যে কাজটি পাঁচ মিনিটেই করে ফেললে ল্যাঠা চুকে যায়, সেই কাজটি করার আগে আমার ন্যূনতম পাঁচদিনের আলসেমি লাগে। এক বন্ধু বলেছিলো আমি নাকি লতিফ ভাইয়ের চেয়ে বেশি লেইটার, তাই 'লেইট লতিফ' বাদ দিয়ে 'লেইট নজরুল' চালু করার সময় এসেছে। আমি তাতে অবশ্য কোনো আপত্তি করি না। যথাসময়ে কোনো কাজ আমি করেছি, এই রেকর্ড কেউ দেখাতে পারবে না।
যানবাহনের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা। ঘরকুনো আমি যে কয়বার সময়বাঁধা প্লেন ট্রেন বাসে উঠেছি প্রতিবারই শেষ মুহূর্তের দৌড়াদৌড়িতে। সিঙ্গাপুর থেকে ফেরার পথে তো প্লেন মিস করেই ফেলেছিলাম প্রায়। সবচেয়ে বড় ঘাপলাটা হয়েছিলো একবার কোলকাতা থেকে ফেরার পথে। ভোরবেলা বাস, আমরা তিন বন্ধু। আমাকে গণপিটুনি দিয়েও অন্য দু'জন ঘুম থেকে তুলতে না পেরে স্রেফ কোলে করে বাসে নিয়ে তুলেছিলো। আমার ঘুম ভেঙ্গেছিলো একেবারে সীমান্তে এসে!
নেপাল যাওয়ার সময়ও রাস্তায় সহযাত্রীদের ফোনের পর ফোন, এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ নাকি বলেছে সব যাত্রী আগেভাগে এলে নাকি এক ঘন্টা আগেই প্লেন ছেড়ে দেবে, আমি কেন এতো দেরি করছি?
অগত্যা দৌড়ঝাঁপ করে এয়ারপোর্টে ঢুকলাম, তারপর শুধু বসে থাকা। প্রখর রৌদ্র পার হয়ে সোনালী বিকেল পার হয়ে যায়, আমরা কেবলই বসে থাকি। একবার সবাইকে দাপিয়ে নামিয়ে বাসে তুললো, তারপর সেই বাস রানওয়ের আশেপাশে কিছুক্ষণ ঘুরেফিরে দূর থেকে 'ঐ দেখা যায় তালগাছ ঐ আমাদের গাঁ' এর মতো করে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের চেহারাসুরত দেখিয়ে আবার টার্মিনালে ফেরত নিয়ে এলো। যান্ত্রিক ত্রুটি।
তারপর আবারো কেবলই বসে থাকা। অনেকেই বলেছিলো ইউনাইটেড নাকি কখনো লেইট করে না, সিডিউল টাইম থেকে কয়েক ঘন্টা দেরিতে ছাড়ে শুধু।
আমার ধারনা ছিলো আমিই পৃথিবীর সেরা লেইটার। বুঝলাম ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের কাছে আমি রীতিমতো নস্যি! "লেইট নজরুল" এর বদলে এবার ব্যাপারটা "লেইট ইউনাইটেড" করা যেতে পারে।
কথা ছিলো নেপালে নেমে সূর্য বিদায়ের দৃশ্য দেখতে দেখতে আমরা নাগরকোট যাবো। তার বদলে আমরা টার্মিনালে বসেই ডুবি ডুবি সূর্য দেখলাম। ক্ষুধা লেগে গেছে, কিন্তু একবার যেহেতু তিন চার কিস্তি দেহহাতানি থুক্কু তল্লাসী পার হয়ে ঢুকেছি আবার বের হবার অনুমতি নেই, এমনকি টয়লেটেও যাওয়া যাবে না! বোঝো এবার!
