একুশের বইমেলা ও একজন নিভৃতচারী

রোমেল চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন রোমেল চৌধুরী [অতিথি] (তারিখ: সোম, ০৭/০২/২০১১ - ২:৪০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কতদিন পরে এলেম একুশের বইমেলায়। আরো তো এসেছি বহুবার, বহুবার ভিড়ের ভেতর দিয়ে একাকী হেঁটে গেছি এই পথ ধরে। ধুলোমাখা স্যান্ডেলের মতো মলিন হতে হতে হেঁটে গেছি একা একা। পুরনো পাঞ্জাবীর তেল চিটচিটে আস্তিনের ফাঁক গলে আমার বিশীর্ণ আংগুল সবার অলক্ষ্যে এই রমনার কিংবদন্তীসম বটবৃক্ষের ঝুলে পড়া শেকড় ছুঁয়েছে। ক্ষণিকের জন্য খুঁজে ফিরেছে একচিলতে উড়ে যাওয়া সুখ, একটু উদ্বায়ী নির্ভরতা। এই তো, এই তো সেই বটমূল। তার ঝুলে পড়া শাখামূল কবেই তো মাটি ছুঁয়েছে, পোক্ত থামের ধরণে সংসারী হয়েছে।

এই তো সেই সারি সারি বাহারি স্টলগুলি, এই তো থরে থরে সাজানো বইয়ের সারি, এই তো এই তো রাশি রাশি আনন্দের বিকিকিনি। লেখকের মেজাজি আড্ডা, অটোগ্রাফ শিকারির ভিড়, আনকোরা বইয়ের ঘ্রাণ, মিছে মিছে দরদাম, অচেনার সুর খুঁজে খুঁজে ফেরা। এর মাঝ দিয়ে বেদনার গন্ধ ছড়াতে ছড়াতে বান্ধববিহীন হেঁটে গেছি আমি কতকাল, হেঁটে যাবো আরও কত নিযুত বছর।

ফাল্গুনের প্রথম দিনে বাসন্তী শাড়ীর সাজের মতো রঙ্গিন প্রচ্ছদ ঘেরা কত শত শত বই। সেইসব সুন্দরীদের বিভা বিচ্ছুরিত বর্ণিল রাশ উৎসবের এক কোণে পড়ে থাকা বোদলেয়ার, সুধীন, জীবনানন্দ কোন এক বিষণ্ণ যুবকের মন ছুঁয়ে যাবে। বুক ভরে নেবে সে পুরনো পাতার ঘ্রাণ, অফুরান নৈরাশ্যকে ভালোবেসে।

এই তো, এইখানে, পুকুরের এই কোণে, শানের উপরে বসে স্নেহার্দ্র মাঠের নরম ঘাসের বুকে আলতো করে রেখেছিলাম নগ্ন পদযুগল। এইখানে পড়ন্ত রোদের আলোয় ক্ষমাহীন রূপসীর দল ভালোলাগার আবির ছড়িয়ে কলকলিয়ে হেঁটে বেরিয়েছে স্বপ্ন পথে। তাদের অবজ্ঞা পাবার মতোও যোগ্য হয়ে উঠিনি কখনো।

বিরহী জলের কথা শুনবো ভেবে কান পেতেছি সন্ধ্যের বুকে, পাখিদের ঝুমঝুমি কোলাহলে, শাখে শাখে, দূরের আকাশে। সাহস ছিলোনা মোটেও নিজেকে ভাবতে কুলীন, মিশে গিয়ে মাসব্যাপী আলোচনার প্যান্ডেলে। এই ভালো, একাকী এই ব্যথা গুজরান, একা একা নেড়ে চেড়ে দেখা কিছু কিছু সংহারী বইয়ের মোড়ক, এই ভালো খুঁজে খুঁজে নেয়া কালো সূর্যের নীচে নির্জন বহ্ন্যুৎসব।

