সমুদ্র বিলাস (পর্ব – ২)

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি
লিখেছেন অতন্দ্র প্রহরী (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৫/০১/২০০৯ - ১১:০২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমি যেতে রাজি হওয়ায় আমার দুই কলিগ বেশ খুশি হল। কিন্তু ওদের চেয়ে আমার খুশি ছিল বহুগুণ বেশি। প্রথম সাগর দেখব, এটা ভাবতেই আমার ভেতর তখন অন্য রকম একটা উত্তেজনা কাজ করছিল। তখনই মনে পড়ল, আমি বাসায় কিছু না জানিয়েই সিদ্ধান্তটা নিয়ে ফেলেছি। অবশ্য সেটা কোন সমস্যা না, ছোট্ট একটা সমস্যা যেটা ছিল, তা হল– ওই সময় আমার খালাত বোনের বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল বগুড়াতে। বারবার ফোন করে অনুরোধ করছিল ও, আমি যেন অবশ্যই যাই। দোটানায় পড়ে গেলাম। একদিকে প্রথমবারের মত সাগর দেখার সুযোগ, আরেকদিকে সামাজিকতা। চিন্তা করতে থাকলাম, ওকে নানানভাবে বোঝানোরও চেষ্টা করলাম। ম্যারাথন সেই দ্বিপাক্ষিক টেলি-বৈঠক শেষে কী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, সেটা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

আমাদের পরিকল্পনা ছিল ২৪ তারিখ (বুধবার) অফিস শেষে যাত্রা শুরু করা এবং পরদিন সকাল ৯টায় টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিনগামী সী-ট্রাক ধরা, সেন্ট মার্টিনে রাতটা কাটিয়ে, পরদিন সকালে ছেঁড়া দ্বীপ ঘুরে, দুপুরে আবার সী-ট্রাকে টেকনাফ ফিরে যাওয়া, এরপর সোজা কক্সবাজার, সেখানে রাত কাটিয়ে পরদিন বীচ ও বার্মিজ মার্কেট ঘুরে, দুপুরের লাঞ্চ শেষে আবার ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করা, যাতে করে পরদিন (রবিবার) সকালে অফিস ধরা যায়।

ক’দিন ধরেই তখন বেশ শৈত্যপ্রবাহ চলছিল। সূর্যের মুখ তো দেখা যাচ্ছিলই না, সেই সাথে ছিল ঘন কুয়াশা। যেহেতু অফিস শেষে আর বাসায় যাব না, সরাসরি ওদিক থেকেই রওনা হতে হবে, তাই সকালেই ব্যাগ গুছিয়ে অফিসে গেলাম। বুধবার অবশ্য অফিসে কাজের কোন চাপই ছিল না বলতে গেলে। কারণ ওইদিন ছিল আমাদের অফিসের ছোটখাট একটা টেবিল টেনিস টুর্ণামেন্ট। সেটা দুপুরে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও, সকাল থেকেই আমরা ছিলাম খেলার মুডে। আমি যদিও পারি না খেলতে, তবুও নিছক মজার জন্যই নাম দিয়েছিলাম। টুর্ণামেন্ট শেষ হতে হতে প্রায় সাড়ে পাঁচটা বেজে গেল। সন্ধ্যার সময় আবার ক্রিসমাস উপলক্ষে আমাদের অফিসের ডিনার পার্টি ছিল একটা। অ্যারিস্টোক্র্যাট-এ। ঠিক করলাম, সেখানে রাতের খাবার খেয়ে সাড়ে সাতটার দিকে বের হয়ে যাব আমরা তিনজন। কথা ছিল, রেস্তোরাঁর সামনে থেকেই মাইক্রোবাসে উঠব আমরা।

তবে যাত্রার শুরুতেই কিছুটা অপ্রত্যাশিত ব্যাপার ঘটে গেল। আমি আগে যেহেতু যাইনি কখনো, তাই টেকনাফ পৌঁছাতে কতক্ষণ লাগবে, সে সম্পর্কে আমার ধারণা ছিল না। আমাদের আরেক কলিগ, নিজে যদিও যেতে পারছিল না, খুব জোর দিয়ে বলে দিল যে সকাল নয়টার সী-ট্রাক ধরা নাকি আমাদের জন্য কোনভাবেই সম্ভব না। সাথের দুই কলিগ এর আগে বেশ কয়েকবারই ঘুরে এসেছে ওদিক থেকে। ওরা যদিও বলছিল যে অল্প কিছু সময় হাতে রেখে পৌঁছান সম্ভব, তবে সবকিছুই নির্ভর করবে রাস্তা আর কুয়াশার উপর। ওদিকে সাড়ে সাতটা পার হয়ে যাওয়ার পরেও, মাইক্রোবাস আসতে দেরি করছিল। আমার কলিগ ওর বন্ধুকে ফোন করল, যে মূল আয়োজনের দায়িত্বে ছিল। জানা গেল, সে অফিসে খুবই ঝামেলার একটা কাজে আটকা পড়েছে, যত দ্রুত সম্ভব, সেটা শেষ করেই সে বের হবে, আমরা যেন অপেক্ষা করি। এদিকে ঘড়ির কাঁটা তরতর করে চলে যায়, গাড়ির আর দেখা পাওয়া যায় না। আমি কিছুটা দমে গেলাম। ভাবলাম মনে হয় আমার আর সেন্ট মার্টিন যাওয়া হবে না, টেকনাফ থেকে সী-ট্রাক মিস করে আবার কক্সবাজারে ফিরে যেতে হবে।

