বুয়েটর সাধারণ শিক্ষার্থীরা নৈতিকতার আন্দোলন করতে পারলে কেন এখন ‘শিবির-মুক্ত ক্যাম্পাস’ আন্দোলন করতে পারবে না?

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি
লিখেছেন মৃত্যুময় ঈষৎ [অতিথি] (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৫/১১/২০১২ - ২:০২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বুয়েটর সাধারণ শিক্ষার্থীরা নৈতিকতার আন্দোলন করতে পারলে কেন এখন ‘শিবির-মুক্ত ক্যাম্পাস’ আন্দোলন করতে পারবে না?

জামাত-শিবির যে বাঙালির অস্তিত্বের জন্য হুমকি স্বরূপ এইটা আগে বুঝতে হবে। এইটা বুঝা যাবে ৭১ এর বাঙালির মুক্ত্যার্জনের সময়ে জামাতের কর্মকাণ্ডের দিকে আলোকপাত করলে। পিশাচ-পশু এই শব্দগুলোও তাদের অপরাধ সমূহ প্রকাশ করার জন্য যথেষ্ট নয়- ইহা স্পষ্ট হতে হবে আগে আপনার কাছে। এরপর ৭১ পরবর্তী সময়ে আসলে জামাতের সাথে আরেক পিশাচের দল শিবির যুক্ত হয়ে শুরু করে বিভিন্ন পালা বদলে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র-দেশ-ধ্বংসযজ্ঞ। ৭৫ এর পর থেকে ৯৫ পর্যন্ত সময়ে এই ঘৃণ্য জানোয়ারদের বিভিন্ন পৃষ্ঠপোষকতায় ঘটে কেবল উত্থান আর উত্থান; স্বাধীনতা পরবর্তী এর চেয়ে খারাপ সময় মনে হয় আর বাংলাদেশ দেখে নাই। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি সরকার গঠন করার পর ৫ বছর জামাত-শিবিরের ধ্বংসলীলা কমে। পরবর্তী ৫ বছর জামাতের হাতে দেওয়া হয় মন্ত্রণালয়; এই রকম দুর্যোগ-দুর্ভাগ্যও বাংলাদেশের ইতিহাসে আর নাই। এই সময়ে জামাত-শিবির দেশের সকল গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে তার অপশক্তি মজবুত করে; নেতৃত্বের অংশীদার বাড়ায়। এই সময়ে বাংলাদেশ যতটুকু পিছিয়েছে ততটুকু বোধ হয় আর কখনই হয় নাই; কতদিন বাংলাদেশকে এর চড়া মাশুল দিয়ে যেতে হবে তা জানা নাই।

জামাত-শিবির তার জন্মকাল হতে ঠিক ঠিক কী করিয়াছে তার আমলনামা এই লেখাটিতে বস্তুনিষ্ঠ ভাবে আছে; লেখাটি প্রিন্ট করিয়া হার্ড কপি বানায়া রাখতে পারেন; কারণ আমরা বিস্মৃতি পরায়ণ জাতি; মাঝে মাঝেই জন্মশত্রুদের ভুলিয়া যাই।

প্রথমোল্লিখিত ঘটনাটিঃ

মার্চ, ১৯৮১ / প্রতিষ্ঠার মাত্র তিন বছরের মাথায় শিবির ক্যাডাররা চট্টগ্রাম সিটি কলেজের নির্বাচিত এজিএস ছাত্রলীগ নেতা তবারক হোসেনকে কলেজ ক্যাম্পাসেই কিরিচ দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। কিরিচের এলোপাতাড়ি কোপে মুমূর্ষু তবারক যখন পানি পানি করে কাতরাচ্ছিল তখন এক শিবির-কর্মী তার মুখে প্রস্রাব করে দেয়।

কী পড়েছেন? শিবিররে মনে পড়ছে তো, চিনতে পারছেন? হুমম এটাই জামাত-শিবির।

২০০৭-২০১২ এই সময়ে সেই মজবুত জামাত-শিবিররে অবদমিত রাখতে সরকাররে মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হচ্ছে। ৩৯ বছর পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শক্তিতে বলীয়ান হয়ে সরকার সর্বোচ্চ রাজাকার গুলারে রিমান্ডে নিল একদিন। আনন্দে আত্মহারা হয়ে লিখলাম মনের সুপ্তকথাঃ

আমি আজ পাশবিক দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ
তোদের সমগ্র শরীরে ত্রিশ লাখ বুলেটের ছিদ্র
দেখতে চাই রক্তের ফিনিক ধরা প্রপাত
এই মাটি নিষ্কলুষ হচ্ছে এমন তীব্র-ক্ষণ গুলো
এতদিন নিধে সুপ্ত ছিল আজ দৃশ্যায়িত হবে দেখ্!
যে নিবিড় সন্তান ঘুমিয়েও ছিল জাগ্রত,
তোদের বিষদাঁতের প্রবল কামড় পড়েছে ত্রিশ বছর
এখানে ওখানে সবখানে বীরাঙ্গনা স্বদেশ আমার
আজ খুনরাঙা হাতে এই বাংলার মাটি মুক্তিসেনাদের
নিঝুম ঘুম পাড়িয়ে দিবে স্বর্গের প্রান্তে।
ওরা সব হায়েনা ধরা পড়ুক কারারুদ্ধ
হাজার বছর রিম্যান্ড চলুক
লক্ষাধিক অভিযোগ শিকড় গড়ুক
জনতার দুর্বার আগুন জ্বলুক দিগ্বিদিক।

একটি ফাঁসিতে হবে না আমার
একবার কাঠগড়ায় দাঁড়ালেও হবে না;
একটি বুলেটে হবে না আমাদের
ত্রিশ লক্ষ তরতাজা বুলেট দরকার
ত্রিশ লক্ষবার ছিদ্র রক্তাক্ত নিথর
প্রকাশ্য সূর্যালোকে অসংখ্য ঘৃণাঘাতে।

........
আমাদের ত্রিশ লাখ দুর্মর প্রতিশোধ নেবার বাকি আছে!
নির্ঘুম থাকো সব, আগুনে রাখো রক্তচোখ;
শকুনের দল ছিঁড়ে যেতে পারে এই শৃঙ্খল-বেড়ি!