তবু কেউ কেউ বিশেষ অনুরোধ উপরোধ করে প্রয়োজনীয় কাজ সেরে নিলো। রাহিনের মা খাবার নিয়ে এসেছিলেন, সেগুলোই ভাগাভাগি করে খেলাম আমরা কয়েকজন। নিজেরা ছাড়াও অন্য যাত্রীদের ভীড়েও কয়েকজন পরিচিত ছিলো, তাদের সঙ্গেও আড্ডা হলো। কিন্তু অপেক্ষার সময়ে আড্ডাও জমে না। বিরক্তিটাই জমে কেবল।
এরশাদ আমলে একবার সপরিবারে কুষ্টিয়া থেকে ঢাকা ফিরছিলাম। তখন যোগাযোগ ব্যবস্থার এতো উন্নতি হয়নি। সেলফোন নেই, সকালের খবরের কাগজ ঢাকার বাইরের লোকে হাতে পেতো সন্ধ্যায়, বিটিভি চালুই হতো বিকেলে। নিউজ স্ক্রল থাকার তো প্রশ্নই ওঠে না। এসব নানাবিধ কারনে আমরা কেউই জানতে পারিনি যে তিনদিনব্যাপী অবরোধ/হরতাল! কুষ্টিয়া থেকে আরিচা পর্যন্ত এসে হাজার হাজার লোক আটকে গেলাম। বাড়ি ফেরার কোনো উপায় নেই। আর তখনকার হরতাল বেশ স্বতস্ফূর্ত হতো, মানে আমজনতা নিজেরাই পালন করতো হরতাল, পিকেটার লাগতো না। ফলে গাড়ি ঘোড়া কিছু নাই। আমরা স্থানীয় এক স্কুলে পিকনিক করে কাটিয়ে দিলাম দুদিন।
এয়ারপোর্টে বসে থাকতে থাকতে ছোটবেলার সেই ঘটনাটা মনে পড়ে গিয়েছিলো। আর মনে পড়েছিলো টম হ্যাঙ্কস এর দ্য টার্মিনাল সিনেমাটার কথা। ধরেই নিয়েছিলাম রাতটা বুঝি এখানেই কাটাতে হবে।
তারপর অবশেষে এলো সুখবর, আবারো বাসে তোলা হলো আমাদের। যদিও আমরা তখনো নিশ্চিত না প্লেন পর্যন্ত যাওয়া যাবে কি না। কিন্তু আমাদের মতো কুশিল যাত্রীদের মুখে ছাঁই দিয়ে বাস ঠিক হাজির হলো প্লেনের দরজায়। কিন্তু এ মা... এ কী! মনে হলো যেন ঢাকা আরিচা রোডের হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য মুড়ির টিনের দু'পাশে কেউ ডানা লটকে প্লেন বানিয়ে দিয়েছে। ছোটমোটো একটা প্লেন।
কী আর করা? তাতেই চেপে বসলাম। কিন্তু হায়, আমরা না বিজনেস ক্লাসের যাত্রী? কোথায় কী? কিসের বিজনেস কিসের ইকোনোমি, সের দরে সবাই গাদাগাদি। এসি নাই, দরদর করে ঘামতে লাগলাম। চিপাচিপি অবস্থা। ভয়াবহ। আমার জীবনে আমি খুব বেশি উড়োজাহাজে চড়িনি, কিন্তু যতটুকুই চড়েছি, এরচেয়ে বাজে যে কিছু আর সম্ভব না সেটা বুঝে গেছি।
আমাদের মধ্যে এমনকি নিধিও এর আগে উড়োজাহাজে চড়েছে, শুধু আঁকাইন পলাশ ছাড়া। বেচারার এটাই প্রথম বিমান ভ্রমণ। তার জন্য মায়াই লাগলো।
আগে জানতাম নেপাল যেতে লাগে চল্লিশ মিনিট, উঠে জানলাম এই প্লেনের যেতে লাগবে পৌনে দুই ঘন্টা! এই গরমে এই বিমানে পৌনে দুই ঘন্টা কাটানোর চেয়ে আবার টার্মিনালে ফিরে যাওয়াটা আরামের। তবু কিছু যেহেতু করার নেই চুপ করে বসে থাকলাম। যদিও অন্য দুষ্টু যাত্রীসঙ্গীরা বলাবলি করছিলো যে প্লেনে উঠেছি বলেই নেপাল যেতে পারবো সেই গ্যারান্টি নাকি নেই। দেখা যাবে একটু পরে নামিয়ে দেবে। অথবা নেপাল পর্যন্ত যেতে পারলেও সেখান থেকে আবার ফেরত পাঠিয়ে দেবে। মুড়ির টিন কি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরনের অনুমতি পায়?
