রবীন্দ্রসঙ্গীতে কুম্ভিলবৃত্তি

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: রবি, ১৮/০৯/২০১১ - ৭:২২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

অনেকেই সঙ্গীত ব্যাপারটাকে একটা নেহাতই তামাশা বলে ঠাউরান। নইলে অন্য যেকোন বিষয়ে অনধিকারীগণ অনভিপ্রেত মন্তব্য করলে বিদগ্ধ-সমাজ তেড়ে মারতে যান; কিন্তু গান-বাজনার ব্যাপারে দেখি এক আশ্চর্য গা সওয়া ভাব। এ ব্যাপারে যে কেউ তার বালখিল্য মতামত সুধীসমাজে পেশ করবার অধিকারী! সাত সুর নিয়ে বিন্দুমাত্র অনুভূতি না থাকলেও অনেকেই সুর নিয়ে অসুরসুলভ কারবারে মেতে ওঠেন। রবীন্দ্রনাথের অনেক সমালোচনাই যৌক্তিকভাবে করা সম্ভব। কিন্তু অনেকেই তা না করে রবীন্দ্রসমালোচনাকে একটা ফ্যাশনে পরিণত করেছেন। সম্প্রতি আশ্চর্য একটা রবীন্দ্রসমালোচনা লক্ষ্য করলাম যার একটা বড় অংশ খরচ হয়েছে রবীন্দ্রনাথের বহু গানের ওপর কুম্ভিলবৃত্তির অভিযোগ প্রমাণের চেষ্টায়। মূল অভিযোগ রবীন্দ্রনাথের “আমার সোনার বাংলা” গানটি নিয়ে গানটির মূল সুর যে গগন হরকরার তা জানিয়ে নাকি এক অভূতপূর্ব গণসচেতনতার গোলক গড়িয়ে দেয়া হয়েছে!

বাংলা তথা ভারতীয় সঙ্গীতের ধারা ও বিকাশ সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ধারণা থাকলে কেউ এ জাতীয় স্থূল অকর্ষিত মন্তব্য করতে পারেন না। সঙ্গীতের অ,আ,ক,খ জানলে কারো মনে এহেন বিটকেল তর্কে প্রবৃত্ত হবার রুচি থাকে না। যে চমকপ্রদভাবে গগন হরকরার “আমি কোথায় পাবো তারে” গানটির সুরে “আমার সোনার বাংলা” গানটি রচনার তথ্য দেয়া হয়েছে, তা কলম্বাসের আমেরিকা আবিষ্কারের তূল্য মনে হয়েছে। বোঝাই যাচ্ছে অত্যন্ত জোলো শ্রোতাদের উদ্দেশ্য করেই এ জাতীয় আলোচনার আরম্ভ। কারণ বাংলা গানের মননশীল শ্রোতামাত্রই জানেন “আমার সোনার বাংলা” গানটির সুরসংগ্রহের কথা এবং মূল গানটি তাদের কাছে অতি পরিচিত এবং বহুল-শ্রূত।

