ডেইলি মেইল ০৪

সবজান্তা এর ছবি
লিখেছেন সবজান্তা (তারিখ: রবি, ০৪/০৫/২০১৪ - ৭:৪৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

০১

ফেসবুক ছেড়ে দিলাম।

আবার ফিরে যাবো নাকি এখনো জানি না, তবে আপাত শান্তিতে জীবন কেটে যাচ্ছে। বন্ধ করেছিলাম পড়াশোনা সংক্রান্ত এক আশু বিপর্যয় ঠেকাতে। সে ফাঁড়া এ যাত্রা কাটিয়ে ফেললেও, ফিরে যাওয়ার ইচ্ছাটা উধাও হয়ে গেছে। শুরুতে, বিশেষ করে প্রথম দুইদিনের অসহ্য উইথড্রয়াল সিম্পটমের পর তেমন সমস্যা আর হয়নি। বরং ক্রমশ আবিষ্কার করেছি, এর বাইরে পৃথিবীটা অনেক বড়- এমনকী ভার্চুয়াল পৃথিবীটাও।

কিছু গ্রুপের আড্ডা মিস করি। ভালো বইয়ের আলোচনা মিস করি, ভালো সিনেমা কিংবা টিভি সিরিজের নাম মিস করি। তবে বেঁচে যাচ্ছি বহু অর্থহীন তর্ক থেকে। এক সময় রণাঙ্গনের মতোই ফেসবুকে জীবন দিয়ে তর্ক করতাম। তারপর? যার যা বিশ্বাস করার সে তাই বিশ্বাস করে যাচ্ছে, যার যা বলার, সে তাই বলে যাচ্ছে। কোনো তর্কই আমাদের কোথাও নিয়ে যাচ্ছে না। বরং কিছু মানুষের সীমাহীন মূর্খতা আর স্টুপিডিটি আমার রক্তচাপ বাড়িয়ে দিচ্ছিলো ক্রমশই। সব ধরনের তর্কে নিজেকে জড়ানোর বদঅভ্যাস যেহেতু আমি নিয়ন্ত্রন করতে পারিনি, তাই মাথা কেটেই মাথা ব্যথা কমানোর এক অভূতপূর্ব সিদ্ধান্ত নিতে হলো। এখনো পর্যন্ত এই সিদ্ধান্তের কার্যকারিতায় আমি মুগ্ধ!

ফেসবুক অ্যাকাউন্ট সাময়িকভাবে স্থগিত করার পর যে ব্যাপারটা সবচে বেশি চোখে পড়লো, সেটাকে বলা যেতে অল্টারনেটিভ ইকোসিস্টেমের অভাব। ফেসবুকে না থাকার অর্থ হঠাৎ নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা। কোনো দৈব দুর্বিপাকে ফেসবুক যদি এই মুহূর্ত থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যায়, তবে সামাজিক যোগাযোগে এক বিশাল ধ্বস নামবে। অত্যন্ত বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করলাম, বহু ঘনিষ্ঠ এবং কাছের বন্ধুদের ইমেইল অ্যাড্রেস পর্যন্ত আমার কাছে নেই। গান শোনার জন্য যে অ্যাপ্লিকেশনের উপর সবচে বেশি নির্ভর করি, স্পটিফাই, এবং বইয়ের খোঁজ নেওয়ার জন্য ব্যবহার করা অ্যাপ্লিকেশন, গুডরিডস, দুটোতেই লগিন করতাম ফেসবুকের মাধ্যমে। সব মিলিয়ে ফেসবুকের ভূমিকা, অনেকটা তরকারিতে লবনের মতোই অনস্বীকার্য কিংবা তুমুল বিশ্বাসীর জীবনে ঈশ্বরের মতোই সর্বব্যাপী ছিলো। সেই ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করাতে জীবন তাই শুরুতে আলুনির মতোই বিস্বাদ, কিংবা সদ্য অবিশ্বাসীর মতোই কিছুটা অনিশ্চয়তাপূর্ণ হয়ে উঠেছিলো। তবে শেষ পর্যন্ত উপলব্ধি করেছি, এই ঘুমই চেয়েছিলাম আমি!

০২

ফেসবুক বন্ধ করার সবচে ভালো দিক, যেটা এখন পর্যন্ত আবিষ্কার করেছি- প্রচুর বই পড়া হচ্ছে। নিজের পাঠাভ্যাসের গরিবি হাল মাঝে একটা সময় তুমুল হতাশা সৃষ্টি করতো। গত দুই বছরে পড়া বইয়ের সংখ্যা ছিলো লজ্জাজনকভাবে কম। সে দৈন্যদশা কাটিয়ে উঠেছি অনেকটা। রাহুল সাংকৃত্যায়ণের আত্মজীবনী, আলাউদ্দিন আল আজাদের তেইশ নম্বর তৈলচিত্র, শাহাদুজ্জামানের অন্য এক গল্পকারের গল্প নিয়ে গল্প, হোসে সারামাগোর কেইন, হুমায়ুন আজাদের শুভব্রত, তার সম্পর্কিত সুসমাচার (পুনর্পাঠ), সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সুদূর ঝর্ণার জলে (পুনর্পাঠ), উদয়ণ ঘোষের ছোটোগল্প সহ আরো বেশ কিছু বই পড়া হয়েছে। এর বাইরে অল্প অল্প করে পড়ছি কালিদাসের রচনাসমগ্র। এছাড়াও নিয়মিত বেশ কিছু আর্টিকেল পড়েছি ইন্টারনেটে।

