ভালো থেকো মেলা, লাল ছেলেবেলা-১

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি
লিখেছেন সাক্ষী সত্যানন্দ [অতিথি] (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৭/০২/২০১৯ - ২:০৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১। আবার সে এসেছে ফিরিয়া

শেষবার বোলগ দিয়ে ইন্টারনেট চালিয়েছিলাম সেই ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ এ। মাঝে কেটে গেছে পুরো দেড়টা বছর। কি ভয়ানক! এর মাঝে পদার্থবিদ্যায় দুই দুইবার নোবেল প্রাইজ দেয়া হয়ে গেছে। বাংলাদেশ একটা স্যাটেলাইট উড়িয়ে ফেলেছে। মুহম্মদ জাফর ইকবাল একবার চাপাতির কোপ খেয়ে ফেলেছেন। কোটা সংস্কারের মত যৌক্তিক একটা আলোচনার চারাগাছে ছাগুরা মুখ দিয়ে কোটা বাতিল আন্দোলন বানিয়ে ল্যাজেগোবরে করে রাজাকার হতে চেয়েছে। খান সাহেবের হাসিমুখ দেখে স্কুলের ল্যাদাল্যাদা বাচ্চারা ফেসবুক কাঁপানো বড়দের মাঠ কাঁপানো দেখিয়েছে। কাদেরমোল্লা গঙের দুই দুইটা শবেঝুলন বার্ষিকী চলে গেছে। বাংলাদেশ দল একটা অলিম্পিয়াডে সোনা জিতে ফেলেছে। নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী রোদ্দুর হয়ে গেছেন। প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ-২ প্রকাশিত হয়েছে। কাওরানবাজারের স্পর্শ ছাড়াই কিলোগ্রামের সংজ্ঞা বদলে গেছে। স্টিফেন হকিং মহাকালের ব্ল্যাক হোলে বিলীন হয়ে গেছেন। একাকী স্বপ্নাহত বিগত ফাগুনে দ্বিগুণ হয়ে গেছেন। সোয়া একখানা বইমেলা চলে গেছে। পরশুদিন শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরের অর্ধযুগ পর্যন্ত পার হয়ে গেছে! আর আমি? কুম্ভকর্ণের মত ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিয়েছি।

২। যে যার আপন রঙ্গে বেঁচে থাকা ভাল

বিশ্ববিদ্যালয় সবচেয়ে তীব্র আনন্দের নাম ছিল বইমেলা, কেন না সেটি হত একেবারেই হাঁটা দূরত্বে, হাতের নাগালে। বেলা তিনটায় একবার ফাঁকা বইমেলার এদিক দিয়ে ঢুকে জরিপ করে অন্যদিক দিয়ে বেরিয়ে যেতাম ছাত্র পড়াতে, ফেরার সময় উল্টো দিক দিয়ে ঢুকে ফিরতাম সোজা দিকে। মাঝে হিগস ক্ষেত্র যেমন চলার পথে ভর টুকিয়ে নেয়, আমার ঝুলিতেও তেমন ভর বেড়ে যেত নতুন ছাপা বইয়ের ভারে। তখন নিরাপত্তা ইত্যাদির বালাই ছিল না, বেজার মুখো পুলিশ ভায়ারা বিড়ি ফুঁকতে ফুঁকতে উদাস নয়নে দু গেটে বসে থাকত। এখন তো ড়্যাবমামাদের দেখেই ভয় লাগে, বইমেলায় এলাম না কি ক্যাম্পে? তবু ওপাড়ার দিকে পা চলে স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের মতন। ফেব্রুয়ারি মাসে কাজে কিংবা অকাজে ঢুকে পড়ি বইমেলায়। তারপর অতীত স্মৃতি আর ঘটমান বর্তমান মিলেমিশে কুস্তি লড়তে থাকে মগজের মঞ্চে।

৩। রোদ্দুরের কথা ভাবতে... ভাবতে...

এবারের বইমেলায় ধূলিমলিন প্রাঙ্গণে পদাঘাত করেছিলাম দ্বিতীয় দিবসে। প্রতিবার কিভাবে যেন এই মাসে প্রচুর ছুটি পেয়ে যাই। জানুয়ারির শেষ দিনে আপিসের উর্ধ্বতন কর্তা বেশ দেঁতো হাসি হেসে বললেন, সাক্ষীসায়েব তো হাইপোকন্ড্রিয়ায় ভুগছেন। দুদিন ছুটি দিচ্ছি, ঢাকার সীসাযুক্ত হাওয়া খেয়ে আসুন, শরীর খোলতাই হবে। সেই সংগে হেড-আপিসীয় কিছু জটিলতাও ঠেঙিয়ে আসুন। কি আর করা, আপিসে কর্তার আর বাসায় কর্ত্রীর আদেশ দুইই শিরোধার্য। আপিসের নাম ভাঙ্গিয়ে সটান চলে এলাম বইমেলায়। যারা এখনও সুযোগ পান নি, তাঁরা প্রচুর হিংসে করতে পারেন। খালি হাতের হিংসেয় কাজ না হলে দেখুন ভুডু পুতুল পান কি না। যাক গে, বইমেলায় এবার যেটা ভাল লাগল সেটা হল খাবারের দোকান। পুলিশ মামারা দেখলাম পুলিশ বেকারির চা-চপ-সিঙ্গারা ইত্যাদি বেচাবিক্রিতে বেশ ব্যাস্ত। মোটামুটি ন্যায্যমূল্যের দোকান, কোকাকালা খেয়ে দেখলাম। তারপর দুটো হিক্কা তুলে আরেক গেট দিয়ে বেরিয়ে গেছি। মেলা মানেই তো খানাদানা, তাই না? ছোটবেলায় মেলায় গেলে অবধারিত ছিল খই আর বাতাসা, এখন খাই কোক- এই যা।