৩০ জুন ২০১০।

শুরু হৈল বাঙালির আজীবন-স্বপ্নের যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া। আরেক মুক্তির যুদ্ধ শুরু হৈল; দায়মুক্তির যুদ্ধ; মুক্তিযোদ্ধার রক্তের প্রতিদানের যুদ্ধঃ যেভাবেই হোক প্রতিটি রাজাকার-শকুনের যুদ্ধাপরাধের বিচার এই বাংলার মাটিতে হবেই হবে। দিন আগাইতে থাকলো; বিচার প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিক আইন মেনে নিয়ে চলতেছে। চলতে চলতে যখন বিচার কার্য সম্পাদনের সময় ঘনায় আসল তখন ‘জাতির পতাকা খামচে ধরেছে পুরনো শকুন’। জামাত-শিবির চোরাগোপ্তা হামলা চালাচ্ছে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপর চালাচ্ছে নারকীয় তাণ্ডব। আবার এক সংকট-কালীন সময়ে বাঙালি উপস্থিত। এখন বাঙালির এই সিদ্ধান্তে আসার সময় এসেছে যে তার কী করণীয়।

প্রধান কাজ হলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বলীয়ান হয়ে ওঠা। একটু অতীতে ফিরে মুক্তিযুদ্ধের-মুক্তিযোদ্ধার ইতিহাসের বইটা একবার উল্টেপাল্টে দেখে নেওয়া। আর কিছু লাগে না মনে হয় জামাত-শিবির-রাজাকারদের বিরুদ্ধে লৌহশক্তরূপ দাঁড়াতে! থাকতে হবে পূর্ণ সচেতন-ঐক্যবদ্ধ।

এইবার বুয়েটে আসা যাক। অনলাইনের সবাই ঘটনার আদ্য পান্ত জানেন, নতুন করে এই বিষয়ে জ্ঞান দিতে চাওয়া বোকামি। সেই আন্দোলনে সাধারণ ছাত্রের বেশে শিবির ছিল (এটা প্রমাণিত), নেতৃত্বস্থানীয় শিক্ষকদের মধ্যে জামাতী ছিল ( এটাও প্রমাণিত)। তারা ছদ্মবেশে আন্দোলন থেকে তাদের ফায়দা লোটার চেষ্টা জোড় দিয়ে করেছে। 'সেইভ আওয়ার বুয়েট' নামে আড়ালের অমানুষটার সাথে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের সমষ্টিগত সিদ্ধান্তের প্রায়শই মতভেদ দেখা যেত- এটা থেকে অনেকের সন্দেহ জাগার পরেও এই একাউন্টের চালক কে তা উৎঘাটন না করাটা ত্রুটি ছিল। সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা যখন আন্দোলনের পরিসমাপ্তি ডাকে তখনও এই 'সেইভ আওয়ার বুয়েট' চাচ্ছিল উস্কে দিয়ে আন্দোলন চালিয়ে নিতে; সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা সেই সময় চমৎকার বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছে- পরিসমাপ্তির সিদ্ধান্তে অটুট থেকে। ব্যক্তিগতভাবে আমি এই আন্দোলনকে পুরোটা শিবিরের আন্দোলন মনে করি না; সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রহণ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই দেখি তবুও এটি প্রমাণসাপেক্ষে বের হয়ে আসতে পারে যে সবকিছুতে পুরো নিয়ন্ত্রণে জামাত শিক্ষক বা শিবির ছাত্রই ছিল (কোন সম্ভাবনাই উড়িয়ে দেওয়া যায় না)।

এই আন্দোলনের ফলাফল দুটো ১. প্রোভিসির পদত্যাগ ২. বুয়েট ৪ মাস বন্ধ থাকা। প্রথমটার সাফল্য সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের পাতে যায়। দ্বিতীয়টার সাফল্য জামাত-শিবিরের পাতে যায়। জামাত-শিবির চাচ্ছিল আন্দোলনের মাধ্যমে বুয়েটকে অচল রাখতে যতদিন পারা যায়, সেটা তারা অনেকটাই পেরেছে। এটা সাধারণ আন্দোলনকারীর ব্যর্থতা।

ফেসবুকে বুয়েটের ছাত্রদের একটা প্লাটফর্ম (গ্রুপ) আছে, সেখানে এই ইস্যু নিয়ে হাজার খানেক আলোচনা-সমালোচনা-আত্ম-সমালোচনা-পর-সমালোচনা হচ্ছে; সেখানের কিছু সংখ্যক পোস্ট-মন্তব্য পড়ে মনে হয়েছে আমরা বোধ হয় শিবির কারা- ওদের উদ্দেশ্য এটাই ভুলে গেছি। তাই প্রথমাংশে শিবির নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত।

