রহস্যময় মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের বিতর্কিত তালিকা নিয়ে তিনটি পর্যবেক্ষণ

শেহাব এর ছবি
লিখেছেন শেহাব (তারিখ: শনি, ৩০/১১/২০১৩ - ৪:৫২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

[প্রথমে একটি বিষয় পরিষ্কার করে নেয়া প্রয়োজন। এই লেখাটি গত ৫ই মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে উগ্র ধর্মব্যবসায়ী সংগঠন হেফাজতে ইসলামের সারাদিন ব্যাপী ভয়াবহ সন্ত্রাসী কার্যক্রমের প্রেক্ষাপটে রাতে চালানো আইন শৃংখলারক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের একটি অনুষঙ্গ নিয়ে। এটি কিন্তু এই অভিযানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ নয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল সেই অভিযানে নিহত প্রত্যেকটি ব্যক্তির মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করা এবং তার পরিবারকে এটি যতটুকু সম্ভব নিশ্চিত করে জানানো সেই মৃত্যুটি তার প্রাপ্য ছিল কিনা। যদি প্রাপ্য না হয় তাহলে এর পিছনে যারা দায়ী তাদের শাস্তি বিধান করা। এটি ন্যায়বিচারের সহজসূত্র। তাহলে আমি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ নিয়ে না লিখে ঝোপের আশেপাশে বাড়ি মারতে চাচ্ছি কেন? নিহত ব্যক্তিদের ও তাদের পরিবারের প্রতি ন্যায়বিচারের প্রথম শর্ত হলে সেই ব্যক্তিদের তালিকা করা। সেই তালিকা নিয়ে সরকারের ও সেই সময়কার প্রত্যেকটি গণমাধ্যমের দেয়া তথ্যের বিপরীতে অধিকার প্রতিষ্ঠানটি একটি সম্পূর্ণ বিপরীত পরিসংখ্যান দাবী করেছে। কাজেই নিহত ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের প্রতি ন্যায়বিচার করতে হলে প্রথমে এই অভিযোগের সুরাহা করতে হবে। কারণ ন্যায়বিচারের প্রথম শর্ত হল এটি কার জন্য করা হবে তাকে চিহ্নিত করা এবং কেউ যদি ভুল ব্যক্তির তথ্য এ প্রসংগে আনে তাকে প্রতিহত করা।

অধিকারের এই ব্যাপার নিয়ে যখন কেউ অনুসন্ধান করতে যায় সোশ্যাল মিডিয়াতে অনেককে নিচের মন্তব্যের মত কথা বলতে দেখা যায়:

"একজন মারা গেলেও সেটি কি হত্যা নয়? সেটি কি দু:খজনক নয়? আপনারা কেন আসলেই ৬১ কিনা সেটি নিয়ে এত হৈ হল্লা করছেন?"

এই ব্যাপারটিও পরিষ্কার করে দেয়া ভাল। একজন মারা গেলেও ব্যাপারটি দু:খজনক। কিন্তু সেই দু:খ পেটের ভিতর নিয়ে বাসায় বসে থাকার কোন কারণ নেই। আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে যে মারা গেছে তার পরিবার যেন পরিষ্কার জানে তার অপরাধটি কি ছিল। আর যদি সেই মৃত্যু তার পাওনা না হয় তাহলে যে এর জন্য দায়ী তার শাস্তির বিধান করতে হবে। কেউ যদি এই কাজগুলির কোন একটিও বাদ দিয়ে খালি দু:খ প্রকাশ করে বসে থাকতে চায় সে আসলে ধান্ধাবাজ। অন্যায়ের প্রতিকার দু:খ প্রকাশ করে হয় না, হয় ন্যায়বিচারের মাধ্যমে। কাজেই আপনাকে জানতে হবে কে অন্যায়ের সম্ভাব্য শিকার? তার একমাত্র উপায় হল শিকারের নিখুঁত তালিকা করা। আর সেই তালিকা নিয়ে কেউ অভিযোগ করলে সেটির সুরাহা করা। ১০ জন যদি সত্যিকারে অন্যায়ের শিকার হয় আর আপনি যদি ৯ জনের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করেন তাহলে একজনের অন্যায়ের কিন্তু কোন সুরাহা হল না। আবার আপনি যদি ১১ জনের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে ফেলেন তার মানে হচ্ছে বাড়তি একজনের ব্যাপারে আপনি কারও সাথে অন্যায় করে ফেলেছেন। পাটিগণিত সবসময় মিথ্যার মূলোৎপাটন করবেই। কাজেই কারও পাটিগণিতে অস্বস্তি থাকলে ধরে নিতে হবে সে অসৎ ও শঠ।]

বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে রহস্যময় মানবাধিকার সংস্থা অধিকার নিয়ে বিভিন্ন সময়ে আমার কৌতুহল জেগেছে। এর সূত্রপাত শাপলা চত্বরে গত ৫ই মে উগ্র ধর্মব্যবসায়ী সংগঠন হেফাজতে ইসলামের সারাদিন ব্যাপী ভয়াবহ সন্ত্রাসী কার্যক্রম। এক পর্যায়ে সন্ধ‌্যার দিকে সরকার সিদ্ধান্ত নেয় অবস্থানকারীদের সরিয়ে দেয়া হবে এবং রাতে সেই অভিযানটি চলে। সেই অভিযানে হতাহত হয়েছে এবং সরকারী প্রেসনোট অনুযায়ী তার কিছু পরিসংখ্যান পাওয়া যায়। পাশাপাশি অভিযান চলাকালে উপস্থিত সাংবাদিকদের বরাতে বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকেও হতাহতের বিভিন্ন পরিসংখ্যান দেয়া হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই পরিসংখ্যানটি ছিল ৩০ এর নিচে। কিন্তু অধিকার নামক একটি মানবাধিকার সংস্থা হঠাৎ করে ৬১ জনের মৃত্যুর একটি তথ্য এনে হাজির করে। পরবর্তীকে এ নিয়ে অনেক জটিলতা তৈরি হয়। অধিকারের বড়কর্তা (যার সাথে আমারদেশের সম্পাদক কলমসন্ত্রাসী মাহমুদুর রহমানের ফোনালাপ এর আগে ফাঁস হয়ে গিয়েছিল) গ্রেফতার হয়, পরে আবার তাদের আরেকজন বড়কর্তা টিভিতে সেই দাবী থেকে কিছুটা সরেও আসে। তো আমার কিছু কিছু পর্যবেক্ষণ আমি বিভিন্ন সময়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস হিসেবে দিয়েছি। এই লেখাটিতে আমি সেগুলো একসাথে আনার চেষ্টা করছি।

পর্যবেক্ষণ ১:
যখন অধিকার টিভি সাক্ষাৎকারে ৬১ জনের দাবী থেকে সরে আসল তখন আমি কৌতুহলী হয়ে তাদের ১০ই জুনের রিপোর্টটি আরেকবার পড়ি। শাপলা চত্বরের অভিযানটি নিয়ে নিয়ে ১০ই জুন তারা যে তথ্যানুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেখানে ঘটনার প্রত্যেকটি ছবি ফটো এজেন্সী বাংলার চোখ থেকে নেয়া (কোন এক রহস্যময় কারণে বাংলার চোখের আর্কাইভে হেফাজতে ইসলামের দিনের বেলার তাণ্ডবের কোন ছবি ছিল না!)। বাংলার চোখ ব্যতীত আর কোন সূত্র থেকে ঘটনার কোন ছবি নেয়া হয়নি। এর ঠিক আগে বা পরে যে কয়েকটি বড় ইভেন্টের উপর অধিকার তথ্যানুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে (স্মার্ট এক্সপোর্ট গার্মেন্টস, তাজরীন গার্মেন্টস, চট্টগ্রামে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস, রানা প্লাজা এই চারটি রিপোর্ট দেখেছি) তার প্রত্যেকটিতেই অধিকার মূলত নিজস্ব ফটোগ্রাফার এবং খুব অল্প কিছু জায়গায় জাতীয় দৈনিক থেকে নেয়া ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। এই চারটি রিপোর্টের কোনটিতেই অধিকার বাংলার চোখের কোন ছবি ব্যবহার করেনি। এই ব্যাপারটি রীতিমত আমার চোখে লেগেছে।

