দোহাই মিডিয়া, থামলে ভাল লাগে

রেজওয়ান এর ছবি
লিখেছেন রেজওয়ান (তারিখ: রবি, ২২/০৭/২০১২ - ১:২০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

দেশে একসময় সবেধন নীলমণি ছিল সাহেব বিবির বাক্স বিটিভি। সে সময় সেটি মূলত: সরকারের কথা বললেও টিভি নাটক, ইংরেজী সিরিয়াল, ডকুমেন্টারি, কার্টুন ইত্যাদি কিছু বিষয়ে ছিল অপ্রতিদ্বন্দ্বী। এই উপমহাদেশে রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেলের মনোপলি ঘুচায় স্যাটেলাইট টিভি। ৯০ এর দশকের প্রথম দিকে এমটিভিতে বাবা সায়গলের মিউজিক ভিডিও (ঠান্ডা ঠান্ডা পানি) এবং জি নিউজের অনুসন্ধিৎসু খবরের আয়োজন উপমহাদেশের দর্শকদের নতুন যুগের আস্বাদ দেয়। বাংলাদেশ যোগ দেয় একটু পরে। ১৯৯৭ সালে চ্যানেল আই ও এটিএন বাংলার পরীক্ষামূলক সম্প্রচার শুরু হয়। এর পরের ঘটনা তো ইতিহাস।

বাংলাদেশে মনে হয় এখন গোটা বিশেক স্যাটেলাইট টিভির সম্প্রচার হয়।

দেশের স্যাটেলাইট টিভিগুলো একদিকে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যমগুলোর একঘেয়ে ও একপেশে অনুষ্ঠান এর বদলে দর্শকদের নিজেদের পছন্দের কিছু দেখার সুযোগ দিয়েছে। কিন্তু এইসব চ্যানেলের অধিকাংশ নিয়ন্ত্রণ করে কিছু কর্পোরেট হাউজ এবং তাদের পেছনের কিছু রাজনৈতিক দর্শন ও মুনাফালোভী ব্যবসায়ী। বেশীরভাগ চ্যানেলেরই নিজস্ব কোন উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য নেই। এসব অনেক সময় চালানো হয় নিজের ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি দেখানোর জন্যে, আর ব্যবসায়ীক প্রতিদ্বন্দ্বীদের টেক্কা দেবার জন্যে বা তাদের প্রতি কুৎসা রটনার জন্যে। আক্ষেপ হয় দেশে এখনও পৃথক কার্টুন, এডুকেশন বা স্পোর্টস চ্যানেল হল না।

বিটিভির অনুষ্ঠান নিয়ে অনেকের অভিযোগ থাকলেও শাইখ সিরাজের 'মাটি ও মানুষ' কিংবা ফেরদৌসী রহমানের 'এসো গান শিখি' ছিল আপামর জনসাধারণের অনুষ্ঠান এবং খুবই জনপ্রিয়। স্যাটেলাইটের যুগে হাজারো অনুষ্ঠানের ভীড়ে সেরকম উল্লেখ করার মত অনুষ্ঠান খুবই কম। এখনকার অনুষ্ঠানের মধ্যে বেশীরভাগই মধ্যবিত্তদের উপদেশ দেয়ায় ব্যস্ত - কিভাবে গ্ল্যামারযুক্ত জীবন যাপন করবেন, কোথায় যাবেন, কি পড়বেন, কি শুনবেন, কি দেখবেন, ইত্যাদি। আর রয়েছে গান, মডেলিং ইত্যাদি বিভিন্ন প্রতিযোগিতা নিয়ে রমরমা বাণিজ্য। আমার এক আভিজ্ঞতা বলি - খাগড়াছড়িতে গিয়েছিলাম - সেখানে কোন এক টিভি চ্যানেলের গানের প্রতিযোগীতায় এক আদিবাসী বালিকার জন্যে এসএমএস ভোটের জন্যে যে পরিমাণ তদবির, ক্যাম্পেইন, মিছিল ইত্যাদির কথা শুনলাম তাতে মনে হল ব্যাপারটি অসুস্থতার পর্যায়ে গিয়েছে। সেই মেয়েটি জিতেছিল কিনা জানিনা - তবে মানুষের এই আবেগকে পুঁজি করে সেই চ্যানেল আর মোবাইল কোম্পানিগুলো কোটি কোটি টাকা কামিয়ে নিয়েছে নিশ্চয়ই - এই ব্যাপারগুলো কিন্তু সংবাদ হয় না।