এইখানে শুনেছি শুদ্ধস্বর, চিনেছি রোদের অসুখ। এইখানে সচলের মেলা, রত্নদ্বীপ, নোতুন বিবর। এইখানে নতুন সূর্য কুসুমের মতো করে ফোটে অবিশ্বাসের কুহেলি আকাশে। একদিন আলো দেবে তারা অবমুক্ত গদ্যরেখায় কিম্বা কাব্যের প্রান্তিক বিকাশে, জেগে ওঠা তারাদের প্রতিভাসে। সেই আলো গায়ে মেখে নেবার ইচ্ছেকে আপ্রাণ লুকিয়ে রেখে পাশ কেটে হেঁটে যাবো আমি। হবো না উজ্জ্বল দিন, তারচেয়ে এই ভালো চুপি চুপি শুনে যাই মৌন বিষাদের বীণ।

দিনান্তের খেলা ভেঙে গেলে, ফিরে যাবো হেঁটে হেঁটে দীর্ঘ দগ্ধ পথ। তারপর নিরালোকে টেনে নেব চেতনার নির্বাণ দিব্যরথ। আবার আসিব ফিরে......


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

আমার কাছে সবচেয়ে স্মরণীয় এবং শ্রেষ্ঠতম একুশে বইমেলা হচ্ছে '৯২-র (?) সেই ঐতিহাসিক বইমেলা - এরশাদ আমলের সেই শেষ বইমেলা যেখানে বসে পটুয়া কামরুল হাসান তার জীবনের সর্বশেষ এবং অন্যতম বিখ্যাত ছবিটি এঁকেছিলেন ।

এত অসামান্য প্রাণোদ্দীপ্ত, প্রাণতপ্ত, হৃদয়-স্পন্দিত অভূতপূর্ব বইমেলা বাংলাভাষী কোন দেশের ইতিহাসে আর হয়নি। পৃথিবীতেও হয়েছে কিনা সন্দেহ। যে দেখেনি সে যে কি মিস করেছে তা তার কল্পনাতেই আসবেনা।

মনমাঝি

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আপনি বোধহয় ৮৮র বইমেলার কথা বলতে চেয়েছেন
এরশাদ ৯০ তেই ধরাশায়ী

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতিথি লেখক এর ছবি

হতে পারে। এখন আর সন-তারিখ মনে পড়ছে না। হয়তো নব্বুইও হতে পারে ? ওটাই বোধহয় ঐ আম্লের শেষ মেলা ছিল যদ্দুর মনে পড়ে। ঐ মেলায় রেইনিং স্বৈরশাসক এরশাদ আর তার চেলাচামুন্ডাদের নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল আসার চেষ্টা করা হলে প্রতিরোধ করা হবে। প্রায় শাহবাগ মোড় থেকে শুরু হয়েছিল মেলার আনঅফিশিয়াল এলাকা। ঐখান থেকে শুরু করে মূল মেলার গেট পর্যন্ত অজস্র নাট্যগোষ্ঠী, শিল্পীগোষ্ঠী, সঙ্গীতগোষ্ঠী ও নানারকম সাংস্কৃতিক দলের কতরকম কত স্বেচ্ছাপ্রনোদিত অনুষ্ঠান ! লক্ষ লক্ষ মানুষ। ইলেক্ট্রিফায়িং জমজমাট ফুর্তি আর উৎসবমুখরতা। কি বিপ্লবীপনা ! কি জঙ্গিপনা ! সবাই কি একাট্টা ! রীতিমত বিশাল এক অগ্নিগর্ভ, আনন্দগর্ভ 'বিদ্যুতায়িত' পরিবেশ ! মনে আছে ফেরার পথে এক জায়গায় দেখলাম নাগরিক 'নুরুলদিনের সারাজীবন'-এর গৌরচন্দ্রিকা অংশটুকু রাস্তার উপর অস্থায়ী মঞ্চ বানিয়ে মঞ্চস্থ করছে। পিচ্চি বয়সে আসাদুজ্জামান নূরের ঐ আগুনঝরা অভিনয়টুকু দেখে প্রায় পাগল হয়ে গিয়েছিলাম। শীতের রাতে পুরো পরিবেশটাকে একদম তাতিয়ে দিয়েছিল। শরীর গরম করে চনমন করতে করতে ফিরে এসেছিলাম বাসায় (এর পরে পুরো নাটক্টা মহিলা সমিতি বা গাইড হাউজে দেখার জন্য অনেকবার চেষ্টা করেছি, কিন্তু একবারও হয় সময়মত খবর পাইনি নয়তো টিকিট পাইনি। এত বছরেও আর দেখা হয়নি।)। পরের দিন মনে হয়, খবর পেলাম কামরুল হাসান মেলাতে বসে বসেই তার সেই বিখ্যাত (শেয়াল ও বিশ্ববেহায়া) ছবিটা আঁকার কিছু পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং পরবর্তীতে হৃৎযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যবরন করেন।

