প্রথম তাঁবুবাসের কিছু টুকরো স্মৃতি

পাগল মন এর ছবি
লিখেছেন পাগল মন [অতিথি] (তারিখ: শনি, ০৩/০৯/২০১১ - ১০:৫৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ছোটবেলায় আমি মায়ের খুব ন্যাওটা ছিলাম। মা ছাড়া কোথাও যেতে চাইতাম না। তবে আরেকটা কারণ হতে পারে যে মানুষের সাথে কথা বলতে পারার অক্ষমতা। মায়ের সাথে গেলে আমার তেমন একটা কথা বলতে হত না। যাহোক, প্রথম মা ছাড়া, বাসার বাইরে যাই ক্লাস নাইনের শুরুতে। স্কুলে থাকতে খেলাধূলা অনেকগুলোই করতাম কিন্তু কোনটাই তেমন একটা ভালো পারতাম না। ক্লাস এইটে উঠে দেখলাম স্কাউটিং জিনিসটা ভালোই। কি মনে করে যোগ দিলাম, অবশ্য স্কাউট টীচার আমার স্কুলে পছন্দের কয়েকজন টীচারের মধ্যে একজন ছিল। স্কাউটিং এ বেশ মজা পেয়ে গেলাম যদিও প্রতি সপ্তাহে পিটি টাইপ করতে হত। কিন্তু এমনিতে খারাপ না।

যারা স্কাউটিং সম্পর্কে জানেন না তাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে স্কাউটিং এর সাধারণভাবে তিনটি ধাপ। কাব স্কাউটিং- ক্লাস ওয়ান থেকে ক্লাস ফাইভ। বয় স্কাউটিং- ক্লাস সিক্স থেকে ক্লাস টেন। এরপরে রোভার স্কাউটিং- ক্লাস ইলেভেন থেকে ২৫ বৎসর বয়স পর্যন্ত। কাব স্কাউটদের সর্বোচ্চ পুরষ্কার বাংলাদেশে “শাপলা কাব অ্যাওয়ার্ড” যা দেশের প্রেসিডেন্ট নিজ হাতে পুরষ্কারপ্রাপ্তকে পরিয়ে দেন। তেমনিভাবে বয় স্কাউটদের সর্বোচ্চ র‍্যাঙ্ক হচ্ছে ‘প্রেসিডেন্ট স্কাউট’ এবং রোভার স্কাউটদের সর্বোচ্চ র‍্যাংক হচ্ছে ‘প্রেসিডেন্ট রোভার স্কাউট’। এই পুরষ্কার একজন স্কাউট (কাব, বয়স্কাউট কিংবা রোভার স্কাউট) এর জন্য বিশাল প্রাপ্তি। আমাদের দেশের নিয়ম অনুযায়ী দেশের প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন দেশের সব স্কাউটদের লীডার। সেই তিনি অ্যাওয়ার্ড ব্যাজ পরানোর সময় স্কাউটকে সালাম দেন। মোটামুটি যারাই সিরিয়াস ধরনের স্কাউটিং করেন তাদের লক্ষ্য থাকে এই অ্যাওয়ার্ডটি পাওয়ার জন্য। আমার অবশ্য ছিলনা। হাসি

অনেক জ্ঞান দিয়ে ফেললাম। নিজেকে কেমন জ্ঞানী জ্ঞানী মনে হচ্ছে। চোখ টিপি

ক্লাস নাইনে আমাদের স্কুল থেকে ক্যাম্পুরীতে দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ক্লাস নাইন তখন স্কাউটগ্রুপে সবচেয়ে সিনিয়র ব্যাচ। তাই আমাদের ব্যাচ থেকেই তিনজনকে চারটি উপদলের তিনটিতেই গ্রুপ লীডার বানিয়ে দেন স্যার। তন্মধ্যে এই অধমও একজন। যদিও আমরা কেউই তেমন কিছুই জানি না, দু-একটা গিট্টু দিতে পারি, সামান্য ফার্স্ট এইড জানি মাত্র। কিন্তু সিনিয়র হওয়ার কারণে নেতৃত্ব পেয়ে গেলাম। হো হো হো

