অপর পৃথিবী: পার্থিব বহির্গ্রহের যুগ

শিক্ষানবিস এর ছবি
লিখেছেন শিক্ষানবিস (তারিখ: বিষ্যুদ, ২২/১২/২০১১ - ৫:২৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সেই ২০০৯ সালের জুলাইয়ে সচলে "আরেকটি পৃথিবী" নামে একটি ধারাবাহিক রচনা শুরু করেছিলাম। আজকে সেটা ঘাঁটতে গিয়ে মনে হল কতদিন পার হয়ে গেছে। যাহোক, দেরি করে হলেও সেই প্রাচীন ধারাবাহিক আবার শুরু করলাম এই লেখার মাধ্যমে। কারণ গতকাল যা ঘটেছে তার পরে সেটি শুরু না করলে অপরাধ হবে। গতকাল নাসা-র এইমস গবেষণা কেন্দ্র পৃথিবীতুল্য আকারের দুটি বহির্গ্রহ আবিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছে। বাসযোগ্য না হলেও এই ঘটনায় যথেষ্ট উৎফুল্ল হওয়ার কারণ আছে- একটি যখন পাওয়া গেছে তখন কেপলার নভোমানমন্দিরের মাধ্যমে পৃথিবী-সদৃশ আরও অনেক গ্রহ পাওয়া যাবে। তাদের কোন কোনটি যে প্রাণমণ্ডলের ভেতর থাকবে না তাই বা কে বলতে পারে? আরেকটি পৃথিবী - ১ এবং বহির্গ্রহের খোঁজে-র পর এই পর্বে লিখব কেপলার ২২বি, কেপলার২০ই এবং কেপলার ২০এফ নামের তিনটি গ্রহের কথা।

২০০৯ সালের মার্চে সাড়ে তিন বছরের এক মিশনে কেপলার নভোমানমন্দির কে মহাশূন্যে পাঠিয়েছিল নাসা। উদ্দেশ্য পৃথিবীসম এবং প্রাণবান্ধব গ্রহ খুঁজে বের করা। পৃথিবীসম গ্রহ আবিষ্কারে ২০০৯ এবং ২০১০ সাল যে খুব আশার বাণী শোনায়নি তা নিচের ছবিটি দেখলেই বোঝা যায়:


দেখা যাচ্ছে প্রথম দিকে কেপলারের আবিষ্কৃত সবগুলো গ্রহের ব্যাসার্ধ্যই পৃথিবী থেকে অনেক বড়।

কেপলারের প্রথম উল্লেখযোগ্য অর্জন কেপলার ২২বি আবিষ্কার। কেপলার ২২ তারাকে আবর্তনরত এই গ্রহটির ব্যাসার্ধ্য পৃথিবীর প্রায় আড়াই গুণ হলেও এটি তার মাতৃতারার প্রাণমণ্ডলের ভেতরে আছে। সুতরাং পৃথিবীসম না হলেও কেপলারের আরেকটি লক্ষ্য পূরণ করেছে গ্রহটি। প্রাণমণ্ডল বলতে কোন তারার চারপাশে এমন একটি অঞ্চলকে বোঝায় যেখানে কোন গ্রহ থাকলে তাতে প্রাণের বিকাশ ঘটতে পারে। মূলত তাপমাত্রা দ্বারা নির্ধারিত হলেও বায়ুমণ্ডলের ধরণ এবং বায়ুমণ্ডলীয় চাপও প্রাণমণ্ডল চিহ্নিত করার জন্য প্রয়োজনীয়। প্রাণমণ্ডল সম্পর্কে একটি সচিত্র উপস্থাপনা পাওয়া যাবে এখানে