আপনি খবরের কাগজ খুলে দেখুন, নানা চটকদার খবরের ভীড়ে গণ্ডগ্রামের সেই ক্ষুদ্রঋণের ভার সইতে না পারা কৃষকের আত্মহত্যার খবর আসে না। মিডিয়া এখন শ্রেণীতোষণে ব্যস্ত। তাদের বিজ্ঞাপনী আয়ের মোটা অংশ আসে মোবাইল কোম্পানী থেকে - কাজেই সেসব কোম্পানী নিয়ে সমালোচনামূলক লেখা কম। অমুক তারকা, তমুক বুদ্ধিজীবী কি বলেছেন, তারা ঈদের দিনে কি করবেন বা খাবেন সেটি নিয়ে ফিচার হয়।

আমরা দেখছি এখন মিডিয়াতে তুচ্ছ সব বিষয়ের গ্ল্যামারাইজেশন, খবর সংগ্রহে অসুস্থ প্রতিযোগিতা। আসামের গৌহাটিতে একটি আদিবাসী মেয়ের উপর চড়াও হল গোটা বিশেক উশৃঙ্খল যুবক। এক টিভি ক্যামেরাম্যান ৩০ মিনিট ধরে ভিডিও ধারণ করল মেয়েটিকে সাহায্য না করে। বিডিআর বিদ্রোহের সময় দেখেছি মিডিয়া কি করে ভুল কবরের পেছনে ছুটেছে। সাগর রুনির হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশের আগে গিয়ে আলামত নষ্ট করেছে কারা?

বর্তমানে মিডিয়ার পুঁজি হচ্ছে হুমায়ূন আহমেদের প্রয়াণ। মানুষের আবেগের যায়গাগুলো ধরতে পারে তারা ঠিকই। মৃত্যুর সংবাদ পাবার আধাঘন্টার মধ্যেই কিছু লোক পৌঁছে যায় টিভি চ্যানেলে - টকশোতে নিজেদের তুলে ধরতে। প্রতিটি চ্যানেলে হুমায়ূনকে ভেজে খাওয়া হচ্ছে নানা ভাবে। কফিনের ভেতরের লাশের ছবি দেখাচ্ছে অনেকে। আমরা নাদান দর্শক সেগুলো গোগ্রাসে গিলছি আর হাপুস নয়নে কাঁদছি। হ্যা, আমাদের চোখের জলই, আমাদের আবেগই তাদের উপজীব্য। আমরা প্রশ্ন করছি না কেন এত বাড়াবাড়ি।

এই শেনসেশনালিজমের মূলে রয়েছে যে কোন মূল্যে খবর বেঁচা - মানুষকে আচ্ছন্ন করে রাখা। এ রিপোর্টিংয়ে খবরের বিষয়বস্তু সম্পর্কে কোন গভীর ধারনা থাকে না, এতে থাকে পক্ষপাতিত্ব, দুর্নীতি। এই রিপোর্টিংয়ে জরুরী খবর চাপা পড়ে - তুচ্ছ খবর লাইম লাইটে আসে। এ ধরনের রিপোর্টিংয়ে মানুষের প্রাইভেসি বা শোককে পুঁজি করে।

এ অবস্থা থেকে উন্নতির উপায় কি আমি জানি না। অনিন্দের পোস্টে আকুতি ছিল - "দয়া করে হুমায়ূন আহমেদকে শান্তিতে মরতে দেন"। আমি বলছি মিডিয়াকে "থামলে ভাল লাগে"। অচিরেই না থামলে ভবিষ্যৎে দর্শকরা অন্য কোন বিকল্প খুঁজে নেবে।

ছবির জন্যে কৃতজ্ঞতা ব্ল্যান্ক নয়েজ


মন্তব্য

হিমু এর ছবি

ভোরে ফেসবুকে ঢুকে টিজারে দেখি কফিনে হুমায়ূনের মৃত মুখের ছবিতে কাকে যেন ট্যাগ করেছে কোনো এক কাঠবলদ। একজন মানুষ মৃত বলে কি ন্যূনতম প্রিভেসি পাবেন না তিনি? বিকৃত হয়ে যাওয়া মৃত মুখের ছবি এই বিকৃতমস্তিষ্ক লোকগুলোর হাতে ধরে চলে এসেছে ফেসবুকে। এটা কী ধরনের নোংরামি?