পর্যবেক্ষণ ২: নিজেদের তথ্যানুসন্ধান রিপোর্টে (পৃ: ২৬, ২৭) অধিকার জুন মাসের ১০ তারিখ শাপলা চত্বরে নিহত ১৬ জনের নাম, ঠিকানা ও অভিভাবকের ফোন নম্বর প্রকাশ করেছিল। এর বাইরে আগের কয়েকটি পৃষ্ঠায়ও একাধিক নিহত ব্যক্তির নাম, ঠিকানা, পেশা, কর্মস্থল, তাদের জীবিত পরিবারের সদস্যদের নাম ও ঠিকানা প্রকাশ করা হয়েছে। তার মানে সরকার হয়রানী করবে একারণে মৃতদের নাম ঠিকানা প্রকাশ করা যাচ্ছে না এই দাবী গ্রহণযোগ্য নয়। ১৬ জনের নাম ঠিকানা তারা যে নিশ্চয়তায় প্রকাশ করেছিল বাকি ৪৫ জনের নাম ঠিকানাও তাদের একই নিশ্চয়তায় প্রকাশ করতে পারা উচিৎ!

পর্যবেক্ষণ ৩:
আমি কিছুদিন আগে অধিকারকে ফোন দিয়ে তাদের সেই বিতর্কিত তালিকার ব্যাপারে আরো কিছু জানতে চাইলাম। একটি স্ট্যাটাসে প্রকাশিত আমার সেই অভিজ্ঞতা এখানে দিয়ে দিলাম।

একটু আগে অধিকারকে ফোন দিয়ে জানতে চাইলাম তাদের সেই ৫মে শাপলা চত্বরে নিহত ৬১ জনের যে কথিত তালিকা (পরে এক টিভি সাক্ষাৎকারে অবশ্য ওরা দাবীতে কিছুটা পরিবর্তন এনেছিল) যে ওরা চারটি সংগঠনকে আদিলুর রহমানের গ্রেফতারের আগে আগে দিয়েছিল সে ব্যাপারে কোন আপডেট আছে কিনা। তো নাজিম নামে একজন ফোন ধরলেন। তিনি বললেন এটি ওনারা ওই চারটি সংগঠনকে দিয়েছেন যাচাই করার জন্য না, সরকার যেহেতু তল্লাশী চালাচ্ছে তালিকায় যেন কোন অনাকাঙ্খিত পরিবর্তন না ঘটে তাই তারা এর কপি অন্যদের দিয়ে রেখেছেন। আমি তখন জানতে চাইলাম এখন যদি আমি স্বাধীন গবেষক হিসেবে এই তালিকার নির্ভরযোগ্যতা যাচাই করতে চাই তাহলে কিভাবে তালিকাটি সংগ্রহ করতে পারি? সে বলল একক ব্যক্তিকে দেয়া যাবে না কারণ কে না কে কি উদ্দেশ্যে তালিকা নিতে যাবে সেটি তারা নিশ্চিত হবে পারবে না। তখন আমি প্রস্তাব দিলাম সমমনা কয়েকজনকে নিয়ে আমি যদি একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে যদি আবেদন করি তালিকা যাচাইয়ের জন্য তাহলে করা যাবে কিনা। কারণ সে ক্ষেত্রে ভিকটিমদের কোন অঘটন ঘটলে তার জন্য একাধিক ব্যক্তিকে দায়ী করা যাবে এবং সংগঠনের রেজিস্ট্রেশনের সূত্র ধরে তাদের খুঁজে পাওয়া যাবে। কিন্তু তখন সে বলল এখন 'ওয়েল রিকগনাইজড' সংগঠন ছাড়া তালিকা দেয়া যাবে না কারণ ভিকটিমদের ঝুঁকি আছে। তখন আমি বললাম এরকম 'ওয়েল রিকগনাইজড' বাংলাদেশী সংগঠনের একটি উদাহরণ দেন। তখন সে বলল আসলে তখন কোন সংগঠনই এই ঘটনার তথ্য প্রকাশ করে নি, কেবল অধিকারই করেছে। কাজেই ওয়েল রিকগনাইজড সেরকম কোন সংগঠনের নাম বলা যাচ্ছে না। আমি তখন জানতে চাইলাম যদি আপনারা একটি দাবী করেন তথ্যসূত্র না থাকার কারণে যার যাচাইযোগ্যতা শূন্য তাহলে আমি কি করে সেটি বিশ্বাস করব? তখন সে বলল আপনি আমাদের ইতিহাস দেখেন যে আমরা সবসময় এই কাজ করেছি। তখন আমি বললাম এরকম একাধিক সংগঠন পাওয়া যাবে যারা আপনাদের মত সবসময় রিপোর্ট করে এসেছে। আমার প্রশ্ন হল সুনির্দিষ্টভাবে এই ক্ষেত্রে একদম সবাই চুপ আপনারা খালি রিপোর্ট করলেন - কারণ কি? আর এর আগে তো আপনারা সবসময় ভিকটিমের তথ্য প্রকাশ করেছেন - এই পার্টিকুলার ক্ষেত্রে আপনারা সেটি প্রকাশ করছেন না কেন? তখন তিনি বললেন আসলে এর আগে ভিকটিমের সংখ্যা কম ছিল তাই আমরা তাদের প্রটেক্ট করতে পারতাম। এবার যেহেতু ভিকটিমের সংখ্যা বেশি আমরা প্রটেক্ট করতে পারব না তাই গোপন রাখছি। তখন আমি বললাম আপনাদের তো কোন সেফ হাউজ নেই যে আপনারা ভিকটিমদের সেখানে এনে বাইরে পাহারা দিয়ে রাখেন। তাহলে না হয় বলা যেতে সেফ হাউজের ক্যাপাসিটির বাইরে ভিকটিম হলে নাম গোপন রাখবেন। তখন তিনি জানালেন ওনার একটু জরুরী কাজ পড়ে গেছে তাই আপাতত আর কথা বলতে পারছেন না।