ভারতীয় সঙ্গীত নিয়ে যারা বিন্দুমাত্র চর্চা করেছেন তারা সবাই এর সুরবৈশিষ্ট্য ও পাশ্চাত্য সঙ্গীতের সঙ্গে এর পার্থক্যের কথা জানেন। পাশ্চাত্যের সঙ্গীত যে অর্থে Composed আমাদের গান-বাজনা কিন্তু সেরকম নয়। রক বা পপ গানও আবহমানকালের বাংলা গানের চেয়ে অনেক বেশি কড়া নিয়মে বাঁধা, মূল গায়ক ছাড়া অন্য কেউ ওতে একেবারে ভিন্ন গোত্রীয় কোন সুর দেওয়ার অধিকারী নন এবং পাশ্চাত্যের গানের ১২ টি স্ট্যাটিক সুরে আমাদের ২২ শ্রুতির বৈচিত্র্য অকল্পনীয়। বাংলা গানের সুরের ধারা সম্পর্কে জ্ঞান থাকলে প্রীতম বা অনু মালিকের সুর চুরির সাথে রবীন্দ্রনাথের সুরের আত্তিকরণকে এক করে দেখা যায় না। রবীন্দ্রনাথ এবং নজরুলের আগে বাংলা গানের সুরের দীনতা সম্পর্কে আগ্রহী শ্রোতা ও পাঠকমাত্রই জানেন। অত্যন্ত সীমিত ও নির্দিষ্ট কিছু সুরেই সমস্ত গান ও পদাবলী রচিত হত। লোকসঙ্গীত, রাগসঙ্গীত ও পাশ্চাত্যসঙ্গীত থেকে সুর আত্তিকরণ না করলে বাংলা গানের কোন অগ্রগতি হত না। রামপ্রসাদের প্রায় সব গান গোটা কতক সুরে এবং রামপ্রসাদী সুরে অজস্র গান পরবর্তীতে অনেকেই রচনা করেছেন। কিন্তু গগন হরকরার সুরে লালনের বাউল গানের সুরের ধাঁচের সাথে এমন কোন পার্থক্য নেই যার জন্য একে গগনের নামের সীলমোহর মারা যেতে পারে। রাগসঙ্গীতে একই রাগে অজস্র বন্দিশ আছে যাদের চলনে বলনে গায়নে খুব একটা তফাত নেই। কাজেই কুম্ভিলবৃত্তির প্রশ্নে গোটা ভারতীয় সঙ্গীতই লোপাট হয়ে যায়। ইমন রাগে গান বাঁধা হলেই সেটার সুরকার কি আমির খসরু হয়ে যান? নাকি তোড়ি বা দরবারীতে গান বাঁধলেই সেটার সুরকার তানসেনকে মানতে হবে?

বাংলাগানের কাব্য ও ভাবসম্পদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রাচীনকাল থেকেই শুধু কাব্যগুণেই একই সুরের গান বা পদাবলি ভিন্ন সৃষ্টির মর্যাদা পেয়ে এসেছে। গগন মণ্ডল ছিলেন লালনের শিষ্য, তার গানের সুর লালন ফকিরের গানের ধাঁচের এবং ভাবসম্পদ পুরোপুরি লালনের। এটা বাংলা গানের পরম্পরা থেকে বিচ্ছিন্ন কোন নতুন গোত্রের সৃষ্টি নয় যে তাকে বাউল সুর না বলে গগনের সুর বলতে হবে। সারি গানের সুর নিয়ে রবীন্দ্রনাথ যে গান লিখেছেন তার সুরকার হিসেবে রবীন্দ্রনাথের নাম লেখা হয় না বরং সুরনির্দেশে সারিগানই লেখা থাকে।