শাহাদুজ্জামানের বইটা নিয়ে বেশ আশা ছিলো। কিন্তু বইটার প্রথমদিকের গল্পগুলি বেশ ভালো হলেও, যতোই পৃষ্ঠা এগিয়েছে, ততোই ম্রিয়মান হয়েছে গল্পগুলি। তাঁর গল্প বলার ভঙ্গি দুর্দান্ত, কবিতার মতোই চিত্রময়, সুক্ষ্মরুচির। সেই বলার ভঙ্গিতে গল্পগুলি উতরে গেলেও, গল্পগুলির পেছনে গল্পটা খুব বেশি শক্ত ছিলো না প্রায়ই। তবে কিছু গল্প, বিশেষ করে মুরাকামির বিড়াল নিয়ে গল্পটি পড়ে মুগ্ধ হয়েছে। মার্কেজের কল্যাণে ঘরে ঘরে জাদুবাস্তবতা এখন এক চালু শব্দ। অতিব্যবহারের সেই ঝুঁকি মাথায় নিয়েই বলি, বাংলা ভাষায় এমন চমৎকার জাদুবাস্তব গল্প খুব বেশি পড়া হয়নি আমার।

তেইশ নম্বর তৈলচিত্রের অনেক প্রশংসা শুনেছি। দীর্ঘদিন বইটার জন্যে আজিজে হন্যে হয়ে ঘুরেও যোগাড় করতে পারিনি। শেষ পর্যন্ত বইদস্যুদের বদান্যতায় বইটা পড়া হলো। খুব আহামরি কিছু মনে হয়নি। লেখক শেষ পর্যন্ত যে গল্পটা বলতে চেয়েছেন, সে গল্পটাই আমার কাছে খুব সাধারণ মনে হয়েছে। তবে বইটা পড়তে পড়তে একটা ভিন্ন চিন্তা উঁকি দিলো- বইটির পটভূমি সম্ভবত ষাটের দশক। অনেকটা সমসাময়িক ছিলেন মাহমুদুল হক। এবং দুজনের লেখাতেই চরিত্রগুলির মুখের ভাষা আশ্চর্যজনকভাবে একই রকম। আশির দশকে জন্মে আমি যে বাংলাদেশ কিংবা ঢাকা শহর দেখেছি, তাতে সে ভাষায় বলতে গেলে কেউই কথা বলতো না। এই প্রশ্নটা মাহমুদুল হকের বই যখন প্রথম পড়েছিলাম আজ থেকে প্রায় পাঁচ-ছয় বছর আগে, তখনও এসেছিলো- তখন কি মধ্যবিত্ত, শিক্ষিত, ঢাকাবাসীরা আটপৌরে জীবনেও এই প্রমিত বাংলা ব্যবহার করতো? কেউ জানাতে পারলে ভালো হতো।

এতো নতুন বইয়ের ভীড়ে, দুটি পুরানো বই আবার পড়লাম। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সুদূর ঝর্ণার জলে, আর হুমায়ুন আজাদের শুভব্রত, তার সম্পর্কিত সুসমাচার। দুটি বই-ই পড়েছিলাম কলেজে থাকতে- কৈশোরের অপরিপক্বতায় যখন অনেক কিছুই গভীরভাবে দেখে উঠতে পারিনি। সুদূর ঝর্ণার জলে বইটা আবার পড়ে কৈশোরের মুগ্ধতাই বজায় থাকলো। সুনীল তাঁর প্রথম জীবনের শক্তিশালী গদ্য দিয়ে যেভাবে ভালোবাসাকে পাঠকের মনে ছড়িয়ে দিয়েছেন, পরবর্তী জীবনের আর অনেক বইতেই সম্ভবত তা করতে পারেননি। শুভব্রত... পড়ে মনে হলো, উপন্যাস হিসেবে খুব উঁচুমানের বই এটি নয়। এরচে বহু ভালো বই বাংলাতে লেখা হয়েছে- কিন্তু এই বইয়ের গুরুত্ব তার বিষয়বস্তুতে। হুমায়ুন আজাদ স্পষ্টতই "একটি একেশ্বরবাদী ধর্মের জন্মবৃত্তান্ত" হিসেবেই বইটি লিখেছেন। কেন্দ্রীয় চরিত্র শুভব্রতের সঙ্গে একজন বিশিষ্ট ধর্মপ্রচারকের সাযুজ্য আমাকে অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছিলো- অনুভব করছিলাম যে, আমরা ক্রমশ পিছিয়ে পড়েছি। এই বইটির প্রথম প্রকাশের সময়েও হয়তো সমালোচনা হয়েছে, আপত্তি উঠেছে- কিন্তু কেউ লেখকের জীবন সংশয় ঘটায়নি; অথচ ২০১৪ সালের বাংলাদেশে এই বই লিখলে হুমায়ুন আজাদ প্রাণে বাঁচতেন কিনা সন্দেহ। অবশ্য প্রানটা রক্ষা করতে পারলেও, বর্তমানের ধর্মনিষ্ঠ সরকার বাহাদুর নিশ্চয়ই তার জন্য কোনো উপযুক্ত আইন বানিয়ে তাকে বিশ্বরূপ দর্শন করাতেন। মরে গিয়ে বেঁচে গেছেন হুমায়ুন আজাদ। বাংলাদেশ এখন এক অন্ধকার দেশের নাম।