এমন বিপ্লবী বইমেলা আর হয়নি বোধহয় ! হাসি

তাসনীম এর ছবি

কামরুল হাসান মারা গিয়েছিলেন জাতীয় কবিতা উৎসবে, বইমেলাতে নয়। উইকি থেকে ডাবল চেক করলাম।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

অতিথি লেখক এর ছবি

জাতীয় কবিতা উৎসবটা সেবার বোধহয় বইমেলার ভেতরেই, বা অন্তত তার অনানুষ্ঠানিকভাবে সম্প্রসারিত পরিধির মধ্যেই হচ্ছিল। উইকির ঐ আর্টিকেলে দেখবেন মৃত্যুর তারিখ ২ ফেব্রুয়ারি। বইমেলার সময়েই। আপনার হয়তো মনে থাকবে, সেবার প্রায় সমস্ত সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এরশাদ-পতন আন্দোলনে একজোট হয়েছিল। বিশেষ করে বহুধা-বিভক্ত কবিরাও। শামসুর রহমানও তার কিছুদিন আগে সরকার সমর্থিত একটি পত্রিকা থেকে পদত্যাগ করে (যে কারনেই হোক) 'স্বৈরাচারের দালাল'-এর পোটেনশিয়াল খেতাবপ্রাপ্তি থেকে রেহাই পেয়েছিলেন। উনি সহ আরো অনেক আপাত বিরোধী কবিরা মিলে মনে হয় এরশাদ বিরোধী জাতীয় কবিতা পরিষদের ব্যানারে একজোট হয়েছিলেন। আমার স্মৃতি প্রতারনা করতে পারে, তবে এ বিষয়ে লুৎফর রহমান রিটন মনে হয় ভালো জানবেন। উনিও কি সেসময় এই উদ্যোগের সাথে জড়িত ছিলেন না? উপরের মন্তব্যে যেমন বলেছি, এইরকম আরো অনেক সামাজিক-সাংস্কৃতিক সঙ্গঠন তখন (এমনকি শেষ পর্যন্ত সরকারি কর্মকর্তারা পর্যন্ত- আলাদাভাবে) সরকার-পতন আন্দোলনে বিভিন্ন ক্যাপাসিটিতে যুক্ত হয়েছিলেন এবং ঐ বইমেলায় ব্যাক্তিগত এবং সাংগঠনিক ভাবে এরা প্রায় সবাই উপস্থিত ছিলেন। সেজন্যেই, এটা শুধু বইমেলা বা এমনকি 'মেলা' না থেকে তার চেয়ে অনেক-অনেক বড় কিছু হয়ে গিয়েছিল। ঐ সময় সারা দেশের 'জাতীয় মুড'-টা ঐ মেলায় রিপ্রেজেন্টেড হয়েছিল।
................................................।

রোমেল ভাইয়ের লেখাটা অসাধারন লাগলো। পড়তে পড়তে মনে হচ্ছিল জীবনানন্দকে সাথে নিয়ে ইথারিক দেহে বইমেলায় বেড়াতে গেছি, আর হাঁটতে হাঁটতে তার মুখ থেকে মেলাটা নিয়ে তাৎক্ষনিক রচিত লাইভ কবিতাপাঠ শুনছি। অপূর্ব ! দারুন !

