আ স্ট্রেনজার ইন মাই ওন কান্ট্রি ইস্ট পাকিস্তান, ১৯৬৯-১৯৭১ মেজর জেনারেল (অবঃ) খাদিম হুসেইন রাজা -- ৪র্থ পর্ব

মূর্তালা রামাত এর ছবি
লিখেছেন মূর্তালা রামাত (তারিখ: বুধ, ২৯/০৮/২০১২ - ১০:২১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

৪র্থ পর্ব
৭০ এর নির্বাচনের ভূমিকা

১৯৬৯ সালের অক্টোবর মাসের মাঝামাঝিতে আমি মেজর জেনারেল মুজাফফরউদ্দীন এর স্থলাভিষিক্ত হবার জন্য ঢাকায় রওনা হলাম। আমার এই নতুন পদের সাথে আমাকে সমগ্র পূর্ব পাকিস্তান অঞ্চলের দায়িত্বও গ্রহণ করতে হবে।

জেনারেল মুজাফফরউদ্দীন পশ্চিম পাকিস্তান রওনা হবার আগের কিছুদিন আমি তার সাথে সময় কাটালাম। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা সম্পর্কে আমার জানার অগ্রহ ছিল কারণ এ বিষয়ে কেবল পত্রিকাতেই পড়েছি। জেনারেল আমাকে জোর দিয়েই বললেন যে মামলাটি বাস্তব ঘটনার ভিত্তিতেই করা হয়েছে। শেখ মুজিবর রহমান প্রকৃতই এই ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত। কিছু বাঙ্গালী সেনাদলের পরিকল্পনা ছিল রাতের আঁধারে অতর্কিত হামলার মাধ্যমে প্রহরীদের আটক করে পশ্চিম পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর অস্ত্রাগার লুট করা। সেনাদলকে নিরস্ত্র করে যুদ্ধবন্দী হিসেবে ব্যারাকে পাঠানোর পরিকল্পনাও তাদের ছিল। আশা করা হয়েছিল যে এই পরিকল্পনা সফল হলে বাঙ্গালীদের অন্যান্য সেনাদলও বিদ্রোহীদের সাথে যোগ দেবে। ফলশ্রুতিতে এমনিতেই পূর্ব পাকিস্তান সরকারের পতন ঘটবে এবং বিদ্রোহীরা ক্ষমতা দখল করে নেবে। ভারত সরকারও এ ষড়যন্ত্রে নানা রকম সহযোগিতা দিতে চেয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, পাকিস্তানের সাথে ভারতের বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত তাদের ছিল। এত করে পশ্চিম পাকিস্তানী সেনারা বিদ্রোহীদের দমন করতে বিমানযোগে পূর্ব পাকিস্তানে আসতে পারত না।

যাই হোক, সরকারের বাদী পক্ষ মূলত অবসরপ্রাপ্ত বিচারকদের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছিল যারা ঢিমে-তেতালা গতিতে মামলা পরিচালনা করছিল। আরও কিছু সংশ্লিষ্ট ঘটনার অবতারণা না হওয়া পর্যন্ত তারা মামালা টেনে নিয়ে গেল। শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি আইয়ুব খানকে বাধ্য হয়েই মামলা উঠিয়ে নিয়ে শেখ মুজিবকে মুক্তি দিতে হল। শুধু তাই নয়, রাষ্ট্রপতিকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের সাথে নিষ্ফল আলোচনায়ও বসতে হল যার জের ধরে শেষ অবধি তাকে পদত্যাগও করতে হল। মেজর জেনারেল মুজাফফরউদ্দীনের উত্তরসূরী হিসেবে ঢাকায় পৌঁছেই আমি আমার পাশের কামরাতে মেজর জেনারেল গুলাম উমর কে পেলাম। উমর ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা প্রধান। ব্যক্তিগতভাবে তিনি জেনারেল ইয়াহিয়ার খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন। সেদিন বিকেলেই তার রাওয়ালপিন্ডি যাওয়ার কথা ছিল। পূর্ব পাকিস্তানে গত তিন মাসে নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা নিয়ে আমি বেশ উত্তেজিত ছিলাম। ভাবছিলাম আমার অভিজ্ঞতাটুকু সরকারের উঁচু পর্যায়ের কাউকে জানালে ভাল হয়। জাতীয় নিরাপত্তা প্রধান উমরকে কাছে পেয়ে তার কাছে কথাগুলো বলার সুযোগ হারালাম না।