যাহোক, ততক্ষণে ব্যাপক ক্ষুধা লেগেছিলো, অপেক্ষায় আছি খাবারের। সুন্দরী বিমানবালা [ঈমানবালা না কিন্তু] এসে খাবারের প্যাকেট দিয়ে গেলো, হাভাতের মতো খুলে খাদ্যের বদলে তব্দা খেতে হলো। মটরদানা, আমসত্ব, ক্যান্ডি ইত্যাদি মিলিয়ে যে খাদ্যবস্তু, সেগুলো খাওয়ার চেয়ে না খাওয়াই ভালো। আর ওয়ান টাইম ইউজের গ্লাসে দু'ফোটা চোখের জল থুক্কু খাবার পানি! কাস্টার্ড কেক আর জুসটুকুই খেলাম। একজন হিসাব করে দেখলো বাক্সের ভেতরের খাবারের মোট মূল্য ৪৪ টাকা।
এতো বদনাম করছি বলে ভাববেন না যেন ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স এত্তোগুলা খারাপ, বিমান চলার ঘন্টাখানেক পর থেকে কিন্তু এসির সুবাতাস পেয়েছি আমরা।
যাহোক, একসময় নেপাল এয়ারপোর্ট দেখা গেলো। বিমান অবতরণ করলো। আমরা নামলাম। নেমে দেখি এয়ারপোর্টের সব দোকানপাট বন্ধ! আমরা ক'টা মোটে যাত্রী, তাদেরই দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে কোনোরকমে পার হতে হলো। বাইরে তখন গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি।
নেপালে আমাদের অভ্যর্থনাকারী প্রমোদ'দা দু'টো মাইক্রোবাস, একটি প্লেকার্ডে আমার নাম আর চেহারাভর্তি হাসি নিয়ে অপেক্ষা করছেন সেই বিকেল থেকে। পরদিন ধর্মীয় আচার, তবু পরিবার ফেলে দীর্ঘ অপেক্ষা। আমরা ডলার ভাঙ্গাতে পারিনি শুনে নিজের পকেট থেকে নয় হাজার নেপালী রুপি ধার দিলেন আপাতত চলার জন্য। আর জানালেন পৃথিবী এখন নীরব হয়ে গেছে, কোথাও খাবার পাওয়া যাবে না! হোটেলে ফোন করে একটু ডাল ভাতের ব্যবস্থা করে আবারো হাসিমুখে বিদায় জানালেন। আমরা চললাম অন্ধকার পাহাড়ি রাস্তা ধরে।
উঠছি কেবল উঠছি। যতোই উপরে উঠছি উঁচু থেকে আলোকোজ্জ্বল কাঠমান্ডু শহরটাকে দেখতে ভালো লাগছিলো। ভালো লাগছিলো পাহাড়ের গায়ে জোনাক পোকার মতো জ্বলে থাকা বিন্দু বিন্দু আলোগুলো।
আমরা যাচ্ছি তো যাচ্ছি। হঠাৎ খেয়াল করলাম এই সম্পূর্ণ যাত্রায় আর কোনো ব্যক্তি বা সচল যানবাহন দেখছি না। তার মানে পৃথিবী সত্যিই ঘুমিয়ে গেছে, আমরাই কেবল যাত্রী! রাস্তার দু'পাশের সব খাবারশালা পানশালা বন্ধ। কোথাও কেউ নেই।
