গাড়ি চলে না (৪) - শাজাহানের স্বপ্ন আর তার বাস্তবায়নের উপায়

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি
লিখেছেন সুবিনয় মুস্তফী (তারিখ: সোম, ১৪/০১/২০০৮ - ৪:৪১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

auto
আমার শ্রদ্ধেয় পিতাজী কিছুদিন আগে তার ৩৫ বছরের চাকুরি জীবনের ইতি টেনেছেন। সেই ৬২-৬৩ সালে তিনি গ্রাম ছেড়ে ঢাকা চলে আসেন পড়াশোনার উদ্দেশ্যে। পরবর্তীতে অচেনা শহরে নিজের জন্যে একটা শক্ত অবস্থান তৈরী করতে গিয়ে প্রচুর পরিশ্রম করেছেন, অনেক রকম কষ্ট স্বীকার করেছেন। দেশের বাড়িতে বাবা-মা আর পাঁচ-পাঁচটি বোনের দায়িত্ব, শহরে তার নিজের সংসার তো আছেই।

সেসব দুর্দিনের গল্প আব্বা আমাদের সাথে তেমন শেয়ার করেন না, তবুও তার কথা থেকে মাঝে মাঝে অনুমান করতে পারি। বিদেশে এসে যেই ডিসলোকেশন নিজে বোধ করি সারাক্ষণ, পদ্মা-পারের ছেলে শাজাহানও হয়তো তেমন অস্বস্তিই বোধ করতো ঢাকা শহরের লাল-নীল বাতি দেখে।

আমার বাবার স্বপ্ন

এসব অনেক কারন মিলিয়ে আমার বাবার কাছে দুটো জিনিসের বিশাল গুরুত্ব - আর্থিক নিরাপত্তা আর মানসিক স্বস্তি। উনি আমাদের বোঝান, কি করে মিতব্যয়ী হতে হয়, কেন মিতব্যয়ী হতে হয়। ভবিষ্যতের কথা ভেবে কেন টাকা পয়সা সাশ্রয় করতে হয়। সেই ছোটকাল থেকেই বলে আসছেন। কিন্তু কে শোনে কার কথা। শাজাহানের শহুরে ছেলেরা তার কথা খুব একটা কানে তোলে না।

গত বছরখানেক ধরে তিনি আমার পেছনে লেগে আছেন, দেশে একটা ফ্ল্যাট বা জমি কেনার জন্যে। কয়েকদিন পর পরই তার ফোন পাই – তিনি বলেন, “বাজান, বসুন্ধরায় একটা প্লট আছে, মাত্র এত লাখ টাকা কাঠা। খোঁজ নিবো তোর জন্যে?” অথবা “র‌্যাংস-এর একটা নতুন অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিং তৈরী হইতেছে উত্তরায়... একটা ফ্ল্যাটের বুকিং দিবো?”

আমি ওনাকে বুঝাই যে আব্বা আমার সামর্থ্যে ঠিক কুলাবে না এখন উত্তরায় ফ্ল্যাট কেনা। চাকরির বয়স বেশীদিন হয়নি, বাজারের অবস্থাও বেশ টাল মাটাল। আমাকে কয়েকটা বছর টাইম দেন। কিন্তু উনি তা মানতে নারাজ। বলেন, দাম তো পরে গিয়ে আরো বাড়বে। (আমি ভাবি - সেটা কি আর জানি না, আব্বা? এই নিয়ে লিখে লিখে কিবোর্ড ক্ষয়ে ফেললাম!) দেঁতো হাসি

তো অনেকটা ওনার পীড়াপীড়িতেই গত জুলাই মাসে যখন দেশে গেলাম, আব্বার সাথে একদিন গিয়েছিলাম র‌্যাংসের অফিসে, বিজয় স্মরণীর মাথায়। (এই বিল্ডিংটাই বোধ হয় গত মাসে গুড়িয়ে দিয়েছে সিটিজি সরকার।) স্যুট-টাই পরিহিত এক স্মার্ট যুবক সেদিন আমাদের সাথে কথা বলেছিলো। বয়স আমার থেকেও ঢের কম হবে। কিছু রংবেরং-এর ফোল্ডার ছিল তার হাতে - র‌্যাংসের বিভিন্ন প্রজেক্টের বিবরণ। চকচকে কাগজে ছাপা ঝকঝকে রঙ্গীন ব্রোশিওর। আমার বাবার একেকটা স্বপ্ন।

বাংলাদেশের প্রপার্টি বুদবুদ - ডেভেলপারের ধান্দা

তো প্রাথমিক আলাপচারিতার পরে আমি কাজের কথায় আসলাম। মার্কেটিং-এর ছেলেটাকে জিগ্যেস করলাম যে কি রকম তাদের ফ্ল্যাটের দাম, কত স্কয়্যার ফুট, কি রকম কিস্তির বন্দোবস্ত আছে?