যথারীতি কিছুদিন পরেই আমরা গেলাম গাজীপুরে ক্যাম্পুরীতে পাঁচদিনের জন্য। সেখানে থাকতে হবে তাঁবুতে যা তখন আমাদের জন্য বেশ এক রোমাঞ্চকর ব্যাপার ছিল। আমাদের জন্য একটি তাঁবু বরাদ্দ ছিল (মনে হয়)। প্রথমদিন গিয়েই তাঁবু টানাতে হবে, কিন্তু তাঁবুতো এর আগে জীবনেও টানাইনি। অনেক কষ্টে, অন্য দলগুলোর তাঁবু টানানো দেখে, স্যারের পরামর্শে আমরা আমদের তাঁবুগুলো দাড় করিয়ে ফেলি। তাবুঁতো দাড় করালাম, এখন রান্না করতে হবে কেননা এখানেতো আর মা নেই যে রান্না করে দিবে। জীবনে আমাদের বেশিরভাগই রান্নাঘরে পর্যন্ত ঢুকিনি, রান্নাতো অনেক দূর কি বাত হ্যাঁয়।

আমরা যাওয়ার সময় লাকড়ি কিনে নিয়ে গিয়েছিলাম। অনেক কষ্টে দুটো চুলা বানালাম ইট দিয়ে। গ্রামে বিয়েবাড়িতে রান্না দেখে সেরকম চুলা বানানোর আইডিয়া পেয়েছিলাম। এরপরে আগুন ধরানো, ফু দিয়ে দিয়ে চুলার আঁচ বাড়ানো সবই আমাদের করতে হয়। সেদিন বুঝেছিলাম মায়ের কী কষ্ট হয় প্রতিটি দিন। আমাদের মধ্যে একজন পাওয়া গেল যে কিছুটা রান্না করতে পারে। আর কি, আমরা দায়িত্ব ভাগাভাগি করে নিলাম। যেহেতু ও রান্না পারে, কয়েকজন ওকে শুধু সাহায্য করবে। আর বাকিরা রান্নার যোগাড় মানে জিনিসপত্র কাটাকাটি, ধোয়াধুয়ি, এগিয়ে দেয়া এসব ফাইফরমাশ খাটবে। এভাবেই আমরা আমাদের প্রথম রান্নাটা রেঁধে ফেললাম। কেমন হয়েছিল সেটা আর নাই-বা বলি। চোখ টিপি

বিকেলের দিকে রিপোর্টিং ছিল আমাদের বিশাল এক মাঠে। সেখানে গিয়ে হাজিরা দিলাম, কিছুক্ষণ পিটি করলাম, জাতীয় পতাকা উত্তোলন করলাম, ইত্যাদি। রাতে তাঁবুতে ফিরে পরেরদিন কি কি হবে তার প্রস্তুতির জন্য আলোচনা করে সেদিনের মত ঘুম।
ক্যাম্পুরীতে প্রতিদিন সকালেই কয়েকজনের একটি গ্রুপ প্রতিটি তাঁবু পরিদর্শনে যান, সেখানে তারা তাবুর পরিবেশ, সৌন্দর্য পরীক্ষা করেন। এছাড়াও পার্সোনাল হাইজিন (মানে হাতের নখ, পরিষ্কার জামাকাপড় ইত্যাদি)ও দেখেন। বলাই বাহুল্য আমাদের অবস্থা বেশ খারাপ ছিল। পরে মাঠে সে পরিদর্শনের ফলাফল জানানো হয় এবং সর্বোচ্চ মার্কপ্রাপ্ত তিনটি দলকে বিভিন্ন রঙের পতাকা দেয়া হয় যা তারা তাদের তাঁবুতে টানায়। আমরা সৌভাগ্যবশত একদিনও সে পতাকা পাইনি। দেঁতো হাসি

