| হঠাৎ হুক্কা-হুয়া রব ছাড়িয়া নিজের পরিচয় প্রকাশ করিলো...!

রণদীপম বসু এর ছবি
লিখেছেন রণদীপম বসু (তারিখ: সোম, ১২/১০/২০০৯ - ১২:২৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

...
প্রশাসনে সংখ্যালঘুদের ব্যাপক মূল্যায়ন’। একটি জাতীয় দৈনিকের প্রথম পৃষ্ঠায় বেশ বড় হরফে এই শিরোনামের রিপোর্টটি পড়ে হোঁচট খেলাম প্রথমেই। এরপর অনেকগুলো প্রশ্ন মনে উঁকি দিতে থাকলো। তবে সবার আগে যে প্রশ্নটি এলো তা হলো- সংবাদপত্র কেন ?

সংবাদপত্র কেন ? আদৌ কি আমাদের সংবাদপত্রের প্রয়োজন আছে ? এই যুগে এসে এরকম অদ্ভুত প্রশ্নে যে-কেউ বিস্মিত হতেই পারেন। তাতে করে প্রশ্নের গুরুত্ব হারিয়ে যাবে না। প্রশ্ন তার অবস্থানে ঠিকই থেকে যাবে। হযতো একটু ইনিয়ে বিনিয়ে এই প্রশ্নগুলোই অন্যভাবে করা হবে- সংবাদপত্র আমাদেরকে কী দেয় ? এতে হয়তো কেউ কেউ বিরক্ত হবেন- এটা কোন নতুন প্রশ্ন হলো ! তবু পুরনো প্রশ্নই কখনো কখনো নতুন করে ছুঁড়তে হয় বৈ কি। সত্যি করে বলুন তো, সংবাদপত্র আমাদেরকে আসলে কী দেয় ? কেউ হয়তো বলবেন, কেন, সমসাময়িক উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলি আমাদের দৃষ্টিগ্রাহ্যতায় এনে দেয়। কেউ বলবেন বিভিন্ন তথ্য উপাত্তের যোগান দেয। কেউ বলবেন যে আমাদের সংস্কৃতিকে তুলে ধরে। কেউ বলবেন আনন্দ দেয় বিনোদন দেয়, কেউ বলবেন রাষ্ট্র ও সমাজের নানান অসংগতি অনাচার তুলে ধরে অন্যায় ও অবিচারের প্রতিবাদ করে। আবার কেউ কেউ হয়তো বলবেন আলু দেয়, বাঁশ দেয়, কাঁচকলা দেয় ইত্যাদি ইত্যাদি। কেউ আবার ফোঁড়ন কাটতে পারেন- বিজ্ঞাপনও দেয়। সবার কথাই সত্যি। সংবাদপত্র আমাদেরকে এ সবই দিতে পারে এবং দেয়ও। তবে দেয়ার প্রক্রিয়া, বিষয় আর উদ্দেশ্যের ভিন্নতার কারণে উপস্থাপন বৈগুন্যে যা দেয়া হয় তা কি আর তা-ই থাকে ? এসব ভিন্নতার মাধ্যমেই পাঠকের কাছে প্রতিটা সংবাদপত্রের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যও নির্দিষ্ট হয়ে যায়। সচেতন পাঠক মাত্রেই চোখ বন্ধ করে বলে দিতে পারেন ওটা বিনোদন পত্রিকা, ওটা অপরাধ পত্রিকা, ওটা সাহিত্য পত্রিকা, ওটা কৌতুক পত্রিকা, ওটা চিন্তাজীবী পত্রিকা, ওটা ফালতু পত্রিকা, ওটা কাজের পত্রিকা, ওটা তদবিরি বা দলীয় পত্রিকা এসব। এক্ষেত্রে আমাদের জাতীয় দৈনিক পত্রিকাগুলোর যে কৃতিত্বটা স্বীকার করতে হবে তা হলো, সব ধরনের বিষয় বা বিষয় বৈচিত্র্যকে ধারণ করে একই অঙ্গে এই পত্রিকাগুলো এতো রূপের মিশ্রন ঘটিয়েছে যে, একজন সাধারণ নাগরিককে আর ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ের পত্রিকা না রাখলেও চলে। একটি দৈনিক থেকেই সব ধরনের টেস্ট চেখে নেয়া সম্ভব। খবর, তথ্য, বিনোদন, সাহিত্য, মতামত ইত্যাদি হরেকরকম বিষয়ে পাঠকরুচির সমন্বয় ও সমাবেশ ঘটাতে আজকাল দৈনিকগুলোর এতো আয়োজন দেখে অনেকেই হয়তো মুগ্ধ-বিস্ময়ে ভাবতেও পারেন, আহা, পাঠক-সন্তুষ্টির জন্য এরা কতো কিছুই না করছে ! পারলে জানটাও দিয়ে দেয় আর কি ! আসলেই কি তা-ই ? আমাদের অধিকাংশ দৈনিকের জন্মেতিহাস তো তা বলে না।

