কথা ছিলো রক্ত-প্লাবনের পর মুক্ত হবে শস্যক্ষেত

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি
লিখেছেন সাক্ষী সত্যানন্দ [অতিথি] (তারিখ: শুক্র, ১৬/১২/২০১৬ - ৮:২৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে
পাতা কুড়োনির মেয়ে শীতের সকালে
ওম নেবে জাতীয় সংগীত শুনে পাতার মর্মরে।
কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে
ভূমিহীন মনুমিয়া গাইবে তৃপ্তির গান জ্যৈষ্ঠে-বোশেখে,
বাঁচবে যুদ্ধের শিশু সসন্মানে সাদা দুতে-ভাতে।
কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে
আমাদের সব দুঃখ জমা দেবো যৌথ-খামারে,
সম্মিলিত বৈজ্ঞানিক চাষাবাদে সমান সুখের ভাগ
সকলেই নিয়ে যাবো নিজের সংসারে।
-হেলাল হাফিজ

১।

ভি-খচিত কাদের্মোল্লার তিন বছরপূর্তিতে কাচ্চি খুঁজলাম খুব করে, পেলামই না। মফস্বলমার্কা গলিতে এই এক সমস্যা। আজ ভাবলাম পুষিয়ে দেব, যাব্বাবা। দোকানদার বিরস মুখে বললে কাচ্চির কারিগর ছুটিতে গেছে। আমিও ছুটি কাটাই, কাচ্চিরাধুঁনীর আর কি দোষ? শেষমেশ মোরগপোলাওই ভরসা। খেতে তো হবে নাকি? আর উৎসবের দিনে ডালভাত মুখে রোচে না। অথচ, পয়তাল্লিশ বছর আগে একজন আজাদের সেই ডালভাতটুকু খাবার সুযোগও হয়নি। আজকের ‘ইয়ো বাড্ডি’ গুলো কি জানে, আজাদদের শেষ ভাত খেতে না পারার বিনিময়ে তারা পিতযা হাট, শর্মা হাউজ কিংবা বার্গার কিং-এ মনের সুখে হ্যাং আউট করে বেড়াচ্ছে? কেউকেউ স্মার্টনেস আর দেশপ্রেমের মিশেল দেখাতে গিয়ে “হেপ্পী বাড্ডে, বাংলাদেশ” বলে বিকট স্বরে স্ট্যাটাচ্ছে। কতটা পথ পেরুলে তাকে পথিক বলা যায়, ফ্রান্স?

২।

কফি বানিয়ে টেবিলে রাখতে না রাখতেই জঙ্গীবিমানের বিকট আওয়াজ শুনে বের হলাম। তিনটে প্লেন পাশাপাশি সমান্তরালে ছুটে চলে ক্যামনে? আমি তো পাশাপাশি তাল মিলিয়ে হাঁটতেই হিমশিম খেয়ে যাই! মাঝেরটা লাল আর পাশের দুটো সবুজ ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে শাঁইইই করে উড়ে গেলে হার্টবিট বেড়ে যায় কেন? কি আছে লাল সবুজে? একটা মনে হয় মিগ, সেই ডিসেম্বরেও কি এভাবে শাঁইই করে ফরমান আলীর বাংকারে গুঁতো দিত মিত্র মিগ? প্লেনের শব্দ শুনলেই আমার ‘অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট’ এর পল বোমারের কথা মনে পড়ে, কখনো মতিউর। এসব আবোল তাবোল ভেবে ফিরে এসে দেখি কফি জুড়িয়ে গেছে। জুড়ানো কফির চাইতে বিটকেল পানীয় খুব কম আছে। আচ্ছা, কালো গাড়িটা নিয়ে একটা ক্র্যাক এটাক করে এসে রুমিরও কি আয়েশ করে সিগ্রেটের সাথে এক মগ ধোঁয়াটে কফি খাবার শখ হত? রুমীর কিংবা রুমীদের না খাওয়া কফিগুলোই কি দিনের পর দিন খেয়ে যাচ্ছি আয়েশ করে, কোনো চিন্তাভাবনা ছাড়াই?