ছেলেটার সাথে অল্পক্ষণের কথায় যা বুঝলাম, তাতে একটু দমেই গেলাম। সে বুঝালো যে একটা 'প্রজেক্ট' নির্মানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত গড়ে দুই বছর লাগে। একবার ফ্ল্যাট তৈরী হয়ে গেলে র‌্যাংসের সাথে ক্রেতার আর কোন দেনাপাওনা থাকতে পারবে না। বাড়িতে ওঠার আগেই ক্রেতাকে পুরো মূল্য পরিশোধ করে দিতে হবে।

আমি বললাম ভাই, তার মানে তো দুই বছরে অনেক টাকার ব্যাপার। ধরেন একটা পঞ্চাশ লাখ টাকার ফ্ল্যাট কিনতে চাই। আমি যদি শুরুতে ১০% ডাউন-পেমেন্টও দেই (মানে ৫ লাখ টাকা), তারপরেও তো বাকি দুই বছরের মধ্যে আমাকে ৪৫ লাখ টাকা ফেরত দিতে হবে। মাসে প্রায় দুই লাখের মত আসে। এতো অনেক টাকার ব্যাপার।

সেই ছেলে নির্বিকার। গৌতম বুদ্ধের প্রশান্তি তার চোখে মুখে। আলতো হেসে আমাকে বললো – "জ্বী ভাইয়া, সবাই তো তাই দিচ্ছে।"

আমি মনে মনে বলি, শালার রেমিট্যান্সের সব টাকা তো তোমাদের হাতে এসেই ধরা দিলো। হাসি তো মুখে ফুটবেই। আবার প্রশ্ন করলাম - "মাত্র দুই বছর কেন? ফাইনান্সিং পিরিয়ডটা একটু বাড়িয়ে দেয়া যায় না? দুই বছরের বদলে ৫-৬ বছর সময় দিলে তোমাদের অমুক প্রজেক্টটা নিয়ে একটু চিন্তা করা যেতো।" তার জবাব – "সরি ভাইয়া, সেটা আমরা আসলে ঠিক করতে পারি না, প্রজেক্ট শেষ হয়ে গেলে আমরা আর কোন liability রাখি না।" আমি শুধালাম – "তাহলে আরেকটু দীর্ঘমেয়াদী ঋণের জন্যে কোথায় যেতে হবে?" সে কহিলো – "অনেক হাউজিং ফাইন্যান্স কম্পানী আছে এখন, আপনি ওদের সাথে কথা বলে দেখতে পারেন। কার্ড আছে আমার কাছে, কার্ড দেবো?"

আমি নীরবে কার্ড পকেটস্থ করে আব্বাকে সাথে নিয়ে বাড়ি ফিরলাম। ওনার মুখ কেমন কালো দেখাচ্ছে।

বাংলাদেশের প্রপার্টি বুদবুদ - হাউজিং ফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠানের ধান্দা

তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেলো যে আব্বারই এক বন্ধুর ছেলে কাজ করে এক হাউজিং ফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠানে। আব্বা তার সাথে আমার লাইন ধরিয়ে দিল। আমি গেলাম সেই হাউজিং ফাইন্যান্স ছেলের সাথে দেখা করতে।

সে আমার কাছে অনেক কিছুই খোলাসা করে দিলো। ঋণের পরিমান এতো। ঋণের মেয়াদ ১০, ১৫, এমন কি ২০ বছরও হতে পারে। সুদের হার একেক প্রতিষ্ঠানে একেক রকম। নিম্নে ১০-১২% থেকে শুরু করে উর্ধ্বে ১৫-১৬% পর্যন্ত যেতে পারে।

হাউজিং ফাইন্যান্স-এ এখন অনেক প্রতিষ্ঠান হয়েছে, তাই বাজারে অনেক প্রতিযোগিতা। ডেলটা ব্র্যাক, ন্যাশনাল হাউজিং, IDLC, ইত্যাদি ইত্যাদি। সবাই বাড়ি বা ফ্ল্যাট কেনার জন্যে ঋণ দিতে মুখিয়ে আছে। আমি সব শুনে-টুনে বললাম – “ঋণের শর্ত-টর্ত তো ভালোই লাগছে, কিন্তু সুদের হারটা এতো বেশী কেন?”

