ইয়োগা: সুদেহী মনের খোঁজে |১৫| আসন: শশঙ্গাসন।

রণদীপম বসু এর ছবি
লিখেছেন রণদীপম বসু (তারিখ: শনি, ২৯/১১/২০০৮ - ১২:৩৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আসন অবস্থায় দেহকে অনেকটা শশকের মতো দেখায় বলে আসনটির নাম শশঙ্গাসন (Shashankasana)।

পদ্ধতি:
হাঁটু ভেঙে পায়ের পাতা মুড়ে গোড়ালির উপর পাছা রেখে অনেকটা বজ্রাসনের মতো করে বসুন। এবার পায়ের পাতা থেকে হাঁটু পর্যন্ত মাটিতে রেখে শরীরের উপরাংশ নিচু করে মাথা হাঁটুর সামনে মাটিতে রাখুন। হাঁটু দু’টো জোড়া থাকবে এবং কপাল হাঁটুর সঙ্গে লেগে থাকবে। এখন দু’হাত দিয়ে দু’পায়ের গোড়ালি ধরুন। হাত দু’টো সোজা থাকবে। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে। ২০ সেঃ থেকে ৩০ সেঃ এই অবস্থায় থাকুন। এরপর হাত আলগা করে আস্তে আস্তে পূর্বাবস্থায় সোজা হয়ে বসুন। এভাবে আসনটি ২/৩ বার করুন এবং প্রয়োজনমতো শবাসনে বিশ্রাম নিন।

RabbitPose_Shashankasana

উপকারিতা:
এ আসন মেরুদণ্ডের হাড়ের জোড় নমনীয় ও মজবুত করে। মেরুদণ্ড-সংলগ্ন স্নায়ুমণ্ডলী ও মেরুদণ্ডের দু’পাশের পেশী সুস্থ ও সক্রিয় রাখে, কিশোর-কিশোরীদের লম্বা হতে সাহায্য করে। থাইরয়েড, প্যারাথাইরয়েড, টনসিল, পিটুইটারি, পিনিয়াল প্রভৃতি গ্রন্থিগুলো সুস্থ ও সক্রিয় রাখে। মগজের শক্তি বৃদ্ধি হয়। পেট ও তলপেটে প্রচণ্ড চাপ পড়ে বলে পাকস্থলী, প্লীহা, যকৃৎ, মূত্রাশয় প্রভৃতি দেহযন্ত্রগুলো খুব ভালো কাজ করে। আসনটি অভ্যাস করলে দাঁত, কান ও নাকে সহজে কোন রোগ হতে পারে না। তাছাড়া হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়, কোষ্ঠবদ্ধতা, পেটফাঁপা প্রভৃতি পেটের রোগ হতে পারে না। হাত এবং পায়েরও খুব ভালো ব্যায়াম হয়। কোমর ও পেটের অপ্রয়োজনীয় মেদ কমে গিয়ে দেহ সুঠাম ও সুন্দর হয়ে উঠে। শীর্ষাসনের অনেক সুফল এই আসনটিতে পাওয়া যায়। যারা বয়স অনুযায়ী লম্বায় কম, তাদের পক্ষে আসনটি অবশ্য করণীয়। শশঙ্গাসনের সাথে ধনুরাসন অভ্যাস রাখলে বাত, সায়টিকা, লাম্বার স্পন্ডিলোসিস ও স্লীপড্‌ ডিস্ক জাতীয় কোন রোগ হতে পারে না।

yogamrita_shashankasana

নিষেধ:
যাদের প্লীহা, যকৃৎ অত্যধিক বড় বা যাদের কোন হৃদরোগ বা উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, রোগ নিরাময় না হওয়া পর্যন্ত তাদের পক্ষে আসনটি করা বাঞ্ছনীয় নয়।
[Images: from internet]

(চলবে...)