অপেক্ষা আর উৎকন্ঠার প্রায় পৌণে এক ঘন্টা কাটানোর পর গাড়িতে উঠলাম আমরা। কিছুটা স্বস্তি বোধ করলাম। উঠে পরিচিত হলাম বাকিদের সাথে। তবে পরিচয়পর্ব শেষ হতে না হতেই আরেক সমস্যা টের পেলাম। একদম পিছনের সারিতে আমরা তিন কলিগ বসেছিলাম। সেখানে তিনজন বসা যায় ঠিকই, কিন্তু দুই সিটের মাঝে আবার খানিকটা ফাকা। তাই মাঝখানে যে বসবে, অবধারিতভাবে তার খানিকটা সমস্যা হবেই। পা আটানোও মুশকিল। আসল কথা, বসাটা মোটেও আরামদায়ক ছিল না। তবে তখন সেসব নিয়ে মাথা ঘামানোর কোন সময় ছিল না। এমনিতেই যেহেতু অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল, তাই আমরা ঠিক করলাম কোথাও না থেমে যতটা সম্ভব তাড়াতাড়ি যেতে হবে। ড্রাইভারের পাশে একজনকে বসিয়ে দেয়া হল, আর বলে দেয়া হল সে যেন সবসময় খেয়াল রাখে যাতে ড্রাইভার গাড়ি চালাতে চালাতে অন্যমনস্ক হয়ে বা ঘুমিয়ে না পড়ে। দরকার হলে সে ড্রাইভারের হাত ধরে বসে থাকুক, বা চিমটি কাটুক একটু পর পর, অথবা গান গাক। তবে গানের ব্যাপারে সবাই কিঞ্চিৎ আপত্তি জানাল, কারণ সামনে যে বসেছিল, তার গান শুনেই বরং ড্রাইভারের অ্যাকসিডেন্ট করার সমূহ সম্ভাবনা আছে!

গুলশান-বাড্ডার জ্যাম পার হতেই অনেক সময় লেগে গেল। ততক্ষণে অবশ্য আমরা আড্ডা শুরু করে দিয়েছিলাম। আমাদের ঠিক সামনে এক দম্পতি, তার সামনে আরেক দম্পতি ও তাদের এক বন্ধু, এবং একেবারে সামনে (ড্রাইভারের পাশে) আমার কলিগের বন্ধু, আমাদের আয়োজক। আমার পাশে যে কলিগ বসেছিল, শামীম ভাই, তার ফোন আসল বাসা থেকে। তার মা ফোন করেছে খোঁজ নেয়ার জন্য। আন্টি ওপাশ থেকে কী বলছিলেন, সেটা শুনতে পাচ্ছিলাম না আমরা, তবে সাবধানে পানিতে নামতে বলেছিলেন, সেটা বুঝতে পারছিলাম। কারণ শামীম ভাই সুন্দর করে তার মাকে বলছিল, “তুমি চিন্তা করো না, সাগরে এখন পানি বেশি নাই, অনেক শুকায়া গেছে”! শুনে তো হাসতে হাসতে আমাদের পেট ব্যথা হওয়ার যোগাড়!

ঢাকা-কুমিল্লা হাইওয়েতে ওঠার পর গাড়ি বেশ দ্রুত যেতে লাগল। গ্যাস নেয়ার জন্য মাঝে একবার থামলাম আমরা। সেই ফাঁকে গাড়ি থেকে নেমে হাঁটাহাটি করে নিলাম খানিকক্ষণ। ঢাকার তুলনায় ঠান্ডা কিছুটা কম মনে হচ্ছিল, তবে বাতাস ছিল। আমাদের আয়োজক, নওশাদ ভাই, অফিসের সেই অপ্রত্যাশিত কাজে আটকা পড়ে খাওয়ার সুযোগ পর্যন্ত পায়নি। তবে তার ভাগ্য খুবই খারাপ যে ফিলিং স্টেশনের উইন্ডো ডিসপ্লে-তে নানান রকম শুকনা খাবার দেখা গেলেও, কেনা আর সম্ভব হল না। কারণ দোকান বন্ধ ছিল। দোকানটা যদিও ওই ফিলিং স্টেশনেরই, তবে চাবি নাকি ছিল না ওদের কাছে। আমার সাথে একটা আপেল ছিল, সেটা দিলাম তাকে, অন্তত কিছুটা যেন তার পেটে পড়ে।

ঠিক করা হল, একেবারে কুমিল্লা পৌঁছে রাতের খাওয়া সারা হবে। তার আগে আর যাত্রাবিরতি নেই। কুমিল্লার কাছাকাছি পৌঁছে হঠাৎ করেই খুব বাজে রকম কুয়াশার ভেতর গিয়ে পড়লাম আমরা। এত ঘন কুয়াশা অনেকদিন দেখিনি। কয়েক হাত সামনে কী আছে, সেটা দেখা বা বোঝার কোন উপায় নেই। ড্রাইভারকে বারবার করে বলে দিলাম আমরা যেন সাবধানে গাড়ি চালান উনি। ভার্সিটিতে থাকতে আমি দুইবার কুমিল্লা গিয়েছিলাম। তাই অন্ধকার আর কুয়াশার ভেতরেও কিছুটা চিনতে পারলাম- রাস্তা, ল্যান্ডমার্ক। তবে আমরা যে হোটেলে খাব বলে ঠিক করেছিলাম, কুয়াশার কারণে সেটা ভুল করে পার হয়ে গেলাম। যখন সেটা বুঝতে পারলাম, গাড়ি আর পিছিয়ে নেয়ার কোন উপায় ছিল না। আরেকটা ভাল হোটেল ছিল, কিন্তু সেটা রাস্তার আরেক পাশে। এমনিতেই ঘন কুয়াশা, তাই ঠিক করা হল, আমাদের যাত্রাপথে এরপর যে হোটেলই পড়বে সামনে, সেখানে থেমে রাতের খাওয়া সারতে হবে। কিন্তু কোন হোটেল আর চোখে পড়ে না আমাদের! কুয়াশার কারণে হয়ত চোখ এড়িয়ে যেতে পারে, তবে কিছুদূর পর পর ফিলিং স্টেশন পাওয়া গেল কয়েকটা, কিন্তু খাওয়ার হোটেল পাওয়া যাচ্ছিল না। আমরা চোখ রাখছিলাম রাস্তায়। গাড়ি কিছুটা ধীরে এগোচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত পাওয়া গেল একটা হোটেল। নূরজাহান। সেখানেই থেমে, নান-সবজি দিয়ে রাতের খাওয়া সারলাম আমরা, কেউ কেউ ভাত খেল। সবশেষে গরম এক কাপ চা। বিল দিতে গিয়ে দেখা গেল, যোগে ভুল করে একশ টাকা বেশি বানিয়ে রেখেছে। ভাগ্যিস আমরা দেখেছিলাম। যারা না দেখেই বিল মিটিয়ে চলে যায়, এরা হয়ত তাদের পকেট কাটে সুযোগ বুঝে।