৩।

বহুদিন পর একটু অলস সময় পেয়ে গতকাল শাহবাগ গিয়েছিলাম বই ঘাঁটতে। সামনে বই মেলা, একটা রিহার্সেলের ব্যাপার আছে না? পাঠক সমাবেশে ঢুকে মেজাজটা খিঁচরে গেল, এত অগোছালো কেন এরা? পরে বিরক্ত হয়ে আজিজে গেলাম। চারিদিকে কেবল লাল-সবুজ কিংবা সবুজ-লাল টিশার্ট, ফতুয়া, হুডি আর শালের ছড়াছড়ি। খারাপ না ব্যাপারটা। শেষমেশ ‘সেলিনা পারভীন স্মারকগ্রন্থ’ আর ‘দাসপার্টির খোঁজে’ পেয়ে কিনে ফেললাম। সাথে দু-চারটে সেবার বই। পড়ুয়ার পাশের সিডি-ক্যাসেটের দোকানে বাজছে স্বাধীন বাংলা বেতারের গান। আজাদের লং-প্লে লিস্টের সবগুলো গান তো আমার মুঠোফোনের স্মৃতিখন্ডেই আছে। আজাদ বেঁচে থাকলে কি গতকাল সন্ধ্যায় শাহবাগে বব ডিলানের সিডি’র খোঁজ করতে আসত? সেলিনা পারভীনেরা নেই বলেই কি মতি-মিলন গংরা যা-খুশি-তাই লিখে দু-পয়সা কামিয়ে যাচ্ছে? জহির রায়হানেরা নেই, এই অভিমানেই কি তারেক মাসুদও থাকতে চাইলেন না? জীবন এত সুন্দর কেন? একজন বদিউল আলম হাসিমুখে তার জীবনের সৌন্দর্যটুকু আমার জন্য জমা রেখে গেছে তাই বলেই কি?

৪।

ডিসেম্বরের ১৬ তারিখটা কেবলই উৎসব হতে হতেও হয়না তার দুদিন আগের তারিখটার জন্য। ইউভাল নোয়াহ হারারির স্যাপিয়েন্স পড়ছিলাম গত সপ্তাহে। আসলেই স্যাপিয়েন্সের মত এমন বিটকেলে খাচ্চর প্রকৃতির ‘প্রজাতি’ আর আছে কি? অন্য প্রসঙ্গে লেখা শহীদ কাদরী মাথার মাঝে বেজে ওঠেন- ‘অস্বীকার করার উপায় নেই ওরা মানুষের মতো দেখতে/ এবং ওরা মানুষই/ ... ... /এর চেয়ে ভয়াবহ কোনো কথা আমি আর শুনবো না কোনোদিন’। এখন অবশ্য, এমন ভয়াবহদের অস্ত্রহাতে কমই দেখা যায়। তাদের খুঁজে পাওয়া যায় সেলিব্রিটি ফেসবুক প্রোফাইলে খিস্তি আওড়াতে কিংবা টক-শো মগহাতে মিথ্যের মকশো করতে। কসাই কাদের মোল্লার পুনর্জন্ম হয় পিনোকিও ভট্টশালী নাম নিয়ে। কিংবা কামারুজ্জামানের ছাগুলে দাড়িটুকু ঘন হয়ে গোঁফ হয়ে ফুটে ওঠে গুশ্বর চন্দ্র নামে। এবং চাপাতির চেয়ে অনেক মোলায়েম জিহবার কোমল অথচ মাপা আঘাতে তারা প্রতিটি দিনকেই করে তোলে একেকটি ১৪ ডিসেম্বর।