পূর্ব পাকিস্তানের অবস্থা নিয়ে আলোচনা করার এক পর্যায়ে আমি ওমরকে স্পষ্টভাবেই নির্বাচন নিয়ে আমার মতামত ব্যক্ত করলাম। আমি বললাম ইতোমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকার ১৯৭০ শেষ হবার আগেই সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে। এর মানে হল অধিকাংশ পূর্ব পাকিস্তানীর মনে সত্যি বা মিথ্যা আকারে বঞ্চনার যে অনুভূতি আওয়ামী নেতৃত্ব গেঁথে দিয়েছে তা আরো পাকাপোক্ত করার জন্য তারা পাক্কা এক বছরেরও বেশি সময় হাতে পাচ্ছে। নির্বাচনের উপর এর প্রভাব পড়তে বাধ্য। আমি তাকে জোর গলায় বললাম এই নির্বাচনে সন্দেহাতীতভাবে মুজিব পূর্ব পাকিস্তানের ৭৫ ভাগ সমর্থন পেয়ে বাজিমাত করবে। আমি তাকে আরো বললাম যে যদি প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক সত্যিসত্যিই নির্বাচনে বিজয়ী দলের হাতে শাসন ক্ষমতা তুলে দিতে চান তবে শেখ মুজিবের জন্যই তাকে প্রস্তুত হতে হবে। শেখ মুজিবের “ছয় দফা” আন্দোলনের পরও অনেক পশ্চিম পাকিস্তানীই তাকে নেতা হিসেবে মেনে নিতে প্রস্তুত। তারা তার মন্ত্রীসভাতেও যোগ দিতে ইচ্ছা রাখে। আমি তাকে এও বললাম যে, সামরিক আইনের বেয়োনেটের ছত্রছায়ায় একটি “নিরপেক্ষ” নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবার পর, রাষ্ট্রপতির হাতে নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পাওয়া দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না আর কোন উপায় থাকবে না। পাশাপাশি মেজর জেনারেল গুলাম উমরকে আমি শেখ মুজিবের একগুঁয়ে মনোভাবের কথাও জানালাম। শেখ মুজিব সাধারণ নির্বাচনে জিতলেও যে বাঙ্গালীদের অধিকার আন্দোলন চালিয়ে যাবেন, জেনারেলকে তা বুঝিয়ে বললাম। তাকে বললাম, মুজিব কখনোই এক পাকিস্তানের কথা উচ্চারণ করেননি। তিনি বরাবরই বাংলাদেশ নামের স্বাধীন সার্বভৌম একটি দেশ চেয়ে আসছেন। সমস্ত বাঙ্গালীর জন্য মুজিবের এই সোনার বাংলা হবে সমৃদ্ধশালী একটি ঠিকানা। শুধু তাই নয়, মুজিব তার লক্ষ্য পূরণে পরিকল্পনা কমিশনের বাঙ্গালী কর্মচারীদের বরাত দিয়ে ভুলভাল পরিসংখ্যান উপাত্ত দিয়ে বাঙ্গালীদের বিভ্রান্ত করছেন এবং কেন্দ্রীয় সরকারের কোন পর্যায় থেকেই যে তার বক্তব্যকে প্রত্যাখান করা হচ্ছে না, সেটিও তাকে বলতে ভুললাম না।

