎপাদনের কারখানা বসে যাবে।

হুঁ .... তখন প্রকৃতির নিয়ম বিরূদ্ধ বলে কথা উঠতে পারে। তবে প্রকৃতির নিয়মের বিরূদ্ধে মানুষের লড়াইটা নতুন কিছু নয়। এছাড়া প্রকৃতি কিন্তু আমাদেরকে ঐ ধরণের সিচুয়েশন মোকাবেলার পথও দেখিয়েছে ... মৌমাছির কথাই ধরুন। একটা মৌচাকে কয়টা মৌমাছি গর্ভধারণ করে? --- উত্তর হল "একটা"। প্রকৃতির নিয়ম অনুসরন করে তখন হয়তো মৌমাছিদের মত বাচ্চা উৎপাদনের জন্য রানী-মানবী থাকবে।

আমার ধারণা ভুল না হলে, প্রতিটি স্বাভাবিক মানুষই একসময় বাচ্চা কাচ্চা কামনা করে। এছাড়া দত্তক নেয়া ঝামেলাবিহীন হলেও, অনেক ঝামেলা করে দম্পতিরা নিজেদের বাচ্চা নিতে চায়। কাজেই ধারণা করি, প্রাথমিক উত্তেজনা পার হওয়ার পর সমকামীরা নিজ থেকেই বিষমকামী হওয়ার চেষ্টা করবে।

একটা কথা আছে না ... পৃথিবীতে যা কিছু সুন্দর..অর্ধেক তার গড়িয়াছে নারী অর্ধেক তার নর -------------------- এই কথাগুলোও তখন পরিবর্তন করতে হবে। চোখ টিপি
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

রণদীপম বসু এর ছবি

আমি মনে হয় আমার সন্তানের ক্ষেত্রে সমকামিতা বিষয়টিকে স্বাভাবিক অবস্থায় মেনে নিতে পারবো না। অন্তত আমার বর্তমান চিন্তা চেতনার গতিপ্রকৃতি বিশ্লেষণে তাই তো মনে হচ্ছে।

যাক, তবে পাশ্চাত্যের আগে আমাদের দেশে বা যেসব দেশের কল্পজগতের বেহেশতীয় সুবিধার তালিকায় 'গিলমান' নামক উপহারের ব্যবস্থা রয়েছে, সেখানে এই দ্বন্দ্ব কি খুব তীব্র হওয়ার কথা ?

পরিশেষে সত্যি কথা বলতে কি, আসলে আমি বিষয়টাকে আমি মনে হয় এখনো গভীর উপলব্ধিতে সঠিকভাবে ধারণ করতে পারি নি। তাই এখন আমার মন্তব্য করাটাই হযতো অযৌক্তিক হবে।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

সমকামিতা সম্ভবতঃ অনেক আগে থেকেই প্রচলিত ছিল ... হয়ত সভ্যতার শুরু থেকেই ... একেবারে নিজের কল্পনা থেকে বলছি (জানিনা বিজ্ঞান কি বলে), পশুশিকারের যুগে পুরুষেরা দলবেঁধে অনেক দিনের জন্য দূরে চলে যেত ... তখন সমকামিতার থাকার সম্ভাবনাই বেশী
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

এলোমেলো ভাবনা এর ছবি

সমকামিতা বহু আগে থেকেই প্রচলিত।
পবিত্র কুরানে সমকামিতার উল্লেখ আছে। এর জন্য কঠিন শাস্তির বর্নণা আছে।
লূত সম্প্রদায়কে সমকামিতার শাস্তি হিসাবে, পাহাড় চাপা দেয়ার কথা বলা আছে।

বহুদিন আগে পড়েছিলাম, তাই ঠিন কোন সুরায় বলা আছে মনে করতে পারছি না।
--------------------------------------------------------------------------------------

এমন শহরে আমি ঘুরি , নাকি শহরটাই ভবঘুরে?


হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই,

দুইকে আমি এক করি না এক কে করি দুই৷

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

এই বিষয়ে অনেক কিছু বলার আছে। আপাততঃ এই গানটা শুনেন। বর্তমান আমেরিকান সমাজে টিনএজদের মধ্যে সেক্স-কনফিউশন নিয়ে গানটা করা।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

বলার কথাও বলে ফেলেন
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

স্নিগ্ধা এর ছবি

ধরুন আপনার সন্তানটির মধ্যে সমকামিতার লক্ষণ দেখতে পেলেন। আপনি কি এটাকে একটা সমস্যা হিসেবে নেবেন? মন খারাপ করবেন?তাকে বাঁধা দেবেন? অথবা কোন রকম থেরাপি (সায়েন্টিফিক/সোশ্যাল/রিলিজিয়াস) নেয়াতে উৎসাহিত করবেন?

না নেবোনা, মন খারাপ করবো না, থেরাপির কথা চিন্তা করার তো প্রশ্নই আসে না। আমার সাত বছর বয়সী মেয়েকে আমি ইতোমধ্যেই বুঝিয়েছি যে বাচ্চাদের যেমন একটা বাবা আর একটা মা থাকতে পারে, ঠিক তেমনি দুটা বাবা অথবা দুটা মা, কিংবা শুধু বাবা, শুধু মা থাকতে পারে।

আমার মেয়ে সমকামী হোক কিংবা বিষমকামী হোক, তার পার্টনার নির্বাচনের ক্ষেত্রে সে যেন কোন অনুদার, অসংস্কৃত, সংকীর্ণমনা, গোঁড়া, ধর্মান্ধ, নিষ্ঠুর মানুষ্কে পছন্দ না করে - এটাই আমার প্রধান চিন্তা (বা দুশ্চিন্তা)।

অন্য প্রশ্নগুলোর উত্তরও বোধহয় সহজেই অনুমেয় হাসি

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

আমার মেয়ে সমকামী হোক কিংবা বিষমকামী হোক, তার পার্টনার নির্বাচনের ক্ষেত্রে সে যেন কোন অনুদার, অসংস্কৃত, সংকীর্ণমনা, গোঁড়া, ধর্মান্ধ, নিষ্ঠুর মানুষ্কে পছন্দ না করে - এটাই আমার প্রধান চিন্তা (বা দুশ্চিন্তা)

বক্তব্যে (বিপ্লব)

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
একলা পথে চলা আমার করবো রমণীয়...

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

ধন্যবাদ ... আপনার মতো ভাবতে পারলে হতো

আপনার মন্তব্যটা আরেকটা প্রশ্নের উদ্রেক করলো। ধরুন, আপনার মেয়ে তাবলীগি এক ছেলেকে পছন্দ যে কিনা খুব গোঁড়া (তাবলীগের অনেক ছেলেই স্ত্রীর কাজ করাকে অনুমোদন করেনা, বোরখা মাস্ট!!) ... এবং এসব গোঁড়ামীকে মেনে নিয়েই পছন্দ করলো ... বাঁধা দেবেন? বোঝাবেন? নাকি "তার স্বাধীনতা" বলে ছেড়ে দেবেন (লেট ইট বি)?
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

স্নিগ্ধা এর ছবি

আমার মন্তব্যের মানেই তো তাই ছিলো হাসি

যে, আমি সমকামীতাকে মেনে নিতে পারি বা পারবো, কিন্তু তাবলিগীকে মেনে নিতে, যদিও বা বাধ্য হই - প্রচন্ড অসুবিধা হবে। আমার 'সীমাবদ্ধতা' বা 'অনুদারতা' সেখানেই। আমরা প্রত্যেকেই যার যার জীবনদর্শন অনুযায়ী উদার বা অনুদার।

তবে, একটা কথা ঠিক - যদি সেই তাবলীগি মানুষ ভালো হয়, তাহলে চিরতা গেলার মতো করে মেনে নেবো।