ইউটিউবে কিছু খবরের ক্লিপ ছড়িয়ে পড়েছে, সেখানে এক লোক বীভৎস গলায় আঁ আঁ করে চেঁচিয়ে করুণ আবহ তৈরি করার চেষ্টা করছে, আর দেখানো হচ্ছে হুমায়ূনের জীবনের শেষ দিনগুলো। নিউইয়র্কে জানাজার সময় ক্যামেরা আর ফ্ল্যাশের ভিড়ে ইমামের দাঁতকপাটি লেগে যাওয়ার অবস্থা। টিভি যারা চালায়, এদের রুচির দৈন্য দেখে আমি আতঙ্কিত। এরা কি এদের বাপমা মারা গেলে এইসব ফাজলামি করতে পারবে?

মৃত হুমায়ূন এই অসম্মান কিছুতেই ডিজার্ভ করেন না। সামওয়ান শুড টক সাম সেন্স ইন্টু দিজ ইডিয়েটস।

অরফিয়াস এর ছবি

একই অভিজ্ঞতা আমারও। সকালে ফেবু খুলেই একের পর এক এই ধরনের ছবি ভেসে উঠছে। কাহাতক এটা ভালো লাগে। আবার যারা শেয়ার করছে তারাও যথেষ্ঠ কাছেরই বন্ধু। সংবাদপত্রে তাকে কোথায় সমাহিত করা হবে টা নিয়ে চলছে কলামের পর কলাম তর্ক। মানুষের যদি নূন্যতম একটা কমন সেন্স কাজ না করে তাহলে কিভাবে চলে? পৃথিবীর আর কোনো দেশের মানুষের এমন ব্যবহার চোখে পড়েনা আমার।অন্তত মৃত মানুষের কফিনের ছবি শেয়ার করার মতো মানসিক বিকারগ্রস্থতা।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

মৃত্যুময় ঈষৎ(অফ্লাইন) এর ছবি

চলুক

বোকা মেঘ এর ছবি

সকালে ফেবু খুলতেই চোখে পড়ল ওই ছবিটা...
সারাদিনের যত পত্রিকা বা টিভির প্রতিবেদনে যাই দেখাক না কেন সব কিছুর মাঝে বার বার মনে পড়ছিল ওই ছবিটাই...
অনেক'কেই দেখেছি শেষবার মুখ দেখতে গিয়ে ইদানিং মোবাইলে একটা ছবি তুলে পরে সবাইকে দেখান... এতে মৃত মানুষটার আপন আত্মীয় যখন কেঁদে উঠেন তখন আবার স্বান্তনাও দেন... এ কেমন বিকৃতি !!!
অরফিয়াসের সাথে একমত, এই সব কৃতকর্মকে 'মানসিক বিকারগ্রস্থতা' ছাড়া আর কিছু বলতে ইচ্ছা করে না |

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

দি বেঙ্গলি টাইমস লিখছে -

শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টায় ফিনারেল হোমে হুমায়ুন আহমেদের মরদেহের ছবি তুলতে গেলে শাওন দৈনিক প্রথম আলোর যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি ইব্রাহিম খোকন চৌধুরীর হাত মুচড়ে দেন এবং ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে ক্যামেরার ছবি ডিলিট করে দেন। এ ঘটনা প্রসঙ্গে খোকন বলেছেন, শাওনের আচরণ ছিল মারমুখি।

রায়হান রশিদ এর ছবি

রেজওয়ান ভাইকে ধন্যবাদ।

হিমু, শুধু হুমায়ুন আহমেদ বলে নয়, আসলে কেউই এমন ট্রিটমেন্ট ডিজার্ভ করে না। মিডিয়ার এই অসংবেদনশীলতার পেছনে কোনো অজুহাতই থাকতে পারে না। আপনার মনে আছে সাংবাদিক দম্পতির মৃত্যুর পর তাদের ছেলেটাকে নিয়ে কি সার্কাসই না হয়েছে তখন মিডিয়ায়। আর এরা পারেও এমন বোকা বোকা সব প্রশ্ন করতে। যেমনঃ হুমায়ুন আহমেদের মৃত্যুর পর তাঁর মাকে গিয়ে জিজ্ঞেস করছে - 'আপনার অনুভুতি কি'?

