অতন্দ্র প্রহরী এর ব্লগ

সেইসব লাল পিঁপড়া

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি
লিখেছেন অতন্দ্র প্রহরী (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৩/০৮/২০১৫ - ১১:৩৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কালো পিঁপড়া ভালো পিঁপড়া, লাল পিঁপড়া খারাপ। কারণ কালো পিঁপড়া কামড়ায় না, শান্তনিরীহ প্রকৃতির; আর লাল পিঁপড়া অনেক খারাপ, কামড়ায়, ব্যথা দেয়। কালো পিঁপড়া মুসলমান, লাল পিঁপড়া হিন্দু। কালো পিঁপড়া মারা যাবে না, মারতে হবে লাল পিঁপড়া।


বিদায় হে শূন্যতা

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি
লিখেছেন অতন্দ্র প্রহরী (তারিখ: সোম, ০৯/০৩/২০১৫ - ২:৩২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

চারপাশের মানুষগুলো কষ্টের ভার বইতে না পেরে যখন নুয়ে পড়ে হতাশায়, একের পর এক মুখগুলো যখন ঢাকা পড়ে বিষাদের আচ্ছাদনে, খুব অসহায় লাগে নিজেকে।

আর তখন-

প্রায়শই মনে হয়, চলমান এই দুঃসময়ে, ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত এই পৃথিবীর একাকীতম বোধ করা প্রতিটি মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়াই। তার হাতটা স্পর্শ করে, শক্ত আলিঙ্গনে, ফিসফিসিয়ে বলি, "পাশে আছি..."


কৃষ্ণপক্ষ

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি
লিখেছেন অতন্দ্র প্রহরী (তারিখ: মঙ্গল, ২২/০৪/২০১৪ - ৬:৫১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বাবাকে মনে হয় বাঁচানো যাবে না। সফেদ দাড়ির প্রৌঢ় ডাক্তার যখন বাবার পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করছিলেন, আমার তেমন কোনো অনুভূতি হচ্ছিল না। ভেতরে কেমন একটা শূন্যতা দানা বাঁধছিল শুধু। মনে হচ্ছিল নীরবতার একটা চাদর যেন চারপাশ দিয়ে ঘিরে ধরছে। মা পাশেই ছিলেন। যতটা ভেঙে পড়বেন ভেবেছিলাম, আমাকে অবাক করে দিয়ে খুব শক্তভাবেই গ্রহণ করলেন তিনি ব্যাপারটা। "তুমি কথা বলো, আমি তোমার বাবার কাছে গিয়ে একটু বসি," মা ধীর পায়ে কেবিনের দিকে চলে গেলেন। তার গমনপথের দিকে আমি ফাঁকা দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলাম কিছুক্ষণ। ওদিকে ডাক্তার আমাকে রোগের গতিপ্রকৃতি, পরবর্তী করণীয়, কার্যত তেমন কিছুই যে আর করার নেই, সেসব আরও ভেঙে বলতে থাকলেন। চুপচাপ কেবল শুনলাম আমি। এরপর যখন তিনি জিজ্ঞেস করলেন আমার কোনো প্রশ্ন আছে কি না, আমি তখনও কিছু বলতে পারলাম না। মাথা নাড়লাম শুধু। তিনি আমার বাহুতে আলতো চাপ দিয়ে সাহস রাখতে বললেন, পরিবারের পাশে দাঁড়াতে বললেন। সঙ্গে এটাও জানালেন যেকোনো দরকারে তাকে যেন নির্দ্বিধায় জানাই। তার দিকে তাকিয়ে ছোট্ট করে শুকনো হাসি হেসে আমি সরে এলাম ওখান থেকে।


আমি, তুমি এবং সে

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি
লিখেছেন অতন্দ্র প্রহরী (তারিখ: রবি, ১৪/০৭/২০১৩ - ৫:১১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

গত সহস্রাব্দের কথা।
আমি আমি ছিলাম। তুমি ছিলে তুমি। আর সে ছিল সে।
এরপর সে এলো।
আমি আমি রইলাম না আর। তুমিও রইলে না তুমি।
এভাবে কেটে গেল অনেকটা সময়।
যখন চলে গেল সে,
আমি আবার আমি হয়ে গেলাম। সে হয়ে গেল সে।
কিন্তু তুমি আর তুমি হতে পারলে না।


আমাদের ঋতুপর্ণ

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি
লিখেছেন অতন্দ্র প্রহরী (তারিখ: শুক্র, ৩১/০৫/২০১৩ - ২:৫৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বাংলা চলচ্চিত্রাঙ্গনে ঋতুপর্ণ ঘোষ একটি সুপরিচিত নাম। গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলা চলচ্চিত্রকে পাশে নিয়ে নিরলস হেঁটেছেন তিনি অনেকটা পথ, ক্লান্তি-ক্লেশ অবদমন করে পৌঁছে দিয়েছেন অন্য এক মাত্রায়। কে না জানে, গভীরে প্রোথিত শেকড়পুষ্ট প্রকাণ্ড এক বৃক্ষের মতোই এতকাল তিনি আগলে রেখেছেন সেলুলয়েডের এই মায়াবী জগতটাকে, যা বিস্তৃত হয়েছে তার বর্ণিল পদচারণায় এবং ক্রমশ ছড়িয়ে পড়েছে দেশ থেকে দেশান্তরে, অগণিত দর্শকহৃদয়ে। নিজেই নিজেকে ছাড়িয়ে গেছেন বারবার; সময় এবং নিজের ছায়ার সাথে পাল্লা দিয়ে হাত গলে একের পর এক বের করেছেন হাল আমলের নন্দিত, আলোচিত এবং প্রত্যাশিত সব মাস্টারপিস।