জন্মেতিহাস জেনে তারপর পত্রিকা পড়তে হবে এমন দায় সাধারণ পাঠকের নেই বা থাকেও না। কিন্তু অসংখ্য অপরাধকর্মের মাধ্যমে রাতারাতি আঙুল ফুলে কলাগাছ এবং তারপরে বটগাছে পরিণত হয়ে সেসব অপরাধ ধামাচাপা দিতে অন্যায় প্রভাব বিস্তার করার লক্ষ্য নিয়ে যারা পত্রিকা বের করেন, তারা পত্রিকার মাধ্যমে সমাজসেবা করবেন বা পাবলিককে জ্ঞানী গুণী সভ্য বানিয়ে তোলার মহৎ কর্মে ব্রতী হবেন এমনধারা চিন্তা করে কেউ বোকার স্বর্গে বাস করতে চাইলে করুন। তবে পত্রিকা মালিকের স্বার্থের এক কানাও ক্ষতি হয়েছে এ ধরনের কোন ভালো উদ্যোগ গ্রহণ বা আয়োজন করার নজির কোন পত্রিকা কি আজো সৃষ্টি করতে পেরেছে ? কিন্তু এদের ভেতরের উদ্দেশ্য তো বাইরে থেকে নিরীহ পাঠকের বোঝার কোন উপায় নেই। ফলে পাঠকের বিভ্রান্তি কাটারও কোন সুযোগ থাকে না যে, কোন কোন পত্রিকা কী কৌশলে তাদের হীন উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য কিভাবে পাঠকমনে ফের সাম্প্রদায়িকতা ছড়ানোর স্লো-পয়জনিং এর মতো হীন কর্মে নিয়োজিত রয়েছে। তার একটি নমুনা হলো শুরুতেই উল্লেখ করা ‘প্রশাসনে সংখ্যালঘুদের ব্যাপক মূল্যায়ন’ শীর্ষক রিপোর্টটি। ১১ অক্টোবর ২০০৯ তারিখের দৈনিক ‘আমার দেশ’ পত্রিকায় প্রতিবেদক কাদের গনি চৌধুরীকৃত রিপোর্টটি পড়লে মনে হবে বাংলাদেশে আদতে কোন মানুষ নেই, আছে মুসলমান ও সংখ্যালঘু। আর সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যেও কোন বাঙালি নেই, আছে সেই মুসলমান ও সংখ্যালঘুই। এরকম জঘন্য সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন রিপোর্টটির উল্লেখযোগ্য অংশ এরকম-

‘জনপ্রশাসনের পদোন্নতিতে এবার সংখ্যালঘুদের ব্যাপক মূল্যায়ন করা হয়েছে। যুগ্ম সচিব পদে এবার নজিরবিহীনভাবে ৭৯ শতাংশ সংখ্যালঘু সরকারি কর্মকর্তা পদোন্নতি পেয়েছেন। আর মুসলমানরা পেয়েছেন মাত্র ৩৯ শতাংশ।
সংস্থাপন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, প্রশাসনের ৮৪ ব্যাচের ১২০ জন কর্মকর্তা এবার যুগ্ম সচিব হিসেবে পদোন্নতি পান। অনেকে সুপারসিডেড হওয়ায় পদোন্নতি তালিকায় সর্বশেষ স্থান পাওয়া কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম লস্কর-এর সিরিয়াল নম্বর ২৬৭। এ ২৬৭ জন কর্মকর্তার মধ্যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৩৮ জন রয়েছেন। এ ৩৮ জনের মধ্যে ৩০ জনই এবার যুগ্ম সচিব হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পদোন্নতির হার ৭৯ শতাংশ। অপরদিকে ২২৯ জন মুসলমান কর্মকর্তার মধ্যে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে ৯০ জনকে। বাদ পড়েছেন ১৩৯ জন। মুসলমান কর্মকর্তাদের পদোন্নতির হার মাত্র ৩৯ শতাংশ। এটি পদোন্নতি পাওয়া শেষ কর্মকর্তার সিরিয়াল হিসাব করে বের করা হয়েছে।
যুগ্ম সচিব হিসেবে পদোন্নতি ফিটলিস্টে যেসব কর্মকর্তার নাম রয়েছে তা হিসাব করলে মুসলমান কর্মকর্তাদের পদোন্নতির হার আরও কমে যাবে। শুধু তা-ই নয়, যুগ্ম সচিব হিসেবে অন্যান্য ক্যাডারদের আরও ১০ সংখ্যালঘু কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে অন্যান্য ক্যাডারের মাত্র ৩৩ জন মুসলমান কর্মকর্তা পদোন্নতি পেয়েছেন।

যুগ্ম সচিব হিসেবে পদোন্নতির জন্য তৈরি ফিটলিস্ট বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এ লিস্টের প্রথম ১০০ জনের মধ্যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ১২ জন কর্মকর্তা রয়েছেন। তাদের সবাইকে এবার পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। প্রথম ১০০ জনে সুপারসিডেড হয়েছেন ৬১ জন। তারা সবাই মুসলমান। এমনকি পদোন্নতি তালিকায় একনম্বরে থেকেও সুপারসিডেড হলেন এসএম মফিদুল ইসলাম। অত্যন্ত মেধাবী এ সরকারী কর্মকর্তা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন এবং মুখে দাড়ি আছে বলে তাকে জামায়াত সমর্থক আমলা আখ্যা দিয়ে পদোন্নতিবঞ্চিত করা হয়। পদোন্নতির ফিটলিস্ট বিশ্লেষণে আরও দেখা যায়, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একজনকে পদোন্নতি দেয়ার পর তার পরের সিরিয়ালে যেসব মুসলমান কর্মকর্তা রয়েছেন তাদের বাদ দেয়া হয়, আবার পেছনে গিয়ে যেখানে সংখ্যালঘু কর্মকর্তা রয়েছেন তাকে বা তাদের পদোন্নতি দিয়ে পরবর্তী মুসলমান কর্মকর্তাদের নাম বাদ দেয়া হয়।’.......