৪। ঠাঁই নাই ঠাঁই নাই ছোট এ তরী

মনে করবেন না যেন যে কেবল কোক খেয়েই মেলা পার করেছি। মেলা বড্ড অপরিষ্কার আর অগোছালো। একবার আধলা-ইঁটে ঠোক্কর খেয়ে এক স্টলের সাজানো বইয়ের উপরে গিয়ে পড়লাম। নিউটন বলেছিলেন ভরবেগের সংরক্ষণের কথা। সেই সূত্র মেনে আমার বেগ কমাতে স্টলের কিছু ভর এসে ঠাঁই নিল আমার ঝুলিতে। তবে কি না, স্টল মালিকেরা বড্ড ছ্যাঁচ্চর। ভরবেগের সংরক্ষণ ব্যাপারটা তাঁদের বোঝাতেই পারলাম না। নির্ঘাত এঁরা আরিফ আজাদের বই পড়ে সায়েন্স শেখা জনতা। শেষমেশ কি আর করা, ভরের সমমূল্যের কাগজ গচ্চা দিয়ে তবেই নির্বান। এবার মেলার বিক্রয়কেন্দ্রগুলো বেশ ছক কাগজে দাবার ঘর টানার মতন সাজানো, খুঁজে পাওয়া সুবিধাজনক। গত বছর দুয়েক তো গেছোদাদা কোথায় আছেন জানার জন্য কাঠি দিয়ে মাটিতে আঁক কষে বের করতে হত- গেছোদাদা কোথায় কোথায় নেই। অনেক নামজাদা প্রকাশনী গায়েব হয়ে গেছে। বই থাকুক বা নাই থাকুক, পামজাদা প্রকাশনী গজিয়েছে অনেক। গাছের চেয়ে আগাছার ফলন বেশিই হয়, এটা নতুন না। বাংলাদেশের প্রকাশনা শিল্প এগিয়ে যাচ্ছে হাউইর বেগে। দীপন-অভিজিতের মতন কালোভেড়ারা এখন পিছু টেনে ধরার জন্য নেই। কি চমৎকার ব্যপার! আহা!

৫। রাতের সব তারাই আছে দিনের আলোর গভীরে

খালি কথায় বিশ্বাস করতে নেই, বুঝলেন কি না? তাই ছবি দেখুন। আর হিংসে করুন।

মুক্তিযুদ্ধের বই দিয়েই বইমেলা শুরু করলাম। সাহিত্যপ্রকাশের স্টল থেকে। মধ্যরাতের অশ্বারোহী ফয়েজ আহমেদ বঙ্গবন্ধু বিটের রিপোর্টিং করতেন জানা ছিল, কেবল আগরতলা মামলা নিয়েই যে আলাদা স্মৃতিকথা লিখেছেন জানতাম না। পাশের বইটা অনেক পুরানো সংকলন, নতুন করে ছাপা হয়েছে।

আব্দুলাহ-আল-মুতীর প্রস্থানের পরে বিজ্ঞান নিয়ে টুকটাক লেখালেখি করেছেন অনেকেই। সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে নিয়মিত মনে হয়েছে প্রদীপ দেবকে। তাঁর ‘আইনস্টাইনের কাল’ দিয়ে শুরু করেছিলাম। রেডিয়াম ভালবাসা আর কোয়ান্টাম ভালবাসা এনারই লেখা। নতুন একহালি বই কেনার পরে টের পেলাম, এনার জন্যই আস্ত একটা তাক বরাদ্দ রাখতে হবে!