আমি মনে করি প্যারালালি অনেকগুলো আলোচনাই চলতে পারে। বুয়েটের শিবির সমস্যা, অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিবির সমস্যা, বাংলাদেশের শিবির সমস্যা, দুর্নীতির সমস্যা, ছাত্রলীগ সমস্যা- সব সমস্যাই প্যারালালি আলোচ্য থাকতে পারে তবে যে কোন স্থানের শিবির সমস্যা- এই থ্রেডটা সবসময় মাথার সিপিউতে বসায় রাখতে হবে; এই প্রসেসকে স্টপ হৈতে দেওয়া যাবে না; ওভার লেপ করতে দেওয়া যাবে না। দিলেই নৈতিক আন্দোলনও শিবিরের আন্দোলন হতে সময় নিবে না।

সুতরাং
প্রিয় বর্তমান শিক্ষার্থীরা,
নৈতিক আন্দোলন তো করলেন এইবার এই ক্রান্তি-লগ্নে শিবির-মুক্ত ক্যাম্পাস গড়ার আন্দোলন করবেন না? প্রিয় প্রধান মুখপাত্ররা এই আন্দোলনেরও কি আয়োজক হোয়া যায় না?

আন্দোলনটা প্রথমে একটা মানব বন্ধন দিয়েই শুরু হোক। ক্যাম্পাস শিবির মুক্ত করার আন্দোলনের ফলাফল পেতে কিন্তু ৪ মাস অপেক্ষা করতে হবে না, ১ দিন সবাই ঠিক আগের মত নামলেই হয়ে যাবে!

‘শিবির মুক্ত ক্যাম্পাস চাই’ আন্দোলন গড়ে উঠুক।

ইতি,
একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী।


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

চমৎকার। এটাই মূল প্রত্যাশা। বিষয়টা কঠিন না, চাওয়াটা কঠিন। নিরুপদ্রুপ ক্যাম্পাসের দোহাইয়ে যেন এটা ব্যাহত না হয়। শুধু বুয়েটে না, অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বর্তমান শিক্ষার্থীদের কাছেও একই চাওয়া রইলো।

স্বয়ম

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

সহমত।


_____________________
Give Her Freedom!

অন্যকেউ এর ছবি

আপনার আগের লেখাটায় সাধারণ বুয়েটিয়ানদের অসচেতনতার কিছুটা ছাপ ছিলো। আলোচনা সমালোচনা সব কিছু যৌক্তিকভাবে গ্রহণের মানসিকতা দেখিয়েছেন, এটা প্রশংসনীয়। আগের অসচেতনতা কাটিয়ে শিবিরের কালো ছায়া নিয়ে এই যে আরও সতর্ক হয়ে ওঠা, এটাই প্রয়োজন সবার মধ্যে। আশা করি অন্যদের মধ্যেও এই সতর্কতাটা ছড়িয়ে যাবে। এই লেখাটার মূল সুর যে আলোচনা করার জন্য উৎসাহ যোগায়, এজন্য চলুক চলুক

আমার একেবারেই নিজস্ব কিছু মত বলতে চাই।

শিবিরকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ মনে করলে বোধ হয় ভুল হবে। শিবিরের উদ্দেশ্য রাজনৈতিক, কিন্তু পথটা গুপ্তচর সংস্থার সাথে তুলনীয়; তারচেয়েও বেশি হয়তো, যে কোনও জঙ্গি সংগঠনের সাথে মিলে যায়। এই জঙ্গিদেরকে জঙ্গি হিসেবেই বিবেচনা করতে হবে। চোর-ডাকাত-অপরাধীদেরকে মানবাধিকার দেওয়া হয় না কেন? কেন তাদেরকে সুস্থ একটা সমাজ থেকে আলাদা করে আটকে রাখা হয়? ঠিক একই কারণে জামাতি-শিবিরি শুওরছানাদেরকে চিহ্নিত করে তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে রাখতে হবে। বিচ্ছিন্ন করে রাখাটা বিশেষভাবে জরুরি, কারণ শিবিরের নতুন সদস্য রিক্রুটমেন্টের প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে নতুনদের সাথে বিশেষায়িত সামাজিক যোগাযোগ রক্ষা করা, যেই পথটা কখনোই সাধারণ একটা রাজনৈতিক দল করে না। একজন নতুন এসেই শিবির চিনে নিতে পারে না, তাই অগ্রজদের ওপরেই দায়িত্ব বর্তায় যে, কোনও চিহ্নিত শিবির যাতে নতুনদের কাছে, অন্তত যেন সহজে, পৌঁছুতে না পারে।

শিবিরের সবচেয়ে বড়ো দুর্বলতা কোথায়? তারা ধর্মান্ধ জঙ্গি, এবং ধর্মান্ধদের পথ আর সংস্কৃতির পথ সবসময় উল্টোধারায় চলে। সাংস্কৃতিক আক্রমণের চেয়ে শক্তিশালী আর কিছুই হতে পারে না। একটা মানববন্ধন মানুষের কাছে একটা তথ্য পৌঁছে দিতে পারে মাত্র, এবং একটা সূচনা হিসেবে এটা সমর্থনযোগ্য। কিন্তু তার পরের ধাপ হিসেবে, মানুষের ভেতরে আবেগটুকু জ্বালিয়ে তোলার জন্য সাংস্কৃতিক আন্দোলনের বিকল্প হয় না।

শিবিরের ইতিহাস নিয়ে ক্যাফেটেরিয়ার সামনে একেকটা পথনাটক হোক না বুধবার বিকেলে, তবে না সবাই আসল চেহারাটা চিনবে!