০৩

মার্কিন মুলুকে আসার পর প্রথম একটা বছর কেটেছিলো এক অদ্ভুত যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে। সারাদিন প্রচণ্ড কাজের চাপে দম ফেলার ফুসরত পেতাম সামান্যই। কিছুদিনের মাঝে বন্ধু-বান্ধব জুটে যাওয়াতে মানিয়েো নিয়েছিলাম বেশ দ্রুতই। কিন্তু আমার অবচেতন মন সম্ভবত মানিয়ে নিতে পারেনি। প্রথম এক বছরে এমন রাতের সংখ্যা নগন্য, যে রাতে আমি ঘুমের মাঝে দেশকে স্বপ্নে দেখিনি। কিছু সময় দেখতাম বাবা-মা- কোনো আত্মীয় কিংবা বন্ধুকে, আর অধিকাংশ দিনই দেখতাম আমি ঢাকার কোনো রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছি। প্রায়ই সেটা হতো শাহবাগ। ভোর রাতে যখন ঘুম ভেঙ্গে যেতো, তখন নিজেকে এক ভাগ্যহীন উদ্বাস্তু ছাড়া আর কিছুই মনে হতো না।

এমনই এক বিষণ্ণ দিনে ইউটিউবে লক্ষ্যহীন ঘোরাঘুরি করার সময় আবিষ্কার করলাম পাওলো নুটিনিকে। তার অসাধারণ গলায় দিজ স্ট্রীটস গানটা শুনেই মনে হলো, এরচে যথার্থভাবে বোধহয় আমার কথাগুলিকে আর বলা সম্ভব না। নুটিনির এই গানের সাথেই আজকের ডেইলি মেইল শেষ হচ্ছে।


মন্তব্য

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

লোভ লাগল। সিগারেট ছেড়ে দেয়ার মতো মনেহল অনুভূতি!
মাঝে মাঝে অবাক হয়ে লক্ষ্য করি, সময় নেই। অবাক হওয়া আর শেষ হয়না!

আমাদের ব্লগের সময়টা অনেক ভালো ছিল। প্রায়শই ভাবি।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

সবজান্তা এর ছবি

লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু। তোর এই কচি বয়স, এখন মরা ঠিক হবে না। লোভ টোভ করিস না, লাইনে আয় দেঁতো হাসি

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

সিগারেট ছেড়ে দেয়ার মতো মনেহল অনুভূতি!

সিগারেট ছেড়ে দেওয়াতো খুবই সহজ। জীবনে কতবার ছাড়লাম। ফেসবুকও হয়তো ওরকমটাই হবে, পরীক্ষা করে দেখতে হবে। হা হা হা।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

তর শব্দচয়নে হাল্কা আতঙ্কিত হইলাম!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

মাহবুব লীলেন এর ছবি

যার যা বিশ্বাস করার সে তাই বিশ্বাস করে যাচ্ছে, যার যা বলার, সে তাই বলে যাচ্ছে। কোনো তর্কই আমাদের কোথাও নিয়ে যাচ্ছে না

এক্কেবারে সত্য কথা

০২

অভিনন্দন নিজের মধ্যে ফিরে যাবার জন্য। কারণ সকল সমাবেশ আমাদের সমাজ না

সবজান্তা এর ছবি

কারণ সকল সমাবেশ আমাদের সমাজ না

মোটামুটি এক কথায়, এইটাই আমার পর্যবেক্ষণ, এবং অনুভূতি।

এক লহমা এর ছবি

চলুক
"অথচ ২০১৪ সালের বাংলাদেশে এই বই লিখলে হুমায়ুন আজাদ প্রাণে বাঁচতেন কিনা সন্দেহ। অবশ্য প্রানটা রক্ষা করতে পারলেও, বর্তমানের ধর্মনিষ্ঠ সরকার বাহাদুর নিশ্চয়ই তার জন্য কোনো উপযুক্ত আইন বানিয়ে তাকে বিশ্বরূপ দর্শন করাতেন। মরে গিয়ে বেঁচে গেছেন হুমায়ুন আজাদ। বাংলাদেশ এখন এক অন্ধকার দেশের নাম।"
বোঝানো যায় না এমন একটা ব্যাথা বুকের ভিতর খামচে ধরে থাকে।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সবজান্তা এর ছবি