শাহবাগী বিরিয়ানীখোর হলে যা হয় আর কি, জাফর ইকবাল স্যারের বই দেখলে লোভ সামলাতে পারি না। নিয়ান বইটা ভাল লাগল, অনেকটা বকুলাপ্পু ধরণের প্লট। কিন্তু, এর মাঝেও যথারীতি অনেকখানি বিজ্ঞান ঠুসেছেন। মানুষের বাচ্চা আর মিতু-তিতুর টাইম মেশিন বইয়ের রঙচঙা অলংকরণ করেছেন মেহেদী-মিতু। (আহা, কেন বড় হয়ে গেছি?) বাচ্চাদের বই হলেও চামেচিকনে প্রচুর গিয়ানের কথা ভরা বই। প্যারাডক্সিক্যাল গং স্যারের উপরে আবার খেপবে নিশ্চিত। ইজ্জত আলী সংক্রান্ত বইটাতে একাধিকবার আক্ষরিক অর্থে রাজাকার গোষ্ঠীর লুঙি খুলে ছেড়েছেন। গোলামকুমার কিংবা কামারুজ্জাদারা স্যারকে এই বই লেখার জন্য আবার কোপাকুপির চেষ্টা চালাতে পারে। অবিশ্বাস্য সুন্দর পৃথিবী আসলে কোপ থেকে ফিরে আসার পরের অনুভুতির বর্ণনা। ভালবাসা এবং ভালবাসা এবছরের কলাম সংকলন। যখন টুনটুনি তখন ছোটাচ্চু পড়ে মনে হল ছোটাচ্চু চরিত্র বাদ দিয়েই সিরিজটি চালিয়ে নেয়া যায়! আলটিমেট ডিটেকটিভ এজেন্সি জবরদখল হয়ে যাবার পরে ছোটাচ্চু আসলে পার্শ্বচরিত্রের ছায়ামাত্র।

সেবার বই দেখলে এখনও লোভ সামলাতে পারি না, কি আর করা! রওশন জামিলের নামে নতুন ওয়েস্টার্ন দেখলাম! ভূত লেখকের কাজ নিশ্চয়? ওয়েস্টার্ন পছন্দের ধারা নয় বলে আর কিনি নি।

আহা শৈশব, আহা সোভিয়েত ইউনিয়ন, আহা রাদুগা, আহা জুবোভস্কি বুলভার, আহা ননী ভৌমিক! দ্যু প্রকাশন থেকে অনেকগুলো নস্টালজিক বই প্রকাশিত হয়েছে, একটাই কিনেছি। উভচর মানুষ পুনঃপ্রকাশিত হয়েছে, জঘন্য প্রচ্ছদসমেত। কারো ফুরফুরে ভাল মন সেধে আধাখেঁচড়া করতে চাইলে দ্যু প্রকাশনের স্টলে গিয়ে উভচর মানুষ হাতে নেবেন, পাতা ওল্টানো যাবে না, কেবল প্রচ্ছদের দিকে ত্রিশ সেকেন্ড একটানা তাকিয়ে থাকবেন। বিফলে মূল্য ফেরৎ।

সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ এই দুটি বই প্রথমা প্রকাশনী থেকে পাওয়া। লেখাগুলো আসলেই শামসুর রাহমান কিংবা বেলাল চৌধুরীর ‘অসম্পাদিত’ রচনা কি না, যাচাই করার উপায় নেই। দুজনেই মারা গেছেন। নিজ দায়িত্বে তথ্যের সত্যতা যাচাই করে নিয়ে পড়বেন।

বাংলা একাডেমির ড়্যাবগিরির প্রতিবাদস্বরূপ বিগত বইমেলায় শুদ্ধস্বর কিংবা রোদেলা থেকে প্রচুর বই কিনেছি। এবার আদর্শ থেকে প্রচুর বই কিনবো ভেবেছিলাম। রাগিব ভাইর নতুন বই এখনও আসে নি, মুনির হাসানের বই কিনে ফিরে এসেছি।

এখনকার বইমেলায় প্রচুর হালাল বই বেরোয়। আমি মুগ্ধ বিস্ময়ে এই বইগুলো সংগ্রহ করি। প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ-২ এখনও আসে নি। তাই এই এক হালি বই কিনে ফেলেছি। অত্যন্ত চমৎকার লেখনী। যাঁরা ফ্যালাসি ইত্যাদির সাথে পরিচিত, তাঁরা এই বই পড়ার আগে মনে রাখবেন ‘ফ্যালাসি ইজ জাস্ট আ থিওরি, প্রমাণিত কিছু না!’ তাতে কাজ না হলে চরম উদাসের পদ্ধতিতে অন্ধকার ঘরে ন্যাংটো হয়ে নিজের ডান পা দিয়ে নিজের বাম পা কে জড়িয়ে ধরে হাঁটুকে অটোসাজেশন দেবেন- ‘দেশে ফ্যালাসি বলে কিছু নেই, এগুলো মিডিয়ার সৃষ্টি!’ এরপর এই বই পড়ে দেখবেন, আপনার মাথার ওপরে ফিলিপ্স বাতির মতন আলোকিত হয়ে যাবে। মনে রাখবেন- ‘যুক্তিতে মুক্তি মেলে না!’


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

এই রকম একটি লেখার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম সাক্ষী সত্যানন্দ। কেবল একটা কথা। ট্যাঁকের পয়সা দিয়ে হালাল বই কিনতে গেলেন ক্যান? নাকি ওইসবের ছহি পিডিএফ অনলাইনে পাওয়া যায় না?