দীর্ঘ যাত্রা শেষে গাড়ি যখন হোটেলে পৌঁছলো তখন আমাদের ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা। কোনোমতে দু'টো খেয়ে ঘুমাতে পারলেই বাঁচি। কিন্তু হোটেলটা দেখেই মনটা ভরে গেলো। কী সুন্দর! আমরা উঠেছিলাম নাগরকোটের হোটেল প্যারাডাইস ইন এ। এতোই ক্ষুধার্ত ছিলাম যে রুমে ঢুকে ফ্রেস হয়ে খাবো সেই ধৈর্য্য নেই। গাড়ি থেকে নেমে সোজা খাবার টেবিলে বসে গেলাম। এলো গরম ডাল মুরগী ভাত আর হাতে বানানো রুটি। আহ্, যেন অমৃত। আক্ষরিক অর্থেই খাবারটা খুব স্বাদের ছিলো। খেয়ে দেয়ে সবাই যার যার রুমের দিকে এগুলো, আমি আর তানিম ভাই দাঁড়ালাম। এরকম পাহাড়ি দেশে এসে একটা রাত বিনা জলপানে কেটে তো যেতে পারে না তাই না? কিছুমিছু একটা ব্যবস্থা করে রুমে ফিরলাম।
হোটেলটা আসলেই সুন্দর। মূল ক্যাম্পাসে রেস্টুরেন্ট আর অফিস। তিনপাশে পাহাড়ের গায়ে গায়ে তিনটি হোটেল ভবন। আর তেমন বেশি গেস্ট নেই। যারাও আছে তারা ততক্ষণে ঘুমিয়ে গেছে। নির্জনতাটা দারুণ উপভোগ্য ছিলো। তারপর জলীয় আড্ডা। তারপর ঘুম। তখনো জানতাম না বিশ্রী একটি দিনের পরে ভোরটা এতো অসম্ভব সুন্দর হতে পারে। নতুন ভোরের গল্প হবে পরের পর্বে।
মন্তব্য
চলুক ভ্রমণ, চলুক অবাক জলপান
facebook
আরে মাত্র তো নেপালে উঁকি দিলাম... চলবে আরো অনেক দূর
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
----------------
সুবোধ অবোধ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আমার জানামতে ইউনাইটেড জীবনে কম সময়ই ঠিক টাইমে যাত্রা শুরু করতে পারছে!!!!
----------------
সুবোধ অবোধ
হ, ইউনাইটেড আমার চেয়েও লেইট
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ঘুমের চাপা মাইরেন না। ওই কাহিনী কিন্তু আমি জানি।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
হা হা হা হা...
ঘুমের আগে যা-ই ঘটে থাকুক, ঘুম কিন্তু মিছা না
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আগেই বলছিলাম।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
নাগরকোট একখান জোস জায়গা। যাওয়ার পথে পাহাড়ের কানায় সরু রাস্তা বায়া বায়া মামু যখন জিপ চালাইতেছিল আমাদের তো নিচের দিকে তাকায়া মাথা নষ্ট। কত উঁচা বাপ রে। তার উপর ড্রাইভার মামু এতই দিলদরিয়া যে উলটা দিক থিকা বাস ট্রাক টেম্পু যাই আসে সে রাস্তা ছাইড়া সাইডে কাটে, পাহাড়ের খাদের দিকে। কেমনে ব্যালেন্স রাইখা এরম চিপা রোডে জিপ চালায় আল্লাই জানে।
ছবি দিয়েন।
..................................................................
#Banshibir.
উঁচুতে উঠতে উঠতে মনে হচ্ছিলো আরেকটু উঠলে তো এভারেস্টটাই জয় করে ফেলবো!