কেপলার ২২বি আবিষ্কার বহির্গ্রহ গবেষণায় কি বিপ্লবের সূচনা ঘটাল তার বিস্তারিত বর্ণনা দেয়ার মত ধৈর্য্য এই মুহূর্তে পাচ্ছি না, সে বিপ্লব এতোই দানবীয়। এই ৫ই ডিসেম্বর নাসার এইমস থেকে গ্রহটি আবিষ্কারের ঘোষণা আসার পর বাংলায় একটি ইউটিউব ভিডিও তৈরির চেষ্টা করেছিলাম। আনাড়ি ভিডিওটি হয়ত (অন্তত আশা করি) আমার লেখার চেয়ে অনেক ভালভাবেই কেপলার ২২বি কে তুলে ধরতে পারবে:

কেপলার ২০ই এবং কেপলার ২০এফ

তো এভাবেই প্রাণমণ্ডলে একটি সফল অভিযান চালানো গেছে। কেপলার ২০ এর চারদিকে নতুন দুটি গ্রহ আবিষ্কারের মাধ্যমে পৃথিবীসম গ্রহ আবিষ্কারেরও শুভ সূচনা ঘটল। আমাদের থেকে প্রায় ২৯০ পারসেক তথা ৯৩৬ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত এই তারাকে আবর্তন করছে পৃথিবী এবং শুক্র গ্রহের সমান আকারের দুটি গ্রহ। এর মাধ্যমে গ্রহবিজ্ঞানে নতুন যুগের সূচনা ঘটল। এর আগে পৃথিবী আকারের গ্রহ সনাক্ত করার কথা ভাবাও যেতো না দুরবিনের সীমাবদ্ধতার কারণে। এই গ্রহ আবিষ্কারের মাধ্যমে আমাদের দৃঢ় প্রত্যয় জন্মাল যে কেপলারের মাধ্যমেই পৃথিবী আকারের আরও অনেক গ্রহ খুঁজে পাওয়া সম্ভব। প্রথম ছবিতে ২০০৯-১০ এ পৃথিবীসম গ্রহ আবিষ্কারে হতাশার চিত্র ফুটে উঠলে নিচের ছবি দেখাবে আশার আলো:

কেপলার ২০ই এবং কেপলার ২০এফ আবিষ্কারের খবর একালের সবচেয়ে প্রভাবশালী জার্নাল নেচারে একটি চিঠি হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে। (গবেষণাপত্রটি নেচার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিপিএন দিয়ে ডাউনলোড করে এখানে যুক্ত করলাম। এমন গবেষণাপত্রের আন্তর্জাল সংস্করণ মুক্ত না থাকলে এই আর্কাইভের যুগে ঠিক শান্তি পাই না।) চিঠিটির নির্যাস বঙ্গানুবাদ করলে এমন দাঁড়ায়:

সূর্যের মত তারার চারদিকে আবর্তনরত দানবীয় বহির্গ্রহ আবিষ্কারের পর থেকে আমাদের পর্যবেক্ষণ কৌশলের অনেক বিবর্তন ঘটেছে যার অবশ্যম্ভাবী ফলাফল পৃথিবী-সদৃশ গ্রহ সনাক্তকরণ। বহির্গ্রহ আবিষ্কারের একটি বহুল ব্যবহৃত পদ্ধতি হচ্ছে অতিক্রমণ: গ্রহটি তারার চারপাশে ঘুরতে ঘুরতে যখন আমাদের দৃষ্টিরেখা এবং তারার মাঝে চলে আসে তখন তারাটির উজ্জ্বলতা গ্রহের ব্যাসার্ধ্যের উপর নির্ভর করে কিছুটা কমে যায়। এ যাবৎ আবিষ্কৃত ক্ষুদ্রতম বহির্গ্রহটির ব্যাসার্ধ্য পৃথিবীর ১.৪২ গুণ আর আয়তন ২.৯ গুণ। এই চিঠিতে আমরা কেপলার ২০ তারাকে আবর্তনরত এমন দুটি গ্রহ আবিষ্কারের ঘোষণা দিচ্ছি যার একটি পৃথিবীর সমান (পার্থিব ব্যাসার্ধ্যের ১.০৩ গুণ) এবং অন্যটি পৃথিবীর চেয়েও ছোট (০.৮৭ গুণ)। উল্লেখ্য এর আগে কেপলার ২০ এর চারদিকে আরও ৩টি অপেক্ষাকৃত বড় গ্রহ আবিষ্কৃত হয়েছিল। মাতৃতারার উপর নতুন তারাগুলোর মহাকর্ষীয় টান এতোই কম যে তা বর্তমান যন্ত্রপাতি দিয়ে পরিমাপ করা সম্ভব নয়। আমরা পরিসাংখ্যিক পদ্ধতি প্রয়োগ করে দেখিয়েছি যে অতিক্রমণের সংকেতটি গ্রহের কারণেই ঘটেছে, কোন গ্রহণরত যুগল তারার জন্য নয়। আমাদের হিসাব বলছে গ্রহ হওয়ার সম্ভাব্যতা যুগলতারা হওয়ার চেয়ে ৩ ঘাতক্রম বেশি। তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ বলছে এই গ্রহগুলো পাথুরে, গাঠনিক উপাদান লোহা এবং সিলিকেট। অপেক্ষাকৃত বাইরের গ্রহটির চারদিকে বাষ্পের বায়ুমণ্ডল থাকারও সম্ভাবনা রয়েছে।

নির্যাস থেকে খুব ভালভাবেই বোঝা যাচ্ছে গ্রহ দুটি প্রাণবান্ধব নয়। বুধ সূর্যের যত কাছে ভেতরের গ্রহটি তার মাতৃতারার তার চেয়েও কাছ দিয়ে আবর্তন করে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলেছেন এক সময় এরা প্রাণমণ্ডলের ভেতরে ছিল এবং ধীরে ধীরে স্থানান্তরের মাধ্যমে মাতৃতারার অনেক কাছে চলে এসেছে। সে হিসেবে একসময় এদের কোন একটি বা দুটোরই প্রাণ ধারণের যোগ্যতা ছিল বললে অত্যুক্তি হবে না।

কেপলার ২০ই ৬ পার্থিব দিনে একবার তার তারাকে আবর্তন করে। পৃষ্ঠে তাপমাত্রা ১,০৪০ কেলভিন যা যেকোন বায়ুমণ্ডল বাষ্পীভূত করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। অবশিষ্ট থাকতে পারে কেবল সিলিকা এবং লৌহসমৃদ্ধ ভূপৃষ্ঠ।

কেপলার ২০এফ ২০ পার্থিব দিনে একবার তারাকে আবর্তন করে, স্বভাবতই একটু দূরে অবস্থিত যে কারণে তাপমাত্রা একটু কম- ৭০৫ কেলভিন। এই তাপমাত্রায় হাইড্রোজেন বা হিলিয়ামের পক্ষে টিকে থাকা সম্ভব নয় কিন্তু কিছু জলবাষ্প টিকে থাকার সম্ভাবনা থেকেই যায়।

দুটি গ্রহই তাদের তারার সাথে কটালবদ্ধ হয়ে আছে অর্থাৎ তাদের একটি মুখই সর্বদা তারার দিকে ঘুরে থাকে। এ জন্য গ্রহগুলোর এক দিক প্রচণ্ড উত্তপ্ত, আর বিপরীত দিক সমপরিমাণ শীতল। এ থেকে প্রমাণিত হয় গ্রহগুলোর কোন একটি অঞ্চল সবসময় গোধূলি লগ্নের উষ্মায় থাকে। এই অঞ্চলে তো প্রাণ থাকতেও পারে, কারণ সেখানের তাপমাত্রা বেশ কম এবং তা খুব একটা উঠানামা করে না। অবশ্য গবেষণা দলের প্রধান হার্ভার্ড স্মিথসোনিয়ান সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের ফ্রঁসোয়া ফ্রেসাঁর এসব অঞ্চলকে প্রাণবান্ধব বলে চালিয়ে দেয়ার কোন ইচ্ছা নেই।