...‘সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের যে ৮ কর্মকর্তা যুগ্ম সচিব হিসেবে পদোন্নতি পাননি এদের মধ্যে ২ জন বর্তমানে বিদেশে অবস্থান করছেন, ২ জনের পদোন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় মার্কস ছিল না এবং বাকি ৪ জনকে বিএনপিপন্থী হিসেবে চিহ্ণিত করে পদোন্নতি দেয়া হয়নি বলে সূত্র জানায়।
অতিরিক্ত সচিব হিসেবে ৭ সেপ্টেম্বর পদোন্নতি দেয়া হয় ৬০ জনকে। তাদের মধ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের ১৩ জন পদোন্নতি পান। বর্তমানে জনপ্রশাসনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৬৮ জন কর্মকর্তা যুগ্ম সচিব ও একই পদমর্যাদায় কর্মরত আছেন। উপসচিব হিসেবে পদোন্নতি দেয়া হয় ২৭১ জনকে। তাদের মধ্যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কর্মকর্তা রয়েছেন ৫০ জন। সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে জনপ্রশাসনে কর্মরত আছেন ৯৬ জন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কর্মকর্তা।
সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের এক হিসাবে দেখা যায়, বর্তমানে জনপ্রশাসনে ৪ হাজার ৫৩০ জন কর্মকর্তা কর্মরত। তাদের মধ্যে ৪ হাজার ১১১ জন মুসলমান এবং ৪১৯ জন সংখ্যালঘু। ৬৩ জন সচিবের মধ্যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের রয়েছেন ৩ জন। ১৮৫ জন অতিরিক্ত সচিবের মধ্যে ২২ জন সংখ্যালঘু, ৪৩৩ জন যুগ্ম সচিবের মধ্যে ৬৮ জন, ১ হাজার ৩৮৬ জন উপসচিবের মধ্যে ১৭০ জন, ১ হাজার ৪৮৮ জন সিনিয়র সহকারী সচিবের মধ্যে ৯৬ জন এবং ৯৭৫ জন সহকারী সচিবের মধ্যে ৬০ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কর্মকর্তা রয়েছেন।

রিপোর্টটি পড়ার পর প্রথমেই যে প্রশ্নটা উঁকি দিলো তা হলো, এই স্বাধীন দেশে খুব নিকৃষ্ট সাম্প্রদায়িকতা দোষে দুষ্ট এরকম একটা লেখা ছাপানোর অভিরুচি কোন পত্রিকার থাকতে পারে কি না ? অথচ এই ‘আমার দেশ’ পত্রিকার প্রথম পাতার লোগোর সাথে যে শ্লোগানটি মুদ্রিত হয়, তা হলো ‘স্বাধীনতার কথা বলে’। স্বাধীনতার কথা বলার চমৎকার নমুনা বৈ কি ! এরপরই যে প্রশ্নটি এলো, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে কোন নাগরিককে কেউ সংখ্যালঘু চিহ্ণিত করে কটাক্ষ করার অধিকার সংরক্ষণ করেন কিনা ? এই রাষ্ট্রের নাগরিক যোগ্যতা যাচাই ও মূল্যায়নের ক্ষেত্রে কি কোন নাগরিককে বাঙালি বা বাংলাদেশি হতে হয়, না কি মুসলমান হতে হয় ? এই গোটা রিপোর্টটিতে কোথাও সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে যোগ্যতার মাপকাঠি কী বা দায়িত্ব পালনে অযোগ্য কেউ মূল্যায়িত হলেন কিনা তা সুস্পষ্টভাবে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। কেবল রাষ্ট্রীয়ভাবে ধর্মীয় সংখ্যালঘুত্বকেই মূল্যায়নের মানদণ্ড হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে এবং এক্ষেত্রে সংখ্যালঘুত্বকেই কটাক্ষ বা অপমান করা হয়েছে। ব্যক্তির যোগ্যতা যাচাইয়ের মানদণ্ড কি সংখ্যালঘুত্বের অনুপাত ? এই রিপোর্টে রীতিমতো সংখ্যালঘু কর্মকর্তাদের নামের তালিকাও দেয়া হয়েছে। ওখানে একজন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীর নাম রয়েছে। প্রতিবেদকের যে হীন মানসিকতা প্রতিবেদনে প্রতিফলিত হয়েছে, তাতে তাঁর দৃষ্টিতে মুসলমান কর্মকর্তাদের শতকরা ৩৯ জনের বিপরীতে বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদেরকে তো শতকরা ১০০ ভাগ পদোন্নতি দেয়া হয়ে গেছে। তিনি তো বহুভাবে বিভিন্ন অংক কষে গণিতে তাঁর দক্ষতা দেখিয়ে দিয়েছেন। আনুপাতিক হার সমান করে তিনি এটাও দেখিয়ে দিতে পারতেন ক’জন হিন্দু, ক’জন বৌদ্ধ বা অন্যান্য ধর্মাবলম্বী কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয়া দরকার ছিলো। সাথে সাথে বিগত বিএনপি-জামায়াত সরকার আমলের এরকম একটা লিস্টি এনে তুলনামূলক চিত্র হাজির করতে পারতেন এই বলে যে, দেখেন সেই সরকারের আমলে পদোন্নতির অনুপাত কতো যত্ন করে ঠিক রাখা হয়েছিলো। সাংবাদিকতার মতো মহান পেশাটাতেও যে সাম্প্রদায়িকতার মতো জঘন্য নোঙরামি তলে তলে কতো জমা হয়ে যাচ্ছে, এই প্রতিবেদনটা তার অন্যতম উৎকৃষ্ট নমুনা হিসেবে অক্ষয় হয়ে রইলো। এসব নিন্দাযোগ্য হীন প্রবণতাগুলোকে চিহ্ণিত করেই বোধহয় প্রয়াত হুমায়ুন আজাদ তাঁর প্রবচনগুচ্ছের ৬২ নম্বর প্রবচনটি লিখেছিলেন এভাবে- ‘এদেশের মুসলমান এক সময় মুসলমান বাঙালি, তারপর বাঙালি মুসলমান, তারপর বাঙালি হয়েছিলো; এখন আবার তারা বাঙালি থেকে বাঙালি মুসলমান, বাঙালি মুসলমান থেকে মুসলমান বাঙালি, এবং মুসলমান বাঙালি থেকে মুসলমান হচ্ছে। পৌত্রের ঔরষে জন্ম নিচ্ছে পিতামহ।’