শেখ মুজিব এবং তার দল কেন্দ্রীয় সরকারের “উপনিবেশিকতাবাদের” প্রতীক হিসেবে “শালা পাঞ্জাবী”দের বিরুদ্ধে ঘৃণার আগুন জ্বালিয়ে তাতে রসদ জুগিয়ে যাচ্ছিল। আমি অনুভব করলাম, আমরা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ক্রীড়ানকে পরিণত হয়েছি। তারা তাদের প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হতে যাচ্ছে। এরপর সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে তাদের চাপ এবং দাবীর সামনে প্রধান সামরিক প্রশাসক নতজানু হতে বাধ্য। উমরের হাবভাবে মনে হল তিনি আমার কথা বিশ্বাস করতে পারলেন না। এর কারণ হতে পারে, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী পরিস্থিতি সম্পর্কে তার নিজের যে ধারণা ছিল তার সাথে আমার বক্তব্য ছিল সম্পূর্ণ বিপরীত। পরবর্তীতে এ বিষয়টি নিয়ে তিনি আমার সাথে দ্বিতীয়বার বসার আগ্রহ দেখাননি। তাই আমার বক্তব্যে তাকে প্রভাবিত করতে সফল হয়েছিল কীনা সে নিয়ে আমি সন্দিহান। তবে যতদূর মনে করতে পারি, নির্বাচনের অনাকাঙ্খিত ফলাফলের পর আমি যখন তাকে আমাদের ১৯৬৯ সালের অক্টোবরের কথোপকথনের কথা মনে করিয়ে দেই তখন তিনি বিরষবদনে স্বীকার করেন যে দূর্ভাগ্যজনকভাবে আমার ধারনাই ঠিক ছিল। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরী হয়ে গেছে। পরিস্থিতি আগের অবস্থানে ফিরিয়ে নিতে কারোরই তেমন কিছু করার নেই।

৭০ এর নির্বাচনের আগে প্রথমে যশোর , পরে ঢাকায় থাকার অভিজ্ঞতা আমার হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি আওয়ামী লীগ পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্যদের বিরুদ্ধে তখন মানুষকে এমনভাবে বিষিয়ে তুলেছিল যে সৈন্যরা একা, এমনকী দু’তিনজন মিলে ঘুরতেও ভয় পেত। সমান্য বা কোন কারণ ছাড়াই ঘটে যাওয়া ঘটনার জের ধরে বাঙ্গালীরা কয়েকবার পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্যদের পিটিয়েওছিল। এঅবস্থায় সৈন্যদের মনোবল ধরে রাখতে তাদেরকে একজন নন-কমিশনড অফিসারের নেতৃত্বে কমপক্ষে দশজনের একটি গ্রুপ করে ঘোরার নির্দেশ দেয়া হয়। নিজের অস্ত্র গোলাবারুদ সবসময় প্রস্তুত রাখতে এবং নিজেকে রক্ষার খাতিরে তা ব্যবহারের অনুমতিও তাদের দেয়া হয়। এই আদেশ কার্যকর হবার পর সৈন্যদের পেটানোর মত কোন ঘটনা ঘটেনি। শুধু চট্টগ্রামে একটি বড় ঘটনা ঘটেছিল। সেই ঘটনায়, স্থানীয় লোকজনের বিশাল একটি দল উত্তেজিত হয়ে পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্যদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। সৈন্যদের দলটিও বেশ বড় ছিল। তাদের কাছে অস্ত্র গোলাবারুদও ছিল। তারপরও তারা তা ব্যবহার না করে কেবলমাত্র রাইফেলের বাট দিয়ে পিটিয়ে উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। গভর্নরের আদেশে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার এই ঘটনার তদন্তকাজ শুরু করেন। কিন্তু অন্য আর সব তদন্তের মতোই সেই তদন্ত অসমাপ্ত থেকে যায়।

ঢাকায় আমার পোস্টিং হবার প্রথম দিকের একটি ঘটনা আমার মনে পড়ছে। ঘটনাটি মাসের প্রথম দু’ সপ্তাহের মধ্যেই ঘটেছিল। এই ঘটনার মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানের সেই সময়কার রাজনৈতিক অবস্থার চালচিত্র তুলে ধরা যেতে পারে। সেদিন আমি ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস আয়োজিত “মিনা বাজারে” যাচ্ছিলাম। মিনা বাজার হল এক ধরনের মেলা। যেখানে মহিলারা ঘরে বানানো বিভিন্ন জিনিসপত্র বিক্রি করে। মহিলারাই এসব জিনিসের মূল ক্রেতা। সাধারণত সৈনিকদের পরিবারের খানিকটা স্বচ্ছলতার জন্যই এই মেলার আয়োজন করা হয়। মেলায় যাবার পথেই গভর্নরের কাছ থেকে ফোন পেলাম। আমাকে তার বাসায় যেতে বলা হল। সেখানে সেদিন বিকেলে ঘটে যাওয়া দু’একটি ছোটখাট দাঙ্গাহাঙ্গামা নিয়ে আলোচনা করার জন্য এক জরুরী সভা আয়োজন করা হয়েছিল। সভায় যোগ দিতে বাসা থেকে বের হতেই দখেলাম পুরো শহরের ওপর জমে আছে ধোঁয়ার মেঘ, ঢাকা জ্বলছে। সভায় সিদ্ধান্ত হল পুলিশ এবং ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস এর পরিবর্তে শহরের সংবেদনশীল এলাকাগুলোতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে।