ও বললো – “আমরা যেহেতু অনেক দীর্ঘমেয়াদী ঋণ দিয়ে থাকি, তাই আমাদের রিস্কটাও বেশী। ধরেন ঋণ পরিশোধ চলাকালীন সময়ে ক্রেতার সাইডে যদি কোন রকম অঘটন ঘটলো? সে যদি ঋণের কিস্তি আর মেটাতে না পারে? তখন কার টাকাটা খোয়া যাবে? আমাদের। এই কারনেই মেয়াদ যত দীর্ঘ, আমাদের সুদের হারও তত বেড়ে যায়।”

তার কথা এখানেই শেষ না। সে বোঝালো – “দীর্ঘ মেয়াদের ঋণ নিলে কিন্তু আপনার মাসিক কিস্তিও অনেক কমে আসছে। তাই আপনার পক্ষে বড় ঋণ ম্যানেজ করা অনেক সহজ হচ্ছে। সাপোজ আপনি ২০ লাখ টাকা ধার নিলেন। সেটা ১০ বছরে ফেরত দেয়া আর ২০ বছরে ফেরত দেয়ার মধ্যে আকাশ পাতাল তফাত আছে। তাই লম্বা মেয়াদের ঋণে ইন্টারেস্ট একটু বেশি দিলেও শেষ বিচারে আপনিই লাভবান হলেন। কারণ ঋণটা আপনার জন্যে অনেক বেশী affordable হলো।”

(আমি তখন মনে মনে ভাবছি - ক্লাস সিক্স-এ বোধ হয় compound interest এর অংকগুলা করেছিলাম। ধুর, কিছু মনে আসছে না…)

*

সেই ছেলের কথা তাও থামে না। “আমাদেরটাও তো আপনাকে একটু দেখতে হবে। আর যে কোন ব্যাংকের মতোই আমরাও কিন্তু সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা ডিপোজিট রাখি। ওরা আমাদের সাথে একাউন্ট খুলে তাতে টাকা জমা রাখে। সেই টাকাটাই আমরা আবার হাউজিং লোনে খাটাই।

“কিন্তু পাবলিক আমাদের কাছে কেন টাকা জমা দিতে আসবে? বাজারে হাজারটা ব্যাংক আছে। সঞ্চয় একাউন্ট করতে চাইলে তো সোনালী বা স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে গেলেই হয়। ওদের ওখানে একটা সেভিংস একাউন্ট খোলা অনেক বেশী সহজ। তাহলে ওদের ছেড়ে মানুষ কেন আমাদের কাছে আসবে?

"আসবে বেশী লাভের আশায়। আসবে কারন আমরা বেশী রেট দিচ্ছি তাই। সোনালী ৭% দিলে আমরা দিচ্ছি ১০%। কিন্তু এই বাড়তি সুদও তো আমাদের কোনভাবে কভার করতে হবে। যারা হাউজিং লোন নেয়, তাদের থেকেই আমরা বেশী সুদটা উদ্ধার করছি। ডিপোজিট হোল্ডারকে যদি ১০% দেই, তাহলে হাউজিং ঋণগ্রহীতার থেকে নেবো ১৩% সুদ। আমাদের ব্যবসারও খরচ আছে - এই অফিসের খরচ, সবার বেতন, অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ। ঐ মাঝখানের যে ৩% - ওটা থেকেই operating expenses মেটে।"

আর প্রফিট-ও বোধ করি আসছে ঐ একই জায়গা থেকে।

কনভার্জেন্স-এর পথে

সেই ছেলের থেকে আরো জিনিস জানলাম। তাকে প্রশ্ন করলাম, "তোমরা গ্রাহকের ঋণগ্রাহ্যতা (creditworthiness) কিভাবে যাচাই করো? দেশে কি ক্রেডিট রেটিং সিস্টেম তৈরী হয়েছে এখনও, না হওয়ার পথে?" ও বললো, “আপনার কথাটা বুঝতে পারছি, তবে আমাদের এখানে সেটা এখনো চালু হয়নি। সবার জন্যে একটা কমন credit score তৈরী করা আপাতত সম্ভব না – information gathering ছাড়াও এখানে আইটি’র সীমাবদ্ধতা আছে।

"তবে আমরা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারগুলো সবই দেখি। আবেদনকারী যদি চাকুরীজীবি হয়, তাহলে আমরা দেখি তার মাসিক আয় কতো। একটা মিনিমাম পরিমানের বেতন না দেখাতে পারলে আমরা application পাশ করি না। সেই লোকের কর্মস্থল থেকেও আমরা সঠিক আয়ের প্রমাণ নেওয়ার চেষ্টা করি।"

আমি এবার জিগ্যেস করলাম, “ঋণের মেয়াদ ১৫-২০ বছরে এসে থামিয়ে দিলে কেনো? বাইরে তো হাউজিং মর্টগেজ ঋণ ২৫-৩০ বছর মেয়াদী হয় সাধারণত।” সে অশেষ ধৈর্য সহকারে বললো, “ভাইয়া, আমাদের এখানে ইন্ডাস্ট্রি তো এখনো নতুন। আগে তো ২০ বছর মেয়াদী ঋণও দিতাম না, এখন দিচ্ছি। আসলে ধীরে ধীরে আগাচ্ছি আমরা। তবে চিন্তা করবেন না, আমাদেরও হবে একদিন।”