স্পর্শের বাইরে

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি
লিখেছেন অতন্দ্র প্রহরী (তারিখ: রবি, ১৫/০৭/২০১২ - ১:৩৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমরা নাকি পৃথিবীর পৃষ্ঠে থাকি। বাবার এই কথা শুনে বিস্ময়ে চোখ গোল হয়ে যায় রাশেদের। এ কেমন কথা! "তাহলে টুপটাপ পড়ে যাই না কেন আমরা!" বাবা হাসেন। আধাশোয়া থেকে উঠে বসতে বসতে রাশেদকে মাধ্যাকর্ষণ বোঝানোর চেষ্টা করেন তিনি। ওর বিস্ময় তাতেও কমে না। তবে যে ওর ধারণা ছিল আমরা পৃথিবীর ভেতরে বাস করি! যখন আকাশে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে, পৃথিবীর শরীরের বিভিন্ন জায়গা থেকে জানালার মতো গর্ত খুলে যায়, আর সেখান দিয়ে আমরা আকাশে যাই।


চৈত্রের শেষ দিবস

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি
লিখেছেন অতন্দ্র প্রহরী (তারিখ: শুক্র, ১৩/০৪/২০১২ - ১১:০৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বেরোনোর কথা ছিল না আজ। ভেবেছিলাম সারাদিন বাসায় থাকব। পুরো সপ্তাহের ক্লান্তিকর নিদ্রাহীনতার পর গত রাতের ঘুমটা তুলনামূলক দীর্ঘ হলেও নিয়মমাফিক বেশ কয়েকবার ছেদ পড়েছিল তাতেও। স্বপ্ন-দুঃস্বপ্নের চক্রে। এবং হতাশাজনকভাবে অভ্যাসমতো ঘুমও ভেঙে গেল বেশ সকাল-সকাল। জেগে উঠে তখন আর কিছুতেই মনে করা গেল না সদ্যফুরানো রাতের স্বপ্নগুলোর কথা। শুধু এটুকু মনে পড়ল যে কিছু একটা দেখে বেশ ভয় পেয়েছিলাম। কিন্তু ক্লান্তির কারণে ভয়ের রেশটুকু বেশিক্ষণ ছিল না। এপাশ-ওপাশ ফিরে আবারও ঘুম।


একজন বোকা মানুষের গল্প

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি
লিখেছেন অতন্দ্র প্রহরী (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৬/০২/২০১২ - ১২:৩৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

"একজন বোকা মানুষ"... নানান জায়গায় নিজের বর্ণনায় এই কথাটাই লিখে রাখি। পরিচিত মানুষজন হাসে। আমি যে বোকা, এটা তারা মানতে চায় না। তাদের নাকি বিশ্বাস হয় না। তাতে অবশ্য আমার বোকামি একটুও কমে না। বরং বিভিন্ন কাজে আমি তার নীরব প্রমাণ রেখে যাই। তারপর সেগুলো লুকানোর চেষ্টা করি। তখন কেউ কেউ অবাক হয়ে বলেই বসে বোকার মতো ওরকম একটা কাজ কীভাবে করলাম আমি! উত্তর দেয়ার কিছু থাকে না। বোকার মতো হাসি।


শ্রাবণমেঘের দিন

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি
লিখেছেন অতন্দ্র প্রহরী (তারিখ: বুধ, ১০/০৮/২০১১ - ৭:৫৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সকালে এটা লেখার সময়ও বৃষ্টি ছিল। আকাশ চুঁইয়ে গড়িয়ে পড়া পানির ধারা দেখে মনে হচ্ছিল না সহসা থামার কোনো ইচ্ছে আছে তার। তবে বিকেল না পেরোতেই অবশেষে থেমে গেছে বৃষ্টি। কে জানে কখন সে ফিরবে আবার! ফেরা না-ফেরার সেই প্রতীক্ষার পেন্ডুলামে দুলতে থাকা বৃষ্টিদিনের কিছু কথা...


বোকা মানুষটা

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি
লিখেছেন অতন্দ্র প্রহরী (তারিখ: মঙ্গল, ২২/০৬/২০১০ - ১:০৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


I have wished a bird would fly away,
And not sing by my house all day;
And of course there must be something wrong
In wanting to silence any song.
("A Minor Bird" by Robert Frost)
[justify]
ছোট্ট চড়ুইটা ভুল করে ঘরে ঢুকে পড়েছিল। শব্দ শুনে তাকিয়ে দেখি বুকশেলফের উপর বসা। কিছুটা অবাক হয়েই লক্ষ করতে থাকি। স্থির দাঁড়িয়ে দ্রুততার সাথে এদিক-ওদিক তাকাচ্ছে পাখিটা। চঞ্চল, অস্থির ভাব। কেমন একটা তাড়া। খানিকটা হতবিহ্বল বা ভীতও হয়তো। পথ ভুলে কোথায় এসে পড়েছে বু...