ছবি নিয়া টেনশনে আছি, ছবি তো বেশি কিছু তুলি নাই। তবে পরের পর্বে দুয়েকটা ছবি থাকবে আশাকরি
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
সূচনা বক্তব্য রাখতেই দুই পর্ব শেষ । লেখার ক্ষমতা থাকলে এমনি হয়, ছোট ঘাসফুলকে নিয়েও কয়েক পৃষ্ঠা লেখা যায়।
এখনো নেপাল কে দেখলাম না, একখান ছবিও পাইলাম না । কি আর করা বসে বসে খাই। আর অপেক্ষা করি। (বি দ্র: আপনি মোটেও অলস না, অলস হলে পাঠকের ঠ্যালা/চাপে এতো তাড়াতাড়ি দুই পর্ব লেখতে পারতেন না। )
মাসুদ সজীব
আজাইরা লেখা সারাদিন রাত লেখা যায়, এর জন্য লেখার ক্ষমতা লাগে না।
আর আমি যে অলস সেটা পুরান সচল সবাই জানে। এর আগের ভ্রমণ কাহিনী প্রথম পর্বের পরেই অক্কা পেয়েছে। আর সচলায়তনের কতো কতো প্রজেক্ট যে আমি শুরু করে শেষ করিনি অথবা শুরু করার আগেই শেষ করে দিয়েছি তা যদি জানতেন।
যাহোক, পড়ার জন্য ধন্যবাদ। নেপাল তো চলে গেছি। রাত আর অন্ধকার বলে কিছু দেখা যাচ্ছে না। একটু আলো ফুটলেই দেখা যাবে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
লেখা দারুণ লাগলো নজু ভাই!!!
এইটা তো ২৮ তারিখে লিখলেন, এখন ২৯ তারিখ! আজকের লেখা কো?
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
এই পোস্ট দ্বিতীয় পাতায় যাওয়ার আগে নতুন পোস্ট লিখলে মডুরা পিটাবে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
দেখি, ভোর বেলায় কি দেখা যায়।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আপনি তো দেখি পানি খাবার কথা সবার সামনেই স্বীকার করে ফেললেন!
একটু রাখ ঢাক করেও বলতে পারতেন, এখন তো জনগণ আপনাকে সামনের ইলেকশনে আর ভোট দেবে না।
জলীয় আড্ডার অংশবিশেষ শুনতে পারলে মন্দ হত না।
এখনকার অনেক টক শো ই জলীয় আড্ডার চেয়ে কম যায় না
আরে নাহ, এগুলা সব চাপা। আমি পানি আর চা খাই
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
এইরকম ভ্রমণকাহিনী পড়তে খুব আরাম লাগে- নিজেকেও দলের একজন বলে মনে হয়।
নেপালের এই রাত্রি না নামতেই ঘুমিয়ে পড়ার ব্যাপারটাতে দার্জিলিং-এর সাথে অনেক মিল পেলাম। পাহাড়ের (বলতে গেলে হিমালয়) সবকিছুই আমার ভালো লাগে। ইচ্ছা আছে পাহাড়ে জীবন কাটানোর, দেখা যাক!
পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম, জলদি দেন!
অলমিতি বিস্তারেণ
আমিও ভাবতেছি হিমালয়ের চিপাচুপায় গুহায় গাহায় থেকে যাবো। কেউ টের পাবে না। পশুপক্ষী ফলমূলের যোগান কীরকম আছে সেটা জানা দরকার। আরেকবার রেকি করতে যাবো।
এই পর্ব দ্বিতীয় পাতায় গেলেই পরের পর্ব হাজির হয়ে যাবে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
জীবনের তোর আরও বাকি আছে বলে যে ভ্রান্তিতে ভুগছিস, সেইটার মজা নষ্ট হয়ে যাবে বলে আর সত্য কথাটা জানাইলাম না। বন্ধু হিসেবে মায়া দেখালাম!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আপনের একাউন্ট হ্যাক হইছে? দুইটা লেখা একবছরের মইদ্যে ছাড়লেন? কেম্নেকী?
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
এই বছরের মধ্যে আরো গোটা দশেক লেখা ছাড়বো, চলবে?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নজরুল ইসলাম সম্বন্ধে ম্যালা ভালো ভালো কথা লিখসিলাম, কোন একটা বাটনে চিপি খেয়ে সব ঊধাও।
চমৎকার রসবোধসম্পন্ন এই মানুষটির আপাত হালকা লেখার মাঝে মাঝে একটুখানি পাণ্ডিত্য ছলকে ওঠে।
এই পর্বের ভাবের লাইন,
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
বানরের গলায় যে মুক্তোর মালা পরাতে নেই সেকথা ইন্টারনেটও বোঝে। দেখুন কেমন উধাও করে দিলো
তবে উধাওয়ের পরেও যেটুকু রয়ে গেছে তাতেই ভয় পেয়ে কাহিল! আমার লেখায় পাণ্ডিত্য! মনে হচ্ছে ভয়েই পরের পর্ব আর লিখতে পারবো না।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
পপকর্ন নিয়ে পড়তে বসলুম...