হিমু এর ছবি

একমত।

আযাদ রাফি  এর ছবি

চলুক

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

ঠিক আছে!

সাফি এর ছবি

দরকার ছিলো লেখাটা

পদ্মজা এর ছবি

ব্যবসা আর ব্যবসা। ক্যামেরাধারী সংবাদিক দের জন্য দুঃখ'ই লেগেছে যখন হাস্পাতাল কতৃপক্ষ তাদের ভেতরে যাবার অনুমতি দেয় নাই।
মানবাধিকার মিজান কে পাঠিয়ে দেয়া উচিত সে গিয়ে কিছু বাণি দিয়ে আসতে পারতো।

ওসিরিস এর ছবি

দরকারী লেখা। তবে মিডিয়ার মাতলামো সহসা থামবে বলে মনে হয় না।

নূর এর ছবি

'থামলে ভাল লাগে' সম্ভবত: ইমদাদুল হক মিলনের 'বারো রকম মানুষ' নাটকের উক্তি। হুমায়ূন আহমেদের কোন নাটকের নয়।

নিলয় নন্দী এর ছবি

চলুক
ঠিক তাই !

রেজওয়ান এর ছবি

ধন্যবাদ। ঠিক করে দিয়েছি।

খেকশিয়াল এর ছবি

এইসব মিডিয়ার ক্যামেরা, ফোটো সাংবাদিকদের কথা মনে হলেই আমার মনে একটা কিম্ভূতকিমাকার প্রাণীর চেহারা ভেসে ওঠে। সেই প্রাণীর কোন হাত নেই। মাথাটাই একটা ক্যামেরা আর শুধু দুই পায়ে ভর করে চলে।

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

চলুক

নৈতিক কোনো স্ট্যান্ড / স্ট্যান্ডার্ড এদের নাই। কিছু নতুন ছেলেমেয়ে হয়ত ভাল কাজ করতে চায়। বেশিদিন তারাও পারবে না।ব্যবস্থাপক পর্যায়ে, মালিক পর্যায়ে রুচিহীন হাতুড়ের সংখ্যা বেশি।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

একদম ঠিক বলেছেন।
তবে মিডিয়া যে সংযত হবে, সে আশা কম।
আমাদেরকেই সচেতনভাবে ওগুলোকে এড়িয়ে যেতে হবে।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

মিডিয়ার পাশাপাশি কিছু ব্লগারও ভাড়ামীর চুড়ান্ত করে ছাড়ছে। এক বন্ধুর কবিতা পড়তে গিয়ে আমারব্লগে দেখি জনৈক #দেবা ভাই# হুমায়ূনের নামাজ নিয়ে রীতিমতো গবেষনা ফেঁদে বসেছে এবং হুমায়ূন কতো নিম্নমানের লেখক এবং হুমায়ূনের পাঠকেরা কত্তোবড়ো নির্বোধ এটাও সেই গবেষনার অর্ন্তভূক্ত। শালার বোকাোদারা।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

অতিথি লেখক এর ছবি

@সচল অ্যাডমিন, কমেন্ট প্রকাশ করলেন না যে। এত ভয় কীসের সৎসাহস থাকলে এই কমেন্ট প্রকাশ করুন। রাতঃস্মরণীয় ব্যাট-প্যাড-হেলমেট পড়ে ফুটবল খেলবেন সেটা তো ঠিক না। ফুটবলের জার্সি পরে ফুটবল খেলতে দিন।

@রাতঃস্মরণীয়,

মিডিয়ার পাশাপাশি কিছু ব্লগারও ভাড়ামীর চুড়ান্ত করে ছাড়ছে। এক বন্ধুর কবিতা পড়তে গিয়ে আমারব্লগে দেখি জনৈক #দেবা ভাই# হুমায়ূনের নামাজ নিয়ে রীতিমতো গবেষনা ফেঁদে বসেছে এবং হুমায়ূন কতো নিম্নমানের লেখক এবং হুমায়ূনের পাঠকেরা কত্তোবড়ো নির্বোধ এটাও সেই গবেষনার অর্ন্তভূক্ত। শালার বোকাোদারা