তাঁবুর পরিবেশ বলতে সেখানে তাবুর পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বোঝায়। তাঁবুর সৌন্দর্য অনেকভাবেই বাড়ানো যায়। সাধারণত স্কাউটরা বিভিন্ন গেজেট তৈরি করে বাঁশ আর রশি দিয়ে। আমরাও কয়েকটি তৈরি করা শুরু করলাম, আমাদের জিনিসপত্র (ব্যাগ, স্যুটকেস)রাখার জন্য বানানো হল দুটি, জুতা রাখার জন্য একটি, রান্নার জিনিসপত্র রাখার জন্য কয়েকটি। একটি আলনাও বানিয়ে ফেলা হল। ও বলা হয়নি, ক্যাম্পে নিয়ম হচ্ছে কোন কিছুই মাটিতে রাখা যাবে না, অন্তত কয়েকটি ইটের উপরে বাঁশ দিয়ে হলেও তার উপরে রাখতে হবে। এসব জিনিস বানাতে এবং সেগুলোকে মাটিতে দাড় করিয়ে রাখার জন্য মাটি খুঁড়তে খুঁড়তে আমার হাত ব্যাথা হয়ে গিয়েছিল এটা এতদিন পরেও আমার স্পষ্ট মনে আছে।

এত কষ্টের পরেও দিনগুলো সেখানে বেশ আনন্দেই কাটছিল, সবাই মিলে অনেক হৈচৈ করতাম। স্যার যখন থাকতেন তখন অবশ্য খুব বেশি করতাম না কিন্তু স্যার আর কতক্ষণ থাকেন। এরমধ্যে ক্যাম্পুরীর প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে হত। হাইকিং, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান, বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, সব কিছুই তখন আমাদের জন্য এক অনাবিল আনন্দের উৎস। যেসব কাজ জীবনে করিনি সেগুলোও তখন হাসিমুখে করছিলাম আমরা।

আমার ঠিক মনে নেই, সম্ভবত তৃতীয় দিন আমাদের কয়েকজনের বাবা-মা আমাদেরকে দেখতে আসেন। অনেকেই বেশ চিন্তিত ছিলেন তাদেরকে ছেড়ে আমরা কিভাবে থাকছি, কী খাচ্ছি এসব নিয়ে। কিন্তু আমার ধারনা তাদের ভুল ভাঙতে দেরী হয়নি। আমরা বেশ আরামেই ছিলাম। সেদিন সারাটা দিন আমাদের এক অন্যরকম আনন্দে কাটে।

চতুর্থ দিন, ক্যাম্পুরীর প্রোগ্রাম অনুযায়ী সব দল বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে অংশ নেয়। আমরা চিন্তা করলাম যে আমরা কী করতে পারি। আমাদের কেউই গান গাইতে পারেনা, নাচতেও পারেনা। কী করা যায়? অংশতো নিতেই হবে, পারি আর না পারি। শেষ পর্যন্ত আমরা ঠিক করলাম যে আমরা নাটক করব। নাটক তো করব, কিন্তু অভিনয় কে করবে আর কোন নাটক করব। সেটাও অনেক ভাবাভাবির পরে ঠিক করা হল যে আমরা একটি হাস্যরসপূর্ণ নাটিকা করব। আমিও একটা ছোট্ট পার্ট করেছিলাম। কিন্তু কোন নাটক করেছিলাম সেটা আজ আর মনে নেই। তবে সেটাই হচ্ছে এখন পর্যন্ত আমার একমাত্র অভিনয়, সেদিনই আমি আমার অভিনয় প্রতিভা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারনা পেয়ে গিয়েছিলাম। দেঁতো হাসি পুরো ক্যাম্পুরীর সব দলকে কয়েকটি ডিভিশনে ভাগ করা হয়েছিল। প্রতিটি বিভাগ থেকে দুটি কিংবা তিনটি ভালো পারফর্মকারী দল পরের দিন মূল প্রতিযোগীতায় অংশ নিবে। আমরা অবশ্যই তার মধ্যে ছিলাম না।