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

এমন নান্দনিক প্রশংসার বাণী যুগপৎ মোহিত ও লজ্জিত করে। লাজুক ধন্যবাদ জানাই। লইজ্জা লাগে

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

হ্যাঁ ভাই,
'৮৮ এর সেই কাল প্রহারের নির্দয় সাক্ষাৎ, সেই মৃত্যু, সেই শেষ ছবি এভাবেই এঁকেছিলেন সৈয়দ শামসুল হক,

সেই মৃত্যু রক্তিম ফাল্গুনে : কামরুল হাসানকে
আমি হারিয়ে ফেলিনি। কবিতার উৎসব চলছে―
বাঙালির রাষ্ট্র স্বপ্ন-স্বর-ছন্দ বহে যাচ্ছে যেন
ব্রহ্মপূত্র আবার বিশাল। সভাপতি কামরুলের
রূপালি চুলের ঢল মিশে গেছে সেই অগ্নিজলে।
পুরোহিত তিনি ওই কাব্যপাঠ রাতের আসরে―
মন্ত্রপূতঃ আগুনের শিখা যেন রঙিন রিবন
চারিদিকে উড়ছে হাওয়ায়। একজন কেউ তার
কোলে খাতা রেখে দিয়ে বলে―'প্লিজ, কিছু লিখে দিন,
আপনার এতটুকু স্মৃতি থাক সামান্যের কাছে।'
দ্রুত খুলে চাইনিজ কলমের খাপ কামরুল―
বাংলার গভীরে চোখ মুহূর্তের জন্যে একবার
রেখে―বাংলার এ অমাবস্যা একবার দেখে নিয়ে
খাতায় দিলেন দাগ―অক্ষরের নয়, তিনি কবি
অন্যতর―তিনি চিত্রকর, কালো চিকন রেখায়―
পল ও বিপল মাত্র সময়ের ব্যাষ্টি সমাহার―
প্রতিভার তীব্র টানে বাস্তবের গভীরে বাস্তব
খাতায় পাতায় দ্রুত ফুটে উঠতে থাকলো তখন :
ছবি―শেয়াল ও শকুনের, সাপের বিষের দাঁত,
মানুষের মানচিত্রে গর্দভের আলম্ব চোয়াল!
এই তবে বাংলাদেশ সামরিক বুটের তলায়―
বাংলার সুন্দরবনে এই তবে হায়েনার কাল।
কত দীর্ঘ―আার কত দীর্ঘ হবে অপেক্ষা বাংলার?
যূথবদ্ধ মানুষের হাতে কবে উঠবে কৃপাণ?

মৃত্যুরও কৃপাণ আছে―অকস্মাৎ কখন কোথায়
কার কাঁধে নেমে আসে! ছবি আঁকা শেষ হলো সেই
মঞ্চে ঢলে পড়লেন কামরুল, যেন আমাদের
শ্রেষ্ঠ সব সন্তানের উৎপাটনে স্বৈরশাসকের
সঙ্গে সেও মিলিয়েছে হাত! অগ্নি ধরে উঠেছে যে
ব্রহ্মপুত্রে আর এই বদ্বীপের তেরোশ' নদীতে,
কবিতা উৎসবের স্বর যেন সেই সাতই মার্চের
বজ্রকন্ঠ হয়ে ফিরে এসেছে যে, অকস্মাৎ তার
বিশাল বক্ষের মানচিত্রে মেশিনগানের গুলি,
যেন আরো একবার ওই একটি মানুষ দীর্ঘ
বাঙালির, পড়ে গেল ধানমন্ডি বত্রিশ নম্বরে।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

পটুয়া কামরুল হাসান বইমেলায় বসে তাঁর জীবনের শেষ ছবিটি আঁকেন নি।
৮৮ সালে টিএসসি'র মোড়ে অনুষ্ঠিত জাতীয় কবিতা পরিষদের ২য় কবিতা উৎসব মঞ্চে বসে তিনি এঁকেছিলেন
স্বৈরাচার বিরোধী তাঁর বিখ্যাত স্কেচ-- দেশ আজ বিশ্ব বেহায়ার খপ্পড়ে।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