মেলায় যান বা না যান সেইটা আপনার মামলা। কিন্তু সচলে মাঝে মাঝে এসে লেখা দিয়ে যাইয়েন। ওইটা আমাদের মামলা।

---
মোখলেস হোসেন

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

পাওয়া যায়, কিন্তু তাতে ঠিক স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি না। আর, ভবিষ্যৎ কালে কথা 'বদলে' ফেলার আগেই নথি রাখতে চাই, সেজন্য।

হুঁ, আবার আসিব ফিরে.. ইত্যাদি! মন খারাপ

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

কথা বদলে ফেলার সম্ভাবনাটা মাথায় আসে নি।

---মোখলেস হোসেন।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

হে হে হে, ঠেকে শেখা! হাসি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

আয়নামতি এর ছবি

বাপ্রে কত্তদিন পর দেখা গেলু আপনারে! মেলায় গিয়ে কেনাকাটা খাইদাই ভালোই হইছে দেখা যাচ্ছে। বইমেলা নিয়ে আপনি বৌদ্ধমূর্তসহ এমন পোস্ট দেবেন জানলে আমি আর কবে ঘি খেয়েছিনু, আজও হাত শুঁকি, মার্কা লেখাটা দিতেম না ভাই। যাকগে যা... পরের পর্ব দিয়ে আবার হাওয়া হইয়েন না বাপ।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

নাহ, বইমেলা নিয়ে প্রচুর পোস্ট আসুক। আগে আনন্দের পোস্ট আসত, এখন না হয় বিষাদের আসবে। এইই তফাৎ! মন খারাপ

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

এক লহমা এর ছবি

বইমেলার কারণে তোমার দেখা পাওয়া গেল! আশা করি এখন থেকে আবার লেখা পাওয়া যাবে।

ছবি সহ লেখা - চমৎকার। বইমেলা আর তোমার বইঘর আরো জমে উঠুক। পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম। (অথবা, হিমুর দেখানো পথে, এইটাতেই আরো আরো পর্ব যোগ করতে থকো। লেখা প্রকাশের সংখ্যার এখন যা হাল, তাতে এইটাই সবচেয়ে কাজের মনে হয় হাসি ).

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

বিজ্ঞানের প্রচুর গল্প মাথায় ঘুরঘুর করে, সময় পাই না। আসলেই পাই না! মন খারাপ

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সত্যপীর এর ছবি

..................................................................
#Banshibir.

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

সালসাবিলের গফ শ্যাষ হোক, হিমু ভাইর চায়ের কাপ ভরুক, তারপর লিখুম! চাল্লু

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

সত্যপীরের দেয়া ছবিটার জন্য এই গানটা উপযুক্ত।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

জীবনযুদ্ধ এর ছবি

যাকতাও মেলার বদৌলতে বহুকাল পর আপনার দেখা পাওয়া গেল। বইমেলায় আরও কেনাকাটা হলে সেগুলো নিয়ে আরও লিখুন

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

নতুন কিছু লিখলেন কি?

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

জীবনযুদ্ধ এর ছবি

বছর দুয়েক আগে সচলে একটা গল্প লিখেছিলাম- "ভিয়েনার ক্যাফে সেন্ট্রাল"। ওটাকেই নামগল্প করে আরো কয়েকটা ভ্রমণ গদ্য তার সাথে যুতে দিলাম। 'সময় প্রকাশনী' তে পাওয়া যাবে ওটা.

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

১। অন্তত গত ৫/৬ বছরে মেলার একটা চরিত্র দাঁড়িয়ে গেছে। এখনো যা কিছু সামান্য খামতি আছে সেগুলো অচিরেই মিটে যাবে। কোথাকার কোন্‌ আউল-ফাউল পোলাপান কোথায় কী বললো সেগুলো মানতে গেলে দুনিয়া চলবে না। এসব বুঝতে হবে, বুঝে ইজি থাকতে হবে।

২। মেলা এখন আমার কাছে চুম্বকের সমমেরু সদৃশ। আমার বুদ্ধিশুদ্ধি গাধা পর্যায়ের তো তাই সব ভুলে সামনে এগিয়ে যেতে পারি না। কেবল পিছিয়ে পড়ি।

৩। পুলিশ বেকারির কথা শুনে ভালো লাগলো। সেনা কল্যান সংস্থার মতো পুলিশ কল্যান সংস্থা, আনসার-ভিডিপি কল্যান সংস্থা, বিজিবি কল্যান সংস্থা, প্রশাসন কল্যান সংস্থা, রাজস্ব কল্যান সংস্থা, দুদক কল্যান সংস্থা ইত্যাদি সরকার অনুমোদিত স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান (গ্রুপ) গড়ে তুলে শিল্প-বাণিজ্য-সেবা খাতে কাজ করার সুযোগ দেয়া গেলে দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক গতি সঞ্চার হবে।