এ ধরণের আলোচনা দেখলেই বোঝা যায় সঙ্গীতের একেবারে গোড়ার ধারণাই এই গোত্রের সমালোচকদের নেই। শার্ঙ্গদেবের সঙ্গীতরত্নাকর গ্রন্থে স্বরের যাবতীয় মীড়খণ্ড তথা বিন্যাস ও সমাবেশ দেয়া আছে। সে হিসেবে শার্ঙ্গদেবই উপমহাদেশের একমাত্র মৌলিক সুরকারের কৃতিত্ব দাবী করতে পারেন! তানসেন-সদারঙ্গ-অদারঙ্গ থেকে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগে তাহলে পণ্ডিত জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষের তাবত সঙ্গীত-সৃষ্টিকে নস্যাত করতে হয়। নজরুলের রাগপ্রধান ও বাংলা খেয়ালগুলোকেও চুরি বলতে হয়। মান্না দে বা মানবেন্দ্রর সব সুরকেই চুরি বলতে হয়। ভাঙা গান শব্দটির তাৎপর্যই যারা বোঝেন না তারা আসেন সঙ্গীত নিয়ে জ্ঞানগর্ভ আলোচনা করতে! এরা কি এটা জানেন যে খোদ রাগসঙ্গীত বা উচ্চাংসঙ্গীত বস্তুটিও লোকসঙ্গীতের সন্তান বা এদের ভাষায় লোকসঙ্গীত থেকে বৈজু, রাজা মানসিংহ বা তানসেনের চৌর্যবৃত্তি! রবীন্দ্রনাথের মৌলিক কোন গানের সুর হুবহু নিয়ে আপনি-আমি কোন গান লিখে ঋণ স্বীকার না করলে সেটা চৌর্যবৃত্তি। কিন্তু যদি আপনি আমি রবীন্দ্রনাথের “বাজে বাজে রম্যবীণা” বা “বাণী তব ধায়” এর সুরে গান লিখে সেটাকে যথাক্রমে ইমনকল্যাণ ও আড়ানা সুরে রচিত বলি সেটা মোটেও চৌর্যবৃত্তি নয়। ঠিক একইভাবে গগন হরকরার রচিত বাউল সুরের গানকে বাউল সুর হিসেবে স্বীকার করে সম্পূর্ণ নতুন কাব্যিক ব্যঞ্জনা দেয়া মোটেই দরিদ্র ডাকহরকরার মানস-সম্পদের নির্দয় চুরি নয়। আরও উল্লেখ্য বাউল গানের প্রামাণ্য সুরের সন্ধান আর সোনার হরিণের সন্ধান একই কথা। অমর পালের গাওয়া গানই গগন হরকরার মূল সুরের গান সেটা ভাবা ঠিক নয়। ঠিক যেমনটি ঠিক নয় সুচিত্রা মিত্রের গাওয়া সুরটিকেই “আমার সোনার বাংলা”র মূল সুর ধরে নেওয়া। কিন্তু পঠন পাঠন থেকে এটা প্রমাণ হয় যে গানটা গগন হরকরার রচিত বাউল গানের সুরে রচিত। কাজেই রবীন্দ্রনাথের সমালোচনার নামে প্রদর্শনসর্বস্ব গিমিকের প্রচারের কোন মানে হয় না। এমনিতেই আরো অনেক সমালোচনা করা যেতে পারে।


মন্তব্য

কৌস্তুভ এর ছবি

ধুরো, আবারও নামহীন অতিথির র‍্যান্ট?

ধূমকেতু এর ছবি

আমি সচলে নিতান্ত অচল! অতিথি লেখক হিসেবে নাম কি করে দেয় সেটা জানি না বলেই এটা হয়েছে! দয়া করে নিয়মটা জানালে উপকৃত হব।

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনি কি সচলে কোনো অতিথি লেখকেরই পোস্ট পড়ে দেখেন নি? যেখানে লিখছেন সেই পরিবেশটা একটুও দেখে নেবেন না? অধিকাংশ অতিথি লেখার শুরুতে বা শেষে নিজের নামটা লিখে দেন। কেউ কেউ অবশ্য শিরোনামে বা ট্যাগেও লেখেন, তবে সেটা দেখতে একটু অস্বস্তিকর।

আপনি যদি এই বিষয়ে এতই চিন্তিত হয়ে থাকেন, তবে নিশ্চয়ই মূল পোস্টটা, তার প্রতিপোস্ট, তার প্রতিপোস্ট, এবং প্রচুর মন্তব্যগুলো দেখেছেন। সেখানে এই লেখায় যে দুর্বল যুক্তিগুলো দেওয়া আছে সেগুলো আগেই উঠেছে এবং ভেঙে গেছে। তার পরেও আপনি এই বেসিক জিনিসটুকু বোঝেন নি, যে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত বা লোকসঙ্গীতের মত জিনিসগুলো বহু দিন ধরে প্রচলিত বলে স্রষ্টা-অজ্ঞাত এবং পাবলিক ডোমেনে, আর তার থেকে নিজের মত করে গগন বা রবি কিছু সৃষ্টি করলে সেটা স্রষ্টা-জ্ঞাত এবং তাই কিছু বছরের জন্য তাঁর কপিরাইটে।

তাই মূলত বিরক্ত হয়েছি লেখাটায়। সেটা পড়ে নিচে এসে দেখলাম লেখকের নামটুকুও নাই। তখন বললাম, এমন পোস্টের কোনো দরকার ছিল না।