শেষ দিনটি ছিল সবচেয়ে মজার, আনন্দের। সেদিন রাতে 'মহা তাঁবু জলসা' হয় যেখানে অনেকগুলো দল পারফর্ম করে। কিছু কিছু পারফর্মেন্স ছিল দেখার মত। আমার এখনো মনে আছে একটি দল “দয়াল বাবা, কেবলা ক্বাবা, আয়নার কারিগর’ এই গানটি এত সুন্দর করে গেয়েছিল যে আমার এখনো মনে আছে। সেদিন অনুষ্ঠান অনেক রাত অবদি হয়েছিল যতদূর মনে পরে। এর মধ্যে অবশ্য কয়েকটি অনাকাঙ্খিত ঘটনাও ঘটেছিল, কয়েকটি মেয়ে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল কিন্তু গুরুতর কিছু হয়নি কোনটাই।

পরেরদিন সবাই তাঁবু গুছিয়ে, সেটা ফেরত দিয়ে বাসে করে ঢাকা ফেরত চলে আসি আর সংগে করে নিয়ে আসি প্রথম তাঁবুবাসের এক অনন্য স্মৃতি যা কখনো ভোলার নয়। এরপরেও আমি আরো কয়েকবার তাবুবাস করেছি কিন্তু প্রথমবারের সেই ক্যাম্পুরী এখনো আমার কাছে অতুলনীয় হয়ে আছে। একটাই দুঃখ যে সে তাঁবুবাসের কোন ছবি আমার কাছে নেই, মন খারাপ যেটা হতে পারতো এক অমূল্য সংগ্রহ আমার জন্য।


মন্তব্য

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

বেশ বেশ। আপনি তো তবু স্কাউট হয়েছিলেন। আমার ছিল 'কাব'-এই শুরু 'কাব'-এই শেষ। আচ্ছা, ক্যাম্পুরি আর জাম্বেরির মধ্যে পার্থক্য কি?

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

পাগল মন এর ছবি

রোমেল ভাই, আপনি আবারো আপনি বলছেন? রেগে টং

'কাব' স্কাউট করেই শেষ করে দিলেন? অবশ্য ভালোই হয়েছে। উর্দিতো পরে পরেছেনই। হাসি

ক্যাম্পুরী হচ্ছে প্রধাণত কাব স্কাউটদের সম্মেলন আর জাম্বুরী বয় স্কাউটদের সম্মেলন। যদিও ক্যাম্পুরীতে বয়স্কাউটরাও যেতে পারে, জাম্বুরীতে মনে হয় কাবরা যেতে পারেনা। মন খারাপ

------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।

সজল এর ছবি

হা হা, আপনাদের দল দেখা যায় পুরস্কারে নিরাসক্ত। আমি স্কাউটে ক্লাস ফাইভে ভর্তি হলাম, তার কিছুদিন পর আমাদের স্কাউটের স্যার প্রেসিডেন্টস অ্যাওয়ার্ড এর জন্য সিনিয়রদের নাম দিতে হবে অনেক, তাই জুনিয়রদের কে স্কাউটে রাখা যাবে না, কোটার সমস্যা ইত্যাদি নানা হেনতেন বুঝিয়ে আমাদের পুরা ক্লাসকে বিদায় দিয়ে দিয়েছিলেন। কয়েকদিন পর স্কাউট তহবিল নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে তার স্ট্যান্ড রিলিজ অর্ডার আসে! সেই আমার স্কাউট জীবনের সমাপ্তি।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