এই ব্যথা অন্তহীন। অদূর ভবিষ্যতে এর থেকে উত্তরণের কোনো আশা আমি দেখি না। হয়তো আরো অনেকদিন পর,কখনো আমাদের বোধ জাগ্রত হবে। তার আগ পর্যন্ত অসীম অপেক্ষাই একমাত্র সমাধান।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ফেসবুক ছেড়ে দেওয়ার কথা প্রায়ই চিন্তা করি, কিন্তু এতোগুলো মানুষের সঙ্গে প্রতিদিনের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ, হাসি কান্না, আনন্দ বেদনার ভাগাভাগিটা মিস করবো আসলে। বিশেষ করে বইয়ের, সিনেমার আর গানের খবরগুলো, আলোচনাগুলো।
ফেসবুকে সময় কম দেওয়ার চেষ্টা করি, মাঝে মধ্যেই পারি না, তবু চেষ্টা করি।
আর ফেসবুকে তর্ক করাটা একেবারেই ছেড়ে দিয়েছি বহু আগেই।

ষাটের দশকের মানুষেরা প্রাত্যহিক জীবনে কীভাবে কথা বলতো তা জানা নেই, কিন্তু শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতি তো সবসময় প্রাত্যহিক জীবনের আটপৌরে ভাষা ব্যবহার করে তৈরি হয় না। সংলাপেও তাই। হয় আঞ্চলিক ভাষা, নাহয় প্রমিত ভাষা। ঢাকার আঞ্চলিক ভাষা, যেটাকে ঢাকাইয়া ভাষা বলা হয়, সেটার ব্যবহার বাংলা সাহিত্যে ভালোভাবেই আছে। আখতারুজ্জামান ইলিয়াসে বিশেষ করে।
কিন্তু পরবর্তীকালে যে নতুন ঢাকা গড়ে উঠেছে, বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ এসে মিশেছে এই শহরে, তৈরি হয়েছে নতুন মধ্যবিত্ত শ্রেণী, সুশীল শ্রেণী... তাদের নির্দিষ্ট ভাষারীতি গড়ে ওঠেনি। নগরে এসে মানুষ শরীর থেকে আঞ্চলিকতার দাগ মুছতে প্রমিত বাংলার কাছাকাছি একটা ভাষা আয়ত্ব করে নেয়। এ থেকেই কথ্যরীতি রূপ নেয়। আশির দশকে কেউ কেউ ঢাকার এই নতুন কথ্য ভাষায় সাহিত্য রচনার আন্দোলনে নামে। যার সর্বশেষ ফল ফারুকীর নাটক।
কিন্তু সাহিত্য চলচ্চিত্রে বেশিরভাগ সময় ঢাকাইয়া মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ভাষা প্রমিত বাংলাই থেকে গেছে

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সবজান্তা এর ছবি

আমি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ডিঅ্যাক্টিভেট করেছি,একদম শেষ ধাপে যেয়ে। বলতে গেলে একরকম বাধ্য হয়েই। প্রথমদিকে আমার চেষ্টা ছিলো নিজেকে যথাসম্ভব কম সম্পৃক্ত রাখার। তবু সময় নষ্ট হচ্ছিলো প্রচুর। আর আমার সবচে বড় সমস্যা যেটা হচ্ছিলো, ফেসবুকের কারণে আমি একধরনের শর্ট অ্যাটেনশন স্প্যানের সমস্যায় ভুগছিলাম। কোনো কিছুতেই বেশিক্ষণ মনযোগ ধরে রাখতে পারতাম না। এমনকি কোনো সিনেমার মধ্যেও যদি বেশি বোরিং সংলাপ চলে আসতো, আমি হয়তো ব্রাউজার খুলে ফেসবুকে ঢুকে যেতাম। ব্যাপারটা প্রথমে বিরক্তিকর ঠেকলেও, পরে আতংকজনক মনে হচ্ছিলো। ফেসবুক বন্ধ করাতেই রাতারাতি মনযোগ একদম লাফ দিয়ে বেড়ে গেছে এমনটা দাবি না করলেও, আগের চে অনেক ভালো অবস্থায় আছি। তবে ফেসবুক বন্ধ করার একটা প্রধান সমস্যা, যেটা লেখাতেও বলেছি, অনেকের সঙ্গেই যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়া। পুরাপুরি বন্ধ করে দিতে হয়তো এজন্যেই পারবো না। তাই আপাতত লক্ষ্য হচ্ছে যতোটা সম্ভব নিরাসক্তি তৈরি করা, যাতে ফিরে আসলেও আর আগের মতো একদম মগ্ন না হয়ে যাই।

আমার বক্তব্যটা ঠিক আসলে প্রমিত বাংলা নিয়েও না। ভাষারীতির পুরো ব্যাপারটাই কেমন যেন অন্যরকম। সম্বোধন থেকে শুরু করে কথার ধাঁচটাই বেশ আরোপিত মনে হয় এখনকার সাপেক্ষে। এখনকার সাহিত্যিকেরা, যারা প্রমিত বাংলাতে লিখেন, তাদের লেখাতে এই ছাপটা দেখি না। অস্বস্তিটা এখানেই। দেখি,সময় পেলে এক দুটা উদাহরণ যোগ করে দেওয়ার আশা রাখি।