৫।

জীবন যায় জীবনের মত। সকালে বাস, বিকেলে বাস, মাঝে কাজ কিংবা অকাজ। শুক্রবার সকালে একটু বর্ধিত গড়াগড়ি। আহা স্বাধীনতা! এরই ফাঁকতালে নেত্রকোনা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া-গাইবান্ধায় ১৯৭১ ফিরে আসে, আমরা অবশ্য ফিরে তাকাই না। এত সময় কোথায় বাহে? খাচ্ছি-দাচ্ছি-বেতন পাচ্ছি, এইতো স্বাধীনতা। ওসব যায়গার মমিন ভাইয়েরা একটু বেশি স্বাধীনতা পেলে পাক না। ২০১৩ তে বিশাল একটা কাজ হয়ে গেছিল। মোল্লাসায়েব ঝুলে গেছিল। তারপর কামাড়ু, মইত্যা, সাকা- একে একে নিভেছে দেউটি। জ্বলেও উঠেছে অনেক নতুন নতুন বিষাক্ত আলো কিংবা অন্ধকার। ওদিকে বার্গম্যান আর রাজ্জক উকিলের চাকরি গেছে। এদিকে নতুন ঘটনা ঘটতে থেকেছে। ইয়ামেন ভাই’র মারফতে জানলাম এই জোয়ারে ভেসে গেছেন মেজর কামরুল হাসান ভুঁইয়াও। অনেকদিন আগে চাচা সাবধান করেছিলেন এই লোকের সম্ভাব্য ল্যাঞ্জা সম্পর্কে- বিশ্বাস হয়নি, আজ হচ্ছে। সম্মানিত ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইবুনাল’ এর বিচারকগণ বিচারের সময় রায়ে ‘বুদ্ধিজীবী হত্যা’ বিষয়টিকে বিশেষভাবে উল্লেখ করে বেশ বড় বড় কয়েক মাথার সাথে এই কলঙ্কের কালি জুড়ে দিয়েছেন। ধরা যাক ‘মতি মিয়া’ নামের এক খুনী ‘মুনীর চৌধুরী’ নামের এক অধ্যাপককে খুব করে ফাঁসির আদেশ পেয়েছে। অর্থাৎ, মতি মিয়া ‘অভিযুক্ত’ না, প্রমাণিত ‘আসামী’। মানইজ্জত রক্ষার্থে মতি মিয়ার চ্যালা চামুন্ডারা একটা কাজই করতে পারে- মুনীর চৌধুরীর খুন হওয়া ঠিকই ছিল এই কথা জপ করে। মতির হারানো ইজ্জৎ যদি ওঠানো না যায়, তবে মুনীরেরটা আরো নামিয়ে দেয়া যাক। দেশী বলদেরা একসময় সেটাই বিশ্বাস করতে শুরু করবে। এমন কিছু কি কোথাও ঘটছে, বাহে?

[ বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ বিজয় দিবসের পাশাপাশি আজকে সামিয়া হোসেনের তিন দশক পূর্তিও বটে। সামিয়া হোসেনকে চিনেন না? ইনি সোফি আবীরের মা, এখন আবার জিগায়েননা সোফি ক্যাডা, গুগলায় দ্যাখেন। এই হযবরল মার্কা লেখাটা সামিয়া হোসেনের জন্য! ]


২ পৌষ, ১৪২৩,
১৬ ডিসেম্বর, ২০১৬
বাংলাদেশ


মন্তব্য

জীবনযুদ্ধ এর ছবি

হয়তো তাই সাক্ষী, হয়তো তাই.

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

হুমম মন খারাপ

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

কাদের মোল্লা, মোল্লা কাদের? / পাকিস্তানে ল্যাঞ্জা যাদের।

ভালো লিখেছেন সাক্ষী সত্যানন্দ।

---মোখলেস হোসেন

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

ছড়ার মুডেই আছেন বোধহয়! ইয়ে, মানে...

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

হাঁসের দল উড়ে যাবার পর থেকেই।
--মোখলেস হোসেন

অতিথি লেখক এর ছবি

একটা জাতির অনেক মানুষ এমন কীভাবে হয়, যারা নিজেদের পরিচয় কখনো মনে রাখতে পারে না?
একটা জাতির অনেক মানুষ এমন কীভাবে হয়, যারা নিজেদের অর্জনকে কেবলই খাটো করে যায়?
একটা জাতির অনেক মানুষ এমন কীভাবে হয়, যারা পরের গোলামী করার জন্য সর্বদা মুখিয়ে থাকে?
একটা জাতির অনেক মানুষ এমন কীভাবে হয়, যারা নিজেদের বীরদেরকে কেবলই অপমান করে যায়?
একটা জাতির অনেক মানুষ এমন কীভাবে হয়, যারা সহযোদ্ধাদের সাথে কেবল বেঈমানী করে যায়?

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

বব ডিলানের ভাষায়- জবাব বাতাসে উড়ে বেড়াচ্ছে!