আর যদি, শিবিরের শুওরের বাচ্চাদের ইঁদুরের গর্ত থেকে আবার বেরুবার স্পর্ধা হয়, যদি তারা সেই পথনাটকের বিরুদ্ধে একটা সামান্য শব্দও করে, তাদের খাটের তলায় লুকিয়ে রাখা চাপাতি-রড-রামদা-কিরিচের ভয় আমরা যেন না পাই। একটা শুওরের বাচ্চা শিবির কিরিচ উঁচু করলে, এক হাজারটা খালি হাত যেন তাকে পিষে ফেলার জন্য তৈরি হয়ে থাকে।

_____________________________________________________________________

বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

শিবিরের সবচেয়ে বড়ো দুর্বলতা কোথায়? তারা ধর্মান্ধ জঙ্গি, এবং ধর্মান্ধদের পথ আর সংস্কৃতির পথ সবসময় উল্টোধারায় চলে। সাংস্কৃতিক আক্রমণের চেয়ে শক্তিশালী আর কিছুই হতে পারে না। একটা মানববন্ধন মানুষের কাছে একটা তথ্য পৌঁছে দিতে পারে মাত্র, এবং একটা সূচনা হিসেবে এটা সমর্থনযোগ্য। কিন্তু তার পরের ধাপ হিসেবে, মানুষের ভেতরে আবেগটুকু জ্বালিয়ে তোলার জন্য সাংস্কৃতিক আন্দোলনের বিকল্প হয় না।

শিবিরের ইতিহাস নিয়ে ক্যাফেটেরিয়ার সামনে একেকটা পথনাটক হোক না বুধবার বিকেলে, তবে না সবাই আসল চেহারাটা চিনবে! চলুক

সহমত। আমার ক্ষেত্রে যুক্তি-আর-প্রমাণের রেলগাড়ি যেই স্টেশনেই নামাক, আমার সমস্যা নাই।


_____________________
Give Her Freedom!

ধুসর জলছবি এর ছবি

আমার ক্ষেত্রে যুক্তি-আর-প্রমাণের রেলগাড়ি যেই স্টেশনেই নামাক, আমার সমস্যা নাই।

চলুক হাততালি

ধুসর জলছবি এর ছবি

শিবিরের সবচেয়ে বড়ো দুর্বলতা কোথায়? তারা ধর্মান্ধ জঙ্গি, এবং ধর্মান্ধদের পথ আর সংস্কৃতির পথ সবসময় উল্টোধারায় চলে। সাংস্কৃতিক আক্রমণের চেয়ে শক্তিশালী আর কিছুই হতে পারে না। একটা মানববন্ধন মানুষের কাছে একটা তথ্য পৌঁছে দিতে পারে মাত্র, এবং একটা সূচনা হিসেবে এটা সমর্থনযোগ্য। কিন্তু তার পরের ধাপ হিসেবে, মানুষের ভেতরে আবেগটুকু জ্বালিয়ে তোলার জন্য সাংস্কৃতিক আন্দোলনের বিকল্প হয় না।

শিবিরের ইতিহাস নিয়ে ক্যাফেটেরিয়ার সামনে একেকটা পথনাটক হোক না বুধবার বিকেলে, তবে না সবাই আসল চেহারাটা চিনবে!

আর যদি, শিবিরের শুওরের বাচ্চাদের ইঁদুরের গর্ত থেকে আবার বেরুবার স্পর্ধা হয়, যদি তারা সেই পথনাটকের বিরুদ্ধে একটা সামান্য শব্দও করে, তাদের খাটের তলায় লুকিয়ে রাখা চাপাতি-রড-রামদা-কিরিচের ভয় আমরা যেন না পাই। একটা শুওরের বাচ্চা শিবির কিরিচ উঁচু করলে, এক হাজারটা খালি হাত যেন তাকে পিষে ফেলার জন্য তৈরি হয়ে থাকে

চলুক চমৎকার। কিন্তু পরিচিত বুয়েটিয়ান দের অধিকাংশের কথাবার্তা শুনে মনেই হচ্ছে না শিবির থাকাটাকে তারা কোন ব্যাপার মনে করছে। তারা তাদের ভাবমূর্তি রক্ষাতে ব্যস্ত। মান বাচাতে মার খেয়েও বলছে ব্যাথা পাইনি টাইপ অবস্থা। কিন্তু তাতে ক্ষতিটা কাদের হচ্ছে সেটা ছাত্র ছাত্রী রা না বুঝলেও শিক্ষকদের তো অন্তত বুঝা উচিৎ, তারাই তো দেখছি সবচেয়ে অবুঝ। এ অবস্থা অবশ্য এখন অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই। মন খারাপ

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

আবহমান বাংলার প্রশাসন; প্রথমে অস্বীকার বা এড়িয়ে যেতে চাবেই। মন খারাপ


_____________________
Give Her Freedom!

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক
নির্ঝর অলয়

রামগরুড় এর ছবি

শিবিরের ইতিহাস নিয়ে ক্যাফেটেরিয়ার সামনে একেকটা পথনাটক হোক না বুধবার বিকেলে, তবে না সবাই আসল চেহারাটা চিনবে!

কার্যকর আইডিয়া চলুক

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

হুমম


_____________________
Give Her Freedom!

ডাক্তার আইজুদ্দিন  এর ছবি

আপনার পোষ্ট আশা যোগায় তবে তার চেয়ে বেশী হতাশ হই যখন আপনাদের শিক্ষক সমিতি যখন ঠিক তার উল্টো পথে চলার পরামর্শ দিয়ে প্রেস রিলিজ দেয়- সর্ষে ভুত না ভূতে সর্ষ- কিউরিয়াস মাইনড ওয়ানটস টু নো?