ধূমকেতু এর ছবি

শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের বন্দিশের স্রষ্টা অজ্ঞাত এ কথাটিকে আপনার বিরক্তিজনিত ভ্রম বলে ধরে নিলাম। প্রায় প্রতিটি বিখ্যাত বন্দিশের রচয়িতাই জ্ঞাত এবং অত্যন্ত বিখ্যাত শিল্পীও ছিলেন। বিরক্তির ঊর্ধ্বে উঠে একটু সেগুলো জানার চেষ্টা করলে হয়তো কম বিরক্ত হবেন।

ধন্যবাদ! হাসি

কৌস্তুভ এর ছবি

বন্দিশের কথা আমি তো আনি নি। আপনি হাজার বছর আগের শাস্ত্রীয় সঙ্গীত-কোষ রচয়িতা (সুরসৃষ্টিকারীর চেয়ে বেশি সঙ্কলক) শার্ঙ্গদেবের কথা এনেছেন, তাই রাগ-রাগিণীর স্রষ্টাদের পরিপ্রেক্ষিতে বললাম।

আর যখন বলছেন, প্রতিটি বন্দিশের স্রষ্টা অত্যন্ত সুপরিচিত শিল্পী ছিলেন, তার অর্থ আমি সেটা ভেঙে কিছু সৃষ্টি করলে সঙ্গীতাভিজ্ঞ সবাই স্বচ্ছন্দেই মূল সুর থেকে তার মূল স্রষ্টার পরিচয় পেয়ে যাবে। কিন্তু পূর্ববাংলার অখ্যাত শিল্পী গগন হরকরার ক্ষেত্রে সেটার সম্ভাবনা কম।

যাহোক, মূল পোস্টগুলোর মত এখানেও কমেন্টের লম্বা ধারা প্রবাহিত করতে আমি ইচ্ছুক নই, রবিবাবু বা গগন বা পোস্টলেখক কারো পক্ষে বাদী হওয়ার প্রয়োজনও নেই। আমার বিরক্তির কারণটা জানিয়েছি, এবার থামলাম। ভাল থাকুন।

ধূমকেতু এর ছবি

আপনি যে রকম ঢালাওভাবে শাস্ত্রীয় লোক সঙ্গীতকে পাবলিকের সম্পত্তি বলেছেন ব্যাপার সেরকম নয় এবং বন্দিশের কথা না তুলে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের কথা বলা যায় না - আশা করি আপনার সেটা জানা আছে!

বেশির ভাগ বিখ্যাত বন্দিশই বিখ্যাত কোন রচয়িতার। তবে অখ্যাত সঙ্গীতকারদেরও অনন্য সব বন্দিশ আছে। শার্ঙ্গদেব শুধু সঙ্কলক তা নয়। আমি যেটা বলেছি তা হল শার্ঙ্গদেব উদ্ভাবিত মীড়খণ্ডগুলোর মধ্যে যাবতীয় গানের সুরকে ঢোকানো যায়, তাই বলে শার্ঙ্গদেব সকল সঙ্গীতের জনক নন। বাউল গানগুলোর ধারা থেকে গগন হরকরার গানের কোন আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল না, যেটার জন্য তিনি সুরকারের কৃতিত্ব দাবি করতে পারেন।
ভালো থাকুন।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

বেশ রাগ নিয়ে লিখেছেন মনে হয়, শেষে নিজের নামটাই দিলেন না! আর শব্দটা কি "কুম্ভীলকবৃত্তি" হবে না?


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ধূমকেতু এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ। আমি আপনার লেখার একজন মুগ্ধ পাঠক। ব্যস্ততার কারণে মন্তব্য করা হয় না।

কুম্ভিল এবং কুম্ভিলক একই অর্থ বহন করে। "কুম্ভীলক" বানানটা সংসদের অভিধানে থাকলেও বাংলা একাডেমীর অভিধানে ঈ-কার দিয়ে বানানটা বর্জিত হয়েছে। আমি ছেলেবেলা থেকেই কুম্ভিল শব্দটা জানতাম বলে ওটাকে ষষ্ঠী তৎপুরুষান্তে কুম্ভিলবৃত্তি করেছি। ভুল হয়েছে বলে আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে জানা নেই। হাসি

তারেক অণু এর ছবি

তথ্যগুলো নিঃসন্দেহে খুব গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু সমালোচকদের সমালোচনা না করে শুধু বিষয়বস্তু ঘেঁষা জ্ঞানলব্ধ বিষয়গুলো জানালেই বরঞ্চ ভাল ছিল, তাই না?