আমারেও দিয়েন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
চলুক চলুক, পড়ছি ।দারুন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নজরুল-ভাই, খুব ভাল লাগছে পড়তে। (সঙ্গে কিছু ছবি পেলে অবশ্যই আরো ভাল লাগবে )
খুব ছোট বিমানে উঠলে আমার খানিকটা ক্লস্ট্রোফোবিক লাগে। কয়েকবার এমন ঘটেছে, তবে আপনি যে অভিজ্ঞতার কথা লিখলেন, এতটা এখনো ঘটেনি। একদিক দিয়ে অবশ্য এর একটা ভাল ফল আছে - বাকী যাত্রার সমস্ত ভাল ব্যাপরগুলো আরো বেশী ভাল লাগে, আর খারাপগুলো কম ঝামেলার লাগে।
অনেক পর্বে চলুক আপনার ভ্রমণবৃত্তান্ত। পরের পর্বের সাগ্রহ অপেক্ষায় থাকলাম।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
ছবির বড্ড অভাব, আমি ছবি তুলতে পারি না
তবু কয়েকটা হয়তো দেওয়া যাবে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আপনাদের যাত্রা শুভ হোক সুন্দর হোক।
শুভকামনা রইল।
তুহিন সরকার।
যাত্রা তো শেষ!
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
চলুক, খাসা লাগছে পড়তে!
তোমরা এই যে আগ-পিছ না ভেবে হুট-হাট করে এখান-সেখানে চলে যেতে পারো, এই ব্যাপারটা খুব ভালো লাগে। হায়, জীবনে কিছুই দেখলাম না।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
আগু পিছু ভেবে জীবনে যেখানে যেখানে যেতে চেয়েছি কোথাও যেতে পারিনি।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
এই পর্বের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য শিক্ষা হলো হলো নেপাল যেতে ইউনাইটেডে উঠবো না, চার হাজার টাকা কমে বিমানেই উঠবো।
আ সিরিয়াস নোটঃ এরকম ভয়ংকর প্লেনযাত্রার জন্য ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ দায়ের হয়েছে? ব্যাপারটা কিন্তু ফাজলামির চুড়ান্ত হয়েছে মনে হয়। পয়সা বেশী দিয়ে আকাশপথে যায় আরাম আয়েশের জন্য। নইলে সেদিন সকালে আপনারা একটা জিপ নিয়ে রওনা দিলেও কাঠমুণ্ডুর কাছাকাছি পৌছে যেতেন।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
বিশ্বাস করেন নীড়দা, ঢাকায় যেসব বিআরটিসি বাস চলে সেগুলাতেও এরচেয়ে আরাম লাগে। ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের ভলভো স্ক্যানিয়াগুলার কথা নাহয় বাদই দিলাম
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নেপালে পৌঁছানো পর্যন্ত যেতেই এতো!! বাকী কাহিনিগুলো না জানি কেমন জমবে!! পরের পর্ব তাত্তাড়ি!
____________________________
নেপাল হইলো এভারেস্টের দেশ, বরফ আর বরফ... না জমে উপায় আছে?