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

বাংলাদেশের সংস্কৃতিটাই তো এমন, এরকম প্রেস রিলিজই তো আসার প্রচলন। যতটুকু সত্য সেটা এড়িয়ে যেতে অনেকেই দ্বিধা করে না।


_____________________
Give Her Freedom!

রাগিব এর ছবি

এই লেখাটার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আগের লেখার সাথে এর পার্থক্যটা দেখে আমি আশান্বিত। আপনার মতো যদি আরো অনেকে প্রাতিষ্ঠানিক আনুগত্য ও আভিজাত্য বাদ দিয়ে ঠান্ডা মাথায় এই কথাগুলা ভাবতে পারতো, তাহলে এসব জামাত-শিবির ও তাদের ছানাপোনারা দৌড়ে পালাতো।

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

রাগিব ভাই, বুয়েটিয়ান গ্রুপে যা হচ্ছে, আমি তো একেবারেই আশাবাদী হতে পারছি না। শুধু বুয়েটিয়ান গ্রুপ না, আমার বেশিরভাগ পরিচিত বুয়েটিয়ানের মধ্যেও একই মেন্টালিটি দেখলাম। শিক্ষক সমিতি তো প্রেস রিলিজই করে দিল। প্রত্যেকটা স্ট্যাটাসে কমপক্ষে বেশ কয়েকজন চিহ্নিত শিবির এসে লাইক দিচ্ছে, সুশীল কমেন্ট করছে। আমি হতাশ।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

মন খারাপ


_____________________
Give Her Freedom!

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

প্রাতিষ্ঠানিক আনুগত্য ও আভিজাত্য বাদ দিয়ে ঠান্ডা মাথায় এই কথাগুলা ভাবতে পারতো, তাহলে এসব জামাত-শিবির ও তাদের ছানাপোনারা দৌড়ে পালাতো। চলুক

আমি আশাবাদী যে হবে, আলোর পথটাই বেছে নিবে।


_____________________
Give Her Freedom!

স্যাম এর ছবি

চলুক

হিমু এর ছবি

বুয়েট শিক্ষক সমিতির বিবৃতিতেও দেখি বলা হয়েছে আন্দোলন ছিলো "অরাজনৈতিক"।

বুয়েটের প্রবীণ শিক্ষকরাই যখন "নির্দলীয়" আর "অরাজনৈতিক"-এর পার্থক্য বোঝেন না, তখন তাদের অর্ধেক বয়সী ছাত্ররা বুঝবে, এটা আশা করাই ভুল।

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

মন খারাপ শিক্ষকদের প্রতি খুব আশাবাদী হই না। ছাত্রদের দিকে তাকিয়ে আছিঃ তারা বুঝে উঠুক- শিবির তাড়ানো দরকার।


_____________________
Give Her Freedom!

চরম উদাস এর ছবি

চলুক

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

শিবিরমুক্ত ক্যাম্পাসটা খুব দরকার


_____________________
Give Her Freedom!

কাক্কেশ্বর কুচকুচে এর ছবি

লেখাটার জন্য অনেক ধন্যবাদ হাসি
আপনার সাথে আছি।

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

শিবিরমুক্ত ক্যাম্পাসটা খুব দরকার


_____________________
Give Her Freedom!

কুমার এর ছবি

চলুক

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

শিবিরমুক্ত ক্যাম্পাসটা খুব দরকার।


_____________________
Give Her Freedom!

এ হাসনাত এর ছবি

চলুক

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

তবে হতাশাও আছে।


_____________________
Give Her Freedom!

স্যাম এর ছবি

লেখাটার জন্য বিশেষ ধন্যবাদ চলুক

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

বুয়েটিয়ান গ্রুপের কিছু পোস্ট-আলোচনা পড়ে মনে হলো লেখাটা দরকার।


_____________________
Give Her Freedom!

উদ্ভ্রান্ত পথিক এর ছবি

চলুক

---------------------
আমার ফ্লিকার

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

হতাশাও আছে।


_____________________
Give Her Freedom!

তারেক অণু এর ছবি

রাজশাহী বিশ্ব-বিদ্যালয় স্কুল ও কলেজে পড়ার সুবাদে ছোট থেকেই শিবিরের কাজ কর্মের কিছু ধরন জানা দুর্ভাগ্য হয়েছিল, প্রথমে তারা ক্যাম্পাসে ঢুকতেই পারত না, মৈত্রী , জাসদ ইত্যাদি দলের দাপটে, এরপর তারা পলিসি হিসেবে ক্যাম্পাসের আসে পাশের গ্রামগুলোতে জায়গীর থেকে পড়া চালাতে থাকে এবং অনেকেই সেই গ্রামের কোন না কোন মেয়ের সাথে বৈবাহিক সুত্রে আবদ্ধ হয়, ব্যস কেল্লা ফতে- তারা তখন গ্রামেই জামাই! বিশ্ব- বিদ্যালয়ের ছাত্র, জ্ঞানী মানুষ, গ্রামের জামাই- এইভাবেই তারা শিকড় গাড়তে থাকে, এমনকি হল আক্রমণের সময় লুটপাটের কাজেও তখন তাদের সাথে গ্রামবাসীদের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মেলে। সেই থেকে একটা জিনিস জানি- এরা সাংঘাতিক নিবেদিতপ্রাণ ( চিন্তা করেন- দলের জন্য বিয়ে করে নিজের জীবন ফানা করে দিল!) আর মারাত্নক সংঘবদ্ধ। কিন্তু এদের হোতারা আবার বিশ্ব বিদ্যালয়ের কিছু প্রফেসর এবং তাদের চিন্তা ভাবনা খুব বেশী ধরনের সুদুরপ্রসারী, ১০০০% ব্রেন ওয়াশড, এদের মোকাবিলা করতে হলে আমাদের সংঘবদ্ধ হতেই হবে, কোন বিকল্প নেই।