৪। বাংলাদেশের প্রকাশনা শিল্পটির ব্যাপারে সঠিক তথ্য পাবার উপায় নেই। বছরে মোট কতগুলো বই বের হয়, কী পরিমাণ বই কোথা থেকে আমদানী হয়, কতগুলো বই বিক্রি হয়, কত টাকার বই বিক্রি হয়, লেখকরা কী পরিমাণ রয়্যালটি পান, এই খাত থেকে সরকার কী পরিমাণ মূসক ও আয়কর পান - ইত্যাদির বিবরণের অফিসিয়াল ডাটা নেই। বাংলাদেশে বইয়ের মূল্যের কোন স্ট্যান্ডার্ড নেই। একই আকার, আয়তন, প্রকৃতি, বস্তুগত মানের বইয়ের মূল্য একেক প্রকাশনীর একেক রকম। তবে অধিকাংশ প্রকাশনীর ক্ষেত্রে মূল্যটা একটু বেশিই।

৫। হূমায়ুন আহমেদের প্রয়াণের পর এখন কার উপন্যাস অমন গরম পিঠার মতো বিক্রি হয়? মুহম্মদ জাফর ইকবাল ছাড়া আর কোন লেখকের এক একটি বই দশ হাজার কপির চেয়ে বেশি বিক্রি হয়? বিদেশী ভাষায় সাহিত্য প্রকাশালয়/প্রগতি প্রকাশন/রাদুগা প্রকাশন/মীর প্রকাশন-এর হাড্ডিগুড্ডি আপন মনে করে ঊচ্চমূল্যে বেচার ঐতিহ্য অব্যাহত আছে দেখছি। মেধাসত্ত্ব আইনকে ফাঁকি দিয়ে বইয়ের ব্যবসার অনেকগুলো কায়দার মধ্যে এটাও একটা। প্রয়াত প্রখ্যাত সাহিত্যিকের রচনা আপন মনে করে, উত্তরাধিকারদেরকে রয়্যালটি না দিয়ে, তাঁর রচনাবলী প্রকাশ করা অথবা বিনা অনুমতিতে বাজার চলতি ভীনদেশী বইয়ের বাংলা অনুবাদও নিশ্চয়ই আগের মতোই চলছে!

পুনশ্চঃ বাজার কিছু কিছু সময় ভোক্তা নির্মাণ করে বৈকি, তবে মূলত ভোক্তাই ঠিক করে পণ্যের প্রকৃতি কীরূপ হবে। যে বাজার খৈল-ভুষি-আবর্জনার ভোক্তা দিয়ে পূর্ণ সেই বাজারে খৈল-ভুষি-আবর্জনার নিত্যনতুন চালান নিয়মিত আসতে থাকবে। নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা দিয়েও আবর্জনার প্রবাহ বন্ধ করা যাবে না।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

১. হুঁ, যস্মিন দেশে যদাচার!

২. ভুলতেও পারি না, এগুতেও পারি না। কাছাকাছি এলে অমোঘ টানে ঢুকে পড়ি। তারপর যন্ত্রের মতন দেখে চলে আসি, আগের আনন্দময় বইমেলা খুঁজে পাই না!

৩. পুলিশ বেকারি বেশ আগে থেকেই আছে, মেলায় এই প্রথম দেখলাম। টেন্ডারের ফুচকা-চটপটিওয়ালা ঠগবাজিদের বদলে এই উদ্যোগ ভাল লেগেছে। পুলিশ ব্যাংক খোলার তোড়জোড় চলছে, শুনেছি! অর্থনীতিতে গতির কথা সিরিয়াসলি বলছেন, না সারকাজম?

৪. বাংলা একাডেমি আগে মেলা শেষে একটা আয়-ব্যায়ের খতিয়ান দিত না? জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র কি কাজ করে জানেন? এইবার তাম্রলিপি বনাম আদর্শের একতরফা কামড়াকামড়ি ভাল লাগে নি। অবশ্য ভাল না লাগায় কিই বা যায় আসে? ইজি থাকতে হবে!

৫.(ক) আরিফ আজাদ গং। এরা এমন একসময়ে তথাকথিত লেখালেখি শুরু করেছে, যখন নিতান্ত ছেলেমানুষি ফ্যালাসিও খন্ডানোর 'সামর্থ এবং সাহস' দুটিই আছে, এমন মানুষ বিরলপ্রজ।

৫.(খ) হুঁ, সত্য। কোটিকোটি প্রকাশনী থেকে রাশান বইগুলো অত্যন্ত নিম্ন মান নিয়ে প্রকাশিত হচ্ছে। আমরা নস্টালজিক প্রজন্ম নিজেদের সে বই কেনা থেকে বিরত রাখতে পারছি না। অনুবাদের ক্ষেত্রে অবস্থা জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রচুর অনুবাদকর্ম উলটে দেখলাম। বেশিরভাগ বইই গুগলট্রানস্লেটর মানসম্পন্ন!