খাওয়া শেষ করে বের হতেই অদ্ভুত দৃশ্য চোখে পড়ল। চারপাশে পাতলা কুয়াশা ভেসে বেড়াচ্ছে। কিছুদূর সামনে কী আছে, দেখা যাচ্ছিল না। আর হোটেলের বাইরের উজ্জ্বল আলোতে, দেখতে দারুন লাগলেও সময়মত সকালে পৌঁছাতে পারব কি-না, সেটা নিয়ে চিন্তায় পড়লাম। তবে তাড়াহুড়া না করে ড্রাইভারকে বরং আমরা বললাম দেখে-শুনে সাবধানে চালাতে। এরপর, গ্যাস নেয়ার জন্য থামা ছাড়া, একটানা গাড়ি চলল।

এক পর্যায়ে চোখ খোলা রাখতে কষ্ট হচ্ছিল। ঠিক ঘুম বলব না, তবে ঝিমুনি আসছিল বেশ। অন্যদের দেখলাম ঘুমাচ্ছে। পেছনে আমরা তিন কলিগ বসেছিলাম জন্যই রক্ষা। হাত-পা ছড়িয়ে আরাম করে বসতে পেরেছিলাম, সুবিধামত। অন্য কারো সাথে বসতে হলে শক্ত হয়ে এক জায়গায় বসে থাকতে হত। ঠিক করলাম, এরকম দূরের যাত্রায় আর কখনই মাইক্রোবাসে যাওয়া যাবে না, আরাম করে বসতে পারলে অবশ্য আলাদা কথা। দূরের যাত্রায় আসলে বাসের কোন বিকল্প নেই। হঠাৎ করেই আমাদের গাড়িতে একটু সমস্যা দেখা দিল। অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে গ্যাসে চলছিল না, কিছুক্ষণ তাই তেলে চালানো হল। এরপর চিটাগং পৌঁছে চা খাওয়ার জন্য একটা হোটেলের সামনে থামলাম আমরা। ড্রাইভার গাড়ি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। আমরা সবাই চা খেলাম। ঠান্ডার কারণেই কি না কে জানে, ধোঁয়া-ওঠা সেই গরম চা সবার কাছেই অসম্ভব ভাল লাগল।

ঝিমাতে ঝিমাতে কখন যেন ঘুমিয়েই পড়েছিলাম। ঘুম ভাঙল প্রচন্ড ঝাঁকুনিতে। তাকিয়ে দেখি ভোর হয়ে গেছে, আবছা আলো দেখা যাচ্ছিল বাইরে। ঘন কুয়াশাও ছিল। রাস্তার অবস্থা এতই খারাপ, আর এত ঝাঁকি খেতে হচ্ছিল, অনেক আগে খেলা মোটো রেসার-এর ডার্ট ট্র্যাকের কথা মনে পড়ে গেল, যেটার নাম আমি দিয়েছিলাম “চান্দের রাস্তা”। গাড়িতে সাধারণত কখনই আমার তেমন একটা খারাপ লাগে না, কিন্তু অনবরত ঝাঁকি খেয়ে কেমন যেন অসুস্থ লাগা শুরু হল। তার সাথে যোগ হয়েছিল বিয়ারের গন্ধ! অফিসের সেই ক্রিসমাস পার্টি থেকে বেশ কয়েকটা বিয়ারের ক্যান নেয়া হয়েছিল। চেকপোস্টে ধরা খাওয়ার ভয়ে সেগুলো গাড়ির ভেতরেই, সিটের নিচে, নানান জায়গায় লুকানো হয়েছিল। সেগুলোর একটাই মনে হয় কোন কারণে লীক করেছিল। এমনিতেই আমি এসব খাই না, তার উপর রাস্তার ঝাঁকির সাথে বিয়ারের গন্ধ নাকে ঢোকা মাত্রই আরো বেশি অসুস্থ লাগছিল। এখনও মনে পড়লে কেমন যেন গা গুলায়।

টেকনাফ যখন পৌঁছুলাম আমরা, যেখান থেকে সী-ট্রাক ছাড়বে, তখন ঘড়িতে দেখি মাত্র আটটা বাজে! আমাদের প্রত্যাশার চেয়ে অনেক তাড়াতাড়ি আমরা পৌঁছে গিয়েছিলাম। জানা গেল, সী-ট্রাক ছাড়বে সাড়ে নয়টায়। হাতে দেড় ঘন্টা ছিল। ঠিক করলাম, নাস্তা করে নিয়ে সময় থাকলে না হয় গাড়িতে করেই আশেপাশে চক্কর দিয়ে ঘুরে দেখা যাবে। ঐতিহাসিক “মাথিনের কূপ” সেখান থেকে খুব একটা দূরে না, যার সাথে জড়িয়ে আছে মগ রাজকন্যা মাথিন ও বাঙ্গালি পুলিশ কর্মকর্তা ধীরাজ ভট্টাচার্যের বিয়োগান্ত সেই অমর প্রেম কাহিনী।