আমি ভাবলাম, বটে। ছেলেটা ঠিকই বলেছে। যা দেখলাম চোখের সামনে, এরই নাম convergence। অন্তত আমাদের শহুরে অর্থনীতির কাঠামো ধীরে ধীরে বহির্বিশ্বের আদলে গড়া হচ্ছে।

*

আগামী পর্বে দেখবো পশ্চিমে বাড়ি মর্টগেজ নেওয়ার রীতিনীতি। অর্থনীতি সিরিজের আগেকার পোস্টগুলো নীচে তালিকাবদ্ধ করা হলো। ১ হলো বিশ্বব্যাপী আসন্ন মন্দার একটি ছোট ভূমিকা, ২ আর ৩-এ কিভাবে বিগত দশ বছরের বুদবুদগুলো সৃষ্টি হলো এবং তার ধ্বংসের বিবরণ।

- ১০০ ডলারের তেল, আর আমাদের অর্থনীতির ভবিষ্যত
- গাড়ি চলে না (১) - বিশ্ব অর্থনীতিতে ঘোর ঘনঘটা
- গাড়ি চলে না (২) - পিকাসো, টিউলিপ, ডটকম ও সাবপ্রাইম
- গাড়ি চলে না (৩) - ফিনিক্স থেকে বসুন্ধরার বাব্‌ল


মন্তব্য

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

এটা গেলো কেবল আর্থিক দিক। বসুন্ধরা আর র‌্যাংসের মত প্রপার্টি ডেভেলপারেরা আমাদের শহর ও শহরতলীর পরিবেশ কিভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে, সেটা নিয়ে বইয়ের পর বই লিখে ফেলা সম্ভব। তবে সেই গুরুদায়িত্ব স্পেশালিস্ট কারো হাতে ছেড়ে দেয়াই শ্রেয়।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

বস, আপনার লেখা বরাবরের মতোন গুল্লী হইছে।
লেখাটা ফলো করছি, কারণ ঘটনাটা জানা বিশেষ দরকার -- আপনার আর আমার বাবার প্রোফাইল এবং আপনার আর আমার প্রোফাইল খানিকটা মেলে কি না তাই।

ফ্ল্যাট একখান আমাদেরও দরকার....কিন্তু টাকা নেই। বুঝেন তাইলে আপনার অর্থনৈতিক প্যাচাল আমার কত্তো দরকার!!

রানা মেহের এর ছবি

লম্বা ইনস্টলমেন্ট কি
সত্যি বড় লোনের জন্য ভালো নয়?
সাধারণ মধ্যবিত্তের পক্ষে
একটু একটু করে বড় অংকের টাকা দেয়া সহজ।
সময় বেশী লাগলেও।
মানে আমি তাই জানি আরকি

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

না আপনি ঠিকই ধরেছেন, এখানে ব্যাপারটা পারস্পরিক সুবিধার। ক্রেতা পাচ্ছে একটু ধীরে সুস্থে ঋণ ফেরত দেওয়ার সুবিধা, আর ফাইন্যান্স কম্পানী পাচ্ছে মোটা সুদ। তবে সুদটা আসলেই অনেক মোটা, এই আর কি। ১৫% সুদ মানে হলো, আপনি যদি ১০০ টাকা ধার নিয়েছিলেন, তাহলে ৭ বছর পরে গিয়ে মোট ২০৫ টাকা ফেরত দিয়েছেন (১০০ আসল আর ১০৫ সুদ)। সেটা সিম্পল হারে সুদ - কম্পাউন্ড সুদ হিসাব করলে আপনি ৫-৬ বছরেই এতখানি সুদ দিয়ে ফেলেছেন।

তবে সেটা মুখ্য বিষয় না - এতেই যদি ক্রেতার কিনতে সুবিধা হয়, তাহলে এই ডীল-এ দুই পক্ষই রাজী হবেন।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

রানা মেহের এর ছবি

স্যরি আবার প্রশ্ন।
সিম্পল সুদ আর কম্পাউন্ড সুদ মানে কী?