পর্ব: [১৪][**][১৬]


মন্তব্য

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

প্রথম ছবিটা পোস্টের ভিতরে কোথাও দেয়া যায় না? প্রথম পাতায় বেশ অকওয়ার্ড লাগছে।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

রণদীপম বসু এর ছবি

মুর্শেদ ভাই, কীভাবে সরাবো জানিনা তো !
ফ্লিকারের হলে সরিয়ে নিতে পারতাম। আপনি একটু সহায়তা করুন, প্লীজ।
আমার মধ্যেও একটু ইতস্তত ছিলো। শেষে ভাস্কর্য ভেবে দিয়ে দিয়েছি। এক কাজ করেন, সম্ভব হলে ছবিটা একেবারে ডিলিট করে দেন। এতে পোস্টের জন্য অসুবিধা হবে না।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

অম্লান অভি এর ছবি

অফ টপিকঃ এমন ছবির জন্যই বুঝি মালয়শিয়ায় যোগব্যায়েম নিষেদ্ধ করেছে।!। আপনি চালিয়ে যান আমরা পড়েই যাব। মাঝে মাঝে কসরতও করব।

মরণ রে তুহু মম শ্যাম সমান.....

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

অম্লান অভি ব্রাদার,
আপনার অম্লান বদনে খোঁচা মারা কথা শুনতে ভালো লাগে না। মন খারাপ

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

রণদীপম বসু এর ছবি

অভি@
ছবির জন্য কি না জানি না, তবে যেটুকু জানি, মালয়েশিয়ায় যোগব্যায়াম নিষিদ্ধ করেছে এখানে হিন্দুয়ানীর গন্ধ নাকি পাওয়া যায় এই কুযুক্তিতে।
ব্যায়াম তো করবেন আপনি ঘরের মধ্যে অথবা কোন ট্রেনিং সেণ্টারে। সব ব্যায়ামের ক্ষেত্রে এমনকি স্পোর্টসের ক্ষেত্রেও পোশাক সংক্ষিপ্তই হয়। যারা ব্যায়াম করতে যান বা স্পোর্টস করতে যান, তাদের চোখ পোশাকের আতিপাতি খুঁজে বলে আমার জানা নেই। কেননা তারা ব্যায়াম করতেই যায়। সমস্যা তাদের হয় না, হয় সেই সব অকর্মা ঘাউরাদের যারা অন্ন ধ্বংসের পাশাপাশি ধ্বংস করে দিচ্ছে পৃথিবীর সমস্ত ভালো জিনিসগুলোও।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

রণদীপম বসু এর ছবি

ধন্যবাদ মুর্শেদ ভাই।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আপনি ছবিটা পোস্টের পেটের ভিতর কিভাবে দিবেন জানার জন্য এই জিজ্ঞাস্য দেখতে পারেন: http://www.sachalayatan.com/faq/show/716#q_772

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

মাহবুব লীলেন এর ছবি

শিরোনাম দেখে ভাবলাম এই বোধহয় একটা নারীমুক্ত ইয়োগা থিওরি
কিন্তু খুলে দেখি ভেতরে নারীই আছে

তবে প্রথম ছবিটা নারী না পোলা ঠিক বোঝা গেলো না

কীর্তিনাশা এর ছবি

যোগ ব্যায়াম কবে যে শুরু করবো মন খারাপ

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

আপনার এই পোস্টগুলো খুব কাজের। যোগ ব্যায়ামের এই আসনটা একটু ডিফিকাল্ট। পুরা মেরুদন্ড বরাবর চাপ পড়ে। নিঃশ্বাস নিতেও ঝামেলা হয়। এখন অবশ্য মেদ-ভুঁড়ি-কি-করির কারণে আরো ডিফিকাল্ট।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

রণদীপম বসু এর ছবি

বেশি চাপ দিয়ে জোর করে করতে যাবেন না। যতটুকু সহজভাবে বাঁকানো যায়, ততটুকুই আগে কিছুদিন চর্চা করুন। করতে করতে একসময় দেখবেন যে হয়ে যাচ্ছে।
হচ্ছে না হচ্ছে না ভাবার কিছু নেই। যতটুকু হচ্ছে, ততটুকুই সই। শরীর তার নিজের গতিতে এমনিতেই আপনাকে জায়গামতো নিয়ে যাবে ধীরে ধীরে। শুধু অভ্যাসটা নিয়মিত করার চেষ্টা করুন। এখন না হয় ১৫ থেকে ৩০মিঃ সময়ই প্রতিদিন শরীরকে দিন। শরীর আরো অনেক বেশি প্রতিদান দেবে আপনাকে।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।