সুন্দরের প্রতি সহজাত দুর্বলতার কারণেই আমরা সুন্দর সুন্দর কথা আর বুলি শুনে কতো মুগ্ধ হয়ে পড়ি। আমাদের দৈনিক পত্রিকাগুলোর লোগোর সাথে মুদ্রিত এরকম কতো চমৎকার চমৎকার কথা মুদ্রিত রয়েছে। যেমন ‘প্রথম আলো’- প্রচেষ্টার ১০ বছর, ‘জনকণ্ঠ’- স্বাতন্ত্র্য ও নিরপেক্ষতায় সচেষ্ট, ‘যায় যায় দিন’- পনের কোটি মানুষের জন্য প্রতিদিন, ‘সংবাদ’- প্রকাশনার ৫৯ বছর, ‘ইনকিলাব’- শুধু দেশ ও জনগণের পক্ষে, ‘ভোরের কাগজ’- মুক্ত প্রাণের প্রতিধ্বনি, ‘মানবজমিন’- কারও তাঁবেদারি করে না, ‘ইত্তেফাক’- ৫৬ পেরিয়ে আস্থায় শীর্ষে, ‘যুগান্তর’- সত্যের সন্ধানে নির্ভীক, ‘আমাদের সময়’- নতুন ধারার দৈনিক, ‘নয়াদিগন্ত’(সাতরঙ)- সময়ের সাথে সময়ের আগে, ‘সমকাল’- অসঙ্কোচ প্রকাশের দুরন্ত সাহস এবং ‘আমার দেশ’- স্বাধীনতার কথা বলে, ইত্যাদি।
কিন্তু কোন্ মধু-বুলির আড়ালে কী বিষাক্ত কামড় অপেক্ষা করে আছে, দৈনিক পত্রিকার সাধারণ পাঠক হিসেবে আমাদের যাচাই করার কোন উপায় জানা আছে কি ? আমাদেরকে হঠাৎ করে হুক্কা-হুয়া ডাক শুনেই যেমন কোন কিছুর উপস্থিতির প্রমাণ জানতে হয়, তেমনি পত্রিকায় প্রকাশিত এইরকম বিশেষ বিশেষ প্রতিবেদন থেকেই বুঝে নিতে হয় পত্রিকাটির লক্ষ্য, চিন্তাধারা বা দৃষ্টিভঙ্গি কী। ‘আমার দেশ’ পত্রিকাটির প্রিন্টার্স লাইনে ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে নাম রয়েছে মাহমুদুর রহমান। সম্পাদকের অনুমতি বা নির্দেশ ছাড়া তো কোন বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন প্রতিবেদন পত্রিকায় প্রকাশ করার কথা নয়। উল্লেখিত প্রতিবেদনটিও যে সম্পাদকের স্পেশাল নির্দেশ ছাড়া তৈরি হয় নি তা কোন নির্বোধও না বুঝার কথা নয়। ‘আমার দেশ’ পত্রিকাটির প্রকৃত উদ্দেশ্য কী, এটা নিশ্চয় একজন পাঠক ও রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে জানার অধিকার আমরা সংরক্ষণ করি। আর এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের ভূমিকাই বা কী, তা কি কেউ বলবে ?

[অতিরিক্ত সংযুক্তি: এটা আঁৎকে ওঠার মতো খবর কিনা বুঝতে পারছি না। ১১ অক্টোবর ২০০৯ এর ‘প্রথম আলো’র খবরটায় বলা হচ্ছে যে, রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এহতেশাম উল হক-এর জঙ্গীবাদের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে তাৎক্ষণিকভাবে রংপুর ৬৬ ডিভিশনের জিওসি হিসেবে বদলি করা হয়েছে। ২০০১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সিলেটে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টাকারী জঙ্গি মাসুদ আহমেদ শাকিল ওরফে সুমনকে জিজ্ঞাসাবাদে রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিবের নামে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার বিষয় উঠে এসেছে। মজার বিষয় হলো রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান তাঁকে গত ২৫ মার্চ ২০০৯ তারিখে মেজর জেনারেল হিসেবে র‌্যাঙ্ক পরিয়ে দিয়েছিলেন। সেলুকাস আসলেই বিচিত্র !]
...