এই গ্রহের আবিষ্কার একটু ভিন্নভাবে হয়েছে। সাধারণত কেপলার কোন গ্রহপ্রার্থী খুঁজে পাওয়ার পর ভূকেন্দ্রিক দুরবিন দিয়ে সেগুলো নিশ্চিত করা হয়। এমনই একটি ভূকেন্দ্রিক দুরবিন হচ্ছে মাউনা কিয়ার ১০ মিটার ব্যাসের কেক দুরবিন। কিন্তু কেপলার ২২ ই ও এফ কেক দুরবিনের মাধ্যমে নিশ্চিত করার উপায় ছিল না, কারণ মাতৃতারার চারদিকে তাদের আবর্তনকাল খুব কম। কেক এর নিশ্চিত সুযোগ হারিয়ে বিজ্ঞানীরা আশ্রয় নিয়েছিলেন পরিসংখ্যানের:
প্রথমত, কেপলার ২০ তারার চারদিকে এর আগে আরও তিনটি গ্রহ আবিষ্কৃত হয়েছে এবং নতুন দুটির কক্ষপথ আগের গুলোর কক্ষতলেই অবস্থিত। একই তলে সুবিধাজনক অবস্থান থেকে আসা অতিক্রমণ সংকেত মিথ্যা হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
দ্বিতীয়ত, ক্যালিফোর্নিয়ার পালোমার মানমন্দিরের হেইল দুরবিন দিয়ে কেপলার ২০ এর একটি উচ্চ রিজল্যুশনের ছবি তোলা হয়েছে যা থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় পটভূমিতে থাকা কোন তারার কারণে তারাটির উজ্জ্বলতায় এমন হ্রাসবৃদ্ধি ঘটতে পারে না।

তবে ঘনত্ব জানার জন্য গ্রহ দুটির ভর নির্ণয় করতে হবে যা সম্ভব আরও অভিনব যন্ত্রপাতির মাধ্যমে। যেমন ২০১২ সালের এপ্রিলে কানারি দ্বীপপুঞ্জের লা পালমা মানমন্দিরে ২.৬ মিটার জাতীয় গালিলেও দুরবিনের সাথে স্থাপিত হার্পস-নর্থ নামক অরীয় বেগনির্ভর বর্ণালীবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে ভর নির্ণয়ের চেষ্টা করা যেতে পারে। তবে গবেষণাপত্রে ভর ও ব্যাসার্ধ্যের একটি আনুপাতিক হিসাব দেখানো হয়েছে:


[ছবি: Fressin et al. 2011, doi:10.1038/nature10780]
ভুজ = ভর, কোটি = ব্যাসার্ধ্য। সকল একক পৃথিবীর সাপেক্ষে।
বিভিন্ন ভরের তারার ভর-ব্যাসার্ধ্য সম্পর্ক: উল্লেখ্য রেখাগুলো ধ্রুব তাপমাত্রার ভর-ব্যাসার্ধ্য বিবর্তন চিত্রিত করে। অর্থাৎ তাপমাত্রা স্থির রেখে কোন গ্রহের ব্যাসার্ধ্য এবং ভর বাড়াতে থাকলে তার অবস্থান লেখচিত্রটির এই রেখাগুলো ধরেই পরিবর্তিত হবে। কেপলার ২০ই এবং কেপলার ২০এফ এর সম্ভাব্য অবস্থান কমলা ও সবুজ রঙের অঞ্চলের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে। আর এ যাবৎ আবিষ্কৃত অন্য গ্রহগুলোর অবস্থান কালো চতুর্ভুজাকৃতির বিন্দু দিয়ে প্রদর্শন করা হয়েছে। অবিচ্ছিন্ন রেখাগুলো হচ্ছে সমসত্ত্ব গাঠনিক উপাদানবিশিষ্ট গ্রহের জন্য, আর ডট বা ডট-ড্যাশ যুক্ত রেখাগুলো অসমসত্ত্ব গাঠনিক উপাদান নির্দেশ করে। উপর থেকে নিচের দিকে যেতে থাকলে রেখাগুলো যে ধরণের গাঠনিক উপাদান নির্দেশ করে তা হলে:
১। পানি+বরফ
২। ৭৫% বরফ-পানি, ২২% সিলিকেট শেল, ৩% লৌহ কেন্দ্র
৩। ৪৫% বরফ-পানি, ৪৮,৫% সিলিকেট শেল, ২২.৫% লৌহ কেন্দ্র (গ্যানিমেড)
৪। ২৫% বরফ-পানি, ৫২.৫% সিলিকেট শেল, ২২.৫% লৌহ কেন্দ্র
৫। ম্যাগনেসিয়াম সিলিকেট পারভোস্কাইট
৬। ৬৭.৫% সিলিকেট ভূত্বক, ৩২.৫% লৌহ কেন্দ্র (পৃথিবী)
৭। ৩০% সিলিকেট ভূত্বক, ৭০% লৌহ কেন্দ্র (বুধ)
৮। লোহা
কেপলার ২০ই এর ব্যাসার্ধ্য ঠিক রেখে ভর যদি সর্বনিম্ন করা হয় অর্থাৎ ঘনত্ব যদি সম্ভাব্য সর্বনিম্ন ধরা হয় তাহলে তার গাঠনিক উপাদান হওয়ার কথা ১০০% সিলিকেট (অবিচ্ছিন্ন লাল রেখা)।
কেপলার ২০এফ এর সর্বনিম্ন ঘনত্বের ক্ষেত্রে গাঠনিক উপাদান ৭৫% বরফ-পানির রেখা (নীল ড্যাশযুক্ত রেখা) অনুসরণ করে।


কেপলার ২০ তারাজগৎ।

নতুন আবিষ্কারটি বেশ অদ্ভূত। কারণ নিজেদের সৌরজগৎ দেখে আমরা আগে ধারণা করতাম পাশাপাশি ছোট এবং দানবীয় গ্রহ থাকতে পারে না। কিন্তু কেপলার ২০ এর জগতে দেখা যাচ্ছে ক্ষুদ্রাকার দুটি গ্রহ খুব ভালভাবেই দানবীয় গ্রহদের সাথে অবস্থান করছে। যত দিন যাচ্ছে বহির্গ্রহ বিজ্ঞানে অদ্ভুতুড়ে পর্যবেক্ষণের সংখ্যা ততোই বাড়ছে। সেই সাথে প্রযুক্তির কারণে আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানে প্রতি ১০ বছরেই একটি করে বিপ্লব ঘটে যাচ্ছে। ১৯৯০-এর দশক সবচেয়ে আলোচিত ছিল প্রথম বহির্গ্রহ এবং মহাবিশ্বের ত্বরিত সম্প্রসারণ আবিষ্কারের জন্য। ২০০০-এর দশক সে তুলনায় নীরব ছিল। আর ২০১০-এর দশক শুরু হল কিছু বিস্ময়কর আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে যে কারণে একে বলা যেতে পারে পার্থিব বহির্গ্রহ যুগ। প্রাণবান্ধব পার্থিব বহির্গ্রহের হাতছানিই এখন গ্রহবিজ্ঞানীদের রাত্রিকালীন ঘুমের প্রধান সঙ্গী।

পরিভাষা
Binary star - যুগলতারা
Eclipse - গ্রহণ
Exoplanet - বহির্গ্রহ
Habitable zone - প্রাণমণ্ডল
Habitable/Goldilocks planet - প্রাণবান্ধব বা বাসযোগ্য গ্রহ
Tidal locking - কটালবদ্ধতা
Tidally locked - কটালবদ্ধ
Transit - অতিক্রমণ