অতিথি অন্যকেউ এর ছবি

সহমত। চলুক

ধূমকেতু এর ছবি

সমালোচকদের নাম-ধাম কিছুই বলা হয় নি। অত্যন্ত নৈর্ব্যক্তিক ভাবে লেখার চেষ্টা করেছি। সমালোচকদের সমালোচনা নয়, বরং তাদের ভ্রান্ত মতবাদের সমালোচনা করা হয়েছে। ভারতীয় সঙ্গীতের প্রেক্ষাপটে যত্রতত্র plagiarism এর ক্ষুর চালানো যায় না। আর বললামই তো এ হিসেবে বলতে গেলে বিশ্বের প্রায় সব গানের সুর ও স্বরলিপিকার শার্ঙ্গদেব নামক প্রাচীন সঙ্গীতবেত্তা! তাঁর সঙ্গীত-রত্নাকরে স্বরের সম্ভাব্য প্রায় সব রকমের বিন্যাস-সমাবেশ দেয়া আছে - তাতে গোটা বিশ্বের গান-বাজনা মোদ্দাভাবে অবলীলায় ঢুকে যায়! হাসি

মাহবুব লীলেন এর ছবি

রবীন্দ্রনাথরে এইরকমে নবী বানানোর চেষ্টাও কিন্তু খারাপ

ধূমকেতু এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

লেখাটার ঠিক কোন জায়গায় "কোন রকমে" রবীন্দ্রনাথরে নবী বানানোর "খারাপ" চেষ্টা করা হয়েছে বললে কৃতার্থ হব এবং সংশোধন করব। লেখার উদ্দেশ্য মোটেও রবি-প্রশস্তি নয় বরং একটা অগভীর ও অবান্তর সমালোচনার সমালোচনা।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

আমাদের মতো অর্বাচীন পাঠকের জন্যে দু'টি গানের সুর নিয়ে একটা তুলনামূলক ফিরিস্তি তুলে ধরুন না। ভারতীয় সংগীত কিম্বা শাস্ত্রীয় সংগীতের ক্ষেত্রে কেন সহজে plagiarism বলা যাবে না তা ভাসা ভাসা বুঝতে পারলাম। কিন্তু কখন অব্যর্থভাবে plagiarism এর ছাপ মেরে দেয়া যাবে তাও তো জানা দরকার!

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

কল্যাণF এর ছবি

ভাল লেগেছে, তবে যে সমালোচনাটার সূত্র ধরে এই রচনার সুত্রপাত সেটার লিঙ্ক পেলে ভাল হত। ঐটা পড়ে দেখার ইচ্ছা হচ্ছিল। চলুক

কর্ণজয় এর ছবি

এ অঞ্চলটাই এমন হয়ত, মাঝে মাঝে ভাবি...
এমন একজন মানুষকেও আমরা পেলাম না যাকে আমরা সবাই মিলে ভালবাসলাম...
রবীন্দ্রনাথ... শুনেছি ... নজরুল ইসলামকে বিষ খাইয়েছিলেন... একজন মুসলমান কবি না হলে নোবেল পেয়ে যাবেন...। ছোটবেলায় আমরা সবাই প্রায়ই এ কথা শুনেছিলাম।
বড় হয়ে বুঝেছি...
যারা বড়... তাদেরকে না ছোট করলে এদেশে বড় হওয়া যায় না...
জেনেছি...
কেউ একজন বড় হলে...
অন্যরা তাকে খাচায় পুরে রাখে... যেন তাকে কেউ ছুতে না পারে...

জানি না কথাগুলো প্রাসঙ্গিক হলো কিনা...
তবে লেখাটা নিয়ে আমার মনে হলো... প্রাসঙ্গিক লেখা...
তবে একটু আবেগী...
অতটুকু মেনে নিলে বুঝতে সমস্যা হয় না...