পরের দিন ইস্টার্ন কমান্ডের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল সাহেবজাদা ইয়াকুব খান গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়ে দাঙ্গা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। মোহাম্মদপুর পৌর এলাকাসহ বিহারী অধ্যুষিত অন্যান্য এলাকাগুলোতে বাঙ্গালিদের তান্ডব-ধ্বংসলীলা চোখে পড়ল। লেফটেন্যান্ট কর্নেল সৈয়দ আকবর হুসেন শাহ নিজের জীবনের মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে যেখান থেকে অনেক বিহারীকে রক্ষা করেছিলেন, আমরা সেখানেও গেলাম। পরিদর্শনের মাঝেই গভর্নরের জরুরী ফোন এল। দরবার হলে আয়োজিত আরেকটি সভায় আমাদের যেতে বলা হল।

সভায় ঢাকার গণ্যমান্য মানুষজন এবং সুপরিচিত রাজনৈতিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন। গভর্নরের বক্তব্য দিয়ে সভা শুরু হল। গভর্নর বললেন, দাঙ্গার কারণে জনগণ ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। মানুষের মনে আস্থা ফিরিয়ে আনতে তিনি সব সম্প্রদায়ের লোকদের নিয়ে মহল্লায় মহল্লায় যৌথ শান্তি কমিটি গড়তে চান। গভর্নরের বক্তব্য শেষ হলে সমবেত নাগরিকদের পক্ষ থেকে বক্তব্য দিতে উঠলেন আতাউর রহমান। তিনি ছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তাকে তখন মুরব্বীস্থানীয় নাগরিক হিসেবে মান্য করা হত। তিনি জোর গলায়, পরিষ্কার ভাষায় বললেন যে তিনি পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের হয়ে কথা বলতে এসেছে। জনগণ তার মাধ্যমে একটা জিনিসই জানতে চায়, আর তা হল পূর্ব পাকিস্তানে নিয়োজিত পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্যরা কবে ফেরত যাবে? কবে বাঙ্গালিরা স্বাধীনভাবে নিজেদের ভবিষ্যত নির্ধারণ করতে পারবে? তার বক্তব্যে পুরো দরবার হলে পিনপতন নীরবতা নেমে এল। কেউ টু শব্দটি করেও কোন প্রতিক্রিয়া জানাল না। আতাউর রহমানের বক্তব্য আমার কাছে চরম একটি আঘাতের মত ছিল এবং এখনও তা আমার কানে বাজে। যতদিন বেঁচে থাকব আমি কখনোই সে দৃশ্য ভুলতে পারব না। তার বক্তব্য স্পষ্ট করেই সেই সময়ের রাজনৈতিক মেরুকরণের গতিপ্রকৃতি আমাদের সামনে দৃশ্যমান করে তুললো। (চলবে)

১ম পর্ব
http://www.sachalayatan.com/murtala31/45657
২ য় পর্ব
http://www.sachalayatan.com/murtala31/45710
৩য় পর্ব
http://www.sachalayatan.com/murtala31/45785

২৯/০৮/২০১২
সিডনি, অস্ট্রেলিয়া।


মন্তব্য

মাহবুব লীলেন এর ছবি

পড়ছি। চলুক

অতিথি লেখক এর ছবি

পাকিস্তানের সব জেনারেল দেখি ব্যাপক উর্বর মস্তিষ্কের অধিকারী ছিল।
ভাল লাগছে, চালিয়ে যান।

শহরবন্দী

স্যাম এর ছবি

চলুক!

কল্যাণ এর ছবি

প্রথম থেকে সবগুলো পর্ব আবার পড়ে আসলাম। চলুক চলুক চলুক

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

কড়িকাঠুরে এর ছবি

চলুক... পড়ছি...