নাস্তা করতে আমরা বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের মোটেল নেটং-এ গেলাম। সেখানে হাত-মুখ ধুয়ে নিলাম সবাই। ঠান্ডা পানির ঝাপটা লাগতেই ফ্রেশ লাগল খুব। তবে একটু বাদেই জানা গেল, নাস্তা পাওয়া যাবে না। কী কারণে, সেটা অবশ্য জানা গেল না। একরাশ বিরক্তি নিয়ে আমরা সেখান থেকে বের হয়ে গেলাম। সেখান থেকে গাড়ি নিয়ে আমরা সী-ট্রাক ছাড়ার জায়গায় ফিরে এলাম আবার। সেখানে রাস্তার আরেক পাশে একটা ছোট্ট দোকান আছে যেখানে পরোটা-ওমলেটের ব্যবস্থা ছিল। একটাই দোকান, তাই ভিড় ছিল প্রচন্ড, আর একটামাত্র ছোট তাওয়া ছিল। মানুষও একজন। সে একা একা অতগুলো মানুষের পরোটা-ডিম ভাজতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছিল। দাঁড়িয়ে থাকলাম আমরা, ভিড় কমার অপেক্ষায়।

অনেকক্ষণ পরে বসার সুযোগ পাওয়া গেল। শুরুতে পরোটা দিয়ে গেল। আগুন-গরম, একদম তাওয়া থেকে সরাসরি তুলে নিয়ে আসা। কিন্তু ডিম ভাজি আর আসে না। অপেক্ষা করতে করতে সবাই পরোটা খাওয়া শুরু করে দিলাম। মুখে দিয়েই টের পাওয়া গেল সেটা ভালভাবে ভাজা হয়নি। ভেতরে ময়দা কাঁচাই রয়ে গিয়েছিল। সেটাই কোনমতে খাওয়া শেষ করতেই ডিম চলে এল। এবার আর পরোটা আসে না! কী আর করা যাবে। শুধু ডিম ভাজি খেয়ে নিলাম। খাওয়া-পর্ব শেষ করে বিল মিটিয়ে দেখা গেল হাতে সময় খুব বেশি নেই। আমাদের ড্রাইভারকে হোটেল ও খাওয়া বাবদ কিছু টাকা দিয়ে, ব্যাগ নিয়ে সবাই ছুটলাম সী-ট্রাক কুতুবদিয়া ধরতে।

তীর থেকে সী-ট্রাক পর্যন্ত যেতে অনেকটা হাঁটতে হয়, বাঁশ-কাঠের একটা সাঁকো আছে। সেটা দিয়ে এগোতেই বিশালাকৃতির সী-ট্রাক চোখে পড়ল। যাত্রীরা সবাই সারিবদ্ধভাবে এগোচ্ছিল। আমাদের টিকেট দেখে চেকিং-এর দায়িত্বে থাকা একজন একদম উপরের ডেকে যাওয়ার রাস্তা দেখিয়ে দিল। ভিড় ঠেলে উপরে গিয়ে টিকেট দেখে সিট মিলিয়ে নিলাম। এরপর একটু স্থির হয়ে চারপাশ দেখার সুযোগ মিলল। হঠাৎ করেই উপলব্ধি করলাম যে আমরা নাফ নদীতে, যেটা সাগরে গিয়ে মিশেছে। নাফ নদীর অপরূপ সৌন্দর্য ভাষায় বর্ণনাতীত। শুধু দু’চোখ ভরে দেখছিলাম। সূর্যের আলো পড়ে পানি রূপার মত চিকচিক করছিল। দেখছিলাম সবকিছু, আর মুগ্ধ হচ্ছিলাম। ব্যাগ থেকে ক্যামেরাটা বের করে নিলাম। ভেতরে তখন কী যে উত্তেজনা কাজ করছিল, তা বুঝিয়ে বলা সম্ভব না।

নিচে নাফ নদী এবং নদীতে ট্রলার, মাছধরা নৌকার কিছু ছবি দিলাম:

ছবি ২(ক): সী-ট্রাকে চড়তে এদিক দিয়েই যেতে হয়েছিল


ছবি ২(খ): নাফ নদীর বুকে এক টুকরো সবুজ


ছবি ২(গ): সকালের কুয়াশার মাঝেও সূর্যের আলোয় নদীর পানি চিকচিক করছিল


ছবি ২(ঘ): টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিন যাত্রাপথে এরকম অনেক ট্রলার, মাছধরা নৌকা দেখেছি


ছবি ২(ঙ): নদীর বুকে নৌকা


ছবি ২(চ): জাল ফেলে মাছ ধরছে...


ছবি ২(ছ): আরেকটি নৌকা



(চলবে)


<< পর্ব – ১


মন্তব্য

তানিয়া এর ছবি

লেখা দুর্দান্ত আর ছবি অসাধারন চলুক
সামনের বার সেন্টমার্টিনে একটা ট্রিপ দিতেই হবে

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ তানিয়া আপু হাসি

পরের বার দেশে আসলে অবশ্যই অবশ্যই সেন্ট মার্টিনে একটা ট্যুর দিবেন। অসম্ভব সুন্দর একটা জায়গা।

শুনলাম ২০১০ না কবে থেকে যেন ওখানে যাওয়া সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিবে। কিছু উন্নয়নের কাজ করা হবে, পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য। তারপর আবার উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।