মন্তব্য

অর্জুন মান্না [অতিথি] এর ছবি

আঁৎকে ওঠার মত খবরই এটা। মে. জে. এহতেশামকে আজ রাতেই রংপুরে ট্রান্সফার করা হয়েছে।

এস, কে, নির্ভানা এর ছবি

পেপারে এই ধরনের সাম্প্রদায়ীক রিপোর্ট করা একটা বড় অপরাধ । এদের প্রতিরোধের ব্যপারে আইনী সাহায্য নেওয়া যায় কিনা ভাবে দেখতে হবে ।

নির্ভানা

অনিকেত এর ছবি

আসলেই আঁতকে ওঠার মত খবর।
একই সাথে এইটাও নতুন করে দেখার সময়---'এদের' হাত কতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে! প্রথমালু নাকি গত চার বছর ধরে এইটার উপর 'কাজ' করছে।এইরকম একটা খবর তারা চার বছর ধরে কেন চেপে রেখেছিল সেটা বোধগম্য নয়। যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণের অভাব?? খুব সম্ভবত। যাই হোক, আরো শুনলাম প্রথমালু নাকি তিন তিনবার এহতে'চাম' এর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিল এই বিষয়ে। তিনি তাদের কোন সুযোগ দেন নাই।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

রণদা, কাউকে না কাউকে এসব নিয়ে ব্লগে আলোচনা শুরু করতে হবে। আপনি করলেন বলেই আপনাকে অভিনন্দন। পত্রিকার রিপোর্ট নিয়ে আর কী বলবো বলেন। আপনি যে পত্রিকার সূত্র দিয়েছেন সে পত্রিকা সচারচর খোলা হয়না। তবে আঁৎকে ওঠার যে খবরটা সেটা পড়ে বিস্মিত হয়েছিলাম। এরা এত দূরে আসে কিভাবে?

মুক্তপাখী এর ছবি

সংখ্যালঘুরা যখন পদোন্নতি পায়না তখন এই রিপোর্ট করলে খারাপ লাগেনা...আবার উল্টোটা হলে খারাপ লাগে...এ কেমন কথা?

সিরাত এর ছবি

'আমার দেশ' না বিএনপির পত্রিকা? ওরা তো মনে হয় ওদের টার্গেট ডেমোগ্রাফির জন্য লিখেছে।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

হ্যা , আমারদেশ বিএনপির পত্রিকা ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

সিরাত এর ছবি

সেটাই। তাইলে আর কথা বাড়ানোর কি দরকার? চোখ টিপি

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

আমারদেশ, নয়া দিগন্ত , ইনকিলাবে সাম্প্রদায়িক রিপোর্টই স্বাভাবিক । এতে বিস্মিত হবার কিছুই নেই রনদা ।বরং আপনি যদি সাতদিনের আমারদেশ -নয়াদিগন্ত এর কলামগুলো দেখেন তবে সেখানে নিয়মিত লেখক হিসেবে পাবেন কথিত প্রগতিশী্ল বুদ্ধিজী্বিদের ।

চরম প্রতিক্রিয়াশী্ল পত্রিকায় কথিত প্রগতিশী্ল বুদ্ধিজী্বিদের কলাম বিক্রি করা নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

সিরাত এর ছবি

আমি জিনিসটাকে একটু অন্যভাবে দেখি।

বাংলাদেশে ষোল কোটি মানুষের একেকজন একেক মত অনুসরণ করে। এসব ব্যক্তি মিলে গঠন করে একটি সেগমেন্ট। একেকটা পেপার একেক সেগমেন্টকে সমর্থন করে।

এ জিনিসটাকে গুনগতভাবে দেখাই যায়। রণদা দেখেছেনও। ওনার অবশ্যই সেই অধিকার আছে। তাছাড়া, আমরা প্রত্যেকেই হয়তো ব্রডলি কোন না কোন সেগমেন্টে পড়ি।

আমি নিজে অতটি দেখি না। মানে, লেখার ভিত্তিতে 'ভাল-মন্দ' যাচাই বাছাই করি না। ঠেকায় পড়লে করতে হবে ঠিকই, ঠেকায় না পড়া পর্যন্ত করি না আরকি।

হাসি

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

নিম গাছে কি আমের সন্ধান চলে ?

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

অম্লান অভি এর ছবি

কথিত প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবিরা তাদের চাকা ঘুড়িয়ে দেয় অর্থ প্রাপ্তির দরজায়.....তাই অমন লেখা পড়তেই হবে অমন পত্রিকার পাতাতেও......সহমর্মীদের উচ্চারণেও থাকবে একক সত্তার ঝনঝনানি.....মনন আর মেধায় কিছু মানুষ শুধু মানষ হয়ে মানুষের মাঝে থাকতে চায়। মন্দিরে হিন্দু আর মসজিদে মুসলিম হয় মাত্র....এদের সংখ্যা কম কম শুধুই কম।

মরণ রে তুহু মম শ্যাম সমান.....

অতিথি লেখক এর ছবি

মানিক ভাই যতদূর জানি আপনিও একজন সাংবাদিক, আপনার পত্রিকা কোন দলের বলবেন কি?
সত্য কি জানেন, বাংলাদেশের সব পত্রিকাই কোন না কোন দলের লেজুড় বৃত্তি। সুতরাং পত্রিকা কার সেটা নিয়ে না ভেবে রিপোর্টটা নিয়েই কথা বলা ভালো না। যে রিপোর্টা করছে সে তো আপনার মতই একজন সাংবাদিক (না কি সাংঘাতিক!)।

নিজের পেশার প্রতি তাঁর কতটুকু শ্রদ্ধা আছে, বলতে পারেন?

ধন্যবাদ।
দলছুট।

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার লেখাটা ভালো লাগল। ধন্যবাদ সুন্দর লেখার জন্য।

প্রথমে বলি মেজর জেনারেল এহতেশাম উল হকের বাড়ি কিশোরগঞ্জে আর আমাদের রাষ্ট্রপতির বাড়িও ঐ জেলায়। গোয়েন্দা রিপোর্ট ছাড়া কী করে তাকে ঐ পদে আসীন করা হল এবং পদোন্নতি দেয়া হল, বুঝতে কী সমস্যা হওয়ার কথা?