পাগল মন এর ছবি

কিছু না পারলেতো পুরস্কারে নিরাসক্ত হতেই হয়, তাই না? মন খারাপ

আমাদের স্কাউট টিচার বেশ ভালো লোক ছিলেন। আমাকে অনেক পছন্দ করতেন।

পরে আর স্কাউট করেননি কেন? করলেই পারতেন।

------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।

তারেক অণু এর ছবি

খুব ভাল লাগল, আমার প্রথম স্কাউট ক্যাম্পুরীর মধুময় স্মৃতি মনে পড়ল অনেক দিন পর। ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ার সময় গেছিলাম। তখনকার সেই সনদগুলো এখনো বাড়ী গেলে নেড়েচেড়ে দেখি. আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

পাগল মন এর ছবি

ওয়াও, তারেক ভাই, আপনিও স্কাউট ছিলেন।

সনদগুলো অনেকদিন হয় চোখেই দেখি না। আজ হঠাৎ সেদিনের কথা মনে পড়ায় লিখে ফেললাম।

------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।

এনকিদু এর ছবি

একটা জিনিস বুঝতে পারছিনা, আপ্নারা একেক জন ক্লাস সিক্সে, নাইনে কিভাবে ক্যাম্পুরীতে গেলেন ? সিক্স থেকে তো বয়স্কাউট হওয়ার কথা। গেলে জাম্বুরীতে যাবেন।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

এনকিদু এর ছবি

আমার এখনো মনে আছে একটি দল “দয়াল বাবা, কেবলা ক্বাবা, আয়নার কারিগর’ এই গানটি এত সুন্দর করে গেয়েছিল যে আমার এখনো মনে আছে।

জলসাটা মনে হচ্ছে আমিও দেখেছিলাম। অথবা দুই-এক বছর আগে বা পরে ঐ একই স্কুলের পারফর্মেন্স দেখার সুযোগ হয়েছিল অন্য কোন ক্যাম্পে। আপনি কোন সালের কথা লিখলেন ?


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

পুরানো অনেক কথা মনে করিয়ে দিলেন পাগল ভাই, অসংখ্য ধন্যবাদ। ছোটবেলায় কাব স্কাউটিং করতাম। ১৯৮০ সালে একবার বিভাগীয় এবং একবার ন্যাশনাল ক্যাম্পূরী করেছি। অনেক স্মৃতি সেইসব দিনগুলো নিয়ে।

নে-তা-জীহ্‌ আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করবো করবো ক-রি-বোহ্‌
তোমরা তোমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা ক-অ-রোহ্‌।

তবে প্রথমবার যখন বার্ষিক তাবুবাসে গেলাম, মনটা খুব খারাপ করেছিলো। শুধুমাত্র বয়স্কাউট ভাইয়ারা তাবুতে থাকবে, আর আমাদের থাকার জায়গা স্কুলের রুমের ভিতরে। পরে অবশ্য বয়স্কাউটিং করতে গিয়ে তাবুবাস হয়েছে। পরবর্তীতে কর্মজীবনে এবং প্রশিক্ষণজীবনে কয়েকবার তাবুবাস করতে হয়েছে। কমোডওয়ালা টাট্টি-তাবুও ব্যবহার করেছি। কিন্তু সেই ছোট্টবেলার মতো অনুভূতি আর হয়নি।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

পাগল মন এর ছবি

রাতঃস্মরনীয় ভাই, আপনাকেও ধন্যবাদ।
"যথাসাধ্য চেষ্টা করা" স্কাউট মটোটা কিন্তু বেশ শক্তিশালী। জীবনে কাজে লাগাতে পারলে অনেক কিছুই করা সম্ভব।

প্রথম যেকোন কিছুই আসলে অন্যরকম, স্পেশাল। জীবনে ভোলার নয়।

------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।

অপছন্দনীয় এর ছবি

দেঁতো হাসি

আর ইয়ে, তাঁবু

পাগল মন এর ছবি

দেঁতো হাসি

আর ইয়ে, তাঁবু

বানানটা ঠিক করে দিলাম। আগে জানতাম না আসলে।
ধরিয়ে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ দিয়ে আর ছোট করব না। আপ্নে বড় (সিনিয়র) মানুষ। শয়তানী হাসি