তানিয়া এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ প্রহরী এই গুরুত্বপুর্ন খবরটার জন্য ..... নাহ ২০০৯ এ যে ভাবেই হোক আসতেই হবে
আর একটা অনুরোধ সমুদ্র বিলাস যেন ১০ পর্বের আগে শেষ না হয়।
শুভেচ্ছা

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

এটা অবশ্য আমার শোনা কথা, আপু। আমি আরেকটু যাচাই করে আপনাকে তাহলে পরে জানাব এর সত্যতা।

১০ পর্ব তো বানানো যায়-ই। তবে সেক্ষেত্রে একেকটা পর্ব দুই/তিন প্যারাতে শেষ করে দিতে হবে। হা হা। আমার বদভ্যাস হল, লিখতে গেলে অনেক হাবিজাবি বর্ণনা লিখে ফেলি, বাদ দিতে পারি না। দেখি, চেষ্টা অবশ্যই করব যতটা সম্ভব সামনে নিয়ে যাওয়ার।

আপনার প্রশংসা ও উৎসাহের জন্য অনেক ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।

মুস্তাফিজ এর ছবি

পরের পর্ব নিয়া তাড়াতাড়ি আসেন।
নেটং এর ছবি নাই ক্যা? যান্‌ ধার দিলাম
Hotel NE Tang, Teknaf

...........................
Every Picture Tells a Story

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

আমি ভাই যে আইলসা, লিখতে গেলে জ্বর আসে। দেখি পরের পর্ব লেখা শুরু করবনে তাড়াতাড়ি...

আমার খেলনা ক্যামেরাটা বের করসি একেবারে সী-ট্রাকে উঠে। তাই নেটং-য়ের ছবি তোলা হয়নি। তবে মোবাইলের ক্যামেরা দিয়ে তোলা যেত, কিন্তু ব্যাটারা নাস্তা দেয়নি আমাদের, মেজাজ খুব বিলা ছিল, তাই ছবি তুলিনি ইচ্ছা করেই দেঁতো হাসি

নেটং তো দেখলাম বেসরকারি একটা কোম্পানীর হাতে ছেড়ে দিসে। আরেকটু ভাল (বা আন্তরিক) ব্যবহার আশা করসিলাম ওদের কাছ থেকে।

[আমার একটা প্ল্যান আছে। আপনার ফ্লীকার অ্যাকাউন্ট থেকে কিছু সুন্দর দেখে ছবি চুরি করে নিজের নামে এখানে চালায়া দেব] চোখ টিপি

মুস্তাফিজ এর ছবি

চুরি করা খারাপ, লোকজন খারাপ বলে। আর বিয়া না করে থাকলে ত আরো বিপদ।

...........................
Every Picture Tells a Story

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

ছোট চুরি করা খারাপ। আমি তো সাগর-চুরি করব আপনার কাছ থেকে, তাতে খারাপের কিছু নাই দেঁতো হাসি

নিবিড় এর ছবি

প্রহরী ভাই দেখি শেষ পর্যন্ত টেকনাফ পৌছাতে পারলেন চোখ টিপি ছবি গুলা ভাল হইছে ।
*********************************************************
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

হুমম, পারসিলাম শেষ পর্যন্ত, তাও আবার দেড় ঘন্টা সময় হাতে রেখেই দেঁতো হাসি

ধইন্যবাদ হাসি

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- ফটুক গুলা বেসাধারণ হৈছে বিডিআর ভাই। কিন্তু সেন্টমার্টিনস বন্ধ করে দিলে কেমনে কী! আমি তো জীবনেও যাই নাই, বন্ধ কইরা দিলে তো আর যাওয়াও হইবো না।

আচ্ছা, (তার)ছেঁড়া দ্বীপে যে যায় সে-ই কি চাইপ্যাচুপ্যা বইসা ডাব খায় নাকি? জায়গার কি এতোই অভাব ঐখানে? চিন্তিত
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

পরিবর্তনশীল এর ছবি

গুরু। এখনো সেন্টমার্টিন যান নাই? নাহ।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

স্বপ্নাহত এর ছবি

একা একা সেন্টমার্টিন যাস্ আর এইখানে আইসা পার্ট লস। মন খারাপ

---------------------------------

বিষণ্ণতা, তোমার হাতটা একটু ধরি?

---------------------------------

বাঁইচ্যা আছি

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

একা একাই ঘুরে আসসে সেন্ট মার্টিন থেকে, তোমাদের না নিয়াই? খুব খ্রাপ, মহিব, খুব খ্রাপ দেঁতো হাসি

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

ধূগো চাচা,

ফটুকের প্রশংসার জন্য আপনারে ধইন্যবাদ। আমি শুনসি যে সাময়িকভাবে বন্ধ করবে, কিছু উন্নয়নমূলক (উন্নয়নের জোয়ারে ভাইসা না গেলে হয়) কাজ করে আবার জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দিবে। কিন্তু আপনি একবারও যাননি আগে! চিন্তিত

আমি তো আর চাইপ্যাচুইপ্যা ছিলাম না, তাই কইতারি না চোখ টিপি নিজে যখন যাইবেন, আর যায়া ডাব খাইবেন, তখন দেইখা আইসেন (তার)ছেঁড়া দ্বীপে কতখানি জায়গা দেঁতো হাসি

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

মাত্র সবজান্তার ভ্রমণ সিরিজ শেষ করলাম।
আপ্নারটাও ভালো হচ্ছে। ছবিগুলো মারাত্মক সুন্দর...। চলুক

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ শিমুল ভাই হাসি

সবজান্তার সিরিজটা তো অসাধারণ। আমারও খুব ভাল লাগসে। তবে এই সিরিজ ওটার ধারে-কাছেও হবে না। তাই কিছু সুন্দর দেখে ছবি দিয়ে লেখার দুর্বলতা ঢাকার চেষ্টা করব দেঁতো হাসি

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

চামে নিজের তোলা ছবিরে নিজেই সুন্দর কইলেন, দেখতেসি! চোখ টিপি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
একলা পথে চলা আমার করবো রমণীয়...