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক

অমি_বন্যা

অতিথি লেখক এর ছবি

অণুদা, আমার সুযোগ হয়েছে রাজশাহীতে শিবিরের বর্বরতা দেখার। আমার চোখে এখনো ভাসে আমাদের মর্গে শিবিরের হাতে মর্মান্তিক ভাবে খুন হওয়া ফারুক হোসেনের লাশ। আমার মতো কাঠখোট্টা লোকও অশ্রু সামলাতে পারেনি। গণিতের এই সেরা ছাত্রটি হতে পারত ভবিষ্যতের রামানুজন। শিবির তা হতে দেয়নি। তার লিভারের নীচের অংশ এবং ডান কিডনির ওপরের অংশ ছিন্ন ভিন্ন করে দিয়েছিল পিশাচগুলো। ক'দিন আমরা খুব মিছিল করলাম, রাজশাহীর ৪৪ডিগ্রীর পিচগলা রোদ্দুরে। আজো ফারুক হত্যার বিচার হয়নি। ফারুক হোসেনকে হত্যার আগে খুনী নিজামী রাজশাহীতে এসে 'লাশ চাই' বলে ঘোষণা দিয়েছিল। রাজশাহীর শহীদ মীনার প্রাঙ্গনে টানানো হয়েছিল নিজামীর এগার গজী ব্যানার। আমরা আসলে দিনার-রিয়ালের কাছে বিক্রি হয়ে গেছি। তাই গণতন্ত্রের নামে এসব চলছে। কিন্তু আর চলতে দেয়া যায় না। ভয় পাওয়া চলবে না। শিবির কিন্তু ভীত, নিরীহদেরই মারে।

নির্ঝর অলয়

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

মন খারাপ


_____________________
Give Her Freedom!

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

যথাযথ বলেছেন অণুদা।


_____________________
Give Her Freedom!

hasan এর ছবি

সমসাময়িক কয়েকটা ঘটনা বলি-----
১) শিবির যখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের এক কর্মীকে মেরে ফেলে, তখন আমরা বুয়েট এ শিবির কর্মীদের রুম থেকে বের করে দেই। তখন বুয়েটের শিবির কর্মীরা আইডিয়াল হোম (সম্ভবতঃ ধান্মন্ডিতে অবস্থিত।এটা শিবির দ্বারা পরিচালিত একটা মেস) এ আশ্রয় নেয়।তাদের ইভেন টিউশনি বা ব্যক্তিগত কাজের জন্য মোটর সাইকেল দেয়া হয়।আর যে যে ছাত্রদের ডেস্কটপ পিসি পুড়িয়ে/ভেঙ্গে দেয়া হয়েছিল তাদের ডেস্কটপের পরিবর্তে সবাইকে ল্যাপটপ সেন্ট্রাল শিবির থেকে বিনামুল্যে দেয়া হয়েছিলো।

২)বুয়েট থেকে আমার দেখা যত শিবির কর্মী বের হয় তাদের সবার অর্থনৈতিক নিরাপত্তার ব্যাবস্থা শিবির থেকেই করে দেয়া হয়।
জোবায়ের ভাইকে চিনতাম (ব্যাচ ০৩,আহসানুল্লাহ হল)।সে এখন ল্যান্ডের বিজনেস করে (পিঙ্ক সিটি)।এরপর কনক্রীট (ইঞ্জিনিয়ারিং কোচিং সেন্টার) এর দায়িত্ব প্রদান করা হয় মইনুল (০৭,এম এম ই) আর রাকিব (কেমিক্যাল,০৭) কে।এছাড়াও অন্য শিবির কর্মি্রা নিয়মিত সেখানে ক্লাস নিয়ে অর্থ উপার্জন করতো।

এত অর্থনৈতিক ও ক্যারিয়ার গড়ার নিশ্চয়তা দেয়ার পর সাধারণ ছাত্রদের কিভাবে শিবির বিমুখ করা সম্ভব ?

---রনি,০৭

(সিসিফাস) এর ছবি

যাদের বিবেক অর্থের কাছে এতটা সহজে বাঁধা পড়ে যায়, তাদেরকে শিবিরের রাস্তা বা ফাঁদ থেকে ফেরানোর মতন আর্থিক সামর্থ্য অর্জন এই গরীব রাষ্ট্রের জন্য কষ্ট কল্পনা; ওরা পেট্রো ডলারে বলিয়ান, ওদের আর্থিক সামর্থ্যের কাছে আমরা নস্যি। শিবির-জামাত বা সমমনাদের প্রতিরোধ করতে আমাদের অতীত ইতিহাস জানাটা প্রয়োজন, আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে মূল্য দেবার প্রয়োজন-- দেশের আম-বাগান গুলোতে সৌদী "খুরমা-খেঁজুর"-এর চাষ করবার ইচ্ছায় যারা ধীরে ধীরে প্রস্তুত হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে আমাদের বাঙালি ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে আঁকড়ে ধরে রাখবার বিকল্প নেই (উপরে আরও অনেকেই উল্ল্যেখ করেছেন এ ব্যাপারে)। দ্বিমত করতে পারেন, তবে আমি আমার উপলব্ধিটুকু শেয়ার করলাম মাত্র। অন্য আরেকটা আলোচনাতে কোন এক বুয়েটিয়ান ছাত্রকে নীচের কথাগুলোই একটু ঘুরিয়ে বলেছিলাম--