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

ল্যাঞ্জা লুকাইয়া রাখা বড়ই কঠিন কাজ! "বুদ্ধিজীবীরা নির্বোধের মতো মারা গেছে", গুয়েশ্বরের এই উক্তির সাথে কামরুল হাসান ভুঁইয়ার মনোভাবের মিল খুঁজে পাচ্ছেন? কে প্রানের তাগিদে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিল, আর কে গিয়েছিল পাকিদের হাত থেকে জীবন বাঁচাতে, সেই হিসাবটাও মনে হয় করে ফেলা দরকার ছিল।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

মন খারাপ

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

আয়নামতি এর ছবি

অতীত মনে রাখাটা স্মার্টনেসের লক্ষণ না এখন, বুচ্ছেন! সামনে আগাইতে হলে স্মার্ট হতে হবেক। কবি বলেছেন, 'থাক ওরা পড়ে থাক ইতিহাস নিয়ে,
জীবনের দীনতা, হীনতা নিয়ে( আজব লাগে না! যখনই শুনি আমারও লাগে..)'। যে জাতির একটা বিরাট অংশ স্বাধীনতা দিবস আর বিজয় দিবসে পার্থক্য করতে ব্যর্থ, ৩০ লক্ষ শহীদ তাঁদের জীবন দিয়ে বাংলাদেশকে শহীদ করে গেছেন এমন(যদিও ঐ বেকুব সবার প্রতিনিধিত্ব করেন না, তারপরও ইতিহাস সংশ্লিষ্ট উহাদের অধিকাংশের অবস্হাও তথৈবচ, সে নমুনা আশেপাশে সহস্র পাইবেন) মন্তব্য নির্লিপ্তভাবে করতে পারে তাদের কাছে শহীদ রুমী, আজাদ, বদিউল আলমেরা অজানা ভীনদেশি হিসেবেই বিবেচিত(হয়ত)।
------
মেজর কামরুল হাসান ভূঁইয়া সম্পর্কে একটু বিস্তারিতভাবে জানতে ইচ্ছুক। কীবাবে সেটা সম্ভব হবে জানাবেন প্লিজ! এই লোকের বইগুলো অতি সমীহ নিয়ে পড়েছি/পড়ি। দারুণ দ্বন্দে পড়ে গেলাম ভায়া। ইয়ে, মানে...
-----

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

ইনাকে (সরাসরি আলোচনা সহ, কারো বরাতে না) সবসময় মুক্তিযুদ্ধের অন্যান্য ফ্রন্ট, বিশেষত রাজনৈতিক আর কূটনৈতিক ফ্রন্টকে অস্বীকার করতেই দেখে এসেছি। লেখনীর গুনে তাঁর এই অবস্থানকে এতদিন ওভারলুক করে এসেছি, এখন তাঁকেই ওভারলুক করার অভ্যাস করছি। মন খারাপ

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

খুব কষ্ট পেয়েছি। মেজর কামরুল হাসান ভুঁইয়ার গবেষণালব্ধ লেখালেখির ভক্ত ছিলাম, এখনও আছি। তিনিও শেষ পর্যন্ত কাদের সিদ্দিকির মত পতিত হয়ে গেলেন? পুরো ভিডিওটি দেখলাম। ব্যক্তি কামরুল হাসান ভুঁইয়ার প্রতি যতটুকু শ্রদ্ধাবোধ ছিল তা এক নিমিষে হাওয়ায় মিলিয়ে গেল। সত্যিই, একজন রাজাকার সবসময় রাজাকার। কিন্তু একজন মুক্তিযোদ্ধা সবসময় মুক্তিযোধা নন। নুজহাত চৌধুরী (শহীদ আলীম চৌধুরীর মেয়ে) জন্য অনেকে কষ্ট লেগেছে। একজন শহীদ বুদ্ধিজীবীর কন্যার সামনে তাঁর বাবাকে নিয়ে এইভাবে কথা বললে সহ্য করা কঠিন। তারপরেও তিনি যেই ধৈর্য নিয়ে জবাব দিয়েছেন সেটি সত্যিই প্রশংসনীয়। একটা অনেক বড় ষড়যন্ত্র মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে ধীরে ধীরে। আমাদের অনেক সাবধান এবং সচেতন হতে হবে।

ফাহমিদুল হান্নান রূপক

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

মাফ করবেন, মুক্তিযুদ্ধ যে একটা মাল্টি-ডাইমেনশনাল টিমওয়ার্ক সেটা এই ভদ্রলোক কখনোই স্বীকার করেননি। তাঁর ময়দানে যুদ্ধের অভিজ্ঞতাকে সম্মান দেখিয়ে এই ব্যাপারটা এতদিন জোর করে ওভারলুক করে এসেছি, আর পারা গেল না এই আর কি। তাঁর লেখনী চমৎকার, মুগ্ধতা নিয়েই পড়েছি। ফৌজি মুক্তিযোদ্ধারা সাধারনত মুক্তিযুদ্ধকে একটি রুটিনমাফিক সামরিক যুদ্ধ মনে করে থাকেন। এর বিপরীতে সাবেক মেজর হওয়া স্বত্বেও এঁকে দেখেছি মুক্তিযুদ্ধকে 'জনযুদ্ধ' হিসেবে স্বীকার করতে। এই পয়েন্টেও শ্রদ্ধা ছিল। হায়, সবই অতীত!

