অণুগল্প : চোর

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি
লিখেছেন অতন্দ্র প্রহরী (তারিখ: রবি, ২৭/০৪/২০০৮ - ১০:৫৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

চোরের কবলে পড়ে সর্বস্ব খুঁইয়েছেন, এমন দৃষ্টান্ত খুব একটা বিরল না হলেও ধরা পড়ার পরও চোর পার পেয়ে গেছে এমন দৃষ্টান্ত কিন্তু সচরাচর পাওয়া যাবে না। এমন অনৈতিক কাজের জন্য অবশ্য চোরকে ছেড়ে দেবার কোন মানে হয়না, এমন যুক্তিতে হয়তো অনেকেই চেঁচিয়ে গলা ফাটাবেন। আবার যে যতই মানবিকতার কথা বলুক না কেন, সুযোগ পেলে দু চার ঘা মেরে নেওয়ার সুযোগটা হাতছাড়া করতে চাইবেন না অনেকেই। তবে আমার ব্যাপার অনেকটাই আলাদা। সর্বস্বান্ত না হলেও চোরের কারণে যা হারাতে হয়েছে, তা নিয়ে আমার আফসোস সীমাহীন। এর জন্য যতটা না চোরকে দোষারোপ করি তার চেয়ে বেশি করি নিজেকে। আমার অবহেলার সুযোগেই না এতবড় সুযোগটা পেয়েছিল সে। তবে আফসোসের চেয়ে বেশি একটা নীরব আক্ষেপ, নিস্ফল আক্রোশ দানা বাঁধে মনের ভেতর। কারণ অন্যদের মত হাতের কাছে পেয়েও চোরকে দু চার ঘা লাগানোর বা আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর সুযোগ আমি কখনোই পাইনি যে মনের ঝালটা মিটবে। এমনকি ধীরে ধীরে ঘটা এই চুরিও টের পেয়েছি অনেক পরে। সবকিছুই বড্ড দেরিতে টের পাই, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দরকার ফুরিয়ে যাওয়ার পর। দীর্ঘশ্বাস ফেলা ছাড়া তখন আর কিছুই করার থাকে না। এই যেমন এখন, দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভাবছি কিভাবে সময় আমার মূল্যবান সবকিছু চুরি করে নিয়ে গেছে, আর যার টিকিটিরও নাগাল না পেয়ে বৃথা আস্ফালন করছি আমি। এদিকে কিন্তু চোর ব্যাটা ঠিকই ভেংচি কেটে ছুটে যাচ্ছে টিকটিক করে, একেবারে চোখের সামনে দিয়ে!


মন্তব্য

রায়হান আবীর এর ছবি

ভাইজান মন খারাপ কইরেন না!! সব হবে একদিন...

---------------------------------
জ্ঞানীরা ভাবলেন খুব নাস্তানাবুদ করে ছাড়া গেছে...আআআহ...কি আরাম। বিশাল মাঠের একটি তৃণের সাথে লড়াই করে জিতে গেলেন।

ছোট্ট তৃণের জন্য অপরিসীম ঘৃণা।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

বলো ইনশাল্লাহ! হাসি

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

হুম।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

এটা যদি পরমাণু গল্প হয় তাহলে অণু গল্প কি?

চির আমি

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

সত্যি বলব? জানি না দেঁতো হাসি

eru এর ছবি

আসেন একটা তুলনামূলক আলোচনা করি। ৫০০ শব্দের বেশী হলে ছোটগল্প, ১০০ এর বেশী ৫০০ এর কম অনুগল্প। ১০০ এর কম হলে পরমানুগল্প। ৫-১০ শব্দের গল্পেরও কিন্তু নাম আছে। গল্পানু ,অতি ক্ষুদ্র গল্প। যদ্দুর মনে পড়ে পরমানু নামটা দিয়ে আমিই প্রথম একটা লিখছিলাম গল্প, তাই জবাবটা দিলাম।
eru

-------------------------------------------------
সুগন্ধ বিলোতে আপত্তি নেই আমার
বস্তুত সুগন্ধ মাত্রই ছড়াতে ভালবাসে।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

ধন্যবাদ। শিরোনাম পাল্টে দিলাম। লেখাটা ২১১ শব্দের। তাই পরমাণু গোত্রে বোধহয় পড়বে না, অণুতে স্থানান্তর করে দিলাম। তবে আমার যতদূর মনে হয়, এই অণু-পরমাণু গল্পের সংজ্ঞা এখনো হয়তো আলোচনার উর্দ্ধে নয়। তবে আপনার সংজ্ঞা আমার কাছে যথেষ্ট গ্রহণযোগ্য মনে হয়েছে।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

হঠাৎ করে মনে পড়ল, বেশ কিছুদিন আগে সচলায়তনে কোন এক অতিথি লেখক চোর নামেই একটি পরমাণুগল্প লিখেছিলেন। ভাগ্যিস, নামটার কোন কপিরাইট ছিল না! চোখ টিপি
এটুকু জোর দিয়ে বলতে পারি, ইচ্ছাকৃত নয় এটা। আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত অবচেতন মনের এই ভুলের কারণে। পরবর্তীতে আরো সচেতন হতে হবে। হাসি

eru এর ছবি

জনাব আমিই সেই অধম অতিথি। আমার পরমানুগল্পের নামও ছিল এটাই, পরমাণুগল্প : চোর। সমস্যা নাই। গল্পের নামের আবার কপিরাইট কি ?
eru

-------------------------------------------------
সুগন্ধ বিলোতে আপত্তি নেই আমার
বস্তুত সুগন্ধ মাত্রই ছড়াতে ভালবাসে।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

ধন্যবাদ। আপনার গল্পটা বেশ মজার ছিল হাসি

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍গল্প না আপনার জীবনের কাহিনী?

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি একগামী পুরুষ। একমাত্র নারীদের ভালোবাসি চোখ টিপি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

উমম, গল্প হিসেবেই লেখা, তবে আমার যা মনে হয়, কোন না কোন পর্যায়ে এটা আমাদের সবার জীবনেরই কি একটা অংশ নয়?
খাইছে! আতলামি হয়ে গেলে মাফ কইরা দিয়েন বস! দেঁতো হাসি

পরিবর্তনশীল এর ছবি

এই তাইলে ঘটনা!

---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

কি? দেঁতো হাসি

মুজিব মেহদী এর ছবি

শুরুতে মনে হলো চোর ধরা-মারা নিয়ে কোনো নিবন্ধ, কয়েকবাক্য পর মনে হলো আত্মকথা, শেষে এসে মানুষের একটি চিরন্তন হাহাকার নিজের করে পর সবার করে তোলা।

'দিয়াশলাই'য়ে অন্তর্ভুক্ত হলে জুবায়ের ভাই এটাকে তাঁর কোন ভাগে রাখতেন?

................................................................
আমার সমস্ত কৃতকর্মের জন্য দায়ী আমি বটে
তবে সহযোগিতায় ছিল মেঘ : আলতাফ হোসেন

... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

আমার মনে হয় "হলো না লো হলো না" তে! দেঁতো হাসি
তবে একবাক্যে স্বীকার করব, জুবায়ের ভাইয়ের বিশ্লেষণ ভীষণরকম উপকারী। আমি তাঁর পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা দেখে রীতিমত মুগ্ধ। হাসি

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

হুমম

___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।