আমার মতে মূল ব্যাপারটা হলো ১৯৭১ এ আমাদের গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধের সময় ২-৪ লাখ নারীকে ধর্ষণ (যারা বীরাঙ্গনা), প্রায় ৩০ (বা ততোধিক) লাখ লোকের আত্মাহুতি, প্রায় ১ কোটি শরনার্থী, প্রায় ৬ লক্ষ ঘরবাড়ি সম্পূর্ণরুপে ধ্বংস করা, শূন্য ট্রেজারী, ধ্বংসপ্রায় সকল ধরণের অবকাঠামো এবং এসব কারণে হয়ে যাওয়া তদানীন্তন মানুষের দীর্ঘকালীন দূর্দশাগ্রস্থ জীবন কে আমি/আপনি আমাদের জীবনে কোন পর্যায়ে স্থান দিবো…

পাশাপাশি, যে মেয়েটিকে রাতভর পালাক্রমে ধর্ষণ করে পাকিস্থানী নরপশু ও তাদের দোসর রাজাকার-আলবদরেরা যখন ধর্ষিতা মেয়েটির দু-পায়ের মাঝে বেয়োনেট চার্জ করে মেরেছিল তখন সেই মেয়েটির কষ্টের কান্না, বা শূন্যে ছুড়ে দেওয়া কোন এক ২-৩ বছরের শিশুকে বেয়োনেটের আগায় বিধে ফেলবার মতন বর্বর সত্য ঘটনাগুলোকে আমাদের জীবনে কতটুকু গুরুত্ব দিবো--

আমাদের জীবনে ১৯৭১ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাটা আগে, নাকি সাময়িক বিনোদন আগে (যেমন, ক্রিকেটে পাকিস্থান সমর্থন), নাকি বিশ্ব খিলাফত বা ধর্মীয় ফেলো-ফিলিংস আগে, নাকি "আমরা সবাই বুয়েটিয়ান ফেলো-ফিলিংস" আগে?

এই প্রশ্নগুলোর উত্তর কারও কাছে পরিষ্কার থাকলেই শিবির প্রশ্নে তার নিজের অবস্থান খুঁজে পেতে সমস্যা হবার কথা নয়। আর একটা কথা— মাস্তানী করা ছাত্রলীগ আর শিবির যখন শিক্ষিত জনগোষ্ঠির মূল্যায়নে “এক পাল্লায়" উঠে পড়ে, তখন লাইফ জ্যাকেট পড়ায়েও ঐ জনগোষ্ঠিকে বোধয় আর বেশীদিন ভাসায়া রাখা সম্ভব হবেনা… (হতাশার ইমো হবে)

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

আমার মতে মূল ব্যাপারটা হলো ১৯৭১ এ আমাদের গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধের সময় ২-৪ লাখ নারীকে ধর্ষণ (যারা বীরাঙ্গনা), প্রায় ৩০ (বা ততোধিক) লাখ লোকের আত্মাহুতি, প্রায় ১ কোটি শরনার্থী, প্রায় ৬ লক্ষ ঘরবাড়ি সম্পূর্ণরুপে ধ্বংস করা, শূন্য ট্রেজারী, ধ্বংসপ্রায় সকল ধরণের অবকাঠামো এবং এসব কারণে হয়ে যাওয়া তদানীন্তন মানুষের দীর্ঘকালীন দূর্দশাগ্রস্থ জীবন কে আমি/আপনি আমাদের জীবনে কোন পর্যায়ে স্থান দিবো…

পাশাপাশি, যে মেয়েটিকে রাতভর পালাক্রমে ধর্ষণ করে পাকিস্থানী নরপশু ও তাদের দোসর রাজাকার-আলবদরেরা যখন ধর্ষিতা মেয়েটির দু-পায়ের মাঝে বেয়োনেট চার্জ করে মেরেছিল তখন সেই মেয়েটির কষ্টের কান্না, বা শূন্যে ছুড়ে দেওয়া কোন এক ২-৩ বছরের শিশুকে বেয়োনেটের আগায় বিধে ফেলবার মতন বর্বর সত্য ঘটনাগুলোকে আমাদের জীবনে কতটুকু গুরুত্ব দিবো--

আমাদের জীবনে ১৯৭১ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাটা আগে, নাকি সাময়িক বিনোদন আগে (যেমন, ক্রিকেটে পাকিস্থান সমর্থন), নাকি বিশ্ব খিলাফত বা ধর্মীয় ফেলো-ফিলিংস আগে, নাকি "আমরা সবাই বুয়েটিয়ান ফেলো-ফিলিংস" আগে?