পুনঃপুনশ্চঃ হুম, দ্বিমতের অবকাশ নাই।

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

৪। বাংলা একাডেমি বিক্রির যে হিসাব দেয় সেটা অনুমিত হিসাব। খোদ প্রকাশনীগুলো তাদের ইনভয়েস ধরে ধরে বিক্রির হিসাব করে কিনা সন্দেহ। এর বাইরে ইনভয়েস ছাড়া প্রচুর বই বিক্রি হয়, এন্ট্রি ছাড়া প্রচুর বই বের হয়।

বই মেলাতে ভ্যাট অফিসের বুথ, গেট কিপিং-এর ব্যবস্থা থাকা উচিত। বিক্রেতারা ক্রেতাদেরকে ইনভয়েসের দুটো কার্বন কপি দেবেন। মেলা থেকে বের হবার পথে ভ্যাট অফিসের গেট কিপার ক্রেতার কাছ থেকে ইনভয়েসের একটা কপি রেখে দেবেন। বিক্রেতা ঐদিন রাতেই বা পরদিন সকালের মধ্যে ঐদিনের বিক্রির ভ্যাট মেলার বুথে পরিশোধ করবেন। তাহলে বই বিক্রির হিসাব যেমন ঠিক থাকবে তেমন জনগণের প্রদত্ত ভ্যাটও সঠিক পরিমাণে সরকারের কোষাগারে জমা হবে। এবং মেলায় বুথ বরাদ্দ নেবার জন্য আবেদন ফর্মের সাথে অতি অবশ্যই হাল নাগাদ টিআইএন ও ভ্যাট সার্টিফিকেট জমা দেয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মন মাঝি এর ছবি

আচ্ছা এইসব অফিসের বুথ, গেট কিপিং বা গাদাগুচ্ছের কাগজপত্র - ইনভয়েস, ইনভয়েসের কপি, কার্বন কপি, টিআইএন ও ভ্যাট সার্টিফিকেট, এ্যাকনলেজমেন্ট রিসিট - ইত্যাদি থাকলেই কি সরকারের কোষাগারে আপনার দেয়া কর বা ভ্যাট জমা হওয়ার নিশ্চয়তা আছে? আমার আয়করের ক্ষেত্রে তো হয়নি! সবকিছুই যথাযথ ছিল - সব জেনুইন - এমনকি ডিসিটির এ্যাকনলেজমেন্ট রিসিট এবং ব্যাংকের চালান রশিদ পর্যন্ত - কিন্তু কোষাগারে পড়েনি ব্জমা এক পয়সাও! পুরোটাই হাপিশ হয়ে গেছিল মাঝপথেই। শেষ পর্যন্ত সবাই ধুর-ধুর করলেও বা চুপ থাকতে বললেও ডাল মে কুছ কালা হ্যায় সন্দেহ করে এই বান্দাকেই তদন্ত করে-করে আসল ঘটনা বের করতে হয়েছে, একটা কেঁচো খুড়তে গিয়ে একগাদা কেঁচো বের হয়েছে। না, সাপের সাথে মোলাকাত হয়নি, সে বরং ভালই হয়েছে। কিন্তু পিছু-পিছু রাস্তার মোড় পর্যন্ত ফলো করে আসা কেঁচো-কেন্নোরা থ্রেট দিয়ে গেছে। সেই থেকে এইসব গাদাগুচ্ছের কাগজপত্রের কথা কেউ সিরিয়াসলি শুনলেই কেন জানি ভ্যাক্‌ করে হাসি পেয়ে যায়। হা হা হা.... হো হো হো
কিছু মনে করবেন না প্লিজ! মন খারাপ

****************************************

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

না, নিশ্চয়তা নেই। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে মানুষ বছরের পর বছর ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন ফি জমা দিয়ে গেছেন কিন্তু এক শ্রেণীর প্রতারকচক্র সেই টাকা লোপাট করেছে। শেষে ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়েছে এক বছরের জন্য এক পৃষ্ঠার ট্রেড লাইসেন্স বানাতে। আপনার আইটি'র ক্ষেত্রে ঘটা ঘটনাটা বিস্ময়কর। আপনি নিজে যদি সোনালী ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে থাকেন তাহলে টাকা হাপিস হবার উপায় নেই। সার্কেল অফিস থেকে আপনার ফাইল বা জমাকৃত রিটার্ন হয়তো হারাতে পারে বা মিসপ্লেসড হতে পারে, কিন্তু সোনালী ব্যাংকে জমা দেয়া টাকা হারাতে পারে না। একটা পরামর্শ দেই, মানা না মানা আপনার ইচ্ছা। অগাস্ট মাসের শুরুর দিকে ট্যাক্সের অবশিষ্ট টাকা নিজের হাতে সোনালী ব্যাংকে জমা দিয়ে, নিজেই (বা কারো সাহায্য নিয়ে) রিটার্ন তৈরি করে, স্বয়ং সার্কেল অফিসে জমা দিয়ে অ্যাকনলেজমেন্ট নিয়ে আসুন। নির্ধারিত সময় পরে নিজেই হালনাগাদ টিআইএন সার্টিফিকেট নিয়ে আসুন। কর মেলার মতো বারোয়ারী জায়গায় জমা দিলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

রাষ্ট্র চলে জনগণের শুল্ক-করের টাকায়। বই বিক্রিতে মূল্য সংযোজিত হয় বলে এখানে রাষ্ট্র মূসক পাওনা হয়। যেহেতু ক্রেতা বই কেনার সময় মূসক পরিশোধ করে থাকেন তাই বিক্রেতা যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে রাষ্ট্রকে মূসক পরিশোধে বাধ্য থাকেন। গাদাগুচ্ছের কাগজপত্র আমাদের জীবনের আবশ্যিক অংশ। মরলেও ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়া অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া করা যায় না।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