বিশদ মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ওহ্, ফেসবুকে অতিরিক্ত সময় দেওয়ার মোহ ত্যাগ করার জন্য আমি মাঝখানে প্রায় মাসখানেক অ্যাকাউন্ট ডিঅ্যাক্টিভ করে রাখছিলাম। তখন কিছুটা কমেছিলো। এখন আবার বেড়ে গেছে। কমানোর চেষ্টায় আছি।

তখনকার মানুষের ভাষারীতি, সম্বোধন ইত্যাদিতে একটু আড়ষ্ঠতা তো ছিলোই। আমাদের ছোটবেলায় বাবা ছিলো সবচেয়ে ভয়ের প্রতীক, শাসনেরও... এখন বাবারাই সন্তানদের সবচেয়ে ভালো বন্ধু হয়। আগে বড় ভাই বোনদের সঙ্গেও সম্পর্কটা আড়ষ্ঠ ছিলো, এখন তো তা নেই। এরকম সব সম্পর্কেই... আগে সম্পর্কগুলোতে বেশ আড়াল ছিলো, এখন আড়ালটা উঠে গেছে, অথবা তারচেয়ে গভীর কোনো আড়াল তৈরি হয়েছে খুব ভেতরে।

আলাউদ্দিন আল আজাদ এর তেইশ নম্বর তৈলচিত্রর চেয়ে আমার বেশি ভালো লেগেছিলো 'কর্ণফুলী' আর 'শীতের শেষ রাত বসন্তের প্রথম দিবস' উপন্যাস দু'টি। উপন্যাস সমগ্রে পাওয়া যায়, পড়ে দেখতে পারেন। 'পুরানা পল্টন'টাও সুযোগ পেলে পড়ে দেখতে পারেন।

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সবজান্তা এর ছবি

বইগুলির ইবুক ভার্সন পাইলে সুবিধা হইতো। কাগজের বই তো আর এখন কোনো অপশন না আমার জন্য মন খারাপ

অতিথি লেখক এর ছবি

ফেসবুক এক নিরব ঘাতকের নাম। ছেড়ে দিয়ে ভালই করেছেন।

গোঁসাইবাবু

সবজান্তা এর ছবি

পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

তারাপ কোয়াস এর ছবি

খানিকটা একই অনুভূতি! প্রায় একসাপ্তাহের জন্য ফেসবুক এবং নেট বিরতিতে ছিলাম(দিনের বেলায়); ফলাফল শতবর্ষী বুড়োর গপ্প পুরোটা শেষ আর চমস্কির এই বইটার অর্ধেক সম্পন্ন।
(অনুসিদ্ধান্ত: প্রয়োজনের অতিরিক্ত তথ্যের সহজপ্রাপ্যতা মাথাব্যাথার প্রধান কারণ!)


love the life you live. live the life you love.

সবজান্তা এর ছবি

'দ্য হান্ড্রেড ইয়ার ওল্ড...' বইটার নামটা দেখেই দারুণ লাগলো। পড়ার তালিকায় যোগ করলাম।

সময় নিয়ে আমার এই লেখাটা পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

ভূতের পা!! আমরা ভূতের পায়ে চেপে পেছনে হাঁটছি!!

ফেসবুক এক নেশা - সিগারেটের মতই। ছেড়ে দিতে যে পেরেছেন এজন্য আপনাকে গুরু গুরু

____________________________

সবজান্তা এর ছবি

ফেসবুক ছাড়াটা আসলে খুব সহজ সিদ্ধান্ত ছিলো না। কিন্তু আমি যাতে অবাক হয়েছি- ছাড়ার মাত্র দুইদিনের মাথাতেই পুরা আসক্তিটা কেটে গেছে। আমার মনে হয়েছে, আমরা যারা ফেসবুকে রীতিমতো আসক্ত, তারা যদি একবার কষ্ট করে নিজেদেরকে এর বাইরে নিয়ে আসতে পারি, তাহলে উপলব্ধি করতে পারবো যে, ফেসবুক কতোটা ক্ষতির কারণ হতে পারে।

স্পর্শ এর ছবি

ফেসবুক ব্যবহার করিনি গত প্রায় একবছর। বই পড়ার অভ্যাসটা পুনরুদ্ধার হয়েছে এই সময়ে। মানসিক শান্তি আনয়ন হয়েছে। তবে বছর শেষে খেয়াল করলাম। বন্ধুবান্ধব কারো সাথেই আর যোগাযোগ নেই তেমন!! কতগুলো দেশ ঘুরতে গেলাম। ফেবুক থাকলে সচল/হাচল কারো না কারো সাথে দেখা সাক্ষাত হয়ে যেত। সেসবও হয়নি।
তার উপর যোগ হয়েছে আরেক উপসর্গ। ফেসবুক ব্যবহার করিনা শুনলে মানুষ সন্দেহের চোখে তাকায়। ভার্সিটির কোনো স্পোর্টস ইভেন্টে যোগ দেব, ফেসবুক পাতায় গিয়ে নাম এন্ট্রি করা লাগে। অদ্ভুত অবস্থা।