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

হাহা আপনে তো আমারে চিপায় ফালায় দিলেন ভাই! এইখানে অনেক ইঞ্জিনিয়ার আছে, বিজ্ঞানের লোক - ওরা এইসবের ওস্তাদ। তয় আপাতত একখান লিংক দিয়ে কাট মারি। এরা কইতাছে কম্পাউন্ড হইলো সুদের উপরে সুদ
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

আমার বাবার কাছে দুটো জিনিসের বিশাল গুরুত্ব - আর্থিক নিরাপত্তা আর মানসিক স্বস্তি। উনি আমাদের বোঝান, কি করে মিতব্যয়ী হতে হয়, কেন মিতব্যয়ী হতে হয়। ভবিষ্যতের কথা ভেবে কেন টাকা পয়সা সাশ্রয় করতে হয়। সেই ছোটকাল থেকেই বলে আসছেন। কিন্তু কে শোনে কার কথা।

একেবারে আমাদের পরিবারের গল্প! আমরা তিন ভাই এসবের কোনোকিছুই শিখিনি। এ দেশে যে বাড়িতে বসবাস করি, নামে আমার হলেও তা এখনো মর্টগেজ কম্পানিরই!

অসাধারণ হচ্ছে সিরিজটি। বাঁধিয়ে রাখার মতো।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

সংসার ১০১! এই সিরিজ চলতে থাকলে কোনদিন "ম্যারি মি!" লিখে রেখে যেতে হবে মন্তব্যে। যেই হারে কাম-সমকাম-বিষমকাম-আকাম-কুকাম-বেকাম নিয়ে লেখা পড়ছি... মাথাই ভো-ভা করছে। ভুল করে ঢুকে পড়েছিলাম এই সিরিজে। এখন পুরা "ফাইস্যা গেছি!"

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

থেঙ্কু থেঙ্কু। তবে সচলকে আবার হেটেরোসেক্সুয়ালিটির দিকে ফিরায় আনতে হবে মনে হইতেছে। নর নারীর প্রেম নিয়া লেখাগুলা কই? একটা চাইর লাইনের প্রেমের কবিতা হইলেও তো সই!
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

সৌরভ এর ছবি

বিদেশে এসে যেই ডিসলোকেশন নিজে বোধ করি সারাক্ষণ, পদ্মা-পারের ছেলে শাজাহানও হয়তো তেমন অস্বস্তিই বোধ করতো ঢাকা শহরের লাল-নীল বাতি দেখে।

হুমম, ডিসলোকেশন এর মধ্যেই আছি।


তোমরা গ্রাহকের ঋণগ্রাহ্যতা (creditworthiness) কিভাবে যাচাই করো?

বাংলাদেশে যে কোন ব্যবসায়িক চুক্তিতে, (সেলফোন এর কানেকশন বলুন, আর কিস্তিতে প্লাজমা টিভি কেনা বলুন) গ্রাহকের গ্রহণযোগ্যতা যাচাইয়ের কোন ভালো উপায় এখনো নেই।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

সেটাই। Centralized credit rating system করতে গেলে তথ্য সংগ্রহের অবকাঠামো, টেকনোলজি সবই দরকার। আমাদের অর্থনীতি এখনও ঐ স্তরের ম্যাচিউরিটিতে পৌঁছায় নাই। আর যেহেতু ঋণগ্রাহ্যতা মাপার কোন রাস্তা নাই, এই কারনেই সুদের হারও আকাশে ঠেকে আছে। সুদ আর কিছুই না - শুধু ঝুঁকির একটা প্রতিফলন। যত বেশী ঝুঁকি মনে হবে, তত বেশী সুদের হার হবে। কিন্তু যখনই কাস্টমার সম্পর্কে এই রকম নির্ভরযোগ্য তথ্য সহজলভ্য হবে, তখনই দেখবেন সুদের হার আস্তে আস্তে নামা শুরু করেছে। কারন ঝুঁকিও তখন কমে আসছে।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

আরিফ জেবতিক এর ছবি

এই সিরিজটিকে একটি ই-বুকের আওতায় নিয়ে আসুন । ভবিষ্যতে খুজেঁ পেতে সুবিধা হবে ।

বাংলাদেশের হাউজিং লোন সম্মন্ধে একটা কথা শুনি যে , ২০ লাখ টাকা ঋন নিলে , ৩০ লাখ টাকা শোধ দেয়ার পর আর মাত্র ২০ লাখ টাকা বাকী থাকে ।
বিষয়টি কি সত্যি ? হাউজিং লোন নিয়েছেন এমন কারো অংশগ্রহন আশা করি এই আলোচনায় ।

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

সরেস কমেন্ট দেঁতো হাসি তবে একশো ভাগ খাঁটি কথা। একটা লিংক পাইলাম, খুবই উপযোগী কম্পাউন্ড ইন্টারেস্ট মাপার জন্যে।

১৫ বছর ধরে আমি যদি প্রতি মাসে ১০০ টাকা কিস্তি দেই, তাহলে সুদ ছাড়া হইতো - ১০০ x ১২ x ১৫ = ১৮,০০০

সিম্পল সুদের হারও যদি ধরি ১২%, তাইলে আরো ১২ টাকা x ১৫ = ১৮০ টাকা যোগ করলাম সাথে।

কিন্তু যদি কম্পাউন্ড ধরেন, তাহলে শেষমেষ দেনা চুকাতে আপনার ৫০,০০০ টাকার বেশী চলে যাবে ১৫ বছরে। মানে অরিজিনালের প্রায় তিন গুণ।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

সবজান্তা এর ছবি

যথারীতি গুল্লি

কম্পাউন্ড ইন্টারেস্ট মানে কি ? বাংলায় চক্রবৃদ্ধি সুদ বলে তাই কি ?