------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।

অপছন্দনীয় এর ছবি

হুঁ, বছরখানেকের... কাজেই পর্যাপ্ত 'আদব' সহযোগে কথা বলবেন এখন থেকে, ঠিক আছে? খাইছে

পাগল মন এর ছবি

কী বলেন, মাত্র বছরখানেকের? আমিতো ভেবেছিলাম মিনিমাম দশবছরের সিনিয়রতো হবেনই। খাইছে

ঠিক আছে এখন থেকে আপনাকে "ভাইয়া" বলে ডাকব নে। চোখ টিপি

------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।

অপছন্দনীয় এর ছবি

আপনার মুরগী রাঁধিয়ে বন্ধুটি যদি আপনার ব্যাচমেট হয়ে থাকে তাহলে এক বছরের - আর না হলে অন্য কিছু হবে হাসি

পাগল মন এর ছবি

বন্ধুটি আমার ব্যাচমেটই বটে ভাইয়া। খাইছে

------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।

অপছন্দনীয় এর ছবি

ভেবে দেখতে হবে, খালি ভাইয়ায়ই চলবে নাকি ওই যে কি যেন নজর না নেওয়াজ কি বলে সেগুলোও লাগবে খাইছে

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

জমানা বদলে গেছে। ভাইয়া ডাক শুনতে হলে আগে ছোটকে খাইয়ে নিতে হবে। না খাওয়ালে কোনও ভাইয়া নেই।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

পাগল মন এর ছবি

রাতঃদা ঠিক বলেছেন। হাসি

------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।

পাগল মন এর ছবি

ভাইয়ায়ই চলবে মানে? দৌড়াবে। শয়তানী হাসি

------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।

তিথীডোর এর ছবি

আর ইয়ে, তাঁবু

এটাই বলতে যাচ্ছিলাম। চোখ টিপি

চলুক
শাহরিয়ার কবিরের কিশোর উপন্যাস 'নিকোলাস রোজারিওর ছেলেরা' মনে করিয়ে দিলেন। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

পাগল মন এর ছবি

"তাঁবু" বানানটাই জানতাম না। এজন্যই এঅবস্থা। মন খারাপ
ঠিক করে দিলাম।

উপন্যাসটা পড়েছি বলে মনে করতে পারছি না। মন খারাপ জীবনে যে কত কিছু পড়ার বাকি?! মন খারাপ

------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।

ফাহিম হাসান এর ছবি

স্কাউটিংয়ের দরকার আছে। তাঁবুবাসে পোলাপানগুলো সাবলম্বী হওয়ার প্রথম পাঠ পায়।

পাগল মন এর ছবি

হুমম, ঠিক বলেছেন ফাহিম ভাই।

------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।

নজমুল আলবাব এর ছবি

কোন রকম খেলাধুলা, স্কাউটিং-বিএনসিসি টাইপ পরিশ্রমরে কাজ জীবনেও করিনি। আমি অলসের দলের ক্যাপ্টেন ছিলাম।

এখনকি স্কাউট হয়? শুনিনা আগের মতো, দেখিও না

পাগল মন এর ছবি

আমিও চরম অলস কিন্তু স্কাউটিংটা করতে বেশ মজা লাগত। তেমন কষ্টের কিছুতো করতে হত না।

স্কাউটিং এখনো হয়। তবে পত্রিকায় এ বিষয়ে খবর অনেক কম আসে হয়ত।

------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।

আব্দুর রহমান এর ছবি

বিশ্বাসী, বন্ধু, বিনয়ী, সদয়

প্রফুল্ল, মিতব্যায়ী, নিরমল রয়।

চোখ টিপি

------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল

পাগল মন এর ছবি

দেঁতো হাসি

------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।