এসব সাত পাঁচ ভেবে আবার অন করলাম। নিয়ত ছিলো মন্তব্য করবো না কোথাও। আমার মন্তব্য শুনে হঠাত কেউ, "যা শালা ভালো হএয় গেলাম" বলে ভালো হয়ে যাবে না। তারপরও সেই নিয়ত রাখা হচ্ছেনা পুরোপুরি। দেখি ডুব দেব আবারো…


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

সবজান্তা এর ছবি

এইটাই হচ্ছে একমাত্র সমস্যা। বহু মানুষের সাথে যোগাযোগের মাধ্যম হচ্ছে ফেসবুক।

ফেসবুকে না থাকলে মানুষজন দাওয়াত দিতেও ভুলে যায়, যেহেতু ফেসবুক ইভেন্টে আমাকে যোগ করা যায় না। নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার সবচে ভালো সমাধান, কিন্তু আমার নিজের উপর সেই নিয়ন্ত্রনটুকু নাই মন খারাপ

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

ফেসবুক আসক্তি যে কী এক প্রচন্ড নেশার রূপ ধারণ করেছে আর তার দোষ-গুণ এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি।
তা আপনি ফেসবুক ছেড়ে দিয়েছেন! সেতো সিগারেট ছাড়ার মতই সহজ। জীবনে কতবার সিগারেটযে ছেড়েছি তার হিসেব নেই। এখনও মাঝে-মধ্যে ধরি-ছাড়ি। ফেসবুকও...।
ভাল থাকুন। আনন্দে থাকুন।

বিষয়ান্তর: আমার সম্প্রতি একটা লেখার মন্তব্যে আপনি মুহাম্মদ-পূর্ব আরব (মক্কা অঞ্চল) এর উপর একখানা অভিসন্দর্ভের কথা জানিয়েছিলেন। অনুরোধ থাকলো, সম্ভব হলে লেখাটা,

এই ই-মেইল ঠিকানায় পাঠিয়ে দিয়েন।

সবজান্তা এর ছবি

আমি ফেসবুক ছেড়েছি, গত এক বছরের বেশি হলো ধূমপানও ছেড়েছি (দেশে থাকার সময়টুকু বাদে- সে সময় বদ পোলাপানের পাল্লায় পড়ে খাইতে হইলো। তবে ফেরত এসে আবার অধূমপায়ী।); ফেসবুক অবশ্য ধূমপানের মতো একেবারে ছাড়িনি- পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলে ফেরত আসতে পারি।

বিষয়ান্তর: ওই ডকুমেন্টটা আমি খুঁজে পাইনি। তবে কাছাকাছি বিষয়ে আরেকটা ডকুমেন্ট পাঠিয়েছি আপনার ঠিকানাতে।

সজীব ওসমান এর ছবি
সবজান্তা এর ছবি

ভিডিওটা বেশ ইন্টারেস্টিং!

নীলকান্ত এর ছবি

নির্ভরতা আসলেই আর ভাল লাগে না


অলস সময়

সবজান্তা এর ছবি

হুম, নির্ভরতা কোনো অর্থেই ভালো না।

পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

ফেসবুকবিহীন জীবন আসলে খুব কঠিন না। তবে কিছু গরমাগরম আলাপ মিস হয়, এই আর কী! তবে ব্যক্তিজীবনের জন্য সেগুলো হয়তো খুব প্রয়োজন নয়।

আপনার এ সিরিজটা পড়তে মজা লাগে, তবে এত দীর্ঘ বিরতিতে হঠাৎ হঠাৎ আসে নাম পালটে 'টেলিগ্রাম' করা দরকার চোখ টিপি

এক লহমা এর ছবি

"এত দীর্ঘ বিরতিতে হঠাৎ হঠাৎ আসে নাম পালটে 'টেলিগ্রাম' করা দরকার" -
হো হো হো হো হো হো

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সবজান্তা এর ছবি

গরমাগরম আলাপের লোভটা কিন্তু ছাড়া কঠিন। আর তাছাড়া সমমানসিকতার লোকজনের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার কিংবা আরেকটু ভেঙ্গে বললে, খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনাই আজকাল ভার্চুয়াল দুনিয়ার বাইরে কঠিন হয়ে যাচ্ছে। সেই আড্ডাগুলি মিস করি।

আরো লিখতে পারলে আমারও ভাল লাগতো। আমি যে মনে মনে কতো কতো ড্রাফট করি- ভাবি এইটা নিয়ে একটা ব্লগ লিখবো, সেইখানে এই এই বিষয় নিয়ে আলাপ করবো। তারপর জাস্ট ভুলে যাই, কিংবা আর আলস্যে আর আগানো হয় না। দেখি, ফেসবুকের বাইরে যতোদিন আছি, ব্লগিং-এ একটু বেশি টাইম দেওয়া যায় কিনা।

অবশ্য বলার মতো কথাও তো থাকতে হবে মন খারাপ

অরফিয়াস এর ছবি

মন্তব্য করার জন্য লগ ইন করলাম। ফেসবুকের সাথে আমার মনোমালিন্য সবচেয়ে বেশি গেছে ৫৪ দিন। যেটা লক্ষ্যনীয়, বই পড়ার অভ্যাসটা ফিরে আসে এই সময়ে। তবে দরকারি অনেক কাজেই আসলে নির্ভরশীল এই মাধ্যমটার উপরে। যাকগে, আসল কথা হল,