ও, হ্যা - তাবলীগির বিপক্ষে বোঝাবো। বাধা দেবো না কারণ, বাধা টাধা আমার মেয়ে বিশেষ মানবে না, আমারই তো মেয়ে মন খারাপ

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

ধন্যবাদ মতামতের জন্য
হুমমম ... "আমরা প্রত্যেকেই যার যার জীবনদর্শন অনুযায়ী উদার বা অনুদার।" -- এই জায়গাটাতে এসেই আটকে যাচ্ছি ... কোন একটা ইউটোপিয়ায় যাওয়া হয়তো কখনই সম্ভব না
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

আমার চিন্তাধারার সারমর্ম হলঃ ব্যক্তিজীবনে রক্ষণশীল হও, আর সামাজিক জীবনে উদার।

ধর্ম, সমাজ, ঐতিহ্য, ইত্যাদির প্রায় সব বিধি-নিষেধই আমি ব্যক্তিগত ভাবে মেনে নেই, তবে সেগুলো সমাজের উপর গায়ের জোরে চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে আমি। সমকামিতার ব্যাপারে আমার অবস্থানও তেমনই। এই বিষয়ে আমি যথাসম্ভব উদার দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করবো। যে-দেশেই থাকি না কেন, যে-আইনই থাকুক না কেন। লোকে কী বললো, তা নিয়েও এতো চিন্তার কিছু নেই। যারা বলছে, তাদের কারও চেয়ে আমার নিজের বোধ-বুদ্ধি কম বলে মনে করি না আমি।

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

ক্লিয়ারলি বুঝলামনা ... "যথাসম্ভব উদার" মানে ঠিক কতটুকু উদার? জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সুযোগ থাকলেও নেবেননা?

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

না, নেব না। সিদ্ধান্তটা তার। ছেলেমেয়ের দাঁত সোজা করা জাতীয় ব্যাপারগুলো বাবা-মার সিদ্ধান্ত হলে জেনেটিক অপারেশনও বাবা-মার এক্তিয়ারে থাকা উচিত। তবে আমি সেই অধিকারের চর্চা করবো না। প্রথমত, এটা তার জীবন। দ্বিতীয়ত, আমি এটাকে "রোগ" মনে করি না। তৃতীয়ত, আমি এই মামুলি ব্যাপারে অপারেশন করাতে গিয়ে আমার সন্তানের বড় কোন জেনেটিক ক্ষতির ঝুঁকি নেব না।

রানা মেহের এর ছবি

বিষমকামি মানে কী? বায়োসেক্সুয়াল?

ধরুন আপনার সন্তানটির মধ্যে সমকামিতার লক্ষণ দেখতে পেলেন। আপনি কি এটাকে একটা সমস্যা হিসেবে নেবেন? মন খারাপ করবেন?তাকে বাঁধা দেবেন? অথবা কোন রকম থেরাপি (সায়েন্টিফিক/সোশ্যাল/রিলিজিয়াস) নেয়াতে উৎসাহিত করবেন?

------- সমকামিতা কোন সমস্যা নয়। সেটা অন্য কারো সন্তান হোক অথবা আমার। তাকে বাঁধা দেবার প্রশ্নই আসেনা। বাধা দেবার মতো আরো অনেক যন্ত্রনা আসবে জীবনে। এটা যেহেতু কোন কন্ডিশন নয়, থেরাপি অবান্তর। আমার ছেলে স্ট্রেইট ধর্ষক হওয়া থেকে বরং গে হোক। আমার মেয়ে স্ট্রেইট ড্রাগি হবার বদলে বরং লেসবিয়ান হোক। তারা তাদের সঙ্গী বেছে নেবার বেলায় একটা সুন্দর মানুষ বেছে নিক।

পুতুল এবং স্নিগ্ধাকে আসাধারণ মন্তব্যের জনয় অভিনন্দন
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