এইবার আসি "আমার দেশ" এর কথায়। যার জন্মটাই দূর্নীতির টাকায় তার কাছ থেকে ভালো কিছু আশা করা কী ঠিক? মালিক পক্ষ যেখানে একটা বিশেষ দলের তেলামীতে ব্যস্ত বা বিশেষ দলের আশীর্বাদে পুষ্ট, তাদের কাছ থেকে আপনি কী পেতে পারেন?

বাংলাদেশের কোন পত্রিকাটা দলীয় লেবাশের বাইরে বলতে পারেন? পত্রিকার মালিকেরা ব্যবসা করার মানসিকতায় বিনিয়োগ করে আর বিনিয়োগ থেকে মুনাফা নিশ্চিত করার জন্য দলীয় গুণকীর্তন করে। বাংলাদেশের সর্বাদিক প্রকাশিত দৈনিক "প্রথম আলো" কী এর বাইরে?" নির্বাচনের সময় একটা বিশেষ দলকে নির্বাচনী বৈতরনী পাড় করার জন্য সে কী নির্লজ্জ সমর্থন। যে দোষের জন্য বিগত সরকারের গায়ের চামড়া তুলা রিপোর্ট লিখেছিল এখন কী সেই গুলি হয় না? হয় কিছু আসে,কিছুটা আড়ালে থেকে যায়।

কোথায় হাসিনার দশ টাকা কেজি চাল? কোথায় নিরপেক্ষ প্রশাসন? কোথায় গণতন্ত্র? মানুষের জান মালের নিরাপত্তা নাই নিজেদের নিরাপত্তার জন্য সংসদে আইন হয়, এই দিন বদল কী মানুষ চেয়েছিল? এই নিয়ে তো রিপোর্ট লিখতে দেখি না। কেন সামরিক বাহিনীতে কিছু কর্মকর্তার চাকুরীর মেয়াদ থাকতেও অবসরে যেতে হলো, সেখানে কী সরকারের সাম্প্রদায়িকতা ছিল না?

প্রশাসনের রদবদল এটা নূতন সরকারের ভেলকী বাজী, নিজেদের পছন্দের লোককে সামনে টেনে আনার কৌশল। এটা বাংলাদেশের সব সরকার করে আসছে। পাঁচ বছরেও যাদের পদোন্নতি হয় না, তাঁরাই সরকার পরিবর্তনের কয়েক মাসের মাথায় পদোন্নতি পেয়ে যায়, কেনো? বলতে পারেন? কোন যোগ্যতা বলে?

আসলে তেলবাজি আমাদের যোগ্যতা, দলবাজি আমাদের গুণ। রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি তাদের অতিরিক্ত যোগ্যতা। আমাদের দেশের সরকার গুলি তেল খাওয়াতে ওস্তাদ, দলবাজিকে সব সময় উৎসাহিত করা তাদের স্বভাব। তাদের জন্যই আজ আমাদের এই অবস্থা। রাজনীতিবিদরা যতদিন শুদ্ধ না হবে, ততদিন অনিয়মের পদোন্নতি থাকবেই, আর "আমার দেশের" রিপোর্টারের মত কান্ডজ্ঞানহীন রিপোর্ট বারবার আমাদের দেখতে হবে, পড়তে হবে। আবার কেউ হয়তো পাঁছ বছর পর আপনার মত এই রকম সচলায়তনে লেখা দিবে। এটা চলতে থাকবে ঘূর্ণিপাকে। যেটা আমাদের কাম্য নয়।
ধন্যবাদ।
দলছুট।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

দলছুটের মন্তব্যে উত্তম জাঝা!

কেন সামরিক বাহিনীতে কিছু কর্মকর্তার চাকুরীর মেয়াদ থাকতেও অবসরে যেতে হলো, সেখানে কী সরকারের সাম্প্রদায়িকতা ছিল না?

একটু বিস্তারিত বলবেন কি ?

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

অতিথি লেখক এর ছবি

মানিক ভাই সেটা আমার চেয়ে আপনি অনেক ভালো জানেন। আপনি একজন জাদরেল সাংবাদিক এবং বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনেক গবেষনামূলক লেখা লিখেছেন,যার জন্য আমি আপনাকে অনেক পছন্দ করি এবং আপনার লেখা আমার অনেক প্রিয়। ব্যপারটা আমি লিখতে চাইনা কারণ যাদের গেছে তাদেরকে আমিও পছন্দ করিনা। কিন্তু প্রশাসনের নিয়ম কানুন কী পছন্দ আর অপছন্দ মেনে চলা উচিত?নিয়ম কী সবার জন্য সমান হওয়া উচিত না।

আমি সাংবাদিকতার মহান পেশাকেও অনেক শ্রদ্ধা করি, কিন্তু এই মহান পেশায় জড়িত থেকে একজন সাংবাদিক কি করে কান্দজ্ঞানহীন, দলীয় তোষামোদে ভরা, লেজুড়বৃত্তি প্রতিবেদন তৈরী করে সেটা ভাবতে গেলেই আমার সাংবাদিকদের প্রতি মাঝে মাঝে অশ্রদ্ধা নেমে আসে। তাইতো বন্ধুদের আড্ডায় মাঝে মাঝে দুষ্টুমী করে আমরা বলে ফেলি "সাংঘাতিক"।