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

আসলে লেখা এতই বাজে, যে সে তুলনায় দুই-একটা ছবি কিছুটা সুন্দর – এটাই বোঝাতে চাইসিলাম চোখ টিপি

রানা মেহের এর ছবি

ছবিগুলো খুবই সুন্দর।

ভ্রমনকাহিনীতে শুধু জায়গা আর যাত্রার বর্ণনার সাথে
ভালো লাগে টুকটাক অপ্রয়োজনীয় গল্প শুনতে।

যেমন পুরো লেখায় পারষ্পরিক কোন সংলাপ নেই।
আপনারা কজন মিলে গিয়েছিলেন।
কিছু না কিছু ইন্টারেস্টিং কথা হয়েছে নিশ্চয়ই।

কিছু কিছু জায়গার ডিটেইল বর্ননা দিলে ভালো লাগবে আরো।
যেমন ইচ্ছে করছে সেই ডিমভাজিওয়ালা কে জানতে।

চালিয়ে যান।
এ কদিনে সিকিম রোম আর সেন্টমার্টিন ঘোরা হচ্ছে
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

ধন্যবাদ আপু। এই কারণেই আপনার মন্তব্যগুলো আমার এত ভাল লাগে। অনেক মূল্যবান বিষয়গুলো ধরিয়ে দেন আপনি। অবশ্যই চেষ্টা করব এগুলো মাথায় নিয়ে পরের পর্বে যাওয়ার। লেখক (লিখলেই লেখক - এই ফর্মূলাতে) হিসাবে নিজের সীমাবদ্ধতা তো আছেই, তারপরও চেষ্টা করব আগের ভুলগুলো বা দুর্বল জায়গাগুলো কাটিয়ে ওঠার।

আসলে এই পর্বেই আরো লেখা যেত অনেক কিছু (এই যেমন সংলাপের কথা বললেন, মাত্র একটা জায়গায় উল্লেখ করেছি মজার একটা সংলাপ, ওরকম আরো অনেক ছিল। তেমনি ডিমভাজিওয়ালার হেল্পার এক পিচ্চি, যে শুধু সার্ভ করে, সম্পর্কেও লেখা যেত)। তবে অনেক বড় হয়ে যাচ্ছিল জন্যই বাদ দিলাম ইচ্ছা করেই।

আপনারা সাথে ঘুরছেন জন্যই তো আমারও এত মজা লাগছে হাসি

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

“তুমি চিন্তা করো না, সাগরে এখন পানি বেশি নাই, অনেক শুকায়া গেছে”!
হা হা হা
কথা শুনে হাসতে হাসতে শেষ। হো হো হো
ছবিগুলো দুর্দান্ত হয়েছে, প্রহরী।

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

ওর ওই কথাটা নিয়ে আমরা এখনও হাসাহাসি করি হো হো হো

থেংক্যু আপামনি হাসি

পরিবর্তনশীল এর ছবি

দুই পর্ব একসাথে পড়লাম। আপন আপন লাগছে।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

মন্তব্যটা আমারও খুব আপন আপন লাগল।

স্বপ্নাহত এর ছবি

সেন্টমার্টিনে এখনো যাওয়া হয়নাই। তার আগেই তালা ঝুলায়া দিলে ক্যামনে কি মন খারাপ

আর সীমানা বাদ এত ঘুড়াঘুড়ি করা ঠিক না। খুব খ্রাপ, বিডিআর ভাই। চলুক

---------------------------------

বিষণ্ণতা, তোমার হাতটা একটু ধরি?

---------------------------------

বাঁইচ্যা আছি

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

কও কী! এখনও যাওনি! তাইলে আইইউটি-তে থাকতে থাকতেই যাও, পরে নানান ঝামেলায় যাওয়া নাও হইতে পারে। আর ছাত্র অবস্থায় বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যাওয়ার যে আলাদা একটা মজা আছে, সেইটার কথা আর কী বলব।

আসলে বাংলাদেশ–মিয়ানমার সীমানা পাহারা দিতেই তো গেসিলাম চোখ টিপি

মুজিব মেহদী এর ছবি

লেখা ভালো, ছবি দুর্দান্ত।
এত সুন্দর ছবি কেমনে তোলেন?
..................................................................................
দেশ সমস্যা অনুসারে
ভিন্ন বিধান হতে পারে
লালন বলে তাই জানিলে
পাপ পুণ্যের নাই বালাই।

... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ মুজিব ভাই।

আমি তো স্রেফ ক্যামেরা তাক করে শাটার টিপে দেই। প্রকৃত সুন্দর ছবি তোলেন তো আমাদের মুস্তাফিজ ভাই, প্রকৃতিপ্রেমিক ভাই-রা। তাঁদের তোলা ছবি দেখে শুধু চুপচাপ বসে থাকতে হয়। তবুও এই ছবিগুলো আপনার ভাল লেগেছে জন্য আরেকবার ধন্যবাদ।

মুশফিকা মুমু এর ছবি

আহারে কাজিনের বিয়ে বাদ দিয়ে সমুদ্র দেখতে গেলা মন খারাপ
দারুন লিখস, ছবি গুলিও দারুন হাসি তোমার কুয়াশার কথা পড়ে মনেপরে গেল আমাদের ইন্ডিয়া ট্রিপে জয়পুর থেকে আসার সময় অনেক রাত হয়ে যায় ১২টার মত, তখন এত কুয়াশা পরে যে কিছুই দেখা যায় না, খুব ভয় পেয়েছিলাম তখন। যাইহোক ঐ পুলিশের অমর প্রেম কাহিনীটা কি? শুনিনি কখনো।
নেক্সট লেখার অপেক্খায়
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

হুমম মন খারাপ

ট্রিপ নিয়ে লিখে ফেল না তাহলে, বিস্তারিত আমরাও পড়ি... এমনিতেও কিন্তু তোমার কাছে পোস্ট পাওনা আছে। মনে আছে তো? হাসি

সব প্রেম কাহিনীই তো একই। খালি উনিশ আর বিশ দেঁতো হাসি

কীর্তিনাশা এর ছবি

বাহ্ রে বাহ্! লেখা ছবি দুইটাই লা জওয়াব!