হ্যাঁ, ব্যাংকে জমা দেয়া কর 'হারিয়ে' যাওয়া মুশকিল! আমি 'মেলা' পরিহার করে 'ফাঁকা' সময়ে দেয়ার চেষ্টা করি। অন্য হয়রানি থাকে, কিন্তু জমা নিশ্চিত হয়।

বাণিজ্য মেলায় শুনেছি এনবিয়ারের আলাদা অভিযান থাকে, সেটি বইমেলাতেও নয় কেন?

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

বাংলাদেশে যদি লোকজনের খরচের হিসাব থেকে মূসক আর আয়কর আদায় করা হতো তাহলে জাতীয় বাজেটের সময় স্থানীয় ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে বা দেশের বাইরের উৎসগুলো থেকে ঋণ করার কোন প্রয়োজন হতো না।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মন মাঝি এর ছবি

"মুশকিল" কিন্তু অসম্ভব না - যদি অন্য কারও মাধ্যমে দেন! আমি লইয়ারের মাধ্যমে দিয়েছিলাম। লইয়ার আমাকে একদম জেনুইন-দর্শন ডিসিটির একনলেজমেন্ট রিসিট আর ব্যাঙ্কের রশিদ দু'টিই দিয়েছিল। পরে চন্দ্র-সুর্য-গ্রহ-নক্ষত্র ঘুরে আমার তদন্তে বের হয় যে ঐ রিসিট আর রশিদ দু'টিই জেনুইন অথচ ভুয়া। রিসিট আর রশিদের কাগজ জেনুইন, স্বাক্ষরকারীরাও জেনুইন, শুধু তাদের একজন নাকি স্বাক্ষরের তারিখে ইতিমধ্যে বদলি হয়ে গেছেন অন্য অফিসে আর আরেকজন দস্তুরমত অবসর। একজন নির্দিষ্ট ডিসিটি সম্পর্কে বলা হয়েছে উনি ৫০০/- দিলেই নাকি সই করে দেন। এবং এটা বলেছে তারই অধস্তন ব্যক্তি (যে এর আগ পর্যন্ত আমাকে আগাগোড়া ঘুরিয়েছে) নতুন ডিসিটিকে তার অফিসে আমার সামনে - আমি যখন সব বাধাবিপত্তি, অবস্ট্রাকশনিজম, এমনকি সম্ভবত ছদ্ম-হুমকি উপেক্ষা করে খুঁড়ে আনা প্রমাণ নিয়ে তার সামনে হাজির। পরে ব্যংক থেকেও জানানো হয় যে কাগজপত্র, সীলছাপ্পড়, সইসাবুদ সবই নাকি ঠিক আছে - স্রেফ স্বাক্ষরদানকারী স্বাক্ষরের তারিখে কর্মরত ছিলেন না, তিন তার তিন মাস আগেই রিটায়ার করেছেন! এটা কিভাবে সম্ভব আমি জানি না, আপনার অনুমানের উপর ছেড়ে দিলাম। এরপরে একজন এডিশনাল কমিশনারের মাধ্যমে আরও নিশ্চিত হই যে আমাকে দেওয়া সিরিয়ালে বাংলাদেশ ব্যাংকের ট্রেজারিতে আমার নামে কোনো টাকা জমা হয়নি। এই জায়াগাটা আমার আর ঠিক মনে নেই এখন - হয় আমাকে দেয়া সিরিয়ালটারই কোন অস্তিত্ব ছিল না কিম্বা অন্য নামে সামান্য কিছু টাকা ছিল। কোনটা এখন মনে নেই। কথা হলো, একজন সাধারণ আয়করদাতার পক্ষে আমাকে দেয়া রিসিটগুলি (জেনুইন কাগজ, সীল ও স্বাক্ষর) দেখে কিভাবে বোঝা সম্ভব যে এগুলি আসল না?? এমনকি আয়কর অফিসে গিয়েও কি যাচাই করা সম্ভব? আমি তো সেই উদ্দেশ্যেই সেখানে গিয়েছিলাম। আমাকে তো সার্কেল থেকে একাধিকবার সব ঠিক আছে বলে বিদায় করে দিয়েছিলই। আর চাইলেও এমনকি আয়কর সম্পৃক্ত লোকও তো বুঝবে না শুধু ঐ কাগজ দেখে!!! আমি যেটা বুঝেছি তা হলো আয়কর বিভাগ ও ব্যাংকের কিছু লোকজনের মধ্যে একটা সিন্ডিকেট আছে (বা ছিল) যারা ইনকাম ট্যাক্স লইয়ার/এ্যাডভাইজার/আয়কর অফিসের লোক ইত্যাদির মাধ্যমে দেয়া বহু টাকা এইভাবে মাঝপথে হাপিশ করছে এবং করদাতাকে জেনুইন স্বাক্ষর ও সীলসম্পন্ন জেনুইন-দর্শন কাগজপত্র ধরিয়ে দিচ্ছে যা আসলে আসল নয় এবং যার টাকা রাষ্টের কোষাগারে জমা পড়ছে না। কাম টু থিঙ্ক অফ ইট, আপনি নিজের হাতে দিলেও তো এটা করা সম্ভব, তাই না?