যদি তাই হয়ে থাকে, তবে ব্যপারটা মনে হয় অনেকটা এই রকম। আপনি ১০০ টাকা নিলেন ৫% হার সুদে। প্রথম বছর দিলেন ৫ টাকা সুদ। পরের বছর ও দিবেন ৫ টাকা সুদ। মানে আপনি যত বছরই যাক না কেন, একদম প্রকৃত যেই আসল অর্থাৎ ১০০ টাকা তার উপরই সুদ দিবেন।
অপরপক্ষে, চক্রবৃদ্ধিতে, আপনি প্রথম বছরে সুদ দিলেন ৫টাকা। সেটা আসলের সাথে যোগ হয়ে হল, ১০৫টাকা। পরের বছর আপনি এই ১০৫ টাকার উপর ৫% সুদ দিবেন। এইভাবে বাড়তে থাকবে।

অনেক কথা বললাম বটে, তবে কম্পাউন্ড মানে কি চক্রবৃদ্ধি সুদ ?

আচ্ছা এইবার আমার একটা প্রশ্ন রাখতে চাই। লম্বা মেয়াদের জন্য হাউজিং কোম্পানিগুলোর বেশি সুদের হার নেওয়ার আরেকটা কারন দেশের মুদ্রামানের অবনতি না ? যেইভাবে আমাদের দেশের টাকার দাম কমছে, তাতে কি বছর যত বাড়বে, সুদের হার বাড়ানোও প্রয়োজনীয় হয়ে যাচ্ছে না ?

অবশ্য টাকার মূল্য বাড়লে আরেক কথা, তবে সে আশায় মনে হয় গুড়ে বালি !
-----------------------------------------------------------
অলমিতি বিস্তারেণ

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

সবজান্তা - ঠিকই ধরেছেন, কম্পাউন্ড আর চক্রবৃদ্ধি একই জিনিস। আর টাকার মানের সাথে সুদের হারের একটা সম্পর্ক আছে, কিন্তু সেটা বৈদেশিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বেশী প্রযোজ্য।

ধরেন এক বিদেশী ইনভেস্টর বাংলাদেশ সরকারের একটা বন্ড কিনতে চায়। তার কাছে ডলার আছে, সেগুলা ভাঙ্গিয়ে সে টাকা করে নিলো, এবং সেই টাকা দিয়ে সে দেশীয় বন্ড কিনলো। কিন্তু সে এও জানে যে প্রতি বছর টাকার মূল্য এতই কমছে যে বন্ড থেকে সে যা সুদ পাচ্ছে টাকায়, বছর কে বছর তার 'ডলার দাম'-ও কমে যাচ্ছে। ২০০৬ সালে ১০০ টাকা যদি হতো বন্ড থেকে আহরিত সুদ, এবং সেই ১০০ টাকা থেকে সে যেই ডলার ইনকাম পেতে পারতো, ২০০৭ সালে এসে সেই একই ১০০ টাকা থেকে সমপরিমাণ ডলার সে পাবে না। তাই ২০০৭ সালে সে আরো বেশী সুদ দাবী করতেই পারে। তাই অর্থনীতিতে বেশী সুদ হওয়ার এটা একটা কারন - টাকার devaluation-এর কারনে বিদেশী বিনিয়োগকারীরা তাদের ইনকাম কম দেখতে চায় না।

তবে রিয়েল এস্টেট কম্পানীদের জন্যে এই exposure to devaluation টা কম। কারন তাদের লেনদেন, কেনা এবং বেঁচা দুটাই দেশীয় মুদ্রায়। অবশ্য হ্যাঁ এরা যদি বাইরে কোনভাবে টাকা চালান করে দিয়ে থাকে (যেটা বাংলাদেশে অসম্ভব কিছু না) তা হলে তারাও তাদের ক্লায়েন্ট থেকে উত্তরোত্তর বেশী সুদ দাবী করতে পারে। যদিও আমার ধারণা যে হাউজিং সেক্টরে বেশী সুদের মূল কারণ এখন পর্যন্ত ঋণগ্রহীতার ঝুঁকি অথবা default risk। সেই রিস্কটা সঠিকভাবে পরিমাপ করা যাচ্ছে না বলেই সুদের হার বেশী হয়ে আছে।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

রাগিব এর ছবি

@সুবিনয়,
আপনার লেখা এতোই ঝরঝরে, আপনাকে উইকিপিডিয়াতে কোন মুলা ঝুলালে আবার ফেরত আনা যাবে, সেই ফন্দি ফিকির করছি!!