চলুক চলুক
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

নাশু ভাইয়ের মন্তব্যটাও লা জওয়াব দেঁতো হাসি

ধন্যবাদ হাসি

অনিকেত এর ছবি

বস, ফাটাফাটি হয়েছে।
এত ঝরঝরে বর্ণনা--মনে হল যেন নিজেই সেখানে ছিলাম...!!!

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

অনেক অনেক ধন্যবাদ অনিকেত'দা। অনুপ্রেরণা পেলাম হাসি

সবজান্তা এর ছবি

চলুক

দূর্দান্ত হয়েছে। আর ছবিগুলা প্রাণবন্ত !


অলমিতি বিস্তারেণ

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ।

অনিকেত এর ছবি

ছবির কথা লিখতে ভুলেই গেসলাম (আমার এখানে এখন ভোর ৪টা ৫০--- কাজেই মাথা পুরো কাজ করছে না)--তাই আরেকটা মন্তব্য করতে এলাম---

ছবি গুলো দারুন লেগেছে---বিশেষ করে ছবি নং-২(ছ) আর ২(ঘ)----

খুব খুব ভাল লাগল----

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

এত রাতে শুধু ছবির প্রশংসা করতে আরেকবার লগ-ইন করলেন জন্য ধন্যবাদ তো বটেই, অনেক কৃতজ্ঞতা-ও অনিকেত'দা। আবারও অনুপ্রেরণা পেলাম।

মন্তব্য পেয়ে আমারও খুব খুব ভাল লাগল। ভাল থাকবেন হাসি

দৃশা এর ছবি

পিথিমির সবচেয়ে সুন্দর সমুদ্র হইল টেকনাফ আর সেন্ট মার্টিনের সমুদ্র, আর ছেড়া দ্বীপ তো পুরাই মাথার তারছিড়া দেয়। সেন্ট মার্টিনে সবচেয়ে বাজে অভিজ্ঞতা হইছিল খানা লইয়া। এতো সুন্দর একটা জায়গায় খানার কষ্ট বড় পীরাদায়ক। বুকারা বুঝে না মানুষের পেট না ভরলে সৌন্দর্য্য দেইখা মনও ভরে না।
---------------------------------------------------------
দুঃখ তোমায় দিলেম ছুটি...
বুক পাঁজর আজ ফাঁকা।
দুঃখ বিদায় নিলেও সেথায়...
দুঃখের ছবি আঁকা।

দৃশা

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

পিথিমির সবচেয়ে সুন্দর সমুদ্র হইল টেকনাফ আর সেন্ট মার্টিনের সমুদ্র, আর ছেড়া দ্বীপ তো পুরাই মাথার তারছিড়া দেয়।
সম্পূর্ণ একমত! (যদিও কক্সবাজার ছাড়া আমি আর কোনও সমুদ্র সৈকত দেখিনি) হাসি

খানাপিনার কথা আর বইলেন না। আমি-আপনি তো বুঝি, কিন্তু ওরা যে কেন বোঝে না মন খারাপ

কীর্তিনাশা এর ছবি

খানাপিনা নিয়ে আমার কোন সমস্যাই হয়নি ওখানে।

আহা! কোরাল মাছের বার-বি-কিউ আর বড় কাঁকড়া ফ্রাই'র স্বাদ এখনো ভুলতে পারিনি। এইযে এখনো জিভে জল এসে গেল!

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

খুব যে সমস্যাতে পড়েছিলাম, তা না। তবে খাবার-দাবার নিয়ে হালকা বাজে অভিজ্ঞতা আছে। খানাপিনা নিয়ে আগামী কোনো এক পর্বে লিখব আশা করি হাসি

আমারও জিভে জল এসে গেল..

তানবীরা এর ছবি

অই আমিও কুতুবদিয়া দিয়াই সেন্টমার্টিন গেছিলাম, পরে এফ/বি তে ফটুক দিমু নে। বেশুমার মজা করেছিলাম। কেয়ারী সিনবাদে যাই নাই, দোকানদার কইলো ওইটা নাকি জামাতী মালিকের। দেশে আজকাল বেশ একটা জামাত বিরোধী ক্যাম্পিং হচ্ছে। ভালো লাগে লোকের ঘৃনা দেখতে।

লেখা ভালো হচ্ছে। তবে আমাদের মতো মজা তোমরা করতে পারো নাই, আমরা ছিলাম শুটিং কোম্পানীর সাথে "জান আমার জান" , নায়িকা ্সুইট অপু বিশ্বাস আর নায়ক রাজ শাকিব খান ..............................টিং টিং

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

"কেয়ারী সিন্দবাদ" জামাতী নাকি! জানতাম না। তবে লোকজনের মধ্যে যে একটা জামাত-বিরোধী সচেতনতা গড়ে উঠতেসে, এইটা নিঃসন্দেহে অত্যন্ত দারুন একটা ব্যাপার।

আপনার মতো মজা ক্যাম্নে করি কন! আপনে তো সেই "জান আমার জান" ছি!নেমায় ডাবল রোলে শুটিং করে আসলেন - (১) অপু বিশ্বাসের খালা, এবং (২) ওলন্দাজ জলদস্যু। আপনার মজার সাথে কী আর আমার মজার তুলনা হয় বলেন? চোখ টিপি