কিছু দরকারী লিংক:
১. অধিকারের ৬১ জনের তালিকা নিয়ে দৈনিক সমকালের রিপোর্ট

২. যে সাক্ষাৎকারে অধিকারের একজন বড়কর্তা ৫মে রাতে শাপলা চত্বরে ৬১ জনের নিহত হওয়ার দাবী থেকে সরে আসে

শেহাব,
বাল্টিমোর


মন্তব্য

হাসিব এর ছবি

ল্যাপটপের চার্জ শেষ। তাছাড়া একটা জরুরী কাজে বাইরে যাচ্ছি। ফিরে এসে কমেন্ট করবো।

হিমু এর ছবি

এই যে রেল লাইন উপড়ে, গায়ে আগুন ধরিয়ে মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে বিম্পিজামাত, অমুসলিমদের ওপর আক্রমণ করছে, অধিকারকে তো একটা টুঁ-শব্দ করতে দেখলাম না। অধিকারের বাপ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ আর অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও মুখে পায়ের বুড়ো আঙুল গুঁজে বসে আছে। আদুল শুভ্র দেখি খালি নিশা দেশাই বিসওয়ালের সঙ্গে ডিনারে ব্যস্ত।

বিম্পিজামাতের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নিয়ে অনুসন্ধান বা প্রতিবেদন প্রকাশের কাজে মনে হয় টাকাপয়সা নাই। যেখানে টাকা নাই, সেখানে মানবাধিকারও নাই।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

ভাল পর্যবেক্ষন! চলুক

মাহবুব লীলেন এর ছবি

পর্যবেক্ষণগুলো অনেক ভালো

অতিথি লেখক এর ছবি

হেফাজতে জামাতের মানবধিকার রক্ষার জন্যে টাকার দেওয়ার সংগঠনের অভাব হয়নি, আরব ভাইয়ের পাশাপাশি বিম্পিজামাত ভাইয়েরা তো ছিলোই. আর এখন যারা মরছে তাদের জন্যে আরব ভাইয়েরাও নেই, বিম্পি জামাততো নেই. এখন নিহতদের তালিকা দিলে সেটাতো বিম্পিজামাতের বিপক্ষে যাবে তাই এখন চুপ আছেন মানবধিকারের এইসব মহৎ প্রতিষ্ঠানগুলো. আরেকবার হেফাজত সমাবেশ করুক তখন দেখা যাবে আবার সব মানবধিকার প্রতিষ্ঠানগুলোর কি পরিমান তৎপর মানবধিকার রক্ষায়।

মাসুদ সজীব

এক লহমা এর ছবি

দরকারী লেখা।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

চলুক

____________________________

Joltorongo এর ছবি

চলুক

সামুরাই এর ছবি

চলুক

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।