আপনার/আমার বাবাদের প্রোফাইল পুরা এক। বন্ধুরা অনেকে দেশে প্লট বুকিং টুকিং দিচ্ছে বলে শুনি। গ্র্যাড স্টুডেন্টের বেতনে আপাতত তা সম্ভব না, তাই মাথা ঘামাই না। তবে আমার পরিচিত একজন কয়েকদিন আগে দেশে গিয়ে তার বসুন্ধরার প্লট, থুক্কু, ডোবাটা দেখে আসছে। পানির উপরে উঠে জমি হতে ওটার বছর দশেক লাগবে বলে আশা করা যেতে পারে।

ঢাকায় আমার মনে হয়েছে, বড় আকারের হাউজিং প্রজেক্ট দরকার ... প্রয়োজনে সরকারী উদ্যোগে। বিশ-পচিশ তলার অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিং না করলে ঢাকার লাগামহীন জনস্রোত কই যাবে!

রিহ্যাব ইদানিং বিদেশেও রিয়াল এস্টেট মেলা করছে। তবে শুনেছি, প্রবাসীরা নাকি এখনও অ্যাপার্টমেন্ট কিনার হুজুগে আসেনি। এখনো সনাতনী চিন্তাধারায় জমি কিনে বাড়ি বানানোর চিন্তা করে, তাই রিহ্যাবের ঐসব মেলা লাভের মুখ দেখেনি।

তবে, বাংলাদেশে জমি/অ্যাপার্টমেন্ট একটা বিনিয়োগ বটে। এর দাম কখনোই কমেনি। ব্যাংকের চক্রবৃদ্ধি সুদের চাইতেও বেশি হারে জমি বা অ্যাপার্টমেন্টের দাম বেড়েছে।

----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
http://www.ragibhasan.com

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

রাগিব, এর আগের পর্বে এবং তার মন্তব্যগুলোতে আমি হাউজিং বাবল এবং তার কুফলের একটু গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। ঢাকায় যা হচ্ছে, তা একটা লিকুইডিটি বাব্‌ল ছাড়া কিছুই না। যদিও জমি কিনে রাখার ইচ্ছাটা খুবই যুক্তিযুক্ত (rational) - তথাপি এটা আমাদের অর্থনীতিকে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

সবচেয়ে বড় ক্ষতি হলো অনুৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ। ফিলিপিন, ভারত, শ্রীলংকা, এরা রেমিট্যান্স ব্যবহার করেছে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য আর অবকাঠামো নির্মানে। আর আমরা? জমি কিনে তার দাম বাড়াচ্ছি, দেশের উন্নয়নে রেমিট্যান্সের প্রভাব অল্প। আরও একটা কুফল হলো, রেমিট্যান্স যেহেতু হয় জমি নয় short term consumption খাতে যাচ্ছে, সেটা মূল্য স্ফীতিরও একটা কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আমাদের খুব জরুরী দরকার এই সাড়ে ছয় বিলিয়ন ডলার আমাদের শিল্প ও অবকাঠামোর উন্নয়নে পরিচালিত করা। অনেক পিছিয়ে পড়ছি আমরা এই দিক দিয়ে।

ডোবার ভরাটের কথা বলেছেন। ২০ বছর আগে তেঁজগা গুলশান লিংক রোডের দুই পাশে ছিল শুধু জলা আর জলা। আজ সেটা ভরাট করে 'নিকেতন' বানানো হয়েছে। এই একই কাজ আরো হাজার জায়গায় হচ্ছে। এবং এটা ঢাকার জন্যে একটা massive environmental disaster হয়েছে। এই জলাভূমি যে কত প্রয়োজন আমাদের শহরের পরিবেশের সুস্বাস্থ্যের জন্যে, তা নিয়ে দেশের পরিবেশ গবেষকরা অনেক লেখালেখি করেছেন। কিন্তু হাউজিং লবি'র দাপট আর জোর-জবরদস্তির কাছে তা কিছুই না। ভরছে জলা, মরছে পরিবেশ।

ঢাকায় আমার মনে হয়েছে, বড় আকারের হাউজিং প্রজেক্ট দরকার ... প্রয়োজনে সরকারী উদ্যোগে। বিশ-পচিশ তলার অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিং না করলে ঢাকার লাগামহীন জনস্রোত কই যাবে!