পরের পর্ব আসবে তাত্তাড়িই
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
দারুন লেখা নজরুল ভাই , আমি নেপাল গিয়েছিলাম ২০১১ তে কিন্তু এক কাঠমুন্ডু ছাড়া কিছুই দেখিনি আপনার লেখা পড়ে আবার নেপাল যাওয়ার ইচ্ছা হচ্ছে। তাড়াতাড়ি পরের পর্ব দেন ।
ইউনাইটেড খুবই বাজে, আপনাদের ভাগ্য ভাল যে তাও এসি চলেছে, আমি একবার চিটাগাং থেকে আসার পথে সারা রাস্তা এসি চলেনি
ইসরাত
হু, আমাদের আরেক সচল বন্ধু আমাদের দুদিন পরে নেপাল থেকে ফেরার সময় নাকি হাতপাখা চেয়েছিলো
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আমরা গিয়েছিলাম সেপ্টেম্বরের ১৩ তারিখে, বাংলাদেশ বিমানের সেবা খারাপ লাগেনি, তবে বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন খুব ঝামেলা করেছিল।
বি দ্র: আগের ভ্রমন কাহিনীর জন্য হত্যে দিয়ে পড়ে আছি
এটা শেষ হলে আগের ভ্রমণ কাহিনী শুরু করবো
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ভোক্তা অধিকারের ব্যাপারটি বাংলাদেশে একেবারেই উপেক্ষিত। এই ব্যাপারে অল্পস্বল্প চেঁচামেচি হয়, কিন্তু রেগুলেটরি বডি কিছুই করে না। যদি করতো তাহলে বাংলাদেশি এয়ারলাইনগুলোর কয়টা চলার অনুমতি পেতো সেটা ভাবার বিষয়। দেশে চলা অন্য আরেকটা এয়ারলাইন আছে যাদের বিমানে চড়ে কেউ কক্সবাজারে গেলে ফিরতি পথে সে হেঁটে আসাকে বাঞ্ছনীয় বলে মনে করবে।
পিট সিগার নাকি কনসার্টে গাইবার সময় দর্শক-শ্রোতাদের দিয়ে পর্যন্ত নতুন গান একসাথে গাইয়ে ছাড়েন। দর্শক-শ্রোতা যখন নিজেও কনসার্টের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে যান তখন এটা অবশ্যই সম্ভব। আমরা নিজেরাও কি এমন অনেক কনসার্টে একাত্ম হয়ে যাইনি! একজন ভালো লেখকও তেমন পাঠককে তার লেখার অংশ করে ফেলতে পারেন। তখন পাঠক নিজেকে ঐ আখ্যানের একজন চরিত্র বলে ভাবতে শুরু করে। নজরুলের লেখার গুণ এটা।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ইয়ে মানে... না মানে... ডরাইছি।
ধন্যবাদ পাণ্ডবদা, আপনি জানেন না আপনার একটা মন্তব্যের মূল্য আমাদের কাছে কতোখানি!
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
হাচা কথা
আবারো অপেক্ষা!!!
চলুক
ভালো থাকবেন।
-----------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ
চলবে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ঠ্যাং এর উপর ঠ্যাং তুলে নাচাতে নাচাতে নেপাল ভ্রমণের গপ্পো সপ্পো পড়তেছি। আলসেমি হিরণ্ময়
মুশি-নাসির বেহুদা আউট হইলো। কিছু হইলো এইটা!!!
হ, আলসেমি হিরণ্ময়। শেষ পর্যন্ত তো বাংলাদেশ জিতলো
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আর কিছু না দেন, মুড়ির টিনের ছবিটা দিতেন!
তখন মেজাজ এত্তো বিলা, ছবি তোলার মানসিকতাই ছিলো না
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
এই পর্বটা খুব মজার হৈসে।
পরের পর্বে ছবি দিয়েন।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
পরের পর্বে ছবি থাকবে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
দুটো পর্বই পড়া হয়েছে নজরুল ভাই। পরেরটার জন্যে অপেক্ষায় আছি
ডাকঘর | ছবিঘর
অনেক ধন্যবাদ। পরের পর্ব আসবে আগামীকাল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নজরুল ভাই,
আমার জীবনে এখন অব্দি একমাত্র বিমান ভ্রমণ ইউনাইটেড এ চেপে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা আসা। আমি তো সিটের আশপাশে তেলাপোকার বাচ্চাও পাইছিলাম।
আপনার ভ্রমণকাহিনী তো রীতিমত হিন্দি সিরিয়ালের মত করে এগুচ্ছে
(লেখা) এতো খারাপ নাকি তাই বলে?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
লেখা ভাল হচ্ছে। অবশ্য এইটা নতুন করে বলার কিছু নাই। ছবি ছাড়াও কিন্তু খারাপ লাগছে না। ভ্রমণকাহিনীতে ছবি থাকাটা আবশ্যক না।
হায়, এমন সহজভাবে গল্প বলার ক্ষমতা যদি সবার থাকতো!