মন্তব্য

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ওয়েলকামব্যাক।

বাহ্ ।

ভিডিওতে গ্রহগুলোর আবিস্কারের বিন্যাস দেখে সরল চোখে গাউসিয়ান মনে হলেও, আমার মনে হচ্ছে এটা মিশ্র পয়সোঁ বিন্যাস (Mixed Poisson distribution) হবে। আর তা হলে মিশ্র পয়সোঁ বিন্যাসের এটা চমৎকার একটা উদাহরণ হতে পারে।

শিক্ষানবিস এর ছবি

আগ্রহোদ্দীপক। আসলে আমি বহির্গ্রহের ভর অপেক্ষক কোন বিন্যাস অনুসরণ করে সে নিয়ে কোথাও পড়িনি। ছবিটি দেখে সরল চোখে তাই গাউসীয় বলে দিয়েছি। মিশ্র পৈসোঁ বিন্যাসের ব্যাপারে আরেকটু বিস্তারিত বলতে পারেন? তবে আরেকটা জিনিস সত্য যে বহির্গ্রহের প্রকৃত ভর বা আকার অপেক্ষক নির্মাণের সময় এখনও আসেনি। কারণ তেমন অপেক্ষকের অনেক অংশই এখনো নির্বাচনের পক্ষপাতিত্বে ভুগবে।

হিমু এর ছবি

শিক্ষানবিসের ভিডিওব্লগটা দুর্ধর্ষ হয়েছে। যদিও দুষ্টু লোকে বলাবলি করছিলো শিক্ষানবিসের ভিডিও বের হয়েছে চোখ টিপি । এরকম আরো ভিডিওব্লগ চাই।

জ্যোতির্বিজ্ঞানের খবরাখবর নিয়মিত পাবো এই আশায় পপ্পন নিয়ে বসলাম।

রু (অতিথি) এর ছবি

বাহ, খুব ভালো লাগলো।

দ্রোহী এর ছবি

বহুদিন পরে সচলে শিক্ষানবিসের লেখা পড়ার সুযোগ পেলাম।

অন্যকেউ এর ছবি

চমৎকার লেখা। আপনার ভিডিওটা আগেই দেখেছি। লেখাও ভিডিওটার মতই উপাদেয়। প্রাণমন্ডলের ধারণাটা আপনার কাজ থেকেই প্রথম জেনেছি। সহজভাবে ব্যাখ্যা করেছেন।

নিয়মিত লেখা চাই। হাসি

_____________________________________________________________________

বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।

সচল জাহিদ এর ছবি

চমৎকার পোষ্ট। ভিডিওটা জটিল হয়েছে আর সেই সাথে সহজবোধ্য।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

তারাপ কোয়াস এর ছবি

পুরো লেখাটি এবং সাথে ভিডিওটি অত্যন্ত উপভোগ্য। চলুক


love the life you live. live the life you love.

দ্রোহী এর ছবি

একবছরের মাথায় "ঝাক্কেঝাক্কে" পৃথিবীসদৃশ বহির্গ্রহ আবিষ্কার হতে শুরু করবে। দেঁতো হাসি

When do you think will the first Earthlike planet orbiting a Sun-like star be discovered?

Kepler is seeking evidence of Earth-size planets in the habitable zone of Sun-like stars. To confirm an Earth, the science mission team requires a minimum of 3 transits of the same period, depth and duration. In the case of the Sun-like star, the period of the planet would be about the same as the Earth: one year. Thus, it will require a minimum of 3 years (and likely longer) to find an Earth-size planet in the habitable zone, and confirm the observations with 3 transits. Kepler launched in 2009, and the soonest we anticipate announcing an Earth-size planet orbiting a Sun-like star would be sometime in 2012-2013. For more on expected results see the Expected Results page.