মানিক চন্দ্র দাস এর ছবি

সেইসব সুন্দরীদের বিভা বিচ্ছুরিত বর্ণিল রাশ উৎসবের এক কোণে পড়ে থাকা বোদলেয়ার

লাইনটা সুন্দর। লেখাটা ভালো লাগলো রোমেল ভাই।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

মানিক ভাই,
কি ক্লিন্ন আর দুঃখজর্জর জীবন 'Les Fleurs du mal'-এর এই কবির। Jeanne Duval, Apollonie Sabatier আরো কত ক্ষমাহীন মোহিনীর নাম বিষাক্ত ছুরির ধরণে ক্ষত-বিক্ষত করেছে তাকে আর আমরা উপহার পেয়েছি মহত্ত্বম কিছু কবিতা।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

ভালো লাগল ।
বেশ সুন্দর অভিব্যক্তি ।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

রাজা সাহেব,
আপনাকে ধন্যবাদ। আপনার সবুজ পাহাড়ে কালো (বোদলেয়ারের প্রিয় রঙ) কিম্বা সাদা (জীবনানন্দের প্রিয় রঙ)দুঃখের চাষাবাদ করা যাবে?

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

তিথীডোর এর ছবি

'আমার কেবলই রাত...আমার কেবলই শুধু রাত হয়ে যায়!' মন খারাপ

লেখা ভাল্লাগলো। চলুক

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

বোন,
বোদলেয়ার, সুধীন কিম্বা জীবনানন্দ তো রবীন্দ্রনাথ নন তাই তারা বলতে পারেন নি,

মরণ রে তুঁহু মম শ্যাম সমান
কিম্বা,
জীবন যখন শুকায়ে যায়, করুনা ধারায় এসো

তাদের বলতে হয়েছে

যেমন শরীর, তেমনি চৈতন্যে আমি সারাজীবন অনুভব করেছি এক অতলস্পর্শ গহ্বরের শূন্যতা, শুধু ঘুমের শূন্যতাই নয়, শূন্যতা কর্মের, স্বপ্নের, স্মরণের, বাসনার, অনুতাপের, মনস্তাপের
(বোদলেয়ার)
কিম্বা,
মৃত্যু কেবল মৃত্যুই ধ্রুব সখা
যাতনা শুধু যাতন সুচির সাথী।
(সুধীন্দ্রনাথ দত্ত)
কিম্বা,
সব চিন্তা-সকল প্রার্থনা সকল সময়
শূন্য মনে হয়,
শূন্য মনে হয়।
(জীবনানন্দ)

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখাটা ভাল লাগছে । চলুক চলুক চলুক
---------------------------------
Sad Songs of Love

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

ধন্যবাদ! হাসি

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

অতিথি লেখক এর ছবি

একুশে বইমেলা আসলেই এক অন্যরকম অনুভূতির জিনিস। তবে মানিব্যাগের ভরণপোষণ ক্ষমতা খুব কম হওয়ায় প্রায়শই শুধু দেখে যেতে হয় এত্ত এত্ত সুন্দর বইগুলো। এ কষ্ট রাখি কই? একুশে বইমেলা উপলক্ষে ফেব্রুয়ারী মাসে এক্সট্রা বোনাস দেয়া উচিত আমার মত দিনমজুরদের। অথবা মেলা উপলক্ষে অন্তত শুধু বই টা ফ্রি দেয়া হোক চোখ টিপি

লেখাটা অসাধারণ হয়েছে রোমেল ভাই। তবে বই এর জন্যে বুক টনটন করছে। মন খারাপ

-অতীত

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

বই নামক ওই রূপসী ললনাদের একবার সম্পদ করে ফেলতে পারলেই হলো, আর কোন ভরণপোষণ কিম্বা মাসিক খরচা নেই। ওরা পার্লারে যেতে চায় না, শাড়ীর কিম্বা জড়োয়ার দোকানে গিয়ে টায়ার পাংচার করে দেয় না। শুধু সময় দিতে হবে এতটুকুই তাদের দাবি। তাই বলি, বই এর জন্য বুক টন টন করা ভালো, বউয়ের জন্য নয়। চোখ টিপি

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

কৌস্তুভ এর ছবি

চলুক

আশরাফ মাহমুদ এর ছবি

দারুণ লেখা। মুগ্ধপাঠ।

এইখানে শুনেছি শুদ্ধস্বর, চিনেছি রোদের অসুখ।

আমি নিজেই এখনো দেখি নি! তবে অসুখে আক্রান্ত, রোদের অসুখ না, জ্বর-কাশি।

আপনার সাথে দেখা হলে ভালো লাগবে।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

দারুণ লেখা। মুগ্ধপাঠ।

কৃতজ্ঞতা।

আমি নিজেই এখনো দেখি নি!