আমি যদি আপনার মতো অসাধারণ ছবি তুলতে পারতাম তাহলে এতো কিবোর্ড খরচ করে এতো কথা লিখতে হতো না, পাঠককেও এতো কষ্ট করে এতো কথা পড়তে হতো না। দু'তিনটে ছবি দেখেই বুঝে নিতো
যাহোক, আমিও ভ্রমণকাহিনীতে ছবি অনাবশ্যক মনে করি। আমার জীবনের সেরা যতো ভ্রমণ কাহিনী পড়েছি একটাতেও ছবি ছিলো না।
আপনার পোস্ট কই? কবে পাবো? কবিতা, ছবিতা, ব্যানার... কিছু একটা তো দেন। আজকে সুকুমার রায়ের জন্মদিনে একটা ব্যানার দেন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আপনার জন্য একটা নেপালী গান - 'sunday morning love you'.... http://www.youtube.com/watch?v=Cvfvn27Akxk
- আমি সেই ছেলে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ভালোই লাগছে পড়ে। বাকীটা ছাড়েন তাড়াতাড়ি। ইউনাইটেডের ব্যাপারে কিছু বলতে ইচ্ছে করছেনা। সম্প্রতি মনে হচ্ছে এরা যাত্রীসেবা দেওয়ার চাইতে সোনা চোরাচালানে বেশি আগ্রহী। বিমান সম্পর্কে যতো ক্ষোভই থাক, এরা ইউনাইটেডের থেকে ভালো।
নেপাল আমার ভালো লেগেছে। আমি দর্শনীয় স্থানগুলোতে তেমন না ঘুরলেও নেপালের বেশ কিছু গ্রামেগঞ্জে ঘুরেছি। নগর ও গ্রামীণ জীবন অনেকটা আমাদেরই মতো।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
আমার কখনোই দর্শনীয় স্থান ঘুরতে ভালো লাগে না, সেগুলো খুব সাজানো গোছানো হয়। বিউটি পার্লার থেকে আগত নারীদের মতো। আমারও ইচ্ছে করে সাধারণ মানুষদের কাছে যেতে, তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে আর বাজারের পাশের দোকানে বসে চা খেতে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
এই পর্বেও ছবি নাই।
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
নতুন পর্ব দেখেন, হাজার হাজার ছবি দিছি
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নজু ভাইয়ের ফ্লিকার ঘেঁটে ছবি দেখে এসেছি আফামণি, মুহুহুহু।
খাসা!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
সব ছবি একবারে দেই নাই তো, আস্তে আস্তে আসতেছে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
পর্তেছি। পরের পর্ব নামান জলদি।
অজ্ঞাতবাস
পরের পর্ব হাজির
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
পরের পর্ব হাজির
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
সেদিন কার একটা ভিডিও জানি চোখে পড়েছিলো ফেবুতে। নেপালের সূর্য ওঠার দৃশ্য। পাবলিক ঘুম বাদ্দিয়া মাছের পোনার মতো গাদাগাদি করে সেই দৃশ্য দেখতাছে। আতকা শুনি কে জানি পাশেই বলে উঠলো, 'রোমান্টিক দৃশ্য'! আমি তাব্দা খায়া গেলাম! সূর্য উঠতাছে, এইটা রোমান্টিক দৃশ্য!
তার্পর আমার খুব মন খারাপ হইলো, এই বিশ্বভ্রক্ষ্মান্ডের আরও অনেক রোমান্টিক দৃশ্য না দেখতে পারার কারণে!
এই যে ইউরোপা, জুপিটার গ্রহের চার্দিকে ঘুরতেছে এইটা কি কম রোমান্টিক একটা ব্যাপার! এইটা না দেখতে পেরে মন খারাপ হবে না?
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আরে দেখার জন্য পৃথিবীতে লোকের অভাব পড়ছে নাকি? আমি আপনে না দেখলে হুয়াটস দ্য প্রবলেম?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আপনার বাড়ি কুষ্টিয়াতে ভাইজান ?
নতুন মন্তব্য করুন