বিষমকামী মানে হেটেরোসক্সুয়াল ... বাই কে মনে হয় উভকামী বলা যায়

আপনার মতামত বুঝলাম চলুক
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

এনকিদু এর ছবি

আমার ছেলে স্ট্রেইট ধর্ষক হওয়া থেকে বরং গে হোক। আমার মেয়ে স্ট্রেইট ড্রাগি হবার বদলে বরং লেসবিয়ান হোক। তারা তাদের সঙ্গী বেছে নেবার বেলায় একটা সুন্দর মানুষ বেছে নিক।

চলুক

-----------------------------------------
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

ঢাকায় থাকতে কখনও এই বিষয়টা কনফ্রন্ট করিনি। ঢাকায় প্রচুর সমকামী আছে সেটা জেনেছিলাম এক বন্ধুর কাছে। কখনও তেমন ভাবে কনফ্রন্ট করিনি। প্রথম যেবার কনফ্রন্ট করলাম তখন বেশ শকড হয়েছিলাম। তখনই আসলে আমি বিষয়টি নিয়ে ভাবতে শুরু করি

আমি বিশ্বাস করি রেস, রিলিজিয়ন এসবের উর্দ্ধে আমি উঠতে পেরেছি। আমার উত্তর প্রজন্ম যদি সাদা/কালো কিংবা অন্য কোন ধর্মের কোন একজন মানুষকে বেছে নেয় সেটাতে আমার কোন আপত্তি থাকবেই না। কিন্তু যদি সে গে বা লেসবিয়ান হতে চায় তাহলে? মানসিক ভাবে আমি দ্বিধায় পড়ে যাই। ঠিক আপনি যে জায়গাটায় আছেন সেই কর্মের স্থবিরতায় পৌছে যাই। যে আমি বর্তমান গে, লেসবিয়ানের অধীকার রক্ষায় অনেক কিছু বলতে বা করতে রাজি সেই আমিই নিজের বা নিজের সন্তানের ক্ষেত্রে বিষয়টা ভাবতেই পারি না।

ফ্লুয়িডের বাউন্ডারী লেয়ার থিওরীটা বেশ প্রযোজ্য মনে হয় এই জায়গাটায়। এই থিওরী বলে যে কোন তরল যদি একটা স্থির সারফেইসের উপর দিয়ে যেতে চায় তাহলে সারফেসের সাথে লেগে থাকা তরলের গতিবেগ হবে শুণ্যের কাছাকাছি। তার ঠিক উপরের লেয়ারের গতি হবে খানিত বেশী, তার উপরেরটা আরেকটু বেশী, এইভাবে সবচেয়ে উপরের লেয়ারের গতি হবে সর্বোচ্চ। এইটা ভালো বোঝা যায় এক সেট প্লেয়িং কার্ড চিন্তা করলে। কার্ডগুলি টেবিলে রেখে যদি ইউনিফর্মলি একটা টোকা দেয়া যায় তাহলে দেখবেন টেবিলের সবচেয়ে কাছের কার্ডটা একদম নড়েই নি। আর সবচেয়ে উপরের কার্ড সবচেয়ে দূরে চলে গেছে।

auto

এখন কথা হচ্ছে আপনি এই বাউন্ডারী লেয়ারের কোন লেয়ারটায়। বাউন্ডারী লেয়ারের সবচেয়ে উপরেরটা হল চরম প্রগতিশীল আর সবচেয়ে নীচেরটা সবচে গোঁড়া। প্লেইন প্রগতিশীল আর প্লেইন গোঁড়া বলে কেউ নাই।

আবার বাউন্ডারী লেয়ারের গতি বাড়াতে থাকলে সবচেয়ে উপরের লেয়ার সবার প্রথমে টার্বুলেন্ট হবে (গতিছাড়া, উদ্দাম)। তারপর উপর থেকে দ্বিতীয় লেয়ার টার্বুলেন্ট হবে। এই ভাবে চলতে থাকবে। একসময় আপনি যে লেয়ারে আছেন সেটাও টার্বুলেন্ট হবে একসময়।