এই দেবা ভাইকে কি চেনেন?? উনার কয়টা পোস্ট পড়েছেন আজ পর্যন্ত যে এত সুন্দর সিদ্ধান্তে পৌঁছে গেলেন। দেবা ভাই বোকাচোদা না হয়ে আপনিও হতে পারেন।

আমার পোস্টটা হলঃ [url=http://www.amarblog.com/dbmukherjeeblog/posts/131458
]হুমায়ুন আহমেদ ও তার নামাজ সম্পর্কে ধারণা আর কিছু কথা...[/url]। এর প্রকাশ কাল বুধবার, ১৮/০৫/২০১১ - ১০:৪৭, অর্থাৎ এক বছরেরও আগে। এর মাঝে ৮৬০ বার পঠিত হয়েছে। আপনাদের তো তখন হুঁশ ছিল না। এখন হুমায়ূন মরবার পড়ে সবাই একেবারে কেঁদে-কেটে অস্থির!! বাহ!! এই হুমায়ূন প্রেম এতদিন কোথায় ছিল??

আর এই পোস্টট আমি জেনে লিখেছি নাকি গল্প ফেঁদেছি তা এতটা নিশ্চিত হয়ে বলছেন কীভাবে?? আমারব্লগের দেবাভাইকে না চিনলে কাউকে না কাউকে তো চেনেন তাদের জিজ্ঞেস করতে পারতেন দেবা ভাই আন্দাজে ঢিল ছোঁড়ে নাকি ছোঁড়ে না। আমি অবশ্যই কোন গল্প ফাঁদি নি। এটা আমি আমার স্যার, যিনি হুমায়ূন আহমেদের বন্ধু, তার কাছ থেকে জেনেই দিয়েছি।

আর হুমায়ূনকে যার ভালো লাগবে সে চাইলে তাকে পীর মানতেই পারে, তবে তার সমালোচনা করবার অধিকার কি আমার নাই। প্রয়োজন হলে আমারব্লগে আসেন, এই নিয়ে একটা যৌক্তিক আলোচনা চালাই। যদি নিজের যুক্তিজ্ঞান সম্পর্কে বিশ্বাস থাকে তো আমারব্লগে আমন্ত্রণ রইলো।

আর হুমায়ূন মরবার পরে আরো একটা পোস্ট দিয়েছিঃ [url=http://www.amarblog.com/debavaibd/posts/150567
]হুমায়ূন আহমেদ আর কিছু কথা...[/url]। এসে পড়ে যান। আমার সম্পর্কে ধারণা আরো পরিস্কার হয়ে যাবে।

[url=http://www.amarblog.com/blogger/debavaibd
]#দেবা ভাই#[/url]

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

বোকাচোদা বলার জন্যে হয়তো্ সরি বলতাম কিন্তু দেবা ভাই বোকাচোদা না হয়ে আপনিও হতে পারেন- এটা বলায় মনে হয় কাটাকাটি হয়ে যায়। আর আমি আপনাকে চিনিনা কারন ব্লগিং জগতে আমার বিচরণ খুবই সীমিত।

এখন হুমায়ূন মরবার পড়ে সবাই একেবারে কেঁদে-কেটে অস্থির!! বাহ!! এই হুমায়ূন প্রেম এতদিন কোথায় ছিল??

জিন্দা মানুষের জন্যে কেউ কেন্দেকেটে অস্থির হয় এমন নজীর দেখা যায়না। কান্দাকাটি যা হয় তা মরার পরই হয়। আর মানুষ মরার পরেই তার প্রতি প্রেম বেশি জাগ্রত হয়।

আর এই পোস্টট আমি জেনে লিখেছি নাকি গল্প ফেঁদেছি তা এতটা নিশ্চিত হয়ে বলছেন কীভাবে?? আমারব্লগের দেবাভাইকে না চিনলে কাউকে না কাউকে তো চেনেন তাদের জিজ্ঞেস করতে পারতেন দেবা ভাই আন্দাজে ঢিল ছোঁড়ে নাকি ছোঁড়ে না। আমি অবশ্যই কোন গল্প ফাঁদি নি। এটা আমি আমার স্যার, যিনি হুমায়ূন আহমেদের বন্ধু, তার কাছ থেকে জেনেই দিয়েছি।