এই প্রশ্নগুলোর উত্তর কারও কাছে পরিষ্কার থাকলেই শিবির প্রশ্নে তার নিজের অবস্থান খুঁজে পেতে সমস্যা হবার কথা নয়। আর একটা কথা— মাস্তানী করা ছাত্রলীগ আর শিবির যখন শিক্ষিত জনগোষ্ঠির মূল্যায়নে “এক পাল্লায়" উঠে পড়ে, তখন লাইফ জ্যাকেট পড়ায়েও ঐ জনগোষ্ঠিকে বোধয় আর বেশীদিন ভাসায়া রাখা সম্ভব হবেনা… (হতাশার ইমো হবে)

এতটুকু পড়লেই হয়ে যায়................ মন খারাপ


_____________________
Give Her Freedom!

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

ঐ যে মুক্তিযুদ্ধের বোধটা-চেতনাটা; ওটা জেগে থাকলেই সব সম্ভব!


_____________________
Give Her Freedom!

স্বপ্নহারা এর ছবি

ভাল লাগলো এই লেখাটা। চলুক

তবে আমি আশাবাদী নই- মন খারাপ

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

আশাবাদী না হবার মত ঘটনাই যে বেশি ঘটছে মন খারাপ


_____________________
Give Her Freedom!

রিক্তা এর ছবি

গোছানো এবং দরকারী লেখা। চলুক

--------------------------------
হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজো চমৎকার?
আমিও তোমার মত বুড়ো হব – বুড়ি চাঁদটারে আমি করে দেব বেনোজলে পার
আমরা দুজনে মিলে শূন্য করে চলে যাব জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার ।

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

যদি ভুল পথের বুয়েটিয়ানদের এতটুকু বোধদয় হয় তবেই খুশি হতাম মন খারাপ


_____________________
Give Her Freedom!

তানিম এহসান এর ছবি

হয়ে যাবে। নিজের বাড়ীর দেয়ালে পিঠ ঠেকলেও সবাই ঘুরে দাঁড়াতে শেখেনা, পাশের বাড়ীর দেয়ালে যখন ঠেকে তখনও কেউ কেউ ঘুরে দাঁড়াতে শেখেনা, যাদের ঘুরে দাঁড়াবার প্রত্যয় থাকে তারা প্রথমেই ঘুরে দাঁড়ায়, তারপর আরও সবাই আসে। তবে বুয়েটে তোমরা শুধু শিবির হিসেবে ছাত্র-ছাত্রীদের কথা বলছো এখনো, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী’দের কথাও বলতে হবে, এরা আরও বেশি খারাপ, এরাই হচ্ছে মূল পৃষ্ঠপোষক। কর্মচারী সমিতির কয়জন জামাত করে? শিক্ষক সমিতির কতজন জামাতের মজলিসে সুরার সদস্য? থাকতেই হবে, আছে।

বুয়েট ঢাকায়! পাশে ঢাকা মেডিকেল, তার সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বুয়েটেই যখন এতটাদূর শিবির এর বিস্তৃতি ঘটে গেছে তখন শুধুমাত্র বুয়েটিয়ানদের দিয়ে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব না। সামগ্রিকভাবে একটা কর্মসূচী নিতে হবে। সাংস্কৃতিক আন্দোলন ছাড়াও সম্ভব না। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের বড় বড় কর্তাব্যক্তিরা কি ঘুমিয়ে থাকেন? খালি বড় বড় কথা বলেন, নিজের সন্তানদের প্রমোট করেন, টক-শো’তে ঠ্যাঙের উপর ঠ্যাঙ তুলে চা খান আর বিদেশ ঘুরে বেড়ান, এরা একবার বুয়েটে যেয়ে কোন প্রোগ্রাম করতে পারেন-না? নাকি এদের সব কর্মকান্ড মিডিয়াকেন্দ্রিক হয়ে গেছে!

দেশটা একেবারে তেলে আর বেগুনে পুড়ে গেছে নাকি? কোথাও কোনকিছু ঠিক নাই? সবাই রিয়েকটিভ?

ওহে বালক! কবিতা লিখো, স্ব-দেশের জন্য কবিতা লিখো। কবিতার যে শক্তি সেটাকে ধ্বংস করা হয়েছে বহু আগেই, বহু আগেই ধ্বংস করা হয়েছে আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতির আটপৌরে সীমারেখা। সহজ সরল কবিতা লিখো, কবিতাকে শক্তি হিসেবে ব্যবহার করো। তোমার সে সক্ষমতা আছে। এই লেখাটার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ। হাসি

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

উত্তম জাঝা!


_____________________
Give Her Freedom!

বাউলিয়ানা এর ছবি

একটা বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসার আগে একটা ছাত্র স্কুল/কলেজে কোনোদিন পড়ার বই ছাড়া দৈনিক/মাসিক পত্রিকা, গল্প, উপন্যাস, ইতিহাস, ঐতিহ্য, চিত্রকলা, সংগীত, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা এই বিষয়গুলো নিয়ে পড়েনা? এদের মধ্যেতো শিবির প্রভাব খাটাতে পারার কথা না।

আমি বুঝিনা যে ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবার আগে, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র- সেবা প্রকাশনী-পাব্লিক লাইব্রেরী-পুরানো বইয়ের দোকান-জনকন্ঠে (আমাদের সময়কার নতুন পত্রিকা)-মমতাজউদ্দীন আহমেদ- মোজাফফর আহমেদ-দাউদ/মাকিদ/রশীদ হায়দার, আঁলিয়স ফ্রাঁসেস- চিত্রা নদীর পাড়ে- এসব করে তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবে, শিবিরের আস্তানার মধ্যে (যেমন চবি, রাবি) দিয়ে পড়াশোনা করলেও তাদের সমস্যা হবার কথা না।

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

হুমম। সাংস্কৃতিক প্রগতির শক্তিটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ।


_____________________
Give Her Freedom!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।