এর মানে হচ্ছে সময়ে সবচেয়ে গোঁড়াও দেখা যাবে প্রগতিশীলদের মত আচরন করছে। পঁচিশ বছর আগে যে নোশনটাকে তখনকার মানুষের কাছে প্রগতিবাদী ছিল এখন সেটা আমাদের কাছে গোঁড়ামী মনে হবে। এভাবে আমাদের সমাজে একটা টার্বুলেন্ট শিফট হচ্ছে।

এর প্রেক্ষিতে আমার অবস্থান বলি। আমি মনে করি আমার অবস্থান এই বাউন্ডারী লেয়ারের একটা লেয়ারে। যদি আমি আমার সন্তানের মেটামরফসিসের পর সেটা মেনে নেয়ার মত র‌্যাডিক্যাল শিফট হয় তাহলে মেনে নিবো নাহলে হয়ত পারব না।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

এ্যানালজীটা পছন্দ হইছে ... ইনফ্যাক্ট এইটাই একটা বেশ ভালো পোস্ট হয়ে যায়

আপনার আগের পোস্টের লাস্ট কমেন্টটা পড়ে মনে হলো এই আলোচনাটা সেখান থেকেই শুরু হয়েছে চোখ টিপি
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

পলাশ দত্ত এর ছবি

ডেঞ্জারাসত্ব জড়িত একটি লেখা।

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

ডেঞ্জারাস একটা শব্দ ব্যবহার করলেন দেখি! চোখ টিপি
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

স্পর্শ এর ছবি

পোলা গে হইলে আমি নিজেই হালার 'োঙ্গা' মেরে দিবো।
আর মেয়ে লেসবিয়ান হইলে বউরে বলব 'োঙ্গা' মেরে দিতে!! ইয়ে, মানে...

আর সিরিয়াসলি বলতে গেলে আমার কাছে মনে হয়, সমকামি হয়ে জন্ম নেওয়া টা প্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম নেওয়ার মত দুর্ভাগ্য জনক। প্রকৃতিতে সেক্সএর প্রয়োজন প্রজাতির ধারা রক্ষার জন্য। তা না হলে এই যৌন আকর্ষন বিকর্ষন এর সৃষ্টি হবার কোন প্রয়োজনই ছিলনা। তাই সমকামিতা প্রকৃতির নিয়মের ব্যতিক্রম। তার পরও কিছু সমকামি জন্ম হচ্ছে। প্রতিবন্ধীদের মত তাদের প্রতিও সহানুভুতি কাজ করে আমার মধ্যে। এখন যেহেতু এর ট্রিটমেন্ট নেই তাই সন্তান এরকম হলে চেষ্টা করব বিরুদ্ধ সমাজ থেকে তাকে রক্ষা করতে। আর ট্রিটমেন্ট থাকলে তাকে ট্রিট করার চেষ্টা করব। অবশ্যই তার মতামত সাপেক্ষে। তবে আমার চেষ্টা থাকবে যেন সে ট্রিটমেন্ট নিতে আগ্রহী হয়।

....................................................................................
অতঃপর ফুটে যাবার ঠিক আগে হীরক খন্ডটা বুঝলো, সে আসলে ছিল একটা মামুলি বুদবুদ!


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

রানা মেহের এর ছবি

"প্রকৃতিতে সেক্সএর প্রয়োজন প্রজাতির ধারা রক্ষার জন্য। তা না হলে এই যৌন আকর্ষন বিকর্ষন এর সৃষ্টি হবার কোন প্রয়োজনই ছিলনা। তাই সমকামিতা প্রকৃতির নিয়মের ব্যতিক্রম।"

তাহলে যেসব দম্পতি সন্তান চান না, কিংবা যারা বিয়ে বা পরিবার প্রথায় বিশ্বাস করেন না, তাদের কি যৌনজীবন যাপনের অধিকার নেই স্পর্শ? দয়া করে ওপরে লিংক থেকে অভিজিত এবং স্নিগ্ধার লেখা দুটো পড়ুন।

"আর সিরিয়াসলি বলতে গেলে আমার কাছে মনে হয়, সমকামি হয়ে জন্ম নেওয়া টা প্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম নেওয়ার মত দুর্ভাগ্য জনক.........
তার পরও কিছু সমকামি জন্ম হচ্ছে। প্রতিবন্ধীদের মত তাদের প্রতিও সহানুভুতি কাজ করে আমার মধ্যে..............."