****************************************

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আপনার বয়ান পড়ে আমি নিজেকে নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়লাম। এটা তো ডিএসসিসি'র চেয়ে কঠিন কেস। আমি যে ভাবছি, আমার ফাইল ঠিক আছে তা কি আসলেই ঠিক আছে?! দুঃখের বিষয় হচ্ছে এই সব সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে আপনি কিছুই করতে পারবেন না। আপনি পুলিশে অভিযোগ করবেন, কিন্তু কীভাবে প্রমাণ করবেন এটা তারা করেছে? দুদক বা অন্যত্র অভিযোগ করলে একই পরিণতি হবে। তারচেয়ে বড় কথা এসব নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করলে সংশ্লিষ্ট বিভাগ আপনার জন্য সাক্ষাত জাহান্নামে পরিণত হবে। কে যায় জলে নেমে কুমীরের সাথে বিবাদ করতে! ঔপনিবেশিক আমলে তৈরি করা আইনের সুতায় সুতায় স্বাধীন দেশের অনুপযোগী, বৈষম্যমূলক ও অবমাননাকর বিধি আছে। বিশুদ্ধ রাজনীতিবিদরাও এইসব নিয়ে ভাবেন না। হয় তারা এই বিষয়গুলোকে ধর্তব্য মনে করেন না, অথবা এসব নিয়ে ভাবার সক্ষমতা তাদের নেই। এই দেশে জন্মে ক্ষমতাকাঠামো অথবা কর্তৃত্বকাঠামোর কোথাও নিজেকে জুড়তে না পারাটাই অপরাধ।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

ইয়ে, মানে...

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

ডুপ্লি-ঘ্যাচাং!

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

নীড় সন্ধানী এর ছবি

বাংলাদেশের যতগুলো উৎসব আছে বইমেলা সম্ভবত সবচেয়ে প্রিয় মেলা, প্রাণের মেলা। ২০১৩ সালের পর থেকে সেই মেলার আনন্দের সাথে বেদনাও ভর করাতে অনেকে আগের মতো উৎসাহ পায় না বইমেলা যেতে। অন্ততঃ আমি তাদের একজন। তবু ফেব্রুয়ারী আসলে সেই পুরোনো অনুভূতিগুলো খেলা করতে শুরু করে। তখন পারি না তাহারে এড়াতে। এবার ইচ্ছে আছে পরিবারের নতুন প্রজন্মের সাথে বইমেলার প্রত্যক্ষ পরিচয় ঘটানোর। এই আনন্দটাও হবে নতুন রকমের। একাত্তর আমাদের, একুশে আমাদের, বইমেলাও আমাদেরই।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

২০১৩ পরবর্তী অনুভূতিটুকু একই, বাকি অনুভূতিও কাছাকাছি!

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

মাঝে মাঝে নির্বোধের মতো আশা করতে ইচ্ছে করে, করে ফেলি। একদিন হয়তো "আগের মতো" মেলায় যাবো।
অনেকদিন পর লিখলেন। ভাল্লাগলো।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

এমন নির্বোধ আশা যে আপনি একাই করেন, তা নয়! মন খারাপ

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

কনফুসিয়াস এর ছবি

এইসব মেলার ছবি টবি দেখলে মনে হয় অবসরে চলে যাই। দিন-দুনিয়া আর ভালো লাগে না।

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

দ্বীন-দুনিয়া কলিং, হাঁহ? খাইছে

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

মনে হচ্ছিল এই ভদ্রলোককে কেমন যেন চেনা চেনা লাগছে? হবেই বা না কেন, আপনি তো এখন আক্ষরিক অর্থেই বসন্তের কোকিল হয়ে গেছেন, ৮ই ফাল্গুনের উপলক্ষ করে বছরে একবার করে উঁকি দিয়ে যাচ্ছেন। আপনি এখন যেখানে বসবাস করেন সেখানে কি ইন্টারনেট নেই নাকি?

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

লেখাটা নীড়পাতা থেকে নামছে না, নামলেই আবার লিখব! মন খারাপ

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সত্যপীর এর ছবি

এই লেখাটা নিজের ব্লগে সরায়ে পরের লেখা পোস্ট করেন।

..................................................................
#Banshibir.

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

হাচলদের সেই সুযোগ নাই তো। মন খারাপ

জোরে ফুঁ দ্যান, পদোন্নতি হোক! হাসি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

তিথীডোর এর ছবি

ফুঁ ফুঁ।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

ফুঁয়ে কাজ হচ্ছে না তো! নাদেরালী আমি আর কত বড় হবো? ওঁয়া ওঁয়া

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।