যার যা বিশ্বাস করার সে তাই বিশ্বাস করে যাচ্ছে, যার যা বলার, সে তাই বলে যাচ্ছে। কোনো তর্কই আমাদের কোথাও নিয়ে যাচ্ছে না

তর্ককে একটা সময় আমি যুক্তি-মত বিকাশের একটা মাধ্যম মনে করতাম, আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে এটা একটা সময় নষ্ট ছাড়া আর কিছুনা।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

সবজান্তা এর ছবি

আমার যেটা মনে হয়েছে- তর্ক করার অভ্যাস ত্যাগ করতে পারলেই অনেকখানি শান্তি ফিরে আসে। এটার জন্য নিজেকে বোঝানো দরকার যে, তর্ক করে কিছুই হচ্ছে না। তবে কিছু মানুষের স্টুপিডিটি এমন লিজেন্ডারি পর্যায়ের যে, তর্ক না করলে উলটা নিজের ভিতর অস্বস্তি লাগতে থাকে।

এর বাইরে আরেকটা সমস্যা হচ্ছে, অন্তত আমার মনে হয়, ফেসবুক আমাকে অন্যের অতি ব্যক্তিগত ব্যাপারেও আগ্রহী করে তুলছে। আমি এমন অনেক কিছুই জানি অনেকের সম্পর্কে, এমন অনেক কিছুই চোখে পড়ে, যা আদৌ আমার জানার কথা না, কিংবা জাস্ট জানার দরকার নেই। এই পিপিং টম মানসিকতাটা আমার কাছে ভয়ংকর মনে হয়েছে।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

ফেসবুকের সাথে সম্পর্কটা বন্ধুতা পর্যন্ত ঠিক আছে। প্রতিদিন একটু একটু যোগাযোগ থাকবে, দৈনিক দুয়েকবার চোখ বুলিয়ে আসবো, বড়জোর ঘন্টাখানেক কাটাবো। এই পর্যন্ত নেশা ধরবে না। কিন্তু এর বেশি গেলে - অর্থাৎ ফেসবুকের প্রেমে পড়লে, কিংবা ফেসবুকের সাথে সংসার পাতিয়ে ফেললেই ঝামেলা লাগবে। তখন দুনিয়ামে লাথ মেরে ইচ্ছে করবে সারাক্ষণ ফেসবুকের গলায় ঝুলে থাকি। খেয়ে না খেয়ে ফেসবুকে আপডেট দিতে হবে, কলাটা কিনলাম, ছিললাম, গিললাম সবই আপডেট দেয়া চাইইই চাই!!

আমার কাছে ফেসবুকটা নিউজফিডের মতো কাজ করে। আমার সাথে টিভি আর পত্রিকার সম্পর্ক খুব কম থাকায় আমি ফেসবুক থেকে দেশ দুনিয়ার আপডেট নেই। তবে এক্ষেত্রে ব্লগের কৃতিত্বই প্রধান। কারণ আমার ফেসবুক বন্ধুর সংখ্যাগরিষ্টই ব্লগার বন্ধু। ফেসবুক সংযোগ আমার কাছে ব্লগ সংযোগের কাজই করে। কোন একটা মিস যাওয়া ভালো লেখা, একটা ভালো বই বা সিনেমার খবর ফেসবুকেই পাই। তাই এটা প্রায় স্থির যে যেদিন ব্লগ ছেড়ে দেবো সেদিন ফেসবুকও ছেড়ে দিতে পারি।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

সবজান্তা এর ছবি

নিউজফিড হিসেবে ফেসবুক বেশ ভালো। বিশেষ করে অমুক তমুক টোয়েন্টিফোর ডট কম কে খুব মিস করি। কোনোদিনও নাম মনে রাখা হয়নি এইসব পোর্টালের। কেউ শেয়ার করলে গিয়ে দেখে আসতাম বিচিত্র সব খবর। বলতে পারেন ফেসবুকের অভাবেই সানি লিওনির সাম্প্রতিক কোনো খবরই আমি জানি না মন খারাপ

মন মাঝি এর ছবি

ফেসবুক কি?

****************************************

সবজান্তা এর ছবি

ইগনোর‍্যান্স ইজ ব্লিস হাসি

মন মাঝি এর ছবি

দেন আই এ্যাম বোথ ব্লিসফুল এ্যান্ড ব্লেস্‌ড হাসি

****************************************

তাসনীম এর ছবি

ফেসবুক ইদানিং প্রচুর অশান্তি ডেকে আনছে। এই কারণে পড়া, কাজ এবং ব্লগিং সবই কম হয়। চেষ্টা করছি ব্যবহার লিমিট করতে আর অন্য জিনিসে সময় দিতে।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

সবজান্তা এর ছবি

হ, এইসব বাদ দিয়ে আপনি বেশি ব্লগ লিখেন।

আপনার মতো দুর্দান্ত ব্লগারদের আরো অনেক বেশি ব্লগ লেখা উচিত। ফেসবুকের কারণ বহু পোটেনশিয়াল ব্লগ সামান্য স্ট্যাটাস হিসেবেই ঝরে গেছে। এই ব্যাপারটা বড় বেদনার।

অনিকেত এর ছবি

তুমি যে কত ভালো লেখো, এইটা তুমি জানো?