এ জাতীয় কথা অন্যায়। অপমানজনক। প্রতিবন্ধীদের এবং সমকামিদের দুজনের জন্যই

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

স্পর্শ এর ছবি

আমি জানতাম মানুষ ছাড়া একমাত্র ডলফিন প্লেজারের জন্য সেক্স করে।

বিয়ে বা পরিবার প্রথা সংক্রান্ত প্রশ্ন গুলো খুব বেশি দার্শনিক, অথবা বুদ্ধিমত্তার সাথে রিলেটেড। আর সেক্স ফর প্লেজার ও বুদ্ধিমত্তার উপর নির্ভর করে। সমকামিতা তাই বুদ্ধিমানদের প্রবলেম। যে ব্যক্তি রিপ্রোডাকশন চায়না সে যৌনিজীবনে অবশ্যি তার অধিকার আছে। কিন্তু আমি বলতে চাচ্ছি সূচনার কথা। সুচনাতে সেক্সুয়াল রিপ্রোডাকটিভ সিস্টেম কিন্তু যে বিবর্তনের মধ্যে দিয়ে গেছে তার মুল কারণই হল প্রজাতির বৈচিত্র বা একই প্রজাতির মধ্যে েজেনেটিক ডাইভার্সিটি স্রৃষ্টি করা। বিভিন্ন্য বিপর্যয় থেকে রক্ষা করতেই এই আয়োজন। নাইলে সব প্রানীর মধ্যেই পুরো মেকানিজম থাকতে পারত যাতে সে একা একাই তার বংশধর স্রৃষ্টি করতে পারে।

সেক্স কে প্লেজারেবল অনুভুতির মোড়কে আমাদের কাছে উপ্সথাপন করেছে প্রক্রৃতিই নইলে এমন কষ্টকর কাজ কে করবে? তাই যাদের ক্ষেত্রে এই প্লেজারের ডিরেকশন অন্য দিকে ঘুরে গেছে তাদের অ্যাবনরমাল ভাবাতে দোষের কিছু দেখিনা। আমিতো তাদের নিগ্রৃহিত করার কথা বলছিনা। বলছি সে চাইলে তাকে ট্রিট করা যেতে পারে।...

আর হ্যা, প্রতিবন্ধীদের প্রতি আমার সহানুভুতি কাজ করে। এতে তাদের অপমানের কি? নাকি সমকামিদের সাথে তাদের তুলোনা করলাম একারনে? সেক্ষেত্রে সমকামিদের কি আপনি 'খারাপ কিছু' বললেন ?
....................................................................................
অতঃপর ফুটে যাবার ঠিক আগে হীরক খন্ডটা বুঝলো, সে আসলে ছিল একটা মামুলি বুদবুদ!


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

স্নিগ্ধা এর ছবি

আমি জানতাম মানুষ ছাড়া একমাত্র ডলফিন প্লেজারের জন্য সেক্স করে।

সমকামিতা তাই বুদ্ধিমানদের প্রবলেম।

তাই যাদের ক্ষেত্রে এই প্লেজারের ডিরেকশন অন্য দিকে ঘুরে গেছে তাদের অ্যাবনরমাল ভাবাতে দোষের কিছু দেখিনা।

অর্থাৎ, ডলফিন এবং মানুষ ছাড়া জীবজগতের বাকি সবাই বংশবৃদ্ধির জন্য যৌনজীবন পালন করে, তাই তো? অর্থাৎ, বাকি সব জীবই তাহলে বিষমকামী হওয়ার কথা? 'এবনরমালিটি' টুকু শুধু মানুষের ক্ষেত্রেই সম্ভব?