যেহেতু কথাগুলো আপনি নিজে হুমায়ূনে মুখ থেকে শোনেননি, তাই এটাকে গল্পই বলতে হবে। আর হুমায়ূন এমন কোনও কুখ্যাত মানুষ ছিলেন না যাতে তিনি আপনার স্যারের বক্তব্যমতে, এমনকি কী ক্লাশ সিক্স-সেভেন এ পরীক্ষার হলে স্যারের খাতা দেখেই অঙ্ক করতেন- একথা প্রকাশের মাধ্যমে হুমায়ূনকে হেয় প্রতিপন্ন করার মাধ্যমে তার কুখ্যাতিকে প্রতিষ্ঠিত করার প্রয়োজন ছিলো না। মানুষের ইতিবাচক দিকগুলো প্রকাশ করা ঔদার্য এবং একজন ব্লগার উদার হবেন এটাই কাম্য। তার থেকে বড়ো কথা, লেখক হুমায়ূনের সমালোচনায় তার সাহিত্যকর্মই আসা উচিত, কার খাতা দেখে পাশ করলেন এটা নয়।

নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে দেখলে হুমায়ুন আহমেদের 'জোছনা ও জননীর গল্প', 'মধ্যাহ্ন' কিংবা 'শঙ্খনীল কারাগার' সাফল্যের দাবিদার হলেও উনার অধিকাংশ উপন্যাসেই সাহিত্য বলে কিছু নেই। প্রশ্ন চলে আসে তো উনি কেন এত জনপ্রিয়?? এর উত্তরটা এক নির্মম সত্য। আমাদের বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষজনই সাহিত্য বোঝে না, তারা যা সহজে পড়তে পারে তাই গোগ্রাসে গিলে খায়।

আপনার নিজের বক্তব্য, উনার অধিকাংশ উপন্যাসেই সাহিত্য বলে কিছু নেই- নিজের জবানীতে না বলে নিরপেক্ষ দৃষ্টিসম্পন্ন একদল সমালোচকের উপর দিয়ে চালিয়ে দিলেন। আপনি যদি হুমায়ূনের সমালোচনা করতে চান তো বলুন “আমার মতে উনার অধিকাংশ উপন্যাসেই সাহিত্য বলে কিছু নেই।” এবং একইসাথে যুক্তি তুলে ধরুন আপনার এই মতের পক্ষে। আর বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের সাহিত্য নির্বুদ্ধিতা সম্পর্কে আপনার মতামত সত্যিই প্রশংসার দাবী রাখে। আপনার আগে আমার দেখf মতে কেউ বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের সাহিত্যবোধ সম্পর্কে এমন সার্টিফিকেট দিয়েছেন বলে আমার জানা নেই। তবে একটা পয়েন্টে আপনার সাথে একমত, মানুষ যা সহজে পড়তে পারে তা গোগ্রাসে গিলে খায়। তবে সব লেখকের এই ক্ষমতা নেই যে মানুষকে সহজে গেলানোর মতো করে লিখতে পারে। এই ব্লগের কথাই ধরুন, কারো পোস্ট ২০০-২৫০ বার পড়া হয় আর কারো কারো পোস্ট দুলিনেই ৫-৬,০০০ ছাড়িয়ে যায়।

যাইহোক, আপনার কাছে নিঃসংকোচে ক্ষমা চাচ্ছি আপনার লেখাটার তারিখ খেয়াল বা করার জন্যে।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

চলুক

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক

অতিথি লেখক এর ছবি

আমরা দেখছি এখন মিডিয়াতে তুচ্ছ সব বিষয়ের গ্ল্যামারাইজেশন, খবর সংগ্রহে অসুস্থ প্রতিযোগিতা। আসামের গৌহাটিতে একটি আদিবাসী মেয়ের উপর চড়াও হল গোটা বিশেক উশৃঙ্খল যুবক। এক টিভি ক্যামেরাম্যান ৩০ মিনিট ধরে ভিডিও ধারণ করল মেয়েটিকে সাহায্য না করে।