সবজান্তা এর ছবি

বিশাল শরমিন্দা করলেন ভাই লইজ্জা লাগে

সাফি এর ছবি

আমি যেটা শুনেছি যে জনৈকের ওয়াল নামক গ্রুপে জনৈকার আগমনের পরেই তোমার ফেসবুকের অপমৃতু্য ঘটেছে। গঠনা সত্যি?

সবজান্তা এর ছবি

সকলই ভিত্তিহীন অপপ্রচার। জনৈকার সাথে ছয় বছর যাবত ইন্টারনেটে সহাবস্থান করতেছি, এইসব নিয়া কোনো সমিস্যা হওয়ার প্রশ্নই আসে না। আসল গঠনা খুবই সিম্পল, কোয়ালিফায়িং পরীক্ষার জন্য ভাগছি। নাইলে বাক্স পেটরা নিয়া দেশে ফেরত যাওয়া লাগতো দেঁতো হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

ফেসবুকে ফিরে আসো সবজান্তা, পাপিষ্ঠ লোকজন আমাকে অপবাদ দিচ্ছে ওঁয়া ওঁয়া

লেখা ভাল লাগসে। মাঝে মাঝে লিখলে তো পারো।

অন্দ্রিলা

সবজান্তা এর ছবি

এতো আন্তরিক আহবান জানাইলে কিন্তু আসলেই চইলা আসতে পারি মন খারাপ

দেখি, মাঝেমধ্যে লিখা যায় কিনা দেঁতো হাসি

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

ফেসবুক একটা মিছা মায়া। যদি কারও সত্যিই কিছুর দরকার পড়ে, ঠিকই খোঁজ করে চলে আসবে। আর যাদের সত্যিই পরোয়া আছে, তারা ঠিকই খোঁজ নেবে, এমনিতেই। গত ডিসেম্বরে ফেসবুক বন্ধ রাখায় প্রচুর লাভ হয়েছে। মানসিক শান্তি, আত্মবিশ্বাস দৃঢ় হওয়া, আর সবথেকে জরুরি - প্রায় ২০টা বই পড়ে ফেলেছি! বইয়ের সন্ধান বা আলোচনার জন্যে ফেসবুকের থেকে Goodreads ভালো। তোমার ফেসবুকহীন জীবনের জন্যে শুভকামনা।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

সবজান্তা এর ছবি

ঠিক সবসময় সত্যি না কথাটা। ফেসবুকের কারণে অনেকেরই অল্টারনেট কন্ট্যাক্ট ডিটেইলস আমরা জানি না। আর তাছাড়া অনেক সময় এরকমও হয়, আমাকে কেউ খুঁজছে, আমারই কোনো দরকারে। সে সময় একটু ঝামেলা হয়ে যায় আর কী। যাই হোক, সব কিছুরই ভালো মন্দ আছে। এগুলি মেনে নিয়েই ভালো আছি। শুভকামনার জন্য ধন্যবাদ।

আয়নামতি এর ছবি

ফেসবুক আসক্তি কখনোই ছিল না। যাক কিছুদিন অন্তত শান্তিতে পড়াশোনা করতে পারবেন।
আমরাও আপনার কাছ থেকে কিছুমিছু লেখা পাবো। শুভকামনা হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

যার যা বিশ্বাস করার সে তাই বিশ্বাস করে যাচ্ছে, যার যা বলার, সে তাই বলে যাচ্ছে। কোনো তর্কই আমাদের কোথাও নিয়ে যাচ্ছে না। বরং কিছু মানুষের সীমাহীন মূর্খতা আর স্টুপিডিটি আমার রক্তচাপ বাড়িয়ে দিচ্ছিলো ক্রমশই।

এধরণের কিছু কারণে অনেকবার খোমাখাতা থেকে বিদায় নিয়েও আবার ফিরে গিয়েছি, খোমাখাতা ব্যাপারটা মনে হয় সংসারে থাকার মত একটা ব্যপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। অযথা অনর্থক মনে হলেও সেখানে না থাকলে মানুষ সন্দেহের চোখে তাকায়! কিন্তু সেখানে না থাকলে যে মানসিক শান্তি বজায় থাকে সে ব্যাপারে পুরোপুরি সহমত। বই পড়া আর সিডি কিনে গান শোনা হয়তবা এই ফেসবুক নামের মিছা মায়াটার জন্যই হয়ে উঠে না।

আপনি ত মার্কিন মুলুকে গিয়ে দেশের রাস্তাঘাটে ফিরে যেতে হাপিত্যেস করেন। আমার ত দেশে থেকেও দেশের রাস্তাঘাটে আলস্য বিলাস করে হাঁটার ফুরসত পাই না বলে নিজেকে ভাগ্যহীন উদ্বাস্তু মনে হয়! Gone are the days!

সময়োপযোগী লেখা এবং ইস্পিশালি গানটার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

____________________________________________________________________________
আলসেবুড়ি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।