তাহলে মানুষ ছাড়া অন্যান্য জীবদের মধ্যেও সমকামিতা দেখা যায় কেন?

একসময় ছেলেদের প্রকৃতিদত্ত বহুগামিতার যুক্তিতে একজন পুরুষের একাধিক স্ত্রী বা রক্ষিতা বা পরনারী গমন সমাজে 'নর্মাল' ছিলো, একসময় বংশরক্ষার খাতিরে সন্তানোদপাদনে অক্ষম স্ত্রীকে পরিত্যাগ করে আরেকটা বিয়ে করাটা পুরুষের জন্য 'নরমাল' ছিলো, একসময় প্রতিবন্ধীদের পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে না দেখে প্রকাশ্যে টিটকিরি করাটাও 'নরমাল' ছিলো - তো?

রানা মেহের সমকামিতা বা প্রতিবন্ধকতাকে খারাপ তো বলেনই নি, বরং উল্টোটা!

সবাইকে যে সমকামিতা সমর্থন করতে হবে তা অবশ্যই আমি মনে করি না, কিন্তু একটা মানুষ প্রতিবন্ধী বা সমকামী কিংবা তাবলিগী যেটাই হোক না কেন - সবচাইতে আগে তার 'মানুষ' পরিচয়টার প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত - যদি না, অবশ্য, সে অন্যের ক্ষতি করে এমন ধরনের মানুষ হয়। এবং 'নরমাল' কথাটা প্রয়োগ করার আগে ভাবা উচিত - যা আমার দৃষ্টিভঙ্গিতে 'এবনরমাল' তা হয়তো আরেকজনের কাছে জল হাওয়ার মতোই স্বাভাবিক।

স্পর্শ এর ছবি

আসলে ভুলটা আমারই। আমি আমার মতামত টা যথেষ্ট পোলাইটলি প্রকাশ করতে পারিনি। আমার মন্তব্য কিন্তু স্নিগ্ধাপু বা অভিজিৎভাইয়ের ব্লগ প্রসঙ্গে না। আমার কমেন্ট টা ছিল

“চিন্তার প্রগতিশীলতা আর কর্মের প্রগতিশীলতার সংঘর্ষ”

এই প্রসঙ্গে। আমি শুধু আমার ব্যক্তিগত অনুভুতি যতটা সম্ভব সততার সাথে প্রকাশ করেছি। এই ব্লগে সে একান্ত ব্যক্তিগত প্রশ্নগুলো করা হয়েছে সেগুলো সম্পর্কে আমার মনে যে উত্তর এসেছে প্রথমে ভাবার চেষ্টা করেছি আমি কেন এমন ভাবলাম তার পর কারণটা লিখেদিয়েছি। আমি কিন্তু বলিনি যে ‘আমি ঠিক’; বলেছি ‘আমার মনে হয়’। এটা আমার এই সময়কার ম্যাচুরিটি অনুযায়ি একটা সৎ উত্তর। তাই কেউ যদি যৌক্তিক ভাবে আমাকে কনভিন্স করতে পারে, তাহলে নতুন মত গ্রহন করতে আমার এক মুহুর্তও দেরি হবেনা। আমার মনে হয় আমি সেই প্রজাতির লোক না যারা নিজের মতামতের বিপক্ষে যথেষ্ট পরিমান যুক্তি দেখেও ফ্যানাটিকের মত সেটা আকড়ে থাকে। আলোচনার মাধ্যমে আত্মউন্নয়নের আগ্রহ না থাকলে কেন আমি এই আলোচনায় অংশ নেব?