কঠিন দ্বিমত পোষণ করছি হাসি ঢাকাতে আর মানুষ ঠাসানো সম্ভব না। দুই কোটি লোক হয়েছে, ঢাকার অবকাঠামো আর কুলিয়ে উঠতে পারছে না। রাস্তাঘাট, পানি সরবরাহ, বিদ্যুত ব্যবস্থা সব কিছুই ধ্বসে পড়ছে। আপনি ২০-২৫ তলা বিল্ডিং করে তাতে কিভাবে পানি দিবেন, বা বিদ্যুত দিবেন? একটা রাষ্ট্রের রাজধানীর অবকাঠামোর অবস্থা কতটা করুন হতে পারে, ঢাকা তার প্রমাণ। Environmental expert রা দেখিয়েছেন যে ঢাকার মাটির নীচে table water কি আশংকাজনক হারে নামছে। উদ্ধৃতি -

According to the Water Supply Authority, Dhaka city is facing two most critical problems – 1) accelerated depletion of ground water reservoir, because majority of the water bodies and other sources of ground water recharge is being used up for fast urbanization, and 2) increasing trace of toxicity in the ground water, because the few remaining rechargeable sources that are left today are highly contaminated and are directly contaminating the primary source of potable water – the ground water.

মোদ্দা কথা ঢাকার অবস্থা বেশ খারাপ এখন। ২০-৩০ বছর পরে গিয়ে এই রকম রিসোর্সের জন্যে মানুষে মানুষে মারামারি লাগবে। ঘন্টা বাজা শুরু করেছে।

তাই ঢাকায় আসা মানুষের স্রোত জরুরী ভিত্তিতে কমানো দরকার। এটা তখনই সম্ভব হবে যখন উন্নয়নের বিকেন্দ্রীকরণ করা হবে - decentralized development দিতে পারবে সরকার। মফস্বল, গ্রাম, জেলা শহর, গঞ্জ - এই সব জায়গায় উন্নয়ন হলে মানুষের ঢাকায় আসার আগ্রহ কমে যাবে। এটা ঢাকা শহর এমনকি দেশের দীর্ঘমেয়াদী সুস্বাস্থ্যের জন্যে অতি আবশ্যক।

আশা করি দ্বিমত প্রকাশে কিছু মনে করেননি। শুধু যে তর্কের খাতিরে তর্ক করছি না, সেটা নিশ্চয়ই বুঝবেন! হাসি

-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

দিগন্ত এর ছবি

বাংলাদেশের ডিসেন্ট্রালাইজেশন দরকার সেটা আমি বাংলাদেশে কাটানো প্রথম দুঘন্টাতেই বুঝেছিলাম। চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে ঢাকা আসতে দেখি ঢাকা কি বড় আর তুলনায় চট্টগ্রাম কিছুই না। অন্তত ৩-৪টে সমমাপের শহর না থাকলে ১৫ কোটির দেশ চলে কি ভাবে?
হাউসিং নিয়ে এখানে কি চলছে সেটা লিখব পরের কমেন্টে।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

দিগন্ত এর ছবি

এখানে হাউসিং বাবল চলছে মূলত বিদেশ-ফেরত ইঞ্জিনিয়ার আর দেশী সফটওয়ার বা ফার্মেসীস্টদের হাত ধরে। তারাই ইনভেস্ট করছে, আবার কয়েক বছর পরে বেচে দিচ্ছে। সব লোকে যদি এক ধারে শহরে আসতে চায় তাহলে দাম তো বাড়বেই। তার ওপর আছে প্রাচীনপন্থীদের চাপ। সরকার মাঝে লোনের সুদ বাড়িয়ে দিয়ে বাজারে রাশ ধরতে চেয়েছিল, কিন্তু আপাতত সরকারকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখিয়ে রিয়েল এস্টেটের রমরমা চলছে।
তবে লোন ব্যাপারটা এখানে সহজলভ্য, কারণ সাধারণত রিয়েল এস্টেটের লোন শোধ হয়ে যায়। লোন দেয় মূলত ব্যাঙ্কই - হাউসিং ফাইনান্স কোম্পানীরা ততটা সুবিধা করতে পারে নি। ব্যাংক লোন দেবার আগে প্রপার্টি দেখেশুনে নেয় - যে তার দাম ঠিকঠাক আছে কি না। লোন নির্ভর করে ব্যাঙ্কের মূল্যায়নের ওপর - বিক্রেতা কি দাম হাঁকছে তার ওপর নয়। কাজেই কেউ হঠাত করে আকাশছোঁয়া দাম চাইতে পারছে না। তবে ব্যতিক্রম আছেই।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

সুবিনয় ভাই:
চমৎকার ধারাবাহিক। আগের ২ পর্ব অফলাইনে পড়েছিলাম, মন্তব্য করা হয়নি।
প্রিয় পোস্টে নিলাম।
অনুরোধ - এই সিরিজ নিয়মিত লিখুন।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।