জায়গাটা পড়ে এই শর্টফিল্ম টার কথা মনে পড়ে গেল
http://www.youtube.com/watch?v=zrsQ3wdeDlU&feature=related

কাক্কেশ্বর কুচকুচে

চরম উদাস এর ছবি

চলুক

সাবেকা এর ছবি

কোথায় থামতে হবে, এই জিনিষটা আমরা কেন যেন এতো কম বুঝি চিন্তিত

Hasan Rahman এর ছবি

আমি তো ভয়ে আছি যে কাল কি আবার ১৯৪১ এর পুনারাভিনয় ঘটবে নাকি, কবিগুরু কে নিয়ে যা হয়েছিল। আশা করি আমরা বড় হয়েছি। ধন্যবাদ এই লেখাটার জন্য।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

এদের অসুস্থ প্রতিযোগিতা সাংবাদিকতার সীমা ছাড়িয়ে এতোটাই অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে যে মাঝে মাঝে মনেহয় এদের হাত থেকে টিভি ক্যামেরা আর মাইক্রোফোন কেড়ে নিয়ে সদ্য ফসল তোলা বোরো ধানের ক্ষেতে নামিয়ে দেয়া দরকার হাডুডু খেলার জন্য। যত্তোসব ইতর আর রামছাগলের পাল।

অতিথি লেখক এর ছবি

হলুদ সাংবাদিকতা বলে একটা শব্দ আছে। মিডিয়ার বাড়াবাড়িকে কি পীত সাংবাদিকতা (কোন জিনিস পচে গেলে পীত রঙের হয় না?) বলা যায়? - অয়ন

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

চলুক

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

রামগরুড় এর ছবি

আর বইলেননা ভাই, সেইদিন একটা সান্সিল্ক শ্যাম্পুর বিজ্ঞাপনের পোস্টার দেখলাম ফেবুতে শেয়ারে দিছে কে জানি, একটা সুন্দরী মাইয়া চুলা ছাড়ায়া ঘুরানী দিতেছে, আর ব্যকগ্রাউন্ডে জেনোসাইড মেমোরিয়াল -- দেখে আমি হতভম্ব।

আল্লাই মালুম মানুষের মাথায় আজকাল কি ঘুরে। এই রকম বিদ্ঘুটা জিনিস আমি বাপের জন্মে দেখি নাই।

অন্যরকম ধ্রুব এর ছবি

গতকালকের অভিজ্ঞতা শেয়ার করি। আমাদের এক ছোটবোন বাস অ্যাক্সিডেন্ট করে গুরুতর আহতাবস্থায় অর্থোপেডিক হসপিটালে জরুরি বিভাগে ভর্তি। সেখানে মাছরাঙা টিভির এক জোড়া সাংবাদিক হাজির। তাদের কাণ্ডজ্ঞান কি রকম শুনেন - তারা প্রায় মিনিট পাঁচেক অসুস্থ মেয়েটার মুখের তীব্র ফ্ল্যাশের আলো ফেলে ছবি তুলছিল আর ভিডিও করছিল। শেষ পর্যন্ত বাধ্য তাদের কড়া কথা বলে বের করে দিতে হয়েছে। আবার মেডিক্যাল রিপোর্ট নিয়ে ডাক্তাররা যখন আমাদের শিক্ষক আর ওর অভিভাবকদের সাথে একান্তে কথা বলছেন, তৈরি করছেন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, সেখানে চুপিসারে উপস্থিত এনটিভির আরেক সাংবাদিক!!!

নীড় সন্ধানী এর ছবি

যার তার হাতে মাইক আর ক্যামেরা তুলে দেয়া যায় না, এটা প্রায় কোন চ্যানেলই শিখলো না! এতগুলো চ্যানেল তার মধ্যে কোনটা বালেগ আর কোনটা নাবালেগ, বোঝাই তো মুশকিল। এদের তো দেখি একজন যা করে বাকীরাও ঝাঁপিয়ে পড়ে তার কপি যোগাড় করতে।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

ক্যাপ্টেন নিমো এর ছবি

সাংঘাতিক রা এখন সাংবাদিকতার কাজ করে, তো এমন হতেই পারে। অবাক হওয়ার কিছু নেই।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।