এটি কি আপনার 'প্রথমা'? আপনার 'প্রেমিকা'দের কপি পেলে একটা প্রবন্ধ লিখায় হাত দেয়া যেত!

তবে অসুখে আক্রান্ত, রোদের অসুখ না, জ্বর-কাশি।

সেরে উঠুন তাড়াতাড়ি।

আপনার সাথে দেখা হলে ভালো লাগবে।

ভালো লাগবে আমারও। তবে আমার বন্ধুভাগ্য ভালো নয় যে!

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

আশরাফ মাহমুদ এর ছবি

জ্বি, এটিই প্রথম। অন্য কোনো প্রেমিকা নেই, এখনো বহুগামী হয়ে উঠি নি। হাসি
আপনার যে কোনো ধরণের পাঠ-প্রতিক্রিয়া জানতে আগ্রহী, নির্দ্বিধায় জানাতে পারেন।
কী যে বলেন, আপনার বন্ধুভাগ্য পাল্টে যাক।

বইখাতা এর ছবি

লেখায় জীবনানন্দ জীবনানন্দ ঘ্রাণ পেলাম। হাসি বইমেলায় যাওয়ার অপেক্ষায় আছি।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

তাঁর ঘ্রাণ তো চাল ধোয়া স্নিগ্ধ হাতের মতো, আমায় বিবশ করে। তেমন খাঁটি গন্ধ বিলাবো কি করে?

চালের ধুসর গন্ধে তরঙ্গেরা রূপ হয়ে ঝরেছে দু'বেলা
নির্জন মাছের চোখে; পুকুরের পাড়ে হাঁস সন্ধ্যার আঁধারে
পেয়েছে ঘুমের ঘ্রাণ―মেয়েলি হাতের স্পর্শ লয়ে গেছে তারে;

বইমেলায় যাওয়ার অপেক্ষায় আছি।

আপনার প্রতীক্ষার প্রহর আনন্দ-উত্তেজনাময় হোক।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

চমৎকার রোমেল চৌধুরী।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

ধন্যবাদ রিটন ভাই,
এবারের বইমেলায় আপনার সাথে পরিচিত করে দেবার পর থেকেই আমার মেয়ে রোদেলা আপনার লেখা ছড়ার বই বালিশের পাশে রেখে ঘুমুচ্ছে, কিছুতেই সেগুলো সরানো যাচ্ছে না।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

তাসনীম এর ছবি

দারুণ লিখেছেন রোমেল ভাই।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

ধন্যবাদ তাসনীম ভাই, প্রেরণা পেলাম।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

ঘ্যাচাং

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

ওডিন এর ছবি

লেখাটা খুব ভালো লাগলো রোমেল ভাই! হাসি

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

ওডিন ভাই,
ধন্যবাদ ও শুভপ্রীতি!

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনার লেখা সব সময়ই (গুড়)

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

কৌস্তুভ ভাই,
কৃতজ্ঞতা!

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আপনার লেখায় মন্তব্য করতে আর ইচ্ছে করেনা। যখনই আপনার লেখা পড়ি, মনে হয় আমিই রোমেল চৌধুরি, আমিই এক নিভৃতচারী চলেছি এমাথা ওমাথা, চষে ফেলছি গোটা লেখাটা। শব্দমালার সাথে একাত্ম হয়ে যাই।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

রাতঃস্মরণীয় ভাই,
আমি বিশ্বাস করি, সহোদর না হয়েও একাত্মা হওয়া যায়। আপনার ভালোবাসার প্রতিদান দেবার মতো আমার যে কিছু নেই।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।