প্রতিটি মানুষ কোন না কোন দলের সমর্থক এবং এটা তার লেখায়, কথায় বোঝা যায়। পত্রিকার মালিক বিএনপি হলে খারাপ হবে বা বিএনপি করলে ভালো রিপোর্ট করা যাবে না, সাংবাদিকতার পেশায় কোথাও কী লেখা আছে? পেশাটাকে শ্রদ্ধা করলে পত্রিকা যে দলেরই হোক রিপোর্ট বাস্তব সম্মত ও গ্রহণযোগ্য হতে বাধ্য।

আপনারা সাংবাদিকরা আগে পেশার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন, তাহলে মালিক পক্ষও আপনাদের দিয়ে নির্লজ্জ রিপোর্ট করাতে সাহস পাবে না। মালিকের দোষ কি, তারা টাকা কামানোর জন্য পত্রিকা বের করে, তারা চাইবে যে করে হোক মুনাফা করতে, আপনারা সাংবাদিকরা যদি টাকার কাছে বিক্রি না হোন তাহলে কী করে এমন, সাম্প্রদায়িক লেখা বের হয়, বলেন?

সাংবাদিকদের নীতি কোথায় আজ বলতে পারেন? আপনাদের নীতিতো টাকায় বিক্রি হয়। আপনি বললেন "নয়াদিগন্ত" ইনকিলাব, আর আমারদেশ" পত্রিকায় কারা লিখে? ঐসব পত্রিকায় যারা লিখে তারা খারাপ আর আপনাদের পত্রিকায় যারা লিখে তারা ভালো। কিন্তু আপনারা সবাইতো সাংবাদিক, সাহিত্যিক, কলামিষ্ট। নাকি ভুল বললাম?

আপনারা কেনো পরিবর্তিত হোন না? কেনো নীতি ও পেশার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন না। আমরা সাধারণ জনগণতো আপনারাদের লেখা পড়েই ভালো মন্দ বিচার করি, আপনারা দোয়া করে নিরপেক্ষ হন, আমরা জনগণ মুক্তি পাব।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
দলছুট।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

ধন্যবাদ দলছুট । আলাপের প্রয়োজনে আমাকে ইমেইল করতে পারেন

আরেকটি কথা , এখানে আমি একজন সচল ব্লগার ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

শেহাব [অতিথি] এর ছবি

ধরে মাইর দেয়া উচিত

অতিথি এর ছবি

My sincere apology for not writing in Bangla.

Thanks Rono da post bring this issue. I really don't understand how these very same people/newspaper express their pleasure to see a minority president BARACK OBAMA assuming in oval office. These are the very same people, right? Then how come they are/were so supportive while the rights are being restored for a minority. Is it we just telling other thinking our own benefit but we are not LIBERAL enough to practice the same thing in our home.

Do the reporter really think majority means more muscle power. Then don't he feel shy when he express his agony and condolence for the victims in Palestine? if power is the reason then Isreal have superior power over them, isnt it?

Then do they do the right thing? do they really? of course NOT. Because every human being should be recognized as per his/her work not by his race.

If he don't feel so then how about our own vi-brother staying abroad receive LATHI/GHUTA for being muslim and minority. Then it would be perfect. Because you will receive the same what you offer to other people. Nature has its own law. remember that.

How come Muslim vs minority. What an offensive word! If you say Muslim then please spell out others like Hindu, Buddhist, Christian. If you say Minority then say Majority in versus.

One last thing, I cant remember I have seen a report telling NO minority has got promotion compare to 100% promotion of muslim. How fare our country is! Sometimes really think us twice what mentally we really possess.

হলুদ-মডু এর ছবি

সচলায়তনে -

# ইউনিজয় পদ্ধতিতে বাংলা টাইপ করতে Ctl+Alt+U চাপুন
# বিজয় পদ্ধতিতে বাংলা টাইপ করতে Ctl+Alt+B চাপুন
# সামহোয়্যার-ইন ফোনেটিক পদ্ধতিতে বাংলা টাইপ করতে Ctl+Alt+P চাপুন
# প্রভাত পদ্ধতিতে বাংলা টাইপ করতে Ctl+Alt+V চাপুন

ধন্যবাদ

আলমগীর এর ছবি

রণদা
আমারদেশ কী ধরনের খবর ছাপে তা জানা থাকার কথা। রিপোর্টের ভাষা-ভঙ্গী আপত্তিকর। কিন্তু যেসব তথ্য দিচ্ছে তা কি মিথ্যা? রিপোর্টের বিশ্লষণে আপনার প্রশ্ন যথার্থ যে বিএনপি আমলে 'সংখ্যালঘু'দের পদোন্নতির হার কী ছিল বা আদৌ কোন পদোন্নতি পেয়েছে কিনা। অথবা, যারা পদোন্নতি পেয়েছেন তারা পাবার যোগ্য কিনা- এটাও রিপোর্টে অনুপস্থিত। কিন্তু, কাউকে কাউকে যে সুপারসিডেড করা হয়েছে- সেটা তো সত্য নাকি?