ফেইসবুকে ফোটুক তো দিবেনই, সাথে সচলেও লেখা দিয়েন আপনার ছি!নেমা সম্পর্কে। দেখবনে কেমন মজা করসেন দেঁতো হাসি

রায়হান আবীর এর ছবি

দ্বিতীয় দফা মন্তব্য প্রচেষ্টা মন খারাপ

আমি নিজেও দেখেছি- হুটহাট করে করা প্ল্যানই সাধারণত বাস্তবায়িত হয়। অনেকদিন ধরে করাগুলো প্ল্যানই থেকে যায়।

গা গুলানি গেছে এখনও? চোখ টিপি

=============================

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

একবার না পারিলে দেখ শতবার হাসি

সহমত। হুট করে কিছু করলেই বরং সে-টা ভালভাবে করা হয়। প্ল্যান করে করতে গেলেই নানান ঝামেলা দেখা যায়।

মনে করায়া দিলা আবার! চোখ টিপি

অতিথি লেখক এর ছবি

২(ছ) ছবিটা খুবই সুন্দর, নীল সমুদ্র----

আফসোস, কোনদিন যেতে পারি নাই-

/ছোট মানুষ

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

ছোট মানুষদের সাগরে নামতে নেই। সাঁতার জানা আছে? চোখ টিপি

আফসোস করবেন না, আশা করি আপনারও সাগর দেখা হয়ে যাবে খুব তাড়াতাড়ি। আমি নিজেও তো এই প্রথম সাগর দেখলাম, এতগুলো বছর পর।

ছবিটা আমারও পছন্দের। ধন্যবাদ।

অতিথি লেখক এর ছবি

সাঁতার জানা আছে?

আছে মানে, এস এম সি -র অভিজ্ঞতাই আছে। নদী, পুকুর, ডোবা এমনকি 'জল ভরা চৌবাচ্চায়'-ও সাঁতার দেয়ার অভিজ্ঞতা আছে।
নাই শুধু সাগরে..................
হ, ঠিকই কইছেন। আগে বড় হই, তারপর দেখুম নে সাগরে কত জল। ঐগুলান বড় মাইনষের কাম, তাই ন্যা.....!!!!!!!

/ছোট মানুষ

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

বাহ্, আপনার তো দেখা যায় সাঁতার কাটার উপর সার্টিফিকেট যোগাড় করা আছে! সাগরে নামা আপনার জন্য এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।

আপনি বড় হতে হতে আরো অনেক শীত আসবে-যাবে, ততদিনে আশা করি আপনিও আমার কলিগের মতো সাগরের পানি শুকিয়ে ফেলতে পারবেন। হা হা।

অনেক ধন্যবাদ, ছোট মানুষ হাসি

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

“তুমি চিন্তা করো না, সাগরে এখন পানি বেশি নাই, অনেক শুকায়া গেছে”!
এই ডায়লগ শুনে হেসে গড়াগড়ি খাচ্ছি রে ভাইজান।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

অফিসে আমরাও প্রায় প্রতিদিনই মজা করি এই ডায়লগ নিয়ে হো হো হো

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

অসহ্য!
সাগরে মানুষ যায়?! ধুর!

;-(((((((((((((((((((((((

০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০
"আমার চতুর্পাশে সবকিছু যায় আসে-
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা!"

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

আপনিই না আমাকে বললেন আপনাকে সাগর দেখাতে! মন খারাপ

ব্যাপার না রে ভাই, মনে করেন টক আঙুর খাচ্ছেন! দেঁতো হাসি

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

না তো, কই?! ;-(

আঙুর আমি খাই না,
সাগর দেখতে যাই না।

মন খারাপ

[লেখা-দেখা-দেখানো(ছবি) সবই অনেক ভালো হইছে অপ্র]

০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০
"আমার চতুর্পাশে সবকিছু যায় আসে-
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা!"

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

আঙুর আমি খাই না,
সাগর দেখতে যাই না।
একবার যদি খাই
হামলে পড়ে দৌঁড়ে দেখতে যাই!

চোখ টিপি

আপনার সুগার কোটিংয়ের জন্য অশেষ ধন্যবাদ দেঁতো হাসি

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

না, তবু যাই না। ;-(

আর, ওইটা সুগার কোটিং না ঠিক, চিনির বিকল্প জিরোক্যাল-এর কোটিং দিছি। হাসি

০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০
"আমার চতুর্পাশে সবকিছু যায় আসে-
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা!"

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

আমাকে আরো মোটা হওয়ার হাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দেঁতো হাসি

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

স্বাগতম।
তবে, না, আপ্নে মোটা না কিন্তু। চোখ টিপি

০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০
"আমার চতুর্পাশে সবকিছু যায় আসে-
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা!"

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

আপনাকে আরেকবার অসংখ্য ধন্যবাদ সাইফুল ভাই দেঁতো হাসি

ভূঁতের বাচ্চা এর ছবি

আগে একবার মন্তব্য করেছিলাম তবে মনেহয় ইন্টারনেটের কারসাজিতে উধাও হয়ে গেছে। ছবিগুলো কোন ক্যামেরা দিয়ে তোলা জানতে ইচ্ছে করল। আর ফটোশপিত কিনা তাও বলবেন। অসম্ভব সুন্দর তুলেছেন। নতুন পর্ব কই ?

-----------------------------------------

--------------------------------------------------------

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

ভূঁতের বাচ্চার সাথে ইন্টারনেটের ভৌতিক কারসাজি! এও কী সম্ভব! হো হো হো

আমি সনি ডিএসসি–ডব্লিউ১৫০ ব্যবহার করি। কিছু ছবি সামান্য এডিট করা হয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে। নতুন পর্ব এসে গেছে হাসি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।