মানুষকে মানুষ হিসেবে অস্বীকার কি করেছি আমি কোথাও? প্রতিবন্ধীদের প্রতি সহানুভুতি আপনার আছে তা আমি জানি, কিন্তু তাদেরকে কি আপনি ‘ভাগ্যাহত’ হিসেবে স্বীকার করেন না? তাদের তো মানুষ হিসেবে এতটুকুও ছোট করিনি আমি। আমার ভুল হতে পারে যে আমি হয়ত সমকামিদেরকেও কোন ধরণের মণোদৈহিক প্রতিবন্ধকতার শিকার হিসেবে দেখেছি।

আমি সবসময় বলেছি ‘ সে চাইলে তাকে ট্রিট করা যেতে পারে’ / ‘অবশ্যই তার মতামত সাপেক্ষে’ এখানে উদ্দিষ্ট ব্যক্তির মতামতই প্রধান। কাওকে কি টিটকিরি করেছি কোথাও? আবনরমাল শব্দটা টিটকিরির মত শোনালে আমি দুঃখিত।

একজন স্ট্রিক্টলি স্ট্রেইট লোকের পক্ষে সমকামিতা ইমাজিন করা অনেক বেশি কষ্টের। সেই অনুভুতি থেকেই আমি আমার সন্তান সম্পর্কে এধরণের মতামত দিয়েছি। তারপরও আপনি আমার কমেন্টটা আরেকবার দেখেন। আমি কি কারো অধিকার হরনের চিন্তা করেছি এক মুহুর্তের জন্যও?? কারো উপর আমার মত চাপিয়ে দিতে চেয়েছি? অন্যের মতামত সম্পর্কে বিন্দুমাত্র অশ্রদ্ধা কি প্রকাশ পেয়েছে কোথাও?

এধরনের ভুল বোঝাবুঝির ভয়েই কিন্তু অনেকে অনেস্টলি নিজের মতটা প্রকাশ করতে চায়না। প্রসংটা এড়িয়ে যায়। তাই “চিন্তার প্রগতিশীলতা আর কর্মের প্রগতিশীলতার সংঘর্ষ” কিছুটা থেকেই যায় চিরকাল। আমি অন্তত প্রসংগটা এড়িয়ে যাইনি।

আবারো বলি, আমি কিন্তু আমার মত প্রচার করতে চাইনি। প্রকাশ করতে চেয়েছি। শিখতে চেয়েছি সেই সাথে।
যৌনতা অথবা পিতৃত্ববোধ, কোন অনুভুতিরই বাস্তব কোন অভিজ্ঞতা নেই আমার। যা অভিজ্ঞতা সবই বই পড়া অথবা চিন্তা করা। তাই বাস্তবে কি ঘটবে সেটা এখনো সঠিক করে বলা সম্ভব না।

....................................................................................
অতঃপর ফুটে যাবার ঠিক আগে হীরক খন্ডটা বুঝলো, সে আসলে ছিল একটা মামুলি বুদবুদ!


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

এলোমেলো ভাবনা এর ছবি

আমি সবসময় ভেবে এসেছি... what 2 consent adult দ behind closed door is none of others business.

নিজের সন্তানের ক্ষেত্রে মেনে নেওয়াটা হয়তো কষ্টের হবে। সবাই চায় , সন্তান তার মত হোক। কিন্তু সমকামিতা তো কোন রোগ না, যে চিকিতসা করাতে হবে?? তাইলে তো পুত্র সন্তান প্রত্যাশী বাবা-মা সেক্সচেঞ্জ অপররেশানের মাধ্যমে সব কন্যা সন্তানকে, ছেলে বানিয়ে ফেলতে চাইবে???

---------------------------------------------------------------------------------------

এমন শহরে আমি ঘুরি , নাকি শহরটাই ভবঘুরে?


হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই,

দুইকে আমি এক করি না এক কে করি দুই৷

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেক সুন্দর একটা পোষ্ট। আমি ব্যাক্তিগতভাবে বিয়ষটাকে খারাপ মনে করি না।

আমার সন্তান যদি সমকামী হয়, মেনে নেয়া ছাড়া আর কি করার আছে? জোর করে কিছুত করা যায় না।

শান্ত

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।