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

গভর্নরের বক্তব্য শেষ হলে সমবেত নাগরিকদের পক্ষ থেকে বক্তব্য দিতে উঠলেন আতাউর রহমান। তিনি ছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তাকে তখন মুরব্বীস্থানীয় নাগরিক হিসেবে মান্য করা হত। তিনি জোর গলায়, পরিষ্কার ভাষায় বললেন যে তিনি পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের হয়ে কথা বলতে এসেছে। জনগণ তার মাধ্যমে একটা জিনিসই জানতে চায়, আর তা হল পূর্ব পাকিস্তানে নিয়োজিত পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্যরা কবে ফেরত যাবে? কবে বাঙ্গালিরা স্বাধীনভাবে নিজেদের ভবিষ্যত নির্ধারণ করতে পারবে? তার বক্তব্যে পুরো দরবার হলে পিনপতন নীরবতা নেমে এল। কেউ টু শব্দটি করেও কোন প্রতিক্রিয়া জানাল না।

৭১ এ উনার ভূমিকা কি ছিলো?

কাজের অনুবাদ। চলুক।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

সুমন চৌধুরী এর ছবি

বাংলা উইকি অনুসারে >

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে গ্রামের বাড়ি থেকে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর হাতে বন্দী হন। সেপ্টেম্বর মাসে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তিলাভ করেন। ১৯৭৩ সালে ঢাকা-১৯ আসন থেকে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন বাকশাল-এ যোগ দিয়ে এর এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন। শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুর পর বাকশালের বিলুপ্তি হলে তিনি জাতীয় লীগ পুনরায় সংগঠিত করেন। ১৯৭৯ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে (১৮ই ফেব্রুয়ারি) ঢাকা-২১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৩ - ১৯৮৪ সাত দলীয় জোটের অন্যতম সদস্য হিসেবে এরশাদ সরকারের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করলেও পরবর্তীতে মত পরিবর্তন করে এরশাদ সরকারের মন্ত্রীসভায় যোগ দেন এবং ১৯৮৪ সালের ৩০শে মার্চ প্রধানমন্ত্রী পদে নিযুক্ত হন। এ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন ১৯৮৫ সালের ১লা জানুয়ারি পর্যন্ত।

অতিথি লেখক এর ছবি

এরশাদ সরকারের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করলেও পরবর্তীতে মত পরিবর্তন করে এরশাদ সরকারের মন্ত্রীসভায় যোগ দেন

"মত পরিবর্তনের" পুরা কাহিনী কি কোথাও পাওয়া যাবে ??

-- রামগরুড়

দুর্দান্ত এর ছবি

"মানুষের মনে আস্থা ফিরিয়ে আনতে তিনি সব সম্প্রদায়ের লোকদের নিয়ে মহল্লায় মহল্লায় যৌথ শান্তি কমিটি গড়তে চান।"

সব সম্প্রদায় মানে নিশ্চই বিহারি-পান্জাবি-বালুচি বুঝাইছিল।

পরমাণুঅণুজীব এর ছবি

এই বই নিয়ে একটা হাইপ তোলা হয়েছিল - এক পাকি জেনারেল নাকি ৭১ এর পাপ স্বীকার করে এই আত্মজীবনী লিখেছেন ! ফ না জেনে অনেকেই এই বইটার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠেছিলাম। কিসের মইধ্যে কি ! সব নাপাকি পাকি খাকিগুলাই হারামি মিথ্যুক !

অরফিয়াস এর ছবি

বইটি ঠিক কোন দিকে যাচ্ছে বোঝা কঠিন !! শুনেছিলাম তিনি নাকি অনুতপ্ত হয়ে লিখেছেন?

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখা প্রথম থেকেই ফলো করছি, চালায় যান।

শেখ মুজিবের “ছয় দফা” আন্দোলনের পরও অনেক পশ্চিম পাকিস্তানীই তাকে নেতা হিসেবে মেনে নিতে প্রস্তুত। তারা তার মন্ত্রীসভাতেও যোগ দিতে ইচ্ছা রাখে।

-- মুজিবের মন্ত্রীসভায় পাকিরা যোগ দিতে চাইছিল? ঠিক বুঝলাম না।

-- রামগরুড়

হিমাদ্রী হেমচন্দ্র এর ছবি

ভালো , আরো লিখুন।

হিমাদ্রী হেমচন্দ্র

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।