ঝুমন এর ছবি

সহমত

সুজন চৌধুরী এর ছবি

একি সুরে ভিন্ন বাণীর গান কিন্তু অনেকের আছে ......
রামপ্রসাদী সুরে রবীন্দ্রনাথ আর কাজী নজরুল ইসলাম ২ জনেরই বেশ অনেক গান আছে, এমন কি অতুল প্রসাদ, ডি এল রায়েরও কিছু গানের কথা মনে পরছে ..... হেহেহেহে .....
রামপ্রসাদী সুরে সত্যজিৎ রায়েরও ১টা ভারী চমৎকার গান আছে যেটা শুনে আমার ধারণা হয়েছিলো এটা রামপ্রসাদেরই গান !!
শচীন দেব বর্মণ কাজী সাহেবের ১টা গানের সুর সরাসরি হিন্দি গানে ব্যবহার করেছিলেন, করেছিলেন রবীন্দ্রনাথের সুরও। রাহুল দেব বর্মণ ব্যবহার করেছিলেন রবীন্দ্রনাথের সুর আবার শচীন দেব বর্মণের সুরও, মজার বিষয় হলো শচীন দেন বর্মণও ব‌্যবহার করেছেন রাহুল দেব বর্মণের সুর!!
আরো আছে, কাজী সাহেবের ২/৩ টা সুরে ভিন্ন বাণী বসিয়ে গান বেঁধেছেন অতুল প্রসাদ।
ফৈয়াজ খাঁ সাহেবের একি গানে বাণী বদল করে একি সময় গান বেঁধেছেন কাজী সাহেব আর শচীন কর্তা। বড়ে গুলাম আলীর সাহেবেরও এক গানের সুর নিয়ে নতুন গান বেঁধেছেন এরা দু'জন।
মোজার্টের সুরে সরাসরি বাণী বসিয়ে গান বেঁধেছেন সলিল চৌধুরী........
উফফফফফ হাপায়া গেলাম!!!!!!!!
তবে রবি বুড়া একটু দুষ্ট ছিলেন বৈকি!!!
তিনি নিজের একি বাণীর ২টি সুর করেছিলেন!! হেহহেহেহেহহে.........................................

কৌস্তুভ এর ছবি

ও দাদা, আপনার সেই একটা লেখার জন্য কিন্তু আমরা হাপিত্যেশ করে বসে আছি...

ধূমকেতু এর ছবি

ধন্যবাদ অনবদ্য সাঙ্গীতিক মন্তব্যের জন্য। জয়জয়ন্তীর "মোরে মন্দর অব আও" থেকে কাজী সাহেবের "চুরি করা"( চোখ টিপি ??) "মেঘ-মেদুর বরষায় কোথা তুমি" আপনার উদ্দেশ্যে নিবেদন করছি! হো হো হো

সুজন চৌধুরী এর ছবি

হাহহাহা .......
আহা এটা আমার খুব প্রিয় গান, দিপালি নাগের ১টা অসাধারণ গাওয়া আছে।

উচ্ছলা এর ছবি

জানি খুব বিরক্ত হয়ে এই পোস্ট লিখেছেন। কারো 'বিরক্তি প্রকাশ' যে এতটা শোভন, যৌক্তিক এবং তথ্যবহুল হয়, দেখে খুব ভালো লাগল। এতটা আবেগ প্রকাশ করার অধিকারও আপনার আছে; রবীন্দ্রনাথকে ভালোবেসে আবেগী হওয়াতে আমি কোনো দোষ দেখি না।

আমার Heavy Metal বিষয়ক আবেগ সম্পর্কে জানলে আপনি ভীষন টাশকিত হবেন দেঁতো হাসি

কল্যাণF এর ছবি

আয়রন মেইডেনের জয়? খাইছে

মন_মাঝি এর ছবি

তবে রবি বুড়া একটু দুষ্ট ছিলেন বৈকি!!!
তিনি নিজের একি বাণীর ২টি সুর করেছিলেন!! হেহহেহেহেহহে.........................................

এটা কি তার নিজেই নিজের কুম্ভিলবৃত্তি হল কোন প্রকারে ? চিন্তিত

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।