শিক্ষানবিসের জন্য: আগে দেখে না থাকলে এক্ষুণি দেখা জরুরী

শিক্ষানবিস এর ছবি

হ্যা পৃথিবী-সদৃশ গ্রহ এখন আরও অনেক পাওয়ার কথা। আগে দেখিনি প্রশ্নোত্তর গুলো। খুবই তথ্যবহুল। কেপলার দলের গণসংযোগ ও খুব উন্নত মানের।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

পোস্টটা দেইখাই একরকম শান্তি পাইলাম। স্বভাষায় এইরকম শ্রমনিষ্ঠ লেখার জন্য লেখককে ধন্যবাদ।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

ফারুক হাসান এর ছবি

চলুক
যথেষ্ট পরিশ্রম করেছেন। কিন্তু এত সাবলীল ভাষায় বলেছেন যে সেই পরিশ্রম সার্থক।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

ভাল্লাগছে ভাই চলুক

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

কিছু নতুন তথ্য জানা হল। সহজ ও সাবলীল করে লেখার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। ভিডিওর সংযোজন ভাল লেগেছে।

আমি শিপলু এর ছবি

দারুন ভাইজান। আরো লিখতে থাকুন। চলুক

ফাহিম হাসান এর ছবি

যাক, বিরতি কাটলো তাহলে?
চমৎকার লিখেছেন। আর ভিডিও ব্লগ তো পুরাই গুল্লি

দীপ্ত এর ছবি

খুবই তথ্যবহুল আর সহজবোধ্য লেখা। ভিডিওটা থাকাতে সহজে বুঝতে পেরেছি। আরও জানতে আগ্রহী, তাই লিখুন, প্লিজ।

তারেক অণু এর ছবি

দারুণ। আরো লিখুন---

অনিকেত এর ছবি

আরে বস! অনেকদিন পর!! চমৎকার লেখা----আরো আসতে থাকুক

যুধিষ্ঠির এর ছবি

চমৎকার! যথারীতি অসম্ভব সহজ করে লেখা বিজ্ঞানের বিষয়। ভিডিওটাও অসামান্য!

মাহবুব লীলেন এর ছবি

ভাই বাংলাদেশে ওই গ্রহের এ্যম্বাসি নাই? টিকিটের দাম কত?

স্পর্শ এর ছবি

বাংলায় যে কত সুন্দরভাবে বিজ্ঞান লেখা সম্ভব, এই লেখাটা তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এমন লেখাগুলো শুধু বাঙালীর সামগ্রিক বিজ্ঞানবোধ নয়, বিজ্ঞান ভাষাকেও সমৃদ্ধ করতে পারে। আরও আসুক... চলুক


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

ভিডিওটা আগেই দেখেছিলাম। দুর্দান্ত। লেখাটাও অসম্ভব ভালো হয়েছে। খুবই সহজবোধ্য। এরকম লেখা আরও বেশি বেশি আসুক।

চরম উদাস এর ছবি

চলুক

কানা বাবা এর ছবি

অস্হির পুস্ট! এত মারমার-কাটকাট দেইখা এই দুনিয়ায় ভাল্লাগে না আর। ভাবতাছি কেপলার যামগা।

/----------------------------------------------------
ওইখানে আমিও আছি, যেইখানে সূর্য উদয়
প্রিয়দেশ, পাল্টে দেবো, তুমি আর আমি বোধহয়
কমরেড, তৈরি থেকো,গায়ে মাখো আলতা বরণ
আমি তুমি, আমি তুমি, এভাবেই লক্ষ চরণ।।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

গুরু গুরু

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

এই পাপিষ্ঠটা ল্যাম্পপোস্টের দয়ায় ইউরোপ গিয়া এখন ল্যাম্পপোস্টের অবদানের কথাই ভুইলা গ্যাছে... ইদানীং আর ভিড্যু-টিড্যু বাইরায় না... ব্যাটা মুরতাদ কাঁহিকা! রেগে টং

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।