ইন্টারেস্টিং হল, মীর কাশেম এবং নিজামীর মামলায় 'পরিকল্পনামাফিক বুদ্ধিজীবি হত্যা' ব্যাপারটাকে বিশেষভাবে হাইলাইট করে 'সুপিরিয়র রেস্পন্সিবিলিটি' সহ বিভিন্ন আইনী অভিযোগে আসামীদের অভিযুক্ত এবং ক্রমান্বয়ে প্রমাণসাপেক্ষে দণ্ডিত করা হয়েছে। এর পর থেকেই কি 'হঠাৎ' ১৪ ডিসেম্বরের শহীদ বুদ্ধিজীবিদের ছোট করার প্রচেষ্টা শুরু হল? এই অবস্থানটি আগে কখনোই দেখা যায় নি কিন্ত। এই সংক্রান্ত ট্যু দ্য পয়েন্টে সঞ্চালক যখন প্রশ্ন করলেন, মেজর কামরুল আক্ষরিক অর্থেই এডমিরাল জেনারেল আলাদীন স্টাইলে "শুনতে পাইনা" বলে এড়িয়ে গেলেন, ব্যাপারটাও ইন্টারেস্টিং!

আর তিনি স্মৃতিচারণমূলক অনেকগুলো বই লিখেছেন, ভাষা ও লেখনী অত্যন্ত চমৎকার। প্রায় সবগুলোই পড়েছি এবং সংগ্রহেও আছে। তাঁর কোনও গবেষণাগ্রন্থের ব্যাপারে আমার জানা নেই, একটু বিস্তারিত জানাতে পারেন কি?

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সোহেল ইমাম এর ছবি

চলুক

---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

জিপসি এর ছবি

আজ থেকে দুই দশক পর টকশো গুলিতে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কথা বলবে কোন বুদ্ধিজীবী?
চাক্ষুষ সাক্ষীদের অনুপস্থিতিতে কি নতুন করে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস লিখবে পরবর্তী প্রজন্ম?

------------------------------------------------------------------------------
জিপসিরা ঘর বাঁধে না,
ভালবাসে নীল আকাশ

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

হুমম! ইতিহাস শেখাবে আলুগং-এর কেউ, সাহিত্য শেখাবে ঢ়ৈষু,
আইনের জন্য শিশির মনির, শিক্ষায় আসিফ নজরুল তো আছেই।

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

তিথীডোর এর ছবি

৩। ঠিক করেছিলাম বইয়ের দোকান দেব, চায়ের কেটলি সহ। নাম হবে হ-য-ব-র-ল। হাউশ ধোপে টেকেনি।
অবসরে যেহেতু শাহবাগ-কাঁটাবনের জ্যামরাস্তা ডিঙোতে ইচ্ছে করে না, বাড়ির কাছের পুস্তকালয়ে ঢুঁ মারি কিংবা অনলাইনে অর্ডার দিই, উইকেন্ড ভালো কাটে। গত সপ্তাহে কিনেছিলাম জয় গোস্বামীর দশটি উপন্যাস, কাল রাতে সুহানের বইটা, সাক্ষী ছিল শিরস্ত্রাণ, অবশ্য উপহার দেবার জন্য।
আর কী আছে জীবনে?

সামিয়া হোসেনের জন্য শুভেচ্ছা আর সোফি আবীরের জন্য আদর। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

ছেলেবেলায় এক বোষ্টুমি তার আগমনী গান
হঠাৎ থামিয়ে বলেছিল,
শুক্লা দ্বাদশীর দিন অন্তরাটুকু শুনিয়ে যাবে।
তারপর কত চন্দ্রভুক অমাবস্যা চলে গেল
কিন্তু সেই বোষ্টুমী আর এল না

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

এক লহমা এর ছবি

চলুক

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

[ বাহামা ছুঁয়ে এসে গেঁড়ে বসলেন যে বড়! লেখেন না ক্যানে? ]

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।