বিএপি বাংলা নাম দেখে বেছে বেছে যেমন বাদ দেয়, আলীগ তেমনি ক্ষেত্র বিশেষে বাড়তি করে। দুইটাই দেশের জন্য সমান খারাপ। দূর্গাদাস ভট্টাচার্যকে যখন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য করা হয় তখন তার জীবনী পড়ে হাসতে হয়েছে।

তবু এরকম সাম্প্রদায়িক রিপোর্টিংএর মধ্যেও যে ভাল কিছু তারা দেয় না এমন না।
ধরুন, প্রথমআলোর মতো পত্রিকা ল্যাম্পপোস্টকে জঙ্গী সংগঠন বানিয়ে দিলো। বিটিআরসির মতো প্রতিষ্ঠানে চারজন ভারতীয়কে নিয়োগ দিলো সরকার যেটা তথাকথিক প্রথম শ্রেণীর সংবাদপত্রগুলো চেপে গেল। টিপাইবাধ, গ্যাস, পিণাক ইত্যাদি নিয়ে সরকারের অঙ্গচোষণ করল। স্কুলপড়ুয়া একটা মেয়েকে ধর্ষণ করে ছাত্রলীগের গুণ্ডারা সে কুকীর্তি ভিডিও করে তা বিক্রী করে দিলো দোকানে দোকানে।
এসব খবর কেবল আমারদেশ গোছের সাম্প্রদায়িক পত্রিকায় ছাপা হয়।

মূলধারার পত্রিকারা আধিপত্যবাদের তোষণ করে। আর আমারদেশ গোছের পত্রিকা করে সাম্প্রদায়িকতার। বিপদ দুই দিকেই।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

আলমগীরের মন্তব্যে উত্তম জাঝা!

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

আপনার জন্য রইল উত্তম জাঝা!

আলমগীর এর ছবি

আমার মন্তব্যের একটা অংশের সাথে আজকের প্রথমআলোর এ খবরটাও থাকা দরকার:

আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানসহ চারজনের বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) উপপরিচালক তারেক হাসান আজ বুধবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এ মামলা করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ২ অক্টোবর আমার দেশ পত্রিকায় ‘ভারতীয় কব্জায় বিটিআরসি: ৫ ভারতীয় নাগরিককে উপদেষ্টা নিয়োগে রাষ্ট্রের গোপন তথ্য পাচার হয়ে যাচ্ছে’ এবং পরদিন ৩ অক্টোবর ‘বিটিআরসির গুরুত্বপূর্ণ পদে ভারতীয় নাগরিক: রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে’ শিরোনামে দুটি খবর প্রকাশিত হয়। অভিযোগে আরও বলা হয়, এই মিথ্যা, বানোয়াট সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে তাঁরা জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে বিটিআরসির সুনাম নষ্ট করেছেন। তাই মানহানির এ মামলা করা হয়েছে বলে মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

তার মানে বিটিআরসিতে ভারতীয় নাগরিকদের চাকরি বিষয়ে খবরটা মিথ্যা।

অতিথি লেখক এর ছবি

--আরিফুল হোসেন

কামড়া কামড়ি করা ছাড়া পত্রিকাগুলো কিছুই করতে পারে না। তাদের প্রত্যেকেরই স্বার্থ আছে, টার্গেট মার্কেট আছে, গুরুনিতম্ব উপরওয়ালাদের চাপ আছে। তাই সত্যের অপালাপ কখোনো হবে রাজনৈতিক ওরিয়েন্টেশনের জন্যে আবার কখোনো হবে কর্পোরেট বেনিয়াবৃত্তির জন্যে। বড় কর্পোরেশনগুলোর চাপও কিন্তু প্রভাবিত করে সংবাদ পরিবেশন এবং এক্সপোজারে। গ্রামীনফোন যখন বিনা নোটিশে কর্মচারী ছাটাই করে মিডিয়া চুপ থাকে। তাদের ভিওআইপি ডাকাতির সময়েও মিডিয়া মেরুদন্ডহীনতার নমুনা দেখিয়েছে। কোন লাভ নাই কারন প্রফিট ম্যাক্সিমাইজেশনের যুগে পন্যই সব। আপনি পন্য বেচতে পারলেন না তো আপনি গেলেন। যেখানে টাকার লেনদেন থাকবে সেখানে কান টানলে মাথা আসার মত আসবে পেশী। পেশীর সাথে আসবে সামাজিক প্রভাব। আমাদের দেশের রাজনীতি তো পেশী/অর্থ/প্রভাব এর সম্পূর্ন প্যাকেজ। সুতরাং যা কিছু বিকোবে সেখানে ধানের শীষ/নৌকা মার্কা লেগে যাবে। কিচ্ছু করার নেই।

ভোগবাদী সমাজে পেটবাদী মানুষ হিসেবে বেচে থাকতে হয়, বা বাধ্য করা হয় আমাদের। এখন সাম্প্রদায়িক আক্রমন শুরু করেছে, আজগুবী খবর পাওয়া যাবে উদ্দেশ্যমুলক প্রোপাগান্ডাকে প্রমান করতে।

মজা লাগে অবশ্য আমাদের বরবাদ প্রজাতির টকশো কেন্দ্রীক বুদ্ধিজীবিদের দেখলে। এদের দেখলে ডারউইন সিদ্ধান্তে আসতেন মানুষ থেকেই বানরের উৎপত্তি।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

চলুক

মজা লাগে অবশ্য আমাদের বরবাদ প্রজাতির টকশো কেন্দ্রীক বুদ্ধিজীবিদের দেখলে। এদের দেখলে ডারউইন সিদ্ধান্তে আসতেন মানুষ থেকেই বানরের উৎপত্তি।

হা হা হা ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

অবাঞ্ছিত এর ছবি

এমন সংকীর্ণতার সাথে আজন্ম পরিচয় থাকলেও ... এমন মানষিকতার মানুষজন হেঁটে চলে বেড়ায় আমাদের মাঝেই ভাবনাটাই রীতিমত ভীতিকর....

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।